ঈশ্বর কি শরীর ধারী - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

21 June, 2020

ঈশ্বর কি শরীর ধারী

रूपंरूपं प्रतिरूपो बभूव तदस्य रूपं प्रतिचक्षणाय। इन्द्रो मायाभिः पुरुरूप ईयते युक्ता ह्यस्य हरयः शता दश ॥१८॥
ऋग्वेद0 मण्डल:6 सूक्त:47 मन्त्र:18
अन्वय:

हे मनुष्या ! य इन्द्रो मायाभिः प्रतिचक्षणाय रूपंरूपं प्रतिरूपो बभूव पुरुरूप ईयते तदस्य रूपमस्ति, यस्याऽस्य हि दश शता हरयो युक्ताः शरीरं वहन्ति तदस्य सामर्थ्यं वर्त्तते ॥१८॥
ঋগ্বেদের ৬।৪৭।১৮ মন্ত্রটি নিয়ে প্রচার করা হয় যে এখানে ঈশ্বরকে বিভিন্ন রূপ ধারণের উল্লেখ রয়েছে। চলুক দেখে নেওয়া যাক এই মন্ত্রটির যথার্থ বিশ্লেষণ ও প্রকৃত অর্থ।
-भाष्य(स्वामी दयानन्द सरस्वती)
फिर यह जीवात्मा कैसा होता है, इस विषय को कहते हैं ॥
पदार्थान्वयभाषाः -हे मनुष्यो ! जो (इन्द्रः) जीव (मायाभिः) बुद्धियों से (प्रतिक्षणाय) प्रत्यक्ष कथन के लिये (रूपंरूपम्) रूप-रूप के (प्रतिरूपः) प्रतिरूप अर्थात् उसके स्वरूप से वर्त्तमान (बभूव) होता है और (पुरुरूपः) बहुत शरीर धारण करने से अनेक प्रकार का (ईयते) पाया जाता है (तत्) वह (अस्य) इस शरीर का (रूपम्) रूप है और जिस (अस्य) इस जीवात्मा के (हि) निश्चय करके (दश) दश सङ्ख्या से विशिष्ट और (शता) सौ सङ्ख्या से विशिष्ट (हरयः) घोड़ों के समान इन्द्रिय अन्तःकरण और प्राण (युक्ताः) युक्त हुए शरीर को धारण करते हैं, वह इसका सामर्थ्य है ॥१८॥
भावार्थभाषाः -इस मन्त्र में वाचकलुप्तोपमालङ्कार है। हे मनुष्यो ! बिजुली पदार्थ के प्रति तद्रूप होती है, वैसे ही जीव शरीर-शरीर के प्रति तत्स्वभाववाला होता है और जब बाह्य विषय के देखने की इच्छा करता है, तब उसको देख के तत्स्वरूपज्ञान इस जीव को होता है और जो जीव के शरीर में बिजुली के सहित असङ्ख्य नाड़ी हैं, उन नाड़ियों से यह सब शरीर के समाचार को जानता है ॥१८॥-
রূপং রূপং প্রতিরূপো বভুব তদস্য রূপং প্রতিচক্ষণায় ৷
ইন্দ্রো মায়াভিঃ পুরুরূপ ঈয়তে যুক্তা হ্যস্য হরয়াঃ শতা দশ ৷।
[ঋগ্বেদ – ৬।৪৭।১৮]
অর্থাৎ সমস্ত দেবগণের প্রতিনিধিভূত এ ইন্দ্র বিবিধ মূর্তি ধারণ করেন এবং সেই রূপ পরিগ্রহ করে তিনি পৃথকভাবে প্রকাশিত হন। তিনি মায়া দ্বারা বিবিধ রূপ ধারণ করেন এবং সেই রূপ পরিগ্রহ করে যজমানগণের নিকট উপস্থিত হন। কারণ তার রথে সহস্র অশ্ব যােজিত আছে।

সমাধান– উক্ত শঙ্কাটি আমরা কয়েকটি পয়েন্ট আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবো।

১. যথারীতি এই মন্ত্রে ঈশ্বরের রূপ দাবীকারীরা রমেশচন্দ্র দত্ত অনুবাদিত ঋগ্বেদের অনুবাদ ব্যবহার করেছে, যার প্রকাশক হলো হরফ প্রকাশনী। যারা এই মন্ত্রের রমেশ চন্দ্রের অনুবাদ নিজেদের বই পত্রে ঈশ্বরের সাকার রূপের প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করে, তারাই আবার গোহত্যা বা অশ্লীলতা নিয়ে কথা উঠলে হরফ প্রকাশনীকে তুলোধুনো করে এবং রমেশচন্দ্রের অনুবাদ যে ঠিক নয় তা এক বাক্যেই স্বীকার করে বসে!




২. এই মন্ত্রে কোথাও "প্রতিমা" বা "মূর্তি" শব্দটি উল্লেখ নাই। কিন্তু অনুবাদে মূর্তি শব্দটি দেওয়া দেখে এটির প্রচারকারীরা কোনো প্রশ্নই তোলে না। অথচ যজুর্বেদের ৩২।৩ মন্ত্রে সরাসরি "প্রতিমা" শব্দটি দেখতে পায় এবং সকল প্রসিদ্ধ ভাষ্যকারও যখন সেই "প্রতিমা" শব্দের অর্থ "প্রতিমা"-ই করে তখন এদের কান্না শুরু হয়ে যায়। তখন এরা এখানে প্রতিমা অর্থ উপমা দাবী করে বসে!


