নবী মুহাম্মদের প্রাথমিক অবস্থা
নবী মোর পরশ মনি
নবী মোর সোনার খনি
নবী নাম জপে যে জন
সেইতো দোজাহানের ধনী।।
ছোটবেলা একটি বইতে পড়েছিলাম, শর্ষীনার পীরসাহেব নাকি বাঙালি নারীদের গনিমতের মাল হিসেবে পাকবাহিনী এবং রাজাকার আলবদরদের ভোগ করার ফতোয়া দিয়েছেন। শুনে খুব অবাক লেগেছিল। মনে মনে ভেবেছিলাম, এই ধরণের পীর সাহেবরা ইসলামের মত শান্তির ধর্মকে বদনাম করছে। পবিত্র শান্তির ধর্ম ইসলামে কোথাও কখনও এরকম কথা বলা নেই, থাকতেই পারে না। একটু বড় হলাম যখন, কোরানের বাঙলা অনুবাদ পড়লাম, সেই সাথে বুখারী হাদিস এবং সহি মুসলিম হাদিস। পড়ে অবাক বিস্ময়ে মাথা কাজ করছিল না। অনেকদিন অনেকবার ভেবেছি, এই কি সেই মুহাম্মদ, যাকে আমি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ভাবতাম? গনিমতের মাল ভোগ, যুদ্ধবন্দী নারীকে ধর্ষন কি আসলেই ইসলামের বিধান কিনা, সেটা একটা গুরুত্বপুর্ণ প্রশ্ন অবশ্যই। উল্লেখ্য, কোরান এবং হাদিস হচ্ছে সর্বকালের, সর্বসময়ের জন্য মুসলমানদের বিধান বা আইন। সেখানে যা বলা হচ্ছে, বা মুহাম্মদ ব্যক্তিগত জীবনে যা করেছেন, মুসলমানদের ঠিক সেভাবেই সেই সব করা সুন্নত বলে গণ্য।
মুহাম্মদকে সবসময়ই খুব ভাল এবং আদর্শ মানুষ বলে জেনে এসেছি। ছোটবেলায় শুনতাম মুহাম্মদ তার চরম শত্রুকেও ক্ষমা করে দিতেন। কিন্তু বাস্তবে কোরান হাদিস পড়ার পরে সেরকম কোন ঘটনা কোথাও খুঁজেই পেলাম না। পরে জেনেছিলাম, গৌতম বুদ্ধ থেকে শুরু করে এরকম অন্য কয়েকজন মহামানবের গল্প আসলে আমরা মুহাম্মদের নামে শুনি। সেগুলো আদৌ মুহাম্মদের গল্প নয়। তাহলে আসল মুহাম্মদ কেমন ছিলেন? এই বিষয়ে কোরান হাদিস কী বলে?
এই বিষয়গুলো ভালভাবে জানতে আমাদের নজর দিতে হবে মুহাম্মদের সবচাইতে অথেনটিক জীবনী গ্রন্থের ওপর, সেই সাথে হাদিস এবং কোরানের আয়াতের ওপর। এবং কোরানের আয়াতের শানে নুযূল বা ব্যাখ্যার ওপর। মুহাম্মাদের জীবন নিয়ে অনেক গুরুত্বপুর্ণ লেখক জীবনীগ্রন্থ লিখেছেন। তার জীবনীগ্রন্থকে সাধারণভাবে “সিরাত” গ্রন্থ বলে। সকল জীবনীগ্রন্থের মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য হলো ইবনে ইসহাক রচিত মুহাম্মাদের সর্বাধিক প্রাচীনতম নির্ভরযোগ্য জীবনী সংকলন সিরাতে ইবনে ইসহাক এবং তা হতে সম্পাদিত সিরাতে ইবনে হিশাম, আল তাবারি রচিত “সিরাতে রাসুলাল্লাহ”, ইবনে কাসির রচিত “আল-সিরাত আল-নববিয়াত”, মার্টিন লিংসের “মুহাম্মাদ : হিজ লাইফ বেজড অন দ্য আর্লিয়েস্ট সোর্সেস”, ক্যারেন আর্মস্ট্রং রচিত “মুহাম্মাদ : এ বায়োগ্রাফি অব দ্য প্রফেট” এবং “মুহাম্মাদ : এ প্রফেট অব আওয়ার টাইম”, মার্মাডিউক পিকথাল রচিত “আল আমিন : এ বায়োগ্রাফি অব প্রফেট মুহাম্মাদ”, সাম্প্রতিককালে রচিত আর্-রাহিকুল মাখতুম, বাংলা ভাষায় গোলাম মোস্তফা রচিত বিশ্বনবী, এয়াকুব আলী চৌধুরীর নুরনবী, মওলানা আকরম খাঁ রচিত মুস্তাফা চরিত প্রভৃতি। এই লেখাটিতে তাই সতর্কতার সাথে সব রেফারেন্স যথাসম্ভব ক্রস চেক করার চেষ্টা করা হয়েছে।
(রেফারেন্সঃ ডাউনলোড লিঙ্ক-
– Ibn Ishaq Sirat Rasul Allah
– সীরাতুন নবী সা. (ইবনে হিশাম) ১ম খণ্ড ২য় খণ্ড ৩য় খণ্ড ৪র্থ খণ্ড
– বিশ্বনবী – গোলাম মোস্তফা )
