অনুকুল চক্রবর্ত্তী - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

17 October, 2018

অনুকুল চক্রবর্ত্তী

অনুকুল ঠাকুরের ভন্ডামি
ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র জীবনী ও কথামৃত pdf

অনুকুল চক্রবর্ত্তীর (14 September 1888 – 27 January 1969) জন্মস্থান বর্তমানে বাংলাদেশে ,আমার পাশের বাড়ির এক দাদু ছিল সে ছিল অনুকূলনুসারি তখনই প্রথম এই শব্দগুলির সাথে পরিচিত হই –যজন,যাজন ও ইষ্টভৃতি।

তখন দেখতাম এক অদ্ভুত কেরামতি। দাদু হাগতে গেলেও এক পয়সা গুরুর নামে একটা ভাঁড়ে জমা দিয়ে হাগতে বসত! এটি শ্রী শ্রী ঠাকুরে দীক্ষিত শিষ্যদের অবশ্য কর্তব্য-সর্বদা গুরুকে স্মরণ করিবে! হাগতে গেলেও করিবে! কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আমাশায় সর্বত্র গুরুকে স্বরণ করা এই কূলের ( যা সৎসঙ্গ) নিয়ম! গুরুদেব ঠাকুরকে এক পয়সা ভাঁড়ে দিলে , উনি কোষ্টকাঠিন্যে পায়খানা তরল করিবেন, আমাশায় আঁটি বাঁধিবেন! অহ ! এমন জগৎগুরুর সন্ধান কভি কেও দেখিয়াছেন?

এই ঠাকুর কোন এক কালে ডাক্তারী পাশ করেছিলেন। কোন বায়োলজি গ্রন্থে শুদ্র রক্তের সাথ ব্রাহ্মন রক্তের পার্থক্যর পরীক্ষালদ্ধ ফল পাওয়া যায়, তা আমাদের কারুর জানা নেই । তবে উনিত আবার ঈশ্বরের সাথে কথা বলতেন-হয়ত কানে কানে ইশ্বর এসে এসব বৈজ্ঞানিক অমৃতবানী উনার কানে ঢেলেছিল!

তাই এবার প্রকাশ করছি এই তথাকথিত গুরুর কিছু অমৃত সমান বাণী নারীবাদি তত্ত্বগুলি সাজিয়ে নিন👇👇👇

কিছু বিনোদন বাণী অনুকূল এর 😂😂

" আমি চৈতন্যরূপে চৈতন্য দান করি , আমি আবার প্রেমময় রূপে সর্ব্বঘটে প্রেম দান করি 😂😂

"আমি নিত্য সাক্ষীস্বরূপ , আমি কৃষ্ণ , আমি চৈতন্য, আমি রামকৃষ্ণ , আমিই সব আমিই সব " গ্রন্থ (পুণ্যপুঁথি )

অনুকূল মোল্লাদের পেদানি খাওয়ার ভয়ে নপুংসকের মতো বাংলাদেশ থেকে ভেগে দেওঘরে পালিয়ে গিয়েছিল, সেই প্রাণী অনুকূল তার পুণ্যপুঁথির গ্রন্থের মধ্যে বলে যে - আমিই রাম,আমিই কৃষ্ণ আমিই সব আমিই সব। বলি কি যে অনুকূলের কি যোগ্যতা ছিল রাম এবং কৃষ্ণের গু এর পোকার যোগ্য হওয়ার ? রাম- কৃষ্ণ দুই জনেই মহান জ্ঞানীপুরুষ ও যোদ্ধা ছিল সামনে থেকে শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করে শুত্রুদের হারিয়েছে। বীর পুরুষ রা সব সময় মিথ্যার বিরুদ্ধে অধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কিন্তু আমাদের এই লুচ্চাকুল নিজের জীবন এবং ব্যবসা কে বাঁচানোর জন্য ঝাড়খণ্ড পালিয়ে গিয়েছিল, বিন্দু মাত্র চেষ্ঠা করেনি হিন্দুদের রক্ষা করার। এই অনুকুল ভণ্ডই লিখেছিল রসূল গীতা একটু ভেবে দেখুন হিন্দুরা এই অনুকুল কোন প্রকারের ভন্ড ছিল, এই নপুংসক কে আজ আবার ভগবান বলে ডাকা হয়, কি হাস্যকর ব্যাপার, অনুকূল মোল্লাদের হাত থেকে হিন্দুদের রক্ষা করার কোনো চেষ্টা করেনি অনুকূল। আর্য সমাজ থেকে খোলা চ্যালেঞ্জ রইলো ডিবেট এর জন্য, আমরা অনুকূল কে ভন্ড, মিথ্যুক, ধর্ম বিরোধী অসভ্য প্রমাণ করবো বৈদিক শাস্ত্র দ্বারা । অনুকূলের ভক্ত রা আপনারা যদি অনুকূলের মতো হিজড়া স্বভাবের না হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই ডিবেট তে আসবেন, আমরা চাই সমস্ত ছাগলামী পাগলামির বিনাশ করবো শান্তি পূর্ণ ভাবে।

আসুন এইবার জানি বিবাহ সম্পর্কে 👇👇

এই অনুকুল এতটাই লুইচ্চা ছিল যে নিজের শালীরও........ মারতে ছাড়েনি, তখন অনুকূলের একটা বাণী উৎপন্ন হয় তা হলো- প্রতিটা হিন্দু পুরুষের দুইটি বিবাহ করা উচিত ! অনুকুল এর চ্যালারা বলে যে তার শালীর নাকি অনুকুল ছাড়া অন্য কোনো যোগ্য পাত্র ছিল না! যাহারা এমন বলে আমি তাদের প্রশ্ন করছি যে অনুকুলের মধ্যে কোন যোগ্যতা টি পূর্ন ভাবে ছিল একটু বলুন তো ? ভণ্ডামির একটা সীমা থাকে সেটা কে পেরিয়ে যাচ্ছে এই লুইচ্চাকুল এবং তার শিষ্য রা।

প্রথমটা সবর্ণ, পরেরটা অনুলোম অসবর্ণ । অনুলোম অসবর্ণ বিবাহ মানে উচ্চকাস্টের হিন্দু পুরুষের সাথে নিম্ন বর্ণের মহিলার বিবাহ। ব্রাহ্মন পুরুষের সাথে শুদ্রকন্যার বিবাহ। উচ্চবর্নের মহিলার সাথে নিম্ন বর্নের পুরুষের বিবাহে তিনি নারাজ। কারন তার বায়োলজি “গবেষণা” । নিম্নবর্নের স্পার্ম নাকি উচ্চবর্নের ডিম্বানুকে নষ্ট করে। প্রথমত উচ্চবর্নের আর নিম্ন বর্নের লোকেদের স্পার্ম আলাদা হয়-এই অতি মুল্যবান বৈজ্ঞানিক তথ্যর জন্য, উনাকে নোবেল বানিদেন পক্ষে একটি গোবেল প্রাইজ দেওয়া উচিত ছিল!😂😂😂

অনুকূলের নারী বিদ্বেষ বাণী 👇

প্রেমের ঠাকুর শ্রী শ্রী শ্রী (আরেকটা লাগালে লাগাতে পারেন) অনুকূল চন্দ্রের কিছু অমোঘ নারীবিদ্বেষী বানী শুনে নিন। বিশেষ করে উনার নারী ভক্তদের জন্য।

👉👉 "ছেলে-মেয়ে একযোগেতে করলে পড়াশুনা,পড়ার সাথে বাড়ে প্রায়ই কামের উপাসনা"।

মানে ছেলেমেয়েদের একসাথে স্কুলে পড়া যাবে না। পড়লে নাকি কামের উদয় হয়। স্কুলের বাচ্চারা আজকাল প্রেম বোঝে ঠিক আছে। কিন্তু কাম !!!! ঠাকুর আমার অনেক এডভান্সড।

👉👉 "সু-বিবেচনা।কুমারী একটু বড় হ’লেই পুরুষ ছুঁতে নেই,যথাসম্ভব এর পালনই উন্নয়নের খেই"

।তাই নাকি গো ঠাকুর !! তাহলে বাবা তাঁর মেয়ের মাথায় হাত রেখেআশীর্বাদ করবে না? ভাইয়ের সাথে গলাগলি করে খেলবে না? তাছাড়া ডাক্তার যদি পুরুষ হন আর মেয়ে যদি কুমারী হন তাহলে কি???

👉👉 "মেয়ের চাকরী মহাপাপ বিপর্য্যস্ত শ্বশুর-বাপ।যে মেয়েরা চাকরী করে জনন-জাতি তারাই হরে"।

👉👉 "ছাড়া আর কিছুই না।অসতীত্বের কুয়াসী স্তর মেয়ের চাকরী করা,ধী-টি জানিস আবছা লোভেই পড়ে ধরা"।

তা ঠাকুর মেয়ে চাকরী করলে অসতী এটা আপনি কোথায় পেলেন? যেখানে সনাতন ধর্মের বেদ শাস্ত্রে ২৫-৩০ জন নারী ছিলেন বৈদিক মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষি। তাছাড়া আমাদের শাস্ত্রে মেয়েদের লক্ষী বলে সম্বোধন করা হয়েছে। লক্ষী বোঝেন আশা রাখছি। টাকা পয়সার ফ্ল এই বৌ বা মেয়েরাই সংসারে নিয়ে আসেন। ঘরে সুখ শান্তি বিরাজ করে একমাত্র অর্থের মাধ্যমে। চাকরী আজকাল লোভ নয়। একজন মেয়ের পরিচয়। আপনার এই বানীটি যে আপনার চরম মাত্রার নারী বিদ্বেষের বহিঃ প্রকাশ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

👉👉 নিজেদের ভালোর জন্য নারীর স্বীকার করা উচিত তারা হীনবুদ্ধির জীবস্বামী অত্যাচার করলে, বকলে, ভুল ব্যবহার করলেও তা মেনে নিতে হবে

-কারন লং টার্মে তা সংসারের জন্য ভাল “যুক্তি তর্কদিয়ে কারো মন জয় করা যায় না। তোর যদি কখনও মনেও হয় যে, স্বামী তোরসঙ্গে অকারণ দূর্ব্যবহার করছে,

তাও বলবি, আমি কথাটা বলতে চেয়েছিলামভাল, কিন্তু ভাল করে বুঝিয়ে বলতে না পারায় তোমার অশান্তির কারণহয়েছি। ত্র“টি আমারই।

এইরকম যদি করতে পারিস তাহলে দেখতে পাবি,স্বামীর সব রাগ গলে জল হয়ে যাবে। ‘নিজেদের সংসার এবং সন্তান ছাড়া নারীর আর কোন কাজ নেই , জীবনের আরকোন উদ্দেশ্য নেইসব সময় স্বামীর মন ও মেজাজ বুঝে চলতে হবে-তবে সে সার্থকনামা স্ত্রী!

মুশকিল হচ্ছে এত বড় একজন খোরাকের পেছনে, এতটা সময় দিয়ে লেখাটা ঠিক হল কি না ! কিন্ত যেভাবে রাজনৈতিক কারনে হিন্দুত্বের বিষ রক্ত আবার বাংলাতে ঢুকছে, কথিত হিন্দু গুরুরা ঠিক কি টাইপের এবং কোন গোয়ালের গরু সেটা মনে করিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছি।

আমাদের হিন্দু ভাইয়েরা এই ভাবে কতদিন একটা মহান ভণ্ড কে গুরু মেনে চলবে ? অনুকূল কখনোই হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে কিছু বলেনি , বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে দেওঘরে স্থান নিয়েছিল এগুলো কি জ্ঞানীর পরিচয় ছিল ? অনুকূল কখনোই কোনোদিন মুসলিম এবং অন্যান্য মিথ্যার বিরুদ্ধে একটা কথাও বলেনি , এগুলো মহান পুরুষের পরিচয় ? কিন্তু দেখুন এই ভন্ড নিজেকে ঈশ্বর বলতো । আর সেই ভণ্ডের বিরোধিতা তো হিন্দুরা করেই না কিন্তু তাকে আরো অন্ধের মতো মেনেই চলছে আমাদের অজ্ঞ হিন্দু ভায়েরা, জানিনা এরা কোনদিন শুধরাবে।
অনুকুল চন্দ্র ৬/৭ টি বিবাহ করেছিলেন।
অনুকূলের মতে,প্রতিটা হিন্দু পুরুষের দুইটি বিবাহ করা উচিত ! প্রথমটা সবর্ণ, পরেরটা অনুলোম অসবর্ণ । অনুলোম অসবর্ণ বিবাহ মানে উচ্চকাস্টের হিন্দু পুরুষের সাথে নিম্ন বর্ণের মহিলার বিবাহ। ব্রাহ্মন পুরুষের সাথে শুদ্রকন্যার বিবাহ। উচ্চবর্নের মহিলার সাথে নিম্ন বর্নের পুরুষের বিবাহে তিনি নারাজ। কারন তার বায়োলজি “গবেষণা” । নিম্নবর্নের স্পার্ম নাকি উচ্চবর্নের ডিম্বানুকে নষ্ট করে। প্রথমত উচ্চবর্নের আর নিম্ন বর্নের লোকেদের স্পার্ম আলাদা হয়।
তথ্যসূত্র:

আলোচনা প্রসঙ্গে” প্রথম খণ্ড (১৩৫২ সালের সংস্করণ) পৃষ্ঠা সংখ্যা ৬৪।

এই ঠাকুর তার “নারীর নীতি” বইয়ে স্বামী স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য ন্যূনতম ২২ বছর হওয়া উচিত বলে দাবি করেছেন, অথচ তার প্রথম স্ত্রীর সাথে তার বয়সের পার্থক্য ৫ বছর বা এর কাছাকাছি।
তথ্যসূত্র:

নারীর নীতি

অনুকূলের কিছু বাণী-
ছেলে-মেয়ে একযোগেতে করলে পড়াশুনা,
পড়ার সাথে বাড়ে প্রায়ই কামের উপাসনা।
বাপ-ভাই ছাড়া কারু কাছে নিতে নাইকো কিছু,
নিলেই জেনো হয় মেয়েদের মনটা আনেক নিচু।
কুমারী একটু বড় হ’লেই পুরুষ ছুঁতে নেই,
যথাসম্ভব এর পালনই উন্নয়নের খেই।
মেয়ের চাকরী মহাপাপ বিপর্য্যস্ত শ্বশুর-বাপ।
যে মেয়েরা চাকরী করে জনন-জাতি তারাই হরে।
অসতীত্বের কুয়াসী স্তর মেয়ের চাকরী করা,
ধী-টি জানিস আবছা লোভেই পড়ে ধরা।
অনুকূলের অবৈজ্ঞানিক বক্তব্য-
অনুকুল চক্রবর্ত্তীর বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উদ্ভাবনী শক্তিতে তূরীয় অবস্থা পেতে পারেন! উনার পুনঃজন্মের তত্ত্বটি এখানে হুবহু দিলাম –
।। পুণর্জন্ম কিভাবে হয় ।।
“সম্বেগ জীবের বা মানুষের মধ্যে gene-এর (জনির) ভিতর-দিয়ে যে pitch-এ
(স্তরে) ওঠে, মরে যাওয়ার সময় psycho-plasm-এ (মানস দেহে) engraved (মুদ্রিত)
হ’য়ে থাকে সেই pitch-এ wave-এর (তরঙ্গের) আকারে । মিলনেচ্ছু sperm-এর
(শুক্রকীটের) ভিতর সেই জাতীয় সম্বেগ সৃষ্টি হ’লে tunining (সঙ্গতি) হয় এবং মৃত
ব্যক্তি পুনরায় শরীর গ্রহণ করার সুযোগ পায় । জন্ম ও মৃত্যুর এটাই revolving process
(ঘূর্ণায়মান পদ্ধতি) ।”
তথ্যসূত্র:

আলোচনা প্রসঙ্গে (২১।১০৭ )                                     


অনুকূলের আরো কিছু বানী-
চাঁদে চিকন গাছ আছে
সূর্যে অত আগুন নেই
সূর্যটা বসবাসযোগ্য
তথ্যসূত্র:

