ঋগ্বেদ মন্ডল ১০ সূক্ত ১০ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

16 July, 2018

ঋগ্বেদ মন্ডল ১০ সূক্ত ১০


যমযমী সূক্ত
আ চিৎসখায়ং সখা ববৃত্যাং তিরঃ পুরু চিদর্ণবং জগন্বান।

পিতুর্নপাতমা দধীত বেধা অধি ক্ষমি প্রতরং দীধ্যানঃ।। ১।।
পদার্থঃ (পুরু) নিজের প্রকাশ এবং তেজ দ্বারা অনেক গ্রহ পৃথিবী আদি লোককে (চিত্) চিৎবান সূর্য (তিরঃ) সুবিস্তৃত (অর্ণবম্) জলময় অন্তরিক্ষকে যখন (জগন্বান্) প্রাপ্ত করেছে অর্থাৎ যখন তাহাতে স্থিত হয়েছে, তখন পৃথিবীর অধ ভাগে স্থিত যমী রাত বলা হয়ে থাকে (চিত) হে চেতনাশীল! অন্যকে চেতনকারী দিবস! (সখ্যা) সীখপনাতার জন্য প্রেম দ্বারা (সখায়ম্) তোমার সখা রূপ পতিকে (আববৃত্যাম্+উ) আমন্ত্রিত করছি, অবশ্য আপনি (অধিক্ষমি) এই পৃথিবী তল উপর নিচে আসবে এমনকি আমি পৃথিবীর অধোভাগেই এবং আমার সমীপ আসিয়া (প্রতরম্) দুঃখ থেকে তরাইতে তথা পিতৃঋণের অনুক্ষণ কারী যোগ্য সন্তানকে (দীধ্যানঃ) লক্ষে অবস্থিত (বেধাঃ) আপনি মেধাবি (পিতুঃ নপাতম্) আপনার পিতার পাত্র অর্থাৎ নিজ পুত্রকে (আদধীত) গর্ভধান রীতি দ্বারা আমাতে স্থাপন করো, এই আমার প্রস্তাব।। ১।।
ভাবার্থঃ সূর্য উদয় হবার পরে দিন পৃথিবীর উপরভাগে এবং রাত্রি নিচে অবস্থান করে থাকে। গৃহস্থাশ্রমে পতি দ্বারা নম্র হয়ে গৃহস্থ ধর্মের যাচনা পতী করিবে তথা এবং পিতৃ ঋণে অনৃণ হওয়ার জন্য পুত্রের উৎপাদন করো।। ১।।
ন তে সখা সখ্যং বষ্টয়েৎসলক্ষমা যদ্বিপুরুপা ভবাতি।

মহস্পত্রাসো অসুরস্্য বীরা দিবো ধর্তার উর্বিয়া পরি খ্যন্ ।। ২।।
পদার্থঃ হে রাত্রি (তে) তোমার (সখা) আমি এই দিন পতি (এতত্ সখ্যম্) এই গর্ভধান সম্বন্ধী মিত্রতাকে (ন বষ্টি) চাচ্ছি না (য়ত্) এমন কি গর্ভধানে পতী (সলক্ষমা) সমান লক্ষণযুক্ত অর্থাৎ সমান গুণের এবং (বিষুরূপা) বিশেষ রূপবতী অর্থাৎ সুন্দরী (ভবাতি) হওয়া উচিত, কিন্তু আপনি সুন্দরী নয় বরং কালো রঙ্গের, তথা আপনি আমার সমান রঙযুক্ত নও, এমন কি আমি প্রাণী কূলের চেতন কর্তা কিন্তু তুমি নিদ্রা দ্বারা মূঢ় বানিয়ে থাক। এরূপ হাবর পরেও যদি গর্ভাধান করে মৈত্রীর স্থাপন করো তো ইহা (উর্বিয়া) পৃথিবী এবং দ্যুলোক মধ্যে (দিবঃ ধতরি) যে প্রকাশের ধারণ করে রেখেছে, তথা (মহঃ পুত্রাসঃ) মহান প্রজাপতির পুত্র, এবং (অসুরস্যবীরাঃ) সূর্যের বীর সৈনিক, সেনাদের বূহ্য নিয়মের সমান চলমান যে নক্ষত্র আদি তারাগণ, মহানুভব (পরিখ্যান্) নিন্দা করে থাকে, ইহা এক বৃহৎ আশংকা ।। ২।।
ভাবার্থঃ স্ত্রী পুরুষের বিবাহ সম গুণ কর্ম স্বভাব এবং রূপের অনুসারে হওয়া উচিত। বিপরীত বিবাহ অসন্তোষজনক এবং সমাজে অপবাদ এবং অনাদরকারী হয়ে থাকে।। ২।।
উশন্তি ঘা তে অমৃতাস এতদেকস্য চিৎয়জসং মর্ত্যস্য।