নিজের ওপর আল্লাহর কাছ থেকে ওহী নাজিল হয়েছে দাবী করার পরে নতুন ধর্ম প্রচারের পরে পরে মুহাম্মদের প্রয়োজন হয়েছিল দল ভারী করবার। সেই সময়ে নানান পৌত্তলিক ধর্ম প্রচলিত ছিল, এক এক গোত্র এক এক দেবদেবীর উপাসনা করতো। ইহুদী এবং খ্রিস্টানও ছিল প্রচুর। মুহাম্মদ ঠিকই বুঝেছিল, মানুষ সব সময়েই দুটি জিনিসের বাধ্য- লোভ আর ভয়। মুহাম্মদ দোযখের ভয় জনগণকে এমনভাবেই দেখিয়েছেন যে সেই ভয়েই অনেক দুর্বল হৃদয়ের মানুষ সাথে সাথে ইসলাম কবুল করে। একই সাথে ছিল ইসলামে যোগ দিলে অশ্লীল লাভের প্রতিশ্রুতি, বেহেশত নামক পতিতাপল্লী এবং সুরীখানায় প্রবেশাধিকার। এই দুই-লোভ এবং ভয় দেখিয়ে মানুষকে দলে টানার কাজ ভালভাবেই চলছিল সে সময়ে। সেই সময়ে সংখ্য ছোট ছোট আরব বেদুইন দস্যু দল নানা জায়গাতে ডাকাতি করে বেড়াতো। সেই সব ডাকাতদের ডাকাতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন অনেক আরব জাতীয়তাবাদী নেতাই। কিন্তু সফল হয়েছিলেন একজন। তিনি হযরত মুহাম্মদ।
জিহাদ এবং গনিমতের মাল
মুহাম্মদের জন্মও হাশেমী বংশে, কোরাইশদের মধ্যে হাশেমীরা ছিলেন বেশ সম্ভ্রান্ত বংশ।
আপনারা জানেন যে মুহাম্মদ ইসলাম ধর্মের ঘোষনা দেয়ার পরে তার দলে বেশ কিছু মানুষ যোগ দেয় এবং বিপুল পরিমাণে মানুষ তার প্রচারিত ধর্মের বিরোধীতা করে। বিরোধীতার প্রধান উদ্দেশ্য অবশ্য ছিল রাজনৈতিক। সে সময়ে আরবের মক্কায় দুটো গ্রুপ শক্তিশালী ছিল, একটা গ্রুপের সদস্য মুহাম্মদ নবী হবার দাবী করায় অন্য গ্রুপটি নিজেদের কর্তৃত্ব হারাবার ভয়ে মুহাম্মদের প্রবল বিরোধীতা করে। সে সময়ে মুহাম্মদের প্রবর্তিত ইসলাম এবং সে সময়ের আরবের প্যাগান, খৃষ্টান এবং ইহুদীদের ভেতরে বেশ কিছু যুদ্ধ হয়। কোনও কোনও সময়ে মুহাম্মদের দল জয়লাভ করে, কোনও কোনও সময়ে কুরাইশরা বা বিধর্মীরা।
নতুন প্রচারিত ধর্মে যোগদানের জন্য মুহাম্মদকে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছে, আল্লাহর নামে তিনি তার গ্রন্থ কুরআনে বলেছেন যে ইসলামের পথে জিহাদ করলে স্বর্গে অসংখ্য (৭২+) হুর গেলমান পাওয়া যাবে, দুধের সমুদ্র থেকে শুরু করে মদের নদী এমন কিছু নাই যে মুহাম্মদ লোভ দেখান নি। এ সকলই নতুন প্রবর্তিত ধর্মে মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্য। পরকালে নানা ধরণের সুখ সুবিধার কথা বলে মুহাম্মদ ক্রমশ দল ভারী করতে শুরু করেছিল। মক্কা থেকে বিতাড়িত হয়ে শুধুমাত্র গনিমতের মাল ভোগের বিধান না থাকলেই এতো দ্রুত মুহাম্মদের সেনাবাহিনী খুব বেশি বৃদ্ধি পেতো না। নানা জায়গা থেকে ছোট ছোট দস্যু এবং ডাকাত দল জানতে পেরেছিল যে, নবী মুহাম্মদ একটা সেনাবাহিনী গঠন করেছে। যেই সেনাবাহিনী ছোট ছোট বাণিজ্য কাফেলা লুট করছে, ইহুদী গোত্রগুলোকে আক্রমণ করছে, এবং তাদের মালপত্র, স্ত্রী কন্যাদের গনিমতের মাল হিসেবে ভাগ করে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, জিহাদ করে মারা গেলে মুহাম্মদ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ৭২টি হুর, সেই হুর নামক বেশ্যারা এত্ত সুন্দরী যে, খোদ কোরানেই তাদের রূপযৌবন বর্ণনা করা হচ্ছিল। হাদিসেও অসংখ্যবার সেইসব হুরের স্তন আর চিরঅক্ষত যোনীর লোভ দেখানো হয়েছে। অর্থাৎ যুদ্ধ করে বেঁচে থাকলে গনিমতের মাল, মারা গেলে ৭২ খানা বেশ্যা। আরব বর্বর দস্যুদের সবচাইতে কামনার বস্তু। সে কারণে মুহাম্মদ খুব দ্রুত তার দলে অসংখ্য লোক ভিড়াতে সক্ষম হন।