৩. যারা এই মন্ত্রে ঈশ্বরের সাকার রূপ দাবী করে, তারা বোধহয় ভালো করে তাদের ব্যবহৃত বা প্রদত্ত মন্ত্রটির অনুবাদও পড়ে না। কারণ এই মন্ত্রে ইন্দ্রকে বলা হচ্ছে সকল দেবতার প্রতিনিধি। অর্থাৎ তাদের মান্যতা অনুসারে এই স্থলে ইন্দ্র শব্দের অর্থ ঈশ্বর হলে ঈশ্বর হবেন দেবতাদের প্রতিনিধি! কিন্তু সমস্ত পৌরাণিক মান্যতা অনুসারেই "ঈশ্বর" দেবতাদের প্রতিনিধি নন, বরং "দেবতা"-ই ঈশ্বরের প্রতিনিধি। তাই এখানে "ইন্দ্র" অর্থ "ঈশ্বর" ধরলে তাদেরই মান্যতার বিপরীত অর্থ প্রকাশ করে!


৪. তাদের প্রদত্ত অনুবাদ অনুসারে যদি ঈশ্বরকে যজমানের সামনে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে উপস্থিত হওয়াকে ঠিক মানা হয়, তবে তা স্বয়ং বেদে বর্ণিত ঈশ্বরের গুণের পরিপন্থী হয়। কারণ যজুর্বেদ [৪০।১] বলছে ঈশ্বর সর্বব্যাপী। তাই তিনি আলাদা করে যজমানের সামনে উপস্থিত হলে তাঁর সর্বব্যাপত্ব নষ্ট হয়ে যায়। আবার উপনিষদের ব্রহ্মবেত্তা ঋষি বলছেন ঈশ্বর অরূপম্ [কঠ - ১।৩।৩৫]। তাই এখানে ঈশ্বর রূপ ধারণ করে যজমানের সামনে এলে ব্রহ্মবেত্তা ঋষির বাক্যও মিথ্যা হয়ে যায়!



৫. উক্ত অনুবাদ অনুসারে ঈশ্বর যজমানের সামনে রূপ ধারণ করে আসেন। এখন যদি একাধিক যজমান একত্রে ঈশ্বরের স্তুতি করেন, তবে উক্ত অনুবাদ অনুসারে সকল যজমানের সামনেই ঈশ্বরের রূপ ধারণ করা আসা উচিত। অর্থাৎ এর ফলে ঈশ্বর একাধিক হয়ে যাবেন। কিন্তু অথর্ববেদ বলছে ঈশ্বর দুই, তিন, চার, পাঁচ, ছয়, সাত, আট, নয়, দশ নন, বরং তিনি এক ও অদ্বিতীয় [অথর্ব - ১৩।৪।২]। 


৬. উপরের মন্ত্রের অনুবাদে দেওয়া ইন্দ্র মায়ার দ্বারা বহু রূপ ধারণ করেন। কিন্তু পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে ইন্দ্র মায়া দ্বারা যজমানের সামনে উপস্থিত না হয়ে গৌতম মুনির রূপ ধারণ করে কি করেছেন, তা আর বিস্তারিত বললাম না। তাই এখানে "মায়া" শব্দের নিরুক্ত-নিঘণ্টুগত অর্থ করতে হবে। নিঘণ্টু [৩।৯] অনুসারে "মায়া ইতি প্রজ্ঞানাম"। অর্থাৎ মায়া হচ্ছে প্রজ্ঞার নাম। অর্থাৎ এখানে মায়া অর্থ অলৌকিক কোনো শক্তি নয়, বরং মায়া অর্থ "প্রজ্ঞা"। 




৭. তাহলে এখন প্রশ্ন আসতে পারে, এখানে "ইন্দ্র" অর্থ কী হবে? আর ঋগ্বেদ ১।১৬৪।৪৬ মন্ত্র অনুসারে তো ইন্দ্র অর্থ পরমাত্মাই। তাহলে এখানে ইন্দ্র শব্দটি পরমাত্মা অর্থে ব্যবহৃত হবে না কেন? এর উত্তর হচ্ছে, বৈদিক শব্দ গুলোর বহু অর্থ হয়ে থাকে। কোন অর্থ কোথায় গ্রহণ করা হবে তা প্রকরণ অনুসারে বিবেচনা করা হয়। যেমন মনে করুন, সৈন্ধব শব্দটি দ্বারা ঘোড়া ও লবণ উভয় নির্দেশ করে। যদি কেউ কারও কাছে খেতে বসে বলে, "আমাকে সৈন্ধব দাও", তবে কিন্তু তাকে সেখানে লবণ এনে দিতে হবে, ঘোড়া নয়। আবার যদি বেড়াতে যাওয়ার সময় বলে, "আমাকে সৈন্ধব দাও", তবে কিন্তু তাকে লবণ নয়, ঘোড়া এনে দিতে হবে। 

তেমনি ভাবে এখানে ইন্দ্র শব্দের বিভিন্ন অর্থের মধ্যে পরমাত্মা অর্থ গ্রহণ না করে কোন অর্থ গ্রহণ করা উচিত? 

এর উত্তর হচ্ছে এখানে "ইন্দ্র" অর্থ "জীবাত্মা" গ্রহণ করা উচিত। 

আপনারা হয়ত আশ্চর্য হয়ে প্রশ্ন করতে পারেন, ইন্দ্র জীবাত্মা অর্থে গ্রহণ করার পক্ষে শাস্ত্রীয় প্রমাণ কী? 

