মনুসংহিতা - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

19 November, 2017

মনুসংহিতা

[বিঃ দ্রঃ বাজারে প্রচলিত মনুস্মৃতি অনেকাংশে প্রক্ষিপ্ত। মনুস্মৃতির মোট শ্লোক সংখ্যা ২৬৮৫। প্রক্ষিপ্ত অনুসন্ধানের পর ১৪৭১ শ্লোক প্রক্ষিপ্ত প্রমাণিত হয়েছে। এবং ১২১৪ টি মৌলিক শ্লোক বের করা হয়েছে। ডঃ সুরেন্দ্রকুমার (আচার্য) এই ১২১৪ মৌলিক শ্লোক নিয়ে বিশুদ্ধ মনুস্মৃতি প্রণয়ন করেছেন।]

মনুস্মৃতি তথা স্মৃতিশাস্ত্র
মনুসংহিতা হলো হিন্দুসমাজের মধ্যে অন্যতম বিতর্কযুক্ত গ্রন্থ । কিন্তু আমাদের মনে মনুসংহিতা নিয়ে যে ধারণা ঢোকানো হয়েছে , আমরা যা শুনি , আমরা যা জানি মনুসংহিতার সম্পর্কে , তা কখনোই বাস্তব নয় , মনুসংহিতা নিয়ে আমাদের এই ধারণা পোষণ এর কারণ হলো মনুসংহিতা গ্রন্থ টি না পড়া ।


মনুসংহিতা ২৬৮৩ পংক্তি বা শ্লোক নিয়ে ১২ অধ্যায়ে বিভক্ত।
যে সকল গ্রন্থ বেদ বিরুদ্ধ উহা আধুনিক বলিয়া শীঘ্র নষ্ট হইয়া যায় । উহাতে বিশ্বাস করা নিষ্ফল এবং মিথ্যা । ৩
-----(মনু ২/১১, ১২/৯৫,৯৬)-----

মূলত মনুসংহিতা তথা অন্যান্য সংহিতা গুলি হলো আইনশাস্ত্র বা বিধান , যদিও বর্তমান ল (law) আর এই স্মৃতিশাস্ত্র এর মধ্যে আদর্শগত পার্থক্য অবশ্যই  বিদ্যমান । আইন বা বিধান রচিত হয় বিশেষজ্ঞ মানুষ দ্বারা , আইন বা বিধান যেসময় রচিত হয় , সেসময় বিধান-রচয়িতাদের উদ্দেশ্য থাকে তৎকালীন পরিস্থিতি বিচার করে , সেই সময়ে সমাজ রক্ষা করা , দুর্বল ও স্ত্রী কে রক্ষা করা ও সমাজকে সেই সময়ের সমস্যা থেকে সুরক্ষিত রাখা ।। ঐতিহাসিক গবেষণা থেকে জানা যায় যে "যীশুর জন্ম এর চারশো বছরের মধ্যে মনুস্মৃতি এর বর্তমান মূল কাঠামোটি রুপ পেয়েছে । "বিশুদ্ধ মনুস্মৃতি দেখলেই দেখা যাবে  যে মনুর বিধান গুলি কতটা বাস্তবসম্মত ও মানবতাবাদ যুক্ত ।। তাই আজ ও মনুস্মৃতি সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক ।
মনুস্মৃতি ও বৈষম্য 

মনুস্মৃতির আধার হল বৈষম্য  । মনুর মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গি হলো সব মানুষ সমান নয় , সমান হতেও পারবে না জাগতিক স্তরে , বৈষম্য আছে ও থাকবে , একমাত্র আধ্যাত্মিক স্তরে গিয়েই সকলে সমান হবে । অন্য দিকে সংস্কৃতির ক্ষেত্রে যারা মনুর লক্ষ্য ছিল যারা নিম্নস্তরে আছে যোগ্যতাগত ভাবে অর্থাৎ শুদ্র , তাদেরকে কিভাবে ব্রাহ্মণ এর স্তরে উন্নীত করা যায় । বিশ্বজয়ী বীর সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ ও মনুর কথার প্রতিধ্বনি করেই বলেছিলেন আমাদের উদ্দেশ্য হল শুদ্রকে ব্রাহ্মণের স্তরে উন্নীত করা (ভারতে বিবেকানন্দ গ্রন্থ) ।।
মনুর বৈষম্য যথার্থ নাকি অযথার্থ

সত্য বরাবর ই সত্য , বাস্তব ও সত্য সর্বদা মিষ্ট নাও হতে পারে , তা বলে বাস্তব কে ত্যাগ করা অসম্ভব । হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় , অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দের সাথে যশোর বিশ্ববিদ্যালয় , রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় , গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দের মধ্যে সামাজিক ক্ষেত্রে বৈষম্য থাকবেই , অধ্যাপক বা ডাক্তারের সাথে রিক্সাওয়ালা বা বাস কন্ডাক্টর এর সামাজিক বৈষম্য থাকবেই,  ব্যাঙ্ক ম্যানেজার ও ক্লার্ক এর মধ্যে সামাজিক বৈষম্য থাকবেই , PhD ডিগ্রিধারী ও ক্লাস টেন পাশ করা ছাত্রের সামাজিক বৈষম্য থাকবেই ।। এরকম ভাবে সমাজের প্রত্যেক ক্ষেত্রে,  প্রত্যেক স্তরে সামাজিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম ভাবে বৈষম্য ছিল , বৈষম্য আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে , এটাই সত্য । কারোর ভালো লাগতেও পারে অথবা কারোর ভালো না ও লাগতে পারে,  তথাপি সত্য অপরিবর্তনীয় । একজন সংহিতাকার হিসেবে বাস্তববাদী মনু তাই যথাযথ ভাবেই বৈষম্য কে রেখেছেন এবং তা অবশ্যই যোগ্যতার ভিত্তিতে যথার্থ ভাবে ।। এই বৈষম্য ই জগতের নিয়ম ।।।।
সিদ্ধান্ত-  কর্মের ভিত্তিতে এই ব্রাহ্মণ,  ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শুদ্র নির্ধারিত হয় এবং শুদ্র স্তর থেকে মানুষ ব্রাহ্মণের স্তরে অবশ্যই উন্নীত হতো ।।

