২৫ ডিসেম্বর যে যিশুখ্রিস্টের জন্ম দিন, ইতিহাসে এর কোনো প্রমাণ নেই
গোটা বিশ্ব ২৫ ডিসেম্বর তারিখটি যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন বা বড়োদিন হিসাবে পালন করে, কিন্তু যিশুখ্রিস্টের জন্ম আদৌ কবে হয়েছিল সে কথা কেউই জানেন না। এমনকী সে ব্যাপারে বাইবেলের কোথাও কোনো লেখা নেই। কোনো উল্লেখ নেই। তা হলে ২৫ ডিসেম্বর দিনটি যিশুখ্রিস্টের জন্ম দিন হিসাবে পালন করা হয় কেন?
কী ভাবেই বা এল এই তারিখ?
৩৩৬ খ্রিস্টাব্দের ২৫ ডিসেম্বর যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসাবে পালন করা শুরু হয় রোমে। এর পর ৩৫০ খ্রিস্টাব্দে পোপ জুলিয়াস এই দিনটিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসাবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই এই দিনটিই খ্রিস্টমাস ডে হিসাবে পালিত হচ্ছে।
যিশুর জন্মের সঠিক তারিখ নির্ধারণ করা বিজ্ঞানীদের পক্ষে কঠিন মনে হয়েছে। প্রতিবাদী এবং ক্যাথলিকরা বিশ্বাস করেন যে খ্রিস্ট 25 ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এবং অর্থোডক্স খ্রিস্টানরা 6-7 জানুয়ারীর রাতে তাঁর জন্ম উদযাপন করে। জন্মের প্রায় অব্যবহিত পরে, জোসেফ এবং মেরি কিছু সময়ের জন্য যিশুকে মিশরে নিয়ে গেলেন। যিশু তাঁর জীবনের বেশিরভাগ অংশ জেরুজালেমের উত্তরে অবস্থিত নাসরতীতে কাটিয়েছেন।
খ্রিস্টের মা মরিয়ম এবং তাঁর স্বামী জোসেফ গালীলের ছোট্ট গ্রাম নাসরতের বাসিন্দা। এই দেশগুলি একসময় রোমানদের দ্বারা জয়লাভ করেছিল। এবং এরপরে রোমের শাসক অগাস্টাস তাঁর অধীনস্থ দেশগুলিতে একবার আদমশুমারি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রত্যেক ইহুদীকে তার শহরে উপস্থিত হয়ে সেখানে সাইন আপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
তবে এর পিছনেও ছিল প্রচুর ইতিহাস ও বিতর্ক।
প্রথম প্রশ্ন হল, খ্রিস্টের জন্ম সাল কী? সাধারণ ভাবে সকলেরই জানা খ্রিস্টের জন্মের পর থেকে খ্রিস্টাব্দ গণনা শুরু হয়েছিল। অর্থাৎ ২০২০ বছর আগে খ্রিস্টাব্দের জন্ম। কিন্তু হিসাবটা তখন এত সোজা ছিল না।
যিশু খ্রিস্টের জন্মের পর তৃতীয় শতাব্দী পর্যন্ত কেবল তাঁর মৃত্যু দিবসই পালন করা হতো। এনসাইক্লোপিডিয়া আমেরিকানা থেকে জানা গিয়েছে, সেই সময় চার্চের ফাদাররা যিশুর জন্মের প্রথম শতাব্দী থেকেই জন্মদিন পালন করতেন না। কারণ, স্মরণীয় ব্যক্তিদের মৃত্যুবার্ষিকীই পালন করার রেওয়াজ ছিল সেই সময়।
৫২৫ সালে প্রথম পোপ জন ডায়ানিসিয়াস ইগজিগাস চার্চগুলির জন্য একটি ক্যালেন্ডার তৈরি করেছিলেন। তাতে লেখা হয় রোমের প্রতিষ্ঠার প্রায় ৭৫৩ বছর পর জন্ম নিয়েছিলেন যিশুখ্রিস্ট। কিন্তু, এই তথ্য ভুল। কারণ যিশুর জন্ম সংক্রান্ত ‘গসপেল রেকর্ড’ থেকে জানা গিয়েছে, তাঁর জন্ম হয়েছিল হেরোদ দ্য গ্রেটের আমলে। ফলে, তা কখনোই রোমের উত্থান থেকে ৭৫০ বছর পর হতে পারে না। কারণ, হেরোদের মৃত্যুই হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৪ সালে ।
এ বার ২৫ ডিসেম্বর বিষয়টি নিয়ে বিশ্লেষণ করা যাক। ইতিহাস এবং খোদ বাইবেলই ২৫ ডিসেম্বরের বিরুদ্ধে তথ্য দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা যিশুর জন্ম সম্পর্কে জানা থাকলে প্রাচীন মানুষ তাঁর জন্মদিনের কথা অবশ্যই বাইবেলে উল্লেখ করতেন। কিন্তু, তা হয়নি। খ্রিস্টান ইতিহাসের অন্তত প্রথম ২০০ বছরের মধ্যে জন্মদিনের কোনো রকম উল্লেখ নেই।
শুধু তাই নয় ৩৩৬ সালের আগে পর্যন্ত যিশুর জন্মদিন পালিত হত বলে জানা যায় না। জন্মদিন ও তা পালন করার ভাবনা এসে ছিল তৃতীয় এবং চতুর্থ শতাব্দীতে বলে। এমনকী এই বিষয় নিয়ে চার্চের ফাদার, পোপ, নেতাদের মধ্যে বিস্তর মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে গবেষণা থেকে।
অন্য দিকে ক্যাথলিক এনসাইক্লোপিডিয়ার ১৯০৮ সংস্করণ থেকে জানা যাচ্ছে, ‘ধর্মগ্রন্থের কোথাও লেখা নেই তাঁর জন্মদিন পালন করতে হবে। শুধুমাত্র পাপীরাই তাদের জন্মদিন পালন করে মহোৎসব করে’।