স্মৃতির মালা,মণিলাল চক্রবর্তী পৃষ্ঠা নং-70



অনুকুল ঠাকুরের “নারী” জাতির প্রতি উপদেশ পড়ে দেখতে পারেন! আমি দুয়েকটা মণিমানিক্য তুলে দিচ্ছি —মন্তব্য নেই কারন আমি সত্যই বাকরুদ্ধ!
এক মা জিজ্ঞাসা করলেন, স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করা সত্ত্বেও
স্বামী যেখানে স্ত্রীর সঙ্গে দূর্ব্যবহার করে, সেখানে স্ত্রীর কী করবে?
শ্রীশ্রীঠাকুর- ঐ কথাই তো বলছিলাম। প্রকৃতিগত সামঞ্জস্য
দেখে বিয়ে না দিলে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই জীবন বিধ্বস্ত হ’য়ে যায়।
তুমি তোমার ধারনা অনুযায়ী হয়তো ভাল ব্যবহার করছ, কিন্তু স্বামীর
হয়তো অনুযোগ- আমি যা চাই, আমি যা পছন্দ করি, আমার স্ত্রী কিছুতেই
তেমনভাবে চলে না, সে তার নিজের খেয়ালমত চলে,
আমি তাকে নিয়ে আর পারি না। বড়জোর হয়তো বলবে, আমার
স্ত্রী এমনি ভাল মানুষ, কিন্তু আমি কিসে খুশি হই, আমি কিসে ভাল থাকি,
তা সে বোঝে না। তার নিজের এক ধরণ আছে, সেই ধরনে চলে। আমি বহু
ক্ষেত্রে দেখেছি, স্ত্রীর মত স্ত্রীও খারাপ নয়, স্বামীর মত স্বামীও খারাপ
নয়। উভয়েই ভাল মানুষ বলে সুনাম আছে বাইরে। সবার সঙ্গেই তাদের ব্যবহার
ভাল, কিন্তু উভয়ের মধ্যেই আর কিছুতেই বনিবনা হয় না। বিয়ে থাওয়ার এমনতর
গরমিল যদি কোথাও ঘটে গিয়ে থাকে, সেখানে স্বামী-স্ত্রীর
প্রকৃতিটা বুঝতে চেষ্টা করা উচিত এবং স্বামীর যাতে ভাল লাগে ও ভাল
হয় নিজের ব্যবহার সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করা উচিত। একটা জ্যান্ত
মানুষের সাথে ব্যবহার করার সব সময় স্মরণ রাখা উচিত, আমি ইট, কাঠ
বা পাথরের সঙ্গে ব্যবহার করছি না। যার সঙ্গে ব্যবহার করছি তার
একটি রুচি আছে, প্রকৃতি আছে , মেজাজ আছে, ধরণ আছে। বদ্যি যেমন
নারী টিপে ধাত বুঝে ওষুধ দেই, মানুষের সঙ্গে ব্যবহারের দাওয়াইও
তেমনি ধাত বুঝে প্রয়োগ করতে হয়। এক কথায় মানুষের মন-মেজাজ
বুঝে চলতে হয়। এমনটি যদি না চলতে পার তবে তোমার ভালর
ধারণা নিয়ে আবদ্ধ হ’য়ে থাকলে তুমি কিন্তু কখনও মানুষের মন পাবে না। শুধু
স্বামীর সঙ্গে ব্যবহারেই এমনতর নয়। প্রত্যেকের সঙ্গে ব্যবহারেই চোখ, কান, মন
খোলা রেখে চলবে। নজর করবে, কে কখন কী অবস্থায় আছে। তাই বুঝে তখন
যা বলার বলবে, যা’ করার করবে। তুমি হয়তো মনে করে রেখেছ, স্বামীর
কাছে সংসারের একটা প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য আবদার করবে। স্বামীর মন
কেমন তা লক্ষ্য না করে, তুমি তোমার চিন্তার সম্ভেগ অনুযায়ী এমন সময়ই
হয়তো কথাটা তাকে বললে যখন তার মন নানা সমস্যায় ভারাক্রান্ত। তখন
সে তো চটবেই। আবার, তুমিও বলবে, আমি তো নিজের জন্য কিছু
চাইতে যাইনি, সংসারের জন্য দরকার, সেই দরকারী জিনিসের
কথা বলতে গিয়ে কত কথা শুনলাম। যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা।
আমার ভাল কথাটাও তোমার গায়ে সয় না। এই বেধে গেল আর
কি লাঠালাঠি। পরস্পর হিসাব করে না চলার দরুন অনেক গোলমালের সুত্রপাত
হয়। মেয়েদের বিশেষ বিশেষ শারীরিক অবস্থায় বিশেষ-বিশেষ মেজাজের
সৃষ্টি হয়, সেটা হলো সাময়িক ব্যাপার এবং শারীরিক অবস্থার সাথে জড়িত।
পুরুষ ছেলের এটা সম্পর্কে যদি কোন জ্ঞান না থাকে এবং তখনকার
স্বাভাবিক বৈলক্ষণ্যের দরুন যদি অযথা শাসন করতে যায়, তাহলে কিন্তু
হিতে বিপরীত ঘটে। আবার, স্বামী হয়তো ফিটফাট থাকতে পছন্দ করে, কিন্তু
স্ত্রী হয়তো অগোছাল, অপরিচ্ছন্ন রকমে চলতে অভ্যস্ত। সেখানে স্ত্রীর ঐ
চলনে স্বামীর তো অসন্তুষ্ট হবার কথাই।
মা-টি অকপটে বললেন, আমার ঐ দোষটি আছে।
শ্রীশ্রীঠাকুর: দোষ যদি বুঝে থাকিস, তবে সেরে ফ্যাল্। যা করলে শরীর-
মনের পক্ষে ভাল হয়, ছেলেপেলে ভাল থাকে, স্বামীরও মনোরঞ্জন হয়,
তা তো করাই লাগে। স্বামীর কাছে যত সময় নত থাকবি। যুক্তি তর্ক
দিয়ে কারো মন জয় করা যায় না। তোর যদি কখনও মনেও হয় যে, স্বামী তোর
সঙ্গে অকারণ দূর্ব্যবহার করছে, তাও বলবি, আমি কথাটা বলতে চেয়েছিলাম
ভাল, কিন্তু ভাল করে বুঝিয়ে বলতে না পারায় তোমার অশান্তির কারণ
হয়েছি। ত্র“টি আমারই। এইরকম যদি করতে পারিস তাহলে দেখতে পাবি,
স্বামীর সব রাগ গলে জল হয়ে যাবে। একটা জায়গায় কেবল স্বামীর
বিরুদ্ধে দাড়াতে পারিস, অর্থাৎ যদি দেখিস, স্বামী তাঁর মা-
বাবা বা গুরুজনের সঙ্গে অসমীচিন ব্যবহার করছে, সেখানে কখনও কিন্তু
স্বামীর পক্ষ সমর্থন করতে যাবি না, শ্বশুর-শাশুড়ীর পক্ষ হয়ে সেখানে ন্যায্য
প্রতিবাদ করবি। স্বামীর মঙ্গলের জন্যই এটা করা দরকার। অনেক স্ত্রী তাদের
স্বামীকে তাদের গুরুজন ও আপনজন হতে বিচ্ছিন্ন করে নিজেদের
আঁচলধরা করে রাখতে চায়। ভাবে, আমরা স্বামী-স্ত্রী ছেলেপেলেদের
নিয়ে সুখে থাকতে পারলে হলো, আর চাই কী? কিন্তু এত যে স্বামীর প্রতি ও
নিজের প্রতি শত্র“তা করা হয়, এ-কথাটা বোঝে না। স্বামীর
প্রতি শত্র“তা এদিক দিয়ে যে, স্বামী যাদের নিয়ে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ,
প্রীতি, দায়িত্ব ও কর্ত্তব্যহীন করে তুললে সে ধীরে ধীরে অমানুষ হয়ে পড়ে,
তার জগৎটা হয়ে যায় সংকীর্ণ; কারণ, যে নিজের মা, বাপ,
ভাইবোনকে ভালবাসতে পারে না, তাদের প্রতি কর্ত্তব্য করতে পারে না,
সে দেশ ও দশকে ভালবাসবে, তাদের জন্য করবে, এ একটা মিছে কথা। অমনতর
যারা, তারা বড়জোর তথাকথিত politics (রাজনীতি)করতে পারে নাম-
চেতানর জন্য, স্বার্থ-সিদ্ধির জন্য। অন্তরের আসল বিস্তার তাদের কিছুই হয় না।
আর, তাদের আত্মপ্রসাদ বলেও কিছু থাকে না। যাদের খুশি করে, যাদের
আশির্বাদ ও প্রসাদ লাভ করে মানুষ বড় হবার প্রেরণা পায়, তাদের প্রতি টানই
যদি ছিঁড়ে যায়, তবে তার সম্বল কি রইল জীবনে তা তো বুঝি না।
ওভাবে রিক্ত ও নিঃসম্বল হয়ে করে দিল যে তাকে মনোজগতে, তার
প্রতি একদিন তার আক্রোশ আসাও অসম্ভব না। তখন ঐ
স্ত্রীকে হয়তো সে দুচক্ষে দেখতে পারে না। ভাবে, ঐ ডাইনী আমার
সর্বনাশ করেছে। আমার মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন সকলের
থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে আমাকে। আমার সাজানো বাগান
শুকিয়ে ফেলেছে। ও আমাকেও চায় না। ও চায় আমাকে দিয়ে ওর নিজের
খেয়াল পূরণ করতে। এটা প্রকারান্তে নিজের প্রতি শত্র“তা নয় কি? তাছাড়া,
যে ছেলেপেলেদের সুখসুবিধার দিকে চেয়ে অমন করে, তাদেরও কি ভাল
হয়? যে সঙ্কীর্ণ স্বার্থপরতার দীক্ষা তাদের দেয়, তার ফলে তারাও
তো পরস্পরকে ভালবাসতে শেখে না। কালে-কালে তারাও তো মা-
বাবা ও ভাই-বোন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। যেমনতর বীজ বোনা যায়,
তেমনতর ফলই তো ফলবে। তখন হয়তো দেখবে, তোমার একটি ছেলে চর্ব্য, চোষ্য,
লেহ্য, পেয় খাচ্ছে আর একটি ছেলে পথে-পথে না খেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে,
কিন্তু সে তাকে এক মুটি ভাতও দিচ্ছে না। দিতে চাইলেও তার স্ত্রীর
ভয়ে পারছে না। এই অবস্থা দেখলে তোমার কি ভাল লাগে? কিন্তু এই
অবস্থাটার তো সৃষ্টি করলে তো তুমি।
মা-টি সঙ্কুচিত হয়ে বললেন, ঠাকুর! আপনি আর বলবেন না, শুনে বড় ভয় করে।
মেয়ে মানুষ বোকা জাত, তাদেরই কি যত দোষ? মেয়েমানুষ ভূল
করে যদি স্বামীকে তার বাপ-মার থেকে নিজের দিকে টানতে চায়,
তাহলেই স্বামীও কি সেই ভূলে সায় দেবে?
শ্রীশ্রীঠাকুর তা তো দেওয়া উচিতই নয়। পুরুষেরই তো দায়িত্ব বেশী। সেই
তো তার পিতৃভক্তি ও মাতৃভক্তির দৃষ্টান্তে স্ত্রীকে তাদের
প্রতি আরো শ্রদ্ধাপরায়ণ করে তুলবে। যেখানে স্বামীর অতখানি দৃঢ়তা ও
পৌরুষ নেই, সেখানে সতী স্ত্রীর অনেকখানি করণীয় আছে। সে যদি স্বামীর
ভালই চায়, তবে তাই করবে যাতে স্বামীর মঙ্গল হয়। স্বামী যদি তার মা-
বাবার প্রতি কর্ত্তব্যচ্যুত হতে চায়, সে বরং তখন
কলেকৌশলে চেষ্টা করবে যাতে বাপ-মার প্রতি তার টান
বাড়ে এবং আবেগভরে সে তাদের সেবাযতœ করে। মানুষের অন্তরে শ্রদ্ধা,
ভক্তি, প্রীতি ইত্যাদি বাড়াবার জন্য অনেক সময় দূতীগিরি করতে হয়।
স্ত্রী হয়তো স্বামীকে বলল, বাবা-মা তোমাকে খুব ভালবাসেন। বলেন
রাগধাগ করলে কি হয়? মন অওর খুব ভাল। বাইরে আধিক্যেতা নেই। কিন্তু সকলের
প্রতি অনেক টান। আবার, শ্বশুর-শাশুড়ীর কাছে হয়তো বলতে হয়,
উনি আমাকে সবসময় বলেন, আমার কিছু করা লাগবে না তোমার। তুমি সব সময়
দেখবা, বাবা-মার যাতে কোন কষ্ট না হয়।
এইভাবে যদি কৌশলে দূতীগিরি করা যায়, তাহলে পরস্পরের মধ্যে শ্রদ্ধা,
প্রীতি, ভাব-সাব গজিয়ে দেওয়া যায়। এই তো সতী স্ত্রীর কাজ,
লক্ষ্মী বৌয়ের কাজ। গড়া সংসার ভাঙবে না সে, ভাঙা সংসার গড়বে সে,
জোড়া লাগাবে সে। মায়েদের তুই বোকা বলিস? বোকা হলে কখনও সন্তান
পেটে ধরে মানুষ করে তুলতে পারে? দে তো একটা ব্যাটাছাওয়ালের
কাছে একটা মা হারা শিশুকে মানুষ করার ভার। প্রায়ই হাগে-
মুতে একসা করে ফেলবেনে। কিন্তু মায়েরা কেমন অনায়াসেই করে তা। তাই
নিজেদের কখনও ভাববি না। তোরাইতো বুদ্ধিস্বরুপিণী, লক্ষ্মীস্বরুপিণী,
দূর্গতিনাশিনী, দুর্ম্মতিদলনী দূর্গা। তোরা আছিস, তাই তো আমাদের
আগলে রেখেছিস। নইলে আমাদের উপায় ছিল কী?
[তথ্যসূত্র: আলোচনা প্রসঙ্গে, ৬ই কার্তিক, শুক্রবার, ১৩৪৯ (ইং ২৩/১০/১৯৪২)]


কিছু নির্বোধের কাছে অনুকূল হলো পূর্ণব্রহ্ম বা ভগবান, আবার কারো কাছে কল্কি অবতার অনুকূলের শেষ জীবনের কিছু ট্রাজেডির কথা জানতে হলে পড়ুন নিচের এই লেখাটি, লিখেছেন- কুশল চক্রবর্তী, লেখাটি পড়ুন আর ভাবুন অনুকূল কোনো পূর্ণব্রহ্ম হতে পারে কি না, আর যেসব নির্বোধ তাকে পূর্ণব্রহ্ম ভাবে, তাদের গতি কী ?
“এই সেদিন চট্টগ্রামের দেওয়ানজী পুকুরপাড়ের সৎসঙ্গ আশ্রম থেকে অনুকূল ঠাকুরের জীবনী এবং বাণীর অনেকগুলো বই নিলাম। এর মধ্যে "প্রেমের যমুনা কাঁদিয়া আকুল" নামক বইটি পড়ে আমি বিস্মিত হয়ে গেলাম। অনুকূল ঠাকুরের শেষ জীবনের কথা নিয়েই বইটি প্রধানত রচিত।" সে বইতে "ইতিহাসের একটি অলিখিত মসীলিপ্ত অধ্যায়" নামক অধ্যায়ে যে তথ্যগুলো তা নিচে পর্যায়ক্রমে দিচ্ছি-
১. অনুকূল ঠাকুরের শেষ সময়ে, বিশেষ করে শেষের দুই বছর তার বড় ছেলে তার হাত থেকে সকল ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে তাকে লোকচক্ষুর অন্তরালে পার্লার ভবন সংলগ্ন একটি ক্ষুদ্র প্রকোষ্ঠে (বাথরুমে) একরকম বন্দী করেই রাখে।
২.সেই বন্দীদশা থেকে মুক্তির জন্যে অনুকূল ঠাকুর সর্বদাই হা হুতাশ, হায় হায় করে নিজের গালে নিজেই থাপ্পড় মারতেন। বিভিন্ন রকমের আত্মপ্রলাপ বকতেন। যেমন- মা! মা!; হায় আমার একি হইল! আমি পাবনা যাবো- আমি পাবনা যাবো; আমি বন্দী শাহজাহান! ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু চারদিকে ছিলো তার বড় ছেলের সতর্ক পাহারা - যাতে তার বড় ছেলের লোক ছাড়া কেউ যেন তার সাথে দেখা করতে না পারে।
৩. এই সময়ে অনুকূল ঠাকুরের তীব্র মস্তিষ্কবিকৃতি দেখা যায়! কোলকাতা থেকে বিভিন্ন মনোচিকিৎসক এসে তার নিয়মিত চিকিৎসা করতো। এই সময়ে সে প্রচণ্ড অবহেলায় বাথরুমের পাশে ছোট্ট একটা রুমে থাকতেন এবং দিবারাত্রি হা হুতাশ এবং কান্না করতেন। এবং বলতেন - "আমি বন্দী শাহজাহান আমাকে ignore করা হয়, insult করা হয়, আমি সবই বুঝতে পারি!"
৪. অনুকূল ঠাকুরের মৃত্যুর সময়ের ঘটনাক্রম:
১৯৬৯ সালের ২৬ জানুয়ারি (ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস)
* সকালে ঠাকুরের ৯৮ ডিগ্রি জ্বর এবং তার সাথে কাসি।
* রাত্রি দশটার পরে পেটে বায়ু জমে এবং বুকে ব্যথা শুরু হয়ে ঘন ঘন জলের তৃষ্ণা পেতে থাকে।
* ঠাকুর ননীগোপাল মণ্ডল নামে এক ডাক্তারকে অনুরোধ করেন যেন তার সাথে থাকে এবং তার ঘরে ঘুমায়, কিন্তু ডা. ননীগোপাল সেইদিন ছিলেন না। তার ১১ টার পরে থেকে ঠাকুরের অসুস্থতা ক্রমশ বাড়তে থাকে। শুয়ে থাকলে অসুস্থতা বাড়ে, তাই উঠে বসেন। এভাবেই ক্ষণিক বসা, ক্ষণিক শোওয়া করতে করতে তিনি প্রচণ্ড অস্থির এবং দুর্বল হয়ে পরেন।