এর শাস্ত্রীয় প্রমাণ বৈয়াকরণিক পাণিনি রচিত অষ্টাধ্যায়ী ও তার বৃত্তি থেকে দেওয়া হলো–


"ইন্দ্রিয়মিন্দ্রলিঙ্গ­মিন্দ্রদৃষ্টমিন্দ্রসৃষ্টমিন্দ্রজুষ্টমিন্দ্রদত্তমিতি বা।"
[অষ্টাধ্যায়ী – ৫।২।৯৩]

অর্থাৎ—  (ইন্দ্রয়ম্) ইন্দ্রয়ম্ এই শব্দ নিপাতন করা যায়, (ইন্দ্রলি....দত্তমিতি) ইন্দ্র লিঙ্গাদি অর্থে (বা) বিকল্প দ্বারা। ষষ্ঠী সমর্থ ইন্দ্র শব্দ দ্বারা লিঙ্গ অর্থে ঘচ্ প্রত্যয়ের নিপাতন হয়। 

উদাহরণ– "ইন্দ্রস্য লিঙ্গ ইন্দ্রিয়ম্" এখানে ইন্দ্র নাম জীবাত্মা, তথা লিঙ্গ নাম চিহ্নের। জীবাত্মা যে চিহ্ন তাকে ইন্দ্রিয় বলে।

জয়াদিত্য অষ্টাধ্যায়ীর কাশিকা বৃত্তিতে এই সূত্রের বৃত্তিতে ইন্দ্র অর্থ আত্মা (জীবাত্মা), এই ভাবকে স্পষ্টভাবেই বলেছেন, "ইন্দ্র আত্মা, স চক্ষুরাদিনা করণেনানুমীয়তে"।



৮. এবার তাহলে উক্ত মন্ত্রের যথার্থ অনুবাদ মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর ঋগ্বেদ ভাষ্য অনুসরণ করে অনুবাদ থেকে দেখে নেওয়া যাক। 

রূপং রূপং প্রতিরূপো বভুব তদস্য রূপং প্রতিচক্ষণায় ৷
ইন্দ্রো মায়াভিঃ পুরুরূপ ঈয়তে যুক্তা হ্যস্য হরয়াঃ শতা দশ ৷।
[ঋগ্বেদ – ৬।৪৭।১৮]

পদার্থ– (ইন্দ্রঃ) জীবাত্মা (মায়াভিঃ) প্রজ্ঞা দ্বারা (প্রতিচক্ষণায়) প্রত্যক্ষ কথনের জন্য (রূপংরূপম্) রূপে রূপে (প্রতিরূপঃ) প্রতিরূপ অর্থাৎ স্বরূপে বর্তমান (বভুব) থাকে এবং  (পুরুরূপঃ) অনেক শরীর ধারণ করে বিবিধ রূপ (ঈয়তে) পেয়ে যায়৷ (তৎ) সেই জীবাত্মা (অস্য) এই শরীরের (রূপম্) রূপ হয় এবং (অস্য) এই জীবাত্মা (হি) নিশ্চিত ভাবে (দশ) দশ সংখ্যা বিশিষ্ট এবং (শতা) শত সংখ্যা বিশিষ্ট (হরয়ঃ) অশ্বের ন্যায় ইন্দ্রিয়, অন্তঃকরণ এবং প্রাণ (যুক্তাঃ) যুক্ত শরীরকে ধারণ করে। 



[বি. দ্র. অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, এই মন্ত্রে কি ইন্দ্র অর্থ কখনই পরমাত্মা গ্রহণ করা যাবে না? এর উত্তর হচ্ছে–  যাবে, সর্বব্যাপক পরমাত্মা অর্থে৷ তবে সেখানে খেয়াল রাখতে হবে যাতে উপর্যুক্ত ৪,৫,৬ নং পয়েন্টে বর্ণিত ঈশ্বরের গুণাবলি খণ্ডিত না হয়। আর আমার উপরের লেখাটিতে মূলত রমেশচন্দ্রের অনুবাদের ভুল ও তা প্রচারকারীদের অযথার্থতা তুলে ধরা হয়েছে।]
নিরুক্তে দেবতার আকার প্রসঙ্গে

বেদ ব্যাখ্যার জন্য নিরুক্ত একটি অত্যুৎকৃষ্ট গ্রন্থ। এই গ্রন্থ আদ্যোপান্ত অধ্যয়ন করলে বেদোক্ত শব্দ গুলোর প্রকৃত অর্থ স্পষ্ট হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় কিছু কিছু ব্যক্তি নিরুক্তের ব্যাখ্যাপদ্ধতি সম্পর্কে অবগত না হয়েই নিরুক্ত হতে আংশিক উদ্ধৃতি দিয়ে নানান রকম অপপ্রচার চালায়। 

সম্প্রতি দেখতে পেলাম নিরুক্ত ৭।৬ প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে নিরুক্তকার যাস্ক দেবতাদের মানুষের ন্যায় শরীরধারী বলেছেন। অর্থাৎ সেই সব অপপ্রচারকারীদের মতে, নিরুক্ত অনুসারে বেদে "ইন্দ্র" বলতে দধীচী মুনির হাড় (বজ্র) ধারণকারী, ঐরাবত নামক হাতিসওয়ার একজন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে!

চলুন, তাদের মতটা কতটা যৌক্তিক তা নিরুক্ত থেকেই দেখে নেওয়া যাক। তবে মূল বিষয়ে প্রবেশের আগে একটি বিষয় পরিষ্কার করে দেওয়া প্রয়োজন বোধ করছি। 


