![]() |
👉 ঈশ্বরের স্বরূপ |
ঈশ্বর সচ্চিদানন্দস্বরূপ, নিরাকার, সর্বশক্তিমান, ন্যায়কারী, দয়ালু, অজন্মা, অনন্ত, নির্বিকার, অনাদি, অণুপম, সর্বাধার, সর্বেশ্বর সর্বব্যাপক, সর্বান্তর্যামী, অজর, অমর, অভয়, নিত্য, পবিত্র ও সৃষ্টিকর্তা
स पर्य॑गाच्छु॒क्रम॑का॒यम॑व्र॒णम॑स्नावि॒रꣳ शु॒द्धमपा॑पविद्धम्। क॒विर्म॑नी॒षी प॑रि॒भूः स्व॑य॒म्भूर्या॑थातथ्य॒तोऽर्था॒न् व्य᳖दधाच्छाश्व॒तीभ्यः॒ समा॑भ्यः ॥-यजुर्वेद अध्याय:40 मन्त्र:8
पदार्थान्वयभाषाः -
हे मनुष्यो ! जो ब्रह्म (शुक्रम्) शीघ्रकारी सर्वशक्तिमान् (अकायम्) स्थूल, सूक्ष्म और कारण शरीररहित (अव्रणम्) छिद्ररहित और नहीं छेद करने योग्य (अस्नाविरम्) नाड़ी आदि के साथ सम्बन्धरूप बन्धन से रहित (शुद्धम्) अविद्यादि दोषों से रहित होने से सदा पवित्र और (अपापविद्धम्) जो पापयुक्त, पापकारी और पाप में प्रीति करनेवाला कभी नहीं होता (परि, अगात्) सब ओर से व्याप्त जो (कविः) सर्वत्र (मनीषी) सब जीवों के मनों की वृत्तियों को जाननेवाला (परिभूः) दुष्ट पापियों का तिरस्कार करनेवाला और (स्वयम्भूः) अनादि स्वरूप जिसकी संयोग से उत्पत्ति, वियोग से विनाश, माता, पिता, गर्भवास, जन्म, वृद्धि और मरण नहीं होते, वह परमात्मा (शाश्वतीभ्यः) सनातन अनादिस्वरूप अपने-अपने स्वरूप से उत्पत्ति और विनाशरहित (समाभ्यः) प्रजाओं के लिये (याथातथ्यतः) यथार्थ भाव से (अर्थान्) वेद द्वारा सब पदार्थों को (व्यदधात्) विशेष कर बनाता है, (सः) वही परमेश्वर तुम लोगों को उपासना करने के योग्य है ॥
भावार्थभाषाः -हे मनुष्यो ! जो अनन्त शक्तियुक्त, अजन्मा, निरन्तर, सदा मुक्त, न्यायकारी, निर्मल, सर्वज्ञ, सबका साक्षी, नियन्ता, अनादिस्वरूप ब्रह्म कल्प के आरम्भ में जीवों को अपने कहे वेदों से शब्द, अर्थ और उनके सम्बन्ध को जनानेवाली विद्या का उपदेश न करे तो कोई विद्वान् न होवे और न धर्म, अर्थ, काम और मोक्ष के फलों के भोगने को समर्थ हो, इसलिये इसी ब्रह्म की सदैव उपासना करो ॥-स्वामी दयानन्द सरस्वती
Translate:-(he manushyo ! jo anant shaktiyukt, ajanma, nirantar, sada mukt, nyaayakaaree, nirmal, sarvagy, sabaka saakshee, niyanta, anaadisvaroop brahm kalp ke aarambh mein jeevon ko apane kahe vedon se shabd, arth aur unake sambandh ko janaanevaalee vidya ka upadesh na kare to koee vidvaan na hove aur na dharm, arth, kaam aur moksh ke phalon ke bhogane ko samarth ho, isaliye isee brahm kee sadaiv upaasana)
न तस्य॑ प्रति॒माऽअस्ति॒ यस्य॒ नाम॑ म॒हद्यशः॑।
हि॒र॒ण्य॒ग॒र्भऽइत्ये॒ष मा मा॑ हिꣳसी॒दित्ये॒षा यस्मा॒न्न जा॒तऽइत्ये॒षः ॥
यजुर्वेद अध्याय:32 मन्त्र:3
हिन्दी - स्वामी दयानन्द सरस्वती
फिर उसी विषय को अगले मन्त्र में कहा है ॥
