জৈমিনি - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

14 January, 2018

জৈমিনি

মহর্ষি  জৈমিনি শ্রীকৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের শিষ্য এবং ভারতীয় দর্শনের মীমাংসা শাখার এক মহান দার্শনিক।প্রাচীন ভারতবর্ষের মীমাংসা দর্শনের অন্যতম প্রধান ঋষির নাম জৈমিনি। বেদব্যাসের পিতা ঋষি পরাশরের পুত্র জৈমিনি ছিলেন মহর্ষি বেদব্যাসের শিষ্য। বেদ চার ভাগে ভাগ করার দায়িত্ব যে চারজন মুনিকে দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে পৈইলা, বৈশম্পায়ন ও সমান্তুর সাথে জোতির্বিদ্যায় প্রগাঢ় জ্ঞানের অধিকারী জৈমিনিও ছিলেন। তাঁর ভাগে পড়েছিল সামবেদ। তিনি মার্কণ্ডেয় পুরাণেরও রচয়িতা। মহর্ষি জৈমিনি কৃত মহাভারতের আশ্বামেধিক পর্ব,মীমাংসা সুত্র, জৈমিনি ব্রাহ্মণ(সামবেদ),জৈমিনি ভারত,ন্যায়মালা,পুর্বপক্ষ উল্লেখযোগ্য।জৈমিনির খ্যাতি প্রধানত তার পূর্ব মীমাংসা সূত্র গ্রন্থটির জন্য। এই গ্রন্থের অপর নাম কর্ম মীমাংসাজৈমিনির রচনা বলেই মীমাংসাসূত্রকে ‘জৈমিনিসূত্র’ও বলা হয়ে থাকে। এই গ্রন্থে বৈদিক অনুশাসনগুলির প্রকৃতি আলোচনা করা হয়েছে। প্রাচীন ভারতীয় দর্শনের ষড় দর্শন বিভাগের পূর্ব মীমাংসা শাখাটির উদ্ভব এই গ্রন্থ থেকেই। এতে প্রায় ৩,০০০ সূত্র রয়েছে। এই বইতে কর্ম বা অনুষ্ঠান ও ধর্ম বা ধর্মীয় কর্তব্যের উপর ভিত্তি করে বেদ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সঙ্গে প্রাচীন উপনিষদ্‌গুলির টীকাও রয়েছে। ঋষি শ্রীকৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস বেদকে চার ভাগে ভাগ করে তার চার শিষ্যের (পৈল, বৈশম্পায়ন, জৈমিনি ও সুমন্তু) এক এক জনকে এক একটি ভাগ শিক্ষা দেন। জৈমিনি সামবেদ শিক্ষা করেছিলেন(জীবনীকোষ প্রথম খণ্ড, শশিভূষণ বিদ্যালঙ্কার, সদেশ, কলকাতা, ১৪১৩ সংস্করণ, পৃ. ৪৯৩ দ্রষ্টব্য)।মীমাংসা-সূত্রকার মহর্ষি জৈমিনি বেদকে মন্ত্র ও ব্রাহ্মণ– এই দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। মন্ত্র হচ্ছে সর্বপ্রাচীন ভাগ। মন্ত্রের ব্যাখ্যা করা হলো ব্রাহ্মণের কর্ম এবং যজ্ঞের বিধিবিধানে তার প্রয়োগ করা। মূলত যাগ-যজ্ঞ সম্বন্ধে নানা প্রকার আচার-অনুষ্ঠান ও বিধি-নিষেধমূলক নির্দেশিত গদ্যে রচিত সাহিত্যই ‘ব্রাহ্মণ’। জৈমিনীয় বা তলবকার ব্রাহ্মণ। কৃষ্ণ-যজুর্বেদ-সংহিতার সঙ্গে সংযুক্ত।বাংলাভাষী অঞ্চলে যেমন কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস রচিত মহাভারত বিশেষ পরিচিত, তেমনি ভারতবর্ষের কোনও কোনও অঞ্চলে জৈমিনি রচিত মহাভারতের জনপ্রিয়তা বেশি। জৈমিনির সে মহাভারতের প্রধান অংশ হলো অশ্বমেধিক পর্ব; যদিও জৈমিনি অন্যান্য পর্বেরও রচনা করেছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে। কিন্তু ঐ একটি পর্বই বর্তমানকাল পর্যন্ত পাঠকের কাছে লভ্য। মূল সংস্কৃত থেকে সে গ্রন্থটি জৈমিনি ভারত শিরোনামে রোহিনীনন্দন সরকারের গদ্য অনুবাদে বাংলাভাষায় ১২৯১ বঙ্গাব্দে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়।পৌরাণিক কাহিনিটি এমন যে বৈশম্পায়নের সাথে জৈমিনিও বেদব্যাসের নিকট থেকে মহাভারত শ্রবণ করেন। কিন্তু পরবর্তীকালে মহাকাব্যটির কিছু কিছু বিষয়ে জৈমিনির মধ্যে দ্বিধা জাগে। কিন্তু সে সময় বেদব্যাস উপস্থিত না থাকায় জৈমিনি সেকালের আরেক খ্যাতিমান ঋষি মার্কণ্ডেয়র কাছে যান। মার্কণ্ডেয় নিজেও তখন তীর্থযাত্রার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। তাই তিনি জৈমিনিকে বিন্ধ্যপর্বতে বাসরত চার পাখির কাছে যেতে নির্দেশ দেন। পিঙ্গ, বিবধ, সুপুত্র এবং সুমুখা নামের সে চার পাখি যেমন ছিল ধর্মীয় গ্রন্থসমূহ বিষয়ে অবগত, তেমনি তাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল তারা মানুষের ভাষায় কথা বলতে পারত। জৈমিনির প্রধান প্রশ্ন ছিল দুটি : একটি দ্রৌপদীর পঞ্চবিবাহের সম্ভাবতা নিয়ে এবং অন্যটি দ্রৌপদীর পাঁচ পুত্রের অকাল মৃত্যুর গূঢ় কারণ নিয়ে। মার্কণ্ডেয় পুরাণে এ সংক্রান্ত সংলাপ বর্তমান।