নিরুক্তের বিভিন্ন স্থানে যাস্কাচার্য বিভিন্ন পূর্ববর্তী নিরুক্তকারের মত তুলে ধরে কখনও তা সমর্থন করেছেন আবার কখনও তা খণ্ডন করেছেন। একই ভাবে তিনি বিভিন্ন স্থানে পূর্বপক্ষ হিসেবে ঐতিহাসিক, পরিব্রাজক প্রভৃতি মতও প্রদর্শন করেছেন। এখানে সকলের বোঝা উচিত যে এসব
 মত তিনি শুধু পূর্বপক্ষ হিসেবে তুলে ধরেছেন এগুলোকে সিদ্ধান্ত হিসেবে নেননি। তাই কেউ যদি এই পূর্বপক্ষের মত গুলোকে যাস্কের সিদ্ধান্ত হিসেবে প্রচার করে, তবে সেটি হবে তার চরম জ্ঞানহীনতার বহিঃপ্রকাশ। 
अतिष्ठन्तीनामनिवेशनानां काष्ठानां मध्ये निहितं शरीरम् । वृत्रस्य निण्यं वि चरन्त्यापो दीर्घं तम आशयदिन्द्रशत्रुः ॥-ऋग्वेद0 मण्डल:1 सूक्त:32 मन्त्र:10
फिर उस मेघ का शरीर कैसा और कहाँ स्थित होता है, इस विषय का उपदेश अगले मन्त्र में किया है।

अन्वय:
पुनस्तस्य शरीरं कीदृशं क्व तिष्ठतीत्युपदिश्यते।
पदार्थान्वयभाषाः -हे सभा स्वामिन् ! तुम को चाहिये कि जिस (वृत्रस्य) मेघ के (अनिवेशनानाम्) जिनको स्थिरता नहीं होती (अतिष्ठन्तीनाम्) जो सदा बहनेवाले हैं उन जलों के बीच (निण्यम्) निश्चय करके स्थिर (शरीरम्) जिसका छेदन होता है ऐसा शरीर है वह (काष्ठानाम्) सब दिशाओं के बीच (निहितम्) स्थित होता है। तथा जिसके शरीर रूप (अपः) जल (दीर्घम्) बड़े (तमः) अन्धकार रूप घटाओं में (विचरन्ति) इधर-उधर जाते आते है वह (इन्द्रशत्रुः) मेघ उन जलों में इकट्ठा वा अलग-२ छोटा-२ बदल रूप होके (अशयत्) सोता है। वैसे ही प्रजा के द्रोही शत्रुओं को उनके सहायियों के सहित बांध के सब दिशाओं सुलाना चाहिये ॥१०॥
भावार्थभाषाः -इस मंत्र में वाचकलुप्तोपमालङ्कार है। सभापति को योग्य है कि जैसे यह मेघ अन्तरिक्ष में ठहरानेवाले जलों में सूक्ष्मपन में नहीं दीखता फिर जब घन के आकार वर्षा के द्वारा जल का समुदाय रूप होता है तब वह देखने में आता है और जैसे वे जल एक क्षणभर भी स्थिति को नहीं पाते हैं किन्तु सब काल में ऊपर जाना वा नीचे आना इस प्रकार घूमते ही रहते हैं और जो मेघ के शरीर रूप हैं वे अन्तरिक्ष में रहते हुए अति सूक्ष्म होने से नहीं दीख पड़ते वैसे बड़े-२ बलवाले शत्रुओं को भी अल्प बलवाले करके वशीभूत किया करे ॥१०॥-स्वामी दयानन्द सरस्वती

এই বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে পরিষ্কার করে নেওয়া যাক।

ঋগ্বেদের ১।৩২।১০ মন্ত্রে "বৃত্র" শব্দটি রয়েছে। 


এই মন্ত্রটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নিরুক্তকার যাস্ক নিরুক্ত ২।১৬-তে প্রথমে একটি প্রশ্নের অবতারণা করে বলেছেন, 

"তৎকো বৃত্রঃ। = তাহলে বৃত্র কে?" 

এর উত্তর তিনি নিজে (নিরুক্তকারের মত হিসেবে) দিয়ে বলেছেন, 

"মেঘ ইতি নৈরুক্তাঃ। = মেঘই বৃত্র, এটি নিরুক্তকারদের মত।" 

এখানে যাস্কাচার্য স্পষ্ট করে দিলেন যে, নিরুক্তকারগণ বৃত্র অর্থ মেঘ মানেন। 

এর প্রমাণ আমরা নিঘণ্টু ১।১০ এ পাবো। সেখানে "বৃত্রঃ"কে মেঘের পর্যায়বাচী শব্দ হিসেবে নির্বচন করা হয়েছে। 




কিন্তু অনেকে (ইতিহাসপ্রিয়গণ) মনে করেন, বৃত্র হচ্ছে ত্বষ্টাসুরের পুত্র। তাই যাস্কাচার্য একটি পূর্বপক্ষ স্থাপন করে বলছেন, 

"ত্বাষ্ট্রোঽসুর ইত্যৈতিহাসিকাঃ।

 =  ঐতিহাসিকদের মতে, বৃত্র ত্বষ্টা অসুরের পুত্র।" 

এখন যাস্কাচার্য এই মতকে খণ্ডন করে নৈরুক্ত মতকে সিদ্ধান্ত হিসেবে দেওয়ার জন্য বলছেন,

 "অপাং চ জ্যোতিষশ্চ মিশ্রীভাবকর্মণী বর্ষকর্ম জায়তে। তত্রোপমার্থেন যুদ্ধবর্ণা ভবন্তি। 

= জল ও বিদ্যুতের মিলনক্রিয়া হতে বর্ষণ সজাত হয়। 



এরূপ হওয়া ইন্দ্র বৃত্রের যে যুদ্ধ বর্ণনা রয়েছে, তা উপমামাত্র।" অর্থাৎ এখানে যাস্কাচার্য "উপমা" শব্দটির মাধ্যমে ঐতিহাসিক মত খণ্ডন করে বললেন, মেঘস্থ জল (বৃত্র) ও বিদ্যুতের (ইন্দ্রের) মিলনক্রিয়াকেই বেদে উপমা হিসেবে ইন্দ্র বৃত্রের যুদ্ধ বলা হয়েছে, এটি কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা নয়।



