অথর্ব্বেদের প্রাচীনতা - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

09 June, 2019

অথর্ব্বেদের প্রাচীনতা

অনেকের বিচার এই যে, অথর্ববেদ ঋগাদি তিন বেদের পশ্চাৎ রচনা হয়েছে। তারা এই বিষয়ের সমর্থনে দুটি তর্ক প্রস্তুত করে থাকে, প্রথমত - অনেক জায়গাতে ত্রয়ীবিদ্যার নাম এসেছে যা ঋগবেদ, যজুর্বেদ, সামবেদ কে বুঝায় আর দ্বিতীয়ত অথর্বেদের নাম অন্য তিন বেদে আসে নি, এজন্য অথর্ববেদ অর্বাচীন । আমরা এই দুই যুক্তি খণ্ডণের মাধ্যমে প্রমাণের চেষ্টা করবো যে অথর্ববেদ অর্বাচীন নয়।

যেসব লোক বলে যে, ত্রয়ীবিদ্যার অভিপ্রায়, ঋগ, সাম, যজু তা ঠিক নয়। কারণ ত্রয়ীবিদ্যার তাৎপর্য হচ্ছে জ্ঞান, কর্ম, উপাসনা। আর জ্ঞান, কর্ম ও উপাসনার বর্ণনা চার বেদেই এসেছে এজন্য চার বেদকেই ত্রয়ী বিদ্যা বলা হয়। মহাভারতে বলা হয়েছে -
ত্রয়ীবিদ্যামবক্ষেত বেদেষুক্তামথাঙ্গতঃ। ঋকসামবর্ণাক্ষরতো যজুষোহথর্বণস্তথা।।
(মহাঃ শান্তি পর্ব ২৩৫।১)
অর্থাৎ ঋগ,যজু, সাম এবং অথর্ববেই ত্রয়ীবিদ্যা রয়েছে। এখানে ত্রয়ীবিদ্যার সাথে চার বেদের নাম দেওয়া হয়েছে, যাতে জ্ঞাত হয় যে,ত্রয়ীবিদ্যার অভিপ্রায় চার বেদই। আর চার বেদে তিন প্রকারের মন্ত্র রয়েছে এজন্যও বেদ কে ত্রয়ী বলা হয়। মীমাংসা দর্শনে তিন প্রকারের মন্ত্রের বর্ণনা করে বলা হয়েছে যে,
তেষাং ঋগ যত্রার্থবশেন পাদ ব্যবস্থা।৩৫।।
গীতিষু সামাখ্যা।। ৩৬
শেষে যজুঃ শব্দ।।৩৭।।
(পূর্বমীমাংসা ২।১।৩৫-৩৭)
অর্থাৎ যাহার মধ্যে পাদ ব্যবস্থা তাকে ঋক বলা হয়। যে মন্ত্র গায়ন করা হয় তাকে সাম এবং বাকী মন্ত্র যজুর্বেদের অন্তর্গত। এতে জ্ঞাত হওয়া যায় যে, চার বেদ কে তিন বিভাগে বিভক্ত করার কারণ মন্ত্রের তিন প্রকার এবং মন্ত্রে প্রতিপাদিত তিন (জ্ঞান,কর্ম,উপাসনা) বিষয়ই। বেদের ত্রয়ী নামের রহস্য এবং চার বেদের অভিন্নতা সম্পর্কে বহুল প্রসিদ্ধ ভাষ্যকার দূর্গাদাস লাহিড়ী বলেছেন -
"সাধারণত একটি ধারণা আছে, ঋক, সাম, যজু এই তিন বেদের তুলনায় অথর্ববেদের উপযোগীতা অতি অল্পই পরিলক্ষিত হয়। এক সময় আমাদের সেই ধারণা ছিলো বেদের ত্রয়ী নাম দৃষ্টে এবং "অথর্ব্ব" এই সঙ্গার প্রচলিত অর্থ দেখিয়া, পূর্বোক্ত ধারণাই বদ্ধমূল হয়। ত্রয়ী শব্দে ঋক, সাম, যজু আর অথর্ববেদ শব্দে যজ্ঞকর্মে