অবশেষে এই সময়ে ছ’টি মাসের মোট আটটি তারিখ প্রস্তাবিত হয় যিশুর জন্মদিন হিসাবে। তার মধ্যে সব শেষে ছিল ২৫ ডিসেম্বর। শেষ পর্যন্ত পঞ্চম শতাব্দীতে ২৫ ডিসেম্বর তারিখটি স্থির করে ওয়েস্টার্ন চার্চ । এই আটটি তারিখের মধ্যে ছিল ২৮ মার্চ, ২ এপ্রিল, ১৮ নভেম্বর ইত্যাদিও।
আবার এনসাইক্লোপিডিয়া আমেরিকানা অনুযায়ী, পুরনো রোমান ‘ফিস্ট’ অনুসারে ‘দ্য সান গড’ বা ‘সল'(sol)-এর জন্মদিন হিসাবে এ দিনটিকেই পালন করা হতো।
রোমান ক্যাথলিক লেখক মারিও রিঘেট্টির লেখা থেকে জানা গিয়েছে, পৌত্তলিকদের বিশ্বাস টেনে আনতে চার্চ অব রোম ২৫ ডিসেম্বরকেই পাকাপাকি ভাবে যিশুর জন্ম দিন হিসাবে ঠিক করে দেয় । কারণ, ওই দিনটি অন্ধকারের বিনাশক সূর্য ‘মিথরাস’কে উৎসর্গ করে বিশেষ ভাবে পালন করা হতো।
যীশুর জীবনের নথিপত্র কেবল সুসমাচারগুলোতেই রয়েছে। যীশু ছিলেন একজন গালীলীয় যিহূদী, যিনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন কর্তৃক বাপ্তিস্মিত হয়েছিলেন এবং পরিচর্যা ও প্রচারণা শুরু করেছিলেন। তাঁর শিক্ষা প্রাথমিকভাবে মৌখিক প্রেষণ দ্বারা সংরক্ষিত ছিল এবং তিনি নিজে প্রায়ই “রব্বি” নামে অবিহিত ছিলেন।
যীশু নিজেই বলেছেন -
"একথা ভেবো না যে আমি পৃথিবীতে শান্তি দিতে এসেছি । আমি শান্তি দিতে আসিনি কিন্তু খড়গ দিতে এসেছি । আমি এই ঘটনা ঘটাতে এসেছি : ‘আমি ছেলেকে বাবার বিরুদ্ধে , মেয়েকে মায়ের বিরুদ্ধে , বৌমাকে শাশুড়ীর বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে এসেছি । নিজের আত্মীয়েরাই হবে একজন ব্যক্তির সবচেয়ে বড় শত্রু।" -
[বাইবেল ,নতুন নিয়ম ,সাধু মথি লিখিত সুসমাচার (১০:৩৪-৩৬)]
শুধু এইটুকু নয় আরোও আছে দেখুন -
"আমি পৃথিবীতে আগুন নিক্ষেপ করতে এসেছি , 'আহা , যদি তা আগেই জ্বলে উঠত । এক বাপ্তিস্মে আমায় বাপ্তাইজিত হতে হবে , আর যতক্ষণ না তা হচ্ছে , আমি ব্যাকুল হয়ে উঠেছি । তোমরা কি মনে কর এই পৃথিবীতে আমি শান্তি স্থাপন করতে এসেছি ? না, আমি তোমাদের বলছি , বরং বিভেদ ঘটাতে এসেছি । কারণ এখন থেকে একই পরিবারে পাঁচজন থাকলে তারা পরস্পরের মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে । তিনজন দুজনের বিরুদ্ধে যাবে , আর দুজন তিনজনের বিরুদ্ধে যাবে । বাবা ছেলের বিরুদ্ধে ও ছেলে বাবার বিরুদ্ধে যাবে ৷ মা মেয়ের বিরুদ্ধে ও মেয়ে মায়ের বিরুদ্ধে যাবে ৷ শাশুড়ী বৌমার বিরুদ্ধে ও
বৌমা শাশুড়ীর বিরুদ্ধে যাবে ৷" -
[বাইবেল, নতুন নিয়ম , সাধু লুক লিখিত সুসমাচার (১২:৪৯-৫৩)]
অনেক খ্রিস্টান পাদ্রীদের সাথে কথা বলে দেখেছি, তারা যিশুখ্রিস্টকে এভাবে মন্দিরে পূজা করার বিষয়ে অসন্তুষ্ট। তারা অধিকাংশই রামকৃষ্ণ মঠে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত এ যিশুপূজা সম্পর্কে কিছুই জানেন না; যারা কিছুটা জানেন তারা যিশুখ্রিস্টকে পূজা করাকে তাদের খ্রিস্টান মতবাদবিরুদ্ধ বলেই মনে করে।
বড়দিন উপলক্ষে মন্দিরে যারা যিশুপূজা করছেন, তাদের কাছে আমার অনুরোধ। হে সাধুসন্ত! আপনারা কি মূর্তিপূজা বা মূর্তিপূজকদের সম্পর্কে বাইবেলের অভিমত পড়ে দেখেছেন? আমি তাদের কোন দোষ দেখি না। তাদের নির্দেশনা তাদের বাইবেল গ্রন্থে লেখা আছে। তাই মন্দিরে যিশুপূজা যারা করছেন, এই দেবদেবীর মন্দির এবং মূর্তিপূজা সম্পর্কে বাইবেলের কি অভিমত? বিষয়টি আমিও আগে জানতাম না। কিন্তু ভাল করে পড়তে যেয়ে বাইবেলের বেশ কয়েকটি স্থানেই চোখ আটকে যায় আমার। আমি বিস্মিত হয়ে যাই, বাইবেলে দেবদেবীদের মূর্তিগুলি ভাঙার সরাসরি নির্দেশ দেখে।
"তোমরা তাদের দেবতাদের পূজা কিংবা সেবা করবে না এবং সেখানকার লোকেরা যা করে তা করবে না। তোমরা তাদের দেবদেবতার মূর্তিগুলো ভেঙে ফেলবে এবং তাদের পূজার পাথরগুলোও টুকরো টুকরো করে ফেলবে।"
(পবিত্র বাইবেল: যাত্রাপুস্তক, ২৩. ২৪)
"সদাপ্রভুকে ছাড়া যদি কেউ কোন দেবতার কাছে কিছু উৎসর্গ করে তবে তাকেও মেরে ফেলতে হবে।"
(পবিত্র বাইবেল:যাত্রাপুস্তক,২২.২০)
তোমরা তাদের বেদীগুলো ভেঙ্গে ফেলবে,তাদের পূজার পাথরগুলো টুকরো টুকরো করে ফেলবে আর তাদের পূজার আশেরা-খুঁটিগুলো কেটে ফেলবে। তোমরা কোন দেবতার উপাসনা করবে না।
(পবিত্র বাইবেল:যাত্রাপুস্তক,৩৪.১৩-১৪)
আমি পৃথিবীতে আগুন জ্বালাতে এসেছি; যদি তা আগেই জ্বলে উঠতো তবে কতই না ভাল হতো!