নি তে মনো মনাসি ধায্যস্মে জন্যুঃ পতিস্তন্ব১মা বিবিশ্যাঃ।। ৩।।
পদার্থঃ (তে)(অমৃতাসঃ) অমর ধর্মী আমাদের অপেক্ষা মুক্ত ব্যবহার অর্থাৎ স্বতন্ত্র গতিদ্বারা বিচরণকারী মহানুভব (এতত্) এই (উশন্তি) চায় যে, (ঘ) এরূপ অবস্থায়ও (একস্য মর্তস্য) এক সন্তানকে (চিত্) তো অবশ্যই (ত্যজসম্) গর্ভধান দ্বারা আমার প্রতি ত্যাগ হোক, এমন কি দাম্পত্যকালে অনন্তর দৈবে উৎপন্ন হওয়া দোষ দেখানো চাই না কিন্তু এক সন্তানের জন্য নিঃশঙ্ক গর্ভধান করা উচিত। এজন্য যে (তে) তোমার (মনঃ) মন তাহা (অস্মে) আমার (মনসি) মনে (নিধায়ি) স্থির কর অর্থাৎ আমার মনোভাবের অনুকূল তোমার মনোভাকেও বানাও এবং (জন্যুঃ) পুণঃ নবরূপে প্রকটমান (পতি) তুমি আমার পতি (তন্বম্) আমার কায়াতে (আবিবিশয়াঃ) সুতারং সম্বক প্রকাশে প্রবেশ কর।। ৩।।
ভাবার্থঃ বিবাহের অনন্তর কোন রোগে পতী পুরুষ যদি অক্রান্ত হয়ে থাকে তো কম পক্ষে এক পুত্র তো উৎপন্ন করিবেই এই ব্যবস্থা ধর্ম উপদেশ এবং শাসন দ্বারা করিবে।।৩।।
নয়ৎপুরা চকৃমা কদ্ধ নূনমৃতা বদন্তো অনৃতং রপেম।
গান্ধর্বো অপ্স¦প্যা চ য়োষা সা নো নাভিঃ পরমং জামি তন্নৌ।। ৪।।
পদার্থঃ হে প্রিয় পতি! (পুরা) পূর্ব দাম্পত্যকালে (ঋতা বদন্তঃ) বেদ মন্ত্রকে উচ্চারণ করে প্রজা উৎপত্তির নিমিত্তে ঈশ্বরীয় নিয়মকে স্বীকার করে (য়ত্) যে গার্হস্থ্য অর্থাৎ সন্তান উৎপাদক রূপ ব্রত (চকৃম) আমাদের জন্য করেছিল তাহাকে (নূনম্) আজ (অনৃতম্) বেদ বিরুদ্ধ নিষেধ বচন (ন) না (পরমে) বলতে পরবে, অর্থাৎ হে প্রাণ প্রিয়ে! আমি ইহা নিশ্চয় করেছি যে, আমরা যে দাম্পত্য বেদমন্ত্র নিয়ম দ্বারা গর্ভধান সংস্কারের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলাম তাহাকে উলঙ্ঘণ করে এই সময় নরকরূপ অর্থাৎ নিষেধরূপ অশাস্ত্রীয় বচন বলতে পারব না। কিন্তু আমরা গর্ভধানের জন্য উদ্যত। প্রযুক্ত (গন্ধর্বঃ) গর্ভধান সম্বন্ধের ইচ্ছুক আমি তোমার পতি (অপ্সু) অন্তরিক্ষে (য়োষা চ) এবং তুমি
গর্ভধানের কামনাকরী আমার পতী ও (অপ্যা) অন্তরিক্ষে এবং আমরা দুজনই জল প্রবাহের ন্যায় নিরন্তর গতি করতে রয়েছি তথা যে পৃথিবীর নিচে উপরের দিকে আমরা দুজন (নাভিঃ) নাভি এমনকি অরা রূপী ঘূর্ণনের ন্যায় দিন এবং রাত আমরা দুজন পতি পতী এই পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরছি (তত্) এই যে (নৌ) আমাদের দুজনের মধ্যে (পরম্) অত্যান্ত (জাভি) অসমান জাতীয় ব্যবধায়ক ।। ৪।।
ভাবার্থঃ বিবাহ বেদ মন্ত্র দ্বারা প্রতিজ্ঞাপূর্বক হোক, প্রতিজ্ঞার উলঙ্ঘন যেন কখন না হয়। কারণ বশত দূর দূর হবার পরেও হে সমাচার হতে থাকে, দিন রাত্রি পৃথিবীর সাথে সমকক্ষে হয়ে থাকে; পরে তাহাদের চারদিকেও মিলন হয়ে থাকে ইহাকে প্রাতকাল এবং সায়ং কাল বলা হয়।।৪।।
গর্ভে নু নৌ জনিতা দংপতী কর্দেব¯তাষ্টা সবিতা বিশ্বরূপঃ।
নকিরস্য প্র মিনন্তি ব্রতানি বেদ নাকস্য পৃথিবী উত দৌঃ।। ৫।।
পদার্থঃ (বিশ্বরূপঃ) সংসারকে প্রকট কারী (ত্বষ্টা) সর্ব কৃত্যের নিয়ামক (সবিতা) বিবস্বান (কঃ) প্রজাপতি (দেবঃ) দেব (গর্ভ নু) গর্ভেই অর্থাৎ পৃথিবী তলে আনিবার পূর্বেই (নৌ) আমাদের দুজনকে (দম্পতী) পতি পতী (জনিতা) বানিয়েছে। হ্যা! দৈব নিয়মে কিভাবে? কি পূর্ব থেকেই দাম্পত্য সিদ্ধ হবার পরও আমি গর্ভধান রহিত যা সন্তান শূন্য রয়ে যাব! হ্যা আমার এই দুঃখ সহ্য হবে না। আমরা প্রজাপতির সম্পাদিত দাম্পত্য ফল বিনা ই এই ধরণের দুঃখ পঙ্ক হয়ে রয়ে যাবে। (নকিঃ) তো ফিরে (অস্য) এই প্রজাপতির (ব্রতানি) সকল নিয়ম (প্রমিনন্তি) ছিন্ন হয়ে যেতে চাইবে। এমনকি আমরা মিথ্যা বলছি না; আমাদের দাম্পত্য প্রজাপতি স্থির করে দিয়েছিলেন যাহার গর্ভধান ফলের জন্য আমরা বিলাপ করে থাকি, কিন্তু (অস্য) এই প্রজাপতিকে (পৃথিবী উত দৌঃ) দ্যাবাপৃথিবী এই এক মিথুন অর্থাৎ জোড়া ও (নৌ) আমরা দুজনে দিন রাত দাম্পত্যকে (বেদ) জানি, এমনকি আমাদের দুজনের বিবাহকে এই জোড়া দেখিয়ে দিয়েছে অতঃ এই দ্যাবাপৃথিবী মিথুন ও আমাদের সাক্ষী।। ৫।।
ভাবার্থঃ সৃষ্টতে জোড়া পদার্থ ঈশ্বরীয় ব্যবস্থায় হয়েছে, এই জোড়া বিনা সৃষ্টি কার্য চলতে পারে না। এজন্য গৃহস্থগণ নিয়মের উলঙ্ঘন করিবে না। বর বধূর বিবাহ অন্য বিবাহিত জনের সাক্ষ্যে হওয়া উচিত, সন্যাসী ও ব্রহ্মাচারী বিবাহে সাক্ষ্যে অপেক্ষিত নয়।।৫।।
কো অস্য বেদ প্রথমস্যাহ্ন ক ই দদর্শ ক ইহ প্র বোচত্।