অব্যবহার্য সূতরাং অথর্ব্ব - এইরূপ অর্থ প্রচলিত আছে। কেন যে এ প্রকার অর্থ প্রচলিত, তাহার মূল অনুসন্ধান করিয়া পাওয়া সুকঠিন। অথর্ববেদাধ্যায়িগণের প্রতি ঈর্ষা বশতঃ অন্য বেদাধ্যায়িগণের কেহ সম্ভবতঃ "অথর্ব্ব" শব্দের ওইরূপ পরিকল্পনা প্রচার করিয়া যান। তাহারই ফলে এখন ঐ ভাব বিস্তৃত হইয়া পড়িয়াছে। প্রকৃতপক্ষে কিন্তু অথর্ববেদের উপযোগীতা সর্বত্রই পরিলক্ষিত হয়।
যজ্ঞের কর্ম চতুর্বিধ, হোতৃ, উদগাতৃ, অধ্বর্য়ু এবং ব্রহ্ম। ঋগাদি বেদত্রয়ে প্রথমোক্ত তিন কর্ম সম্পাদিত হয়। চতুর্থ যে ব্রহ্মকর্ম তাহা অথর্ববেদ সাপেক্ষ। এমন কি শ্রুতিতে আছে, যজ্ঞকর্ম দুই ভাগে বিভক্ত তাহার এক ভাগ প্রথমোক্ত তিন বেদের দ্বারা সম্পন্ন হয় এবং শেষভাগ অথর্ববেদের উপর নির্ভর করে।
বেদের যে ত্রয়ী নাম হইয়াছিলো, তাহার উদ্যেশ্য অন্যরূপ। গদ্যাংশ, পদ্যাংশ, গান (ঋক, যজুঃ, সাম) বেদের মধ্যে এই তিন আছে বলিয়া বেদের নাম ত্রয়ী হয়। নচেৎ কেবলই যে গদ্য, কেবলই যে পদ্য, কেবলই যে গান লইয়া ভিন্ন ভিন্ন বেদ গ্রথিত আছে তাহাও বলিতে পারি না। দৃষ্টান্ত স্থলে যজুর্বেদর বিষয় উল্লেখ করিতেছি। সাধারণতঃ ধারণা যজুর্বেদ বুঝি সম্পূর্ণ গদ্যাংশেই পূর্ণ, কিন্তু বাস্তবে তাহা নহে। উহার মধ্যে পদ্য, গদ্য আছে। আবার সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে দেখিলে গানও আছে। সামবেদ বলতেও কেবল গান বুঝায় না, অধিকাংশ ঋকই সামগানের অন্তর্ভূক্ত হইয়া আছে। আবার মন্ত্রাদির প্রয়োগ কালে গদ্য পদ্য দুই,কি ঋকে কি সামে দেখিতে পাই। অথর্ববেদ মধ্যে এইরূপ গদ্য, পদ্য, গান (ঋক, যজু, সাম) তিনই আছে। অতএব এ প্রকারেও অথর্বেদে সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন করা যায় না"
.
উপনিষদ আদিতেও তিন বেদের সাথে অথর্ববেদের বর্ণনা দেখতে পাই । যথাঃ -বৃহদারণ্যক উপনিষদ ২।৪।১০ এ লেখা রয়েছে - "অরেস্য মহতো ভূতস্য নিঃশ্বসিতমেতদ্ যদৃগ্বেদো যজুর্বেদঃ সামবেদোহধর্বাঙ্গিরস" অর্থাৎ সেই মহান সত্তা থেকে নির্গত ঋগবেদ, যজুর্বেদ, সামবেদ এবং অথর্ববেদ।
মুণ্ডকোপনিষদ্ ১।১।৫ এ অথর্ববেদের উল্লেখ রয়েছে। যথাঃ "তত্রাপরা ঋগ্বেদো যজুর্বেদঃ সামবেদোহথর্ববেদঃ"।
এই প্রকার, ছান্দোগ্যপনিষদ্ ৭।১।২ মধ্যেও চার বেদের নাম এসেছে। যথাঃ "সহোবাচর্গ্বেদং ভগবোধ্যেমি যজুর্বেদং সামবেদমাথর্বণং চতুর্থম্"।