তোমাদের কি মনে হয় যে, আমি শান্তি দিতে এসেছি? না তা নয়। আমি শান্তি দিতে আসিনি বরং মানুষকে মানুষের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে এসেছি। এখন থেকে এক বাড়ির পাঁচজন পাঁচভাগ হয়ে যাবে, তিনজন দুইজনের বিরুদ্ধে আর দুইজন তিনজনের বিরুদ্ধে।
(পবিত্র বাইবেল : লূক, ১২. ৪৯,৫১-৫২)
তোমরা ছেলেদের এবং যারা কুমারী নয়, এমন সব স্ত্রীলোকদের মেরে ফেলো; কিন্তু যারা কুমারী তাদের তোমরা নিজেদের জন্যে বাঁচিয়ে রাখো।
(পবিত্র বাইবেল :গণনা পুস্তক, ৩১. ১৭-১৮)
তিনি যখন তাদের তোমাদের হাতের মুঠোয় এনে দেবেন এবং তোমরা তাদের হারিয়ে দেবে তখন তোমরা একেবারে ধ্বংস করে ফেলবে।তোমরা তাদের সঙ্গে কোন সন্ধি করবে না এবং তাদের প্রতি কোন দয়া দেখাবে না। তোমরা তাদের সঙ্গে কোন বিয়ের সম্বন্ধ স্থাপন করবে না। তোমাদের মেয়েদেরও তোমরা তাদের ছেলেদের হাতে দিবে না এবং তাদের মেয়েদেরও তোমাদের ছেলেদের জন্য আনবে না। কারণ সেই মেয়েরা তোমাদের ছেলেদের আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নেবে এবং দেব-দেবতার পূজা করাবে। তাতে সদাপ্রভুর ক্রোধের আগুন তোমাদের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠবে এবং সঙ্গে সঙ্গে তোমাদের ধ্বংস করে ফেলবে।
তোমরা ঐ সব জাতির বেদীগুলো ভেঙ্গে ফেলবে, পূজার পাথরগুলো চুরমার করে দেবে, পূজার আশেরা-খুঁটিগুলো কেটে ফেলবে এবং মূর্তিগুলো আগুনে পুড়িয়ে দেবে।
( পবিত্র বাইবেল:দ্বিতীয় বিবরণ, ০৭.২-৫)
26 ולא תביא תועבה אל ביתך והיית חרם כמהו שקץ תשקצנו ותעב תתעבנו כי חרם הוא׃
[Bible Old Testament Book of Deuteronomy (7:26)]
তাদের দেব-দেবতার মূর্তিগুলো তোমরা আগুনে পুড়িয়ে ফেলবে।তোমরা তাদের গায়ের সোনা-রূপার লোভ করবে না নিজেদের জন্য তোমরা তা নেবে না, কারণ তা করলে তোমরা ওগুলোর ফাঁদে পড়বে।তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে ওগুলো ঘৃণার জিনিষ।
( পবিত্র বাইবেল:দ্বিতীয় বিবরণ, ০৭.২৬)
וילך ויעבד אלהים אחרים וישתחו להם ולשמש או לירח או לכל צבא השמים אשר לא צויתי׃
[Bible Old Testament Book of Deuteronomy (17:3)]
সে হয়তো আমার আদেশের বিরুদ্ধে গিয়ে দেব-দেবতা কিম্বা সূর্য, চাঁদ বা আকাশের তারাগুলোর পূজা করছে।
( পবিত্র বাইবেল:দ্বিতীয় বিবরণ, ১৭.০৩)
বাইবেলের এই সব কথা থেকে কি যীশুকে শান্তির দূত বলা যায় ? এ বিষয়ে আপনারা পাঠকগণ বিচার করে আমাদের জানাবেন । তিঁনি নিজেই স্পষ্টভাবে বলেছেন -"পারিবারিক কলহের জন্মদাতা ছিলেন" তিঁনি । তাহলে এটা যদি শান্তির বাণী হয় তবে অশান্তির বাণী কি একটু বলবেন ?
ইতিহাসের ‘যীশু’ চরিত্রটি বিভিন্ন মিথ এবং অতিকথনে এতটাই আচ্ছন্ন হয়ে গেছে যে এর থেকে আসল সত্য উদঘাটনই এখন দূরূহ হয়ে পড়েছে। যীশুর ভার্জিন বার্থের উপাখ্যান, অলৌকিক উপায়ে রোগ সারানো, ক্রুসবিদ্ধ হওয়ার পরও তার পুনুরুত্থানের কাহিনী – এ সমস্ত অনেক কিছুই প্রমাণ করে যীশুর অনেক কিছুই আসলে স্রেফ কল্পকাহিনী। যীশুর সমসাময়িক লেখকদের মধ্যে কেউই যীশু সম্বন্ধে একটি বাক্যও লিখে যাননি। এর মধ্যে Josephus, Philo, Suetonius সহ অনেকেই আছেন। যীশুর মত এত বড় ব্যক্তিত্ব – যার এত হাজার হাজার অনুসারী ছিলো – তার অস্তিত্বের কোন ইতিহাসভিত্তিক দলিল সমসাময়িক লেখকদের লেখা থেকে কিন্তু পাওয়া যায় না। বাইবেলের যে চারটি গসপেল (ম্যাথু, মার্ক, লুক এবং জন) এর উপর ভিত্তি করে যীশুর অস্তিত্বের দাবী করা হয় সেগুলোও পরস্পর বিরোধী – এবং সবগুলোই লিপিবদ্ধ করা হয়েছিলো যীশুর মৃত্যুর অনেক পরে। এ ধরণের অনেক কিছুই সত্যিকার যীশুর অস্তিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। আমি একটা বই পড়েছিলাম ‘জেসাসে’স পাজেল’ নামে – যেখানে লেখক দাবী করেছেন – no historical Jesus ever existed। আমি বইটা যোগাড় করে পড়তে অনুপ্রাণিত করব।
মুক্তমনায়ও Jim Walker এর এ সংক্রান্ত একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে – Did a historical Jesus exist?
লেখাটা চিন্তার খোরাক যোগায় নিঃসন্দেহে।
যীশু নিজেকে কি হিসাবে দাবী করেন? বাইবেল কি বলে, তিনি কে? যোহন ১০:৩০ পদে যীশুর বলা কথা আমরা প্রথমেই লক্ষ্য করি, “আমি আর পিতা এক।” এই কথাটি প্রাথমিকভাবে ঈশ্বর হিসাবে দাবী করা হয়েছে বলে মনে হয় না। তবে, তাঁর কথায় যিহূদীদের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করুন, ‘নেতারা উত্তরে বললেন, “ভাল কাজের জন্য আমরা তোমাকে পাথর মারি না, কিন্তু তুমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অপমানের কথা বলেছ বলেই মারি। মানুষ হয়েও তুমি নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করছ”’ (যোহন ১০:৩৩)। যীশুর কথায় যিহূদীরা বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি নিজেকে ঈশ্বর বলেই দাবি করছেন। এই পদে যীশু কিন্তু যিহূদীদের কখনও সংশোধন করতে চেষ্টা করে বলেন নাই, ‘আমি নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করি না’। যীশু যে ঈশ্বর, সত্যিই তা এই কথার ইংগিতে বোঝা যায়, যখন তিনি বলেছিলেন, “আমি আর পিতা এক” (যোহন ১০:৩০)। যোহন ৮:৫৮ পদে আরও একটি উদাহরণ রয়েছে: ‘যীশু তাদের বললেন, “আমি আপনাদের সত্যি বলছি, অব্রাহাম জন্মগ্রহণ করবার আগে থেকেই আমি আছি”’। এবারও, এই কথায় যিহূদীরা যীশুকে মারতে পাথর তুলে নিয়েছিল (যোহন ৮:৫৯)। যীশু তাঁর পরিচয় প্রকাশ করতে গিয়ে বলেছেন, “আমি আছি”, যা পুরাতন নিয়মের ঈশ্বরের নামের সরাসরি প্রয়োগ (যাত্রা পুস্তক ৩:১৪)। যীশু যদি তাদের বিশ্বাসের ভিত্তি অনুসারে ঈশ্বর নিন্দা সমতুল্য এমন কিছু না বলতেন, তাহলে কেন তারা আবার তাঁকে পাথর মারতে চেয়েছিল?