* রাত্রি ৩ টায় ঠাকুর আরো অসুস্থ হয়ে পরেন। তার প্রচণ্ড শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্ট দেখা দেয়। তখন ঠাকুর তার পাশে কাউকে না দেখে হঠাৎ সুধাপাণিমাকে বলেন -
" আর সবাই কোথায় গেল? তুই ছাড়া আমার কাছে আর কেউ নেই! বড় খোকা, মণি, কাজল কখন আসবে?"
* রাত্রি ৪.২৫ মিনিটে ঠাকুরের অবস্থা প্রচণ্ডভাবে খারাপ হতে থাকায় তাকে কাজলদা (ডাক্তার ছোট ছেলে) এসে দুটি ইনজেকশন দেয়, কিন্তু কোন কাজ হয় হচ্ছে না দেখে অক্সিজেন দিতে যান। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেখেন অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই! দুইদিন আগেই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কেউ সরিয়ে রেখেছে (ছোটদাপন্থীদের, সিলিন্ডার সরানো বিষয়ে বড়দার প্রতি সন্দেহ)। ঠাকুরের অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে দেখে কাজলদা নিজেই অক্সিজেন আনতে ছুটে গেলেন।
* ৪.৫০ মিনিটে অক্সিজেন আনতে দেরি করায় আর অক্সিজেন দেয়া যায়নি; কাজলদা অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ঘরে ঢুকে অবস্থা বেগতিক দেখে, আবার ইঞ্জেকশন দিলেন, নাকের ভিতরে নল ঢুকিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়া চালু করতে আপ্রাণ চেষ্টা করলেন। কিন্তু অবশেষে সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থকাম করে দিয়ে ঠাকুর মৃত্যুবরণ করেন। ইতিমধ্যে বড়দা (বড় ছেলে)এসে উপস্থিত হন।
* ২৭ জানুয়ারি থেকে তার বড় ছেলের ( অমরেন্দ্রনাথ চক্রবর্ত্তী) সক্রিয় (ছোড়দাপন্থীদের ভাষায় বিতর্কিত) কার্যক্রমে অনেক দুঃখজনক, হৃদয়বিদারক ঘটনার সূত্রপাত ঘটে, যা ভাষায় প্রকাশ করায় মতো নয়! আগ্রহীরা বইটি থেকে পড়ে নিবেন। অনুকূল ঠাকুরকে যখন শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় একটি বেঞ্চে শুইয়ে। দুইপাশে তার হাত ঝুলতে থাকে! প্রচণ্ড তাড়াহুড়া করে তার মৃতদেহ শ্মশানঘাটে নেয়া হয়। তার দেহকে যখন অগ্নিসংস্কার করা হয় তখন তার দেহ থেকে টাটকা তাজা রক্ত বের হতে থাকে। দাহকার্য বিলম্ব হচ্ছে দেখে বড়দা অধৈর্য হয়ে বারবার বলছে- "কিরে হলো? আর কত দেরী? "( এইসকল বিভিন্ন ঘটনায় ছোটদা পন্থীদের প্রচণ্ড সন্দেহ বড়দার প্রতি)।
*২৮ জানুয়ারির সকালবেলা তার বড় ছেলে ঠাকুরের পার্লার ঘরে বসে অনেকক্ষণ কান্নাকাটি করে," বাবা আমাকে তার খাটে বসতে বলেছেন "বলেই পরবর্তীকালে ঠাকুরের খাটে বসা সহ সকল ক্ষমতা নিজের কব্জায় নিয়ে নেন। পাশাপাশি ৫৭ সালের একটা গুপ্ত দলিলের দোহাই দিয়ে নিজেকে "সৎসঙ্গ "এর Spiritual Head and Guide ঘোষনা করে তার অন্যদুই ভাইকে প্রায় সকল কিছু থেকেই বঞ্চিত করেন। এবং সেখান থেকেই শুরু হয় সৎসঙ্গ এর বড়দাপন্থী -ছোটদাপন্থী পরস্পর বিরোধী সমান্তরাল সংগ্রাম। এর শেষ কবে হবে তা আমরা কেউ জানি না!
( এই লেখাটি আমি "প্রেমের যমুনা কাঁদিয়া আকুল" বইয়ের ৫৯ পৃষ্ঠা থেকে ৬৭ পৃষ্ঠা অনুসরণে সংক্ষেপে লিখেছি। )

ইষ্টভৃতির টাকা কে খায়? অনুকূল ঠাকুর যখন দীক্ষা দেওয়া শুরু করলেন, তখন কোন ইষ্টভৃতির নিয়ম ছিল না।তারপর ১০ বছর পর, হঠাৎ চিন্তা করলেন,আমার এত এত শিষ্যদের কাছ থেকে প্রতিদিন যদি কিছু কিছু টাকা নেই , তবে আমার আর কোন অসুবিধা হবে না। যেই কথা সেই কাজ, শিষ্যদের বুঝানো হল, গুরুকে কিছু দেওয়ার থেকে ভালো আর কিছু নেই।মনে কর, লাউ কুমড়া সবজির থেকে টাকা দিলে বেশী ভালো, আমি আমার সুবিধা মত খরচ করতে পারবো।আর প্রতিদিন তো, আমার কাছে এসে টাকা দিয়ে যেতে তোদের কষ্ট হবে, তাই তরা প্রতিদিন, আমার উদ্দেশ্যে এই সব মন্ত্র বলে, টাকা জমা রাখবি, আর মাসের শেষে আমার মন্দিরে এসে জমা দিবি। এর পর অনুকূল ঠাকুর ভাবলো, টাকা শব্দটা খারাপ শুনা যায়। মানুষ ভাববে আমি টাকার লোভি।তাই নাম দেওয়া হল ইষ্টভৃতি।ইষ্ট মানে উপাস্য মানে ভগবান, ভৃতি মানে প্রদান। অর্থাৎ ভগবানের উদ্দেশ্যে প্রদান।কিন্তু উদ্দেশ্য হল, শিষ্যরা ভাববে আমাদের উপাস্য অনুকূল ঠাকুর, তাই তাকে প্রদান করতেছি, আর সাধারন হিন্দুরা ভাববে এই টাকা ভগবানকে দিচ্ছে। সাপও মরলো, লাঠিও ভাঙ্গলো না।শর্ত হল, এই টাকা শুধুমাত্র সৎসংঘ মন্দিরেই দিতে হবে, অন্য কোন মন্দিরে দিলে মহাপাপ হবে। এই টাকা যখন ভালোই জমা হতে থাকলো, তখন টাকার প্রতি লোভও বেড়ে গেল। তখন আরো নিয়ম আরোপ করা হলো।তোমার ইনকাম বাড়লে, প্রতিদিন টাকার পরিমানও বাড়াতে হবে, না বাড়ালে তুমি অন্যায় করতেছো।আর এর পর শর্ত হচ্ছে একবার বাড়ালে আর কমানো যাবে না। এরপরই ঋৃতিকদের উপর দায়িত্ব আসলো, তোমরা অবশ্যয় দীক্ষার সংখ্যা বাড়াবে , সাথে সাথে খেয়াল রাখবে, অন্যকিছু ঠিক মত না করলেও, ইষ্টভৃতি যেন কখনো বন্ধ না করে। এরপর ভবিষৎ চিন্তায় ঠাকুর আকুল হলেন।আমার জীবন ইষ্টভৃতির টাকায় রাজসুখে যাবে, কিন্তু আমার ভবিষৎ বংশধর। তাদের জীবন কেমনে যাবে, তারা যদি ভালো চাকুরী বা ব্যবসা না করতে পারে। তখন চিন্তা করে উপায় বের করলেন।আমি মরলেও তোরা ইষ্টভৃতির টাকা বন্ধ করতে পারবি না।বাণী দিলেন, জীবন গেলেও তরা ইষ্টভৃতি ছাড়বি না। ছেলে নাতিদের বুঝালেন, তদের চাকুরি করে, কষ্ট করে ইনকাম করতে হবে না, তরা এলাইনেই থাক, খালি খেয়াল রাখবি, আমি মরার পরও যেন, দীক্ষা দেওয়া বন্ধ না হয়। নতুন নতুন ঋৃতিক বানাবি, তাদের দীক্ষা দেওয়ার জন্য টার্গেট দিয়ে দিবি , যত মানুষ দীক্ষা নিবে, তত ইষ্টভৃতির টাকা আসবে।বুঝাবি সবাইকে আমি মরলেও সবার গুরু। ঋৃতিকরা আমার প্রতিনিধি। বুঝাবি এ সব কথা, আমি তো আর মরার পর কথা বলতে পারবো না।আমার কথামত চল দেখ তদের ভাগ্য ঠেকায় কে?তরাই হবি রাজা, আর সবাই প্রজা। আমার নাম যত ভাঙ্গাতে পারবি, যত ইষ্টভৃতির টাকা নিতে পারবি, তত রাজার রাজা, মহারাজা হতে পারবি। আর এভাবেই ইষ্টভৃতির টাকার ঠাকুরের নাতি পুতিরা খাচ্ছে, এবং সুখে শান্তিতে আছে।
অনুকূল চন্দ্রের কিছু অমোঘ নারীবিদ্বেষী বানী শুনে নিন। বিশেষ করে উনার নারী ভক্তদের জন্য।

ছেলে-মেয়ে একযোগেতে করলে পড়াশুনা,
পড়ার সাথে বাড়ে প্রায়ই কামের উপাসনা।
মানে ছেলেমেয়েদের একসাথে স্কুলে পড়া যাবে না। পড়লে নাকি কামের উদয় হয়। স্কুলের বাচ্চারা আজকাল প্রেম বোঝে ঠিক আছে। কিন্তু কাম !!!! ঠাকুর আমার অনেক এডভান্সড।

বাপ-ভাই ছাড়া কারু কাছে নিতে নাইকো কিছু,
নিলেই জেনো হয় মেয়েদের মনটা আনেক নিচু।
লাষ্টের লাইনটা সব বলে দিচ্ছে না?? বাবা – বা ভাই ছাড়া কারো কাছে কিছুই নিতে নেই। কিন্তু আমাদের সমাজে এমন অনেক নারী আছেন যারা দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে নিজেদের বাপ-ভাই এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে স্বামীর পেট পূজা করাচ্ছেন। আর মায়ের কথা আর নাই বা বললাম । পাঠকের সু-বিবেচনা।

কুমারী একটু বড় হ’লেই পুরুষ ছুঁতে নেই,
যথাসম্ভব এর পালনই উন্নয়নের খেই।
তাই নাকি গো ঠাকুর !! তাহলে বাবা তাঁর মেয়ের মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করবে না? ভাইয়ের সাথে গলাগলি করে খেলবে না? তাছাড়া ডাক্তার যদি পুরুষ হন আর মেয়ে যদি কুমারী হন তাহলে কি???
পাঠক আমাকে উত্তর দিয়ে পাপ মুক্ত করবেন প্লীজ??

মেয়ের চাকরী মহাপাপ বিপর্য্যস্ত শ্বশুর-বাপ।
যে মেয়েরা চাকরী করে জনন-জাতি তারাই হরে।
সিলেটের এক নামকরা পরিবারের বৌ ! একটি নামকরা স্কুলের সিনিয়র টিচার। মাসে প্রায় এক লাখ টাকা কামান। জীবনেও দেখি নাই শ্বশুরকে বাজে কথা বলেছেন। বরং শ্বশুর উনার বৌমাকে নিয়ে অনেক গর্বিত। হ্যাঁ ঠিকই ভাবছেন! নিজের ছেলের থেকেও উনি উনার বৌমাকে নিয়ে গর্ব করেন সমাজের কাছে।
তাছাড়া দেশের অর্থনীতির 34% অবদান মেয়েদের। দেশের গার্মেন্ট সেক্টরে গিয়ে দেখা যাবে নারী শ্রমিক কি অবদান রাখছেন দেশের উন্নতির জন্য। তাছাড়া অনেক নারী ইউরোপ আমেরিকা তে থেকে পড়াশুনা করছেন, কাজ করছেন আর নিজের সংসার ( কোন কোন ক্ষেত্রে শ্বশুরবাড়ী) চালাচ্ছেন। আর তা অনেক হাসি মুখে।
নারীর কর্মকান্ড নিয়ে নিম্নের রিপোর্ট গুলো দেখুন।
সিপিডির রিপোর্টঃ http://cpd.org.bd/estimating-womens-contribution-economy-case-bangladesh/

অয়ার্ল্ড ইকনমিক ফরামের রিপোর্টঃ https://www.weforum.org/agenda/2018/01/this-is-why-women-must-play-a-greater-role-in-the-global-economy/

সরি ঠাকুর ! আপনার এই বানীটি শুধুমাত্র নারী বিদ্বেষী ছাড়া আর কিছুই না।

অসতীত্বের কুয়াসী স্তর মেয়ের চাকরী করা,
ধী-টি জানিস আবছা লোভেই পড়ে ধরা।
তা ঠাকুর মেয়ে চাকরী করলে অসতী এটা আপনি কোথায় পেলেন? যেখানে সনাতন ধর্মের বেদ শাস্ত্রে ২৫-৩০ জন নারী ছিলেন বৈদিক মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষি। তাছাড়া আমাদের শাস্ত্রে মেয়েদের লক্ষী বলে সম্বোধন করা হয়েছে। লক্ষী বোঝেন আশা রাখছি। টাকা পয়সার ফ্ল এই বৌ বা মেয়েরাই সংসারে নিয়ে আসেন। ঘরে সুখ শান্তি বিরাজ করে একমাত্র অর্থের মাধ্যমে। চাকরী আজকাল লোভ নয়। একজন মেয়ের পরিচয়। আপনার এই বানীটি যে আপনার চরম মাত্রার নারী বিদ্বেষের বহিঃ প্রকাশ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