জৈমিনি ভারত-এ মোট ৬৮টি পর্ব রয়েছে। শুরু হয়েছে ‘মঙ্গলাচরণ, জনমেজয় প্রশ্ন, যুধিষ্ঠির বাক্য, অশ্বমেধ কল্পনা ও ভীমবাক্য’ দিয়ে আর শেষ হয়েছে ‘অশ্বমেধ যজ্ঞ সমাপ্তি’ দিয়ে। বাংলা ভাষায় বইয়ের আকারে এ মহাভারতটির পৃষ্ঠা সংখ্যা ৫৩৮। এ মহাভারতেও শুরুতে নারায়ণ, সরস্বতী এবং ব্যাসদেবকে প্রণাম করা হয়েছে। এবং প্রথম অধ্যায়ে জনমেজয়ের প্রশ্ন রয়েছে জৈমিনির নিকট। প্রশ্নটি হলো, ‘আমার পূর্ব্ব পিতামহ ধর্ম্মরাজ যুধিষ্ঠির কীরূপে সবান্ধবে যজ্ঞপ্রধান অশ্বমেধের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন, অনুকুম্পাপুরঃসর তাহা যথাবৎ কীর্ত্তন করিয়া আমার কৌতূহল চরিতার্থ করুন। ’ জনমেজয়ের সেই কৌতূহল চরিতার্থ করতেই জৈমিনির মহাভারত আখ্যান। পাঠকের নিশ্চয়ই মনে আছে কৈষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের মহাভারতে কাহিনী বর্ণনার এই দায়িত্ব নিয়েছিলেন বৈশম্পায়ণ, যিনি উপস্থিত ছিলেন জনমেজয়ের সর্পসত্রে।