पदार्थान्वयभाषाः -हे मनुष्यो ! (यस्य) जिसका (महत्) पूज्य बड़ा (यशः) कीर्त्ति करनेहारा धर्मयुक्त कर्म का आचरण ही (नाम) नामस्मरण है, जो (हिरण्यगर्भः) सूर्य बिजुली आदि पदार्थों का आधार (इति) इस प्रकार (एषः) अन्तर्यामी होने से प्रत्यक्ष जिसकी (मा) मुझको (मा, हिंसीत्) मत ताड़ना दे वा वह अपने से मुझ को विमुख मत करे, (इति) इस प्रकार (एषा) यह प्रार्थना वा बुद्धि और (यस्मात्) जिस कारण (न) नहीं (जातः) उत्पन्न हुआ (इति) इस प्रकार (एषः) यह परमात्मा उपासना के योग्य है। (तस्य) उस परमेश्वर की (प्रतिमा) प्रतिमा-परिमाण उसके तुल्य अवधि का साधन प्रतिकृति, मूर्ति वा आकृति (न, अस्ति) नहीं है। अथवा द्वितीय पक्ष यह है कि (हिरण्यगर्भः०) इस पच्चीसवें अध्याय में १० मन्त्र से १३ मन्त्र तक का (इति, एषः) यह कहा हुआ अनुवाक (मा, मा, हिंसीत्) (इति) इसी प्रकार (एषा) यह ऋचा बारहवें अध्याय की १०२ (वाँ) मन्त्र है और (यस्मान्न जातः—इत्येषः०) यह आठवें अध्याय के ३६, ३७ दो मन्त्र का अनुवाक (यस्य) जिस परमेश्वर की (नाम) प्रसिद्ध (महत्) महती (यशः) कीर्ति है, (तस्य) उसका (प्रतिमा) प्रतिबिम्ब-तस्वीर (न, अस्ति) नहीं है ॥३ ॥
भावार्थभाषाः -हे मनुष्यो ! जो कभी देहधारी नहीं होता, जिसका कुछ भी परिमाण सीमा का कारण नहीं है, जिसकी आज्ञा का पालन ही नामस्मरण है, जो उपासना किया हुआ अपने उपासकों पर अनुग्रह करता है, वेदों के अनेक स्थलों में जिसका महत्त्व कहा गया है, जो नहीं मरता, न विकृत होता, न नष्ट होता उसी की उपासना निरन्तर करो। जो इससे भिन्न की उपासना करोगे तो इस महान् पाप से युक्त हुए आप लोग दुःख-क्लेशों से नष्ट होओगे ॥
ঈশ্বরকে কিভাবে জানা যায়
উত্তর : আমাদের মনে তিন প্রকারের দোষ আছে । যথা - "মল" , "বিক্ষেপ" এবং "আবরণ" দোষ । যখন মনের এই ত্রিদোষ ঘুচে যায় , তখন আত্মায় ঈশ্বরের অনুভূতি হয় ।
#মল দোষ কি এবং কিভাবে তা দূর করা যায় ?
উত্তর : মনের মধ্যে অপরের অনিষ্ট চিন্তা করা তথা আত্মায় পাপের সংস্কার পড়াকে মল বলে ।
জ্ঞানের দ্বারা জানতে হবে যে , জগতের সমস্ত প্রাণী এবং সমস্ত পদার্থ নাশবান , এই জন্য অপরের অধিকার ছিনিয়ে নেবার ভাবনা না রাখলেই 'মল' দোষ দূর হয় ।
"বিক্ষেপ" দোষ কি এবং কিভাবে তা দূর করা যায় ?
উত্তর : সদাসর্বদা বিষয় চিন্তন অথবা মনকে সদা চঞ্চল রাখাকে বিক্ষেপ বলে । অর্থাৎ যখন মানুষ সাংসারিক পদার্থ সমূহকে জীবনের উদ্দেশ্য মনে করে উপভোগ আরম্ভ করে , তখন তার চিত্ত চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় , সেই চাঞ্চল্যকে বিক্ষেপ বলে ।
বাস্তবিক পক্ষে সাংসারিক পদার্থ সমূহ যে সাধন মাত্র , তাতে কোন সন্দেহ নেই । কিন্তু সাংসারিক পদার্থ সমূহ লাভ করা জীবনের উদ্দেশ্য নয় । এ সত্যকে জেনে যে কর্ম করা যায় , সেই কর্ম মানুষকে জলে পদ্ম পত্রের ন্যায় সাংসারিক মমতায় লিপ্ত হতে দেয় না । নিষ্কামকর্মের অনুষ্ঠানদ্বারা বিক্ষেপ দূর হয় ।
#আবরণ দোষ কি এবং কিভাবে তা দূর করা যায় ?