শুদ্রদের প্রতি মনুর দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যাক 




অর্থাৎ শুদ্র যা কিছুই করুক কোনোটাতেই পাপ হয় না । এক্ষেত্রে মনুর নিয়ম খুব স্পষ্ট , তুমি যদি ধর্ম মানতে চাও তবে মানো , না মানতে চাও , তবে না মানো , ধর্ম না মানতে চাইলে তুমি যা খুশি করো, যা খুশি আহার করো , কেউ বাধা দেবে না । কিন্তু তোমার কাছ থেকে যেমন সামাজিক ধর্ম কিছু চাইছে না তেমন তুমিও সামাজিক ধর্ম এর কাছ থেকে কিছু চাইবে না , মদ খাবো , সীমাহীন ফুর্তি করব আবার ধর্মাচরণ ও করব , ধর্মীয় মর্যাদা ও লাভ করব , দুটো একসাথে অসম্ভব । যেমন এখন যারা ছাত্র, তাদের যদি সঠিক ভাবে পাশ করতে হয় , তবে নিয়মনিষ্ঠা মেনে পড়াশোনা করতে হবে । সারাবছর পড়াশোনা করব না , অন্যান্য জিনিস করব আবার পাশ ও করব পরীক্ষাতে , এটা হতে পারে না ।। এই সহজ কথাটাই মনু বলেছিলেন আর প্রাচীন ভারতবর্ষে এরকম প্রচুর উদাহরণ দেওয়া যায় যে যোগ্যতার ফলে অনেকে শুদ্র স্তর থেকে ব্রাহ্মণের স্তরে উন্নীত হয়েছিলেন , বাস্তবে ব্রাহ্মণ,  ক্ষত্রিয় , বৈশ্য ও শুদ্র এই সব স্তর ব্যাক্তির যোগ্যতার উপর নির্ভরশীল ।।
 মনুস্মৃতি ও প্রক্ষিপ্ত 
মনু স্মৃতি হলো একটি প্রক্ষিপ্ত গ্রন্থ এবং মনুস্মৃতি যে প্রক্ষিপ্ত তার নির্ধারণ করব কি করে ?

সিদ্ধান্ত- মনুসংহিতা হলো বেদের ই সিদ্ধান্ত । তাই মনুস্মৃতিতে যদি এমন কিছু পাওয়া যায়, যা বেদের কথার সাথে সাংঘর্ষিক,  তবে বুঝতে হবে এই অংশ অবশ্যই প্রক্ষিপ্ত ।
এটি মনুসংহিতার উপর একটি গবেষণামূলক গ্রন্থ,  যেখানে গবেষণালব্দ্ধ প্রমাণের দ্বারা মনুসংহিতার প্রক্ষিপ্ত কে চিহ্নিত করা আছে ।।

পাঠকদের জন্য বিশুদ্ধ মনুস্মৃতির উপর গবেষণালব্দ্ধ গ্রন্থটির লিঙ্ক দেওয়া হচ্ছে , যাতে পাঠকগণ নিজেরাই প্রক্ষিপ্ত ও যথার্থতা নির্ণয় করতে পারেন
👇
https://drive.google.com/drive/folders/1jiUBHiH-9p4J312Q-j2cXNaVvtZgZG6w?usp=sharing
এখানে বেদের সাথে সামঞ্জস্যতা বিচার করে মনুসংহিতার প্রক্ষিপ্ত শ্লোক গুলি নির্ণয় করা হয়েছে এবং বর্তমানে ভারতে প্রক্ষিপ্ত মনুসংহিতার তুলনায় এই বিশুদ্ধ মনুসংহিতা বা অপ্রক্ষিপ্ত মনুসংহিতা বেশি প্রচলিত। এবার দেখে নেওয়া যাক বিতর্কিত মনু সংহিতার তথ্যগুলো বিশুদ্ধ মনুসংহিতার সাপেক্ষে প্রক্ষিপ্ত না অপ্রক্ষিপ্ত। 

(১) মনুসংহিতা ৯/১৮ * নারীরা ধর্মজ্ঞ নয়, এরা মন্ত্রহীন এবং মিথ্যার ন্যায় অশুভ, এই শাস্ত্রীয় নিয়ম। 
→ বিশ্লেষণ 
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত। 

(২) মনুসংহিতা ৫/১৫৪ * স্বামী দুশ্চরিত্র, কামুক বা নির্গুণ হলেও তিনি সাধ্বী স্ত্রী কর্তৃক সর্বদা দেবতার ন্যায় সেব্য। 
→ বিশ্লেষণ  
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত। 