বাংলা ভাষায় মহাভারত অনুবাদের প্রথম যুগে সঞ্জয়, কবীন্দ্র, শ্রীকর নন্দীসহ পরবর্তী অধিকাংশ অনুবাদকগণ জৈমিনি মহাভারতকে আশ্রয় করেছেন। দীনেশচন্দ্র সেন তাঁর বঙ্গভাষা ও সাহিত্য (৩য় পরিবর্ধিত সংস্করণ কলকাতা, ১৮৯৭) জানিয়েছেন কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাসের তুলনায় জৈমিনি ভারতের বেশি গ্রাহ্যতার কারণ। ব্যাসকৃত মহাভারত বিশালাকায় হওয়া একটি প্রধান প্রতিবন্ধক কোনও সন্দেহ নেই। অন্য আরেকটি কারণ হলো হিন্দু ধর্মের পুনরুত্থানকারীদের মধ্যে জৈমিনি ছিলেন অগ্রণী ব্যক্তিত্ব। তাই মধ্যযুগের বাংলাদেশে জৈমিনি মহাভারতের কদর বৃদ্ধি পায় যেটি কাশীদাস কর্তৃক মহাভারতের অনুবাদের সাথে হ্রাস পাওয়া শুরু করে। সবশেষে কালীপ্রসন্ন সিংহের মহাভারতের গদ্যানুবাদের সাথে সাথে বাংলাভাষী অঞ্চলে যে মহাভারত সবচেয়ে বেশি আদৃত হয়েছে গত এক শতাব্দীর বেশি কাল ধরে সেটি হলো কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের মহাভারত। 
এই জৈমিনি এবং মীমাংসা-সূত্রকার একব্যক্তি কিনা ভিন্নমত পাওয়া যায়। আবার পঞ্চতন্ত্র-এর (২/৩৬) উপাখ্যান অনুসারে জৈমিনি হস্তীপদদলিত হয়ে মারা যান বলে উল্লেখ আছে। ভাগবত পুরাণে (১২/৬/৫৫) বলা হয়েছে আচার্য ব্যাস-এর কাছে জৈমিনি সামবেদসংহিতা অধ্যয়ন করেছিলেন। এ জাতীয় কোন উক্তির উপরই ঐতিহাসিক গুরুত্ব আরোপ করা সম্ভব নয় বলে গবেষকরা মনে করেন। যেমন, মহাভারত থেকেও জানা যায় যে, মহর্ষি জৈমিনি ছিলেন মহর্ষি বেদব্যাসের শিষ্য। বেদব্যাস বদরিকাশ্রমে জৈমিনি, সুমন্তু, পৈল, বৈশম্পায়ন এবং স্বীয় পুত্র শুকদেব- এই পাঁচজন শিষ্যকে বেদ ও মহাভারত অধ্যাপনা করেছিলেন বলে মহাভারতে উল্লেখ পাওয়া যায় (মহাভারত-শান্তিপর্ব-৩২৬/১৬-২০) 

‘বৈশম্পায়ন উবাচ।
অহো গূঢ়তমঃ প্রশ্নস্ত¡য়া পৃষ্টো জনেশ্বর !
নাতপ্ততপসা হ্যেষ নাবেদবিদুষা তথা।
নাপুরাণবিদা চৈব শক্যো ব্যাহর্ত্তুমঞ্জসা।। ১৬।।
হন্ত ! তে কথায়িষ্যামি যন্মে পৃষ্টঃ পুরা গুরুঃ।
কৃষ্ণদ্বৈপায়নো ব্যাসো বেদব্যাসো মহানৃষিঃ।। ১৭।।
সুমন্তুর্জৈমিনিশ্চৈব পৈলশ্চ সুদৃঢ়ব্রতঃ।
অহং চতুর্থঃ শিষ্যো বৈ পঞ্চমশ্চ শুকঃ স্মৃতঃ।। ১৮।।
এতান্ সমাগতান্ সর্ব্বান্ পঞ্চশিষ্যান্দমান্বিতান্ ।
শৌচাচারসমাযুক্তান্ জিতক্রোধান্ জিতেন্দ্রিয়ান্ ।। ১৯।।
বেদানধ্যাপয়ামাস মহাভারতপঞ্চমান্ ।
মেরৌ গিরিবরে রম্যে সিদ্ধচারণসেবিতে।। ২০।।’
অর্থাৎ :
বৈশম্পায়ন বললেন- নরনাথ ! আপনি অত্যন্ত গূঢ় প্রশ্ন করেছেন। অতপস্বী, অবেদবিৎ ও অপুরাণজ্ঞ লোক এই প্রশ্ন যথাযথভাবে বলতে পারেন না (শান্তি-৩২৬/১৬)।  আমি পূর্বে বিশিষ্ট সন্ন্যাসী ও মহর্ষি বেদব্যাস গুরু কৃষ্ণদ্বৈপায়নের নিকট যা প্রশ্ন করেছিলাম, তা আপনার নিকট বলবো (শান্তি-৩২৬/১৭)।  অত্যন্ত দৃঢ়ব্রতধারী সুমন্তু, জৈমিনি ও পৈল এই তিনজন বেদব্যাসের শিষ্য ছিলেন, আমি ছিলাম তাঁর চতুর্থ শিষ্য এবং শুকদেব ছিলেন পঞ্চম শিষ্য (শান্তি-৩২৬/১৮)।  জিতেন্দ্রিয়, শৌচ ও আচারযুক্ত এবং ক্রোধবিজয়ী এই পাঁচজন শিষ্য, মনোদর ও সিদ্ধচারণসেবিত পর্বতশ্রেষ্ঠ সুমেরুস্থিত আশ্রমে আগমন করলে, বেদব্যাস সবাইকেই বেদ ও মহাভারত অধ্যয়ন করিয়েছিলেন (মহাভারত-শন্তিপর্ব-৩২৬/১৯-২০)।