উনার দর্শনের মূল থিওরী এই রকম – হিন্দু ধর্মের বর্ণবাদ ভাল! কারন তা বংশ গৌরব এবং বংশ দক্ষতা ( স্কিল) রক্ষা করে! রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষা করে! এই ঠাকুর কোন এক কালে ডাক্তারী পাশ করেছিলেন। কোন বায়োলজি গ্রন্থে শুদ্র রক্তের সাথ ব্রাহ্মন রক্তের পার্থক্যর পরীক্ষালদ্ধ ফল পাওয়া যায়, তা আমাদের কারুর জানা নেই । তবে উনিত আবার ঈশ্বরের সাথে কথা বলতেন-হয়ত কানে কানে ইশ্বর এসে এসব বৈজ্ঞানিক অমৃতবানী উনার কানে ঢেলেছিল! তবে এই বর্ণবাদ টেকাতে এবং উৎকৃষ্ট হিন্দু সন্তান প্রসব করিতে, উনার বিবাহের ফর্মুলা হচ্ছে এই রকম – প্রতিটা হিন্দু পুরুষের দুইটি বিবাহ করা উচিত ! প্রথমটা সবর্ণ, পরেরটা অনুলোম অসবর্ণ । অনুলোম অসবর্ণ বিবাহ মানে উচ্চকাস্টের হিন্দু পুরুষের সাথে নিম্ন বর্ণের মহিলার বিবাহ। ব্রাহ্মন পুরুষের সাথে শুদ্রকন্যার বিবাহ। উচ্চবর্নের মহিলার সাথে নিম্ন বর্নের পুরুষের বিবাহে তিনি নারাজ। কারন তার বায়োলজি “গবেষণা” । নিম্নবর্নের স্পার্ম নাকি উচ্চবর্নের ডিম্বানুকে নষ্ট করে। প্রথমত উচ্চবর্নের আর নিম্ন বর্নের লোকেদের স্পার্ম আলাদা হয়-এই অতি মুল্যবান বৈজ্ঞানিক তথ্যর জন্য, উনাকে নোবেল বা নিদেন পক্ষে একটি গোবেল প্রাইজ দেওয়া উচিত ছিল! সর্বর্নে বিবাহটা করার পর কিন্ত আপনি অসবর্ণ বিবাহটা করিবেন! কেন? কারন আপনার সবর্ন স্ত্রীর গর্ভে আসিবে বিশুদ্ধ সন্তান! আর অসবর্ন বিবাহে আসিবে অশুদ্ধ সন্তান! অশুদ্ধ সন্তান কেন? এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে শ্রী শ্রী ঠাকুর বিজ্ঞানে একেবারে “নিরক্ষর ” ছিলেন না । উনার মতে বায়োডাইভারসিটি বাড়াইতে দ্বিতীয় বিবাহটি অসবর্ণ করিতে হইবে! মোদ্দা কথা উনার এই স্বরচিত ” বৈজ্ঞানিক ” ইউজেনিক্স ভারতে খুব বেশী চলে নি-কারন নেহেরু। যিনি হিন্দুদের বহুবিবাহ আইন করে রদ করেন । তবে শ্রীঠাকুর, থিওরী অনুয়ায়ী দুটি বিয়ে করেছিলেন। এতে সমাজে বিশুদ্ধ এবং ডাইভার্স সন্তান এসেছিল কিনা আমার জানা নেই – তবে সতীন ও সতীনপুত্রের ঝগড়ায়, তার সৎসঙ্গ আশ্রম উঠে যাবার উপায় হয় একসময়। শিষ্যরাও বিরক্ত হয়েছিল। আমার দাদু তার সন্তানদের ওপর খাপ্পা ছিলেন-এটুকু মনে আছে। (৩) কেও যদি জোকার নায়েকের বৈজ্ঞানিক আবিস্কারে পুলকিত হৌন-তাহলে অনুকুল চক্রবর্ত্তীর বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উদ্ভাবনী শক্তিতে তূরীয় অবস্থা পেতে পারেন! উনার পুনঃজন্মের তত্ত্বটি এখানে হুবহু দিলাম – ।। পুণর্জন্ম কিভাবে হয় ।। “সম্বেগ জীবের বা মানুষের মধ্যে gene-এর (জনির) ভিতর-দিয়ে যে pitch-এ (স্তরে) ওঠে, মরে যাওয়ার সময় psycho-plasm-এ (মানস দেহে) engraved (মুদ্রিত) হ’য়ে থাকে সেই pitch-এ wave-এর (তরঙ্গের) আকারে । মিলনেচ্ছু sperm-এর (শুক্রকীটের) ভিতর সেই জাতীয় সম্বেগ সৃষ্টি হ’লে tunining (সঙ্গতি) হয় এবং মৃত ব্যক্তি পুনরায় শরীর গ্রহণ করার সুযোগ পায় । জন্ম ও মৃত্যুর এটাই revolving process (ঘূর্ণায়মান পদ্ধতি) ।” আঃ প্রঃ ২১।১০৭ থেকে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের বাণী । শ্রী শ্রী ঠাকুরের মাথায় কতটা উর্বরা ফসফেট ছিল ভেবে দেখুন ত? ব্যাপারটা জাস্ট ভাবুন আপনি মারা যাচ্ছেন-যাওয়ার সময় আস্তে আস্তে তড়িৎ চুম্বক তরঙ্গে বিলীন হচ্ছেন! সেই তরঙ্গের একটা ফ্রিকোয়েন্সি আছে? রাইট! এবার ধরুন আপনি যে সময় মৃত্যুর কারনে তরঙ্গে পরিনত, একজাক্টলি সেই সময়, অনেক পুরুষ, অনেক নারীর সাথে সঙ্গমে রত এবং তাদের যোনীদ্বারে কোটি কোটি স্পার্ম সবে ঢুকতে শুরু করেছে ! এই সব স্পার্মও তরঙ্গায়িত! নীলস বোর বা হাইজেনবার্গ স্পার্মের ওয়েভ পপার্টি বার করতে ব্যর্থ হলেও, শ্রী শ্রী ঠাকুর ঠিক জানেন, স্পার্মের ওয়েভ পার্টিকল ডুয়ালিটি! এবার আপনার মৃত আত্মার একটা ফ্রিকোয়েন্সি আছে এবং স্পার্মদেরও নিজস্ব ফ্রিকোয়েন্সি আছে! এবার আপনার আত্মার ফ্রিয়োয়েন্সির সাথে স্পার্মের ফ্রিকোয়েন্সি মিলে গেলেই আপনি খাঁটি “রেজোনান্স” পদ্ধতিতে স্পার্মের মধ্যে ঢুকে গেলেন!! তারপরে সেই মহিলার পেট হইতে সন্তান হিসাবে বাহির হইবেন। তবে গুরুর তত্ত্বে অসম্পূর্নতা আছে যা তার শিষ্য বা পুত্ররা সম্পূর্ন করেন নি! প্রথমত কন্ডোম থাকিলে কি হইবে? তাহলে ত সবই গেল!! আর ওই কোটি কোটি স্পার্মের মধ্যে মাত্র একটিই ডিম্বানুর প্রাচীর ভেদ করতে পারে! ভেবে দেখুন-আপনি একটি স্পার্মের মধ্যে ঢুকে গেলেন রেজোনান্সের মাধ্যমে কিন্ত সেটি প্রাচীর ভেদ করিতে পারিল না ! তাহা হইলে কি হইবে? আপনি আবার সেই জন্মাতে জন্মাতে মারা পড়িলেন! রাইট? সেক্ষেত্রে আপনি –সেই স্পার্ম হইতে বাহির হইয়া, নতুন যোনির সন্ধান করিতে লাগিলেন না পুনজন্ম হইলনা বলিয়া, মহাবিশ্বে তরঙ্গায়িত হইয়া ভাসিতে লাগিলেন, এসবের সমাধান কিন্ত গুরুদেব দিয়ে যান নি!! ভেবে দেখুন। মৃত্যর পর আবার জন্ম নেওয়ার চেষ্টাটা কিন্ত বেশ চাপের! ওই তরঙ্গের ফর্মে আপনি শুধুই যোনি খুঁজে বেড়াচ্ছেন যেখানে লিঙ্গ সবে ঢুকেছে আর স্পার্ম ফেলার তালে আছে! যোনিতে স্পার্ম পড়তেই আপনি ফ্রিকোয়েন্সি স্ক্যানার দিয়ে স্পার্ম খুঁজতে লাগলেন যদি ম্যাচিং ফ্রিকোয়েন্সি পেয়ে যান! তারপরেও যদিও নিস্তার নেই -কন্ডোম থেকে প্রতিযোগী স্পার্মদের কাছে হেরে যাওয়ার ট্রাবলটা এক্সট্রা! আমি বাপু মরে যাওয়ার পর এত ঝামেলার মধ্যে যেতাম না ! তবে এই সুমহান তত্ত্বটার জন্য উনাকে গোবেল প্রাইজ অবশ্যই দেওয়া উচিত ছিল! ভাবতে অবাক লাগে জাকির নায়েক, অনুকুল ঠাকুর টাইপের লোকগুলো ধর্মীয় বাঙালী মধ্যবিত্তের মধ্যে জনপ্রিয় গুরুস্থানীয় চরিত্র। এই ব্যপারটা বোঝার জন্য যথেষ্ট আসলেই সংখ্যাগরিষ্ট বাঙালী কতটা অশিক্ষিত এবং অজ্ঞানের অন্ধকারে ডুবে আছে! (৪) কেও যদি ভাবেন শরিয়া এবং ইসলাম ভয়ংকর নারী বিরোধি-তারা অনুকুল ঠাকুরের “নারী” জাতির প্রতি উপদেশ পড়ে দেখতে পারেন! আমি দুয়েকটা মণিমানিক্য তুলে দিচ্ছি —মন্তব্য নেই কারন আমি সত্যই বাকরুদ্ধ! ” এক মা জিজ্ঞাসা করলেন, স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করা সত্ত্বেও স্বামী যেখানে স্ত্রীর সঙ্গে দূর্ব্যবহার করে, সেখানে স্ত্রীর কী করবে? শ্রীশ্রীঠাকুর- ঐ কথাই তো বলছিলাম। প্রকৃতিগত সামঞ্জস্য দেখে বিয়ে না দিলে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই জীবন বিধ্বস্ত হ’য়ে যায়। তুমি তোমার ধারনা অনুযায়ী হয়তো ভাল ব্যবহার করছ, কিন্তু স্বামীর হয়তো অনুযোগ- আমি যা চাই, আমি যা পছন্দ করি, আমার স্ত্রী কিছুতেই তেমনভাবে চলে না, সে তার নিজের খেয়ালমত চলে, আমি তাকে নিয়ে আর পারি না। বড়জোর হয়তো বলবে, আমার স্ত্রী এমনি ভাল মানুষ, কিন্তু আমি কিসে খুশি হই, আমি কিসে ভাল থাকি, তা সে বোঝে না। তার নিজের এক ধরণ আছে, সেই ধরনে চলে। আমি বহু ক্ষেত্রে দেখেছি, স্ত্রীর মত স্ত্রীও খারাপ নয়, স্বামীর মত স্বামীও খারাপ নয়। উভয়েই ভাল মানুষ বলে সুনাম আছে বাইরে। সবার সঙ্গেই তাদের ব্যবহার ভাল, কিন্তু উভয়ের মধ্যেই আর কিছুতেই বনিবনা হয় না। বিয়ে থাওয়ার এমনতর গরমিল যদি কোথাও ঘটে গিয়ে থাকে, সেখানে স্বামী-স্ত্রীর প্রকৃতিটা বুঝতে চেষ্টা করা উচিত এবং স্বামীর যাতে ভাল লাগে ও ভাল হয় নিজের ব্যবহার সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করা উচিত। একটা জ্যান্ত মানুষের সাথে ব্যবহার করার সব সময় স্মরণ রাখা উচিত, আমি ইট, কাঠ বা পাথরের সঙ্গে ব্যবহার করছি না। যার সঙ্গে ব্যবহার করছি তার একটি রুচি আছে, প্রকৃতি আছে , মেজাজ আছে, ধরণ আছে। বদ্যি যেমন নারী টিপে ধাত বুঝে ওষুধ দেই, মানুষের সঙ্গে ব্যবহারের দাওয়াইও তেমনি ধাত বুঝে প্রয়োগ করতে হয়। এক কথায় মানুষের মন-মেজাজ বুঝে চলতে হয়। এমনটি যদি না চলতে পার তবে তোমার ভালর ধারণা নিয়ে আবদ্ধ হ’য়ে থাকলে তুমি কিন্তু কখনও মানুষের মন পাবে না। শুধু স্বামীর সঙ্গে ব্যবহারেই এমনতর নয়। প্রত্যেকের সঙ্গে ব্যবহারেই চোখ, কান, মন খোলা রেখে চলবে। নজর করবে, কে কখন কী অবস্থায় আছে। তাই বুঝে তখন যা বলার বলবে, যা’ করার করবে। তুমি হয়তো মনে করে রেখেছ, স্বামীর কাছে সংসারের একটা প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য আবদার করবে। স্বামীর মন কেমন তা লক্ষ্য না করে, তুমি তোমার চিন্তার সম্ভেগ অনুযায়ী এমন সময়ই হয়তো কথাটা তাকে বললে যখন তার মন নানা সমস্যায় ভারাক্রান্ত। তখন সে তো চটবেই। আবার, তুমিও বলবে, আমি তো নিজের জন্য কিছু চাইতে যাইনি, সংসারের জন্য দরকার, সেই দরকারী জিনিসের কথা বলতে গিয়ে কত কথা শুনলাম। যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা। আমার ভাল কথাটাও তোমার গায়ে সয় না। এই বেধে গেল আর কি লাঠালাঠি। পরস্পর হিসাব করে না চলার দরুন অনেক গোলমালের সুত্রপাত হয়। মেয়েদের বিশেষ বিশেষ শারীরিক অবস্থায় বিশেষ-বিশেষ মেজাজের সৃষ্টি হয়, সেটা হলো সাময়িক ব্যাপার এবং শারীরিক অবস্থার সাথে জড়িত। পুরুষ ছেলের এটা সম্পর্কে যদি কোন জ্ঞান না থাকে এবং তখনকার স্বাভাবিক বৈলক্ষণ্যের দরুন যদি অযথা শাসন করতে যায়, তাহলে কিন্তু হিতে বিপরীত ঘটে। আবার, স্বামী হয়তো ফিটফাট থাকতে পছন্দ করে, কিন্তু স্ত্রী হয়তো অগোছাল, অপরিচ্ছন্ন রকমে চলতে অভ্যস্ত। সেখানে স্ত্রীর ঐ চলনে স্বামীর তো অসন্তুষ্ট হবার কথাই। মা-টি অকপটে বললেন, আমার ঐ দোষটি আছে। শ্রীশ্রীঠাকুর: দোষ যদি বুঝে থাকিস, তবে সেরে ফ্যাল্। যা করলে শরীর- মনের পক্ষে ভাল হয়, ছেলেপেলে ভাল থাকে, স্বামীরও মনোরঞ্জন হয়, তা তো করাই লাগে। স্বামীর কাছে যত সময় নত থাকবি। যুক্তি তর্ক দিয়ে কারো মন জয় করা যায় না। তোর যদি কখনও মনেও হয় যে, স্বামী তোর সঙ্গে অকারণ দূর্ব্যবহার করছে, তাও বলবি, আমি কথাটা বলতে চেয়েছিলাম ভাল, কিন্তু ভাল করে বুঝিয়ে বলতে না পারায় তোমার অশান্তির কারণ হয়েছি। ত্র“টি আমারই। এইরকম যদি করতে পারিস তাহলে দেখতে পাবি, স্বামীর সব রাগ গলে জল হয়ে যাবে। একটা জায়গায় কেবল স্বামীর বিরুদ্ধে দাড়াতে পারিস, অর্থাৎ যদি দেখিস, স্বামী তাঁর মা- বাবা বা গুরুজনের সঙ্গে অসমীচিন ব্যবহার করছে, সেখানে কখনও কিন্তু স্বামীর পক্ষ সমর্থন করতে যাবি না, শ্বশুর-শাশুড়ীর পক্ষ হয়ে সেখানে ন্যায্য প্রতিবাদ করবি। স্বামীর মঙ্গলের জন্যই এটা করা দরকার। অনেক স্ত্রী তাদের স্বামীকে তাদের গুরুজন ও আপনজন হতে বিচ্ছিন্ন করে নিজেদের আঁচলধরা করে রাখতে চায়। ভাবে, আমরা স্বামী-স্ত্রী ছেলেপেলেদের নিয়ে সুখে থাকতে পারলে হলো, আর চাই কী? কিন্তু এত যে স্বামীর প্রতি ও নিজের প্রতি শত্র“তা করা হয়, এ-কথাটা বোঝে না। স্বামীর প্রতি শত্র“তা এদিক দিয়ে যে, স্বামী যাদের নিয়ে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা , প্রীতি, দায়িত্ব ও কর্ত্তব্যহীন করে তুললে সে ধীরে ধীরে অমানুষ হয়ে পড়ে, তার জগৎটা হয়ে যায় সংকীর্ণ; কারণ, যে নিজের মা, বাপ, ভাইবোনকে ভালবাসতে পারে না, তাদের প্রতি কর্ত্তব্য করতে পারে না, সে দেশ ও দশকে ভালবাসবে, তাদের জন্য করবে, এ একটা মিছে কথা। অমনতর যারা, তারা বড়জোর তথাকথিত politics (রাজনীতি)করতে পারে নাম- চেতানর জন্য, স্বার্থ-সিদ্ধির জন্য। অন্তরের আসল বিস্তার তাদের কিছুই হয় না। আর, তাদের আত্মপ্রসাদ বলেও কিছু থাকে না। যাদের খুশি করে, যাদের আশির্বাদ ও প্রসাদ লাভ করে মানুষ বড় হবার প্রেরণা পায়, তাদের প্রতি টানই যদি ছিঁড়ে যায়, তবে তার সম্বল কি রইল জীবনে তা তো বুঝি না। ওভাবে রিক্ত ও নিঃসম্বল হয়ে করে দিল যে তাকে মনোজগতে, তার প্রতি একদিন তার আক্রোশ আসাও অসম্ভব না। তখন ঐ স্ত্রীকে হয়তো সে দুচক্ষে দেখতে পারে না। ভাবে, ঐ ডাইনী আমার সর্বনাশ করেছে। আমার মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন সকলের থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে আমাকে। আমার সাজানো বাগান শুকিয়ে ফেলেছে। ও আমাকেও চায় না। ও চায় আমাকে দিয়ে ওর নিজের খেয়াল পূরণ করতে। এটা প্রকারান্তে নিজের প্রতি শত্র“তা নয় কি? তাছাড়া, যে ছেলেপেলেদের সুখসুবিধার দিকে চেয়ে অমন করে, তাদেরও কি ভাল হয়? যে সঙ্কীর্ণ স্বার্থপরতার দীক্ষা তাদের দেয়, তার ফলে তারাও তো পরস্পরকে ভালবাসতে শেখে না। কালে-কালে তারাও তো মা- বাবা ও ভাই-বোন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। যেমনতর বীজ বোনা যায়, তেমনতর ফলই তো ফলবে। তখন হয়তো দেখবে, তোমার একটি ছেলে চর্ব্য, চোষ্য, লেহ্য, পেয় খাচ্ছে আর একটি ছেলে পথে-পথে না খেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিন্তু সে তাকে এক মুটি ভাতও দিচ্ছে না। দিতে চাইলেও তার স্ত্রীর ভয়ে পারছে না। এই অবস্থা দেখলে তোমার কি ভাল লাগে? কিন্তু এই অবস্থাটার তো সৃষ্টি করলে তো তুমি। মা-টি সঙ্কুচিত হয়ে বললেন, ঠাকুর! আপনি আর বলবেন না, শুনে বড় ভয় করে। মেয়ে মানুষ বোকা জাত, তাদেরই কি যত দোষ? মেয়েমানুষ ভূল করে যদি স্বামীকে তার বাপ-মার থেকে নিজের দিকে টানতে চায়, তাহলেই স্বামীও কি সেই ভূলে সায় দেবে? শ্রীশ্রীঠাকুর তা তো দেওয়া উচিতই নয়। পুরুষেরই তো দায়িত্ব বেশী। সেই তো তার পিতৃভক্তি ও মাতৃভক্তির দৃষ্টান্তে স্ত্রীকে তাদের প্রতি আরো শ্রদ্ধাপরায়ণ করে তুলবে। যেখানে স্বামীর অতখানি দৃঢ়তা ও পৌরুষ নেই, সেখানে সতী স্ত্রীর অনেকখানি করণীয় আছে। সে যদি স্বামীর ভালই চায়, তবে তাই করবে যাতে স্বামীর মঙ্গল হয়। স্বামী যদি তার মা- বাবার প্রতি কর্ত্তব্যচ্যুত হতে চায়, সে বরং তখন কলেকৌশলে চেষ্টা করবে যাতে বাপ-মার প্রতি তার টান বাড়ে এবং আবেগভরে সে তাদের সেবাযতœ করে। মানুষের অন্তরে শ্রদ্ধা, ভক্তি, প্রীতি ইত্যাদি বাড়াবার জন্য অনেক সময় দূতীগিরি করতে হয়। স্ত্রী হয়তো স্বামীকে বলল, বাবা-মা তোমাকে খুব ভালবাসেন। বলেন ও রাগধাগ করলে কি হয়? মন ওর খুব ভাল। বাইরে আধিক্যেতা নেই। কিন্তু সকলের প্রতি অনেক টান। আবার, শ্বশুর-শাশুড়ীর কাছে হয়তো বলতে হয়, উনি আমাকে সবসময় বলেন, আমার কিছু করা লাগবে না তোমার। তুমি সব সময় দেখবা, বাবা-মার যাতে কোন কষ্ট না হয়। এইভাবে যদি কৌশলে দূতীগিরি করা যায়, তাহলে পরস্পরের মধ্যে শ্রদ্ধা, প্রীতি, ভাব-সাব গজিয়ে দেওয়া যায়। এই তো সতী স্ত্রীর কাজ, লক্ষ্মী বৌয়ের কাজ। গড়া সংসার ভাঙবে না সে, ভাঙা সংসার গড়বে সে, জোড়া লাগাবে সে। মায়েদের তুই বোকা বলিস? বোকা হলে কখনও সন্তান পেটে ধরে মানুষ করে তুলতে পারে? দে তো একটা ব্যাটাছাওয়ালের কাছে একটা মা হারা শিশুকে মানুষ করার ভার। প্রায়ই হাগে- মুতে একসা করে ফেলবেনে। কিন্তু মায়েরা কেমন অনায়াসেই করে তা। তাই নিজেদের কখনও ভাববি না। তোরাইতো বুদ্ধিস্বরুপিণী, লক্ষ্মীস্বরুপিণী, দূর্গতিনাশিনী, দুর্ম্মতিদলনী দূর্গা। তোরা আছিস, তাই তো আমাদের আগলে রেখেছিস। নইলে আমাদের উপায় ছিল কী? [তথ্যসূত্র: আলোচনা প্রসঙ্গে, ৬ই কার্তিক, শুক্রবার, ১৩৪৯ (ইং ২৩/১০/১৯৪২)] এবার উনার নারীবাদি তত্ত্বগুলি সাজিয়ে নিন নিজেদের ভালোর জন্য নারীর স্বীকার করা উচিত তারা হীনবুদ্ধির জীব স্বামী অত্যাচার করলে, বকলে, ভুল ব্যবহার করলেও তা মেনে নিতে হবে -কারন লং টার্মে তা সংসারের জন্য ভাল “যুক্তি তর্ক দিয়ে কারো মন জয় করা যায় না। তোর যদি কখনও মনেও হয় যে, স্বামী তোর সঙ্গে অকারণ দূর্ব্যবহার করছে, তাও বলবি, আমি কথাটা বলতে চেয়েছিলাম ভাল, কিন্তু ভাল করে বুঝিয়ে বলতে না পারায় তোমার অশান্তির কারণ হয়েছি। ত্র“টি আমারই। এইরকম যদি করতে পারিস তাহলে দেখতে পাবি, স্বামীর সব রাগ গলে জল হয়ে যাবে। ‘ নিজেদের সংসার এবং সন্তান ছাড়া নারীর আর কোন কাজ নেই , জীবনের আর কোন উদ্দেশ্য নেই সব সময় স্বামীর মন ও মেজাজ বুঝে চলতে হবে-তবে সে সার্থকনামা স্ত্রী!