(৩) মনুসংহিতা ৫/১৬৩ - ১৬৪ * কোনো নারী (স্ত্রী) যদি স্বামীকে অবহেলা করে, ব্যভিচারিণী বলে সংসারে তো নিন্দিত হবেই, সাথে সাথে যক্ষা, কুষ্ঠ ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হবে। শুধু তাই নয় পরজন্মে শৃগালের গর্ভে জন্ম নেবে সেই নারী।
→ বিশ্লেষণ
বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে ১৬৩ নং শ্লোকটি উপস্থিত থাকলেও ১৬৪ নং শ্লোকটি অনুপস্থিত, সুতরাং এই ১৬৪ নং শ্লোকটি প্রক্ষিপ্ত। ১৬৩ নং শ্লোকে উল্লেখ করা হয়েছে -
পতি হিত্বাৎপকৃষ্টং স্বমুৎকৃষ্টং যা নিষেবতে।
নিন্দ্যৈব সা ভবেল্লোকে পরপূর্ব্বেতি চোচ্যতে।।
[বিবাহ হবার পরে তুলনাত্মক রূপে] কোনো ভালো ব্যাক্তি পাওয়ার সম্ভবনা হওয়ার পর (যা স্বম অপকৃষ্টং পতি হিত্বা উৎকৃষ্টং পতি নিষেবতে) যে স্ত্রী নিজঃ নিম্নোক্ত কুল তথা তার গুণ সম্পন্ন পতি কে ছেড়ে দিয়ে, অন্য উত্তম কুল অথবা গুণ সম্পন্ন পতির সেবন করে (সা) সে (লোকে নিন্দ্যা+এব ভবেত) লোকেদের থেকে নিন্দা প্রাপ্ত করে (চ) এবং (পরপূর্বা+ইতি উচ্যতে) প্রথমে যে অপরের পত্নী ছিলো, তার বিষয়ে ব্যাঙ্গ করা হয়।।
(৪) মনু সংহিতা ৫/১৫৫ * স্ত্রীদের জন্য স্বামী ছাড়া পৃথক যজ্ঞ নেই, স্বামীর অনুমতি ছাড়া কোনো ব্রত বা উপবাস নেই, শুধু স্বামীর সেবার মাধ্যমেই নারী স্বর্গে যাবে। 
→ বিশ্লেষণ 
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত। 

(৫) মনু সংহিতা ৫/১৫৭ * স্ত্রী সারা জীবন ফলমূল খেয়ে দেহ ক্ষয় করবেন কিন্তু অন্য পুরুষের নামোচ্চারণ করবেন না।
→ বিশ্লেষণ 
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত। 

(৬) মনু সংহিতা ৫/১৬৮ * স্ত্রী মারা গেলে দাহ ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষ করে স্বামী আবার বিয়ে এবং অগ্ন্যাধ্যান করবেন।
→ বিশ্লেষণ 
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত। 

(৭) মনু সংহিতা ২/৬৭ * পতিসেবা, গুরুগৃহে বাস (স্বামীগৃহে বাস), গৃহকর্ম পরিচালনা করা এবং অগ্নিদেবকে সন্তুষ্ট রাখাই একজন সতী-সাধ্বী স্ত্রীর কর্তব্য।
→ বিশ্লেষণ 
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত। 

(৮) মনু সংহিতা ৯/৯৬ * সন্তান জন্ম দেওয়া নারীর কর্তব্য এবং সন্তান উৎপাদনার্থে পুরুষ সৃষ্টি হয়েছে।
→ বিশ্লেষণ
প্রজনার্থং স্ত্রিয়ঃ সৃষ্টাঃ সন্তানার্থ চ মানবাঃ।
তস্মাৎ সাধারণো ধর্ম্মঃ শ্রুতৌ পত্ন্যা সহোদিতঃ।।
(প্রজনার্থ স্ত্রিয়ঃ সৃষ্টাঃ) গর্ভধারণ করে সন্তান কে জন্ম দেওয়ার কর্মের জন্য স্ত্রীদের রচনা করা হয়েছে (চ) এবং (সন্তানার্থ মানবাঃ) সন্তানার্থে গর্ভাধান কর্মের জন্য পুরুষের রচনা হয়েছে [উভয়ে এক অপরের পূরক হওয়ার কারণে] (তস্মাত) এইজন্য (শ্রুতী) বেদে (সাধারণঃ ধর্মঃ) সাধারণ থেকে সাধারণ ধর্মকার্যের অনুষ্ঠান (পত্ন্যা সহ+উদিতঃ) পত্নীর সঙ্গে করার বিধান করেছে।।




(৯) মনু সংহিতা ২/৬৬ * যে সকল নারী একদা বৈদিক মন্ত্র-শ্লোক পর্যন্ত রচনা করেছিলেন, তাদের উত্তরসূরীদের জন্য ধর্মগ্রন্থ পাঠ সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত - অমন্ত্রক। 
→ বিশ্লেষণ 
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত। 

(১০) মনু সংহিতা ১১/৩৭ * কন্যা, যুবতী, রোগাদি পীড়িত ব্যক্তির হোম নিষিদ্ধ এবং করলে নরকে পতিত হয়।
→ বিশ্লেষণ 
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত। 

(১১) মনু সংহিতা ৫/১৫৬ * সাধ্বী নারী কখনো জীবিত অথবা মৃত স্বামীর অপ্রিয় কিছু করবেন না। 
→ বিশ্লেষণ 
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত। 

(১২) মনু সংহিতা ৯/২২ * নারীর কোনো গুণ নেই, নদী যেমন সমুদ্রের সাথে মিশে লবনাক্ত (সমুদ্রের গুণপ্রাপ্ত) হয়, তেমনই নারী বিয়ের পর স্বামীর গুণযুক্ত হন।
→ বিশ্লেষণ 
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত। 

(১৩) মনু সংহিতা ৯/২ * স্ত্রীলোকদের স্বামীসহ প্রভৃতি ব্যক্তিগণ দিনরাত পরাধীন রাখবেন, নিজের বশে রাখবেন।
→ বিশ্লেষণ 
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত।

(১৪) মনু সংহিতা ৯/৩ * স্ত্রীলোককে পিতা কুমারী জীবনে, স্বামী যৌবনে ও পুত্র বার্ধক্য রক্ষা করে, (কখনও) স্ত্রীলোক স্বাধীনতার যোগ্য নয়। 
→ বিশ্লেষণ 
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত।