বৃহমগ্নিত্রস্য বরুণস্য ধাম কদু ব্রত আহনো বীচ্যা নৃন্ ।। ৬।।
পদার্থঃ হে দিবস! (য়দ্যপি দ্যাবাপৃথিবী) মিথুন আমাদের সাক্ষী ইহা প্রত্যুত হ্যা! (ইহ) আমাদের সাথে সম্বন্ধ বিদ্যমান এই অন্তরিক্ষে (অস্য প্রথমস্য অহ্ন) এই প্রথম দিন অর্থাৎ সৃষ্টির আরম্ভে হওয়া বিবাহকে (কঃ) কে (বেদ) জানে? অর্থাৎ কেহ জানে না এবং (ইম্) সেই গত বিবাহকে (কঃ) কে (দদর্শ) দেখেছে? তথা (কঃ) কে ই বা (প্রবোচত্) শুনিয়া বলতে পারবে যে, হ্যা ইহাদের বিবাহ হয়েছে, অর্থাৎ কেহ নাই ; এমনকি সংসার প্রত্যক্ষবাদী। কোন কিছু হতে দেখে তবে তাহা লোকে বলিতে পারে। (মিত্রস্য) মিত্রের দিকে (বরুণস্য) বরুনের স্থান (ধাম্) স্থান (বৃহত) দূর (আহনঃ) হে হৃদয়পিন্ডক পতে! (কত্) কিভাবে (উ) ই সেই স্থানে গিয়ে বংশকে (নূন্) মনুষ্যের (বীচ্য) সম্মূখ করে তাহাকে (ব্রবঃ) আমাদের এই দুঃখ বৃতান্ত বলব। মিত্র অর্থাৎ সূর্য তোমার পিতা পূর্ব দিশায় এবং বরুণ আমার পিতা পশ্চিম দিশায়। এই প্রকার অত্যান্ত দূর আমাদের দুজনকে পিতৃকূলে গিয়ে এই দুঃখ বৃত্তান্তকে শুনিয়া থাকে, এরূপ কেহ আমাদের দেখাতে পারে না। দিনের পিতা মিত্র সূর্য এবং রাত্রির পিতা বরুন।। ৬।।
ভাবার্থঃ স্ত্রী পুরুষের বিবাহ সন্বন্ধ দূর স্থানে হওয়া উচিত, নিকট স্থানে বিবাহ সম্বন্ধের জন্য উপযোগী নয়। যখন কোন সংঙ্কট আসবে তখন পিতৃকূলকে সহায়ক বানানো উচিত।। ৬।।
য়মস্য মা য়ম্যং ১ কাম আগন্তসমাভে য়োনৌ সহশেয়্যায়।