এবার আসি মূল প্রসঙ্গে। নিরুক্তের ৭ম অধ্যায় থেকে দৈবতকাণ্ড শুরু। অর্থাৎ এই ৭ম অধ্যায় থেকে বেদোক্ত দেবতাদের বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এজন্য আমাদের প্রথমে বেদ মন্ত্রের দেবতা কাকে বলে সেটি দেখে নিতে হবে। 


নিরুক্তের ৭।১ এ বলা হচ্ছে,

 "যৎকাম ঋষির্যস্যাং দেবতায়ামার্থপত্যমিচ্ছন্স্তুতিং প্রযুক্তে তদ্দৈবতঃ স মন্ত্রো ভবতি। 

= কামনাকারী ঋষিগণ যে দেবতায় পদার্থের বল, কর্ম চেয়ে স্তুতি প্রযুক্ত করেন, সেই মন্ত্র সেই দেবতারই হয়।" 


অর্থাৎ মন্ত্রসমূহ যে পদার্থ বা দেবতার উপর প্রযুক্ত হয়ে স্তুত (আলোচিত) হয়, সেই পদার্থই/দেবতাই সেই মন্ত্রের দেবতা হন। 

এই দেবতা সম্পর্কিত আলোচনা করতে গিয়ে যাস্কাচার্য নিরুক্ত ৭।৬ এর প্রথমে একটি আলোচ্য বিষয় ঠিক করে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "অথাকারচিন্তনং দেবতানাম্। = এখন দেবতাদের আকার চিন্তা বিষয়ে বলা হচ্ছে।" 





এটি বলে তিনি একটি পূর্বপক্ষ স্থাপন করে বলছেন, 

"পুরুষবিধাঃ স্যুরিত্যেকম্। চেতনাবদবদ্ধি স্তুতয়ো ভবন্তি। তথাভিধানানি। অথাপি পৌরুষবিধিকৈরঙ্গৈঃ সংস্তূয়ন্তে। 

= দেবতারা পুরুষের (মানুষের) মতো শরীরধারী, এটি একটি মত। (এই মতের স্বপক্ষে পূর্বপক্ষের যুক্তি দিয়ে বলছেন) যেহেতু মন্ত্রে দেবতাদের স্তুতি চেতনাবানের মতো করে করা হয়েছে। দেবতাদের পরস্পর কথোপকথন রয়েছে। আরও যুক্তি হচ্ছে, দেবতারা মানুষের মতো অঙ্গ দ্বারা স্তুত হন।"






 এই তিনটি যুক্তি দেওয়ার পর পূর্বপক্ষ বেদমন্ত্রের মাধ্যমে প্রমাণ দিচ্ছেন,

 "ঋষ্বা ত ইন্দ্র স্থবিরস্য বাহূ [ঋক- ৬।৪৭।৮]। যৎ সংগৃভণা মঘবন্ কাশিরিত্তে [ঋক- ৩।৩০।৫]।" 




পূর্বপক্ষ আরও প্রমাণ দিতে গিয়ে বলছেন, 

"অথাপি পৌরুষবিধিকৈর্দ্রব্যসংযোগৈঃ। 

= আরও যেখা যায়, মানুষেরা যেমন বিবিধ দ্রব্যসংযোগ দ্বারা বিশিষ্ট হয়, দেবতারাও তেমনি। (যেমন–)" "আ দ্বাভ্যাং হরিভ্যামিন্দ্র যাহি [ঋক- ২।১৮।৪]। কল্যাণীর্জায়া সুরণং গৃহতে [ঋক- ৩।৫৩।৬]।" 

"অথাপি পৌরুষবিধিকৈঃ কর্মভিঃ। 

= আরও দেখা যায়, দেবতারা মানুষের মতো কর্ম করেন। (যেমন–)" "অদ্ধীন্দ্র পিব চ প্রস্থিতস্য [ঋক- ১০।১১৬।৭]। আশ্রুৎকর্ণ শ্রুধী হবম্ [ঋক- ১।১০।৬]।।"

ঋক- ১।১০।৬


অর্থাৎ ১ম পূর্বপক্ষ দেবতাদের মানবের ন্যায় প্রমাণ করার জন্য যে কয়েকটি যুক্তি তুলে ধরেছেন, সেগুলো হলো–


i. দেবতাদের চেতনের মতো স্তুতি করা হয়,
ii. বেদে দেবতাদের পারস্পারিক  কথোপকথন দেখা যায়,
iii. দেবতারা অঙ্গ দ্বারা স্তুত, 
iv. দেবতারা বিভিন্ন দ্রব্য বিশিষ্ট্য ও 
v. দেবতাদের মানুষের ন্যায় কর্ম করতে দেখা যায়।


এবার উপর্যুক্ত ১ম পূর্বপক্ষের যুক্তিকে খণ্ডন করার জন্য যাস্কাচার্য নিরুক্তের ৭।৭ এ আরেকটি পূর্বপক্ষ স্থাপন করে বলছেন, 

"অপুরুষবিধাঃ স্যুরিত্যপরম্। 

= দেবতারা মানুষের মতো নয়, এটি আরেকটি মত।" 



এখন প্রশ্ন হচ্ছে, দেবতারা যদি মানুষের মতো না হয়, তবে দেবতারা কেমন? এর উত্তরে দ্বিতীয় পূর্বপক্ষ বলছে, 

"অপি তু যদ্ দৃশ্যতেঽপুরুষবিধং তদ্ যথাগ্নির্বায়ুরাদিত্যঃ পৃথিবী চন্দ্রমা ইতি। 

= অধিকন্তু দেবতাদের যে বর্ণনা পাওয়া যায় তা অপুরুষবিধ। যেমন- অগ্নি, বায়ু, আদিত্য, পৃথিবী, চন্দ্রমা।" 