কুরাইশ বা বিধর্মীদের সাথে যুদ্ধে গনিমতের মাল বা যুদ্ধে শত্রু সম্পত্তি ভোগ এবং দখলকে কেন্দ্র করে জিহাদীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিল। কিছু মানুষ মুহাম্মদের কাছে জানতে চাইলো যুদ্ধে মৃত শত্রুর ফেলে যাওয়া সম্পদ, স্ত্রী, শিশু, বাচ্চাকাচ্চা, বৃদ্ধ মা বাবা, উট, অর্থ এগুলো ভোগ করা যাবে কিনা? আসুন দেখি আমাদের মানবতার মহান পূজারী মুহাম্মদ এ সম্পর্কে কি বলেছেন! বেশ কিছু সাহাবী মুহাম্মদের কাছে গিয়ে জানতে চাইলো যুদ্ধে প্রাপ্ত গনিমতের মালের মধ্যে নারীদের ধর্ষণ করা জায়েজ কিনা। পরম করুনাময় আল্লাহ্ তায়ালা সাথে সাথে ওহী লাজিল করে বসলেন।
“তোমাদের জন্যে অবৈধ করা হয়েছে নারীদের মধ্যে সধবাগণকে (অন্যের বিবাহিত স্ত্রীগণকেও); কিন্তু তোমাদের দক্ষিন হস্ত যাদের অধিকারী- আল্লাহ তোমাদের জন্যে তাদেরকে বৈধ করেছেন”।(সুরা ৪:২৪)
দক্ষিণ হস্ত বলতে কি বুঝায় নিশ্চয়ই বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন নাই, ডান হাত বলতে বুঝায় শক্তি প্রয়োগে প্রাপ্ত। ডান হাত শক্তি বা তলোয়ারের প্রতীক এটা নিশ্চয়ই জানা থাকার কথা। কোরানের বাঙলা অনুবাদে ইদানীং এই আয়াতগুলোকে একটু বদলে দেয়া হচ্ছে। ভালভাবে লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন।
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় জালালাইন বলেন- “অর্থাৎ, যাদেরকে তারা যুদ্ধের ময়দানে আটক করেছে, তাদের সাথে সহবাস করা তাদের জন্যে বৈধ, যদি তাদের স্বামীগণ দারুল হরবে জীবিতও থাকে” (দারুল হরব অর্থ- অমুসলিম রাষ্ট্র বা দেশ।অর্থাৎ স্বামী জীবিত আছে, এমন যুদ্ধবন্দীও ধর্ষনের উপযোগী)
[ দক্ষিন হস্তের অধিকার বা ‘মালাকুল ইয়ামিন’ বলতে বুঝায় ক্রীতদাস বা দাসী (স্লেভস কিংবা মেইডস), যা যুদ্ধবন্দী হিসেবে কিংবা বাজার হতে ক্রয়সূত্রে মুসলমানদের দখলে আসে। ক্রীতদাসী মুসলমানদের দখলে আসলে তাদের সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ এবং সঠিক। বর্তমান যুগেও যদি কোন কাফেরদের দেশ মুসলমানদের অধিকারে আসে, এই নিয়ম পালন করা বৈধ এবং সঠিক। কারণ কোরআন রোজ কেয়ামত পর্যন্ত যেমন আছে তেমনই থাকবে, কোরআনের কোনও আয়াত পালটাবার, বা সময়ের প্রয়োজনে তা সংশোধন করার অনুমতি কাউকেই দেয়া হয় নি।] এর ব্যাখ্যা পাওয়া যায় হাদিসেইঃ
আসুন আরও কিছু আয়াত লক্ষ্য করি।
8:69 -“But (now) enjoy what ye took in war (booty), lawful and good; but fear God।
Sura-47:4 -“when you meet the unbelievers, strike off their heads; then when you have made wide Slaughter among them, carefully tie up the remaining captives”
(মহান করুণাময় আল্লাহ তালাহ মুমিন বান্দাদের উৎসাহ দিচ্ছেন অবিশ্বাসীদের কল্লা ফেলতে, এবং তাদের মধ্য থেকে বন্দীদের দাস বানাতে)
যুদ্ধবন্দী হিসেবে যেই সকল নারীদের জিহাদিগণ হস্তগত করতো, দেখা যেতো, যুদ্ধের ময়দানেই তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তো মুহাম্মদের অনুসারীগণ। একটা ক্ষেত্রে মুহাম্মদের প্রশংসা করতেই হয় যে, তিনি এই ভয়াবহ বিকৃতরুচির জিহাদিদের উন্মত্ততা দেখে নির্দেশ দিয়েছিলেন, অন্ততপক্ষে গর্ভবতী নারীদের ওপর যেন জিহাদিগণ হামলে না পরেন। পড়ুন নিচের হাদিসটি–
এইরকম নির্দেশ দেয়ার কারণ বোঝার জন্য আইনস্টাইন হওয়ার দরকার হয় না। মুহাম্মদের অনুসারীগণ এতটাই উম্মত ছিল গনিমতের মাল হিসেবে নারী ধর্ষণে, যে মুহাম্মদের মত মানুষকেও রীতিমত নিয়মজাড়ি করে বলে দিতে হয়েছিল যে, গর্ভবতী নারীর বাচ্চা জন্ম হওয়ার আগে তাকে রেইপ করা যাবে না। তবে তাদের স্বামী যদি জীবিত থাকে, তাদেরকে রেইপ করতে মুহাম্মদ কোন বাধা দেন নি।