জায়েব পতে তন্বং রিরিচ্যাং বি চিদ্বৃহেব রথ্যেব চক্রা।। ৭।।
পদার্থঃ (সমানো য়োনৌ) এক স্থানে (সহশেয়্যায়) মিলিয়া শোবার জন্য (য়মস্য) তোমরা যমের দিন (মা য়ম্যম্) আমাকে যমি রাত্রিতে (কামঃ) কামনা (আগন্) প্রাপ্ত হয়ে (জায়েব) পুত্রজনন যোগ্য রাত্রীর ন্যায় অর্থাৎ এই সময় জায়া গর্ভধারনে সমর্থ সন্তান উৎপন্ন করিবার যোগ্য হয়। ব্রাহ্মণ বচন অনুসারে গর্ভধারন করিবার যোগ্য স্ত্রীকে যে ভাবে অনুষ্ঠান করা উচিত ওই প্রকার অনুষ্ঠান করিয়া (পতে) পতির জন্য অর্থাৎ পূর্বোক্তর জন্য গর্ভধারণ করাতে যোগ্য নিজ পতির জন্য (তন্বম্) নিজের শরীরকে (রিরিচ্যাং চিত্) সম্পূর্ণ করছি এজন্য যে, (বিবৃহেব রথ্যেব চক্রা) গর্ভস্থ ভারকে আমরা দুজন রথের পাখার সমান উঠিয়ে নিয়ে চলব।। ৭।।