মীমাংসাসূত্রের রচনাকাল নিয়ে সংশয় থাকলেও মীমাংসা-দর্শনকে তার চেয়ে অনেক প্রাচীন বলে অনেকেই মনে করেন। এ প্রসঙ্গে দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় বলেন-
প্রথমত, জৈমিনি-সূত্রেই বাদরি, ঐতিশায়ন, কার্ষ্ণাজিনি, লাবুকায়ন, কামুকায়, আত্রেয়, আলেখন, বাদরায়ণ প্রমুখ প্রাচীনতর মীমাংসকাচার্যর মত উদ্ধৃত হয়েছে; অতএব জৈমিনিপূর্ব সুদীর্ঘ আচার্য-পরম্পরা অনুমেয়। দ্বিতীয়ত, কীথ্ যেমন দেখাচ্ছেন, ধর্মসূত্রগুলিতেই দেখা যায় যজ্ঞ-প্রসঙ্গে যাজ্ঞিকদের মধ্যে নানা মতান্তরের উদ্ভব হয়েছে এবং আপস্তম্ব প্রমুখ “ন্যায়”-এর নজির দেখিয়ে তার সমাধান দিচ্ছেন; এই “ন্যায়”-ই মীমাংসার প্রাচীনতম নাম, যদিও পরবর্তীকালে এ-নামের একটি স্বতন্ত্র দার্শনিক সম্প্রদায় গড়ে উঠেছিলো। এমনকি আপস্তম্ব-ধর্ম-সূত্রর অনেক সূত্রের সঙ্গে মীমাংসা সূত্রের প্রায় হুবহু সাদৃশ্য প্রদর্শিত হয়েছে। বস্তুত ব্রাহ্মণ-সাহিত্যেই বিভিন্ন যজ্ঞের নানা খুঁটিনাটি নিয়ে মতভেদের পরিচয় পাওয়া যায় এবং অনুমান হয় এ-জাতীয় মতভেদের সমাধানকল্পেই ক্রমশ মীমাংসা-শাস্ত্রের উদ্ভব হয়েছিল। অতএব মীমাংসাসূত্রের কাল-নির্ণয় যাই হোক না কেন সম্প্রদায়টির সূত্রপাত অত্যন্ত সুপ্রাচীন।’- (ভারতীয় দর্শন, পৃষ্ঠা-২৩৪)

জৈমিনির মীমাংসাসূত্র ১২টি অধ্যায়ে বিভক্ত। এই অধ্যায়ে ৭টি পাদ এবং ২৭৪৪টি সূত্র আছে। তবে রাহুল সাংকৃত্যায়ন তাঁর দর্শন-দিগদর্শন গ্রন্থে (পৃষ্ঠা-১৪২) মীমাংসাসূত্রের সূত্র সংখ্যা ২৫০০ উল্লেখ করেছেন। মীমাংসাসূত্রের পরিপূরক হিসেবে মহর্ষি জৈমিনি ‘সঙ্কর্ষণ কাণ্ড’ নামে চার অধ্যায় বিশিষ্ট একটি গ্রন্থ রচনা করেন বলে কারো কারো অভিমত। তবে এ বিষয়ে সবাই একমত নন। মীমাংসার ১২ অধ্যায়, সঙ্কর্ষণ কাণ্ডের চার অধ্যায় এবং উত্তরমীমাংসার চার অধ্যায়ের একটি ভাষ্যগ্রন্থ রচনা করেন আচার্য বৌধায়ন। এই ভাষ্যগ্রন্থটির নাম ‘কোটিভাষ্য’। আচার্য উপবর্ষ এই বিশ অধ্যায়েরই বৃত্তি রচনা করেন। পরবর্তীতে আচার্য দেবস্বামী উত্তরমীমাংসার চার অধ্যায়কে বাদ দিয়ে ষোল অধ্যায়ের অপর একটি ভাষ্যগ্রন্থ রচনা করেন। পরবর্তীকালে মীমাংসাসূত্রের উপর অনেক ভাষ্যগ্রন্থ রচিত হয় বলে ধারণা করা হয়। তবে এসব ভাষ্যগ্রন্থের মধ্যে শবরস্বামীর ‘শাবরভাষ্য’ই প্রাচীনতম। এই শাবরভাষ্যেই মীমাংসাসূত্রের প্রাচীনতর ব্যাখ্যাকারদের কথা পাওয়া যায়।

