ডিম এর সংরক্ষণ পদ্ধতি - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

07 September, 2018

ডিম এর সংরক্ষণ পদ্ধতি

মুরগির শেষ পরিণতি যদি মাংস হয় তবে ডিম হবে আগের  ধাপ। মাংস খেলে প্রাণী হত্যা হয় কিন্তু অনিষিক্ত (অর্থাৎ যে ডিমে বাচ্চা হবে না) ডিম খেলে প্রাণী হত্যা হবে না, বাংলাদেশের অনেক নিরামিষাশী শুধু এই যুক্তিতেই ডিম খায়, অনেকে মুরগির ডিম বেশি পছন্দ করেন যেহেতু তার আঁশটে গন্ধ কম।


মুরগির ডিমের খোসা পাতলা মসৃণ এবং আঁশটে গন্ধ কম। হাঁসের ডিমে উল্টো, উপরন্ত আকারে বড়, কুসুমও বড়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের ডিম পাওয়া যায়। হাঁসের ডিম, দেশি মুরগির ডিম এবং উন্নত জাতের মুরগির ডিম, সাধারণ মানুষ বলে লেয়ার মুরগির ডিম ইত্যাদি। চাহিদা সবচেয়ে বেশি দেশি   মুরগির ও হাঁসের ডিম, দামও সবচেয়ে বেশি। লেয়ার মুরগির ডিমের উৎপাদন যথেষ্ট হওয়ায়, দাম সবচেয়ে কম। লেয়ার   মুরগির ডিম উৎপাদন হয় সেরা মুরগিদের বিজ্ঞানীদের নির্দেশ মতো সেরা খাদ্য উৎপাদনগুলো খাইয়ে। কিন্তু একটা দেশি মুরগি কী খাচ্ছে? আমরা কেউ জানি না। একটা লেয়ার ডিমের ওজন ৪০-৬০ গ্রাম, সেখানে দেশি মুরগির ডিম ২০-৩০ গ্রাম। এক কথায় দেশি মুরগির ডিম কিনে আপনি ঠকছেন।


ডিম গঠন প্রক্রিয়া
মুরগির বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিম্বাশয়ের ডিম্বাণুগুলো আকারে বড় হতে থাকে। ডিম্বাণুগুলোর ভেতরে আস্তে আস্তে কুসুম জমা হয়ে পূর্ণাঙ্গ কুসুমে পরিণত হয়। এক একটি কুসুম ভাইটালিন মেমব্রেন নামক এক প্রকার পাতলা পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে। বোঁটার সাহায্যে ডিম্বাশয়ের সঙ্গে ঝুলানো থাকে। মুরগি যখন বয়স্কা হয় তখন কয়েকটি ডিম্বাণু পর পর শীঘ্র বড় হয়ে পূর্ণ কুসুমে পরিণত হয়। কুসুমের পূর্ণতার পর থলির শিরা উপশিরা বিহীন নির্দিষ্ট স্থানে ফাটল ধরার পরে ঐ স্থান দিয়ে বের হয়ে আসে। এই প্রক্রিয়াকে কুসুমক্ষরণ 
(ovulation) বলে। ডিম্বাশয় নালির প্রথম ভাগ এই নির্গত কুসুমটিকে ধরে ফেলে এবং পরে ডিম্বাশয় নালির বাকি অংশগুলোর মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়। নিষিক্তকরণের পরক্ষণ থেকেই কোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। মুরগির দলে মোরগ না রাখলেও ডিম পাড়ার কোন ব্যাঘাত বা ডিমের সংখ্যার তারতম্য হয় না, কুসুমটি নিষিক্তকরণ হোক তা না হোক উহা যখন ডিম্বাশয়নালির বাকি অংশ দিয়ে আস্তে আস্তে অগ্রসর হয় তখন ওটা ডিমের সাদা অংশ, খোসার পর্দা, খোসা ইত্যাদি সংগ্রহ করে পূর্ণাঙ্গ ডিমে পরিণত হয়। ওভাবে পূর্ণ ডিমটি তৈরি হতে ২৪-২৫ ঘণ্টা সময় লাগে। একটি ডিম কুসুম, ভ্রƒণ, ঘন সাদা অংশ, পাতলা সাদা অংশ, চ্যালেজা, খোসার আবরণ, বায়ুকোষ ও খোসা নিয়ে গঠিত। সম্পূর্ণ ডিমটার আছে জল ৬৩.৬%, আমিষ-১২.৮৩, খনিজ ১০.৭০, স্নেহ ১০৬ খনিজ পদার্থ এবং ভিটামিন। এ জন্য ডিমকে Nature’s multivitamin বলে।
 

