বর্তমানে কিছু বেদ বিরুধি যবন এবং কিছু তথাকঠিত জ্ঞ্যানী বৈষ্ণব'রা প্রাচীন যুগে পৌরানিকতা খুজে পেয়েছেন। এবং তারা প্রমান করতে চান যে প্রাচীন ভারতে বেদ ছিল না ; এবং অই সময় ছিল কোন আর্য সমাজ।
,,, ঠিক এমনি দাবী করেছেন একজন বৈষ্ণব। বেদের প্রাচীনতা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন তিনি এবং দিয়েছেন কিছু হাস্যকর প্রমান পোস্টে
☞বৈস্নব দের প্রাচিন মুর্তি পুজো এর সন্ধ্যান

☞ এইখানে তিনি প্রাচীন কিছু সিন্ধু সভ্যতা এর কিছু জিনিষ দেখিয়েছেন।
,,, যদিও তার পোস্ট এ তিনি সিন্ধু সভ্যতা কে মেহেড়্গর সভ্যতা বলেন
। মেহেড়্গর একটি জায়গা নাম,,, যেমন: লথাল ইত্যাদি। এবং প্রত্যেকটি সোর্স উইকিপিডিয়া থেকে দিয়েছেন। কিন্তু উইকিপিডিয়া এর লেখা যে কেউ এডিট করতে পারে, এর তেমন কোন মুল্য ও নেই।

★ মুলত প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতা এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় যেসব প্রত্নতত্ত্ব পাওয়া যায় সনাতন ধর্ম সম্পর্কিত, তিনি তা উল্লেখ করেছেন। সিন্ধু সভ্যতা প্রায় ৭০০০ বছর অধিক পুরনো বলে বিশেষজ্ঞ রা বিশ্বাস করেন। এতে প্রাপ্ত জিনিষ মধ্যে,,
☞ যোগ অবস্থায় ব্যাক্তি ( পশুপতিনাথ )
☞ শিব লিংগ
☞ প্রাচীন পুরোহিত এর মুর্তি
☞ তাদের উল্লেখিত " মাদার গড"
ইত্যাদি প্রত্নতত্ত্ব এর কথা উল্লেখ করেন।
তাছাড়াও সিন্ধু সভ্যতা তে আরো অনেক কিছু পাওয়া যায় যা বৈদিক সনাতন ধর্মের সাথে একমতাবলম্বী হয়।
#যেমন: ☞ লথাল ও কালিবানগান সহ কিছু জায়গায় " যজ্ঞ স্থাপনা” পাওয়া যায়।
#উল্লেখিত: প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতা বৈদিক হওয়ার অন্যতম এক কারন ; অইখানে আপনি কোন শিব মুর্তি, নারায়ন মুর্তি বা এসব পৌরানিক দেব দেবতা এর মুর্তি পাবেন না। যদি পৌরানিক হত, তাহলে অইখানে নানান দেবতা এর মুর্তি পাওয়া যেত, কিন্তু এমন কিছু পাওয়া যায় নি।
❐ এখন প্রত্যেকটি প্রাপ্ত প্রত্নতত্ত্ব এর আসল রুপ তথ্য দিয়ে যাচাই করব।

#উত্তর: মুলত পশুপতি শিল পাওয়া যায় ১৯২৮ সালে মহেঞ্জোদারো তে। এটি মুলত মাটির ১.২৮ মিটার নিচ থেকে পাওয়া যায়।
,,,এর বর্ননা করলে বলতে হয়, এর একজন ব্যাক্তি কে পাওয়া যায় যার ৩ টি মাথা। তিনি যোগের মত আসন করেছেন কোন এক খাট এর উপর। আর চারপাশে অনেক পশু ও দেখা যায়। বর্তমানে ভারতের মধ্য প্রদেশে এবং নেপালের কাঠমন্ডু তে আপনি পশুপতি এর মুর্তি দেখতে পাবেন।
☞ কিন্তু আসলে আপনারা যে শিল কে পশুপতি বলতে চাইছেন, আসলে এমন কিছুই না। আপনি একটু লক্ষ করলে দেখতে পারবেন, তিনি যে আসনে বসেছেন তা কিন্তু কোন সাধারন বসার ধরন নয়। তিনি এক বিশেষ যোগ মাধ্যমের মত আসন করেছেন। এবং তার চার পাশে পশু, এর মুল কারন সিন্ধু সভ্যতা মুলত কৃষি এবং পশু উপর নির্ভর ছিল। তাই এখানে একজন যোগী কে পশু এর সাথে দেখানো হইছে, এবং তার ৩ টি মাথা মুলত চারি দিক বুঝানো হয়েছে। পৌরানিক হলে অবশ্যই তার কোন মুর্তি থাকার কথা ছিল। কিন্তু এমন কিছুই পাওয়া যায় নি।
☆ এখানে ভিডিও সহ দেখানো হয়েছে যে অই ব্যাক্তি তিনি একজন যোগী ছিলেন।
এখানে যোগ আসন বিশেষজ্ঞ দের মতে এটি একটি অত্যন্ত কঠিন আসন যা বিশেষ কোন ধ্যান কার্যে ব্যাবহার করা হয়।

