বেদের আলোকে ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর তিনে মিলে একঈশ্বর হবে না বরং হবে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর এক ঈশ্বরের তিনটি গুণবাচক নাম। বিশেষ করে বর্তমানে প্রচলিত পুরাণের অনুসারি, পৌরাণিক বন্ধুরা মনে করে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর তিনটি আলাদা আলাদা সত্তা, কিন্তু বেদের আলোকে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর আলাদা আলাদা কোন সত্তা নয়; বরং এক ঈশ্বরের তিনটি গুণবাচক নাম।
পবিত্র বেদে বলা হয়েছে.......
য এক ইৎ তমু ষ্টুহি কৃষ্টীনাং বিচর্যণিঃ পতি র্জজ্ঞে বৃষক্রতুঃ।।
➢ ঋগ্বেদ. ৬/৪৫/১৬।
বঙ্গানুবাদঃ- যিনি এক অদ্বিতীয়, যিনি মনুষ্যদের সর্ব্বদ্রষ্টা,
যিনি সর্ব্বশক্তিমান ও পালক একমাত্র তাঁহাকেই উপাসনা কর।
ন দ্বিতীয়ো ন তৃতীয় শ্চতুর্থো নাপ্যুচ্যতে।
ন পঞ্চমো ন ষষ্ঠঃ সপ্তমো নাপ্যুচ্যতে।
নাষ্টমো ন নবমো দশমো নাপ্যুচ্যতে।
য এতং দেবমেক বৃতং বেদ।।
➢ অথর্ব্ববেদ. ১৩/৪/২।
বঙ্গানুবাদঃ- পরমাত্মা এক, তিনি ছাড়া কেহই দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ,
পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম বা দশম ঈশ্বর বলিয়া অভিহিত হয় না।
যিনি তাঁহাকে শুধু এক বলিয়া জানেন তিনিই তাঁহাকে প্রাপ্ত হন। এক ঈশ্বর
চিন্তন জ্ঞানীর, বহু ঈশ্বরের ধারণা মুর্খের।
ইন্দ্রং মিত্রং বরুণ মগ্নি মাহু,
রথো দিব্যঃ স সুপর্ণো গরুত্মান।
একং সদ্বিপ্রা বহুধা বদন্ত্যগ্নিং যমং মাতরিশ্বানমাহুঃ।।
➢ ঋগ্বেদ. ১/১৬৪/৪৬।
বঙ্গানুবাদঃ- এক সত্তা পরব্রহ্মকে জ্ঞানীরা ইন্দ্র, মিত্র, বরুণ, অগ্নি, দিব্য,
সুপর্ণ, গরুৎমান, যম, মাতরিশ্বা আদি বহু নামে অভিহিত করেন।
অর্থাৎ পরমাত্মা এক এবং অদ্বিতীয় কিন্তু বেদে এক ঈশ্বরের অনেক গুণবাচক নাম উল্লেখ্য করা হয়েছে। বেদে ব্রহ্মা, রুদ্র, শিব, মহাদেব এরুপ অনেক নাম আছে। দুষ্ট কে দন্ড দেন বলে তিনি রুদ্র, মঙ্গলময় এবং সকলের কল্যাণকারী বলে তিনি শিব, সূর্য্যাদি পদার্থ সমূহের প্রকাশক বলে তিনি মহাদেব, এরুপ ভাবে সর্বত্র ব্যাপক বলে ঈশ্বরের আর এক নাম "বিষ্ণু"। অর্থাৎ এরুপ ভাবে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর এক ঈশ্বরের তিনটি গুণবাচক নাম।
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