(১৫) মনু সংহিতা ২/২১৩ * নারীর স্বভাবই হলো পুরুষদের দূষিত করা।
→ বিশ্লেষণ 
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত।

(১৬) মনু সংহিতা ৯/১৪ * যৌবনকালে নারী রূপ বিচার করে না, রূপবান বা কুরূপ পুরুষ মাত্রেই তার সঙ্গে সম্ভোগ করে।
→ বিশ্লেষণ 
মনুসংহিতার উক্ত অংশটি বিশুদ্ধ মনুসংহিতাতে অনুপস্থিত, সুতরাং মনু সংহিতার এই শ্লোক টি প্রক্ষিপ্ত।
বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত  
মনুসংহিতার উক্ত অংশগুলি এই জন্য প্রক্ষিপ্ত কারণ বেদের সাথে এর সামঞ্জস্যতা নেই এবং এগুলি মনুর সাথেই পরস্পর বিরোধী। মনু তার সংহিতা তে নারী কল্যাণের বহু উপায় উল্লেখ করে গেছেন , মনুসংহিতাতে মনু নারী কল্যাণের বহু উপায় যে করে গেছেন , তা পাঠকগণ বিশুদ্ধ মনুসংহিতা পড়লেই বুঝবেন পাঠকগণ , বিশুদ্ধ মনুসংহিতার এক-তৃতীয়াংশ জুড়েই নারীকল্যাণ এর কথা বলা আছে , যেহেতু নিবন্ধ এর বিষয় নয় , তাই ঐসকল শ্লোক গুলি দেওয়া হলো না ।।
মনুসংহিতার ২/২১৩ ও ২/২১৪ সমীক্ষা 

स्वभाव एष नारीणां नराणामिह दूषणम् ।
अतोऽर्थान्न प्रमाद्यन्ति प्रमदासु विपश्चितः ॥ २। २१३॥
-इह इस संसार में एषः स्वभावः यह स्वाभाविक ही है कि नारीणां नराणां दूषणम् स्त्री पुरूषों का परस्पर के संसर्ग से दूषण हो जाता है – दोष लग जाता है अतः अर्थात् इस कारण से विपश्चितः बुद्धिमान् व्यक्ति प्रमदासु स्त्रियों के साथ व्यवहारों में न प्रमाद्यन्ति कभी असावधानी नहीं करते ।-पण्डित राजवीर शास्त्री जी


स्वभाव एष नारीणां नराणां इह दूषणम् ।अतोऽर्थान्न प्रमाद्यन्ति प्रमदासु विपश्चितः ।। 2/213 মনুস্মৃতি

অর্থ-  ইহলোকে (পৃথিবীতে) মনুষ্যদিগকে দূষিত করাই স্ত্রী দের স্বভাব,  এই জন্য পন্ডিতেরা স্ত্রীলোক সম্পর্কে অনবধান হয়েন না । 

अविद्वांसं अलं लोके विद्वांसं अपि वा पुनः ।प्रमदा ह्युत्पथं नेतुं कामक्रोधवशानुगम् ।2/214

অর্থ - ইহলোকে কোনো পুরুষ,  আমি বিদ্বান ও জিতেন্দ্রিয় মনে করে স্ত্রীলোকের সন্নিধানে বাস করিবে না , যেহেতু বিধান ই হোক বা অবিধান ই হোক , দেহধর্মবশতঃ কাম-ক্রোধের বশীভূত পুরুষ  কে কামিনাগণ  অনায়াসে উন্মার্গগামী করিতে সমর্থ হয় ।।

বিশ্লেষণ 👉 এখানে মনু কোনো বিধান দেন নি , দিয়েছেন এক নৈতিকতার পাঠ কারণ তিনি বলেই দিয়েছেন "যেহেতু বিধান ই হোক বা অবিধান ই হোক" ।। এখানে তিনি সকল পুরুষের কথা ও বলেন নি , সকল মহিলা দের কথা ও বলেন নি , বলেছেন কিছু নির্দিষ্ট চরিত্রের নারী-পুরুষের কথা , মনু বলেছেন 👉 
দেহধর্মবশতঃ কাম-ক্রোধের বশীভূত পুরুষ কে কামিনাগণ অনায়াসে উন্মার্গগামী করিতে সমর্থ হয় ।। এখন সত্য তিক্ত হলেই কি তাকে বর্জন করা উচিত ? মনুর এই নৈতিকতার পাঠ যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ও বাস্তবোচিত , তার জ্বলন্ত প্রমাণ হলো আজকের দিনে "HONEY TRAPPING" । বিশ্বে কোনো দেশ নেই আজ , যে দেশ এই "HONEY TRAPPING" এর জন্য চিন্তিত নয় এবং এই 
"HONEY TRAPPING"  রোধে আইন করেনি বা ব্যবস্থা নেয়নি ।। এখন "HONEY TRAPPING" ঘটতে পারে , বিভিন্ন দেশের সরকার এই TRAP রুখতে ব্যবস্থা নিতে পারে , আর এইরকম ঘটনা ও পরিস্থিতির উদ্ভব ই যাতে না হয় , সেই বিষয়ে মনু বাস্তবসম্মত বিধান দিলেই তা মানবতা ও নারী বিরোধী হয়ে যায় ? 
             যুক্তিবাদী পাঠকদের কাছে প্রশ্নটি রইল
HONEY TRAPPING সম্পর্কে জানতে এই লিঙ্কে প্রবেশ করুন

                  
      স্মৃতি ও শ্রুতির মধ্যে বিরোধ হলে কি করণীয় ?
या वेदबाह्याः स्मृतयो याश्च काश्च कुदृष्टयः ।सर्वास्ता निष्फलाः प्रेत्य तमोनिष्ठा हि ताः स्मृताः ।। 12/95 মনুস্মৃতি

