‘পতঞ্জলির অষ্টাঙ্গ যোগ’গুলো হচ্ছে- যম (Yama), নিয়ম (Niyama), আসন (Asana), প্রাণায়াম (Pranayama), প্রত্যাহার (Pratyahara), ধারণ (Dharana), ধ্যান (Dhyana) ও সমাধি (Samadhi)।
এবং বলা হয়ে থাকে যে, পতঞ্জলির এই অষ্টাঙ্গ-যোগের মধ্যেই নিহিত রয়েছে শরীর ও মনের গূঢ় সম্পর্ক সূত্রগুলো। কীভাবে ? তা বুঝতে হলে পতঞ্জলির দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েই প্রথমে আমাদেরকে বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
১.০ যম (Yama): অষ্টাঙ্গ যোগের প্রথম অঙ্গ ‘যম’ হচ্ছে মূলত কিছু মরাল কোড (moral codes)। এগুলো সেই সূত্র যেখানে ব্যক্তি তাঁর পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে কীরকম আচরণ করবে তার ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এজন্য ‘যম’-কে ব্যক্তির সামাজিক আচরণ সূত্র বা নৈতিক আচরণবিধিও বলা হয়। যম পাঁচ ধরনের-
১.১ অহিংসা (ahimsa) বা Nonviolence : মানুষ, প্রাণী, প্রকৃতি বা সৃষ্টিজগতের কোন সৃষ্টির প্রতিই চিন্তায় বা কর্মে আঘাত বা কোনরূপ ক্ষতি করার মানসিকতা পোষণ না করা। অর্থাৎ সব সময় নিজের ভেতরে বিদ্বেষহীন চিন্তা ও চেতনা ধারণ করে থাকা।
১.২ সত্য (satya) বা Truth and honesty : মিথ্যাকে সম্পূর্ণ বর্জন করে সত্যবাদিতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে যে কোন প্রতারণামূলক কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা। সর্বেক্ষেত্রে সততার চর্চায় নিজেকে নিয়োজিত করা।
১.৩ আস্থা (asteya) বা Nonstealing : কোন অনৈতিক সুবিধায় প্রলুব্ধ না হয়ে বা চিন্তায় ও কাজে পরমুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলায় মনোযোগী হওয়া। নিজস্ব ক্ষমতার উন্নয়নের মাধ্যমে নিজেকে নির্ভরযোগ্য করে গড়ে তোলা।
১.৪ ব্রহ্মচর্য (brahmacharya) বা Nonlust : ব্রহ্মচর্য মানে কিন্তু চিরকৌমার্য পালন নয়। বরং অপ্রত্যাশিত কাম-লালসায় আক্রান্ত না হয়ে সম্পর্কের পবিত্রতা অক্ষুণ্ন রাখার নামই ব্রহ্মচর্য। যোগচর্চাকারীরা স্বাভাবিক নিয়মেই পরিবার গঠন করতে পারেন। তবে তাকে কলুষমুক্ত স্বর্গীয় আভায় রাঙিয়ে তোলায় নিজেকে বিশ্বস্ত রাখার চর্চা করে যেতে হবে।
১.৫ অপরিগ্রহ (aparigraha) বা Nonpossessiveness : অপরিগ্রহ অর্থ হচ্ছে অগ্রহণ বা মুক্ত থাকা। অর্থাৎ প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু সংগ্রহ, মজুত বা ভোগের লিপ্সা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা। এখানে ‘প্রয়োজন’ শব্দটা যদিও একটা আপেক্ষিক বিষয় হিসেবে দাঁড়িয়ে যায়, তবু যা না হলেই নয় সেটুকু বিবেচনায় রেখে যতটুকু সম্ভব সহজ সরল একটা অনাড়ম্বর জীবন গড়ে তোলে নিজেকে জটিলতামুক্ত রাখা।
২.০ নিয়ম (Niyama): অষ্টাঙ্গ যোগের দ্বিতীয় অঙ্গ নিয়ম হচ্ছে মূলত আত্মশুদ্ধি ও অনুশীলনের (self-purification and study) সেই সব প্রণিধান, যার মাধ্যমে ব্যক্তি তাঁর অন্তর্গত শৃঙ্খলা ও দায়িত্ববোধের চর্চার মধ্য দিয়ে নিজেকে আত্মশুদ্ধ করে তোলে। নিয়মও পাঁচ ধরনের-