তাণ্ড্যমহাব্রাহ্মণ ১২।৯।১০ এ লেখা রয়েছে, "ভেষজং বা অথর্বণানি" অর্থাৎ অথর্বতে ঔষধি বিদ্যার বর্ণনা রয়েছে। রামায়ণ কালীন সময়েও অথর্ববেদে বিদ্যমানতা আমরা উল্লেখ পাই ।,যথাঃ হনুমান জীর প্রসংশা করে রাম বলেছিলেন যে,
ন অন ঋগবেদ বিনীতস্য ন অ যজুর্বেদ- ধারিন।
ন অ সামবেদ বিদুষ শক্যম এবম বিভাষিতু মদম।। ( বাল্মীকি রামায়ন ৪।৩।২৮)
অর্থাৎ ঋগবেদ অধ্যয়নে অনভিজ্ঞ এবং যজুর্বেদে যার বোধ নেই তথা যার সামবেদ অধ্যয়ন নেই , সেই ব্যক্তি এইরূপ পরিষ্কার বাক্য বলতে পারবে না। এখানে আমরা তিন বেদের স্পষ্ট উল্লেখ পাই, যার জ্ঞাতা হনুমান জী ছিলেন। চতুর্থ অথর্বেদের উল্লেখ আমরা বাল কাণ্ডে পাই, যথাঃ
ইষ্টি তেহহং করিষ্যামি পুত্রায়াং পুত্রকারণাৎ।
অথর্বশিরসি প্রোক্তর্মন্ত্রেঃ সিদ্ধাং বিধানতঃ।। (বাল কাণ্ড ১৫।২)
এখানে রাজা দশরথের সন্তান প্রাপ্তির জন্য অথর্ববেদের মন্ত্র দ্বারা পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করার কথা উল্লেখ রয়েছে। এসব প্রমাণ দ্বারা স্পষ্ট হয় যে, তিন বেদের সাথে অথর্ববেদের গণনা প্রাচীনতম সাহিত্যে রয়েছে। এজন্য ত্রয়ীবিদ্যা অথবা কারণবশত কেবল ঋগ,যজু এবং সামের নাম আসার কারণেই এটা বোঝা উচিৎ নয় যে, অথর্ববেদ তিন বেদের পশ্চাৎ হয়েছে। বরং অথর্ববেদ ততটাই প্রাচীন যতটা প্রাচীন ঋগ, যজু এবং সাম।
.
এই তর্কের অতিরিক্ত অথর্ববেদ নবীন হওয়াতে যে ২য় তর্ক প্রস্তুত করা হয় যে, অথর্বেদের নাম ঋগ, যজু, সাম তে আসে নি তাহাও নিরর্থক। আমরা উল্লেখ করে এসেছি যে, অথর্বেদেও ত্রয়ীবিদ্যার বর্ণনা রয়েছে এবং সেই প্রকার মন্ত্রের সমাবেশ, যেই প্রকার অন্য তিন বেদে রয়েছে। কিন্তু অথর্ববেদের কিছু মন্ত্র কিছু সরলার্থ বোধক, এজন্য অথর্ববেদের পৃথক অস্তিত্ব স্থির করা হয়েছে। মীমাংস দর্শনে বলা হয়েছে, "নিগদো বা চতুর্থ স্যাদ্ধর্মবিশেষাত্।।২।১।৩৮।।" অর্থাৎ ছন্দোবদ্ধ তথা গীতিযুক্ত মন্ত্রের অতিরিক্ত যে মন্ত্র স্পষ্ট অর্থসম্পন্ন তা যজুর্বেদর সংজ্ঞা নয় বরং অথর্ববেদের সংজ্ঞা, কারণ যজুর ধর্ম থেকে তার ধর্ম ভিন্ন। অথর্ববেদের নিগদত্ব তার তিন থেকে পৃথক হওয়া কারণে হয়েছে।
.