যোহন ১:১ পদ বলছে, “বাক্য নিজেই ঈশ্বর ছিলেন”। যোহন ১:১৪ পদ বলছে, “সেই বাক্যই মানুষ হয়ে জন্মগ্রহণ করলেন”। এখানেই সুস্পষ্ট যে, যীশুই মানুষরূপে ঈশ্বর। শিষ্য থোমা যীশুকে সামনা সামনি ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, “প্রভু আমার, ঈশ্বর আমার” (যোহন ২০:২৮)। যীশু তাকে সংশোধন করে দেন নাই। প্রেরিত পৌল যীশুকে বলেছেন, “আমাদের মহান ঈশ্বর এবং উদ্ধারকর্তা যীশু খ্রীষ্টের ...” (তীত ২:১৩)। প্রেরিত পিতরও একই রকমভাবে বলেছেন, “আমাদের ঈশ্বর ও উদ্ধারকর্তা যীশু খ্রীষ্ট” (২ পিতর ১:১)। এমন কি পিতা ঈশ্বরও যীশুর পূর্ণ পরিচয় সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়েছেন, ‘কিন্তু পুত্রের বিষয়ে ঈশ্বর বলেছেন, “হে ঈশ্বর, তোমার সিংহাসন চিরস্থায়ী; তোমার শাসন ন্যায়ের শাসন”’ (ইব্রীয় ১:৮)। খ্রীষ্ট সম্পর্কিত পুরাতন নিয়মের ভাববাণী তাঁর ঈশ্বরত্ব ঘোষণা করেছে, “কারণ একটি ছেলে আমাদের জন্য জন্মগ্রহণ করবেন, একটি পুত্র আমাদের দেওয়া হবে। শাসন করবার ভার তাঁর কাঁধের উপর থাকবে, আর তাঁর নাম হবে আশ্চর্য পরামর্শদাতা, শক্তিশালী ঈশ্বর, চিরস্থায়ী পিতা, শান্তির রাজা” (যিশাইয় ৯:৬)।
তাই, সি এস লুইস যুক্তি দেখিয়েছেন, শুধুমাত্র ভাল শিক্ষক হিসাবে যীশুকে বিশ্বাস করাই যথেষ্ট নয়। যীশু সুস্পষ্টভাবে এবং অনস্বীকার্যভাবে নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করেছেন। যদি তিনি ঈশ্বর না হন তাহলে তিনি তো মিথ্যাবাদী, তাহলে তিনি ভাববাদী হতে পারেন না; ভাল শিক্ষক অথবা ঈশ্বরীয় মানুষও হতে পারেন না। আধুনিক যুগের “পন্ডিতেরা” যীশুর বলা কথা ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করে দাবি করেছেন যে “সত্যিকার ঐতিহাসিক যীশু অনেক কিছুই বলেন নাই যা বাইবেল তাঁর সম্পর্কে বলছে। যীশু সম্পর্কে ঈশ্বরের বাক্য কি বলেছে আর কি বলে নাই তা নিয়ে যুক্তি তর্ক করতে আমরা কে? যীশু কি বলেছেন অথবা কি বলেন নাই সে কথা বিবেচনা করে, “পন্ডিতেরা” কেমন করে দু’হাজার বছর আগে তিনি যাদের সাথে থাকতেন, যাদের পরিচর্যা করতেন এবং যাদের শিক্ষা দিয়েছেন, তারা তাদের কথার গুরুত্ব মুছে ফেলতে পারে (যোহন ১৪:২৬)?
যীশুর সত্যিকার পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? যীশু কি ঈশ্বর না ঈশ্বর না, তা নিয়ে এত মাথা ঘামানো কেন? সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে যীশুর ঈশ্বর হওয়ার বিষয়, কারণ যদি তিনি ঈশ্বর না হন, তাহলে তাঁর মৃত্যু সারা জগতের জন্য পাপের বেতন (জরিমানা) দেওয়া যথেষ্ট হয় না (১ যোহন ২:২)। শুধুমাত্র ঈশ্বর এরূপ সীমাহীন বেতন (জরিমানা) দিতে পারেন (রোমীয় ৫:৮; ২ করিন্থীয় ৫:২১)। যীশু ঈশ্বর হয়েছিলেন যেন তিনি আমাদের পাপের ঋণ শোধ করতে পারেন। যীশু মানুষ হয়েছিলেন যেন তিনি মৃত্যুবরণ করতে পারেন। তাই, উদ্ধার বা পরিত্রাণ শুধুমাত্র যীশুকে বিশ্বাস করেই পাওয়া যায়। যীশু ঈশ্বর বলেই তিনি উদ্ধার বা পরিত্রাণের একমাত্র পথ। যীশুর ঈশ্বরত্ব হচ্ছে তাঁরই ঘোষণা, “আমিই পথ, সত্য আর জীবন। আমার মধ্য দিয়ে না গেলে কেউই পিতার কাছে যেতে পারে না” (যোহন ১৪:৬)।
যাহোক, যীশু থাকুক আর নাই থাকুক, ক্রুসবিদ্ধ যীশুর পুনরুত্থানের কাহিনী যে অসত্য আর বানানো তাতে কোন সন্দেহ নেই।
অথবা যীশু কাল্পনিক হতে পারে।
ঐতিহাসিক যীশুর জন্য অনুসন্ধান এবং যীশুর জীবনের পাণ্ডিত্যপূর্ণ পুনর্গঠন প্রাথমিকভাবে গসপেল গ্রন্থগুলির সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ এবং সমালোচনামূলক-ঐতিহাসিক তদন্তের মানদণ্ড প্রয়োগের উপর ভিত্তি করে এবং বিশ্লেষণের পদ্ধতিগুলি প্রাথমিক উৎস এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক প্রমাণের নির্ভরযোগ্যতা ।
কার্যত প্রাচীনত্বের সমস্ত পণ্ডিত একমত যে একজন ঐতিহাসিক মানব যীশুর অস্তিত্ব ছিল। ঐতিহাসিক মাইকেল গ্রান্ট জোর দিয়ে বলেছেন যে যদি ঐতিহাসিক পাঠ্য সমালোচনার প্রচলিত মানগুলি নিউ টেস্টামেন্টে প্রয়োগ করা হয় , "আমরা যীশুর অস্তিত্বকে প্রত্যাখ্যান করতে পারি না যতটা না আমরা এক বিশাল পৌত্তলিক ব্যক্তিত্বের অস্তিত্বকে প্রত্যাখ্যান করতে পারি। ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে বাস্তবতা কখনো প্রশ্নবিদ্ধ হয় না।"
তবে আল ডোহার্টি The Jesus Puzzle বইতে যীশুর অস্তিত্বকে অস্বীকার করেছে। যীশু বলে কেউ ছিল কিনা জানতে লগইন করুন
ইতিহাস বলে যীশু কোনকালেও ছিল না। আপাতত অনেক ইতিহাসবিদেরা মানতে নারাজ। কারণ কি জানেন?? আজ পর্যন্ত যীশুর কোন এক্সেক্ট ঐতিহাসিক প্রমাণ পাওয়া যায় নাই।
In his book " The Christ Myth " Remsburg stated that although Jesus may have existed, we know nothing about him, and provided a list of 42 names of "writers who lived and wrote during the time, or within a century after the time" who Remsburg felt should have written about Jesus if the Gospels account was reasonably accurate but who did not.
ঐতিহাসিক লিপির কথা বাদ দিলে আমাদের হাতে থাকে গসপেল গুলো। এই গসপেলগুলোকে সুত্র ধরে নিলেও আবার ঝামেলা। প্রথমত, সবচে প্রাচীন গসপেল লিখা হয়েছিল ৭০ সালে, যীশুর মৃত্যুর অনেক পরে। সুতরাং ঘটনা বিকৃত হওয়া স্বাভাবিক।
এমনকি এই গসপেল লেখকদের নিয়েও অনেক সন্দেহ আছে।
We know virtually nothing about the persons who wrote the gospels we call Matthew, Mark, Luke, and John.
-Elaine Pagels, Professor of Religion at Princeton University, (The Gnostic Gospels)
আরও দেখুন :
The gospels are so anonymous that their titles, all second-century guesses, are all four wrong.-Randel McCraw Helms (Who Wrote the Gospels?)