২.১ শৌচ (shauca) বা Purity : পাঁচটি ‘ওঁম’ চর্চার মাধ্যমে নিজের ভেতরে ধারণ করে রাখা নেতিবাচক মনোদৈহিক চেতনাগুলো বর্জন করে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে তোলার পাশাপাশি নিজেকে এবং নিজের পরিচ্ছদ ও পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখা, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ ইত্যাদি নিরাপদ অভ্যাস গড়ে তোলা। নিয়মের মূল কথা হচ্ছে শরীরকে পূত পবিত্র আরাধনালয়ের মতো যোগ্য করে তোলা।
২.২ সন্তোষ (santosha) বা Contentment : সন্তোষ মানে হচ্ছে পরিতৃপ্তি। যখন যে অবস্থায় থাকা যায় সে অবস্থাকে সুখকর মনে করে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে পরিতৃপ্ত ও শান্তিদায়ক পরম সুখাবস্থার আত্মিক অন্বেষণ করা।
২.৩ তাপস (tapas) বা Austerity : তাপস মানে আত্ম-সংযম। এর মাধ্যমে দেহ মন ও বাক্যে পরিপূর্ণ শৃঙ্খলা প্রদর্শন করা। এই আত্ম-শৃঙ্খলা উন্নয়নের লক্ষ্য এই নয় যে কঠোর তপস্বী বা যোগী বনে যাওয়া। বরং দেহ ও মনকে নিয়ন্ত্রণ করে উচ্চতর আত্মিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রস্তুত করে তোলা।
২.৪ স্বাধ্যায় (svadhyaya) বা Study of sacred text : স্বাধ্যায় হচ্ছে আত্মোন্নয়নে সহায়তাকারী ও অনুপ্রেরণাদায়ী প্রাসঙ্গিক গ্রন্থাদি থেকে পাঠ গ্রহণ করা। কেননা শিক্ষা ও অধ্যয়নই পারে ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গিকে পরিশুদ্ধ ও স্বচ্ছ করে গড়ে তুলতে। একজন স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন ব্যক্তির মধ্যেই এ উপলব্ধির উন্মেষ ঘটা সম্ভব যে কেবল ভোগ নয়, শ্রদ্ধার মধ্য দিয়েই যাবতীয় সৃষ্টি হয়ে উঠে আরো বেশি অর্থবহ। সৃষ্টি পবিত্র, স্বর্গীয়। এবং গোটা মহাবিশ্বপ্রকৃতি যে মহাশক্তি ধারণ করে আছে, সেই একই শক্তি বয়ে গেছে তাঁর মধ্যেও, মহাসৃষ্টির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ বলেই।
২.৫ ঈশ্বর-প্রণিধান (ishvara-pranidhana) বা Living with an awarness of the Divine : আপতিক বিশ্বাসে সৃষ্ট সেই স্বর্গীয় সত্ত্বার প্রতি নিজেকে এক পরম আধ্যাত্মিক আনন্দে বিলিয়ে দেয়া।
.
৩.০ আসন (Asana):অষ্টাঙ্গ যোগের তৃতীয় অঙ্গ আসন হচ্ছে দেহকে নির্দিষ্ট বা বিশেষ ভঙ্গিতে বিন্যস্ত বা স্থাপিত করা (posture)। এর মাধ্যমে দেহকে ধ্যান বা মেডিটেশনের জন্য সুস্থ ও উপযুক্ত করে গড়ে তোলা। শারীরিক এই চর্চা দেখতে সহজসাধ্য হলেও তা পরিপূর্ণ শৃঙ্খলার মধ্যদিয়ে নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে দেহকে রোগমুক্ত, কর্মক্ষম ও অসীম প্রাণশক্তি ধারণের উপযোগিতায় উন্নীত করার কর্তৃত্বসম্পন্ন একটি পদ্ধতি। গভীর ধ্যানস্থ অবস্থায় একই আসনে অভিন্ন ভঙ্গিতে দীর্ঘসময় ধরে বসে থাকতে হয়। এজন্য দেহকে অত্যন্ত নমনীয় ও সহনশীল হতে হয় বলে প্রাচীন যোগী-ঋষিরা বিভিন্ন আসন চর্চার মাধ্যমে দেহকে ধ্যানের জন্য প্রস্তুত করে তুলতেন। বিক্ষিপ্ত দেহকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই মনকেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। পতঞ্জলির মতে, নিয়মিত যোগাসন চর্চা দেহ ও মনকে প্রচণ্ড চাপ ও বিশ্রামহীনতার ক্লান্তি থেকে সহজেই মুক্তি দিতে পারে।
.