ভাবার্থঃ বিবাহ যুবক এবং যুবতীর মধ্যে হওয়া উচিত এবং তাহাদের বিবাহ পরান্ত পারস্পরিক ব্যবহার লজ্জাকে ত্যাগ করা উচিত। আপন গৃহস্থ ভারকে রথ বহন করা চক্রের সমান আপত্তি বিপত্তিতেও সুচারু রূপে বহন করে চালানো উচিত।।৭।।
ন তিষ্ঠন্তি ন নি মিষন্ত্যেতে দেবানং স্পহা ইহ য়ে চরন্তি।
অন্যেন মদাহনো য়াহি তুয়ং তেন বি বৃহ রথ্যেব চক্রা।। ৮।।
পদার্থঃ (য়ে) যে (ইহ) এখানে অন্তরিক্ষে (চরন্তি) চলমান দেখা যায়, প্রত্যুত এ (দেবানম্) সূর্য আদি দেবকে (স্পহাঃ) স্পর্শকারী অর্থাৎ নক্ষত্র প্রবাহ নামক বায়ূ মার্গে বর্তমান, সূর্যাদি দেবকে স্পর্শ করে এভাবে স্বভাবধারী এ যাত্রী বানিয়ে সূর্যাদি দেবের প্রতি গমন করে এবং এক দেবকে দ্বিতীয় দেবের নিকট বৃত্তান্ত পৌছে হরকারের সমান হয় (এতে) যে (ন তিষ্ঠন্তি) বিরাম করে না (ন নিমিষন্তি) না মার্গকে ছাড়িয়া এদিক সেদিক বিচরণ করে, তখন হে রাত্রি! আমাদের দুজনের দুঃখ সময়ে বৃত্তান্তকে কে নিয়ে যাবে এবং কে দুঃখের সন্দেশ আমাদের দুজনের পিতৃকূলে শুনাবে এবং কে আমাদের দুঃখকে মোচন করবে, এসো! (অহনঃ) হে হৃদয়ের পীড়া! এই তো অসভ্য দুঃখ, এজন্য (মত্) আমা ভিন্ন (অন্যেন) যে কেহ অন্য পুরুষ তোমাকে খুজে নিতে হবে এবং তাঁহার সাথে (তুয়ম্) শিঘ্র (য়াহি) তুমি সমাগমকে প্রাপ্ত কর (তেন) তাহার সাথে (বিবৃহ) গার্হস্থ্য ভারকে গ্রহণ করো এবং (রথেব চক্রা) রথকে পক্ষির সমান বহন করো।। ৮।।
ভাবার্থঃ গ্রহতারা আকাশে সর্বত্র গতিশীল থাকে, সূর্যের দ্বারা তাহাদের জ্যোতি প্রাপ্তি হয়ে থাকে। ইহার অতিরিক্ত এই মন্ত্রে ইহা স্পষ্ট হয় যে, সন্তান উৎপাদনে অসমর্থ পতি দ্বারা পতীর নিয়োগের আজ্ঞা প্রাপ্ত হোক এবং যদি পতী নিয়োগ না চায় তবে সে ব্রহ্মচারিণী হয়ে থাকতে পারে আর যদি সন্তানের ইচ্ছা করে তবে নিয়োগ করিবে।।৮।।
রাত্রীভিরস্মা অহভির্দশস্ত্যেত্ সূর্যস্য চক্ষুর্মুহুরুন্মিমীয়াত্।
দিবা পৃথিব্যা মিথুনা সবন্ধু যমীর্যমস্য বির্ভয়াদজামি।। ৯।।