.
শবরের কাল-নির্ণয়ও অনিশ্চিত। শুধু এটুকু ধারণা করা হয় যে, শবর খ্রিস্টীয় ৪০০-এর পূর্ববর্তী হবেন। এবং মীমাংসা-দর্শনের সমস্ত আলোচনার প্রধানতম ভিত্তি এই শাবরভাষ্যই। এমনও শোনা যায়- ‘বাক্যপদীয়’ গ্রন্থের প্রণেতা ভর্ত্তৃহরি শবরস্বামীর পুত্র। প্রবাদ আছে- জৈনগণের নিকট থেকে দূরে থাকবার নিমিত্তে তিনি নাকি শবরের বেশ ধারণ করে শবরবসতিতে বাস করতেন। শবরস্বামী জৈমিনিসূত্রের শুধু বারো অধ্যায়ের ভাষ্য রচনা করেছিলেন। তাঁর ভাষ্যের ভাষা অতি সরল ও প্রসাদগুণযুক্ত। প্রসঙ্গত, শাবরভাষ্য এবং পতঞ্জলির মহাভাষের মতো সরল ভাষায়, ছোট ছোট বাক্যবিন্যাসে আর কোন ভাষ্যগ্রন্থ সংস্কৃত ভাষায় রচিত হতে দেখা যায় নি। আচার্য শঙ্করের ব্রহ্মসূত্রভাষ্যের ভাষাও সরল ও সাহিত্যগন্ধী বলে অনেকে উল্লেখ করেন। তবে এর বাক্যগুলি শাবরভাষ্যের মতো স্বল্পপদ নয়। শাবরভাষ্য ছাড়া জৈমিনিসূত্র বোঝা অসম্ভব বলেই বিজ্ঞজনের অভিমত।

শবরের পর মীমাংসকাচার্যদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দুজন হলেন- প্রভাকর মিশ্র ও কুমারিল ভট্ট। উভয়েই শাবরভাষ্যের ব্যাখ্যা করেছেন। প্রভাকরের প্রধান ও বড়ো ব্যাখ্যাগ্রন্থটির নাম ‘বৃহতী’ এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যার নাম ‘লঘবী’। কুমারিলের ব্যাখ্যাগ্রন্থের তিনটি খণ্ড- ‘শ্লোকবার্তিক’, ‘তন্ত্রবার্তিক’ এবং ‘টুপ্-টীকা’। কিন্তু প্রভাকর ও কুমারিল উভয়ের ব্যাখ্যায় এতোটাই মৌলিক পার্থক্য যে, তার উপর ভিত্তি করে পরবর্তীকালে মীমাংসামত দুটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যায়। প্রভাকরের নাম থেকে প্রথমটিকে প্রাভাকর-সম্প্রদায় এবং কুমারিল-ভট্টর নাম থেকে দ্বিতীয়টিকে ভাট্ট-সম্প্রদায় নামে আখ্যায়িত করা হয়। প্রচলিত মতে প্রভাকর ছিলেন কুমারিলের শিষ্য এবং কুমারিল তাঁকে সম্ভবত বিদ্রূপ করেই গুরু আখ্যা দিয়েছিলেন, এ কারণে প্রভাকর-মত গুরুমত নামেও প্রসিদ্ধি লাভ করে। আবার এরকম প্রবাদও আছে যে, একদিন অধ্যাপনাকালে কুমারিল একটি পাঠের সঙ্গতির কথা চিন্তা করছিলেন। পাঠটি হচ্ছে-

‘পূর্ব্বং তু নোক্তমধুনাপি নোক্তমতঃ পৌনরুক্ত্যম্’।
যার অর্থ হয়- পূর্বেও বলা হয়নি, এখনও বলা হয়নি। অতএব পুনরুক্তি ঘটছে।

.
কিন্তু ভাবার্থের অসঙ্গতি দেখে প্রত্যুৎপন্নমতি শিষ্য প্রভাকর পাঠসঙ্গতি করলেন এভাবে-

‘পূর্ব্বং তুনা উক্তম্, অধুনা অপিনা উক্তম্ । অতঃ পৌনরুক্ত্যম্’।
অর্থাৎ- পূর্বে ‘তু’ শব্দের দ্বারা কথিত হয়েছে, এখানে ‘অপি’ শব্দের দ্বারা কথিত হলো। অতএব পুনরুক্তি ঘটছে।

.
শিষ্য-প্রভাকরের এরকম প্রতিভা দেখে আহ্লাদিত গুরু কুমারিল বললেন- ‘প্রভাকর আমাদের গুরু।’ তখন থেকেই অপর সতীর্থরা প্রভাকরকে গুরু বলে সম্বোধন করতে লাগলেন এবং প্রভাকরের উপাধি হলো ‘গুরু’। তাই প্রভাকরমতকে গুরুমতও বলা হয়।