উত্তর : জগতের যাবতীয় নাশবান পদার্থের অভিমান মনের উপর পর্দার মত পড়ে থাকাকে আবরণ বলে ।
মানুষের মনের উপর অহংকার বা অভিমানের আবরণ পড়লে , সে পরমেশ্বর প্রদত্ত বস্তু সমূহকে আপন মনে করতে থাকে । আমার ধন , আমার স্ত্রী , আমার জন , আমার রাজ্য , আমার শাসন ইত্যাদি ইত্যাদি । অভিমানে বশিভূত হয়ে সে অপরকে পীড়ন করা আরম্ভ করে ।
সে মনে করতে থাকে , তার মতো বড় এ সংসারে আর কেউ নেই । কিন্তু যখন সে জ্ঞানপূর্বক কর্ম করে , মন এবং ইন্দ্রিয় সমূহকে বাহ্য বিষয় সমূহ হতে দূরে সরিয়ে শক্তিকে হৃদয়ে একাগ্র করে এবং মনে করে যে ,পরমাত্মা তার সমীপে বর্তমান এবং সে পরমাত্মার সমীপে , এইরূপ উপাসনা দ্বারা অহংকার অর্থাৎ আবরণ দোষ দূর হয়ে যায় ।
এইভাবে ত্রিদোষ দূরীকরণ সাধন দ্বারা ত্রিদোষ নাশ করার নিরন্তর অভ্যাসই পরমাত্মার অনুভূতি করিয়ে দেয় । এই ত্রিদোষ দূর করার মূল সাধনা হল তিনটি ।
যথা - "জ্ঞান" "কর্ম" ও "উপাসনা"।
#জ্ঞান কাকে বলে ?
উত্তর : যে পদার্থ যে রূপ তাকে সেই রূপ মনে করা অর্থাৎ জড় বস্তুকে জড় , চেতনকে চেতন , নিত্যকে নিত্য এবং অনিত্যকে অনিত্য জানাই জ্ঞান ।
#কর্ম কাকে বলে ?
উত্তর : শরীর , সমাজ তথা আত্মার উন্নতি করা , অভিপ্রেত পদার্থ সমূহ লাভ করার জন্য পুরুষার্থ করাকে কর্ম বলে ।
#উপাসনা কাকে বলে ?
উত্তর : পদার্থের সমীপে গিয়ে , তার গুণ নিজের মধ্যে ধারণ করা এবারের আপন দোষ সংশোধন করার নাম উপাসনা ।
উদাহরণ - কল্পনা করা যাক একজন ব্যক্তি শীতে কাতর বা শীতার্ত । সে যদি শীত হতে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য জলের কাছে যায় , তাহলে তাকে জ্ঞানী বলা চলে নাকি অজ্ঞানী বলা চলে ? অবশ্যই অজ্ঞানী বলা হবে । তার কারণ এই যে , সে শীত নিবারন করার জন্য জলের সমীপস্থ হচ্ছে , তাই একে জ্ঞানী বলা চলে না , অজ্ঞানী বলে ।
শীত তখনই দূর হতে পারে । যদি তার মধ্যে প্রথম থেকেই অগ্নির বিষয়ে জ্ঞান থাকে । তারপরে তাকে অগ্নির সমীপস্থ হয়ে শীতরূপী দোষকে অগ্নির যে গুন তা দিয়ে দূর করতে হবে ।
অর্থাৎ "জ্ঞান" দ্বারা "মল"দোষকে দূর করতে হবে , "কর্ম" দ্বারা "বিক্ষেপ" দোষকে দূর করতে হবে এবং "উপাসনা" দ্বারা "আবরণ" দোষ দূর হলে , তারপর আত্মায় পরমাত্মার অনুভূতি হবে ।
ঈশ্বর ও ব্রহ্মঃ
ধর্মদর্শন ও সাধনাঃ
"ওম্ ।। ন ত্বাবাং অন্যো দিব্যো ন পার্থিবো ন জাতো ন জনিষ্যতে আশ্বায়ন্তো মঘবন্নিন্দ্র বাজিনো গব্যন্তস্তা হবামহে "। (সাম উত্তরাঃ ৬৮১)