তাহলে, যীশুর প্রমাণ কি শুধুই বাইবেল??? বাইবেল নিজেই তো যীশুর নিজের লেখা না। বাইবেল রচনার পেছনে অনেকের হাত আছে, যদিও খ্রিস্টানররা বিশ্বাস করেন, স্বয়ং জিহোভা সবাইকে দিয়ে এই লেখানোর কাজটি করিয়েছেন,যদি আপনি এসব অদ্ভুত যুক্তি শুনতে অভ্যস্ত থাকেন।
( সূত্র :
www.biblica.com/bibles/faq/2/)
অর্থাৎ যীশুর কোন পার্থিব প্রমাণ নেই। যীশু সম্পর্কে আমরা কেবল মুখে শোনা কথা জানি। তবে কি আমরা যা জানি তা কি তবে কেবলি মিথ। হতে পারে!! এমন হতে পারে মিশরীয়দের দিনে দেবতা হোরাসর মত যীশুর জন্মও একটি মিথ।
তাহলে এতো বিশাল একটি মতবাদে বিশ্বাসী যারা বর্তমানে পৃথিবীর সংখ্যাগরিষ্ঠ, তারা কি এমনি এমনি হাওয়া থেকে এলো??
গুড কোয়েশ্চন।
জোডিয়াকের ক্রস নিয়ে পুনরায় আলোচনা করেছি। একটি প্রাচীন সভ্যতার জন্যে কেবলমাত্র শৈল্পিক একটি চিত্র ছিল না, বাৎসরিক সৌর গতি নির্নয়ের একটি ক্যাটালগ ছিল। যোডিয়াকের ক্রশ হতেই পেগান রা নিম্নোক্ত চিহ্ন এডপ্ট করে, ইন্টারেস্টিং হচ্ছে তা ক্রিশ্চিয়ান ক্রুশের অনেক টা কাছাকাছি।
পেগানের এই চিহ্ন এখনও বিভিন্ন পেগান মন্দিরে দেখ যায়।প্রথমিক যুগে জেসাসের যে ছবিগুলো পাওয়া যায় সেগুলোতেও জেসাসের মাথার পেছনে সর্বদা ক্রশ টিকে দেখানো হয়, যার উদ্দেশ্য আর কিছুই না, সূর্যের ক্রসে মৃত্যুর পেগান সিম্বলাইজেশনের একটি ক্রিশ্চিয়ান রুপ।সে হিসাবে জেসাসের দ্বিতীয় আগমন কেও ব্যাখ্যা করা যায়। আসলেই তিনি আবার আসবেন, প্রতিদিনই আসেন, সকালের সূর্যোদয়ের সময়।
বাইবেলের নতুন ও পুরাতন নিয়মে আরেকটি গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার প্রকাশিত হয়েছে যা একটি আ্যাস্ট্রোলজিক্যাল মেটাফোর, তা হচ্ছে এইজ বা যুগ। এইজ বা যুগ বুঝার আগে আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ন আ্যাস্ট্রোলজিক্যাল ফেনোমেনন বুঝতে হবে যার শাব্দিক নাম "Precession of the Equinoxes" . প্রাচীন মিশরীয় এবং অন্যান্য সভ্যতা গুলো এই ব্যাপারটি পর্যবেক্ষন করেছিল যে প্রতি ২১৫০ বছর পর পর বসন্ত আয়নায়নের সকালের সূর্যোদয় ভিন্ন রাশিতে সংগঠিত হয়(এই কথাটি উত্তর গোলার্ধের জন্যে সত্য। প্রাচীন সভ্যতা গুলোর উত্তর এবং দক্ষিন গোলার্ধের ধারনা থাকার সম্ভাবনা কম। তবে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে গ্রীস, মিশর, আক্কাদ, পারস্য, প্যালেস্টাইন ইত্যাদি অঞ্চলগুলো উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত)সূর্যের এই আচরনের কারন বর্তমানে বোঝা যায়। পৃথিবী তার নিজ অক্ষে ঘূর্ননের সময় অত্যন্ত মন্থরগতিতে তার ঘূর্নন তল মন্থর গতিতে পরিবর্তিত হতে থাকে। অর্থাত ঘুর্ননের সময় পৃথিবী তার অক্ষ সাপেক্ষে একই তলে ঘোরে না। এই মন্থর ঘূর্ননতল বিচ্যুতির কারনে সূর্য বারোটি রাশি পরিভ্রমনকালে সময় নেয় ২৫৭৬৫ বছর। টলেমীর লেখাতে এই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বর্ননা করা আছে। প্রাচীন সকল আকাশ পর্যবেক্ষকই এই বিষয়টি বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন। প্রাচীন পর্যবেক্ষকরা এই ২৫৭৬৫ বছর কে অভিহিত করতেন "the great year" নামে। এই ২১৫০ বছর কে ঐ সময়কালে বসন্ত আয়নায়নের সূর্যদয় যে রাশিতে হয়েছিল ঐ রাশির নামানুসারে নাম দেয়া হয়। ৪৩০০ খ্রী পূ হতে ২১৫০ খ্রী পূ ছিল the Age ofTaurus বা বৃষ রাশির যুগ। বৃষের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে ষাড়। খ্রী পূ ২১৫০ হতে ১ খ্রী হচ্ছে Age of Aries অথবা মেষ রাশির যুগ। মেষ হচ্ছে ভেড়া। ১ খ্রী হতে ২১৫০ খ্রী হচ্ছে Age of Pisces, বা মীন রাশির যুগ। মীন হচ্ছে মাছ। ২১৫০ খ্রী হতে শুরু হবে নতুন যুগ, The Age of Aquarius, বা কুম্ভ রাশির যুগ।
বাইবেলে এই যুগের পরিবর্তন মেটাফোরিক্যালি উল্লেখ আছে। মুসা বা মোজেস সিনাই পর্বত থেকে টেন কমান্ডেন্টস নিয়ে যখন ফির আসলেন, তখ দেখলেন তারঅনুসারীরা একটি সোনার যাড়ের পূজা করছে। এটি দেখে তিনি রাগান্বিত হলেন, এবং ওল্ড টেস্টামেন্ট(তাওরাত)অনুসারে তার অনুসারীদের আত্নশুদ্ধির জন্যে একে অপরকে হত্যার নির্দেশ দিলেন।
এখানে মজার ব্যাপার হচ্ছে মোজেস এসেছিলেন মেষ রাশির শুরুতে। ইহুদী মতবাদেও ভেড়ার একটা আলাদা গুরুত্ব আছে। উতসবের সময় এখনও ইহুদীরা ভেড়ার শিঙ্গা বাজায়। এবং এর পূর্ববর্তী যুগ হচ্ছে বৃষ রাশির যুগ। যা হচ্ছে ষাড়। তাহলে ষাড়ের পূজার ব্যাপারটা পুরাতন যুগ শেষে নতুন যুগের আগমনের কথাই বলেছে। জেসাসের আগমন ঘটেছে পাইসিস যুগ বা মীন যুগের শুরুতে। এবং বাইবেলেও মাছের অনুষঙ্গটি খুব বেশী।
ইপি স্যান্ডার্স জীবনীভিত্তিক আলোচনার কাঠামো হিসেবে যিশুর জীবন সম্পর্কে আটটি "অসংবাদযোগ্য তথ্য" প্রস্তাব করেছেন:
যীশু একজন গ্যালিলিয়ান প্রচারক ছিলেন।
তার কার্যক্রম গ্যালিল এবং জুডিয়ায় সীমাবদ্ধ ছিল।
তিনি জন ব্যাপটিস্ট দ্বারা বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন।
তিনি শিষ্যদের ডাকলেন।
মন্দিরে তার বিবাদ ছিল।
যিশুকে জেরুজালেমের কাছে রোমানরা ক্রুশবিদ্ধ করেছিল।
তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর শিষ্যরা চলতে থাকে।
তার কিছু শিষ্য নির্যাতিত হয়েছিল।
প্রাথমিক সময়ে ভ্যাটিকান নিরঙ্কুশ ছিলো না। ক্ষমতা সমান ভাবে ভাগ হয়ে তিনটি চার্চের কাছে যেত। একটি ভ্যাটিকান, একটি আলেকজান্দ্রিয়ায় এবং অপরটি বাইজেন্টাইনে। এভাবেই রিলিজিয়ান হয়ে পরে রাজনৈতিক হাতিয়ার। "
যিশুর বিরুদ্ধে একটি প্রমাণ বাইবেলের একটি কথা :
"আর যে কেউ তার ক্রুশ বহন করে আমার পিছনে না আসে,সে আমার শিষ্য হবার যোগ্য নয়। "
এ বাণী তিনি যখন দেন, তখন সবে মাত্র জেরুজালেমে যিশু ১২ জন শিষ্যের মধ্যে শিক্ষা প্রচার করছেন। আর তিনি শোনাচ্ছেন তার ক্রুশবিদ্ধকরণ এর কথা??
