এই ধাতু থেকে লক্ষ্মী শব্দ সিদ্ধ হয়।
য়ো লক্ষয়তি পশ্যতঙ্কতে চিহ্নয়তি চরাচরং জগৎ অথবা
বেদৈরাপ্তৈর্য়োগিভিশ্চ য়ো লক্ষ্যতে স লক্ষ্মীঃ সর্বপ্রিয়েশ্বরঃ'
অথাৎ যিনি সমস্ত চরাচর জগৎকে দেখেন, তা চিহ্নিত অর্থাৎ দর্শনীয় করিয়া নির্মাণ করেন অর্থাৎ যিনি শরীরে নেত্র ও নাসিকা, বৃক্ষের পত্র, পুষ্প, ফল, মূল, পৃথিবী ও জল(অগ্নি) আদি কৃষ্ণ রক্ত ও শ্বেত মৃত্তিকা পাষাণ চন্দ্র ও সূর্য্যাদি চিহ্ন রচনা করেন, তথা সকলকে দেখেন, তিনি সকল শোভার শোভা এবং যিনি বেদাদি শাস্ত্র বা ধার্মিক বিদ্বান যোগীদিগের লক্ষ্য অর্থাৎ দর্শনীয়, এই কারণে সেই পরমেশ্বরের নাম লক্ষ্মী।
✅বেদ আমাদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ, বেদ "বিদ্ ধাতু" থেকে এসেছে। 'বিদ্' ধাতুর চারটি অর্থ বর্তায়, যথাঃ-
১। বিদ্ জ্ঞানে
২। বিদ্ বিচরনে
৩। বিদ্ সত্যায়ম
৪। বিদ্ লাভে
নিম্নে আমি এই চারটি অর্থেই লক্ষ্মীর সাথে বেদ এর পারস্পরিক নিবিড় সম্পর্ক দেখানোর চেষ্টা করবো। সুধীগণ, আশাকরি বুঝে ও উপলব্দি করে পড়ার চেষ্টা করবেন।
প্রশ্ন হল লক্ষ্মী কোথায় থাকেন?
- ✅বেদ বলছে জ্ঞানীগনের বাণীতে লক্ষ্মী বিদ্যমান। কারণ-
১. জ্ঞানই হল বেদ এবং বেদই হল লক্ষ্মী! যেখানেই জ্ঞানীগণের জ্ঞান বিদ্যমান, সেখানেই লক্ষ্মী বিদ্যমান।
২. তিনি জ্ঞানীগণের সহিত বিচরন করেন। অর্থাৎ জ্ঞানীগণের জ্ঞান তথা বেদ যেখানেই বিচরণ করেন লক্ষ্মী সেখানেই বিচরণ করেন।
৩. তিনি ধীর বিদ্বান যেখানে মন দ্বারা সত্য বাণী বলেন সেখানেই থাকেন।
৪. এর ফলে লাভ হয় প্রকৃত মিত্রতা। থাকেনা কোন ভেদাভেদ, এটাই হল সত্যিকারে মিত্রতার সূত্র, সংগঠনের সূত্র, সংগঠিত থাকার সূত্র।
এখন লক্ষ্মী সম্পর্কীয় বেদ মন্ত্রের সহিত, বেদ যে ধাতু থেকে এসেছে সেই "বিদ্ ধাতুর" যে চারটি অর্থ ও মন্ত্রের সহিত পারস্পরিক যে সম্পর্ক রয়েছে তা আমি উপস্থাপন করেছি, এর সাথে আপনারা নিজেরাই লক্ষ্মীর পারস্পরিক সম্পর্ক উপলব্দি করে দেখুন। নিম্নে মন্ত্রটি দেওয়া হলঃ-
"সক্তুমিব তিতউনা পুনন্তো যত্র ধীরা মনসা বাচমক্রত।
অত্রা সখায়ঃ সখ্যানি জানতে ভদ্রৈষাং লক্ষ্মীর্নিহিতাধি বাচি।।
ঋগবেদ ১০।৭১।২.
সরলার্থঃ চালনী দ্বারা পরিস্কৃত সুক্তের সমান যেখানে ধীর বিদ্বান মন দ্বারা পবিত্র বাণী বলে সেখানে পরস্পর মিলে জ্ঞানের চর্চাকারী বিদ্বান # প্রকৃত মিত্রতাকে অনুভব করে। এদের বাণিতে কল্যাণময়ী লক্ষ্মী নিহিত হয়।" .
অর্থাৎ লক্ষ্মী আলাদা কোন দেবী নয়। বরংচ স্বয়ং পরমেশ্বরেরই একটা গুণবাচক নাম। আপনাকে যিনি বলেছে যে, আর্যরা লক্ষ্মীর উপাসনা করে না সে হয়তো সত্যিটা জানে না। অথবা জানলেও মিথ্যাচার করছে অর্থাৎ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য আর্যদের নামে মিথ্যা প্রচার করছে।৷
আশাকরি বুঝতে পেরেছেন, যদি বুঝে উঠতে পারেন তাহলে আমার ক্ষুদ্র এই নিবেদন সার্থক হবে বলে মনেকরি।
নমষ্কার
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