প্রাণ ও বিবর্তন - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

08 May, 2018

প্রাণ ও বিবর্তন

অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিবর্তনের প্রমাণ হিসেবে Fossilকে উপস্থাপন করা হয়। এইভাবে প্রমাণ বুঝতে সহজ হলেও পুরো বিবর্তন ব্যাপারটা না বোঝার কারণে আর ধর্মীয় কারণে অনেক মানুষ এইটা মেনে নিতে চায় না। আমি এই লেখার মাধ্যমে “বিবর্তন”কে আণবিক পর্যায়ে বোঝানর চেষ্টা করব যতটা সহজে সম্ভব। আর আমি ধরে নিচ্ছি পাঠকরা অণু পরমাণু নিয়ে ভালো ধারণা রাখেন।“বিবর্তন” বিষয়টা খুবই আকর্ষণীয় একটা বিষয় হলেও এইটা বোঝা বেশ দুরূহ ব্যাপার।
আশেপাশে সবকিছু দেখে শুনে আমরা যা বুঝতে পারি তা হোল, মানুষ, মুরগি, গরু, ছাগল, কুকুর ইত্যাদি সবার মধ্যেই মগজ আছে, হাড় আছে, পেশী আছে, ফুসফুস আছে, পাকস্থলী আছে ইত্যাদি আরও অনেক কিছুই আছে যা একইরকম কাজ করে আর এগুলা ছোট বড় যাই হোক একই রকম প্রায়। একটু দূরে গেলে, টিকটিকি, কুমির, ব্যাঙ এদেরও একই জিনিসগুলা আছে, কিন্তু পার্থক্য একটু বেশি। আবার খুব বেশিও না, যেমন সবার ঠিক ৪টাই পা আছে। আরও দূরে গেলে মাছ বা পাখি আছে। এদের পার্থক্য আরও বেশি। আবার পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ বিবেচনায় আনলে পার্থক্য আরও অনেক বেশি। তবে পার্থক্য যতই থাকুক, এই সবাইকে একই জাতে ফেললে যা হয় তা হল “প্রাণী”।
আবার এসবের বাইরেও, আছে এমন সব প্রাণ, যাদের খালি চোখে দেখা যায় না। যেমন ব্যাকটেরিয়া, অ্যামিবা ইত্যাদি। এসব সকল প্রাণকে একটা ছবিতে নিচের মত দেখান যায়।
আমরা মানুষ, গরু, সাপ, ব্যাঙ, মাছ, পোকামাকড় ইত্যাদি সব Animals এর মাঝে পরে, আর গাছ পড়ে Plants এর মধ্যে। এই animals আর plants হচ্ছে অনেক ধরণের “প্রাণ”এর মধ্যে ২টা ধরন মাত্র। যাই হোক, এখন এত সব প্রাণ দেখে কয়েকটা প্রশ্ন মাথায় আসা উচিত।
১। প্রাণী বা উদ্ভিদ যাই হোক, প্রাণ কি জিনিস?
২। প্রাণ কিভাবে প্রাণের মত এত কাজ করে?
৩। এদের মধ্যে পার্থক্যটা কি?
৪। পার্থক্য কি বিবর্তনের জন্যই?এসব প্রশ্নের উত্তর একের পর এক আলোচনা করা যাক!

প্রাণ কি জিনিস?

