জীব ও ঈশ্বর উভয়েই চৈতন্য স্বরূপ , উভয়ের স্বভাব পবিত্র । উভয়ই অবিনাশী এবং ধার্মিকতা প্রভৃতি গুণ যুক্ত কিন্তু সৃষ্টি স্থিতি প্রলয়ও সকলকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং জীবদিগের পাপ পুন্য ফল দান প্রভৃতি ধর্ম যুক্ত কর্ম পরমেশ্বরের । আর সন্তান উৎপত্তি সন্তান পালন এবং শিল্প বিদ্যা প্রভৃতি উত্তম অধম কর্ম জীবের । নিত্য জ্ঞান আনন্দ এবং অনন্ত বল প্রভৃতি ঈশ্বরের গুণ
"ইচ্ছাদ্বেষ প্রয়ত্নসুখদুঃখজ্ঞানান্যত্মনো লিঙ্গামিতি"
- ন্যায় দর্শনের সূত্র ১।১০
"প্রাণাপাননিমেষোন্মেষ জীবন মনোগতীন্দ্রিয়ান্তৰ্বিকারাঃ
সুখদুঃখেচ্ছাদ্বেষপ্রয়ত্নাশ্চাত্মনো লিঙ্গানি"
- বৈশিষিক দর্শন সূত্র ৩।২।৪
(ইচ্ছা) পদার্থ সমূহের পাইবার অভিলাষ ; (দ্বেষ) দুঃখাদি প্রাপ্তির অনিচ্ছা অর্থাৎ বৈরভাব ; (প্রয়ত্ন) পুরুষার্থ , বল ; (সুখ) আনন্দ ; (দুঃখ) বিলাপ , অপ্রসন্নতা ; (জ্ঞান) বিবেক , চিনতে পারা - এগুলি সমান ; [ ন্যায় ও বৈশেষিকের এক রূপ ] কিন্তু বৈশেষিকে ; (প্রাণ) প্রাণ বায়ুকে বহির্গত করা ; (অপান) প্রাণকে বাহির হতে ভিতরে আনা ;(নিমেষ) পলকগতি ;(উন্মেষ) চক্ষু উন্মীলন করা ;(জীবন) প্রাণ ধারণ করা ; (মন) নিশ্চয় , স্মরণ ও অহংকার করা ;(গতি) চলন ;(ইন্দ্রিয়) সমস্ত ইন্দ্রিয়ের পরিচালনা ;(অন্তর্বিকার) ভিন্ন ভিন্ন রূপে ক্ষুধা , তৃষ্ণা , হর্ষশোকাদি যুক্ত হওয়া ; জীবাত্মার এই সকল গুণ পরমাত্মার গুণ হইতে পৃথক । ইহাদের দ্বারাই প্রতীতী করিবে কারণ আত্মা স্থূল পদার্থ নয় ।
আত্মা যতকাল দেহে থাকে ততকাল পর্যন্ত এই সকল গুণ প্রকাশিত থাকে । কিন্তু আত্মা দেহত্যাগ করিয়া চলিয়া গেলে এই সকল গুণও দেহে থাকে না । যাহা থাকিলে যাহা থাকে , এবং যাহা না থাকিলে যাহা থাকে না তাহাই তাঁহার গুণ । যেমন - প্রদীপ সূর্য্যাদি না থাকিলে আলোক থাকে না কিন্তু থাকিলে থাকে । সেই রূপগুণ দ্বারাই জীবাত্মা ও পরমাত্মার সম্বন্ধে বিশেষ জ্ঞান হইয়া থাকে ।
ন্যায় দর্শনের সূত্র ১।১০ |
বৈশিষিক দর্শন সূত্র ৩।২।৪ |
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