যুদ্ধে যেসব নারীদের বন্দী হতো, তাদের মধ্য থেকে মুহাম্মদ স্বয়ং বেশ কয়েকজনকে নিজের স্ত্রী কিংবা উপপত্নী হিসেবে নির্বাচিত করেছিলেন। সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটিকেই তিনি নিজের জন্যে রাখতেন।
রেফারেন্সঃ নবী মুহাম্মদ ১১ মতান্তরে ১৩ জন স্ত্রী থাকার পরেও নিয়মিত নিয়মিত দাসীদের সাথে যৌন সম্পর্ক করতেন। হাদিসটির মান, সহি। হাদিসটিতে বলা হচ্ছে,
আরেকটি হাদিস, আজলের নিয়ম সম্পর্কিত।
আযলের হুকুম
স্বভাবতই আমি যখন ছোট ছিলাম, ভাবতাম যে, মুহাম্মদের মত একজন অত্যন্ত সম্মানিত মহামানবের কাছ থেকে এসব আচরণ পাওয়া যাবে না। আশা করেছিলাম যে তিনি এই ধরণের কোন কাজের সাথে নিজেকে জড়িত করবেন না, বরঞ্চ তার দলের কেউ এই কাজে লিপ্ত হলে তার বিচার করবেন, মানবতাবিরোধী এই কাজগুলো নিষিদ্ধ করবেন। কিন্তু হতাশ হয়ে লক্ষ্য করলাম, তিনি তার কিছুই করেন নি, বরঞ্চ নিজেই সেই কাজগুলো করে তার উম্মতদের উৎসাহিত করেছেন!
নিজেকে অনেক প্রবোধ দিয়েছিলাম এই ভেবে যে, সেই সব যুদ্ধবন্দী নারীর ভালোর জন্যেই হয়তো এরকম বিধান রাখা হয়েছিল। হয়ত যুদ্ধবন্দী নারীদের সেই সময়ে যৌন চাহিদা ছিল, তা মেটাবার জন্যেই নবী এরকম বিধান রেখেছিলেন। কিন্তু নিজেকে এই বিষয়ে বোঝানো কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। আসলেই? সিরিয়াসলি? একজন যুদ্ধবন্দিনী, যার বাবা ভাই থেকে শুরু করে সব আত্মীয় স্বজন নিহত হলো মুহাম্মদের জিহাদীদের হাতে, সেই নারী নিশ্চয়ই খুব আনন্দের সাথে ধেই ধেই করে নাচতে নাচতে মুহাম্মদের অনুসারীদের কোলে উঠে গিয়েছিল, তাই না? জিহাদীদের কাছে কাকুতিমিনতি করতে শুরু করেছিল, যেন তাদের যৌন সুখ দেয়া হয়! তাই কী? নিজেকে এরকম অদ্ভুত বুঝ দেয়ার পরে নিজের কাছেই খটকা লাগতো, নিজের কাছেই নিজেকে ছোট মনে হতো।
এমনকি নিজের জামাইদেরকেও তিনি যুদ্ধবন্দিনীদের ভাগ দিতে কসুর করেননি। হযরত আলী এবং হযরত ওসমানকেও তিনি উদারভাবে মালে গনিমত বন্টন করেছেন। নিচের হাদিসটিতে দেখা যাবে, কীভাবে হযরত ফাতেমার স্বামী নবী জামাতা শেরে খোদা হযরত আলী বন্দিনীর সাথে সেক্স করছেন, যে বন্দিনীকে তিনি শ্বশুরের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছেন।
মহান আমাদের দয়াল নবী মুস্তফা। নিজের কন্যার স্বামীর সাথে সেক্স করার জন্য যুদ্ধবন্দিনী দিতে এখনকার আধুনিক পিতারও বুক কেঁপে উঠবে, কিন্তু সেই সময়েই দয়াল নবী তা দেখিয়ে দিয়ে গেছেন।
সহি বুখারিঃ ভলিউম-৫, বুক নং-৫৯, হাদিস নং-৬৩৭:
বুরাইদা কর্তৃক বর্ণিতঃ
নবী আলীকে ‘খুমুস’ আনতে খালিদের নিকট পাঠালেন (যুদ্ধলব্ধ মালের নাম খুমুস)। আলীর উপর আমার খুব হিংসা হচ্ছিল, সে (খুমুসের ভাগ হিসেবে প্রাপ্ত একজন যুদ্ধবন্দিনীর সাথে যৌনসঙ্গমের পর) গোসল সেরে নিয়েছে। আমি খালিদকে বললাম- “তুমি এসব দেখ না”? নবীর কাছে পৌছলে বিষয়টি আমি তাকে জানালাম। তিনি বললেন- “বুরাইদা, আলীর উপর কি তোমার হিংসা হচ্ছে”? আমি বললাম-“হ্যা, হচ্ছে”। তিনি বললেন-“তুমি অহেতুক ইর্ষা করছ, কারণ খুমুসের যেটুকু ভাগ সে পেয়েছে তার চেয়ে আরও বেশী পাওয়ার যোগ্য সে”।