খুবই জটিল প্রশ্ন! সচরাচর এইটার definition philosophyর দায়িত্বে পরে। কিন্তু বর্তমানের science এর যুগে philosophy is dead। এইটা science এর গতির সাথে খাপ খাওয়াতে পারে নাই, তাই philosophy definition দিতে পারবে, কিন্তু তা ঠিক হবে কি হবে না তা নিশ্চিত না। তাই অবশ্যই আমরা Life এর definition science এর কাছ থেকেই জানতে চাইব।
পদার্থবিজ্ঞানী Erwin schrodinger এ ব্যাপারে বলেন, Living things avoid decay into disorder and equilibrium। কথাটা সহজে বোধগম্য না, তাই ভেঙ্গে বলি। মনে করেন, আপনার বাসায় প্রতিদিন অগোছালো হয়, ময়লা পরে, নোংরা হয়, সোজা অর্থে disorder হয়। এভাবে চললে, disorder হতে হতে, অগোছালো হতে হতে এমন অবস্থায় পৌঁছাবে যখন আর অগোছালো করা সম্ভব হবে না, অর্থাৎ equilibrium এ পৌঁছে গেছে। কিন্তু আপনি তা হতে দিবেন না! আপনি নিজের শক্তি বা energy খরচ করে পুরা ঘর গুছাবেন, নইলে আপনি টিকতে পারবেন না!
এইটা খুব simple উদাহরণ। এখন এইসব টাইপ কাজ যাদের প্রাণ আছে তারা করে, কিন্তু প্রাণ বলতে কি বুঝায়? এইটা কি কোন অলৌকিক কিছু? না physics এর নিয়মের মধ্যে পরে সব?
মানব দেহ নিয়েই বলি। মানব দেহ অনেকগুলা অঙ্গের সমষ্টি, আর বেশিরভাগই জরুরি! যেমন হৃদপিণ্ড। হৃদপিণ্ড ছাড়া আমরা বাচতে পারব না। এখন প্রশ্ন হল, হৃদপিণ্ডের কি “প্রাণ” আছে?
খালি চোখে হৃদপিণ্ড কেমন তা সবাই মোটামুটি জানেন বা জানতে চাইলে জানতে পারবেন। কিন্তু “প্রাণ” তো দেখা যাচ্ছে না! আধুনিক যুগে আমরা microscope ব্যবহার করতে পারি। Miscroscopeএর নিচে হৃদপিণ্ড দেখতে ঠিক নিচের ছবিটার মত লাগে।
এইখানে যে বেগুনি জিনিসগুলা দেখা যাচ্ছে এগুলা হল “কোষ”। জিনিসগুলা খুবই ছোট! বড়জোর ১০০ মাইক্রোমিটার লম্বা, খালি চোখে দেখা অসম্ভব! এখন হৃদপিণ্ড কখনো নিজে pump করে না! এই কোষগুলা pump করে! সবগুলা কোষের একটা organized সঙ্কোচনের মাধ্যমে পুরা হৃদপিণ্ড কাজ করে। যা করতেছে সব কোষ! হৃদপিণ্ড বলতে কিছু নাই এখানে! (লাল টা হচ্ছে Adipose tissue)।
তাই আমরা বলতে পারি, “হৃদপিণ্ডের প্রাণ নাই, কিন্তু কোষের ‘সম্ভবত’ প্রাণ আছে”।
এখন শরীরের যেখানেই যাই, এমনকি হাড়ের মধ্যেও, সবকিছুই “কোষ” দিয়ে তৈরি। “কোষ” গুলো একে অপরকে সহযোগিতার মাধ্যমে এক এক টা অঙ্গ সচল রাখে, আর অঙ্গগুলো আমাদের সচল রাখে! সব মিলিয়ে আমাদের শরীরে ৩৭ ট্রিলিয়ন বা ৩৭,০০০,০০০,০০০,০০০ কোটি কোষ আছে! এই এতগুলা কোষের ক্রিয়াকর্মের ফসল আমি, আপনি।