৪.০ প্রাণায়াম (Pranayama): অষ্টাঙ্গ যোগের চতুর্থ অঙ্গ প্রাণায়াম হচ্ছে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ (breath control)। এই শ্বসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি দেহধারী প্রাণী প্রকৃতি থেকে প্রয়োজনীয় প্রাণশক্তি আহরণ করে। প্রাণের আয়াম অর্থাৎ প্রাণের দীর্ঘতাই প্রাণায়াম। সঠিক নিয়মে এই শ্বাস গ্রহণ, ধারণ এবং বর্জন বা ত্যাগকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মূলত অফুরন্ত প্রাণশক্তির ধারক ও বাহক হিসেবে দেহের অকল্পনীয় স্থিতিশীলতা আনয়ন সম্ভব বলে পতঞ্জলি মনে করেন। তাঁর মতে যোগীর জীবনকাল দিন গণনা দিয়ে নয়, বরং শ্বাস প্রশ্বাসের সংখ্যা দিয়েই নির্ধারিত হয়। বুক ভরে বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহণ এবং গভীর শ্বসন প্রক্রিয়ায় শরীরের দুষিত বাতাস ত্যাগের মাধ্যমে ভেতরের সব রোগ জ্বরা বিদেয় করে দীর্ঘজীবী দেহ ও এক আলোকোজ্জ্বল মনকে ধারণ করার কৃতিত্ব অর্জন করার প্রচেষ্টাই এই প্রাণায়াম চর্চা।
.
৫.০ প্রত্যাহার (Pratyahara): অষ্টাঙ্গের পঞ্চম অঙ্গ। যোগশাস্ত্রে প্রত্যাহার মানে হচ্ছে ইন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রণ (sense control)। স্পর্শ, ঘ্রাণ, শ্রবণ, স্বাদ, দর্শন বা ইন্দ্রিয়সমূহকে তাদের কর্মক্ষম অবস্থা থেকে মনের একাগ্র ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে প্রত্যাহার করে নেয়া বা ফিরিয়ে নেয়ার কৌশল। যাতে যোগী না চাইলে এইসব ইন্দ্রিয়গুলো কোনরূপ সংবেদনশীলতায় কোন সাড়া না দেয়। ধ্যান, প্রাণায়াম বা যোগাসন চর্চাকালীন যে কোন সময় বিক্ষিপ্ত মনকে বহির্মূখী অবস্থা থেকে অন্তর্মূখী করার একাগ্রতাই প্রত্যাহার। ক্রমাগত এই চর্চার মধ্য দিয়ে নিজের ইচ্ছাশক্তিকে এমন পর্যায়ে উন্নীত করা যেন ধ্যানস্থ অবস্থায় বাইরের কোন সংবেদনশীলতাই দেহমনকে আর অনাহুত আক্রান্ত করতে না পারে।
.
৬.০ ধারণ (Dharana): অষ্টাঙ্গের ষষ্ট অঙ্গ হিসেবে যোগশাস্ত্রে ‘ধারণ’ মানে মন-সংযোগ বা একাগ্রতা (concentration)। ধারণ বা একাগ্রতা হচ্ছে কোন একটা বিশেষ বস্তু, বিন্দু বা ইমেজের উপর মনকে স্থিত করার অনুশীলন। পতঞ্জলির মতে কোন একটি বিশেষ জায়গায় চিন্তাগুলোকে আবদ্ধ করাই একাগ্রতা। মোমের শিখা বা কোন একটি ফুল বা কোন একটি মন্ত্রের উপর দৃষ্টি বা চিন্তাকে স্থাপন করে আরো বেশি মনোযোগ স্থাপন করা এবং সমস্ত ভাবনা একমুখী করে সুনির্দিষ্ট ঐ বিষয়ের দিকে শান্ত সমাহিতভাবে পরিচালিত করা, যাতে মন ঐ নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতেই পূর্ণ সংবদ্ধ হয়ে উঠে। মনের উপর কোনরূপ বলপ্রয়োগহীন অনায়াস একাগ্রতায় মনঃসংযোগই ‘ধারণ’। সময়প্রবাহের বোধশূণ্যতাই মনঃসংযোগকে একাগ্র করে তোলে।
.
৭.০ ধ্যান (Dhyana): অষ্টাঙ্গ যোগের সপ্তম অঙ্গ ধ্যান হচ্ছে একটা গভীর বিবেচনাশীল অবস্থা (meditation)। অর্থাৎ কোন বস্তু বা বস্তুনিচয়ের সহায়তা ছাড়া অব্যহত মেডিটেশন বা প্রশান্তিময় অবস্থার নামই ধ্যান। মনকে পরিপূর্ণ ইচ্ছাশক্তি দিয়ে কোন অতীন্দ্রিয় লক্ষ্য বা ভাবের মধ্যে কেন্দ্রীভূত করা। ‘ধারণ’ বা একাগ্রতাই পরবর্তীধাপে মেডিটেশনের দিকে পরিচালিত হয়। মেডিটেশনের লক্ষ্য কোন অসার (nothingness) বা নির্জ্ঞান অবস্থা (unconsciousness) প্রাপ্তি নয়। বরং এক অন্তর্গত অতিচেতন অবস্থায় এই মহাপ্রকৃতির (universe) সাথে গভীর একাত্মবোধে (oneness) উন্নীত হওয়া। ‘ধারণ’ অবস্থা বা একাগ্রতার (concentration) সাথে ধ্যান বা মেডিটেশনের পার্থক্য হচ্ছে, মন বা সত্ত্বা যতক্ষণ পর্যন্ত বিক্ষেপ প্রবণ (awareness of distraction) থাকে ততক্ষণ প্রয়োজন হয় একাগ্রতার। আর তার পববর্তী ধাপে অস্থির জীবনযাত্রায় উত্তেজনাময় ব্যক্তিসত্ত্বার একান্ত দৃষ্টিভঙ্গিতে মেডিটেশন যে প্রশান্তিময় গভীর উপলব্ধির বাড়তি মাত্রা এনে দেয়, তা সত্যি এক অভূতপূর্ব অর্জন !