অর্থ অনুবাদঃ - হে পরমেশ্বর! (ত্বাবান) আপনার সমক্ষ এই বিশ্বব্রহ্মাগুে (অন্যঃ) আর অন্য কেহই (দিব্য নঃ) দিব্য গুন কর্ম স্বভাব যুক্ত নেই (ন পার্থিবঃ) এবং অন্য কোন পার্থিব শক্তি (নুজাতঃ) না তো হয়েছে, (ন জনিষ্যতে) আর না তো ভবিষ্যতে হবে। হ (মঘবন) ঐশ্বর্যশালী পরমেশ্বর। (বাজিনঃ) আপনার বল শক্তি পরাক্রম দ্বারা (অশ্বায়ন্তঃ) মনোবলকে তীব্র শক্তিশালী করার জন্য (গব্যন্তঃ) অভ্যান্তরীন বল বীর্য পরাক্রমকে আত্মা জ্ঞানের সঙ্গে (ত্বা) কেবল মাত্র আপনাকেই (হবামহে) প্রাপ্তির জন্য প্রার্থনা উপসনাদি করিতেছি ।
ঈশ্বর হলেন এই সমস্ত সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তা - নিয়ন্ত্রক যাকে আমরা ইংরেজিতে গড বলে থাকি। আর ভগবান হলো যিনি সমস্ত ঐশ্বর্য, বীর্য্য, যশ, জ্ঞান, শ্রী, বৈরাগ্য আছেন তখন তিনি ভগবান। অনেকে মুনি ঋষিদের ও অবতার বলে আমরা ভগবান বলি। এটা আমাদের ভুল আর ঈশ্বর ও ভগবানের মধ্যে পার্থক্য আছে।
ঈশ্বর সর্বব্যপী বিরাজিত তিনি উর্ধ্বে, চারপাশে সর্বদিকে বিদ্যমান সর্বব্যপী স্রষ্টা। যিনি আমাদের মধ্যে ও ব্যাক্তিত্বরূপে বিদ্যমান, আর এটি যেনেই একজন যোগী পুরুষ তার সাথে একাত্ব হয়ে যান। যিনি তা জানেন তিনি ঈশ্বরকে সর্বব্যপীবলে বুঝাতে পারেন, বুঝতে পারেন যে আমরাও তার অংশ।
ঈশ্বর সকল ব্যষ্টির সমষ্টি - স্বরূপ। তথাপি তিনি ' ব্যক্তি বিশেষ '। যেমন মনুষ্যদেহ একটি বস্ত, ইহার প্রত্যেক কোষ একটি ব্যষ্টি । সমষ্টি - ঈশ্বর, ব্যষ্টি - জীব। সুতরাং দেহ যেমন কোষের উপর নির্ভর করে। ঈশ্বরের অস্তিত্ব তেমনি জীবের অস্তিত্বের উপর নির্ভর করে। এর বিপরীতটিও ঠিক তেমনি এইরূপে জীব ও ঈশ্বর যেন সহ - অবস্থিত দুইটা সত্বা - একটি থাকলে অপরটি থাকবেই। অধিকন্ত আমাদের এই ভূলোক ব্যতিত অন্যান্য উচ্চতর লোকে শুভের পরিমাণ অশুভের পরিমাণ অপেক্ষা বহুগুন বেশি থাকায় সমষ্টি (ঈশ্বর) - কে সর্বমঙ্গল - স্বরূপ বলা যেতে পারে। সর্বশক্তিমত্তা ও সর্বজ্ঞত্ব ঈশ্বরের প্রত্যক্ষ গুন, এবং সমষ্টির দিক্ হতেই ইহা প্রমাণ করবার জন্য কোন যুক্তির প্রয়োজন হয় না ।
ব্রহ্ম এই উভয়ের উর্ধ্বে, এবং একটি সপ্রতিবন্ধ বা সাপেক্ষ অবস্থা নয়। ব্রহ্মই একমাত্র স্বয়ংপূর্ণ, যা বহু এককের দ্বারা গঠিত হয়নি। জীবকোষ হতে ঈশ্বর পর্যন্ত যে - তত্ব অনুস্যূত, যা ব্যতীত কোন কিছুরই অস্তিত্ব থাকে না এবং যা কিছু সত্য, তাই সেই তত্ব বা ব্রহ্ম। যখন চিন্তা করি - আমি ব্রহ্ম, তখন মাত্র আমিই থাকি। সকলের পক্ষেই এককথা প্রযোজ্য,সুতরাং প্রত্যেকেই সেই তত্বের সামগ্রিক বিচার।