পদার্থঃ হে প্রিয়ে! (য়দ্যপি) এই সম্ভব যে, প্রজাপতি দেব (অস্মৈ) এই জামিরুপ অর্থাৎ আমাদের সংযোগে লতাযুক্ত তরমুজের ন্যায় ছিন্নমূল পৃথিবী লোককে (দশস্ত্যেত্) সূক্ষ বানিয়ে আমাদের মধ্যে থেকে আলাদা করে দাও তাহা এই প্রকারে (রাত্রিভিঃ) রাত্রিগণ দ্বারা (অহভিঃ) অহর্গণ দ্বারা অহোরাত্রগণ দ্বারা এই পৃথিবী লোকে স্থিত সময়কে প্রাপ্ত করে পৃথক করে দাও, তখন আমাদের দুজনের সঙ্গম হওয়া সম্ভব এমনকি সেই স্থিতিময় কাল গননা দ্বারা সমাপ্ত হতে পারবে এবং এই কালগণনা রাত্রিগণ এবং অহর্গণ দ্বারা হতে পারে। এখন এই অহোরাত্র অর্থাৎ দিন রাত্রের অধিক সংখ্যা কি প্রকারে হওয়া সম্ভব ? সেহেতু হে রাত্রে! যদ্যপি আমি ও পৃথিবীর উপর একলা এবং তুমি ও পৃথিবীর নিচে একলা তথাপি আমাদের দুজনের সংখ্যা ও অধিক হতে পারে। তাহা এভাবে যে, (সূর্য়স্য) সূর্যদেবের (চক্ষুঃ) দর্শন রশ্নি (মুহুঃ) বারবার (উন্মিমীয়াত্) লোক দৃষ্টি দ্বারা প্রকট হয় যাহাতে মনুষ্য সূর্য প্রকাশের দর্শন দ্বারা দিন রাতের গননা করা যাবে, তখন (দিবা পৃথিব্যা) দ্যাবাপৃথিবীর সমান (মিথুনা) মিথুন (সবন্ধু) সমানাঙ্গ একাঙ্গ সঙ্গত হয়ে যাবে (য়মীঃ) যমী তুমি রাত্রি (য়মস্য) আমার দিনকে (অজামি) তরমুজ লতার ন্যায় সংয়োগকে (বিভৃয়াত্) ধারণ করতে পারে।। ৯।।
ভাবার্থঃ পৃথিবী আদি পি- বহু দিন রাত্রি অহর্গণের পশ্চাৎ ধিসধিস করে পরামাণু বানিয়ে হীন হয়ে যায়। গৃহস্থ্য জনের জন্য এই মন্ত্রের উপদেশ যে, বিবাহিত স্ত্রী-পুরুষ সঙ্কট আসিবার পরে পরস্পর সহোযোগিতা করবে। একে অপরকে আপস করবে এবং হে করবে ও পরস্পরের প্রতি সহোযোগিতার মনোভাব রাখিবে।।৯।।
আ গা তা গচ্ছানুত্তরা যুগানি যত্র জাময়ঃ কৃণবন্নজামি।
উপ বর্বৃহি বৃষভায় বাহুমন্যমিচ্ছস্ব সুভগে পতিং মত্ ।। ১০।।
পদার্থঃ কিন্তু হে রাত্রে! (তা) (য়ুগানি) যুগ অবসর (ঘ) তো (উত্তরা) বহুকাল অন্তর (আগচ্ছাত্) আবেগে (য়ত্র) যখনই এ (জামায়ঃ) অসমান জাতীয় ব্যবধায়ক (অজামি) অসমান জাতীয় রহিত কর্ম অব্যবাধক কর্ম অবিরুদ্ধ কর্ম (করিষ্যন্তি) করিবে। পরন্তু হে রাত্রে! ততক্ষণ পর্যন্ত তোমার পুত্রঅভিলাসী বিনা গার্হস্থ্যে অবস্থান করা দুষ্কর এজন্য আমি পুত্র উৎপাদনে অসামর্থ হয়ে তোমাকে আজ্ঞা দিচ্ছি যে (সুভগে) হে প্রিয়ে! (বৃষভায়) বীর্য প্রদানে সক্ষম পুরুষের জন্য (বাহুম) নিজের ভূজাকে (উপববৃহি) বিস্তৃত করছি, এবং (মত্) আমার দিন (পক্ষ) থেকে (অন্যম্) ভিন্ন (পতিম্) পুরুষকে (ইচ্ছস্ব) স্বীকার কর।। ১০।।