#ঊত্তর: হে, প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতা তে শিব লিংগ ও কমুন্ডাল পাওয়া যায়। যা ৫০০০ বছর পুরনো বলা হয়।
★ অইখানে শিব লিংগ কমুন্ডাল সহ যজ্ঞ বেদি ও পাওয়া যায়, তা নিয়ে আমরা পড়ে আলোচনা করব।
☞ শিব লিংগ কে পৌরানিক বললে আপনাকে জানতে হবে পৌরানিকতা কি।
মুলত আমরা যখন ইশ্বরের প্রতিমা, ছবি, আকার ইত্যাদি বানাবো তখন তাকে আমরা পৌরানিকতা বলব। কিন্তু শিব লিংগে কি আপনি কোন হাত, পা, চুখ, মুখ ইত্যাদি লক্ষ পান ?
❐পান না। শিব লিংগের না আছে হাত, না আছে পা,, আর না আছে মুখ। এটা এর নির্দিষ্ট কোন আকার ও নেই। তা হলে শিব লিংগ কে আপনি পৌরানিকতা ১০০% নাও বলতে পারেন। তবে একে ইশ্বর আকার বুঝা মুর্খামি বটে।

#উত্তর : আমি জানি না এখানে পৌরানিকতা কি হল। মুলত সিন্ধু সভ্যতা তে একটি পুরহিত এর মুর্তি পাওয়া যায়,, যার শরিরে চাদর দেওয়া ছিল। তার মাথায় ছিল না চুল। অনেকটা বৈদিক পুরহিত দের মতো।
☞ আমরা জানি যে কোন রকম যজ্ঞে একজন ঋষি বা পুরহিত লাগবেই। মুলত এখানে তাদের এই কারনে রাখা হয়েছে যাতে যজ্ঞাদি কর্মে তাদের প্রধান্নতা।

#উত্তর: সিব্ধু সভ্যতা থেকে প্রাপ্ত কিছু কিছু নারী মুর্তিকে কিছু ব্যাক্তি দেবতা বলতেছেন। আর যারা বলতেছেন বা দাবী করতেছেন নারী শক্তি বা দেবতা এর মুর্তি বলে, তাদের কেউ কিন্তু সনাতন ধর্মের কেউ না। মুলত বৃটিশ কিছু ব্যাক্তি তারা মিশর ও গ্রীসের নারী বাদ এর প্রেক্ষিতে এইটা কে কোন নারী শক্তি বলে প্রকাশ করতে চেয়েছেন। কিন্তু আসলে তেমন কিছুই না।
★ দেখার জন্য ফটো দিয়ে দিলাম
☞ এখানে আপনি অই মুর্তির এমন কিছুই পাবেন না যা সনাতন ধর্মের দুর্গা কালি ইত্যাদি পৌরানিক কিছুর প্রমান করতে পারে। অইখানে আপনি মুর্তিতে গলায় একটি লকেট মত জিনিষ পাবেন, যা মুলত কোন রানী বা বিশিষ্ট ব্যাক্তি এর ব্যাবহার হয়। এটি সব জায়গা তে পাওয়া যায় নি। যেমন : কালিবানগান এই রকম কিছু পাওয়া যায় নি।
তাছাড়া এখানে শুধু মহিলাদের মুর্তি পাওয়া যায় নি ; সাথে বিভিন্ন পুরুষের এবং বাচ্চাদের ও মুর্তি পাওয়া যায়।
❐ সিন্ধু সভ্যতা এর ট্যারাকোটা মুর্তি
ত এখানে স্পষ্ট যে এখানে শুধু নারী মুর্তি না অন্যদের মুর্তি ও পাওয়া গেছে এবং বাচ্চাদের ও। অবশ্যই বাচ্চাদের পুজ করা হত না ?। তাই এই মুর্তি কে mother of goddes বলা বোকামি ছাড়া কিছুই না।