যাই হোক, যিশু বলতে যে কেউ একদমি ছিল না, তা নয়।য়তো ছিলেন। কিন্তু খ্রিস্টান মতবাদ আমাদের যেভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়, ঠিক সেভাবে না। তিনি স্বয়ং তার পিতার বীর্য থেকে জন্ম নিয়েছিলেন ।
(আনুমানিক ৫৭ খ্রীষ্টাব্দে পল এক লেখনিতে যিশুকে গডের পুত্র বলে সম্বোধন করলেও স্পষ্ট জোড়ালো ভাষাতে ডেভিড জোসেফের বীর্য হতে যিশুর জন্ম হয়েছে বলে মত প্রকাশ করে গেছেন
“I Paul, a servant of Jesus Christ, called to be an apostle and separated onto the gospel of God…concerning his Son Jesus Christ our Lord, which was made of the seed of David according to the flesh.”) (আরো দেখুন
mukto-mona.net/bangla_blog/?p=20520)
তিনি বিবাহও করেছিলেন। (দেখুন :
যিশু খ্রিস্ট, ইসলাম ধর্মমতে যাকে ঈসা নবী বলে আখ্যায়িত করা হয়, খ্রিস্টানদের মতে তার ক্রুশবিদ্ধকরণের ঘটনাটি ঘটেছিল খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীতে, আনুমানিক ৩০-৩৩ সালের মধ্যে। তাঁর এই ক্রুশবিদ্ধের ঘটনার সবথেকে ভাল বিবরণ পাওয়া যায় খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল-এর নূতন নিয়মের প্রথম চারটি বইতে যা সুসমাচার নামে পরিচিত। যিশু খ্রিস্টের এই ক্রুশবিদ্ধকরণের ঘটনাটি প্রাচীন অনেক উৎস মোতাবেক একটি প্রতিষ্ঠিত ঘটনা এবং অন্য ধর্মালম্বীদের বিভিন্ন উৎস দ্বারা স্বীকৃত।তবে ইসলাম ধর্মমত অনুযায়ী যীশু বা ঈসাকে হত্যাও করা হয় নি, ক্রুশবিদ্ধও করা হয়নি। ইতিহাসবিদগণ এই বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে একমত হতে পারেনি যে সেখানে প্রকৃতপক্ষে কি ঘটেছিল। বাইবেলে উল্লেখিত সুসমাচার অনুযায়ী যিশুকে খ্রিস্ট বলা হয়, তাঁকে তৎকালীন রাজা পিলাতের আইনসভা কর্তৃক অন্যায়ভাবে ধরে এনে অপমান করা হয় এবং পরে রাজা পিলাতের কাছে পাঠানো হলে সে প্রথমে চাবুক মারার আদেশ এবং পরবর্তীতে বাধ্য হয়ে ক্রুশে দেবার আদেশ দেয় এবং অবশেষে রোমানরা তাঁকে ক্রুশে দেয়।[৬][৭][৮] ক্রুশবিদ্ধ করার আগে যিশু খ্রিস্টের শরীর থেকে তার কাপড় খুলে নিয়ে তাকে চাবুকের আঘাত করা হয় এবং পিত্ত মেশানো আঙ্গুর রস খেতে দেওয়া হয়। এবং যিশুর সাহাবী মথির লেখা সুসমাচার অনুযায়ী পরে তাকে দুইজন দন্ডপ্রাপ্ত দস্যুর মাঝে তাঁকে ক্রুশে দেওয়া হয় এবং তার ক্রুশের উপর বিদ্রুপ করে লিখে দেওয়া হয় " INRI " অনুবাদ করলে যার অর্থ দাঁড়ায় " এই ব্যক্তি যিশু, ইহূদীদের রাজা " যার উল্লেখ তাঁর সাহাবী ইউহোন্না যাকে যোহন বলা হয় তার লেখা সুসমাচারে পাওয়া যায়। ইউহোন্না আরো উল্লেখ করেছেন যে যিশুকে ক্রুশে দেবার পর সৈন্যরা তাঁর জামাকাপড় লটারী করে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়। চারটি সুসমাচারের মধ্যে ইউহোন্না বা যোহনের লেখা সুসমাচারে উল্লেখ আছে যে, যিশুকে ক্রুশে দেবার পর একজন সৈন্য তার দেহে বর্শা দিয়ে খুঁচিয়ে নিশ্চিত হন যে তিনি মারা গেছেন কিনা। বাইবেল অনুসারে যিশু খ্রিস্ট ক্রুশেবিদ্ধ থাকা অবস্থায় সাতটি বাণী দেন এবং তার জীবদ্দশায় তিনি অনেক অলৌকিক কাজ করেন।
যিশুর এই কষ্টভোগ এবং পরিত্রানের জন্য ক্রুশবিদ্ধ হওয়া খ্রিস্টান ধর্মতত্ত্ব অনু্যায়ী মানুষের পরিত্রান ও পাপ থেকে মুক্তির মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত।
সবশেষে মাত্র ১০ থেকে ১২ জন শিষ্য রেখে ক্রুশে ঝুলে কাতরাতে থাকেন। চেতনা ফিরে আসলে স্ত্রী মেরী ম্যাগদোলিন আর কন্যা সারাহকে(
en.m.wikipedia.org/wiki/Jesus_bloodline) নিয়ে পালিয়ে যান এবং একজন সাধারণ কৃষকের মত সাধারণ জীবনযাপন করে সাধারণভাবেই মারা যান।
যিশুর বাপ্তিস্ম (জলে অভিষেক) এবং ক্রুশবিদ্ধ করনের বিষয় দুটি ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত দুটি সত্য ঘটনা বলে বিবেচিত হয়[4][5]। James Dunn উল্লেখ করেছেন যে, " যিশুর জীবনের দুইটা ঘটনা প্রায় সর্বজন স্বীকৃত " এবং " ক্রমবিন্যাস করলে যা একদম উপরের সারিতে আসে যা ' অস্বীকার বা সন্দেহ করার সুযোগ নেই বললেই চলে " এবং ঐতিহাসিক যিশুকে নিয়ে যেকোন গবেষণার ক্ষেত্রে এই বিষয় গুলো মূল ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। Bart Ehrman বলেছেন যে, পন্টিয়াস পিলাতের আদেশে যিশুর ক্রুশবিদ্ধকরনের ঘটনাটি তাঁর সম্পর্কে সবচেয়ে নির্দিষ্ট ঘটনা। John Dominic Crossan বলেন যে , "যিশুর ক্রুশবিদ্ধকরণটি কোন ঐতিহাসিক ঘটনা যতটা সত্য হতে পারে তার মতই সত্য " Eddy and Boyd বলেন যে, বিষয়টি এখন "দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত" যে যিশুর ক্রুশবিদ্ধকরণের বিষয়টা খ্রিস্টান ব্যতীত অন্য উৎসেরও নিশ্চয়তা রয়েছে।Craig Blomberg বলেছেন যে, ঐতিহাসিক যিশুর বিষয়ে তৃতীয় অনুসন্ধানে অধিকাংশ গবেষকই ক্রুশবিদ্ধকরন বিষয়টাকে তর্কাতীত বলে মনে করেন।Christopher M. Tuckett বলেছেন যে, যদিও যিশুর মৃত্যুর সঠিক কারণটি নির্ধারণ করা বেশ কঠিন , কিন্তু এটা একটা অবিতর্কনীয় বিষয় যে তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল।