শাস্ত্রীয় রেফারেন্স
"অষ্ট চক্রা নব দ্বারা দেবানাং পুরুয়োধ্যা ।
তস্যাং হিরণ্ময়ঃ কোশঃ স্বর্গো জ্যোতিষাবৃতঃ ।।
(অথর্ববেদ - ১০/২/৩১)
অর্থঃ এই শরীররূপ নগরী নব সূর্য্যাদি দেবের অধিষ্ঠানভূত। আট চক্র এবং নয় ইন্দ্রীয় দ্বারা বিশিষ্ট এইনগরী অজেয়। এই নগরীতর এক প্রকাশময় কোশ আছে (মনোময়কোষ) আনন্দময় জ্যোতিদ্বারা আবৃত।
(অথর্ববেদ - ১০ /২/৩১ মন্ত্রের বিশ্লেষণ)
দিব্য পুরী অর্থাৎ মনুষ্য শরীর অত্যান্ত বলশালী। ইহা দুই চক্ষু, দুই কর্ণ, দুই নাসিকা, এক মুখ, এক মলদ্বার ও এক মূত্রদ্বার এই নয়টি দ্বার যুক্ত এবং ত্বক রক্ত মাংস মেদ অস্থি মজ্জা বীর্য ও ওজঃ এই আটটি চক্রযুক্ত। ইহাতে জ্যোতিষ্মান কোষ আছে তাহাই আনন্দময়। কারণ ইহা জ্যোতিঃ স্বরূপ পরমাত্মা দ্বারা আবৃত।
এখানে দুটো শব্দ আছে ------
১)ঈশ্বর ও
২) সর্বশ্রেষ্ঠ
ঈশ্বর নামক বাচক শব্দ। (বিশেষ্য পদ)
ঈশ্বর -- ইষ্টে ঈশ বরচ ইতি ঈশ্বর। ঈশ ঐশ্বর্যে এই ধাতু হতে ঈশ - বর = ঈশ্বর। ইশ শব্দের অর্থ ব্যাপক, শ্রেষ্ঠ এবং বর শব্দের অর্থ প্রধান। যিনি ব্যাপক এবং শ্রেষ্ঠরও প্রধান তিনিই ঈশ্বর এক এবং অদ্বিতীয়।
ঈশ্বরঃ কারনং পুরুষকর্মাফল্যদর্শনাৎ ।
(ন্যায়সূত্র - ৪/১/১৯)
অর্থাৎঃ কর্মফলমুক্ত পুরুষই ঈশ্বর ।
কে এই পুরুষ
পুরুষ হল চৈতন্যময় সত্বা। যাকে ব্রহ্ম বলা হয় - ব্রহ্ম যিনি জগৎ সৃষ্টি ও রক্ষা করে আছেন, ব্রহ্ম এই অর্থে - অ। জগৎ যার দ্বারা দীপ্ত হয় এই অর্থ - ব্রহ্ম।
এক, অদ্বিতীয় দেব সর্বভূতে প্রছন্নভাবে অবস্থিত আছেন। তিনি সর্বব্যাপী সর্বভূতের অন্তরস্থিত আত্মা, কর্মাধক্ষ্য, সর্বভূতের নিবাসস্থান, সর্বদ্রষ্টা, চেতয়িতা নিরুপাধিক ও নির্গুন।
(শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ - ১১।। তৃতীয় অধ্যায়)
এই জগতে তাহার কোন প্রভূ নাই, নিয়ন্তাও কেহ নাই। এমন কোনও লিঙ্গ বা চিহ্ন নাই। যাহা দ্বারা অনুমান করা চলে।
(শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ - ৯।। তৃতীয় অধ্যায়)
তিনি সর্বত্র গিয়াছেন, তিনি জ্যোতির্ময়, অশরীরী, ক্ষতরহিত, স্নায়ুহীন, শুদ্ধ ও অপাপবিদ্ধ। তিনি সর্বদর্শী, সর্বজ্ঞ, সর্বপরী বিদ্যমান এবং স্বয়ম্ভূ। তিনি নিত্যকাল ব্যাপিয়া লোকের যথাযথ কর্মফল ও সাধনা অনুসারে বিষয়সমূহের বিধান করিয়াছেন।
