কঠোপনিষদ ১/৩/৩ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

10 February, 2020

কঠোপনিষদ ১/৩/৩

 আত্মানং রথিনং বিদ্ধি শরীরং রথমেব তু।

বুদ্ধিং তু সারথীং বিদ্ধি মনঃ প্রগ্রহমেব চ।।

[কঠোপনিষদ ১/৩/৩]

পদার্থ-( আত্মানম্) আত্মাকে ( রথিনম্) রথের-আরোহী ( বিদ্ধি) জানিবে ( তু) এবং ( শরীরম্ এব) শরীরকেই ( রথম্) রথ জানিবে ( তু) ও ( বুদ্ধিম্) বুদ্ধিকে ( সারথিম্) সারথি ( বিদ্ধি) জানিবে ( চ) এবং ( মনঃ এব) মনকেই ( প্রগ্রহম্) লাগাম জানিবে।।

সরলার্থ-আত্মাকে রথের আরোহী জানিবে এবং শরীরকেই রথ জানিবে ও বুদ্ধিকে সারথি জানিবে এবং মনকেই লাগাম জানিবে।।-( ভাষ্য-মহাত্মা নারায়ণ স্বামী)

ব্যাখ্যাঃ এই শ্রুতিতে শরীরের সাথে জীবাত্মার কী সম্বন্ধ এবং জীবাত্মা শরীর দ্বারা কী কার্য গ্রহণ করে, এই কথাকে একটি আলঙ্কারিক ভাষাতে বোঝানো হয়েছে। যেমন রথের দ্বারা কোনো নির্ধারিত স্থানে পৌঁছানো যায়, তদ্রূপ জীবাত্মা এই শরীরের দ্বারা লৌকিক সুখ ভোগ করে ধর্ম- অর্থ-কাম-মোক্ষরূপ পুরুষার্থ চতুষ্টয় সিদ্ধি করে। শরীরকে রথ বলার অভিপ্রায় হচ্ছে, শরীর ভোগায়তন অর্থাৎ ভোগের স্থান। শরীর ছাড়া জীবাত্মা সুখের ভোগ করতে পারে না। আর রথের উপমা দ্বারা এটিও স্পষ্ট যে, এই শরীর রমণ অর্থাৎ সাংসারিক সুখ ভোগের সাধন। যে ব্যক্তি এই লৌকিক সুখকে হেয় মনে করে, তাদেরকে উপনিষদকার ঋষির এই উপমার ওপর দৃষ্টিপাত করা উচিত। কিন্তু লৌকিক সুখে আসক্ত হওয়া উচিত নয়। বেদেও "তেন ত্যক্তেন ভুঞ্জীথাঃ (যজু০ ৪০ ১)" বলে ত্যাগ ভাবে বা নিষ্কাম কর্মের উপদেশ দেয়া হয়েছে। জীবাত্মার শারীরিক ক্রিয়াসমূহ বোঝানোর জন্য বর্ণোচ্চারণশিক্ষাতে বলা হয়েছে- "আত্মা বুদ্ধয়া সমেত্যার্থান্ মনো যুঙ্কতে বিবক্ষয়া।” অর্থাৎ জীবাত্মা প্রথমে বুদ্ধি দ্বারা মনকে প্রেরিত করে এবং মনের সাথে সম্বন্ধ হওয়ার পর বাহ্যেন্দ্রিয় কার্য করে। কারণ মনের সম্বন্ধ ছাড়া আমরা দেখেও দেখতে পাই না, আর শুনেও শুনতে পাই না। অতএব জীবাত্মার বুদ্ধি সারথি ও মন প্রগ্রহ তথা লাগামের ন্যায় বলা যায়, যার উপমা উপরে দেয়া হয়েছে॥
টীকাঃ শ্রুতিতে শরীরকে রথের উপমা বিশেষ প্রয়োজনে দেয়া হয়েছে। কারণ সমস্ত প্রাণিদের মধ্যে মানব শরীরই জ্ঞানপ্রাপ্তি ও সুখ ভোগের উত্তম অদ্বিতীয় সাধন। নিরুক্তে রথের অর্থ স্পষ্ট করে লেখা হয়েছে- "রথঃ রহতেগতিকর্মণঃ স্থিরতেবা স্যাদ্‌ বিপরীতস্য রমমাণোৎস্মিংস্তিষ্ঠতীতি বা রপতেবা রসতেবা।" (নিরুক্ত০ ৯/১১) ॥

রথ অর্থাৎ শরীর বিষয়ে বেদ মন্ত্রঃ

"স পপ্রথানো অভি পঞ্চ ভূমা ত্রিবন্ধুরো মনসা যাতু যুক্তঃ।
বিশো যেন গচ্ছয়ো দেবযন্তীঃ কুত্রা চিদ্যামমশ্বিনা দধানা।।" (ঋগ্বেদ-৭/৬৯/২)
ভাবার্থঃ হে রাজপুরুষ! এই শরীররূপী রথ ভূমি,জল, অগ্নি, আকাশ তথা বায়ু এই পঞ্চ তত্ত্ব দ্বারা নির্মিত এবং সত্ব, রজ এবং তম এই তিন গুণের বন্ধনে আবদ্ধ। এই শরীররূপী রথের দ্বারা যাত্রা করে মানুষ জ্যোতিস্বরূপ পরমাত্মাকে প্রাপ্ত হয় যা মনুষ্যজীবনের মুখ্য উদ্দেশ্য। (ভাষ্যকার - মহামহোপাধ্যায় আর্য মুনি)
"যং দেবাসোহবথ বাজসাতৌ যং শূরসাতা মরুতো হি তে ধন।
ত্রাতযাবাণমং রথমিন্দ্রসানসিম রিষ্যন্তমারুহে মা স্বস্তয়ে।।" (ঋগ্বেদ ১০/৬৩/১৪)
বঙ্গানুবাদ- হে উজ্জ্বল দিব্য ধনের অধিকারী বিদ্বান পুরুষ! অন্ন, বল ও হিতকর ধনাদি লাভের জন্য ঈশ্বর লাভের সাধন যে রথকে তোমরা রক্ষা কর, সেই সুগঠিত রথে কল্যাণের জন্য আমরা আরোহন করি।
ভাবার্থ- বিদ্বান পুরুষের নাম মরুত এবং শরীরের নাম রথ। এই রথ শুধু অন্ন, বল, ও ধন লাভেরই সহায়ক নয়- ইহা ঈশ্বর লাভেরও সহায়ক। নীরোগ শরীর রূপী রথকে ব্রাহ্মমুহূর্তে জড়িয়া সন্ধ্যোপাসনায় লাগাইবে।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অথর্ববেদ ২/১৩/৪

  ह्यश्मा॑न॒मा ति॒ष्ठाश्मा॑ भवतु ते त॒नूः। कृ॒ण्वन्तु॒ विश्वे॑ दे॒वा आयु॑ष्टे श॒रदः॑ श॒तम् ॥ ত্রহ্যশ্মানমা তিষ্ঠাশ্মা ভবতুতে তনূঃ। কৃণ্বন্তু...

Post Top Ad

ধন্যবাদ