আবার! দুনিয়ার যে প্রান্তেই যাই, যত সব জিনিসের “প্রাণ” আছে, সবাই কোষ দিয়ে তৈরি (ভাইরাস ব্যতিক্রম)! নিচে ৩ ধরনের “প্রাণের” ৩ ধরনের ছবি! প্রথমটা মানুষের, দ্বিতীয়টা পেয়াজের, তৃতীয়টা ব্যাকটেরিয়ার। এইখানে সবচেয়ে ব্যতিক্রম “ব্যাকটেরিয়া”, এদের শুধু মাত্র একটা “কোষ”!
সবার “প্রাণ” আছে কারণ সবাই “কোষ” দিয়ে তৈরি আর “কোষ” মানেই প্রাণ!
এতটুকু পর্যন্ত বোঝা গেল যে, আপনি থেকে কোষ পর্যন্ত কোন জাদু বা অলৌকিক ব্যাপার নাই। একটা মাইক্রোস্কোপ নিয়ে বসলেই বিষয়টা চাক্ষুষ দেখা যায়, বোঝা যায় যে আপনি কোষের তৈরি। আপনার কোষ যেভাবে চলবে আপনিও সেভাবে চলবেন, কোষের সমস্যা হলে আপনার সমস্যা হবে।
যেমন, আপনার অগ্নাশয় কোষ যদি ইনসুলিন তৈরি না করে আপনার diabetics হবে। আপনার হৃদপিণ্ডের বা কলিজার কোষ যদি কাজ না করে, আপনি মারাই যাবেন! আর ব্রেইন ইনজুরি তো আরও বড় সমস্যা! আপনি কে, আপনার সব স্মৃতি, আপনার personality সব কিছু মস্তিষ্কের ভিতর থাকা কয়েক বিলিয়ন নিউরনের ক্রিয়াকর্মের ফসল। যদি মস্তিষ্কের নিউরন কোষে সমস্যা হয়, তাহলে আপনার অবশ্যই সমস্যা হবে। কেমন সমস্যা হবে নির্ভর করে ইনজুরি কোথায় তার উপর। যেমন, Cerebellum এ ইনজুরি হলে, হাটা চলায় balance রাখতে সমস্যা হতে পারে, হাত নারাতে সমস্যা হতে পারে, তোতলামি আস্তে পারে, আরও অনেক কিছুই হতে পারে। এইসব সমস্যাকে একসাথে ataxia বলা হয়। Occipital Lobe এ ইনজুরি হলে, চোখে দেখতে সমস্যা হতে পারে।
কিন্তু আপনি যে আপনি বা আমি যে আমি, এইটাও কি বদলে যেতে পারে? হ্যাঁ বদলাতে পারে। Frontal Lobe, Corpus Callosum বা Parietal Lobe ইনজুরি হলে স্মৃতি হারিয়ে যেতে পারে, লেখতে ভুলে যেতে পারেন এমনকি আপনার personalityই পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে, মানে আপনি আপনি নাও থাকতে পারি, অন্য কেও হয়ে যেতে পারেন! Traumatic brain injury পর personality পরিবর্তন হওয়া খুবই কমন ঘটনা। ( বিঃদ্রঃ ছবির মত মস্তিষ্কের কাজ ঠিক এইভাবে ভাগ করা থাকে না। যে কোন কাজ, যেমন কথা বলতে প্রায় সম্পূর্ণ মস্তিষ্কই কাজ করে।)
যা বোঝাতে চাচ্ছি তা হোল, আপনি কে এইটা নির্ভর করে মস্তিষ্কের কোষের কার্যক্রমের উপর! আপনার নিজস্ব কোন সত্ত্বা বলতে এখানে কিছু নাই! আপনি নিজে কোন প্রাণ না, আপনি প্রাণের কার্যক্রমের ফসল। আর এই প্রাণের নাম “কোষ”।