(ঈশ উপনিষদ - ৮)
ব্রহ্ম এক এবং গতিহীন হয়েও মন অপেক্ষা অধিকতর বেগবান, দেবতা বা ইন্দ্রীয়সকল একে পান না, কারন ইনি সবার আগে গমন করেন। ব্রহ্ম বা আত্মা সকল শক্তিকে অতিক্রম করে যান, এই ব্রহ্মে অধিষ্ঠিত থেকে প্রাণশক্তি জগতের সমস্ত শক্তিকে ধারণ করেন।
(ঈশ উপনিষদ - ৪)
"তত্র ঈশ্বরঃ সর্বজ্ঞঃ পরমাত্মা এক এব '(ন্যায়)।
অর্থাৎঃ নিত্য পরমাত্মা বা ঈশ্বর এক ও সর্বজ্ঞ।
"ক্লেশকর্ম্মবিপাকাশৈয়রপরামৃষ্টঃ পুরুষবিশেষ ঈশ্বরঃ।" (যোগসূত্র - ১/২৪)
অর্থাৎঃ যে পরম পুরুষকে ক্লেশ, কর্ম, বিপাক এবং আশয় অধীন করতে পারে না যিনি সর্বাত্মা হতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র তিনিই ঈশ্বর।
(যোগসূত্র - ১/২৪)
তত্র নিরতিশয়ং সর্ব্বজ্ঞত্ববীজম্ ।
(যোগসূত্র - ১/২৫)
অর্থাৎঃ যিনি ঈশ্বর, তিনি সর্বজ্ঞ। তাতে নিরতিশয় সর্বজ্ঞত্ব - বীজ নিহিত আছে।
এক্ষণে বুঝা যাচ্ছে যে ঈশ্বর হলেন সর্বাপেক্ষা, ক্ষমতাশালী এবং সর্বশ্রেষ্ঠ। তাহার ঊর্ধ্বে আর কিছু নেই।
যেমন সূর্য্যঃ - যদি ও বা আমরা বলি সূর্য্য দেবতা (পৌরাণিক মতে) কিন্তু আদি জ্ঞান হতে জানা যায় সূর্য্য পরমাত্মা সেই সর্বশ্রেষ্ঠ ঈশ্বরের গুনবাচক নামক। সূর্য্য আত্মা জগতস্তস্থুষশ্চ " জগৎ অর্থাৎ প্রাণী, চেতনা এবং চলনশীল পদার এবং তস্থুল অর্থাৎ অপ্রাণী বা পৃথিবী আদি স্থাবর জড় পদার্থের আত্মা স্বরূপ হওয়ার এবং স্বপ্রকাশ স্বরূপ হইয়া সকলের প্রকাশ কারক হওয়াতে ঐ পরমেশ্বরের নাম "সূর্য্য" হইয়াছে। প্রাণী ও অপ্রাণী সমস্ত ভূতের ইনি চালক এবং প্রকাশক। ভূদিগনীয় পরষ্মেপদী সৃ ধাতু কত্ত্ববাচ্যে ক্যপ প্রত্যয়ে নিষ্পন্ন। সৃ ধাতু অর্থ গতি। সূর্য্যাবর্ত্তী জ্যোতিঃ ও তেজঃ সর্ব্বত্র গমনশীল। গতির তিনটি অর্থ জ্ঞান, গমন ও প্রাপ্তি।
এই সূর্য্য যেমন শুধু এই পৃথিবী না সারাবিশ্ব ব্রহ্মান্ড আলো আর তাপ প্রদান করে বিশ্ব সাসন করছে তাই বলা যাইতে পারে বিশ্বে সূর্য্য শ্রেষ্ঠ আবার এই সূর্য্য আবার কালের অধীনে সমগ্র ব্রহ্মান্ড কালেক আবর্তন চক্রে বাঁধা এইখান থেকে বের হবার সাধ্য কাহারো নেই। সে যত বড় মূল্লূক হোক তহলে সেই সূত্র হতে বলা যায় এই কালই সর্বশ্রেষ্ঠ। আর এই কাল হলেন স্বয়ং মহা কাল সেই পরমাত্মা শিব যিনি মঙ্গলময় আর ইনি আছেন তার নিয়ম চক্রে যাহা শাসন করে কালকে তিনি হলেন কালী।
ঈশ্বর পূর্ণরূপ চিত্র