মহম্মদের সবচেয়ে প্রামান্য এই জীবনচরিত ইবনে ইসহাকের লেখা সিরাত এ রাসুল্লাল্লাহ (যে রচনাকে মুসলিম বিশ্বে সর্বদা রেফারেন্স হিসেবে ব্যাবহার করা হয়) পাঠ করে আমরা জানতে পারি, হুনায়েনের যুদ্ধে এক বৃদ্ধাকে ছেড়ে দেওয়া হলো, কারণ তার মুখমন্ডল ছিল শীতল, বক্ষদেশ সমতল, সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা ছিল না তার এবং বুকে দুধের ধারা শুকিয়ে গেছে। সুতরাং ছয়টি উটের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হলো (রেফারেন্স-ইবনে ইসহাকের সিরাত রাসুলুল্লাহ, অনুবাদ- এ. গুইলম, ১৫তম সংস্করণ।, পৃ-৫৯৩)।
এবার আসুন যুদ্ধে প্রাপ্ত গনিমতের মাল হিসেবে নারীদের গর্ভধারন বন্ধ করার জন্য মুহাম্মদের অনুসারীরা কি করতেন জেনে নেই। গর্ভধারন করলে নারী আর ধর্ষণের উপযোগী থাকে না, সুতরাং জিহাদী সাহাবী এবং মুহাম্মদের গর্ভবতী গনিমতের মালের কোন প্রয়োজন ছিল না।
সহি বুখারিঃ ভলিউম ৭, বুক নং-৬২, হাদিস নং-১৩৭:
আবুসাইদ আল খুদরি থেকে বর্ণিতঃ
মালে গনীমত (War Booty) হিসেবে আমাদের হাতে বন্দিনী আসলে আমরা তাদের সাথে সঙ্গমের সময় যোনিদেশের বাইরে বীর্যপাত ঘটাতাম। অতঃপর এ সম্পর্কে আল্লাহর রাসুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- “তোমরা কি সত্যিই এরূপ কর”? এই প্রশ্নটি তিনি তিনবার করেন। (তারপর তিনি বলেন) – “যে সব আত্মা জন্ম নেয়ার জন্যে নির্ধারিত, সেগুলি আসবেই, পুনরুত্থানের দিন পর্যন্ত”।
আজলের কারণ
জিহাদিদের উন্মত্ত ধর্ষণপ্রক্রিয়ার ফলে যদি বন্দিনীটির গর্ভসঞ্চার হয় তাহলে কী হবে? অনেক জিহাদিই চাইতো না যে তাদের সেক্স-মেশিনটি তাড়াতাড়ি গর্ভসঞ্চার করে বসুক, সুতরাং তারা আজল(আজল সম্পর্কে জানতে গুগল করুন) করতো। এই প্রথা সম্পর্কে মুহম্মদের মনোভাব ছিল ঘোলাটে, কখনও তাকে এই প্রথার বিরুদ্ধে কথা বলতে দেখা যায়, কখনও বা তাকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। কিন্তু কোথাও সেই যুদ্ধবন্দিনীকে সাথে সাথে মুক্তি দিতে বলতে দেখা যায় না। সেই যুদ্ধবন্দিনীর সাথে আজল পদ্ধতিতে সেক্স করলো কি করলো না সেটা মহামানব মুহাম্মদের কাছে এত গুরুত্ত্বপূর্ণ, অথচ সেই যুদ্ধবন্দিনীটি মোটেও গুরুত্ত্বপূর্ণ নয়?একজন মহামানবের কাছ থেকে যদি আমি আশা করে থাকি, যে তিনি এই কথা শোনার সাথে সাথে ঐ জেহাদীর বিচারের ব্যাবস্থা করবেন, এবং সেই যুদ্ধবন্দিনীকে তৎক্ষণাত মুক্তি দেবেন, তাহলে কি খুব বেশি আশা করা হয়ে যায়?
সহি বুখারিঃ ভলিউম ৯, বুক নং-৯৩, হাদিস নং-৫০৬:
আবুসাইদ আল খুদরি থেকে বর্ণিতঃ
বানুমুস্তালিক গোত্রের সাথে যুদ্ধকালে কিছু বন্দিনী তাদের (মুসলমানদের) দখলে আসে। তারা বন্দিনীদের সাথে এমনভাবে যৌনসম্পর্ক করতে চাইল যেন মেয়েগুলি গর্ভবতী না হয়ে পড়ে। সুতরাং বাইরে বীর্যপাতের বিষয়ে নবীর নিকট জানতে চাইল তারা। নবী বলেন- “এটা না করাই বরং তোমাদের জন্যে উত্তম। কারণ আল্লাহ যাকে সৃষ্টি করবেন তা লেখা হয়ে আছে, পুনরুত্থানের দিন পর্যন্ত”। ক্কাজা বলেন- “আমি আবু সাইদকে বলতে শুনেছি যে নবী বলেছেন -‘আল্লাহর আদেশে আত্মার সৃষ্টি, আল্লাহর আদেশ ছাড়া কোন আত্মার সৃষ্টি হয় না”।
সহী বুখারী হাদীস #143, page-700 :Sulaiman Ibne Harb…Aannas Ibne Malek (ra) narrated, “in the war of Khaiber after the inhabitants of Banu Qurayza was surrendered, Allah’s apostle killed all the able/adult men, and he (prophet) took all women and children as captives (Ghani mateer maal).. Among the captives Safiyya Bint Huyy Akhtab was taken by Allah’s Apostle as booty whom He married after freeing her and her freedom was her Mahr.”