কোষ কি জিনিস?

ইতিমধ্যে প্রাণের সংজ্ঞা বদলে গেছে! আমরা “কোষ”কে প্রাণ বলতেছি। কিন্তু আমরা এখানেই থামব না! আমরা দেখতে চাই, “কোষ” আসলে কি জিনিস! কোষের আচরণ কি? কোষ কি করে?
কোষ অনেক কিছুই করে, যেমন,
১। কোষ নিজের চারপাশে ১টা দেয়াল তৈরি করে, যেটাকে বলি আমরা cell membrane, উদ্ভিদ কোষে cell wallও থাকে।
২। কোষের দেয়ালের মধ্যে gate মত ব্যবস্থা থাকে, যা দিয়ে সে প্রয়োজন অনুযায়ী বাইরের জিনিস ভিতরে আনে, যেমন “খাদ্য”, ভেতরের জিনিস বাইরে পাঠায়।
৩। কোষ খায়
৪। কোষ বড় হয়
৫। কোষ নতুন কোষ জন্ম দেয়
৬। কোষ আশেপাশের পরিবেশের সাথে interact করে
একটা মানুষ বেঁচে থাকার জন্য যা করে, কোষ এ সবই করে। ব্যবহার আপনার আর কোষের সাথে খুব মিলে যায়। “প্রাণ” বলে কথা! এখন নিচের ছবিটা একটা কলিজার (liver) কোষের ভিতরের ছবি। নানা ধরনের জিনিস দেখা যাচ্ছে! অনেকেই হয়ত বুঝতে পারবেন যে ওই সবুজ জিনিসগুলা “mitochondria”, আর নীল জিনিসটা “golgi apparatus “। তবে যে যাই হোক, এগুলা কোষের ভিতরের জিনিস, আর এই সবগুলাই “মৃত” বা dead!
এই ছবি থেকে পাঠকের বুঝতে সমস্যা হতে পারে যে, কোষের ভিতরটা আসলে কি রকম। তাই একটা simplified চিত্র এর নিচে আরেকটা দেয়া হল।
এখন একটা খুব সহজ উদাহরণ দিই। কাগজ আগুনে পোড়ালে এখানে কি কোন প্রাণের ব্যাপার থাকে? থাকে না। এইটা পুরাই একটা chemical reaction। কাগজে এক ধরণের কার্বন যৌগ থাকে যেটাকে বলা হয় cellulose। এইটা যথেষ্ট তাপমাত্রায় বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে CO2 বা CO তৈরি করে, আর কিছু ছাই রেখে যায়।
কোষের ভিতরেও ওই ১ থেকে ৬ পর্যন্ত সবগুলা কাজ করার জন্য প্রতি সেকেন্ডে কয়েক মিলিয়ন chemical reaction হয়! এর মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় উদাহরণ হল, krebs cycle বা Citric acid cycle। জিনিসটা কি বোঝার আগে, “কোষ”এর খাদ্য কি বোঝা জরুরি। আমাদের ক্ষুধা লাগলে আমরা ভাত খাই যাতে শরীরে শক্তি পাই, এই ভাতে থাকে carbohydrate। কোষের জন্য কিন্তু এই carbohydrateএর কোন মূল্য নাই। কোষের শক্তির জন্য লাগে Adenosine triphosphate (ATP)। কোষের যে কোন কাজ করতে এই ATP লাগবেই! আর তাই কোষের mitochondriaয় অনেকগুলো chemical reactionএর মাধ্যমে carbohydrate থেকে krebs cycle এর মাধ্যমে ATP তৈরি হয়। চক্রের পুরা প্রক্রিয়াটা নিচের চার্টে দেয়া হল।
বোঝাই যাচ্ছে, কত গুলা chemical reaction করে শেষ পর্যন্ত ATP আসে। কিন্তু যতই জটিল হোক, এতটুকু বোঝা যাচ্ছে যে এইখানে সবই chemical reaction যা physics দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়, পুরা প্রক্রিয়াটাই কাগজ পুরানোর মতন, মৃত জিনিসের কাজকারবার! “প্রাণ” বলে কিছু তো নাই, অলৌকিক বলেও কিছু নাই।
আর যারা mitochondria কি জানেন, তাদের জন্য। Mitochondriaর নিজস্ব genetic code থাকে, যা মানুষের থেকে আলাদা। এজন্য ধারণা করা হয় যে এইটা আগে ১টা prokaryotic কোষ, বা আলাদা “প্রাণ” ছিল, পরে eukaryotic কোষের ভেতর ঢুকে endosymbiont বা মিথোজীবী হিসেবে থাকা শুরু করে। ধীরে ধীরে এইটা তার নিজস্ব সত্তা হারিয়ে একটা “মৃত” জিনিসে পরিণত হয়। অর্থাৎ একটা জীবিত জিনিস মৃত জিনিস হচ্ছে, তাহলে প্রাণ আসলে কি জিনিস?
এ পর্যন্ত এসে আমরা “প্রাণ” কি এই ব্যাপারটাই ক্লিয়ার করতে পারলাম না! সম্ভবত এই প্রশ্নটাই অবান্তর তাই এইটা ক্লিয়ার করা সম্ভবও না, আপাতত এটা পাঠকের চিন্তার উপর বিষয়টা ছেরে দেয়া হল। ২ নম্বর প্রশ্নে চলে যাই।

প্রাণ কিভাবে প্রাণের মত এত কাজ করে?