ওঁ উচ্চারণ করতে গেলে আমরা তিনটি শব্দ পাই তা হলঃ--- অ + উ + ম এই শব্দে পাওয়া যায় তিনটি মহাশক্তি ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর।
ব্রহ্ম শক্তি অভেদ। এককে মানলে আর একটিকেও মানতে হয়। যেমন অগ্নি আর তার দাহিকা শক্তি, অগ্নি মানলেই দাহিকা শক্তি মানতে হয়। দাহিকা শক্তি ছাড়া অগ্নি ভাবা যায় না। সূর্যেকে বাদ দিয়ে সূর্যের রশ্মি ভাবা যায় না।
তাই এই এক ব্রহ্ম এবং শক্তিকেই আমরা বিভিন্ন নামে অভিহিত করি ----
পুরুষ + প্রকৃতি
ব্রহ্মা + ব্রহ্মাণী (সরস্বতী)
বিষ্ণু + বৈষ্ণবী (লক্ষ্মী)
মহেশ্বর + মাহেশ্বরী (কালী)
তিনি এক কিন্তু রুচির বৈচিত্র্যময়তার জন্যে প্রকাশ অনন্ত।
সনাতন ধর্মানুসারে চিন্তার অতীত পরমেশ্বর যে রূপে সৃষ্টি করেন সেই রূপের নাম ব্রহ্মা, যে রূপে জগৎ পালন করেন সেই রূপের নাম বিষ্ণু এবং যে রূপে লয় বা নাশ করেন সেই রূপের নাম শিব বা মহেশ্বর। এ সহজ কথাটিই শ্রীমদ্ভাগবতের প্রথম স্কন্ধের দ্বিতীয় অধ্যায়ে খুব সুন্দর করে দেয়া আছে।
প্রকৃতির তিনটি গুন সত্ব, রজ এবং তব। পরমেশ্বর এক হলেও এই তিনটি গুনের প্রভাবে বিশ্বের সৃষ্টি - স্থিতি লয়ের জন্যে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর রূপ ধারন করেন।

ওঁ
ব্রহ্মা + ব্রহ্মাণী + মহাসরস্বতী
বিষ্ণু + বৈষ্ণবী + মহালক্ষ্মী
শিব + শিবানী + মহাকালী
ব্রহ্ম + শক্তি
পুরুষ + প্রকৃতি
চন্দ্র ও চন্দ্রের কিরণ, দুধ ও দুধের ধবলতার ন্যায় এক ও অভেদ।
ব্রহ্ম জগৎ সৃষ্টির এক মহাশক্তি বিষ্ণুকে জগতের সৃষ্টি পালনের। মহেশ্বরকে জগতের সৃষ্টি প্রলয়ের গুন কর্ম অনুসারে এই তিন শক্তিকে এক সত্ত্বা পরম ব্রহ্মকে এই জগতের মহা গুরু বলা হয়েছে যাকে আমরা ওঁ নামে জানি।
ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর এরাই পরব্রহ্ম স্বরূপ ; সেই তিন গুন শক্তি ঈশ্বরেকেই বুঝানো হয় সেই তিন শক্তিকে এক সত্ত্বা পরমব্রহ্মকে ধ্যানের মধ্যে উপাসনা করি।
ব্রহ্ম শব্দের অর্থ সর্ব্ববৃহৎ। যার থেকে বড় কেউ নেই। যিনি সকল কিছুর স্রষ্টা এবং যার মধ্যে সকল কিছুর অবস্থান ও বিলয় তিনিই ব্রহ্ম।
যে সকল কিছুই সৃষ্টি করেছেন ব্রহ্ম। সে সকল কিছুর পালন করেছেন আছেন, আর যে সবকিছুই প্রলয় করে থাকেন মহেশ্বর। ত্রিমূর্তির ভেতরে এক সত্ত্বাধিকারী পরমব্রহ্ম এই হলো চৈতন্যময় সত্ত্বা।
মহর্ষি - পতঞ্জলি - যোগদর্শনে
"ক্লেশকর্মবিপাকশৈয়রপরামৃষ্টঃ পুরুষবিশেষ ঈশ্বর ''
(যোগদর্শন - ১/২৪)