অনুকূলচন্দ্রের কিছু অজানা তথ্যঃ ১)উঁদোর পিন্ডি বুঁদোর অন্দরে "শ্রীশ্রী ঠাকুর হাসতে হাসতে বললেন ➖ কত অশৈলি কাণ্ড যে করছি, মনে পড়লে হাসি পায়। সামনে দিয়ে শিয়াল যাচ্ছে, শিয়ালের মধ্যে ঢুকে গেলাম, তখন আমিই শিয়াল হয়ে গেছি। মনে হ'লো-- রসগোল্লা খেয়ে আসি। পা দিয়ে বের ক'রে রসগোল্লা খেলাম। যা” ভাবছি শিয়াল তাই করছে। মনে হচ্ছে আমি খাচ্ছি। একদিন শকুনের সামিল হয়ে গেলাম। মনে হচ্ছে যেন শকুন হয়ে মরা খাচ্ছি। স্বাদটা পরিষ্কার টের পাচ্ছি। হটাৎ মনে হ'ল--এখনই যদি মরে যাই তবে শকুন হয়ে যাব। নিজেকে ফিরিয়ে আনলাম" । (আঃ প্র: ১৮/১৮-১১-১৯৪৯) দ্যাখেন দেকি অনুকূলের কান্ড ভাগাড়ের মরা খেতে শকুন হয়ে গেলেন, ভাগ্যিস তিনি গত হয়েছেন নইলে কার মধ্যে ঢুকে যে কিসের স্বাদ নিতেন তা ভেবেই শঙ্কিত হচ্ছি | ২) ন্যাংটো বিষ্ণুর আবির্ভাব "শ্রীশ্রী ঠাকুর ➖ কোন্‌ সময় থেকে যে হুজুর মহারাজের ছাপ আমার যা পড়েছে, আমি নিজে ঠিক জানি না। পৈতার পর হুজুর মহারাজ এসে স্বপ্নে ভজন দিয়ে গেলেন। সরকার সাহেবের দর্শন যখনই পেয়েছি, সেসঙ্গে হুজুর মহারাজ থাকতেনই। ন্যাংটো অবস্থায় বিষ্ণুমুর্তির আবির্ভাব হলো।সে এক অদ্ভুত ব্যাপার। আমি আর সুরেন সান্যাল একসঙ্গে শুয়েছিলাম। অন্ধকার রাত। তখনও ঘুম আসেনি। হঠাৎ বিষ্ণুমুর্তির আবির্ভাবে তার রূপের আলোয় ঘর আলোময় হয়ে গেল। বারবার দেখলাম সেই অপরূপ মোহন মূর্তি। কানের কুস্তলটা নড়ছে, সেটা এখনও চোখে ভাসে। বারবার বললাম তুমি যদি সত্য হও, একবার হাত নাড়। তখন হাত নাড়লেন। জাগ্রত, জীবন্ত মুর্তি, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই"...(আঃ প্র: ১৫/ ৪-৩-১৯৪৯) অনেকগুলো প্রশ্নের মাঝে একটা প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায় বিষ্ণুদেব কোন রাজকার্যে ব্যস্ত ছিলেন যে তৎখনাৎ তাকে ন্যাংটো হয়েই অনুকূলকে দর্শন দিতে হোলো | এই ন্যাংটো বিষ্ণুর অনুকূলের দিকে হাত নাড়াকে বৈষ্ণবরা কি চোখে দেখছেন জানিতে মুঞ্চায় | ভগবান বিষ্ণুর ন্যাংটো প্রসঙ্গে আমার একটা নিজস্ব থিওরি আছে সেটা হলো হয় সেইসময় বিষ্ণুদেব শঙ্খচূড়ের পত্নী তুলসীকে ধর্ষণে ব্যস্ত ছিলেন (ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ, ১৩৬ পৃষ্ঠা ,সুবোধচন্দ্র মজুমদারের অনুবাদ) নতুবা তিনি জলন্ধর পত্নী বৃন্দাকে ধর্ষণ করিতে উদ্দত ছিলেন (স্কন্দ পুরাণ/বিষ্ণুখণ্ড/ কার্ত্তিক মাসের মাহাত্ম্য কথন/ ২০/২২-৩১) ৩)নারীদের ব্যাপারে দ্বিচারিতা "শ্রীশ্রী ঠাকুর ➖ (সরাসরি কোন উত্তর না দিয়ে গল্পচ্ছলে) বললেন -- ছোট বেলায় আমি আরো foolish (নির্বোধ) ছিলাম.... মার সঙ্গে কথা বলার সময়ও মনে হতো মা আমার কথা বুঝতে পারছে কিনা কি জানি। এমন সময় একদিন শুনলাম একবাড়ীতে এক মায়ের একটি ছেলে হয়েছে। তাই শুনে হাপ ছেড়ে বাঁচলাম। বুঝলাম ছেলে ও মেয়ে দুইই মেয়েদের পেটে হয়। তা হলে তারা নিশ্চয়ই সবাইকে বোঝে তখন মেয়েদের প্রতি অসীম শ্রদ্ধা হলো, একটা awe (ভক্তিসমন্বিত ভয়) মেয়েদের প্রতি এখনও আমার আছে! মনে হয় ---She is the way to heaven (A স্বর্গের পথ)" (আঃ প্র: ১০/ ৮-১-১৯৪৮) ঐ স্বর্গের পথকেই উনি আবার সেবাদাসী বানিয়ে ছাড়লেন আসুন নারীর নীতি গ্রন্থে উনি কি বলছেন দেখি " দুর্ব্বলে একাধিপত্য করার চাইতে শক্তিমানের দাসী হওয়া শ্রেয়ঃ মনে করে--- আর, এইটি নারীর প্রধান, বৈশিষ্ট্যের একটা ; " এখানে দুর্ব্বল বলতে উনি বোঝাচ্ছেন অপেক্ষাকৃত নীচু বংশের পুরুষের কথা,আর শক্তিমান হচ্ছে নারীর থেকে উচ্চবংশের পুরুষ যার কাছে দাসী হয়ে থাকাটা অনুকূলের কাছে শ্রেয় কি সাংঘাতিক কদর্য ভাষা একবার ভেবেই দেখুন | এরপর উনি বলছেন-- " আর যদি সমাজের উন্নতি চাই তবে যাহাতে সবলের বহু উৎপত্তি হয় তাহাই শ্রেষ্ঠ এবং শ্রেয়ঃ" | (নারীর নীতি পৃষ্ঠা-- ১৪৫) এখানে সবলের বহু উৎপত্তি বলতে পুরষের বহুবিবাহের কথা বলছেন এতেই নাকি সমাজের উন্নতি হয় ভাবুন একবার | এছাড়াও নারীর নীতি বইয়ের ১৩৮ পৃষ্ঠায় সরাসরি পুরষের বহুবিবাহের কথা বলছেন কোন সৎসঙ্গী অস্বীকার করতে পারবেন না | ৪)চাঁদে গাছ,বসবাসযোগ্য সূর্য "২৪শে জুন,১৯৬৫ । সত্যদা ঠাকুরকে প্রণাম করে বসলেন। সূর্য ও চাঁদ নিয়ে কথা উঠল। শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন ➖ আমার মনে হয় চাঁদে গাছ-টাছ আছে। গাছগুলি চিকন। এখানকার মত মোটা নয়। অনেকটা সুপারী গাছের মত।সূর্যের মধ্যে অনেক বড়-বড় গহ্বর(cave)।অনেক বড় গহ্বর । সেখানে সেখানকার মত মানুষ-টানুষ বসবাস করবার(করতে)পারে।গাছপালা আছে...।সূর্যের মধ্যে গহ্বর আছে।বায়ুমন্ডলের সংঘাত আছে এবং এই সংঘাতের দরুন যা ফল হবার তাই হচ্ছে।সূর্যটা melted(গলিত)হয়ে যেত, যদি বেশি heat(উওাপ)থাকত। সূর্যে আগুন আছে।তবে অত আগুন নাই । মনে হয় habitable(বসবাসযোগ্য)।আর বসবাসযোগ্য বলেই তা সহনীয়"... (স্মৃতির মালা - পৃষ্ঠা-৭০ লেখক- মণিলাল চক্রবর্তী ) দেখেন আহাম্মকটা কি কয় --- a) চাঁদে থাকে চিকন গাছ b) সুর্যে অত আগুন নাই c) সুর্য্যটা নাকি বসবাসযোগ্য

"অনুকূল চক্রবর্তী নিজে যত না ভন্ড ছিলেন, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভন্ড তার বংশ। ভন্ডামিকে নতুন মাত্রা দিতে অনুকূল চাঁদের সুপারি গাছ অবধি খালি চোখে দেখতে পেতেন আর ওনার ভন্ডাংশ অনুকূলকে ভগবান প্রমান করতে নিরন্তর চেষ্টা করে চলেছে। যদিও ভগবান হতে গেলে পায়ে ছয়টা করে আঙ্গুল থাকতে হয় তা কোনো বেদ বা পুরাণে লেখা আছে বলে আমার জানা নাই।

দুটো ছবি দিলাম, প্রথমটা অনুকূলের পায়ের ছাপ যা দেওঘর আশ্রমের মিউজিয়ামে একটা পায়ের ছাপ হিসেবে সংরক্ষিত আছে আর দ্বিতীয়টা যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনে "অনুকূল ঠাকুর" লিখে সার্চ করলেই পাওয়া যায়।

দেখুন আর ভাবুন। তারপর বলুন দেখি এই ধরণের ঠগ জোচ্চোর কে সভ্য সমাজে থাকতে দেওয়া উচিত?

নারীর নীতি
 নারী কেমনতর চলনায় চললে সংসার শান্তিময় হয় তারই অপূর্ব নির্দেশ পরম প্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর এই গ্রন্থে দিয়েছেন।



 সত্যানুসরণ (SATYANUSARAN)
গীতার ন্যায় এরূপ একটি গ্রন্থ যা সকল ধর্মের মানুষের নিত্যপঠনীয় হওয়া উচিত। পরম প্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র গ্রন্থ রচনার উদ্দেশ্যে এই গ্রন্থটি রচনা করেন নি। শ্রীশ্রীঠাকুরের অন্যতম প্রিয় ভক্ত অতুলচন্দ্র ভট্টাচার্য্য ছিলেন শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মভূমি হিমায়েতপুর এর পার্শ্ববর্তী বাজিতপুর-ঘাট স্টীমার স্টেশনের স্টেশন মাস্টার। অবসর পেলেই তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের সঙ্গ করতেন এবং ব্যক্তিগত নানা সমস্যার বিষয়ে শ্রীশ্রীঠাকুরের পরামর্শ নিতেন। একসময় অতুলচন্দ্রের অন্যত্র বদলীর আদেশ এলে তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরকে কিছু উপদেশ বাণী লিখে দিতে বলেন যার সাহায্যে তিনি বাধাহীনভাবে চলতে পারেন এবং শান্তি ও কল্যাণের অধিকারী হতে পারেন। অতুলচন্দ্র ভট্টাচার্যের সবিনয় অনুরোধে শ্রীশ্রীঠাকুর এক রাত্রিতে একাসনে একটি খাতায় উপদেশ লিখে দেন। ঘটনাটি ছিল বাংলা ১৩১৬ সালের এবং তখন শ্রীশ্রীঠাকুরের বয়স ছিল মাত্র ২২ বৎসর। পরবর্তীকালে অতুলচন্দ্র ভট্টাচার্যের কাছ থেকে খাতাটি পেয়ে “সত্যানুসরণ” নাম দিয়ে বাংলা ১৩২৫ সালে প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। পরবর্তীকালে নতুন সংস্করণগুলোতে শ্রীশ্রীঠাকুরের আদেশে আরও অনেক বাণীর সংযোজন হয় গ্রন্থটিতে। 
অতুলচন্দ্র ভট্টাচার্য্য স্বশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণীয়; অতুলচন্দ্র ভট্টাচার্য্য’র আকুল প্রার্থনার দরুণ সর্বসাধারণ জীবনপথের পরম পাথেয় শ্রীশ্রীঠাকুরের অমৃত নিষ্যন্দী স্বতঃ উৎসারী বাণী পেয়েছে যা যুগ যুগ ধরে সঞ্জীবিত করে রাখবে প্রতিটি মানুষকে।  সত্যানুসরণ ইংরেজি, হিন্দী, ওড়িয়া, অসমীয়া, বড়ো, নেপালি, মারাঠী, গুজরাটী, তেলেগু, ঠাড়, সাঁওতালী, মণিপুরী, খাসি, তামিল প্রভৃতি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

অনুকূলচন্দ্র রচিত গ্রন্থসমূহঃ

অনুশ্রুতি
 লোকচরিত্র, বৃত্তিনিয়ন্ত্রণ, কৃষি, শিল্প, ব্যবসায়, রাজনীতি, শিক্ষা, দারিদ্র্য, সমাজ, বিবাহ, দাম্পত্য-জীবন, স্বাস্থ্য, ধর্ম, সাধনা ও আর্য্যকৃষ্টি প্রভৃতি বিষয়ে ছড়ার আকারে শ্রীশ্রীঠাকুরের বিচিত্র অমোঘ বাণীগুলো এই গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে।
গ্রন্থটি মোট সাতটি (০৭) খন্ডে বিভক্ত।




আর্য্য-প্রতিমোক্ষ
পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রীঠাকুর দেওঘর আসার পর প্রদত্ত অজস্র গদ্যবাণীর সময় ও তারিখ উল্লেখসহ ধারাবাহিক সঙ্কলন। পুরুষোত্তমের লীলা-স্মৃতিউদ্দীপী ঐতিহাসিক তাৎপর্য্য-সমন্বিত পুণ্যগ্রন্থ। গ্রন্থটির মোট খন্ড ২৪ টি।
২০০৪ সালের তথ্যানুযায়ী ‘আর্য-প্রতিমোক্ষ’ গ্রন্থটির মোট খন্ড ২৪ টি। তবে এখন সম্ভবত গ্রন্থটি ০৩ টি খন্ডে বিভক্ত।




শিক্ষা-বিধায়না
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য, মনোযোগ আনার উপায়, ভাষা ও শব্দের উৎপত্তি, নারী-শিক্ষা, প্রকৃত ছাত্র, শিক্ষকের দায়িত্ব ও কর্তব্য, বেদপাঠের তাৎপর্য্য, রচনার পঞ্চপ্রাণ ইত্যাদি অতি প্রয়োজনীয় বিষয়সমূহের আকরগ্রন্থ।