গবেষকরা ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার ঐতিহাসিক সত্যতার সাথে একমত হলেও , ক্রুশবিদ্ধকরনের কারণ ও দৃষ্টিকোণ নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ আছে। উদাহরণস্বরূপ, E. P. Sanders এবং Paula Fredriksen উভয়ই ক্রুশবিদ্ধের ঐতিহাসিক সত্যতা সমর্থন করলেও একথা বলেন যে, যীশু তাঁর নিজের ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে কোন ভবিষ্যদ্বাণী করেননি এবং ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী করার যে কথাটি প্রচলিত আছে তা আসলে "গির্জায় সৃষ্ট" (পৃঃ 1২6)।Geza Vermes আবার ক্রুশবিদ্ধকরনের বিষয়টা একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে দেখেন কিন্তু এটির পিছনে নিজস্ব ব্যাখ্যা এবং পটভূমি প্রদান করেন।
John P. Meier যিশুর ক্রুশবিদ্ধকরনকে ঐতিহাসিক সত্য হিসেবে দেখেন এবং বলেছেন যে, criterion of embarrassment বা বিব্রতকর পরিস্থিতির মানদন্ড এর উপর ভিত্তি করে এটা বলা যে, খ্রিস্টানরা নিশ্চয় তাদের নেতার বেদনাদায়ক মৃত্যু নিজেরা বানিয়ে লিখে থাকবে না।Meier বলেছেন যে, অন্যান্য মানদণ্ডগুলি যেমন, একাধিক সাক্ষ্যের মাপদণ্ড (একাধিক উৎসের দ্বারা নিশ্চিতকরণ) এবং দৃঢ়তার পরিমাপ (অর্থাৎ, এটি অন্যান্য ঐতিহাসিক সত্যতার সাথে একমত পোষণ করে) যিশুর ক্রুশবিদ্ধকরণকে একটি ঐতিহাসিক সত্য ঘটনা হিসেবে প্রতিষ্ঠ করতে সাহায্য করে।
যদিও ক্রুশবিদ্ধকরণ সংক্রান্ত প্রায় সব প্রাচীন উৎস পুঁথিগত বা দলিলভিত্তিক, 1968 সালে জেরুজালেমের উত্তরপূর্বাঞ্চলে প্রথম শতাব্দীতে ক্রুশবিদ্ধ হওয়া এক ব্যক্তির দেহের পুরাতাত্ত্বিক আবিষ্কারে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণি ত হয়েছে যে, প্রাচীন রোমান যুগে ক্রুশবিদ্ধকরনের ঘটনা ঘটেছিল এবং তার ধরন বাইবেলের সুসমাচারে বর্ণনা করা যিশুর ক্রুশবিদ্ধকরনের সাথে প্রায় সম্পূর্ণ মিলে যায়। ক্রুশবিদ্ধ মানুষটিকে Yehohanan ben Hagkol বলে চিহ্নিত করা হয় এবং ধারণা করা হয় রোমের বিরুদ্ধে ইহুদি বিদ্রোহের সময় প্রায় 70 খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যু হয়। Hadassah Medical School এর এক গবেষণায় ধারণা করা হয় যে লোকটি ২০ বছর বয়সে মারা যায়। আরেকটি প্রাসঙ্গিক প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান হচ্ছে , যা খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীর হিসেবে ধারণা করা হয়, জেরুজালেম কবরস্থানে আবিষ্কৃত একটি অজ্ঞাত গোড়ালি হাড় এবং সঙ্গে একটি কাঁটা, যা এখন ইস্রায়েল প্রাচীন সম্পদ কর্তৃপক্ষ দ্বারা সংরক্ষিত এবং ইস্রায়েল যাদুঘরে প্রদর্শিত।
যিশুর মৃত্যুর ব্যাপারে বিস্তারির প্রথম বিবরণটি পাওয়া যায় বাইবেলে বর্ণিত চারটি সুসমাচারে। নতূন নিয়মের অন্যান্য বইতেও আরও অস্পষ্ট রেফারেন্স রয়েছে। এই সুসমাচারে, যিশু তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি তিনটি আলাদা পর্বের মধ্যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। চারটি সুসমাচারই বর্ণিত হয়েছে যিশুর গ্রেফতারের বিস্তারিত, পুরোহিতদের আদালতে প্রাথমিক বিচারের নামে প্রহসন, রাজা পীলাতের চূড়ান্ত বিচার, যেখানে তাকে চাবুক মারা হয় এবং দোষী হিসেবে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার স্থান পর্যন্ত অন্য কেউ তাঁর ক্রুশ বহন করে নিয়ে যাওয়ার কথা শুধুমাত্র যোহনের সুসমাচারের উল্লেখ পাওয়া যায়, যদিও যিশুকে চাবুক মারা ও আরো অত্যাচার করার পরও একটা সময় পর্যন্ত নিজের ক্রুশ বহন করতে বাধ্য করা হয়। অতঃপর তার ক্রুশবিদ্ধকরন, সমাধি এবং পুনরুত্থানের বিবরণ দিয়ে শেষ হয়। বাইবেলে উল্লেখিত সুসমাচার এবং অন্যান্য বইগুলিতে তাঁর মৃত্যু আত্মত্যাগ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রতিটি সুসমাচারে যিশুর জীবনের এই পাঁচটি ঘটনার কাহিনীর অন্য যে কোন ঘটনার তুলনায় অধিক বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। গবেষকরা বলেন যে পাঠকরা এখান থেকে এই ঘটনার প্রায় প্রতি ঘণ্টার হিসাব পান যে আসলে কি ঘটেছিল।