বৈদিক সাহিত্যে অথর্বেদের নাম - নিগদ, ব্রহ্ম, অথর্ব, ছন্দ পাওয়া যায়। আর এসব নাম তার গুনের কারণে হয়েছে। এর নিগদ নাম এর সরলতার কারণে হয়েছে যা উপর মিমাংসা দর্শনে উল্লেখ করা হয়েছে। দ্বিতীয় নাম ব্রহ্ম, অথর্ববেদ ১৫।৬।৮ এ লেখা রয়েছে, "তমৃচশ্চ সামানি চ যজুংষি চ ব্রহ্ম চ" এখানে ঋগ, যজু এবং সামের সাথে ব্রহ্মের নাম এসেছে। এই কথা গোপথব্রাহ্মণ ৫।১৫ তে এই প্রকারে লেখা রয়েছে, "ঋগ্বেদ এব ভর্গো যজুর্বেদ এব মহঃ সামবেদ এষ যশো ব্রহ্মবেদ এব সর্ব" এখানে স্পষ্ট তিন বেদের সাথে ব্রহ্মবেদের স্পষ্টীকরণ করা হয়েছে। এরপর অথর্ববেদের আরেক নাম "ছন্দ", ঋগবেদের পুরুষসুক্তে বলা হয়েছে -
তস্মাৎ যজ্ঞাত্ সর্বহুত ঋচঃ সামানি জজ্ঞিরে।
ছন্দাংসি জজ্ঞিরে তস্মাৎ যজুস্তস্মাদজায়ত।।
(ঋঃ ১০।৯০।৯, যজুঃ ৩১।৭, অথর্বঃ ১৯।৬।১৩)
অর্থাৎ সেই পূজনীয় পরমেশ্বর হতে ঋগবেদ, সামবেদ উৎপন্ন হয়েছে এবং অথর্ববেদ ও যজুর্বেদ তাহা হতে উৎপন্ন হয়েছে। এই মন্ত্রে ঋগ্বেদাদি চার বেদেরই নাম এসেছে এবং অথর্ববেদ কে এখানে ছন্দ বলা হয়েছে। কিছু লোক বলে যে, এখানে ছন্দ শব্দ দ্বারা বেদে আসা গায়ত্রাদি ছন্দেরই গ্রহন হয়েছে। তাহলে এ মান্যতা ঠিক নয়, কারণ যখন চার বেদই ছন্দময় তখন বেদের নাম আসার সাথেই ছন্দের নাম এসে গিয়েছে তখন আলাদা করে ছন্দাংসি বিশেষণ লাগানো ব্যর্থ এবং মন্ত্রে পুণরুক্তি হয়ে যায়। কিন্তু সকল ছন্দসম্পন্ন বেদের সাথে - ঋক, সাম, যজুর সাথে - ছন্দের নাম ভিন্ন করে এসেছে, এতে সিদ্ধ যে এখানে তিনটি বেদের সাথে চতুর্থ ছন্দ শব্দ অথর্ববেদের জন্য এসেছে। এ বিষয়ে দয়ানন্দ সরস্বতী বলেছেন - "বেদানাং গায়ত্র্যাদিছন্দোন্বিতত্বাৎ পুনচ্ছছন্দাংসীতি পদং চতুর্থস্যাথর্ব্বদেবস্যোৎপত্তিং জ্ঞাপয়তীত্যবধেয়ম্"। অর্থাৎ সকল বেদ গায়ত্র্যাদি ছন্দযুক্ত হেতু "ছন্দাংসি" এই পদ দ্বারা অথর্বেদের প্রকাশ করছে। আর এ কথা কাল্পনিক নয়, অথর্বেদের গোপথব্রাহ্মণ স্বয়ং অথর্ববেদ কে ছন্দবেদ বলার কারণ বর্ণনা করছে। গোপথ ব্রাহ্মণের পূর্বভাগ ১।২৯ এ বলা হয়েছে - "অথর্বণাং চন্দ্রমা দৈবতং তদেব জ্যোতিঃ সর্বাণি ছন্দাংসি আপস্থানম্" অর্থাৎ অথর্ববেদের চন্দ্রমা দেবতা,তিনি জ্যোতি, সমস্ত প্রকারের ছন্দ এবং জলের স্থান। এখানে সমস্ত প্রকারের ছন্দ স্পষ্ট করে দেয় যে, অথর্ববেদ ছন্দময়। অথর্ববেদ ভাষ্যকার ক্ষেমকরণদাস ত্রিবেদি তার ভূমিকায় বলেছেন - অথর্বেদের আরেক নাম "ছন্দ "- এর অর্থ আনন্দদায়ক, অর্থাৎ তাহার মধ্যে আনন্দদায়ক পদার্থের বর্ণনা রয়েছে। (চান্দেরাদেশ্চ ছঃ। উঃ৪।