অর্থাৎ যুদ্ধে জেতার পরে আল্লাহ রাসুল সকল প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষকে হত্যা করলেন এবং তিনি তাদের সকল নারী এবং শিশুকে বন্দী হিসেবে নিলেন।
সহী বুখারী হাদীস (#149, page-704): Ahmed Ibne Saleh…Annas Ibne Malek narrated, “….when we told Apostle of Allah about the paragon beauty of Safiya Bint Huyay (who was newly wed and the husband was killed in the battle), then Allah’s Apostle sanctioned her for himself…”
অর্থাৎ সদ্য বিবাহিতা এক নারীকে যুদ্ধবন্দী হিসেবে পাবার পরে(তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছিল যুদ্ধে) আল্লার রাসুল তাকে নিজের জন্য রাখলেন।
“সীরাত এ রাসুলাল্লাহ বই থেকে” (page 464):
“Then they surrendered, and the apostle confined them in Medina in the quarter of al-Harith, a woman of B. al-Najjar. Then the apostle went out to the market of Medina (which is still its market today) and dug trenches in it. Then he sent for them and struck off their heads in those trenches as they were brought out to him in batches. This went on until the apostle made an end of them. Among them was the enemy of Allah Huyayy b. Akhtab and Ka`b b. Asad their chief, and they were brought with their hands bound to their neck by a rope.
মহম্মদের উপপত্নীদের অধিকাংশই ছিল হয় ইহুদি নয়তো খৃষ্টান। (রায়হান, জওয়াহিরা ও সাফিয়া ছিল ইহুদি, মারিয়া কিবতি ছিল খৃষ্টান)।
এ এক সীমাহীন লজ্জা আর কেলেঙ্কারীর ইতিহাস। লজ্জা ঢাকার জন্য ইসলামপন্থীরা অনেকেই হয়ত বলবেন যে মুহাম্মদ বড়োই দয়ালু ছিলেন, ঐসব অসহায় তরুনীদের দুঃখ দেখে তার কোমল প্রাণ কেঁদে উঠল। তাই তিনি তাদের গ্রহন করে দাসী হিসেবে বিক্রি হওয়ার হাত থেকে তাদের রক্ষা করেছেন। বা মুসলিম জেহাদীদের হাতে হত্যা হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন। কি বিভৎস চিন্তা, মেয়েগুলোকে কেনই বা ধরা হলো, কেনই বা এত মানবতা দেখিয়ে বিছানায় নেয়া হলো? একবার ভেবে দেখবেন, কাল ভারত কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অথবা ইসরাইল বাঙলাদেশ আক্রমণ করলে, পুরুষদের হত্যা করে আমাদের নারীদের বিছানায় তুললে কী হবে? আমাদের নারীরা স্বেচ্ছায় সেই সব সৈন্যদের সাথে বিছানায় উঠে যাবে?
ছোটবেলা ভাবতাম, এই ধরণের ইসলামী বক্তা আসলে ইসলাম সম্পর্কে কিছু জানে না। না জেনেই এসব কাঠমোল্লা আজেবাজে বলে। কিন্তু আসলে কে ইসলাম সম্পর্কে জানে, আর কে জানে না, সেটা কোরান, বুখারী আর মুসলিম হাদিস বুঝে পড়লেই পরিষ্কার হয়ে যায়।
ইতিহাসের অন্যান্য যোদ্ধারা কী একই কাজ করেন নি?
হ্যাঁ, এই যুক্তি গ্রহণ করতে আমার আপত্তি নেই। মুহাম্মদ যা করেছেন, সে যুগে তাই ছিল রীতি। অনেকেই করেছেন, আলেক্সান্ডার থেকে শুরু করে হিটলার, এইদিকে ইয়াহিয়া খান- প্রায় সকলেই। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে তারা কি পরম পূজনীয় হবার যোগ্যতা রাখে কিনা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মহামানব হবার যোগ্যতা রাখেন কিনা! এই আধুনিক সময়ে আধুনিক সভ্য পৃথিবীতে কতগুলি খোড়া যুক্তি দিয়ে সেই বন্য রীতিকে জাষ্টিফাই করা অমানবিক। মানবতার প্রতি চরম অবমাননাকর।