একবার গলগথাতে, যিশুকে পিত্ত মেশানো আঙ্গুর রস দেওয়া হয়েছিল। তার সাহাবী বা শিষ্য মথি এবং মার্ক এর সুসমাচারে উল্লেখ করেছেন যে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন । তারপর তাঁজে ক্রুশবিদ্ধ করা হয় এবং দুই দোষী সাব্যস্ত চোরের মধ্যে তাঁকে ঝুলানো হয়। মূল গ্রীক থেকে কিছু অনুবাদ অনুযায়ী, চোররা দুজন বেন্ডিট অথবা ইহুদি বিদ্রোহী হতে পারে। মার্কের সুসমাচারের মতে, তিনি তৃতীয় ঘণ্টা (আনুমানিক সকাল ৯ টা) হতে প্রায় ছয় ঘণ্টা (আনুমানিক বিকাল ৩টা) তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার যন্ত্রণা ভোগ করেন। যিশুকে ক্রুশে দেবার পর সৈন্যরা তার ক্রুশে তাঁর মাথার উপর একটা ফলক লাগিয়ে দেয় যেখানে লেখা ছিল, " নাসারতী যিশু, যিঁনি ইহূদীদের রাজা" যোহনের সুসমাচার অনুযায়ী যা তিনটি ভাষায় লেখা ছিল এবং যোহনের সুসমাচারে আরো উল্লেখ পাওয়া যায় যে সৈন্যরা তাঁর পোশাকগুলি বা তার কাপড়গুলি ভাগ করে নেয়। যোহনের সুসমাচার অনুযায়ী, রোমীয় সৈন্যরা যিশুর পা ভেঙে ফেলেননি, যা তারা ক্রুশবিদ্ধ অন্যান্য দুজনের ক্ষেত্রে করেছিল (পা ভেঙে ফেললে ক্রুশবিদ্ধকরন প্রক্রিয়াটি তাড়াতাড়ি হয়), কারণ যিশু ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছিলেন ।প্রতিটি সুসমাচারে যীশুর শেষ বাক্যগুলির নিজস্ব বিবরণ রয়েছে, এবং সাতটি বিবৃতিকে একসাথে জুড়ে দিয়েছে। Synoptic Gospels মধ্যে, ক্রুশবিদ্ধকরনের সময় বিভিন্ন অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটার কথা বর্ণনা করা হয়েছে , যার মধ্যে অন্ধকারাচ্ছন্নতা, একটি ভূমিকম্প, এবং (মথির সুসমাচারে) পুনরুত্থান। যিশুর মৃত্যুর পর, তার দেহটি অরিমাথের জোসেফ ক্রুশ থেকে নামিয়ে এবং নিকোডেমাসের সহায়তায় একটি পাথর-খোদাই সমাধিতে কবর দিয়েছিল।
চারটি সুসমাচার মতে, যিশুকে " মাথার খুলি নামক স্থান" এ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং দুইজন চোরের সাথে "ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল "ইহুদীদের রাজা" দাবির করার অভিযোগে, এবং সৈন্যরা তার মৃত্যু এবং মাথা নিচু করার আগেই তার কাপড় ভাগ করে ফেলে । তার মৃত্যুর পর, অরিমাথিয়ার জোসেফ পিলাত থেকে মৃতদেহ চান এবং একটি নতুন বাগানের কবরের মধ্যে তা সমাধিস্থ করেন।
তিনটি সুসমাচার এছাড়াও ক্রিয়েনের সাইমন কর্তৃক যীশুর ক্রুশ বহনের বর্ণনা, চোর / ডাকাত/ বিদ্রোহীদের সঙ্গে যীশুকে অপমান করা, এবং ষষ্ঠ থেকে নবম ঘণ্টা অন্ধকারাচ্ছন্নতা, এবং মন্দির পর্দা শীর্ষ থেকে নিচে ছিড়ে যাওয়ার বর্ণনা করে। সুসমাচার গুলো এসকল ঘটনার অনেক সাক্ষীর উল্লেখ করে যার মধ্যে এক জন সেনা সহ কয়েকজন মহিলা যারা দূর থেকে দেখেছিল এমনকি তাদের দুইজন সমাধীর সময়ো উপস্থিত ছিল।
লূক একমাত্র সুমাচার লেখক যিনি খাঁটি মদ মিশ্রণের বিবরণটি বাদ দিয়েছিলেন যা ঈসা মসিহকে একটি খাগড়াতে দেওয়া হয়েছিল, যখন কেবল মার্ক এবং যোহন ইউসুফকে ব্যাখ্যা করেছেন যে যোসেফ তাঁর দেহটি ক্রুশ থেকে নামিয়েছিলেন।
অনেক বিশদ বিবরণ রয়েছে যা শুধুমাত্র সুমাচার অ্যাকাউন্টগুলির একটিতে পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, শুধুমাত্র মথি তার সুসমাচারে একটি ভূমিকম্প উল্লেখ করে, পুনরুত্থিত সন্তানের যারা শহর গিয়েছিলেন এবং রোমান সৈন্যদের সমাধি রক্ষা করার জন্য নিযুক্ত করা হয়, মার্ক ক্রুশবিদ্ধ করার প্রকৃত সময় (তৃতীয় ঘণ্টা, অথবা 9 am ) এবং যীশুর মৃত্যুর বিষয়ে সেনাপতির বর্ণনার কথা উল্লেখ করেছেন। লূকের অনন্য অবদানসমূহের সুসমাচারে শোকগ্রস্থ মহিলাদের প্রতি যীশুর বাণীর কথা বলা হয়েছে, এক অপরাধী কর্তৃক অন্যকে তিরস্কার, বিশ্রামবার আসার আগেই মহিলাদের মশলা ও পেঁয়াজ প্রস্তুত করে রাখার কথা। যোহন একমাত্র সেই অনুরোধটি উল্লেখ করেছেন যীশুর পা ভেঙ্গে যায় এবং সৈনিকের যিশুর বুকের পাশে (ওল্ড টেস্টামেন্টের ভবিষ্যদ্বাণীর পূরণ হিসেবে) বর্শা দিয়ে খুচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে, সেইসাথে নিকোডেমাস কর্তৃক যোষেফকে সাহায্য করা যিশুকে কবর দেবার কাজে
করিন্থীয়দের প্রথম চিঠি অনুযায়ী (1 কর। 15: 4), ঈসা মশীহ পুনরায় জীবিত হন। ("তৃতীয় দিনে" ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার দিনটিকে ১ম দিন গণনা করে) এবং কালক্রমিক সুমাচার অনুযায়ী কয়েকবার তাঁর শিষ্যদের কাছে হাজির হন স্বর্গে আরোহণ করারআগে। প্রেরিতদের প্রেরিত কাজের বিবরণ, যা ঈসা মসিহ চল্লিশ দিনের জন্য প্রেরিতদের সাথে রয়েছেন বলে লূকরের সুসমাচারের বিবরণ থেকে আলাদা, যা ইস্টার সানডে এবং অ্যাসেনশনের ঘটনাগুলির মধ্যে কোন স্পষ্ট পার্থক্য সৃষ্টি করে না। যাইহোক, বেশিরভাগ বাইবেলের পণ্ডিতরা সম্মত হন যে সেন্ট লুকও প্রেরিতদের প্রেরিতদের রচনা করেছিলেন তাদের সুমাচার অ্যাকাউন্টে ফলো-আপ ভলিউম হিসাবে, এবং দুটি কাজকে সম্পূর্ণরূপে বিবেচনা করা উচিত
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