ভাবার্থঃ ক্লেশ, কর্ম, বিপাক ও আশয় এই চারের সঙ্গে যার কোন সম্বন্ধ নেই যিনি সমস্ত পুরুষের মধ্যে উত্তম, তিনিই ঈশ্বর ।
দেখুন এখানে ----
১) ক্লেশঃ-- অবিদ্যা, অস্মিতা, রাগ, দ্বেষ, অভিনিবেশ ।
২) কর্মঃ-- পূণ্য, পাপ, পূণ্যও পাপমিশ্রিত এবং পাপ পূণ্যরহিত।
৩) বিপাকঃ-- কর্মফলের নাম বিপাক।
৪) আশয়ঃ-- যাবতীয় কর্ম সংস্কারের নাম আশয়।
এই চারের সাথে সম্বন্ধহীন উত্তম পুরুষই ঈশ্বর পদবাচ্য।
এইজন্যই ঈশ্বরকে "আনন্দময়" বলা হয়েছে। অর্থাৎ তিনি কখনো দুঃখ, ক্লেশ, কর্মফল ভোগ করেন না। তিনি সর্বদা আনন্দময় স্বরূপে স্থিত।
যদি এরূপ বলা হয় যে, ঈশ্বর পৃথিবীতে জন্মগ্রহন করেন তবে বলতে হবে তিনি তার আনন্দময় স্বরূপ থেকে বিচ্যুত হলেন। কারন জন্মগ্রহনকারীর গর্ভস্থ যন্ত্রণা, কর্মফল এবং ত্রিতাপ জ্বালা ভোগ করার প্রয়োজন পরে। যদি ঈশ্বর একমুহূর্তের জন্যও তার আনন্দময় স্বরূপ থেকে বিচ্যুত হন। তবে তিনি ঈশ্বরের সঙ্গা কদাপি প্রাপ্ত হতে পারবেন না। অনেকে বলেন ঈশ্বর পৃথিবীতে জন্মগ্রহন করলেও তিনি তার স্বরূপ চ্যুত কখনো হন না। এটা অনেক বড় ভূল কথা কারন পঞ্চভৌতিক দেহ ধারণ করলে সে দেহে জরা, ব্যাধি, দুঃখ আসবেই। এমন কোন উদাহরণ কেউ দিতে পারবেন না যিনি এই ভৌতিক দেহেকে এক মুহূর্তের জন্য ও দুঃখ পাইনি।
ঈশ্বর এক এবং অদ্বিতীয় তিনি এক সত্ত্বাধিকারী পরমব্রহ্ম এই হলো চৈতন্যময় সত্ত্বা আমাদের মধ্যে রয়েছেন সাকার ও নিরাকার দৃশ্যে।
ব্রহ্মের - রূপ - কি
রূপং রূপং প্রতিরূপো বভুব তদস্য রূপং প্রতিচক্ষণায় ।
ইন্দ্রো মায়াভিঃ পুরুরূপ ঈয়তে যুক্তা হস্য হরয়াঃ শতা দশ ।।
(ঋগ্বেদ - ৬/৪৭/১৮)
অনুবাদঃ রূপে রূপে প্রতিরূপ (তাহার অনুরূপ) হইয়াছেন, সেই ইহার রূপকে প্রতিখ্যাপনের (জ্ঞাপনের) জন্য ইন্দ্র মায়াসমূহের দ্বারা বহুরূপ প্রাপ্ত হন। যুক্ত আছে ইহার অশ্ব শত দশ (অর্থাৎ সহস্র)।
পদার্থঃ (ইন্দ্রঃ) জীবাত্মা (রূপং - রূপং প্রতিরূপ বভুব) প্রত্যেক প্রাণীর রূপে তদাকার হয়ে বিরাজমান হন। (তত্ অস্য রূপং প্রতি চক্ষনায়)তাহা এই রূপে আধাত্ম দৃষ্টি দ্বারা দেখায় যোগ্য। এই জীবাত্মা (সায়াভি) নানা বুদ্ধি দ্বারাই (পুরু - রূপঃ ইয়তে) নানা রূপের জানা যায় (অস্য ইহার শাসনে, দেহ মধ্যেই (দশ শতা হরয়ঃ) দশ শত প্রাণগন অশ্ব বা ভূত্যের সমান (যুক্তাঃ) যুক্ত জ্ঞান তন্ত তথা শক্তিতন্ত রূপে কাজ করে।
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