অর্থ - যে স্মৃতি বেদমূলক নয়, কেবল দৃষ্টার্থ , যেমন চৈত্যবন্দনে স্বর্গ হয়, এইরুপ যে স্মৃতি এবং যে সকল স্মৃতি অসৎ তর্কস্বরুপ অর্থাৎ দেবতা নাই এবং অপূর্ব্বাদি নাই,  এই প্রকার চার্বাকাদিসম্মত , তমোগুণে উৎপন্ন,  পরলোকে ফলদায়ক নহে , পরন্তু ইহা দ্বারা নরক ফললাভ হয় ।।

उत्पद्यन्ते च्यवन्ते च यान्यतोऽन्यानि कानि चित् ।तान्यर्वाक्कालिकतया निष्फलान्यनृतानि च ।।12/96 মনুস্মৃতি 
অর্থ - যে সকল শাস্ত্র বেদমূলক নয়, অন্য দৃষ্টমূলক , তাহা উৎপত্তিমাত্রেই বিনষ্ট হয় , বেদমূলকত্ব প্রযুক্ত স্মৃত্যাদির প্রামাণ্য জানিবে , ঐ সকল শাস্ত্র  (যা বেদানুকূল নয়) তা নিস্ফল ও মিথ্যা  জানিবে 

सर्वं तु समवेक्ष्येदं निखिलं ज्ञानचक्षुषा ।श्रुतिप्रामाण्यतो विद्वान्स्वधर्मे निविशेत वै ।। 2/8 মনুস্মৃতি

অর্থ - শাস্ত্র সকল জ্ঞান চক্ষুর্দ্বারা বিশেষরুপে পর্যালোচনা করিয়া বিদ্বানেরা বেদমূলক কর্তব্য ধর্ম অবগত হইয়া তাহার অনুষ্ঠান করবেন ।
अर्थकामेष्वसक्तानां धर्मज्ञानं विधीयते ।धर्मं जिज्ञासमानानां प्रमाणं परमं श्रुतिः । । 2/13 মনুস্মৃতি

অর্থ - ধর্ম জিজ্ঞাসু ব্যাক্তির নিকট প্রকৃষ্ট প্রমাণ বেদ , যেহেতু বেদ ও স্মৃতির অনৈক্যে বেদের মত ই গ্রাহ্য হয় ।।
श्रुतिस्मृतिपुराणानां बिरोधो यत्र दृश्यते ।
तत्र श्रौतं प्रमाणन्तु तयोर्द्बेधे स्मृतिर्ब्वरा ।। 1/4 ব্যাস সংহিতা 
অর্থ - যেখানে স্মৃতি , শ্রুতি (বেদ) ও পূরাণের বিরোধ দেখা যায়, সেখানে শ্রুতিকথিত (বেদ নির্দেশিত) বিধিই বলবান । 

সহজ সিদ্ধান্ত -  শ্রুতি (বেদ) এর সাথে যদি কোনো স্মৃতি বা পূরাণ বা অন্যান্য কোনো গ্রন্থের কোনো মতের অমিল দেখা যায় , তা তৎক্ষণাৎ পরিত্যাজ্য , এটাই শাস্ত্র এর সিদ্ধান্ত ।।


বৃহস্পতি স্মৃতিতে বলা হয়েছে-

বেদার্থপ্রতিবদ্ধদ্ধাত্ প্রাধাণ্যং তু মনো মৃতম্। (বৃহস্পত্তিস্মৃতি, সংস্কারখণ্ড-১৩)

অর্থাৎ বেদার্থ অনুকূলে বর্ণন হওয়ার কারনে মনুস্মৃতিই অন্য স্মৃতি অপেক্ষা] প্রধান।

কিন্তু বর্তমানে উপলব্ধ মনুস্মৃতিতে অসংখ্য শ্লোক বেদ বিরুদ্ধ, পরস্পরবিরুদ্ধ এবং পক্ষপাতপূর্ণ পাওয়া যায়। যার জন্য আর্য সমাজ ও অন্য কতিপয় ব্যাক্তিবর্গ ছাড়া সকলেই মনুস্মৃতির প্রতি অশ্রদ্ধা ও নিন্দিত ভাবনা পোষণ করে। ঋষি দয়ানন্দজীর বচনাদি হইতে প্রেরণা এবং মার্গদর্শন প্রাপ্ত হয়ে, ঋষিদের মানা মনুস্মৃতিকে এইরূপ অবস্থা থেকে মুক্ত করার জন্য হরিদ্বার গুরুকুল কাংড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড.সুরেন্দ্রকুমারজী এই বিষয়ে অনুসন্ধানকার্য প্রারম্ভ করেন। তিনি প্রক্ষিপ্তপাঠ নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে পূর্বাগ্রহ বা পক্ষপাত ভাবনা | পোষণ করেননি অপিতু এরূপ কিছু মানদণ্ডকে আধারশীলা করেছেন যা বিদ্বানদের নিকট সর্বমান্য। সেই মানদণ্ডগুলো হলো ১. অন্তর্বিরোধ বা পরস্পরবিরোধ ২ প্রসঙ্গবিরোধ ৩ বিষয়বিরোধ বা প্রকরণবিরোধ। ৪. অবাস্তরবিরোধ ৫. শৈলীবিরোধ ৬ পুনরুক্তি ৭. বেদবিরোধ।