.
৮.০ সমাধি (Samadhi): সমাধি হচ্ছে পতঞ্জলির অষ্টাঙ্গ যোগ সাধনার চূড়ান্ত লক্ষ্য পরম সুখাবস্থা (absolute bliss)। এটা একটা অতীন্দ্রিয় উপলব্ধির (superconsciousness) চূড়ান্ত ভাবগত অবস্থা (pure contemplation), যেখানে ব্যক্তির আধ্যাত্মিক উপলব্ধি আর এই মহাবিশ্বপ্রকৃতি মিলেমিশে এক হয়ে যায়। যোগশাস্ত্র মতে জীবাত্মার সাথে পরমাত্মার এক তূরীয় আনন্দময় মিলনই সমাধি অবস্থা। এর লক্ষ্য হলো এই মহাবিশ্বপ্রকৃতির প্রতিটা অণুপরমাণুর চেতনাগত অবস্থার সাথে জীবাত্মার নিজেকে আধ্যাত্মিক বিলীন করে দেয়া।
যোগ সাধনার মৌলিক দর্শনই হচ্ছে কঠিন সাধনার মাধ্যমে স্রষ্টার সাথে সৃষ্টির মিলেমিশে একাকার হয়ে পরমানন্দময় অবস্থায় উন্নীত হওয়ার মোক্ষলাভ। পতঞ্জলির অষ্টাঙ্গযোগের লক্ষ্যও তাই। সাধনার চূড়ান্ত অবস্থায় এই অষ্টাঙ্গের সবগুলো অঙ্গই একইসাথে ক্রিয়াশীল থাকে। তবে অনুশীলনকালীন চর্চার ক্ষেত্রে প্রতিটা পর্যায় ধাপে ধাপে সফলভাবে সাধনলাভের মধ্য দিয়ে এগুতে হয়। এই আটটি ধাপের প্রথম পাঁচটি অর্থাৎ ওঁম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম এবং প্রত্যাহার হচ্ছে যোগশাস্ত্রের প্রাথমিক ধাপ যা সফলভাবে অর্জিত হলেই কেবল আধ্যাত্ম চেতনার ভিত্তি স্থাপিত হয় বলে ধরে নেয়া হয়। এই প্রাথমিক ধাপের সাফল্যে দেহের সাথে চেতনার এক আত্মিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়। প্রথম পাঁচটি ধাপ যথাযথ ও পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণে না এলে পরবর্তী ধাপে উত্তরণ কখনোই সম্ভব নয়। কেননা পরবর্তী ধাপেই রয়েছে একজন যোগীর জন্য আধ্যাত্মিক একাত্মতা উপলব্ধির, যাকে বলে, আলোকপ্রাপ্তিযোগ। এই আলোকপ্রাপ্তি হচ্ছে এক ঐশ্বরিক আলোর চিরায়ত দীপ্তিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠার এমনই এক কলকুণ্ডলিনী অবস্থা, অতি নগন্য কোন বিচ্যুতিও পরবর্তী পর্যায়গুলোর জন্য সাধ্যের অতীত অসাধ্যের অসাধ্য হয়ে থাকে।
.
সাধারণ ব্যক্তিমানুষের জন্য সাধনার চূড়ান্ত অর্জন আদৌ কি সম্ভব ? হয়তো তা এক কাল্পনিক অবস্থা। কিন্তু এই ধারাবাহিক চর্চা সেই অসাধ্য সাধন করতে না পারলেও সাধারণকে অসাধারণ করে তোলার অকল্পনীয় ক্ষমতা যে মানুষের মনোদৈহিক আত্মনিয়ন্ত্রণের মধ্যে লুক্কায়িত রয়ে গেছে, তা আজ আর কেউ অস্বীকার করেন না। অনুশীলনের মাধ্যমে ফললাভের ব্যবহারিক গুরুত্ব বিবেচনায় একটা সুপ্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্যের আধ্যাত্মিক দর্শন কীভাবে প্রায়োগিক দর্শন হিসেবে মানববিশ্বের সর্বস্তরে ছড়িয়ে যেতে পারে।
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