অর্থাৎ দ্বিতীয় পূর্বপক্ষের মতে এই দেবতারা জড় বস্তু। 


এরপর ১ম পূর্বপক্ষের ১ম যুক্তি তুলে ধরে তা খণ্ডন করে বলছেন,

"যথো এতচ্চেতনাবদ্ বদ্ধিস্তুতয়ো ভবন্তীত্যচেতনান্যপেব্যং স্তূয়ন্তে যথাক্ষপ্রভৃতীন্যোষধিপর্যন্তানি। 

= পূর্বপক্ষ যে বলে দেবতাদের চেতনের মতো করে স্তুতি করা হয়েছে জন্য দেবতা মানুষের ন্যায় চেতন, তা ঠিক নয়। কেননা 'অক্ষ' থেকে শুরু করে 'ওষুধী' পর্যন্ত জড় বস্তুর স্তুতি (আলোচনা) বেদে পাওয়া যায়।" 





এরপর দ্বিতীয় পক্ষ আবারও ১ম পক্ষের অপর যুক্তি খণ্ডন করে বলছেন,


 "যথো এতৎপৌরুষবিধিকৈরঙ্গৈঃ সংস্তূয়ন্তইত্যচেতনেষপ্যেতদ্ ভবত্যভিক্রন্দতি হরিতেভিরাসভিঃ ইতি গ্রাবস্তুতিঃ। 

= মানুষের ন্যায় অঙ্গযুক্ত দেবতার স্তুতি করা হয় জন্য পূর্বপক্ষ যে দেবতাদের মানুষের ন্যায় বলেছে, তাও ঠিক নয়। কারণ জড় পদার্থের ক্ষেত্রেও এরূপ দেখা যায়। যেমন- 'অভিক্রন্দতি হরিতেভিরাসভিঃ' [ঋক- ১০।৯৪।২], এই মন্ত্রে পাথরের স্তুতি।"




 এরপর আরও একটি যুক্তি খণ্ডন করে বলছেন,

 "যথো এতৎ পৌরুষবিধিকৈর্দ্রব্যসংযোগৈরিত্যতদপি তাদৃশমেব সুখং রথং যুযুজে সিন্ধুরশ্বিনম্ ইতি নদীস্তুতিঃ। 

= পূর্বপক্ষ যে বলেছে, দেবতাদের মানুষের মতো দ্রব্যসংযোজিত হতে দেখা যায়, ফলে দেবতারা মানুষের ন্যায়, এটিও ঠিক নয়। কারণ এগুলো রূপকমাত্র। যেমন- 'সুখং রথং যুযুজে সিন্ধুরশ্বিনম্' [ঋক- ১০।৭৫।৯৫] মন্ত্রে এভাবে (দ্রব্যসংযোগে রূপক) নদীর স্তুতি করা হয়েছে।" 





এরপর দ্বিতীয় পক্ষ আরও যুক্তি খণ্ডনের জন্য বলছেন, 

"যথো এতৎ পৌরুষবিধিকৈঃ কর্মভিরিত্যেতদপি তাদৃশমেব হোতুশ্চিৎ পূর্বে হবিরদ্যমাশত ইতি গ্রাবস্তূতিরেব। 

=  দেবতারা পুরুষবিধ দাবিকারীগণ বলেছিলেন, মানুষের মতো কর্ম করতে দেখা যাওয়ার কারণে দেবতারা পুরুষের ন্যায়। তাদের এই মতও ঠিক নয়। কারণ এটিও রূপকমাত্র। যেমন- 'হোতুশ্চিৎ পূর্বে হবিরদ্যমাশত' [ঋক- ১০।৯৪।২] মন্ত্রে এভাবে পাথরের স্তুতি করা হয়েছে।" 




এভাবে উদাহরণ ও যুক্তি দিয়ে ২য় পক্ষ অর্থাৎ অপুরুষবিধ পক্ষ ১ম পূর্বপক্ষ অর্থাৎ দেবতা পুরুষবিধ এই মতবাদীদের খণ্ডন করলেন।


এরপর নিরুক্তের এই খণ্ডেই যাস্কাচার্য ৩য় একটি পূর্বপক্ষ স্থাপন করেছেন। এই পক্ষটি বর্তমান সনাতন সমাজের কিছু সংগঠনের মতো, যারা প্রমাণ ও যুক্তির ধার না ধেরে উভয়দিক রক্ষা করে লাভবান হতে চায়। এই ৩য় পক্ষটিও তেমন। 

এই পূর্বপক্ষ বলছেন, 

"অপি বোভয়বিধাঃ স্যুঃ। 

= দেবতারা উভয় প্রকার হতে পারেন।" 


উপর্যুক্ত সকল মত ও যুক্তিকে বিশ্লেষণ করে এবার সিদ্ধান্তরূপ চতুর্থপক্ষ স্থাপন করছেন। এই চতুর্থপক্ষকে সিদ্ধান্ত বলার কারণ একটুপর ব্যাখ্যা করা হবে। তার আগে এই পক্ষের বক্তব্য দেখে নেওয়া যাক। তিনি বলছেন, 

"অপি বা পুরুষবিধিনামেব সতাং কর্মাত্মান এতে স্যূর্যথা যজ্ঞো যজমানস্য। এষ চাখ্যানসময়ঃ।। 

= অথবা পুরুষবিধ হতে থেকে কর্মই শরীর হয়। যেমন- যজ্ঞ যজমানের কর্মশরীর। এটিই সিদ্ধান্ত।।"