যে ১ থেকে ৬ টা কাজ বলা হল, এই কাজ গুলা করে কোষ টিকে থাকে। আর সব কাজে যেমন শ্রমিক দরকার হয়, কোষেরও এমন শ্রমিক আছে। এই শ্রমিকের সাধারণ নাম হচ্ছে “প্রোটিন”।
এখন “প্রোটিন” আছে কয়েক হাজার ধরনের! এক এক প্রোটিন এক এক কাজ করে, আবার অনেকগুলা প্রোটিন মিলেও ১ টা কাজ করে। আর এরা কাজ করে chemical reaction এর মাধ্যমে। হাজার হাজার প্রোটিনের কোনটা কিরকম chemical reaction করে তা আলোচনা করতে গেলে অনেক বেশি আলোচনা হয়ে যাবে। আপাতত এইটা নিয়ে জানার দায়িত্ব আমি পাঠকের হাতে ছেরে দিলাম। তবে যাই হোক, প্রোটিনের কার্যক্রম বিষয়টা সম্পূর্ণভাবে physics দাড়া ব্যাখ্যা করা যায়, কোন অলৌকিকতার সুযোগ নাই এখানে।
কোষের ভিতরে প্রোটিনের কাজ ব্যাপক! প্রোটিন তৈরির তথ্য রাখা ছাড়া আর সবকিছুই করে এরা! যেমন কোষের structure তৈরি হয় প্রোটিন দাড়া, এদের বলে, actin। কোষের জন্য খুবই important ion channel, পুরাটাই প্রোটিনে তৈরি! এরা কোষের মধ্যে ion এর ভারসাম্য বজায় রাখে।
কোষ বিভাজনের সময় প্রোটিন লাগে, এদের বলে Microtubule। কোষের ভিতর প্রোটিন তৈরি করতেও প্রোটিন লাগে! তাছাড়া আরও কোটি কোটি রকম কাজ করে কোষের ভিতর! কোষের বাইরের বা অন্য কোষের জন্যও কাজ অনেক! যেমন, আমাদের অন্ত্রে খাবার হজম করতে “এনজাইম” লাগে, এনজাইম এক ধরনের প্রোটিন, যা অন্ত্রের কোষ থেকে নিঃসৃত হয়। আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধের জন্য এন্টিবডি থাকে, এইটাও প্রোটিন, এদের B lymphocytes নামক এক ধরনের কোষ তৈরি করে রক্তে ছেরে দেয়। কোষের খাবার “glucose” কোষের ভিতরে নিতে কোষের বাইরে থেকে ইনসুলিন লাগে, এইটাও প্রোটিন। এই ইনসুলিন আবার তৈরি করে রক্তে ছারে অগ্নাশয়ের Beta কোষ। প্রোটিন শরীরও তৈরি করে। যেমন “কোলাজেন” তন্তু, সম্পূর্ণ প্রোটিনে তৈরি। এই তন্তু হাড় গঠন করে, কোষে কোষে জোরা লাগায়, মাংসে মাংসে জোরা লাগায় , হাড়ে হাড়ে জোরা লাগায়। আর মাংসপেশি তো আছেই! সবচেয়ে নামকরা প্রোটিন সম্ভবত “হিমোগ্লোবিন”, যে কারণে আমাদের রক্ত লাল। হিমোগ্লোবিন যে কোষে থাকে সেই কোষগুলা দেখতে নিচের মতন,
এই কোষগুলোর ভিতর হিমোগ্লোবিন দিয়ে ভর্তি! এই হিমোগ্লোবিন দেখতে বাম পাশের ছবিটার মতন। গোল গোল গুলা সব পরমানু! বঝাই যাচ্ছে পুরা প্রোটিনটাই একটা অনু, যেইটা ফুসফুস থেকে অক্সিজেন নিয়ে যায়। কাজ করে ঠিকই, কিন্তু জিনিসটা “মৃত”, অনুর কোন জীবন নাই!
সব মিলিয়ে “কোষ” হচ্ছে Protein based robot! আর কিছু না!