মনুস্মৃতির সকল শ্লোক যথাস্থানে বা যথাক্রম রেখে, যেথায় প্রক্ষিপ্ত প্রতিত হয়েছে সেখানে পূর্বোক্ত আধারের নামোল্লেখ পূর্বক অনুশীলন নামক সমীক্ষা যুক্ত করে দিয়েছেন, যেন পাঠক স্বয়ম্ বিচার-বিবেচনা করতে পারেন। বর্তমানে উপলব্ধ মনুস্মৃতির শ্লোকসংখ্যা- ২৬৮৫। তিনি প্রক্ষেপানুসন্ধান করে ১৪৭১টি শ্লোক প্রক্ষিপ্ত এবং ১২১৪টি শ্লোক মৌলিক নির্ণয় করেছেন। তাছাড়া প্রায় ৬০০ শ্লোকে অনুশীলন সমীক্ষা দিয়ে তাতে শ্লোকের ভাব, বিবাদ, মান্যতা ও অন্যান্য বিচারণীয় বিষয়ে মনন করে সঠিকটা বুঝানোর প্রয়াস করেছেন। সমীক্ষায় বেদ, ব্রাহ্মণ গ্রন্থ, স্মৃতি, উপনিষদ, দর্শন, ব্যাকরণ ও সূত্রগ্রন্থ, নিরুক্ত, সুশ্রুত এবং কৌটিল্য অর্থশাস্ত্র সহ অনেক গ্রন্থের প্রমাণ উদ্‌ধৃত করে মহর্ষি মনুর মান্যতাকে অধিক প্রামাণিক সিদ্ধ করেছেন। এখানে আমি প্রক্ষিপ্ত শ্লোকগুলোর রেফারেন্স উদ্‌ধৃত করছি তদ্ভিন্ন শ্লোকগুলোকে মৌলিক হিসেবে নির্ণয় করা হয়েছে।

০প্রথম অধ্যায়ের প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের রেফারেন্সসমূহ-

১/৭-১৩, ১/১৭, ১/২৪-২৫, ১/৩২-৪১, ১/৫০-৫১, ১/৫৫-৫৬, ১/৫৮-৬৩, ১/৬৬, ১/৮১৮৬, ১/১২-১০৭,

১/১১১-১১৯।

০দ্বিতীয় অধ্যায়ের প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের রেফারেন্সসমূহ-

২/৭, ২/১৬, ২/১৯, ২/২৪, ২/৫২, ২/৬১-৬২, ২/৬৬-৬৭, ২/৭০, ২/৭৫, ২/৭৯৮৭, ২/১১৬, ২/১১৮, ২/১২৩, ২/১৩০-১৩৫, ২/১৪৫, ২/১৬৯-১৭৪, ২/১৮১, ২/১৮৭-১৯০, ২/২০১, ২/২০৭-২১১, ২/২২৪-২৩৭, ২/২৪৪, 2/289-281

তৃতীয় অধ্যায়ের প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের রেফারেন্সসমূহ

- ৩/১১:১১৯, ৩/২২-২৬, ৩/২৯ শ্লোকটি মহর্ষি মনুর নিজ বিধান নয় কেননা এটির খণ্ডম ৩/৫১-৫৪ শ্লোকে মহর্ষি।

মনু নিজেই করেছেন) ৩/৩৫-৩৮, ৩/৪৩-৪৪, ৩/৬৩-৬৬, ৩/৮৩, ৩/৯৩, ৩/৯৫-৯৮, ৩/১০০, ৩/১০৮-১১২,,

৩/১১৫, ৩/১১৯-২৪

চতুর্থ অধ্যায়ের প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের রেফারেন্সসমূহ-
৪/৪-১০, ৪/১৮, ৪/২২-২৪, ৪/২৬২৮, ৪/৩৩-৩৪, ৪/৩৬-৩৯, ৪/৪৩-৬৬, ৪/৬১৭৮, ৪/৮০-৯১, ৪/৯৫-১২৭, ৪/১২৯:১৩২, ৪/১৩৫-১৩৬, ৪/১৪০, ৪/১৪২-১৪৪, ৪/১৫০-১৫৩, ৪/১৬৫-১৬৯, ৪/১৮১১৮৫, ৪/১৮৮ ১৮৯, ৪/১৯১, ৪/১৯৭-২০০, ৪/২০২, ৪/২০৫ 226, ৪/2২৮২৩২, ৪/২৩৪-২৩৭, ৪/২৪৭-২৫৪।

০ পঞ্চম অধ্যায়ের প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের রেফারেন্সসমূহ-

৫/১-৪, ৫/৬৭, ৫/১১-২৩, ৫/২৬-৪৪, ৫/৫০, ৫/৫২-৫৬, ৫/৫৮-১০৪, ৫/১০৮, ৫/১১৩, ৫/১২৫, ৫/১২৭-১৪৫,

৫/১৪৭-১৪৮, ৫/১৫৩-১৬২, ৫/১৬৪, ৫/১৬৬, ৫/১৬৮১

ষষ্ঠ অধ্যায়ের প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের রেফারেন্সসমূহ- সপ্তম অধ্যায়ের প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের রেফারেন্সসমূহ-

৬/৬, ৬/১৭-২৫, ৬/২৮, ৬/৩১-৩২, ৬/৩৪-৩৫, ৬/৩৭, ৬/৪৪, ৬/৫০-৫১, ৬/৫৩-৫৪, ৬/৫৬, ৬/৬৮-৬৯, ৬/৭৬-৭৯, ৬/৮৩, ৬/৮৬, ৬/৯৪-৯৬

৭/৮-১২, ৭/১৫, ৭/২০-২৩, ৭/২৯, ৭/২, ৭/৪০-৪২, ৭/৫৮-৫৯, ৭/৭২-৭৩, ৭/৮৩-৮৬, ৭/৮৮, ৭/১০, ৭/১০৯,

৭/১১৮-১১৯, ৭/১৩৩-১৩৬, ৭/১৩৮, ১/১৪৯-১৫০, ৭/১৮২-১৮৩, ৭/১০৩, ৭/১৯৯, ৭/২০৫, ৭/২১৮-২১৯।