এখানে মনোযোগ দেওয়ার বিষয় হচ্ছে, সিদ্ধান্তরূপে যাস্কাচার্য দেবতাদের পুরুষবিধ মানলেও তিনি কর্ম শরীরের মাধ্যমে পুরুষবিধ মেনেছেন, পার্থিব শরীরে নয়। এই কর্ম শরীরের বিষয়টি স্পষ্ট হওয়া যায় তাঁর দেওয়া উদাহরণের মাধ্যমে। উদাহরণে তিনি যজ্ঞ ও যজমানের প্রসঙ্গ টেনেছেন। বেদে অনেক মন্ত্রে দেখা যায় মন্ত্রের দেবতা হচ্ছেন "যজ্ঞ"। 

কিন্তু এই যজ্ঞ দেবতা কিভাবে পুরহষবিধ হবেন? এর উত্তর হচ্ছে, যেহেতু এই যজ্ঞ সম্পাদনকারী যজমানের মাধ্যমে যজ্ঞ কর্ম সম্পাদন হয়, তাই সেই যজমানই পুরুষবিধ দেবতা, যজ্ঞ নামধারী অদ্ভুত কোনো ব্যক্তিবিশেষ দেবতা নয়৷ 


একইভাবে অগ্নি দ্বারা কোনো ছাগবাহন ব্যক্তিকে বুঝায় না, বরং অগ্নির ন্যায় তেজস্বী বিদ্বানকে বুঝায়৷ আবার ইন্দ্র দ্বারা ঐরাবতবাহী কাউকে নয়, বরং ঐশ্বর্যবান রাজাকেও বুঝায়৷ 




আর এটি যে সিদ্ধান্ত, তার পক্ষে প্রমাণ হচ্ছে "এষ চাখ্যানসময়ঃ" বাক্যের "আখ্যান" শব্দটি। পাণিনিকৃত অষ্টাধ্যায়ীর ৮।২।১০৫ এর "অনন্ত্যস্যাপি প্রশ্নাখ্যানয়োঃ।" সূত্র অনুসারে "আখ্যান" শব্দটি "প্রশ্নের উত্তর" বাচক। 


পরিশেষে, এরপরও যদি মনে করেন বেদ মন্ত্রের দেবতাগণ অদ্ভুত আকারে (যেমন চার হাত, দুই মাথা বিশিষ্ট) কোনো ব্যক্তি বিশেষ, তাহলে আপনাদের সামনে একটি প্রশ্ন রাখতে চাই৷ 


আপনাদের কি মনে হয়, বেদে ইন্দ্র বলতে সেই ঐরাবত নামক হাতি সওয়ার একজনকে নির্দেশ করছে, যে নিজের গুরুর গুরুর পত্নীর সাথে অপকর্ম করেছিলে এবং এরফল স্বরূপ নিজের অণ্ডকোষ হারাতে হয়েছিলো! পরে অবশ্য মেষের অণ্ডকোষ তার অণ্ডকোষের জায়গায় লাগানো হয়েছিলো। 




[দ্রষ্টব্য- স্কন্দ পুরাণ নাগর খণ্ড অধ্যায় ২০৭-২০৮, 




স্কন্দ পুরাণ আবন্ত্য খণ্ড অধ্যায় ১৩৬, 




লিঙ্গ পুরাণ পূর্ব্ব ভাগ  ২৯.২৭









বাল্মিকী রামায়ণ আদি পর্ব অধ্যায় ৪৮.২৭-২৮


বাল্মিকী রামায়ণ আদি পর্ব অধ্যায় ৪৯.৬-৮


যাঁরা বলেন,ঈশ্বর সর্ব শক্তিমান তাই সাকার হতে পারেন,তাঁদের উদ্দেশ্যে বলি,যেখানে স্বয়ং ঈশ্বর বেদবাণীতে বলছেন,তিনি স্থুল,সূক্ষ্ম ও কারণ শরীর ধারণ করেন না,সেখানে আপনি ও আপনাদের গুরুরা কি, ঈশ্বরের চেয়ে বেশি জ্ঞানী হয়েছেন নাকি?!!!
কিছু অতিজ্ঞানী মূর্খ বৈষ্ণব বলেন, ঈশ্বরের শরীর অপ্রাকৃত!!ঈশ্বর জগৎ সৃষ্টি করেছেন, প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে।তাহলে নিজের অপ্রাকৃত শরীর কোন উপাদান দিয়ে সৃষ্টি করেছেন?!!এই অপ্রাকৃত শরীরের উপাদান,ঈশ্বর মনে হয়,বৈষ্ণবদের ঘর থেকে সংগ্ৰহ করেন!!!
এইজন্য বলা হয়,বেদ বিরোধী নাস্তিক সম্প্রদায়ের নাম হল,বৈষ্ণব।
স পর্যগাচ্ছুক্রমকায়মব্রণ-
মস্নাবিরং শুদ্ধপাপবিদ্ধম্।
কবির্মনীষী পরিভূঃ স্বয়ম্ভূ-
র্যাথাতথ্যতোহর্থান্ ব্যদধাচ্ছাশ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ।।যর্জুবেদ:অধ্যায় ৪০ মন্ত্র ৮
অর্থাৎ পরমাত্মা সর্বব্যাপী, জ্যোতির্ময় ও অশরীরী, ক্ষতরহিত, শিরাহীন, স্নায়ুহীন, নির্মল ও অপাপবিদ্ধ। তিনি, সর্বদর্শী, সর্বজ্ঞ, সর্বোপরি বিদ্যমান ও স্বয়ম্ভূ।
শংকর-ভাষ্যম্
যোহয়মতীতৈর্মন্ত্রৈরুক্ত আত্না, স স্বেন রূপেণ কিংলক্ষণ ইত্যাহ অয়ং মন্ত্রঃ। স পর্য্যগাৎ, স যথোক্ত আত্না পর্য্যগাৎপরি সমন্তাৎ অগাৎ গতবান্ আকাশবদ্ব্যাপীতর্থ্যঃ।
শুক্রং শুদ্ধং জ্যোতিষ্মৎ দীপ্তিমানিত্যর্থঃ।অকায়মশরীরঃ--
লিঙ্গশরীরবর্জিত ইত্যর্থঃ।অব্রণমক্ষতম্।অস্নাবিরং--স্নাবাঃ শিরা যস্মিষ্ ন বিদ্যন্ত ইত্যস্নাবিরম্।অব্রণমস্নাবিরমিত্যেতাভ্যাং স্থুলশরীরপ্রতিষেধঃ। শুদ্ধং নির্মলমবিদ্যামলরহিতমিতি কারণ শরীর প্রতিষেধঃ।অপাপবিদ্ধং ধর্মাধর্মাদিপাপবর্জিতম্।শুক্রমিত্যাদীনি বচাংসি পুংলিঙ্গত্বেন পরিণেয়ানি। 'স পর্য্যগাৎ' ইত্যুপক্রম্য 'কবির্মনীষী' ইত্যাদিনা পুংলিঙ্গত্বেনোপসংহারাৎ।কবিঃ ক্রান্তদর্শী---সর্বদৃক্। 'নান্যোহতোহস্তি দ্রষ্টা'(বৃ.আ. 3/7/23) ইত্যাদিশ্রুতেঃ। মনীষী মনস ঈষিতা-----সর্বজ্ঞ ঈশ্বর ইত্যর্থঃ।পরিভূঃ সর্বেষাং পরি উপরি ভবতীতি পরিভূঃ।স্বয়ম্ভূঃ স্বয়মেব ভবতীতি,যেষামুপরি ভবতি,যশ্চোপরি ভবতি,সঃ সর্ব স্বয়মেব ভবতীতি স্বয়ম্ভূঃ।স নিত্যমুক্ত ঈশ্বরো যাথাতথ্যতঃ, সর্বজ্ঞত্বাদ্,যথাতথাভাবো যাথাতথ্যং তস্মাদ্ যথাভূতকর্মফলসাধনতোহ-র্থান্ কর্তব্যপদার্থান্ ব্যদধাদ্বিহিতবান্ যথানুরূপং ব্যভজদিত্যর্থঃ শাশ্বতীভ্যো নিত্যাভ্যঃ সমাভ্যঃ সংবৎসরাখ্যেভ্যঃ প্রজাপতিভ্য ইত্যর্থঃ।।