নিষ্ঠা-বিধায়না
নিষ্ঠা মানুষের জীবনের মূল্য। এই নিষ্ঠা-সম্বন্ধীয় বাণীগুলি রয়েছে এই গ্রন্থে।



আদর্শ বিনায়ক
গুরু, আচার্য্য, ইষ্ট, অবতার, প্রেরিত পুরুষোত্তম সম্বন্ধীয় বাণীগুলি স্থান পেয়েছে এই গ্রন্থে।



বিজ্ঞান-বিভূতি
বিজ্ঞানের নানা বিভাগের অনন্ত সম্ভাবনা ও ইঙ্গিতপূর্ণ নানা তথ্য বিজ্ঞানের সার্থক অনুশীলন ও গবেষণার জন্য জ্ঞানেন্দ্রিয়ের বোধবিচার-সমন্বিত ব্যবহার আর মানসভূমির আদর্শনিষ্ঠাজনিত সাম্যভাব ইত্যাদি বিষয়ের যুুক্তিসিদ্ধ আলোচনা রয়েছে এই গ্রন্থে।



সংজ্ঞা-সমীক্ষা
ধর্ম, দর্শন, সংস্কৃতি, সমাজ, রাষ্ট্র, ব্যবহারিক-জীবন, ইত্যাদির সঙ্গে সম্পৃক্ত বহু বিষয়ের মূল তাৎপর্য্য, অভিধেয় ও তত্ত্ব-দ্যোতনার অপূর্ব উদঘাটন।



দর্শন-বিধায়না
ঈশ্বর, আত্মা, ব্রহ্ম, সত্তা, সাকার, নিরাকার, মুক্তি, মোক্ষ ইত্যাদি বিষয় সম্বন্ধে বাস্তবতা-সম্মত ও যুক্তিসিদ্ধ ব্যাখ্যা রয়েছে এই পুস্তকে।


বিকৃতি-বিনায়না

অহঙ্কার, গর্বেপ্সা, হীনম্মন্যতা, স্বার্থান্ধতা, পরশ্রীকাতরতা, বিশ্বাসঘাতকতা, কৃতঘ্নতা প্রভৃতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে এই গ্রন্থে।


চর্য্যা-সূক্ত
কর্মীদের অবশ্যপালনীয় সংগঠন বিষয়ক নীতি সম্বন্ধে শ্রীশ্রীঠাকুর-প্রোক্ত সুবচন।


শাশ্বতী

সূত্রাকারে গ্রথিত জীবন-চলনার শাশ্বত-নীতিমালা।


সম্বিতী
চলার সাথী পিডিএফ
বিষদ বিবরণ ও বিশ্লেষণযোগে মানবজীবনের জটিল সমস্যাগুলির চরম সমাধান।


আচার-চর্য্যা

প্রাত্যহিক জীবনে অভ্যাস-ব্যবহার, আচার-আচরণ, কথাবার্ত্তা, চিন্তাচলন ইত্যাদির সত্তাপোষণী বিনিয়োগের ভিতর দিয়ে কিভাবে ত্রটিহীন অখন্ড জীবনের অধিকারী হওয়া যায়, তার অমিয় সঙ্কেত।


ধৃতি-বিধায়না

এই গ্রন্থপাঠে ধর্ম্মের প্রকৃত তাৎপর্য্য অবগত হওয়া যাবে ও এ-সম্বন্ধে যাবতীয় ভ্রান্ত ধারণা দূর হবে। জানা যাবে, ধর্ম্মের যথার্থ অনুশীলন কিভাবে জীবনকে শিষ্টসুন্দর, পূর্ণাঙ্গ ও সফল ক’রে তোলে।


প্রীতি-বিনায়ক

প্রেম-প্রীতির বৈশিষ্ট্য, প্রকারভেদ, বিকৃতি-ব্যতিক্রম এবং তাদের নিরাকরণ, নিষ্ঠা, ভক্তি, বিশ্বাস, শ্রদ্ধা প্রভৃতি বিষয়ের চমৎকারী বিশ্লেষণ। 
(১-২ খন্ড)


স্বাস্থ্য ও সদাচার-সূত্র

কায়িক, মানসিক, আধ্যাত্মিক শুচিতা ও সদাচারের প্রতিষ্ঠা, ব্যাধির কারণ নির্ণয় ও নিরসনের উপায়-উদ্ভাবন এবং রোগ প্রতিষেধী ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি বিষয়ে অমোঘ নির্দ্দেশ।


যতি-অভিধর্ম্ম

যতি জীবনে পালনীয় যে-সব নীতির কথা শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন সেইগুলি স্থান পেয়েছে এই পুস্তকখানিতে।


দেবী-সূক্ত

যাতে নারী বৈশিষ্ট্য-সম্মত সুকেন্দ্রিক সাধনায় দেবীত্বে উপনীতা হ’তে পারে, কল্যাণরূপিণী ও দেবপ্রসবিনী হ’তে পারে, গৃহচর্য্যা সম্বন্ধে প্রয়োজনীয় জ্ঞান লাভ ক’রে গৃহলক্ষীর আসনে অধিষ্ঠিতা হ’তে পারে, তারই স্বর্ণ সঙ্কেত।


জীবন-দীপ্তি

শ্রীশ্রীঠাকুরের সর্বজন-মঙ্গলকর ঐক্যসন্দীপী বর্তমান প্রয়োজনপূরণী বাণী চয়নিকা।


সুরত সাকী ও শ্রীশ্রীঠাকুরের শ্রীহস্তলিপি

শ্রীশ্রীঠাকুর-বর্ণিত উৎসমুখী সুরত ধারায় গতি সন্ধানী ইঙ্গিতবাহী কাব্যগ্রন্থ।




বিধান-বিনায়ক

রাষ্ট্রের আদর্শ, উদ্দেশ্য ও কর্মপ্রণালী, রাষ্ট্রনায়কের লক্ষণ ও করণীয়, স্বাধীনতার তাৎপর্য্য,অনুশাসন রচনায় দ্রষ্টব্য গণপ্রতিনিধি নির্বাচন, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ইত্যাদি বিচিত্র প্রয়োজনীয় বিষয়-সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুরের সমাধানী বাণীগুলি এই পুস্তকে স্থান পেয়েছে।












শ্রীশ্রীঠাকুরের ভাবাদর্শের মূলকথা হল
অস্তিত্ববাদ। সব বাদের সেরা বাদ ও পরিপূরক এবং যেমন ভাবে নুকূর শিষ্যরা প্রচার করেন যে নুকূর 'বাণী'র সাথে প্লেটো-এ্যারিস্ততলের 'কথা'র মিল আছে তারা এবার বলবেন অনুকূলাপ্রাণিত হয়েই সাত্রোঁ লিখেছেন "Being & Nothingness" । 

সত্তাবাদের মূল সুর
হল-“মরো না, মেরো না, পারতো মৃত্যুকে অবলুপ্ত কর”। 

✘ একবার রাতুলপাড়ার শ্রীযুক্ত শ্রীকান্ত সরকার- মহাশয় ভয়ানক পীড়িতাবস্থায় সপরিবারে কুষ্টিয়াতে রহিয়াছেন। গুরুভ্রাতাগণ প্রাণেপণে যত্ন, শুশ্রূষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করিয়াছেন। বড়-বড় এম-বি, এল-এম-এস ডাক্তারগণ রোগীর জীবনের কোন আশা নাই বলিয়া জবাব দিয়াছেন। হোমিওপ্যাথিক মতে চিকিৎসা করিয়া আমিও কৃতকার্য্য হইতে পারিলাম না। রাত্রে মোক্তারবাবু বীরেন্দ্রনাথ রায় ও আমার কম্পাউণ্ডার শ্রীমান্ উপেন্দ্রনাথ দে রোগীর শুশ্রূষা ও প্রহরায় নিযুক্ত হইলেন। তাঁহারা খুব নাম নাম করিতেছেন ( এই সত্যনাম)। নিশীথকালে শ্রীকান্তের প্রাণপক্ষী দেহপিঞ্জর পরিত্যাগ করিল। এত রাত্রে প্রকাশ করা উচিত নয় বিবেচনায় তাঁহারা চুক করিয়া রহিলেন। পরে তাঁহারা পরামর্শ করিলেন যে, এই সত্যনামে অনেক মুমূর্ষু এবং মৃতব্যক্তি বাঁচিয়া গিয়াছে। ইহাকে নাম দ্বারা চেষ্ঠা করিয়া দেখিলে হয়। এই বলিয়া তাঁহারা প্রাণপণে নাম করিতে লাগিলেন এবং তাঁহার মুখে একটু চরণামৃত ঢালিয়া দিলেন। রজনী প্রভাত হইবার সঙ্গে-সঙ্গে শ্রীকান্ত আবার বাঁচিয়া উঠিলেন। আনন্দের আর সীমা নাই। সকলেরই যেন স্বপ্নবৎ বোধ হইতে লাগিল।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র - সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৯১) 

✘ আরেকবার হিমাইতপুরের দেবীদাস চৌধুরী মহাশয়ের পুত্র শ্রীযুক্ত হেমচন্দ্র চৌধুরী মহাশয় শয্যাগত পীড়িত। রোগযন্ত্রণায় ছটফট করিতেছেন। আমি তাঁহাকে দেখিতে গেলাম। তিনি বলিলেন- “দাদা, বড় যন্ত্রণা, কিন্তু বড় আশ্চর্য্য কথা, যখনই আমি ঠাকুরের প্রচারিত নাম করি তখনই আমার রোগযন্ত্রণার কিঞ্চিত উমশম বোধ হয়; আমি একটু শান্তি পাই। কিন্তু আমি পূর্ব্ব থেকে যে সমস্ত নাম ক’রে থাকি, তাতে কোন উপকার পাই না কেন, কিছুই বুঝতে পারি না। আবার, সে-সকল নাম ছাড়তেও প্রাণ চায় না, তাই সেই নাম করি, কিন্তু তাতে রোগযন্ত্রণার কোন উপশম হয় না, তখন পরীক্ষা করতে গিযে ঠাকুরের নাম করি, অমনি যন্ত্রণার কিছু উপশম হয়, কিছু শান্তি বোধ হয়। এইরূপ আজ তিনদিন অনেকবার পরীক্ষা ক’রে বুঝলাম-ঠাকুরের নামই সর্বশ্রেষ্ট শক্তিমান নাম বটে। প্রথম মনে করেছিলাম, আমার মা ঐ সত্যনাম করেন তাই তাইতে বোধহয় আমার মনের এই অবস্থা, কিন্তু বাস্তবিক পরীক্ষা ক’রে দেখলাম তা’ নয়, ঐ নামের খুব শক্তি বটে।’’ আমি তাঁহার মন পরীক্ষা করিবার জন্য বলিলাম- “যদি এ –কথা সত্য হয় তবে এই ঘটনা সত্য ব’লে নাম-স্বক্ষর ক’রে দিন।’’ তিনি অম্লানবদনে সন্তোষ- সহকারে তাহাই করিলেন। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৮৬) 

✔ যুধিষ্ঠিরের ঘটে এতটুকু বুদ্ধি ছিলো না !

✔এক মহাত্মা তো নিজের 'মন কি বাত' গোপন রাখতে না পেরে বলেই ফেলেছিলেন, "পূর্ববঙ্গের এক স্বীয়প্রচারিত ভগবানও নিজের ভক্তদের নয়, নিজেই দাঙ্গার সময় মোল্লাদের হাত থেকে 'মৃত্যুকে অবলুপ্ত করতে না পেরে' দেওঘরে পালিয়ে এসেছিলেন।" 

✘ অনেক স্থান হইতে অনেক ভদ্রাভদ্র পুরুষ-রমণী যাঁহারা কখনও তাঁহাকে দর্শন করেন নাই বা তাঁহার নাম-ধাম অথবা তাঁহার বিষয় কিছুই পূর্ব্বে শ্রবণ করেন নাই তাঁহারাও স্বপ্নযোগে শ্রীশ্রীঠাকুরকে দর্শন এবং তাঁহার প্রচারিত সাধন- প্রণালীর দীক্ষাপ্রাপ্ত হইয়াছেন এবং ইনিই তাঁহাদের একমাত্র আরাধ্য পরমপুরুষ বলিয়া জানিতে পারিয়াছেন। এইরূপ স্বপ্নদর্শনে অনেকে আকুল প্রাণে ছুটিয়া আসিয়া তাঁহার চরণে লুটিয়া পড়িতেছেন। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৭১) 

✔ কাহিনীর কোন বাস্তব ভিত্তি আছে? সাইদী যেভাবে টাকার বিনিময়ে তথাকথিত নিন্মবর্গের হিন্দুদের ও বৌদ্ধদের মুসলমান বানাত সেই কাহিনীর মত হয়ে গেল না? আর তিনি কেন গুটি কয়েক মানুষকে স্বপ্নে দীক্ষা দিলেন? সবাইকে কেন এভাবে দীক্ষা দিলেন না? নাকি সাইদীর মত টাকার বিনিময়ে মানুষ এইসব কাহিনী ছড়াত ? কাহিনীটা অনেকটা মোহাম্মদের শিষ্যদের সাথে মিলে যায় । 

✘অন্যান্য বালকদিগের দেখাদেখি ও কাহারও অনুরোধে(?) একদিন বালক পদ্মানদীতে ছিপে মৎস ধরিতে গিয়াছিলেন। তাঁহার ছিপে একটা বড় মাছ ধরিল। মাছ ধরা পড়িয়া কষ্ট পাইল বা মরিয়া যাইবে মনে করিয়া তিনি কাঁদিয়া আকুল হইলেন। মাছ ছাড়াইয়া বাঁচাইয়া দিবার জন্য উপস্থিত লোকদিগকে সকাতরে অনুরোধ করিতে লাগিলেন। তখন তাহারা মাছটি ছাড়াইয়া জলে ছাড়িয়া দিলে শান্ত হইলেন। আর কখনও সে-কার্য্য করেন নাই। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা৪২) 

✔অনুকূল ভক্তরা দাবি করেন, তাদের গুরু ভগবান এবং তিনি মানুষরূপে এসেছেন পাপীদের উদ্ধার করতে ! তার প্রতিটি বাণীতে নাকি জ্ঞান ঝরে পড়ে ! আচ্ছা এত জ্ঞানী গুণী মানুষ অথচ মাছ ধরার আগে কি মনে ছিল না যে ছিপ দিয়ে ধরলে মাছটি ব্যাথা পাবে? 

✘একদিন বলিলেন- “পূর্ব্বে মাছও খেয়েছি কিন্তু তাতে সাধনার ফল ভাল হয় নাই। তাই লোককে মাছ-মাংস খেতে নিষেধ করি। মাছ-মাংস খেলে ধ্যানের জ্যোতিঃ স্পষ্ট দেখা যায় না, ধোঁয়া দেখা যায়। স্মৃতিশক্তির বিঘ্ন হয়। স্ফূর্ত্তির হানি হয়। আমি দেখতাম-আমিষ খেলে আমার স্মৃতিশক্তি কম হ’ত। আমিষ খাওয়ার ফলে স্বপ্নে ও ধ্যানে দুষ্ট-বিষয় ঠিক- ঠিক মনে থাকে না। আমিষে রিপুর উত্তেজনা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। স্তত্ত্বিক- আহারে মানুষ দীর্ঘায়ু হয়। সাত্ত্বিক- আহারে মানুষ দীর্ঘায়ু হয়।’’ (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৭২) 

✔আমিষ খেলে যদি আয়ু কমে তবে, ভারতে ৪২% নিরামিষভোজী থাকা স্বত্তেও কেন আমিষভোজী আমেরিকানদের গড় আয়ু ভারতীয়দের চাইতে বেশী? প্রায় অর্ধেক নিরামিষভোজী ভারতীয়দের গড় আয়ু ৬৬.২১ বছর! আর মাংসাশী আমেরিকানদের গড় আয়ু ৭৮.৭৪ বছর ! 
http://matadornetwork.com/trips/5-best-countries-world-vegetarians/?single=1 

বাটীর ভৃত্য কোন দূরবর্ত্তী স্থান হইতে কতকগুলি নারিকেল মস্তকে বহন করিয়া আনিতেছিল। পথিমধ্যে তাহার বড় কষ্ট হেইতেছে দেখিয়া বালক নিজসম্তকে নারিকেলের বোঝা বহন করিতে লাগিলেন। কিছুদূর গমন করতঃ ক্লান্ত হইয়া বলিলেন- “আর তো পারি না”।এমন সময় তিনি দেখিলেন, শ্রী শ্রী কালীমাতা তাঁহার বোঝা মস্তক উচ্চ করিয়া বহন করতঃ লইয়া যাইতেন। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৪১) 

✔এই ঘটনার বাস্তব কোন ভিত্তি আছে? ঘটনাটি কে দেখেছে তা কিন্তু লেখক উল্লেখ করেন নি ! যদি ঠাকুরই হবে তবে বোঝা বহনে আবার কষ্ট কী ! আর এক ব্রাহ্মণ ভগবান কীভাবে অনার্য দেবী 'কালী'র সাহায্য নিল ?