ভাবার্থঃ জ্যোতিষের রহস্য স্পষ্ট করতে মন্ত্রে বলা হয়েছে যে, এক সময় এমন আসিবে যখন যুগল আলাদা আলাদা রূপে না থাকিয়া এক হয়ে যাবে, তখন সৃষ্টির প্রলয় হয়ে যাবে। গৃস্থ্যের জন্য বেদের আদেশ এই যে, পতি গর্ভধান করিতে অসমর্থ হলে সে সন্তান অভিলাসী পতীকে নিয়োগ দ্বারা সন্তান উৎপত্তির জন্য অনুমতি দিয়ে দিবে।।১০।।
কিং ভ্রাতাসদ্যদনাথং ভবাতি কিমু স্বসা য়গ্নির্ঋতির্নিগচ্ছাত্।
কামমূতা বহ্নে৩তদ্রপামি তন্বা মে তন্বং১ সং পিপৃগ্ধি।। ১১।।
পদার্থঃ হে দিবস! দৈবকৃত আপত্তিতে শরীর সংয়োগ সম্বন্ধে (কিম্) কেন এখন আপনি (ভ্রাতা) ভাই (অসত্) হয়ে গেছ? (য়ত্) যাহাতে এই প্রকার (অনাথম্) আপনার দিকে অনাথা অপতিপন (ভবতি) হয়ে যাবে, এবং যে আমার পতী হয় (কিমু) কেন এই সময় (স্বসা অসত্) বোন হয়ে গেল (য়ত্) যাহাতে (নির্ঋতিঃ) বিনা সম্ভোগে (নিগচ্ছাত্) দ্বিতীয় পুরুষকে প্রাপ্ত হবে (কামমূতা) কামে আবদ্ধ হয়ে (বহু) বহু প্রকারে হাবভাব দর্শিয়ে (এতত্) এই (রপামি) নিবেদন করছি যে (মে তন্বা তন্বম্) আমার কায়া হতে তোমার কায়াকে (সম্পিপৃগ্ধি) সম্পৃক্ত কর অর্থাৎ মিলযে দাও।। ১১।।
ভাবার্থঃ সন্তান উৎপত্তি যা গর্ভাধানে অসমর্থ পুরুষ এবং পতী ভাই বোন সম্পর্কে আবদ্ধ থাকিবে। পরস্পর মিলনের কামনা করিবে না। ইহাই পরমাত্মার আদেশ।।১১।।
ন বা উতে তন্বা তন্বং সং পপৃচ্যাং পপামাহুর্যঃ স্বসার নিগচ্ছতা।
অন্যেন মৎপ্রমুদঃ কল্পয়স্ব ন তে ভ্রাতা সুভগে বষ্টয়েতত।। ১২।।
পদার্থঃ (তে) তাহার (তন্বা) দেহের সাথে (তন্বম্) নিজের দেহকে (ন বা উ) একেবারে না (সম্পপৃচ্যাম্) মিলাও, এমন কি (য়ঃ) যে (স্বসারম্) বোনের সাথে (নিগচ্ছাত্) বিষয় ভোগ করে (পাপমাহুঃ) ভদ্রজন তাহাকে পাপ বলে থাকে, অতঃ (সুভগে) হে দেবী!! (মত্) ভ্রাতা ভিন্ন (অন্যেন) ভিন্ন পুরুষের সাথে (প্রমুদঃ) পুত্রোৎপাদন সম্বন্ধী ভোগ (কল্পয়স্ব) সম্পাদন করো, আমি (তে) তোমার (ভ্রাতা) প্রাসঙ্গিক-অসঙ্গ প্রাপ্ত ভাই (এতত্ ন বষ্টি) এই তোমার আগ্রহ কে ভোগ করো না।। ১২।।
ভাবার্থঃ ভাই বোনের পরস্পর বিবাহ কখনও যেন না হয়, এরূপ বলাও পাপ। কদাচিত কেহ এরকম করেও তো সমাজের লোক ইহাকে পাপ বলিবে এবং তাহার নিন্দা বরিবে সর্বশেষ এমন হীন কার্যকে রোধ করা উচিত।।১২।।