'তদেজতি তন্নৈজতি তদ্ দূরে তদ্বন্তিকে।
তদন্তরস্য সর্ব্বস্য তদু সর্ব্বস্যাস্য বাহ্যতঃ।।'-যজুর্বেদ ৪০। ৫
-অর্থাৎ ঈশ্বর গতিশূন্য প্রকৃতিতে গতি উৎপন্ন করে কিন্তু স্বয়ং গতিতে আসে না, সেই গতিদাতা পরমেশ্বর অজ্ঞানীর নিকট দূরে বিভিন্ন মঠ মন্দিরে কিন্তু জ্ঞানীর নিকট্ থেকে নিকটে, তিনি ব্রহ্মান্ডের সমস্ত জীব ও জগতের ভিতর ও বাইরে বিদ্যমান। আমাদের সেই সর্বব্যাপক পরমাত্মার উপাসনা করা উচিত..

আবৃত্তিস্তত্রাপ্যুত্তরোত্তরযোনিযোগাদ্বেয়ঃ।। সাংখ্যঃ ৩।৫২
সরলার্থঃ যত উচ্চ জন্ম হউক না কেন তাহা জন্ম ও মৃত্যুর অধীন এবং তাহাকে স্থির রাখিবার জন্য কর্মরূপ আবৃত্তির প্রয়োজন যাহা ত্রিবিধ দুঃখের অধীন। যাহা আবৃত্তি সাপেক্ষ তাহা পরম পুরুযার্থ হইতে পারে না। সেই কারণ জন্মের নিবৃত্তি বা বন্ধন মোচনের দ্বারা মুক্তির উপায়ই পুরুষের শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থ, অন্য সমস্ত পুরুষার্থ হেয় বা গৌণ। "সমানংজরামরণাদিজং দুঃখম্ " অর্থাৎ- যত প্রকার উচ্ছ জন্ম লাভ হউক না কেন সে সমস্তই জরামরণাদি দুঃখের অধীন সেই কারণ মুক্তির প্রয়োজন। "স হি সর্ববিৎসর্বকর্ত্তা" -ঈশ্বর সর্বজ্ঞ, সর্বব্যাপক, সর্বশক্তিমান, এক রস ও অমূর্ত্ত বলিয়া সমস্তই তাঁহার অধীনে রাখিতে পারেন। তিনিই সৃষ্টির একমাত্র কর্ত্তা। জ্ঞানই কর্ত্তৃত্বের মূল। তিনি সর্বজ্ঞ বলিয়া সমগ্র সৃষ্টির একমাত্র নিরপেক্ষ কর্ত্তা। "ইদৃশেশ্বরসিদ্ধিঃ সিদ্ধা" -তিনিই সৃষ্টিকর্ত্তা, নিত্যমুক্ত, একরস। মুক্ত পুরুষ সূক্ষ্ম শরীর লইয়া মুক্তাবস্থায় ব্রহ্মানন্দে অবস্থান করেন, তিনি কখনোও ঈশ্বর হতে পারেন না..

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

ব্রহ্মচর্যের সাধনা ভোজন

  নবম ভাগ ভোজন ভূমিকা - "ধর্মার্থকামমোক্ষাণামারোগ্যম্ মূলমুত্তমম্" . ধর্ম-অর্থ-কাম আর মোক্ষ এই পুরুষার্থচতুষ্টয় হল মানব জীবনের উ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