প্রভাকর-মতের উল্লেখযোগ্য ব্যাখ্যাকার হলেন শালিকনাথ মিশ্র। তিনি প্রভাকরের বৃহতী টীকার উপর ‘ঋজুবিমলা’, লঘবী টীকার উপর ‘দীপশিখা’ গ্রন্থ রচনা করেন। এছাড়া প্রাভাকর-মতের ব্যাখ্যা করে ‘প্রকরণপঞ্চিকা’ নামে একটি স্বতন্ত্র প্রকরণ গ্রন্থ রচনা করেন। প্রাভাকর-মতের আধুনিক ব্যাখ্যা মূলত এই প্রকরণপঞ্চিকার উপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল।

কুমারিল বা ভাট্ট মতের প্রথম ব্যাখ্যাকার মণ্ডন মিশ্র। তিনি কুমারিলের শিষ্য ও জামাতা বলে পরিচিত। তাঁর প্রধান রচনাগুলি হলো ‘বিধিবিবেক’, ‘ভাবনাবিবেক’, ‘মীমাংসানুক্রমণিকা’ ‘বিভ্রমবিবেক’। মণ্ডন মিশ্রের ‘বিধিবিবেক’-এর ব্যাখ্যায় খ্রিস্টীয় নবম শতকের দার্শনিক বাচস্পতি মিশ্র ‘ন্যায়কণিকা’ রচনা করেন।
ভাট্ট-মতের আরেকজন বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতকের পার্থসারথি মিশ্র। তিনি কুমারিলের ‘শ্লোকবার্তিক’-এর উপর ‘ন্যায়রত্নাকর’, টুপটিকার উপর ‘তন্ত্ররত্ন’ নামে টীকাগ্রন্থ রচনা করেন। তাছাড়া ভাট্ট-মতের ব্যাখ্যায় ‘ন্যায়রত্নমালা’ ও ‘শাস্ত্রদীপিকা’ নামে দুটি গ্রন্থ রচনা করেন। এছাড়া পরবর্তীকালে গাগাভট্টের ‘ভাট্ট চিন্তামণি’, নারায়ণ ভট্টের ‘মানমেয়োদয়’ প্রভৃতি গ্রন্থ ভাট্টমতের উপর রচিত স্বতন্ত্র গ্রন্থ। অবশ্য পরবর্তীতে আরো অনেকেই মীমাংসা-মত ব্যাখ্যায় গ্রন্থ রচনা করেছেন, কিন্তু উপরিউক্ত গ্রন্থাবলিই বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

মীমাংসাশাস্ত্রের বিষয় অতি বিস্তৃত। প্রমাণ, প্রমেয়, ধর্ম, শব্দের নিত্যতাবাদ, বেদের অপৌরুষেয়তা, মন্ত্র, বিধি, কর্মানুষ্ঠান, যজ্ঞাদির অধিকার, বাক্যার্থ বিচার, অর্থবাদ, স্বর্গ, নরক, অপূর্ব, নিরীশ্বরবাদ, মোক্ষ এ সবই মীমাংসাশাস্ত্রের আলোচিত বিষয়।

মীমাংসা দার্শনিকেরা মূলত বেদের প্রামাণ্য প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যেই জ্ঞানের স্বরূপ, যথার্থ ও অযথার্থ জ্ঞানের পার্থক্য নির্ণয়, যথার্থ জ্ঞান লাভের উপায় এবং এতৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করেন। মীমাংসা দর্শন মতে, সমস্ত বস্তুই হয় প্রমাণ অথবা প্রমেয়ের অন্তর্গত। এই মতে, প্রমাণ হলো প্রমা বা যথার্থ জ্ঞানের করণ বা উপায়, আর প্রমেয় হলো যথার্থ জ্ঞানের বিষয়।
মনীষী নারায়ণভট্ট তাঁর মানমেয়োদয় গ্রন্থে বলেন-

‘মানমেয়বিভাগেন বস্তুনাং দ্বিবিধা স্থিতিঃ’।- (মানমেয়োদয়)
অর্থাৎ : জগতের সকল বস্তুই (মান) প্রমাণ অথবা (মেয়) প্রমেয়র অন্তর্গত। এই দুই প্রকার বিভাগের অন্তর্গত নয় এমন কোন বস্তু জগতে নেই।