✘ উক্ত শ্রীশবাবুর( শ্রীশচন্দ্র নন্দী) স্ত্রীর উদরাভ্যস্তরে আব(tumour) হইয়াছিল। ডাক্তারগণ বলিলেন- রোগ দুরারোগ্য। একদিন আকস্মিক ঘটনাবশতঃ তাঁহার ছোট কন্যার পদাঘাত লাগিয়া সেই টিউমার পেটের মধ্যেই ফাটিয়া গেল। তখন আরও ভয়ঙ্কর কাণ্ড হইয়া পড়িল। তাহাতে রোগীর পেরিটোনাইটিস্ নামক সাংঘাতিক ব্যাধি উপস্থিত হইল। তিনি মৃতপ্রায় হইয়া পড়িলেন। বড়-বড় ডাক্তার বলিলেন- “বাঁচিবার কোন আশা নাই।” সেই রাত্রেই মৃত্যু নিশ্চই স্থির হইল। শ্রীবাবুর স্ত্রীর জীবনলাভের উদ্দেশ্যে অনন্যোপায় হইয়া শ্রীশ্রীঠাকুরের নিকট প্রার্থনা-সহকারে সাধ্যানুসারে সত্যনাম করিতে লাগিলেন্ কি অদ্ভুত ব্যাপার! সেই রাত্রি হইতেই রোগী সুস্থ হইতে আরম্ভ করিয়া অত্যল্পকাল মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হইলেন। ল(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৮৯) 
✘ আরেকবার রাতুলপাড়ার শ্রীযুক্ত শ্রীকান্ত সরকার- মহাশয় ভয়ানক পীড়িতাবস্থায় সপরিবারে কুষ্টিয়াতে রহিয়াছেন। গুরুভ্রাতাগণ প্রাণেপণে যত্ন, শুশ্রূষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করিয়াছেন। বড়-বড় এম-বি, এল-এম-এস ডাক্তারগণ রোগীর জীবনের কোন আশা নাই বলিয়া জবাব দিয়াছেন। হোমিওপ্যাথিক মতে চিকিৎসা করিয়া আমিও কৃতকার্য্য হইতে পারিলাম না। রাত্রে মোক্তারবাবু বীরেন্দ্রনাথ রায় ও আমার কম্পাউণ্ডার শ্রীমান্ উপেন্দ্রনাথ দে রোগীর শুশ্রূষা ও প্রহরায় নিযুক্ত হইলেন। তাঁহারা খুব নাম নাম করিতেছেন ( এই সত্যনাম)। নিশীথকালে শ্রীকান্তের প্রাণপক্ষী দেহপিঞ্জর পরিত্যাগ করিল। এত রাত্রে প্রকাশ করা উচিত নয় বিবেচনায় তাঁহারা চুক করিয়া রহিলেন। পরে তাঁহারা পরামর্শ করিলেন যে, এই সত্যনামে অনেক মুমূর্ষু এবং মৃতব্যক্তি বাঁচিয়া গিয়াছে। ইহাকে নাম দ্বারা চেষ্ঠা করিয়া দেখিলে হয়। এই বলিয়া তাঁহারা প্রাণপণে নাম করিতে লাগিলেন এবং তাঁহার মুখে একটু চরণামৃত ঢালিয়া দিলেন। রজনী প্রভাত হইবার সঙ্গে-সঙ্গে শ্রীকান্ত আবার বাঁচিয়া উঠিলেন। আনন্দের আর সীমা নাই। সকলেরই যেন স্বপ্নবৎ বোধ হইতে লাগিল।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ৯১) 

✔ যদি সত্যনামে রোগ ভাল হয়ে যেত তবে অনুকূল ঠাকুর নিজে কেন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করতেন? আর নিজের ছোট ছেলেকে কেন ডাক্তারি পড়িয়েছিলেন? কেউ রোগাক্রান্ত হয়ে আসলে তিনি তাঁদের ওষুধের বদলে সত্যনাম দিলেই পারতেন! রোগীদের চিকিৎসার জন্য ভারতের সরকারের হাসপাতাল ও ডাক্তারদের পিছনে কোটি কোটি টাকা খরচ করতে হত না ! আমেরিকা থেকে ওষুধ আমদানির বদলে সত্যনাম রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হত ! তাই নয় কি ? দিলীপ বাবু এই নীতি শিখলে নিন্দুকদের মুখ লুকানোর জায়গা থাকবে না ।

✘কখন-কখন তাঁহাকে ভোজন করাইবার জন্য সুন্দর আসন পাতিয়া দেওয়া হইলে এবং তাঁহার সম্মুখে নানাপ্রকার চর্ব্ব- চূষ্য-লেহ্য-পেয় সামগ্রী সুসজ্জিত করিয়া দেওয়া হইলে তিনি সেই সমস্ত জিনিস দেখিয়া বিষণ্ন হইয়া অশ্রুপাত করতঃবলিয়াছেন- ‘হায়!হায়! তোমরা আমাকে ঠাকুর করেছ, আমি ছিলাম একটি বামুনের ছেলে, পরে হলেম ডাক্তারবাবু, আবার এখন তোমরা আমাকে বল ঠাকুর, আর আমার জন্য এত বহুমূল্য সুন্দর খাদ্যদ্রব্য থরে-থরে সাজিয়ে ুদয়েছ। তোমাদের কত গরীব ভাই কত স্থানে একমুষ্টি চাউলের অভাবে কত কষ্ট পাচ্ছে তা’ তো তোমরা দেখছ না।” (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা – ১০৩)

✔ যার নামের গুণে মৃত মানুষ জীবিত হয়ে যায় তার ভক্তরা কেন না খেয়ে মরবে ? শুধু নামযপ করলেই ভারত 'হাঙ্গার ইন্ডেক্সে' শীর্ষস্থানে থাকতো !

✘ কলিকাতার ৭নং দীনবন্ধু লেন-এর শ্রীযুক্ত বাবু আশুতোষ ঘোষ, বি-এ, বি-এল, মহাশয় কুচবিহারের অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট (নায়েব আহেলকার)। তিনি বিখ্যাত মহাপুরুষ স্বর্গত ঠাকুরদাস
বাবাজীর শিষ্য। নানকপন্থী। শ্রীশ্রীঠাকুরকে দর্শন করত এবং এই সত্যনাম সাধন-প্রণালী অবগত হইয়া বিশেষ সন্তোষলাভ করিয়াছেন। তিনি পুনরায় এই সত্যনামে দীক্ষিত হইবেন স্থির করিয়াছেন। কিন্তু মনে সময়ে-সময়ে একটু সন্দেহ আসিতেছে। গত ৬ই অগ্রহায়ণ রাত্রে তাঁহার নিদ্রা ভঙ্গ হইল।তখন তাঁহার অর্দ্ধনিদ্রা, অর্দ্ধজাগরণবৎ অবস্থা তিনি স্পষ্ট শ্রবণ করিলেন-তাঁহার স্বর্গীয় গুরুদেব
বলিতেছেন- “আমার মন্ত্র ফিরিয়ে দিলে আক্ষেপ নাই। যে-পথ অবলম্বন ক’রতে যাচ্ছ-তা বেশ। তাতেই মঙ্গল হবে।” এই ঘটনার পরেই তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের এই সত্যনামেই দীক্ষিত হইয়াছিলেন।(শ্রী শ্রী
ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা১৫৩)

✔ ঠাকুরের বাণীতে আছে নিজ গুরু ছাড়ার মত
ঘৃণ্য কাজ আর নাই ! যারা নিজ গুরু ছাড়ে তাদের ইহ ও পরজগৎ কোথাও ঠাঁই নাই! কোরানে বর্ণিত আছে, ইসলাম ত্যাগ করলে তার জন্য থাকবে দোজখের আগুন । নুকূ ভক্তরা কী বলছেন ?

অনুকূলের ভূত
""""""""""""

✘কুষ্টিয়ার এক গ্রামে এক বাড়ীতে ভূতের উপদ্রব হয়। ঘরে তালাচাবি বন্ধ করিয়া রাখিলে আপনা-আপনি সে তালাচাবি খুলিয়া যায়। নানারূপ চেষ্টা করিয়াও তাহার কোন প্রতিকার হইল না। রাম-নামে ভূত পলায়ন করে, এই ধারণায় সেই ঘরের দরজায় রাম-নাম লিখিয়া দেওয়া হইল। তাহাতে কোন ফল হইল না। পরে কৃষ্ণ-কালী-দুর্গানাম লিখিয়া দেওয়া হইল। কোন ফল হইল না। অবশেষে শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রদত্ত সত্যনাম কাগজে লিখিয়া সেই দরজায় আঁটিয়া দিলে তাহার পরক্ষণ হইতেই সেই ভূতের উপদ্রব বন্ধ হইয়া গেল।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ১৯২)

✔তার মানে অনুকূল ঠাকুরের দেওয়া নাম ছাড়া বাকি সব নামের কোন কার্যকারিতা নেই! তার মানে এতদিন ধরে যারা হরি, কৃষ্ণ,কালী নাম নিয়েছে তাদের কোন উপকার হয়নি? এব্যপারে অনুকূল ভক্ত ছাড়া বাদবাকি হিন্দুরা কি বলবেন? 

✘কলিকাতা মাণিকতলা শ্রীযুক্ত বাবু গৌরচন্দ্র নন্দী-মহাশয়ের আপার সার্কুলার রোডের বাটীতে প্রায় তিন বৎসর পূর্ব্বে একজন পৌঢ়া রমণীর ভূতাবেশ হয়। লোককে ভূতে ধরিলে যেরূপ ব্যবহার ও কথাবর্ত্তার গল্প শুনিতে পাওয়া যায় তিনি সেইরূপ করিতেন। নানারূপ চিকিৎসা ও ভূতুড়ে চিকিৎসা অবলম্বন সত্ত্বেও কোন ফল হইল না। ভুবনচন্দ্র নাথ নামক একটি পূর্ব্ববঙ্গবাসী বালক সেই বাড়ীতে থকিয়া কলেজে অধ্যয়ন করিত। সে একদিন শ্রীশ্রীঠাকুরের একখানা ফটো আনিয়া ঐ ভূতাবিষ্ট ব্যক্তিকে দেখাইলে তিনি বিকট চীৎকার করিতে-করিতে বলিতে লাগিলেন- “ও কার চেহারা, ওটা শীগগির সরিয়ে ফেল, ওটি আমি দেখতে পারব না, দেখলে আমার বড় ভয় হয়। আমি এখনি তোমাদের বাড়ী থেকে যাচ্ছি।” যে-ঘরের দরজায় ঐ ফটো রাখা হইত সে-ঘরে এ- রমণী যাইতে পারিতেন না। ১৪৮নং মানিকতলা রোডের ওরিয়েন্টাল মেডিকেল স্টোর নামক ডাক্তারখানার মালিক শ্রীযুক্ত বাবু নগেন্দ্রনাথ ঘোষাল মহাশয় সেই ফটোখানি দিয়াছিলেন। তিনি তাঁহার ফটো লইয়া যাইবার পর ঐ স্ত্রীলোকটির পুনরায় ভূতাবেশ হইল। তখন তাঁহার একখানা ফটো কিনিয়া ঘরে রাখিয়া দিলে ভূত ছাড়িয়া গেল, আর আসিল না।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ১৯২) 

✔এখন থেকে সব দেবতা বাদ! অনুকূল ঠাকুর জিন্দাবাদ ! 

✘হিমাইতপুর গ্রামে এক সময়ে খুব কলেরা হইতেছিল। শ্রীশ্রীঠাকুর রত্রিকালে রাস্তায় গমন করিতে-করিতে দেখিলেন যেন একটি স্ত্রীমূর্ত্তি তাঁহার সম্মুখ দিয়া যাইতেছে। তিনি তাহার দিকে মনোযোগ দিবামাত্র তাঁহার ললাট হইতে একটি উজ্জল আলো ছুটিয়া ঐ স্ত্রী- মূর্ত্তির দিকে গেল। মূর্ত্তি খুব বেগে দৌড়াইতে লাগিল। আলোটিও তাহার পশ্চাদ্ধান করিতে থাকিল। পরে সেই স্ত্রীমূর্ত্তি আকাশে উঠিয়া শূন্যমার্গে চলিতে লাগিল, আলোটিও তাহার পশ্চাদনুসরণ করিতে লাগিল। শেষে ৫/৬ মাইল দূরে ঠিক যেন দোগাছি গ্রামে স্ত্রীমূর্ত্তিটি অবতীর্ণ হইল।আলোটি ফিরিয়া আসিল। পরদিনই হিমাইতপুরের কলেরা বন্ধ হইল এবং দোগাছিতে কলেরা আরম্ভ হইল।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা১৯৩)

✔অনুকূল ঠাকুরের একটি বাণী আছে, 

বুদ্ধ ঈশায় বিভেদ করিস
শ্রীচৈতন্যে রসুল কৃষ্ঞে জীবোদ্ধারে হন আবির্ভাব
একই ওঁরা তাও জানিস নে?

তা অনুকূল ঠাকুর কলেরা থেকে নিজের গ্রামের মানুষদের উদ্ধার করলেন কিন্তু পাশের গ্রামের মানুষদের উদ্ধার করলেন না কেন? যে ব্যাক্তি একদল লোককে বাঁচাতে গিয়ে অন্যদল লোককে মেরে ফেলে তার সততা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায় ! নাকি বাকিদের উদ্ধার করতে নতুন কেউ(বন্দে বন্দে পুরুষোত্তম) আবির্ভাব হবেন নতুন কোন সত্যনাম নিয়ে ! 

অনুকূল ঠাকুরের ব্রহ্মতেজ
সুদর্শন

এবারে দেখাযাক হনুকূল নারীদের কী চোখে দেখতো :

✘ মেয়েদের বৈশিষ্ট্যে আছে -
নিষ্ঠা, ধর্ম, শুশ্রূষা, সেবা, সাহায্য ও প্রজনন (যান্ত্রিক কিন্তু বলা হয় নি) ;
তুমি তোমাদের ঐ বৈশিষ্ট্যের কোনো-কিছুকেই ত্যাগ করিও না ;
ইহা হারাইলে তোমাদের আর কী রইল ?
   (নারীর নীতি, পৃ ৪)

✔ তখনো বোধহয় 'স্বাধীন' ও 'মুক্তমনা' শব্দদ্বয় সৃষ্টি হয়নি ।

✘ যুবতী কন্যার -
যৌবন শেষ ও প্রৌঢ়ত্বের আরম্ভ এমনতর বয়সের বর হওয়াই শ্রেয়ঃ, ....
তাই, শাস্ত্রে আছে -
এরূপ বিবাহ ধর্ম্ম্য অর্থাৎ জীবন ও #বৃদ্ধিপ্রদ।
     (নারীর নীতি, পৃ ৭৬)
✘স্বামী-স্ত্রীর ভিতর অন্ততঃ ১৫-২০ বৎসর বয়সের পার্থক্য থাকা উচিৎ। (না.নী., পৃ ৯২)

✘তুমি যদি তোমার স্বামীকে প্রকৃতই ভালোবাসিয়া থাক তবে তাহার অধীনতাই তোমার মুক্তি ও তৃপ্তি । (না.নী.,পৃ ৯৫)

✔ বিদ্যাসাগরের নাম এনার কোথাও পাবেন না ।

✘ তোমার কোনো ব্যবহারে স্বামী যদি বিরক্ত/দুঃখিত /ক্রুদ্ধ হইয়া ওঠেন তবে ত্রুটি স্বীকার করিয়া দুঃখিত হও।
(না.নী, পৃ ১০২)
✘ শিষ্যা : মেয়ে মানুষ 'বোকা জাত', তাদেরই কি যত দোষ?