অষ্টম অধ্যায়ের প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের রেফারেন্সসমূহ-

৮/২০-২৪, ৮/৩৭-৪১, ৮/৪৬, ৮/৪৮-৫০, ৮/৬০, ৮/৬২, ৮/৬৫-৬৭, ৮/৭০-৭১, ৮/৭৭, ৮/৮২, ৮/৮৫-৯০, ৮/৯২-৯৫, ৮/১৭-১১৬, ৮/১২৩-১২৫, ৮/১৩৯, ৮/১৪১১৪২, ৮/১৪৭-১৫০, ৮১৫২, ৮১৬৮১৭৭, ৮/১৯০, ৮/১৯২, ৮/২০৪-২০৫, ৮/২০৬-২০৯, ৮/২১৭, ৮/২২৪-২২৭, ৮/২৪২-২৪৩, ৮/২৫৬ ২৫৭, ৮/২৫৯-২৬১, ৮/২৬৭-২৭২। ৮/২৭৬ ২৭৭, ৮/২৭৮-২৮৫, ৮/২৮০-৩০০, ৩-৩০৫, ৮/৩১২-৩১৩, ৮/৩২৫-৩৩১, ৮/৩৩৩, ৮/৩৩৯-৩৪২, ৮/৩৪৮-৩৪৯, ৮/৩৫৩, ৮/৩৫৬, ৮,৩৫৮-৩৭০, ৮/৩৭৩৩৮৫, ৮/৩৯০-৩৯৭,

b/804, b/850-8201 নবম অধ্যায়ের প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের রেফারেন্সসমূহ -

৯/২-৩, ৯/১৪-২৪, ৯/২৯-৩০, ৯/৩৪-৪৮, ৯/৫০-৫১, ৯/৫৪-৫৫, ৯/৬০-৬১, ৯/৬৪-৬৮, ৯/৭০-৭৩, ৯/৭৭-৮০, ১/৮২৮৭, ১৯৯২-৯৫, ৯/৯৭-১০০, ১/১০৬-১০৭, ১/১০১, ১/১১৩-১১৫, ৯/১২০-১২৬, ৯/১২৮-১২৯, ৯/১৩২-১৩৩, ৯/১৩৫-১৩৭, ৯/১৩৯,১৪০, ৯/১৪২-১৪৪, ৯/১৪৮-১৭৫, ৯/১৭৭-১৯১, ৯/১৯৮, ৯/২০৪-২০৫, ৯/২১৯, ৯/২২৯ ২৩০, ৯/২৩৫-২৪৮, ৯/২৭৩, ১/২৮০, ৯/২৯০-২৯৩, ৯/৩১৩-৩২৩, ২৯/৩২৭-৩২৮, ১৯/৩৩৬।

দশম অধ্যায়ের প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের রেফারেন্সসমূহ-

১০/১-৩, ১০/৫-৪৪, ১০/৪৬-৫৫, ১০/৫৯৮-৬৪, ১০/৬৬১৩০। একাদশ অধ্যায়ের প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের রেফারেন্সসমূহ -

১১/১-৪৩, ১১/৪৮-৫২, ১১/৫৫-১৯১, ১১/১৯৭-২০৩, ১১/২০৫-২০৯, ১১/২১৬, ১১/২১৮-২২২, ১১/228-225. ১১/২৩৫২৪৫, ১১/২৪৮-২৬৩।

(ড সুরেন্দ্রকুমারজীর ভাষ্যে দেওয়া উরু একাদশ অধ্যায়ের ৪৭ নং শ্লোকটি

[প্রায়ো নাম তপঃ। প্রোক্তম চিত্তং নিশ্চয় উচ্যতে।
তপো নিশ্চয়সংযুক্তং প্রয়শ্চিত্তমিতি স্মৃতম।।।

"মানবেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, চৈতালি দত্ত, ভরতচন্দ্র শিরোমণিকৃত বাংলা অনুবাদিত সহ অন্যান্য অনেক অনুবাদ বা ভাষ্যেই উপলব্ধ নয় তাই বিশুদ্ধ মনুস্মৃতিতে ৪৭ নং শ্লোক মৌলিক হিসেবে গণনা করা হলেও বর্তমানে উপলব্ধ বাংলা অনুবাদিত মনুস্মৃতিতে দেওয়া ৪৭ শ্লোকটি মৌলিক শ্লোক হিসাবে যোগ হয়নি, কেননা সুরেন্দ্রকুমারজীর ভাষ্যে এই [বাংলা অনুবাদে দেওয়া-

প্রায়শ্চিত্তীয়তাং প্রাপ্য দৈবাৎ পূৰ্ব্বকৃতেন বা।

ন সংসর্গ রজেৎ সভিঃ প্রায়শ্চিত্তেংকৃতে দ্বিজঃ।।

৪৭ নং শ্লোকটি গ্রহণই করেননি। তাছাড়াও প্রচলিত বাংলা অনুবাদে দেওয়া ৫২ নং শ্লোকটি-

{দীপহন্তা ভবেদদ্ধা কাণো নির্বাপকো ভবেৎ।

হিংসয়া ব্যাধিভূয়ত্ত্ব স্ফীতোऽন্যগ্রাভিমর্ষকঃ]