বতো বতাসি যম নৈব তে মনো হৃদয়ং চাবিদাম্।
অন্যা কিল ত্বাং কক্ষয়েব য়ুক্তং পরি ষ¦জাতে লিবুজেব বৃক্ষম্ ।। ১৩।।
পদার্থঃ (য়ম্) হে দিবস! (বত) হ্যা! তুমি কি দুঃখ (বতঃ) বিবশ (অসি) হও, এমন কি দৈবকৃত বাধাকে সহসা কেহই দূর করতে পারে না, এজন্য (তে) তোমার (মনঃ) মন (চ) এবং (হৃদয়ম্) বক্ষস্থলকে আমি (ন এব) না (আবিদাম) প্রাপ্ত করেছি (অন্যা কিল) আমা ভিন্ন অন্য কোন স্ত্রী (কক্ষ্যাইব য়ুক্তম্) কক্ষ কাধে বন্ধী পেটীর সমান সম্যক প্রকারে (ত্বাম্) আপনাকে (পরিষ¦জাতে) আলিঙ্গন করে অথবা (লিবু জা-ইব বৃক্ষম্) যেভাবে লতা বৃক্ষ আলিঙ্গিত ভাবে থাকে ওইভাবে তুমি ও আলিঙ্গত থাক।। ১৩।।
ভাবার্থঃ যদি স্ত্রী মধ্যে কোন দোষ থাকে যাহার কারনে সন্তান উৎপাদনে অসমর্থ হয়ে যায় তবে সেই স্ত্রী নিজ পতিকে দ্বিতীয় স্ত্রী কতৃক সন্তান উৎপত্তির জন্য অনুমতি দিয়ে দিবে।।১৩।।
অন্যমু ষু ত্বং য়ম্যন্য উ ত্বং পরিষ¦জাতে লিবুজেব বৃক্ষম্ ।
তস্য বা ত্বং মন ইচ্ছা স বা তবাধা কৃণুষ¦ সংবিদং সুভদ্রাম্ ।। ১৪।।
পদার্থঃ (য়মি) হে রাত্রে! (সু) হ্যা! তোমার পূর্বোক্ত বচন সঠিক, অতঃ (ত্বম্) তুমি ও (অন্যম্ উ) অন্য পুরুষকে (লিবুজা ইব বৃক্ষম্) লতার ন্যায় বৃক্ষকে আলিঙ্গন কর তথা (অন্য উ) সে অন্য পুরুষও (ত্বাম্) তোমাকে (পরিষ¦জাতে) অলিঙ্গন করে (ত্বং বা) এবং তুমি (তস্য) সেই পুরুষের (মনঃ) মনকে (ইচ্ছ) চাও (সঃ বা) এবং সেই পুরুষ (তব) তোমার মনকে চাইবে (অধা) ইহার অনন্তর (সংবিদম্) নিয়োগ রূপ প্রতিজ্ঞাকে (সুভদ্রাম্) উত্তম কল্যান যুক্ত অর্থাৎ সুসন্তানবতী (কৃণুষ¦) বানাইবে ।। ১৪।।
ভাবার্থঃ সন্তান উৎপত্তিতে অসমর্থ হয়েও যদি বৈরাগ্য বশত যা পরোপকার র্কাযবশত নিয়োগ না কর এবং সংযম ধারন করে থাক তবে তাহা অনুচিত হবে না বরং অধিক উত্তম কার্য হবে।।১৪।।

ভাষ্যঃ স্বামী ব্রহ্মমুনি পরিব্রাজক ‘বিদ্যামার্তণ্ড’

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

মনুস্মৃতি প্রথম অধ্যায়

স্মৃতি শাস্ত্রের মধ্যে মনুস্মৃতিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যেমন বৃ্হস্পতিস্মৃতিতে বলা হয়েছে- বেদার্থপ্রতিবদ্ধত্বাত্ প্রাধাণ্যং তু মনো: স্মৃত...

Post Top Ad

ধন্যবাদ