ঠাকুর : (কোনো প্রতিবাদ না করে)তোর যদি কখনও মনেও হয় যে, স্বামী তোর সঙ্গে অকারণ দূর্ব্যবহার করছে, তাও বলবি, আমি যে কথাটা বলতে চেয়েছিলাম,সেটি ভাল করে বুঝিয়ে বলতে না পারায় তোমার অশান্তির কারণ হয়েছি (স্ত্রীর কথা বলার বা প্রতিবাদ করার জন্যই সংসার্্ব অশান্তি হয়) ।  ত্র“টি আমারই । এইরকম যদি করতে পারিস তাহলে দেখবি, স্বামীর সব রাগ গলে জল হয়ে যাবে। একটা জায়গায় কেবল স্বামীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারিস, অর্থাৎ যদি দেখিস, স্বামী তাঁর মা-বাবা বা গুরুজনের সঙ্গে অসমীচিন ব্যবহার করছে, সেখানে কখনও কিন্তু স্বামীর পক্ষ সমর্থন করতে যাবি না, শ্বশুর-শাশুড়ীর পক্ষ হয়ে সেখানে ন্যায্য প্রতিবাদ করবি। স্বামীর মঙ্গলের জন্যই এটা করা দরকার। [তথ্যসূত্র: আলোচনা প্রসঙ্গে, ৬ই কার্তিক, শুক্রবার, ১৩৪৯ (ইং ২৩/১০/১৯৪২)]

✔ পরকীয়া বিষয়ক এতটা উদারনৈতিকতা কোথাও দেখিনি । স্বামী মাতলামি, চুরি, রাহাজানি করলেও তার প্রতিবাদ করা যাবে না । জাস্ট 'একটু' বুঝিয়ে বলতে হবে ।

✘ আদর্শপরায়ণ পুরুষই বহুবিবাহের উপযুক্ত । (না.নী, পৃ ১৪৪)

✔ভাইস-ভারসা কোথাও পাবেন না ।

 ✘আজুদিয়া সীতানাথবাবুর বাড়ীতে একদিন এক গৃহমধ্যে শ্রীশ্রীঠাকুর আমাকে বলিলেন- “আপনাকে নির্জ্জনে পেলে একটা কথা বলবো মনে করি, কিন্তু আপনাকে নির্জ্জনে একাকী পাই না। দেখুন, অনেক সময় ভালবেসে আপনাদিগকে চেপে ধরি, কখন বা কাহাকেও কামড়াইয়া দিই। এমন সময় মন এমন স্তরে থাকে যে, স্ত্রী-পুরুষ ভেদাভেদ জ্ঞান থাকে না। একদিন মার (শ্রীশ্রীজননীর) মাথায় (?) কামড়াইয়া দিয়েছিলাম। যখন স্ত্রীলোক আমার কাছে আসে বা স্ত্রীলোকের নিকটে আমাকে যেতে হয় তখন আমাকে সামলে রাখবার জন্য যদি কোন পুরুষলোক উপস্থিত না থাকে, আর আপনি যদি থাকেন তাহলে স্ত্রীলোক দেখে সরে যাবেন না। আমার কাছে থাকবেন (আমাকে বেঁধে রাখবেন) ।প্রতিজ্ঞা করুন।” আমি তাহার কথায় স্বীকৃত হইলাম। আবার বলিলেন- “দেখুন সতীশ গোসঁই-এরও ঐরূপ হয়, তাই সে স্ত্রীলোক দেখে অনেক সময় সঙ্কুচিত হয় না।... তার কিন্তু মাতৃভাব এবং অনেক সময় স্ত্রী-পরুষ জ্ঞান থাকে না।(শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা ২৪০)

 তবে শ্রী শ্রী ঠাকুর বিখ্যাত অন্যকারনে। এই ডাইনামিক হিন্দুধর্মে #ইউজেনিক্স নামে ডিনামাইট ঢোকানোর পেটেন্টটি উনার । যারা ইউজেনিক্স নিয়ে পরিচিত নন -তাদের জন্য দুই লাইন জানিয়ে রাখি। এটি একটি খরতরনাক অপবিজ্ঞান যা নিয়ে হিটলার অবসেসড ছিলেন বিশুদ্ধ জার্মান জাতির সৃষ্টিতে। বিবাহে নরনারীর নির্বাচনের বিশুদ্ধতা উৎকৃষ্টতর সন্তানের জন্ম দেয়-এই হচ্ছে উনাদের “বিজ্ঞান সম্মত ” বিশ্বাস !! অনুকুল চক্রবর্ত্তীর অবশ্য হিটলারে ঠাঙারে বাহিনী ছিল না। তাই হিন্দু ধর্মের বর্ণবাদকে আশ্রয় এবং সাশ্রয় করেই উনি, হিন্দু ধর্মে ইউজেনিক্স ঢোকাতে উৎসাহী হোন। উনার দর্শনের মূল থিওরী এই রকম – হিন্দু ধর্মের বর্ণবাদ ভাল! কারন তা বংশ গৌরব এবং বংশ দক্ষতা ( স্কিল) রক্ষা করে! রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষা করে! এই ঠাকুর কোন এক কালে ডাক্তারী পাশ করেছিলেন। কোন বায়োলজি গ্রন্থে শুদ্র রক্তের সাথ ব্রাহ্মন রক্তের পার্থক্যর পরীক্ষালদ্ধ ফল পাওয়া যায়, তা আমাদের কারুর জানা নেই । তবে উনিত আবার ঈশ্বরের সাথে কথা বলতেন-হয়ত কানে কানে ইশ্বর এসে এসব বৈজ্ঞানিক অমৃতবানী উনার কানে ঢেলেছিল! তবে এই বর্ণবাদ টেকাতে এবং উৎকৃষ্ট হিন্দু সন্তান প্রসব করিতে, উনার বিবাহের ফর্মুলা হচ্ছে এই রকম – প্রতিটা হিন্দু পুরুষের দুইটি বিবাহ করা উচিত ! (সৎসঙ্ থেকে যে পত্রিকা বের হয় সেখানে 'পাত্র-পাত্রীর বিজ্ঞাপন' সাঁটানো থাকে যেখানে এর প্রমাণ পাবেন এবং গরীবের ঠাকুরের মাসিকে একটি বিজ্ঞাপন ছাপাতে কত 'মুক্তহস্তে দান' দিতে হয় সেটা শুনলে আপনাদের চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যাবে । মনের মতো (ফুটো)পাত্র পাবার জন্য না-হয় একটা বিজ্ঞাপন দিয়েই কথাটা যাচাই করে নিলেন ! ) প্রথমটা সবর্ণ, পরেরটা অনুলোম অসবর্ণ । অনুলোম অসবর্ণ বিবাহ মানে উচ্চকাস্টের হিন্দু পুরুষের সাথে নিম্ন বর্ণের মহিলার বিবাহ। ব্রাহ্মন পুরুষের সাথে শুদ্রকন্যার বিবাহ। উচ্চবর্নের মহিলার সাথে নিম্ন বর্নের পুরুষের বিবাহে তিনি নারাজ। কারন তার বায়োলজি “গবেষণা” । নিম্নবর্নের স্পার্ম নাকি উচ্চবর্নের ডিম্বানুকে নষ্ট করে। প্রথমত উচ্চবর্নের আর নিম্ন বর্নের লোকেদের স্পার্ম আলাদা হয়-এই অতি মুল্যবান বৈজ্ঞানিক তথ্যর জন্য, উনাকে নোবেল বা নিদেন পক্ষে একটি গোবেল প্রাইজ দেওয়া উচিত ছিল! সর্বর্নে বিবাহটা করার পর কিন্ত আপনি অসবর্ণ বিবাহটা করিবেন! কেন? কারন আপনার সবর্ন স্ত্রীর গর্ভে আসিবে বিশুদ্ধ সন্তান! আর অসবর্ন বিবাহে আসিবে অশুদ্ধ সন্তান! অশুদ্ধ সন্তান কেন? এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে শ্রী শ্রী ঠাকুর বিজ্ঞানে একেবারে “নিরক্ষর ” ছিলেন না । উনার মতে বায়োডাইভারসিটি বাড়াইতে দ্বিতীয় বিবাহটি অসবর্ণ করিতে হইবে! মোদ্দা কথা উনার এই স্বরচিত ” বৈজ্ঞানিক ” ইউজেনিক্স ভারতে খুব বেশী চলে নি-কারণ নেহেরু হিন্দুদের বহুবিবাহ আইন করে রদ করেন । তবে শ্রীঠাকুর, থিওরী অনুয়ায়ী দুটি বিয়ে করেছিলেন। এতে সমাজে বিশুদ্ধ এবং ডাইভার্স সন্তান এসেছিল কিনা আমার জানা নেই – তবে সতীন ও সতীনপুত্রের ঝগড়ায়, তার সৎসঙ্গ আশ্রম উঠে যাবার উপায় হয় একসময়। শিষ্যরাও বিরক্ত হয়েছিল। আমার দাদু তার সন্তানদের ওপর খাপ্পা ছিলেন-এটুকু মনে আছে। (৩) কেও যদি জোকার নায়েকের বৈজ্ঞানিক আবিস্কারে পুলকিত হৌন-তাহলে অনুকুল চক্রবর্ত্তীর বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উদ্ভাবনী শক্তিতে তূরীয় অবস্থা পেতে পারেন! উনার পুনঃজন্মের তত্ত্বটি এখানে হুবহু দিলাম – ।। পুণর্জন্ম কিভাবে হয় ।। “সম্বেগ জীবের বা মানুষের মধ্যে gene-এর (জনির) ভিতর-দিয়ে যে pitch-এ (স্তরে) ওঠে, মরে যাওয়ার সময় psycho-plasm-এ (মানস দেহে) engraved (মুদ্রিত) হ’য়ে থাকে সেই pitch-এ wave-এর (তরঙ্গের) আকারে । মিলনেচ্ছু sperm-এর (শুক্রকীটের) ভিতর সেই জাতীয় সম্বেগ সৃষ্টি হ’লে tunining (সঙ্গতি) হয় এবং মৃত ব্যক্তি পুনরায় শরীর গ্রহণ করার সুযোগ পায় । জন্ম ও মৃত্যুর এটাই revolving process (ঘূর্ণায়মান পদ্ধতি) ।”

✔উপরোক্ত ঘটনাগুলো কি প্রমাণ করে না যে অনুকূল একজন মানসিক ও যৌন রোগী? যে ব্যক্তি নিজেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তার ভক্তরা কীভাবে বিশ্বাস করবে তাকে ?

আরও অজস্র-গুণান্বিত ঠাকুরের কেচ্ছা শেষ করবো এই সত্য ঘটনাটি দিয়ে, ----

"ব্রহ্মতেজ"
******
ঠাকুর মহাকালের ন্যায় লিঙ্গ সামলাতে না-পেরে একদিন নিজের শালীর সাথে চুপিচুপি অশালীনতায় লিপ্ত হয় । কিছুদিন পর শালী ফলবতী হলে লোককানাকানিতে একটা ত্রাহি ত্রাহি রব পড়ে যায় । এমন চললে ভবিষ্যতে চ্যালারা রেগে অন্ডে তৈলমর্দনের বদলে বিঁচুটি পাতা ঢলে দিতে পারে এই ভয়ে বন্দে-আদর্শপরায়ণ লোকলজ্জায় ধ্যানবন্দী  হয়ে সমাধা খুঁজতে লাগলেন । এমতাবস্থায় তার যোগ্য স্ত্রী ভক্তদের বোঝাতে লাগলেন, "ওরে তোরা আর পাপাচার করিসনে । পতিতের কি সাধ্যি ঠাকুরের লীলা বোঝে !  ওটা ঠাকুরের 'ব্রহ্মতেজ" ।

ওনার সর্বাধিক বিখ্যাত শিষ্য-লেখক শীর্ষেন্দু । বিখ্যাত করার পিছনে 'মিডিয়া ঠাকুরে'র অবদান অনস্বীকার্য। তিনি নাকি একবার মরতে গেছিলেন । সেখান থেকে হনুকূল তাকে নতুন জীবনের দিশা দেয় । দিশার সাথে বাঁশ ফ্রি । নইলে যে কলম থেকে 'ঘুণপোকা' বেরোয় সেই কলমে কীভাবে ঘুণ ধরে যায় ! বাংলা সাহিত্য যাদের কারণে বন্ধ্যাযুগে ফিরে যেতে বসেছে, সেখানে এনার স্থান 'তিনশো নব্বই'টি গন্থ লেখকের পাশেই। এক সাক্ষাৎকারে বাবু বলেছিলেন, "আগে হাতের কাছে যা-ই পেতাম, পড়ে নিতাম । এখন আর পড়া হয়ে ওঠেনা ।" নির্লজ্জের মতো এমন কথা বোধহয় ট্রাম্পও বলবেন না ! এইসব অর্ধেন্দুদের জন্যই বাংলা সাহিত্যের ভবিষ্যৎ ষন্ডের অন্ডের মতো দোদুল্যমান । এত মানুষ মরে, অথচ এসব বিষাক্তকীটের মরণ হয়না ক্যানো ?

 এই কেচ্ছার শেষ করবো আমাদের বাড়ি থেকে ছ'মাইল দূরে আমার বাবার পিসেমশাইয়ের দাদার (আমার সাথে সম্পর্ক দাদু হন)  'পাগল' হয়ে যাবার ঘটনা দিয়ে । দাদুর জন্ম উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারে । পৈতৃক সম্পত্তিও ছিল, ছিল ছোটোখাটো ব্যবসা । স্বভাবে ছিলেন শান্ত ও দানশীল । সেসময়ে ভৃত্যদের সপ্তাহে একদিন ছুটি দিতেন। ... এমন সুখযাপন এক চুদিরভাইয়ের কানে গেল । তারপর তার শিষ্যরা এসে দাদুকে একদিন বললেন, "ঠাকুর তোকে সন্ধান করছে । সে সবাইকে ডাকে না । তুই তার ডাক পেয়েছিস । কালবিলম্ব করিসনে ।"  মূক্ষু মানুষ দু'বার না-ভেবেই তাদের কথা মতো গিয়ে দীক্ষা সেরে নেন এবং সেখানেই সপ্তাহখানেক বর্ণাঢ্য আতিথেয়তা লাভের পর পরম দয়াল তাকে নির্দেশ দ্যান, পরলোক ও পরজন্মের জন্য সমস্ত 'মায়া' ঠাকুরের কাছে বিসর্জন দিতে । ঠাকুরের মুখনিঃসৃত বাণী তিনি মাথায় করে বাড়ি এসে ভিটেবাড়ী-জমিজমা-ব্যবসা বিক্রি করে তাকে দান করার কিছুদিন পর সেখান থেকে বিতাড়িত হন এই শুনে, "তুই ঠাকুরের জন্যে কী করেছিস !" এতবড় আঘাত সইতে না পেরে তিনি সর্বশান্ত হয়ে বাকি জীবন কাটান । অন্তরমহলে ।
( আমি ক্লাস এইটে থাকার সময় সঙ্-পান্ডারা আমার স্বচোক্ষে দুই সিনিয়র নাস্তিক দাদাকে 'বিরিয়ানির লোভ' দেখিয়ে জনসমক্ষে দীক্ষা দ্যায় । যদিও তারা বিরিয়ানি খেয়েই কেটে পড়েছিল ।)
আমি একটি পাড়ার হিসাব দিলাম মাত্র । না জানি কতজনের পাঁচপুরুষের 'মায়া' ঐ বিকৃতমস্তিষ্কের পশুটা অসৎসঙ্গের নামে আত্মসাৎ করেছে !

 আজ আলাসিঙ্গার কাছে বিবেকানন্দের লেখা চিঠি পড়ছিলাম । কিছু অংশ না দিয়ে পারছি না ।
"....এসো, মানুষ হও। প্রথমে দুষ্ট পুরুতগুলোকে (ধর্মগুরু) দূর করে দাও । কারণ এই মস্তিষ্কহীন লোকগুলো কখনো শুধরোবে না । তাদের হৃদয়ের কখনো প্রসার হবে না । শত শত শতাব্দীর কুসংস্কার ও অত্যাচারের ফলে তাদের উদ্ভব; আগে তাদের নির্মূল করো । এসো, মানুষ হও। নিজেদের সঙ্কীর্ণ গর্ত থেকে বেরিয়ে এসে বাইরে গিয়ে দ্যাখো, সব জাতি ক্যামন উন্নতির পথে চলেছে । তোমরা কি মানুষকে ভালবাসো ? তোমরা কি দেশকে ভালবাসো ? তাহলে এসো, আমরা ভালো হবার জন্য - উন্নত হবার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করি ।"

 একটি ছোট্ট সংশোধন, ----
'বন্দেপুরুষোত্তমম' কথাটি ব্যাকরণগতভাবে ভুল । 'পুরুষোত্তম' মানে পুরুষের মধ্যে শ্রেয়, সেখানে আবার  পোঁদে 'উত্তম' জুড়ে দেবার অর্থ কী ? যিনি সক্রেটিস-এ্যারিস্ততল-প্লেটোর মতো 'বান-ই' দেন, যার বাণীছন্দ এই সময়ের শ্রেষ্ঠ ছড়াকারের ন্যায়, তার চোখ এতবড় ভুলকেও এড়িয়ে গেল নাকি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা ?

পুনশ্চঃ - বদরগঞ্জে এক রমণী একদিন নির্জ্জনে বসিয়া নাম করিতেছেন, এমন সময় তাঁহার স্বামী বিদ্রপচ্ছলে তাঁহার পৃষ্টদেশে স্বীয় পদস্পর্শ করিলেন। তখন হঠাৎ কোথা হইতে বহুসংখ্যক মৌমাছি আসিয়া সেই ভদ্রলোকের মুখে দংশন করিয়া অস্থির করিয়া তুলিল। অবশেষে তিনি স্ত্রীর নিকটে ক্ষমা চাহিলে মধুমক্ষিকাগণ তাঁহাকে পরিত্যাগ করিল। (শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র- সতীশচন্দ্র জোয়ারদার পৃষ্টা৮৭)  

আমি যে (সব ধর্মের) এত সমালোচনা করি তবে আমাকে কেন মৌমাছি কামড়ায় নি (তবে একবার বোলতা কামড়েছিল) ? নাকি কামড়া-কামড়ি শুধু বইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখে অসীমত্ব অর্জনের বৃথা চেষ্টা ?

 বি.দ্র. - লেখাটি সম্পূর্ণ আমার নয় । মুখোশ খুলতে আমি শুধু ধর্মগুরুদের মতো জোড়াতালি দিয়েছি । ঋণস্বীকার : দাদা, স্যর (হিন্দু স্কুলের শিক্ষক), ডি সি, মুক্তমনা ও সামহয়ারইন ব্লগ, নন্দন বোস, সুনীল চন্দ্র দাশ ও অন্যান্য ।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অথর্ববেদ ২/১৩/৪

  ह्यश्मा॑न॒मा ति॒ष्ठाश्मा॑ भवतु ते त॒नूः। कृ॒ण्वन्तु॒ विश्वे॑ दे॒वा आयु॑ष्टे श॒रदः॑ श॒तम् ॥ ত্রহ্যশ্মানমা তিষ্ঠাশ্মা ভবতুতে তনূঃ। কৃণ্বন্তু...

Post Top Ad

ধন্যবাদ