ডিম নষ্ট হওয়ার কারণ
ডিমের মোটা মাথাটায় কিছুটা জায়গা জুড়ে বাতাস থাকে। এই বাতাসে অক্সিজেন কমে কার্বন ডাই-অক্সাইড বেড়ে গেলেই ডিম পচে যায়। আরেকটি কারণ হলো- ডিমের খোসায় অজস্র ফুটা থাকে, ঐ ফুটা দিয়ে যেমন বাতাস ঢোকে, বাতাসের সঙ্গে জীবাণু ঢুকে যায়। ঐ জীবাণুই ডিমকে পচিয়ে দেয়। ডিমের টাটকাভাব পরিবেশের উপর নির্ভর করে ঠাÐায় যেমন টাটকা থাকে, গরমে তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়।
ডিম সংরক্ষণ
ডিমের মূল গুণাগুণ বজায় রাখতে সঠিক নিয়মে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। দিনে ৩-৪ বার ডিম সংগ্রহ করতে হবে। গরমকালে ডিম সংগ্রহের পরই যতটা সম্ভব ঠাÐা জায়গায় জড়ো করতে হবে। কিছু দিনের জন্য রাখতে চাইলে ১২.৮ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় এবং মাসের পর মাস ডিম রাখতে চাইলে ১.৭-০.৬ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে। ঠাÐা ঘরের আর্দ্রতা হবে ৮৫%।
আধুনিক পদ্ধতিতে ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডিম সংরক্ষণ করা গ্রামীণ পরিবেশে সম্ভব নয়, কারণ এতে যে প্রযুক্তি ও আধুনিক সরঞ্জামের প্রয়োজন তা আমাদের নেই। তাই সংরক্ষণের আধুনিক পদ্ধতিকে এড়িয়ে দেশিয় উপযোগী পদ্ধতি ব্যবহারের দিকে নজর রাখা দরকার, যাতে করে গ্রামাঞ্চলে সাধারণ মানুষের পক্ষে তা প্রয়োগ করা সম্ভব হয়। (ক) সোডিয়াম সিলিকেট দ্বারা সংরক্ষণ-ভালো ডিম বাছাই করে তরল সোডিয়াম সিলিকেটে সংরক্ষণ করা হয়। এ পদ্ধতিতে ১ কেজি সোডিয়াম সিলিকেট ১০ লিটার পানিতে ভালোভাবে গুলে তরল করা হয়। এই তরলে ১৫ ডজন ডিম সংরক্ষণ করা যায়। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় আড়াই মাস পর্যন্ত ডিম ভালো থাকে।
(খ) চুনের পানি দ্বারা সংরক্ষণ- এ পদ্ধতিতে ১ কেজি চুন ২০ লিটার পানিতে গুলে ১০ মিনিট থিতাল হয়। চুনের পানিতে ডিম  ডুবিয়ে রাখা হয়। এ উপায়ে ২ মাস পর্যন্ত ডিম সংরক্ষণ করা যায়।
(গ) তেল দ্বারা সংরক্ষণ- এ পদ্ধতিতে বর্ণ, স্বাদ ও গন্ধহীন নারিকেল বা সয়াবিন তেল ব্যবহার করা হয়। তেলে ডিমগুলো ডুবিয়ে পরে অন্য পাত্রে উঠিয়ে রাখা হয়। এ পদ্ধতিতে ডিম পাড়ার পর পরই সংরক্ষণ করতে হয়। এভাবে প্রায় এক মাস পর্যন্ত ডিমের গুণাগুণ অক্ষুণœ রাখা সম্ভব। প্যারাফিন ডিমে মাখিয়ে এটাই করা সম্ভব।
(ঘ) গরম পানি দ্বারা সংরক্ষণ- এ পদ্ধতিতে ১৩০ ডিগ্রি ফারেনহাইট গরম পানিতে ১৫ মিনিট অথবা ১৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট গরম পানিতে ৩-৫ মিনিট ডিম রেখে তারপর অন্য পাত্রে উঠিয়ে রাখা ভালো। এতে এক মাস পর্যন্ত ডিমের গুণাগুণ অক্ষুণœ থাকে।
এ গুলো ছাড়াও আধুনিক সংরক্ষণ পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে হিমায়িত শুষ্ক ডিম। ডিমকে পুরোপুরি শুকনো করার ব্যবস্থা এখন আরও বেশি চালু। স্থানান্তর করতে জায়গা যেমন কম লাগে ঠিক তেমনি ঠাÐা ঘরের কোন দরকার পড়ে না। তবে প্রক্রিয়ার মূলধন বেশি লাগে।
ডিম বিপণন প্রণালি
ডিম উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছতে বেশ কিছু দিন সময় প্রয়োজন হয় অথবা বাজারমূল্য একেবারে কমে গেলে অতিরিক্ত ডিম অনেক দিন রাখতে হয়, এ জন্য খামারি, ব্যবসায়ীদের সংরক্ষণ পদ্ধতি বিষয়ে সঠিক ধারণা থাকা প্রয়োজন। নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ডিম প্রাপ্যতা সকল ভোক্তারই প্রত্যাশা।

 Fertile and Infertile Egg ভিডিও টি দেখতে পারেন

 

ডা: মনোজিৎ কুমার সরকার

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

ঋগ্বেদ ১/২৫/১৮

  আজীগর্ত্তি শুনঃশেপ ঋষিঃ। বরুণঃ ( বিদ্বান্) দেবতা। গায়ত্রী-ছন্দঃ। ষড়জ-স্বরঃ।। দর্শ নু বিশ্বদর্শতম্ দর্শ রথমধি ক্ষমি। এতা জুষত মে গিরঃ।। ঋগ্...

Post Top Ad

ধন্যবাদ