কাফের রমনীদের শরীরের প্রতি মুহাম্মদের জিহাদি বাহিনীর অদম্য লোভ ছিল, লোভ ছিল বেহেশতের ৭২ টি হুরের শরীরের প্রতিও। বিষয়গুলো এতটাই বিকৃত আকার ধারণ করেছিল যে, মুহাম্মদকে মাঝে মাঝেই লাগাম টেনে ধরতে হতো। বলতে হতো, গর্ভবতী হলে যেন জিহাদিগণ তাদের ওপর চরে না বসেন। কিংবা মাসিক যাদের হয়েছে তাদের মাসিকের ব্যাথা শেষ হওয়া পর্যন্ত যেন অপেক্ষা করা হয়। ইত্যাদি নানা উদাহরণ রয়েছে। ঐসব ইসলামী সৈনিকদের যৌনতাড়না এতটাই বর্বর ও ঘৃন্য ছিল যে তারা এমনকি কোনপ্রকার গোপনীয়তা অবলম্বনেরও ধার ধারত না। এমনও হয়েছে যে স্বামীদের সামনেই বন্দিনীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে জিহাদিরা।স্ত্রীকে এক নরপশু খাবলে খাচ্ছে, বন্দী স্বামী চোখ মেলে তাই দেখছে। মহানবী এটাও বলে দিয়েছেন যে, যুদ্ধবন্দী হিসেবে পাওয়া নারীর স্বামী দারুল হরবে জীবিত থাকলেও সেই সব নারী বৈধ! ভেবে দেখুন একবার! অনেক জিহাদি আবার পৌত্তলিক স্বামীটির সামনে বা স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় তার স্ত্রীর উপর চড়ে বসতে দ্বিধান্বিত ছিল। ঠিক সেই সময় মহান আল্লাহ কাফের রমনীদের (বিবাহিতা হলেও) ভোগ করার অনুমতি প্রদান করে ধন্য করলেন জিহাদিদের। কিছু কিছু জিহাদি স্বামী বর্তমান থাকতেও বন্দিনীদের সাথে সেক্স করে এবং কেউ কেউ তা করতে দ্বিধাগ্রস্থ হয়। (সুনান আবু দাউদঃ ১১:২১৫০)।
সুনান আবু দাউদঃ বুক নং-১১, হাদিস নং-২১৫০:
আবু সাইদ আল খুদরি বলেন- “হুনায়েন যুদ্ধের সময় আল্লাহর রাসুল (দঃ) আওতাসে এক অভিযান পাঠান। তাদের সাথে শত্রুদের মোকাবেলা হলো এবং যুদ্ধ হলো। তারা তাদের পরাজিত করল এবং বন্দী করল। রাসুলুল্লাহর (দঃ) কয়েকজন অনুচর বন্দিনীদের স্বামীদের সামনে তাদের সাথে যৌনসঙ্গম করতে অপছন্দ করলেন। তারা (স্বামীরা) ছিল অবিশ্বাসী কাফের। সুতরাং মহান আল্লাহ কোরাণের আয়াত নাজেল করলেন- “সমস্ত বিবাহিত স্ত্রীগণ (তোমাদের জন্যে অবৈধ); কিন্তু তোমাদের দক্ষিন হস্ত যাদের অধিকারী (যুদ্ধবন্দিনী)- আল্লাহ তোমাদের জন্যে তাদেরকে বৈধ করেছেন”। অর্থাৎ- পিরিয়ড শেষ হলে তারা তাদের জন্যে বৈধ (৪:২৪)।
যুদ্ধবন্দিনীর সাথে সহবাস বৈধ, তবে শর্ত থাকে যে তার মাসিক স্রাব শেষ গেছে কিংবা গর্ভবতী হলে তার গর্ভ খালাস হয়ে গেছে। তার যদি স্বামী থেকে থাকে, বন্দী হওয়ার পর সে বিবাহ বাতিল বলে গন্য হবে। (কোরাণ-৪:২৪, সহি মুসলিম-৮:৩৪৩২)।
সহি মুসলিমঃ বুক নং-৮, হাদিস নং-৩৪৩২:
আবু সাইদ আল খুদরি (রাঃ) বলেছেন যে হুনায়েনের যুদ্ধকালে আল্লাহর রাসুল (দঃ) আওতাস গোত্রের বিরুদ্ধে একদল সৈন্য পাঠান। তারা তাদের মুখোমুখি হলো এবং তাদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলো। যুদ্ধে পরাজিত করার পর কিছু বন্দী তাদের হাতে আসল। রাসুলুল্লার কিছু সাহাবি ছিলেন যারা বন্দিনীদের সাথে সহবাস করতে বিরত থাকতে চাইলেন, কারণ তাদের স্বামীরা ছিল জীবিত, কিন্তু বহু ঈশ্বরবাদী। তখন মহান আল্লাহ এ সম্পর্কিত আয়াতটি নাজেল করলেন- “এবং বিবাহিত নারীগণ তোমাদের জন্যে অবৈধ, তবে যারা তোমাদের দক্ষিন হস্তের অধিকারে আছে তাদের ছাড়া”।
পরাজিত শত্রুটির সামনেই তার স্ত্রীকে ভোগ করা থেকে শুরু করে, এই সবই এক এক ধরণের যৌনবিকৃতি, যার কিছু নমুনা আমরা দেখেছি একাত্তরে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়। অথবা ২০০১ এ বিএনপির বিজয়ের সময়। পাঞ্জাবি এবং পাঠান সৈন্যরা একাত্তরে বাঙালি রমনীদের উপর যা করেছে, তার পুর্ণ সমর্থন মেলে এই হাদিসগুলি হতে। ইয়াহিয়ার জল্লাদ বাহিনী একাত্তরে যা কিছুই করে থাকুক, ইসলামী শাস্ত্রের বাইরে কিছু করেনি। ইসলামের প্রাথমিক অভিযানগুলোতে নবীর বাহিনী ঠিক এমনটিই করত।
মানবতা?