বিশুদ্ধ মনুস্মৃতিতে গ্রহণ করা হয়নি। এই শ্লোকটি শ্রীমকুরুকভটবিরচিত ভাষ্য সহ কোন কোন ভাষ্যে উপলব্ধ হয়না। আবার কোন কোন ভাষ্যে ৫১ য বা শ্লোকনাম্বার বাতিত উল্লেখ পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে বিশুদ্ধ ভাষ্যে ৫২ নং এর জায়গায় ৫৩নং শ্লোকটি গ্রহণ করা হয়েছে সেরূপ ক্রমান্বয়ে পরবর্তীতে সকল শ্লোক ৫৩ নং এর জায়গায় ৫৪নং ৫৪ এর জায়গায় ৫৫নং শ্লোক এসে গেছে। এভাবে করে ২৬৬ এর জায়গায় ২৬৫টি শ্লোক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে এই আর্টিকেলে আপনাদের সুবিধার্থে বাংলা অনুবাদিত মনুমৃতির শ্লোক নং অনুযায়ী প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের নাম্বারগুলো সাজিয়ে দিয়েছি। বিশুদ্ধ মনুস্মৃতিতে ২৬৬ নং শ্লোক হিসেবে

*ভাষ বোऽভিহিতঃ ক্রিৎসন প্রায়শ্চিতস্য নির্ণয়ঃ।

নিঃশ্রেয়সম ধর্ম বিধিং বিপ্রসোম নিবোধত।।"

এই শ্লোকটি গ্রহণ করা হয়েছে।

যেরূপ ৫২ নং শ্লোকটি কোন ভাষ্যে আছে কোন ভাষ্যে নেই, কোন ভাষো ৫১খ কিংবা নাম্বার ছাড়া উল্লেখ পাওয়া যায় সেরূপ উক্ত ভাষ্যে দেওয়া ৪৭ এবং ২৬৬ নং শ্লোকটি কোন ভাষ্যে আছে কোন ভাষ্যে নেই। কোন ভাষ্যে ৪৭ এবং ২৬৫ নং শ্লোকের সাথেই নাম্বার ছাড়া উল্লেখ পাওয়া যায়। যেমন পণ্ডিত নধুরাম মহাশঙ্কর দ্বারা গুঞ্জরাতি ভাষায় অনুবাদিত ভাষো পাওয়া যায়।

অর্থাৎ আপনি বাংলা ভাষায় বর্তমানে উপলব্ধ মনুস্মৃতিতে দেওয়া ৪৭ নং শ্লোকটি বিশুদ্ধ হিসাব না করে বাকি সকল শ্লোক উক্ত আর্টিকেলে দেওয়া রেফারেন্স অনুযায়ী প্রক্ষিপ্ত মিলিয়ে নিতে পারেন।)

দ্বাদশ অধ্যায়ের প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের রেফারেন্সসমূহ-

১২/১২, ১২/১০:২৩, ১২/৫৩-৭২, ১২/৭৫-৮০, ১২/৮৫, ১২/৮৬-৯০, ১২/১০৩, ১২/১০৭, ১২/১১৭, ১২/১২০-১২১, ১২/১২৬)

1. প্রথম অধ্যায়ে মোট ১১৯টি শ্লোক, তারমধ্যে ৬৩টি প্রক্ষিপ্ত এবং ৫৬টি মৌলিক। 
2. দ্বিতীয় অধ্যায়ে মোট ২৪৯টি শ্লোক, তারমধ্যে ৬০টি প্রক্ষিপ্ত এবং ১৮৬টি মৌলিক।
3.তৃতীয় অধ্যায়ে মোট ২৮৬টি শ্লোক, তারমধ্যে ২০২টি প্রক্ষিপ্ত এবং ৮৪টি মৌলিক।

4.চতুর্থ অধ্যায়ে মোট ২৬০টি শ্লোক, তারমধ্যে ১৭০টি প্রক্ষিপ্ত এবং ৯০টি মৌলিক।

5.পঞ্চম অধ্যায়ে মোট ১৬৯টি শ্লোক, তারমধ্যে ১২৮টি প্রক্ষিপ্ত এবং ৪১টি মৌলিক।

6. ষষ্ঠ অধ্যায়ে মোট ৯৭টি শ্লোক, তারমধ্যে ৩৩টি প্রক্ষিপ্ত এবং ৬৪টি মৌলিক।

7. সপ্তম অধ্যায়ে মোট ২২৬টি শ্লোক, তারমধ্যে ৪২টি প্রক্ষিপ্ত এবং ১৮৪টি মৌলিক।

৪.অষ্টম অধ্যায়ে মোট ৪২০টি শ্লোক, তারমধ্যে ১৮৭টি প্রক্ষিপ্ত এবং ২৩৩টি মৌলিক।

9 নবম অধ্যায়ে মোট ৩৩৬টি শ্লোক, তারমধ্যে ১৭১টি প্রক্ষিপ্ত এবং ১৬৫টি মৌলিকা

10. দশম অধ্যায়ে মোট ১৩১টি শ্লোক, তারমধ্যে ১২৪টি প্রক্ষিপ্ত এবং ৭টি মৌলিক।

11.একাদশ অধ্যায়ে মোট ২৬৬টি শ্লোক, তারমধ্যে ২৩৪টি প্রক্ষিপ্ত এবং ৩২টি মৌলিক।

12 দ্বাদশ অধ্যায়ে মোট ১২৬টি শ্লোক, তারমধ্যে ৫৪টি প্রক্ষিপ্ত এবং ৭২টি মৌলিক।

মোট শ্লোক (১৯৯+২৪৯+২৮৬+২৬০+১৬৯+৯৭+২২৬ + ৪২০, ৩৩৬ ১৩১+২৬৬+১২৬) = ২৬৮৫

প্রক্ষিপ্ত শ্লোক- (৬৩+৬৩+২০২+১৭০+১২৮+৩৩+৪২+১৮7 +191+124+238+৫৪) = ১৪৭১

মৌলিক শ্লোকসংখ্যা- (৫৬+১৮৬ ৮৪+৯০+১+64+188 +233+১৬৫+৭+৩২+৭২) - ১২১৪

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