.
এ প্রেক্ষিতে আবারো মীমাংসাসূত্রে মহর্ষি জৈমিনির প্রথম সূত্রটি স্মরণ করা যেতে পারে-
‘অথাতো ধর্ম্মজিজ্ঞাসা’ বা সন্ধি-ভেঙে বললে- ‘অথ অতঃ ধর্ম্ম জিজ্ঞাসা’।
.
এখানে- ‘অথ’ শব্দটির অর্থ- আনন্তর্য্য। বেদাধ্যয়নের অনন্তর। ‘অতঃ’ শব্দের দ্বারা ত্রৈবর্ণিকের অধিকার স্থির করা হইয়াছে। বিচার ব্যতীত প্রকৃত অর্থের নির্ণয় হইতে পারে না বলিয়া ধর্ম্মজিজ্ঞাসা তাঁহাদের অবশ্য কর্ত্তব্য। ‘জিজ্ঞাসা’ পদে ‘জ্ঞা’ ধাতুর অর্থ জ্ঞান এবং ‘সন্’ প্রত্যয়ের অর্থ ইচ্ছা। জ্ঞান ইচ্ছানিষ্পাদ্য নহে। কেহ ইচ্ছা করিলেই তাহার জ্ঞান হয় না। ইচ্ছাও কর্ত্তব্য, অর্থাৎ ক্রিয়ানিষ্পাদ্য নহে। কোনও ক্রিয়ার দ্বারা ইচ্ছা জাগ্রত হয় না। অতএব ‘ধর্ম্মজিজ্ঞাসা’ পদস্থিত ‘জিজ্ঞাসা’ শব্দের লাক্ষণিক অর্থ স্থির করা হইয়াছে- বিচার।’- (সুখময় ভট্টাচার্য্য, পূর্ব্বমীমাংসা দর্শন, পৃষ্ঠা-২০)।
.
উল্লেখ্য, সকল বিচারই বিচার্য্য বিষয়ের অপেক্ষা রাখে। আর অগ্নিহোত্র প্রভৃতি বৈদিক যাগাদি কর্মই মীমাংসামতে ধর্ম। এটাই বেদের অর্থ বা প্রতিপাদ্য। অতএব ধর্ম শব্দের অর্থ হচ্ছে- বেদার্থ। এবং এই বেদার্থই বিচারের বিষয়। তবে এখানে ধর্ম শব্দটি প্রমানাদিরও উপলক্ষণ বটে। অর্থাৎ শুধু ধর্মই বিচার্য্য নয়, প্রমাণ ও প্রমেয়াদিও বিচার্য্য। তাই, ধর্মজিজ্ঞাসা কর্তব্য- এ কথা জানার পরেই ধর্ম কী, তার লক্ষণ বা স্বরূপ কী- এই প্রশ্নও জাগে। যেহেতু লক্ষণ এবং প্রমাণের দ্বারাই সকল বস্তুর অস্তিত্ব স্থির করতে হয়, তাই আচার্যরা বলেন-

‘মানাধীনা মেয়সিদ্ধির্মানসিদ্ধিশ্চ লক্ষণাৎ।’
অর্থাৎ : প্রমাণের দ্বারা প্রথমত প্রমেয় বস্তুটির অস্তিত্ব সিদ্ধ হয় এবং লক্ষণের দ্বারাই বস্তুর প্রামাণ্য সিদ্ধ হয়।

.
তার মানে দাঁড়ালো এই,- যেকোনও অজ্ঞাত বস্তুর স্বরূপ জানতে হলে সেই বস্তুটির লক্ষণই প্রথমত জানতে হয়। স্বরূপ জানার পর সেই বস্তুবিষয়ে প্রমাণ প্রয়োগ করা চলে। এ প্রেক্ষিতে ধর্মের লক্ষণ বা স্বরূপ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কিছু আপত্তি উত্থাপিত হয়। যেমন-
লক্ষ্য বস্তুর লোকপ্রসিদ্ধ আকৃতিকেই সাধারণতঃ লক্ষণ বলা হয়। লক্ষণ সকল সময়েই অসম্ভব, অব্যাপ্তি ও অতিব্যাপ্তি দোষ হইতে মুক্ত থাকিবে। যেহেতু ধর্ম্ম সাধারণ লৌকিক বস্তু নহে, সেইহেতু তাহার কোন লক্ষণও থাকিতে পারে না। ধর্ম্মের রূপ প্রভৃতি নাই বলিয়া তাহা প্রত্যক্ষের বিষয়ই নহে। কোন হেতুর সাহায্যে অনুমান করিবারও উপায় নাই। কারণ, অনুমান করিতে গেলেও হেতুটির প্রত্যক্ষ হওয়া চাই এবং হেতু ও সাধ্যের সহাবস্থানরূপ ব্যাপ্তির জ্ঞান থাকা চাই। অপ্রত্যক্ষ বস্তু বিষয়ে ব্যাপ্তিজ্ঞানাদি হইতে না পারায় ধর্ম্ম অনুমান প্রমাণের বিষয়ও হইতে পারে না। শব্দ প্রমাণও এইস্থলে সম্ভবপর নহে। অপ্রসিদ্ধ অলৌকিক বস্তু শব্দের দ্বারা কথিত হইলেও শব্দার্থের সঙ্গতিজ্ঞানের অভাবে তাহা শব্দপ্রমাণের বিষয় হয় না। গলকম্বলাদিবিশিষ্ট প্রাণী যদি কাহারও প্রত্যক্ষ বা অনুমানের বিষয়ই না হইত, তবে ‘গো’ শব্দটি যে সেই প্রাণীর বাচক, তাহা শব্দপ্রমাণের দ্বারা জানা যাইত না। অতএব ধর্ম্ম বস্তুটি লক্ষণ ও প্রমাণের বিষয়ীভূত হয় না বলিয়া তদ্বিষয়ে বিচারের কথাই উঠিতে পারে না।’- (সুখময় ভট্টাচার্য্য, পূর্ব্বমীমাংসা দর্শন, পৃষ্ঠা-২১)।
.
এসব আপত্তি নিরসনকল্পে মহর্ষি জৈমিনি তাঁর দ্বিতীয় সূত্রে বলেন-