#উত্তর: প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতা তে অনেক জায়গায় যজ্ঞ বেদি পাওয়া যায়। এটি মুলত প্রথম মহেঞ্জদারো এর কালিবানগান তে পাওয়া যায়। তার পর লথালেও যজ্ঞ বেদি পাওয়া যায় যা কালিবানগান থেকে যচেষ্ট দূর ছিল বটে।
⁂ যজ্ঞ বেদি মহেঞ্জোদারো তে
এখান থেকে কিছু তার নিদর্শন দেখতে পারেন।
❐ এমন আরো প্রমান আছে যজ্ঞ বেদির সিন্ধু সভ্যতা তে। এখানে কিছু জিনিষ আলোচনা করি ।
☞ মহেঞ্জোদারো তে প্রাপ্ত যজ্ঞ বেদির ছিল কিছু বৈশিষ্ট সমুহ। যেমন : এই খানে মুলত একাধিক যজ্ঞ বেদি থাকত।
এর একটি থাকত সবার উপর এবং এটি ইট দিতে বর্গাকার একটি বেদি হত। এমনকি এটি ওয়াটার প্রুফ ও ছিল।
,,,সর্বোচ্চ যজ্ঞ বেদির নিচে আরো একাধিক যজ্ঞ বেদি হত যা মুলত ঘরে ঘরে থাকত
( যাকে আমরা হোম বলি)।
★ কালিবানগান এ যজ্ঞ এর বিশ্লেষণ
☞ এখানে মুলত ৩ টি ভাগে যজ্ঞ হত।
১| পাবলিক যজ্ঞ
২| পারিবারিক যজ্ঞ
৩| গ্রুপ ভিক্তিক যজ্ঞ
এখানে প্রধান যজ্ঞ বেদি এক সংগে ৫ থেকে ৬ টি থাকত যা,, উপরের স্থরের শহরে থাকত। যা নিম্ন স্থরের শহর থেকে ৮০ মি উপর। অইখানে মুল যজ্ঞ হত এবং নিচে এক সংগে অনেক ছোট যজ্ঞ বেদি থাকত।
The official website of ASI reports : "Besides the above two principle [sic] parts of the metropolis there was also a third one-a moderate structure situated upwards of 80 m e. of the lower town containing four to five fire altars.
এরকম করে বৈদিক নিয়ম অনুযায়ী যজ্ঞ কর্ম পরিচালিত হত অই সিন্ধু সভ্যতাতে

#উত্তর: অনেকে বলেন সিন্ধু সভ্যতা বৈদিক ছিল না তার প্রমান অই সময় মৃত দেহ কবর দেওয়া হত। এর জন্য তারা কিছু জায়গার রেফারেন্স ও দেয় বটে।
☞ কিন্তু তারা ভুলে যায় মিশর সভ্যতা থেকে গ্রীস ও মেসোপটেমিয়া সভ্যতা তে মৃত দেহ মমি করার একটা শিল্প ছিল। প্রাচীন কালের সেই বিজ্ঞান সনাতন বৈদিক যুগেও কিছু লক্ষন পাওয়া যায়।
যেমন :-
★ রামায়ণের উত্তরকান্ডের ৮৮ সর্গে এক মৃত ব্রাহ্মণবালেকর দেহ সংরক্ষণের নির্দেশ প্রদান করতে দেখা যায়।
❐প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন সংস্কৃত পুঁথিতে মৃতদেহ সংরক্ষণের উল্লেখ দেখা যায়। যেমন:- তৈলদ্রোণী ব্যবহার করে অথবা আচার্য সুশ্রুতের নির্দেশিত পথ ধরে মৃতদেহ সংরক্ষণ।
❏অধ্যাত্ম রামায়ণের ৭ম অধ্যায়ে, ৩৬ পৃষ্ঠায় রাজা দশরথের দেহ রামের আগমন পর্যন্ত সংরক্ষণের প্রয়াস দেখা যায়।
❐আবার শ্রীমদ্ভাগবতের ১১ স্কন্ধের উল্লেখ আছে সত্যভামা রাজা সত্রাজিতের মৃতদেহ তৈলদ্রোণীতে সংরক্ষণ করে কাঁদতে কাঁদতে শ্রীকৃষ্ণের কাছে বিচার চাইতে গেলেন...
❐এছাড়াও সুশ্রত সংহিতায় ৫ম অধ্যায়ে, উল্লেখ পাওয়া যায়, একজন সুদক্ষ শল্যচিকিৎসক হতে গেলে শবব্যবচ্ছেদ অপরিহার্য।
☞ এখানে প্রাচীন ভারতে অনেক জায়গা তে মৃতদেহ সংরক্ষন করা হত। আর মুলত বেদে মৃত দেহ দাহ করতেই হবে এমন কোন লেখা নাই।

সিন্ধু সভ্যতাতেও অনেক কিছু পাওয়া যায় যা অগ্নি দাহ প্রমান করে।
☞ এখানে আপনি কিছু হাড়ি দেখতে পাবেন যা দাহ কৃত মৃত দেখ ছাই রাখতে ব্যাবহার করা হত। এবং এখানে আরো বিভিন্ন জায়গা এমন হাড়ি পাওয়া যায় যা মৃত দেহ এর ছাই বহনে কাজে লাগত
★এখানে কিছু ফটো দেওয়া হল, ছাই রাখা পাত্রের, দেখে নিবেন।




লেখসত্ব:
Arya Utfal
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