২১৯। ইতি চদু আহ্লাদে- অসুন, চস্য ছঃ। চন্দয়তি আহ্লাদয়তীতি ছন্দঃ)। পাণিনীর অষ্টাধ্যায়ীর অনেক সূত্রেও "ছন্দ" কে বেদের অর্থে গ্রহন করা হয়েছে, যথাঃ "ছন্দসি লুঙলঙলিট্" (পা০ ৩।৪।৬) অর্থাৎ বেদে ধাতুসম্বধীয় অর্থে ধাতুর সাথে লুঙ্, লঙ্, লিট প্রত্যয় হয়। অনেকে বলে যে, পাণিনি মুনির অথর্ববেদের জ্ঞান ছিলো না এজন্য অথর্ববেদ অর্বাচীন। এটাও তাদের ভ্রম, কেননা যেই প্রকার শাকলাদি শাখার নামে ঋগ্বেদ প্রসিদ্ধ সেই প্রকার শৌকনাদি সংহিতার নামে অথর্ববেদ প্রসিদ্ধ। পাণিনি মুনি "শাকলাব্ধ" (পা০ ৪।৩।১২৮) এবং "শৌনকাদিভ্যচ্ছন্দসি" (পা০ ৪।৩।১০৬) এই দুই সূত্রে ঋগবেদ এবং অথর্ববেদের দুটি শাখার উল্লেখ করেছেন। এ থেকে স্পষ্ট যে পাণিনি মুনির অথর্ববেদের জ্ঞান ছিলো।
.
আবার অনেকের বলে যে, শুধু আর্য সমাজের ভাষ্যকাররাই "ছন্দ" শব্দের অর্থ অথর্ববেদ করেছে। তাদের এই ধারনাও মিথ্যা কেননা গায়ত্রী পরিবারের "রাম শর্মা " তথা "স্বাধ্যায় মণ্ডল" এর প্রতিষ্ঠাতা "শ্রী পাদ দামোদর সাত্বলেকর" তাদের ভাষ্যে "ছন্দ" শব্দে অথর্ববেদরই গ্রহণ করেছেন। যথা,
"সেই বিরাট্ যজ্ঞ পুরুষ থেকে ঋগ্বেদ এবং সামগানের প্রকটীকরণ হয়েছে। তাহার থেকে যজুর্বেদ এবং অথর্ববেদের প্রকট হয়েছে।"
(ঋ০ ১০।৯০।৯, শ্রী রাম শর্মা)
এবং
" সেই সর্বহুত যজ্ঞ থেকে ঋগ্বেদের মন্ত্র তথা সামগান হয়েছে। ছন্দ অর্থাৎ অথর্ববেদের মন্ত্রও তাহার থেকেই উৎপন্ন হয়েছে এবং তাহার থেকে যজুর্বেদের মন্ত্রও উৎপন্ন হয়েছে।
(যজুর্বেদ ৩১।৭, শ্রী পাদ দামোদর সাত্বলেকর)
অতএব সমস্ত উল্লেখিত প্রমাণের ভিত্তিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, অথর্বেবেদ অর্বাচীন নয় বরং তা ঋগাদি বেদের ন্যায় সুপ্রাচীন।
-অর্পন আর্য(কৃতজ্ঞতা)

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

সূর্য কি স্থির না গতিশীল?

  সূর্য ও পৃথিবী সম্পর্কে জানুন ... সূর্যের অবস্থান আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে প্রায় ২৫,০০০ - ২৮,০০০ আলোকবর্ষ দূরে, এবং এটি অবিরত ছায...

Post Top Ad

ধন্যবাদ