‘চোদনালক্ষণোহর্থো ধর্ম্মঃ।’- (মীমাংসাসূত্র-১/১/২)
অর্থাৎ : চোদনা লক্ষণ অর্থাৎ চিহ্ন বা জ্ঞাপক যার সেই বিষয়ই ধর্ম।

.
এই সূত্রটির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ভাষ্যকার শবরস্বামী বলছেন-

‘ক্রিয়ায়ঃ প্রবর্ত্তকং বচনং চোদনা।’- (শাবরভাষ্য)
অর্থাৎ : ক্রিয়ার প্রবর্তক বচনের নাম ‘চোদনা’।

.
তার মানে, প্রবর্তনা বা নিবর্তনার বিধায়ক বেদবাক্য হলো চোদনা। লক্ষণ শব্দে বোঝানো হচ্ছে- যার দ্বারা লক্ষিত বা জ্ঞাপিত হয়। চোদনা লক্ষণ যার, তা-ই চোদনালক্ষণ। জৈমিনির এই সূত্রে ধর্মের লক্ষণ এবং চোদনার প্রামাণ্য, দুই-ই বলা হয়েছে। ‘চোদনাই লক্ষণ, অর্থাৎ প্রমাণ যার’, তা-ই চোদনালক্ষণ। এতে বোঝা যাচ্ছে যে, একমাত্র চোদনাই ধর্ম বিষয়ে প্রমাণ। আবার ‘চোদনা লক্ষণ প্রমাণই যার’ এরকম অর্থ করলে বোঝা যায়, চোদনা প্রমাণই, অপ্রমাণ নয়। এই উভয় অর্থই সূত্রকারের অভিমত বলে ভাষ্য ও ব্যাখ্যাকাররা মনে করেন। ভট্টপাদ তথা কুমারিল ভট্ট শ্লোকবার্ত্তিকে প্রামাণ্য বিচার করতে গিয়ে ‘চোদনা’ অর্থাৎ বেদবাক্যই যে ধর্মবিষয়ে প্রমাণ- তা স্থাপন করেছেন। বলা হয়- সূত্রে ‘অর্থ’ শব্দের দ্বারা অনর্থ বা অনিষ্টের হেতুকে বারণ করা হয়েছে। অনর্থের হেতুভূত কর্ম বেদবিহিত হলেও ধর্ম নয়। অতএব বলতে হবে- যেখানে ধর্মত্ব আছে, সেখানে চোদনালক্ষণত্ব আছে। ধর্ম হচ্ছে ব্যাপ্য আর চোদনালক্ষণ ব্যাপক। মূলত বেদের প্রামাণ্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই মীমাংসাশাস্ত্রে এইসব বিচারের আয়োজন হয়েছে।
মীমাংসা দর্শনে প্রমাণত্ব আলোচনার মূলে প্রকৃত উৎসাহ আসলে বেদের প্রামাণ্য প্রতিপন্ন করা। মীমাংসকদের প্রধানতম প্রতিপাদ্য হলো বেদ অপৌরুষেয় এবং নিত্য। 

জৈমিনি কৃত রচনাসম্ভার পিডিএফ সহঃ

1.The Purva Mimamsa Sutras Of Jaimini

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