যাই হোক, এবার দুইটি সহজ উদাহরণে আসি।
Growth hormone বা somatotropin নামে এক ধরনের “প্রোটিন” আছে যা মানুষের শরীর কত বড় হবে তা নির্ধারণ করে। মস্তিস্কের pituitary gland থেকে এটা নিঃসৃত হয়। এই প্রোটিন কলিজা আর অন্যান্য অঙ্গের কোষকে IGF-1 প্রোটিন তৈরি করতে উত্তেজিত করে। আবার IGF-1 প্রোটিন হাড় গঠন করে আর বড় করে আর হাড় বড় হবার সাথে সাথে অন্যান্য অঙ্গ, পেশী ইত্তাদির কোষ বিভাজিত হয়ে নতুন কোষ তৈরি হয়, ফলে বড় হয়, সবশেষে পুরা মানুষটাই বড় হয়। আর তাই somatotropin বেশি নিঃসৃত হলে বেশি লম্বা হবে, বড় হবে। নিঃসৃত হওয়া শেষ হয়ে গেলে আর লম্বা হবে না! ডানে এই প্রোটিনটার রাসায়নিক গঠন দেয়া হল।
এইটা একটামাত্র উদাহরণ, কিন্তু এ থেকে আমরা প্রোটিন যে আমাদের সবকিছুই করে এই সত্যটা বুঝতে পারি।
সবার শেষে সারমর্ম হল,
কে কেমন হবে নির্ভর করে “কোষ”এর উপর, আর কোষ কেমন হবে, কেমন আচরণ করবে, কয়টা হবে এইসব নির্ভর করে “প্রোটিন”এর কাজের উপর। কাজেই, গরু, মানুষ, পোকামাকড় যাই হোক, কোন প্রানির শরীর কেমন হবে, মস্তিস্ক কেমন হবে, আচরন কেমন হবে হব নির্ভর করে, প্রোটিনের কাজের উপর!
আচ্ছা এখন প্রোটিন সব কাজ করে, তাহলে প্রোটিন তৈরি করে কে আর নিয়ন্ত্রণ করে কে?

প্রোটিন কে তৈরি করে? কিভাবে তৈরি হয়?