বিজয়ীরাই ইতিহাস লেখে। ইসলামের ইতিহাসে সেই সকল কাফের নারীর কান্না স্থান পায় নি। তাদের ধর্ষন, তাদের রক্তের ইতিহাস কোথাও নেই, কিন্তু রয়ে গেছে মুহাম্মদের জীবনী এবং হাদিস-কোরআনের আয়াতগুলো। বিজয়ীরা অনেক রাখঢাক করেই লেখে, নিজেদের অমানবিক কর্মকান্ড ঢেকে রাখার জন্য। কিন্তু তারপরেও যে সকল বিষয় লেখা রয়েছে, সেটুকুই ভয়াবহ। মুসলিমরা চাইলেও এগুলো পালটে ফেলতে পারবে না। সেই সকল হাদিস কোরআনের আয়াত সামনে আনলে আমরা কি দেখতে পাই? সেই নারীদের কান্নার দাগ সেখানে দেখা না গেলেও সহজেই বোঝা যায় সে সময় কি নারকীয় ধর্ষণ আর হত্যাযজ্ঞ ঘটেছিল।
কিন্তু আমাদের আধুনিক মুসলিম ভাইয়েরা বলতে শুরু করেন, সেই সকল নারীর সম্মতিতেই নাকি ছহবত হয়েছিল, ওটা মোটেও রেপ ছিল না। যেই নারীর স্বামী, সন্তান, পিতা যুদ্ধে মারা গেছে মুহাম্মদের সৈন্যদের হাতে, সেই নারীরা মুহাম্মদের অসীম বীরত্ত্বে মুগ্ধ হয়ে তাদের বিছানায় উঠে গেল, এবং ছহবত করলো, দৃশ্যটা কল্পনা করতেই কেমন যেন গা গুলিয়ে আসছে। মনে পরে যাচ্ছে পাকিদের অপপ্রচারের কথা, যে আমাদের দেশের বীরাঙ্গনারা স্বেচ্ছায় পাকিদের দেহ দান করেছিল।
ইসলামপন্থীদের সমস্যাটা বুঝি। নবী মুহাম্মদের চরিত্রকে কলঙ্কমুক্ত রাখতে তাদের নানা ধরনের কথাই বলতে হয়। কারণ নবী মুহাম্মদ যুদ্ধবন্দী নারীদের নিজে বিছানায় তুলতেন, অন্যদেরও তুলতে বলতেন, বিষয়গুলো অত্যন্ত ঘিনঘিনে আর নোংরা। তারা চাইতেই পারেন নবী মুহাম্মদের চরিত্রকে ফুলের মত পবিত্র বলে প্রচার করতে। কিন্তু সত্য, তা তো স্বীকার করতেই হবে। আজকের যুগে আমরা যদি বস্তুনিষ্ঠভাবে ইতিহাসকে পর্যালোচনা না করি, ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।
এই আজকের দিনেও যখন ইসলামপন্থীরা গনিমতের নাম দিয়ে যুদ্ধবন্দিনী ধর্ষণ করে, সেই প্রেরণা তারা কোথা থেকে পায়, সেটাই আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন। সৌদী আরবে আমাদের দেশের নারীদের পাঠানো হচ্ছে, একজন নারীও তার সম্ভ্রম নিয়ে ফিরবেন না বলেই আমি মনে করি, সেই দাসী/মহিলা শ্রমিকদের সম্ভ্রম লুটে নিতে সৌদী আরবের মুসলিমরা কোথা থেকে প্রেরণা পাচ্ছে সেটাই আপনাদের কাছে আমার জিজ্ঞাসা।
ইসলামপন্থীদের মুখে হয়তো আমরা শুনবো, ১৪০০ বছর আগের ব্যাবস্থা আর বর্তমান অবস্থা এক নয়। কিন্তু আমরা তো জানি ইসলামে কুরআন এবং হাদিসে যে সকল নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যে সকল পরামর্শ দেয়া হয়েছে তা সকল সময়ের জন্য প্রযোজ্য। ইসলামে নতুন করে কেউ যেমন নারী নেতৃত্ব বৈধ করতে পারবে না, তেমনি এই যুদ্ধবন্দিনী/দাসী ছহবতও কেউ অবৈধ ঘোষনা করতে পারবে না। হযরত মুহাম্মদ নিজেই তার সাহাবীদের নিয়ে যা করে গেছেন, তা অবৈধ কীভাবে হয়, আমার জানা নেই।
সেই সকল কোরআন হাদিস মেনে যদি এখন শর্ষিনার পীরের মত লোকেরা আমাদের দেশের নারীদের ধর্ষণ করে, তাহলে সেই দোষ কি ইসলামের উপরেও খানিকটা বর্তায় না? যেহেতু মুহাম্মদের সমস্ত কাজই প্রত্যেক মুসলিমকে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে?
আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে তাঁর প্রশংসা করে বলেন; নিশ্চয় তুমি মহান চরিত্রের অধিকারী। (সূরা আল কলম: ৪)।
হে নবী! লোকদের বলে দাও। তোমরা যদি প্রকৃতই আল্লাহকে ভালোবাস, তবে আমাকে অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গুণাহসমূহ মাফ করে দেবেন। তিনি বড় ক্ষমাশীল ও দয়ালু। (সূরা আল-ইমরান-৩১)।
মহান আল্লাপাক আমাদের নবীর জীবন অনুসরন করতে পরামর্শ দিয়েছেন। নবীর জীবনই হচ্ছে একজন মুমিনের জন্য উত্তম আদর্শ। আমরা কী এই আদর্শ অনুসরণ করবো? নাকি আমাদের বিবেক?
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