আচ্ছা প্রোটিন বেশিদিন টিকে না, তাই নষ্ট হয়ে গেলে প্রোটিন তৈরি করতে হয়। আবার নির্দিষ্ট পরিমানে তৈরি করতে হয়, বেশি হলে সমস্যা, কম হলেও সমস্যা!
এখন, প্রোটিন আছে কয়েক হাজার ধরনের, কিন্তু প্রোটিন তৈরি হয় ২০ ধরনের amino acid দারা (মানুষের জন্য ২০, কিছু কিছু প্রাণীর ২২ টা লাগে, উদ্ভিদের প্রায় ১০০ ধরণের প্রোটিন লাগে), যেগুলো সোজা বাংলায় “অনু”। নিচে amio acid এর একটা ছবি দেয়া আছে, সব amino acid একই, পার্থক্য শুধু R groupএ। R group বলতে ছবিতে R টা বোঝানো হচ্ছে।
বিবর্তন
যাই হোক, এই ২০ ধরনের amino acid একটার সাথে আরেকটা নাইট্রোজেন বা peptide বন্ধনের সাহায্যে জোরা লাগিয়ে হাজার হাজার রকম প্রোটিন তৈরি করা যায়! যেমন নিচের ছবিতে ২ টা amino acid জোরা লাগানো হোল।
AminoacidCondensation.svg.png
এখন যেন তেন ভাবে আন্দাজে জোড়া লাগালে তো হবে না! জোড়া নির্দিষ্ট প্রোটিন, নির্দিষ্ট ভাবে জোড়া লাগালে সেইটা কাজের প্রোটিন হবে!
সহজ উদাহরণ হল, কারও কাছে ২০ রকমের লেগো আছে। এই ২০ রকমের দিয়ে অসীম সংখ্যক জিনিস বানানো সম্ভব, কিন্তু যেনতেন ভাবে বানালে অই জিনিসের কোন মানে থাকবে না।
ঠিক তেমনি, প্রোটিন তৈরি করতে হলে ঠিক ভাবেই লাগাতে হবে! আর তাই কিভাবে জোড়া লাগাতে হবে, তা তো অবশ্যই কোথাও লেখা থাকতে হবে! কোষে এইটা কই লেখা থাকে?
প্রশ্নটার উত্তর খুজতে নিচের ছবিটি লক্ষ্য করি।
এইটা এক ধরণের immortal কোষের ছবি। সব কোষগুলার মধ্যেই মাঝখানে গোল মত একটা জিনিস আছে। এই জিনিসটাকে বলে “নিউক্লিয়াস”। এই নিউক্লিয়াসের মধ্যে ২৩ জোড়া chromosome দেখতে অনেকটা নিচের বাম পাশের ছবির মতন।
 ভালোমতন বোঝা যাচ্ছে না। তাই একটা simplified ছবি দিলাম ডানপাশে। এখানে ২২ জোড়া chromosome দেখা যাচ্ছে X Y ছাড়া। এই ২২ জোড়ার অর্ধেক আর X আসছে মায়ের কাছ থেকে আর বাকি ২২ জোড়া আর Y আসছে বাবার কাছ থেকে। এখানে ১ টা কথা না বললেই নয় তা হল, সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে নির্ভর করে X Y উপর। ২টাই X, মানে XX হলে মেয়ে হবে আর ১টা X আর আরেকটা Y হলে ছেলে হবে।
যাই হোক, এই chromosomeআসলে কি? প্রতিটা chromosomeএর মধ্যে লম্বা পেচানো সুতার মত এক ধরনের অণু থাকে, এদের বলে DNA বা deoxyribonucleic acid! জিনিসটা অনেকটা পেচানো মইের মতন। Electron microscopeএর নিচে দেখে এদের এমন দেখায়।
মুলত chromosome গুলাই DNA। একটা কোষের সবগুলা chromosome এর DNA মিলে প্রায় ২ মিটার লম্বা, যা যে কোন স্বাভাবিক মানুষের চেয়েও লম্বা। এত লম্বা জিনিসটা ৬ মাইক্রন জায়গার মাঝে থাকে! ছবিতে অই ২ মিটারএর মাঝে ২০০ ন্যানোমিটার অংশ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আসলে জিনিসটা কি বোঝা যাচ্ছে না! তাই DNAর একটা simplified চিত্র নিচে দেয়া হল।
এখানে কোষের নিউকিয়াসের ভিতর chromosome, আর chromosome খুললে DNA। আরও বিস্তারিত জানতে নিচের ছবিটা দেয়া হল। এই ছবিতে DNA থেকে chromosome পর্যন্ত দেখানো হচ্ছে। পাঠকরা বিস্তারিত জানতে নিজের থেকে পড়ে নিতে পারবেন।
যাই হোক, এখন দেখে আসি DNA আসলে কি। DNA হচ্ছে ১ টা অণু! আর কিছু না। নিচে এই অণুর একটা ক্ষুদ্র অংশের simplified চিত্র দেয়া হল।
Figure 15: DNA molecule
যাই হোক, মোট ৪ ধরনের জিনিস দিয়ে DNA তৈরি। Adenine (A), Thymine (T), Cytosine (C) আর Guanine (G)। এগুলাকে বলা হয় base। এই ৪ টা জিনিস দিয়েই কিরকম প্রোটিন কিভাবে তৈরি করতে হবে তা লেখা থাকে।
এখন প্রোটিন কিভাবে তৈরি হয় তা ব্যাখ্যা করা খুবই বিশাল আলোচনা। তাই আমি বর্ণনায় যাব না, আমি শুধু সারাংশ বলব যাতে পাঠকরা মোটামুটি আন্দাজ করতে পারেন আর নিজেরা পড়ালেখা করতে পারেন।
প্রোটিন বানানো বোঝার জন্য কয়েকটা জিনিস জানা জরুরি। DNAএর গঠন এবং জিন, gene।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অথর্ববেদ ২/১৩/৪

  ह्यश्मा॑न॒मा ति॒ष्ठाश्मा॑ भवतु ते त॒नूः। कृ॒ण्वन्तु॒ विश्वे॑ दे॒वा आयु॑ष्टे श॒रदः॑ श॒तम् ॥ ত্রহ্যশ্মানমা তিষ্ঠাশ্মা ভবতুতে তনূঃ। কৃণ্বন্তু...

Post Top Ad

ধন্যবাদ