সপর্য়্য গাচ্ছ ক্রমকায়ম ব্রণমন্নাবির শুদ্ধমপাপবিদ্ধম।
কবির্মনীষী পরিভূঃ স্বযস্তূরযাথা তথ্যতোর্থান
বদধাচ্ছাশ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ।।
যজুঃ অঃ ৪০ মঃ ৮
ঈশ্বরের গুন কীর্ত্তন, শ্রবন এবং জ্ঞান কে স্তুতি করা বলে। ঐ পরমাত্বা সকল বস্তুতে ব্যাপক, শীঘ্রকারী, অনন্ত বলবান শুদ্ধ,সর্বজ্ঞ,সকলের অন্তর্য্যামী,সর্ব্বোপরি বিরাজমান, সনাতন এবং স্বয়ংসিদ্ধ, তিনি স্বয়ং জীবাদি সনাতন অনাদি প্রজাদিগকে আপনার সনাতন বিদ্যা দ্বারা বেদ প্রকাশ করতঃ অর্থবোধ করাইতেছেন ইত্যাদিকে সগুনস্তুতি বলে।
ফলপ্রাপ্তিঃ স্তুতি হতে ঈশ্বরের প্রীতি এবং তাহার গুন কর্ম ও স্বভাব দ্বারা নিজের গুন কর্ম ও স্বভাবের সংশোধন হয়।
ঈশ্বরের সম্বন্ধ বশতঃ আপনার সামর্থ্যের অতিরিক্ত যে সমস্ত বিজ্ঞানাদি প্রাপ্ত হওয়া যায়, তাহার জন্য ঈশ্বরের নিকট যাঞা করাকে প্রার্থনা করা বলে।
ফলপ্রাপ্তিঃ প্রার্থনা হতে নিরভিমানিতা,উৎসাহ এবং সাহায্য লাভ হয়
ঈশ্বরের গুনকর্ম্ম ও স্বভাব কর্ম্ম যেরুপ পবিত্র, আপনারও তদ্রুপ করা, ঈশ্বরকে সর্ব্বব্যাপক এবং আপনাকে ব্যাপ্য জানিয়া এবং ঈশ্বরেরে আমরা সমীপস্থ এবং ঈশ্বর আমাদিগের সমীপস্থ এইরুপ নিশ্চয় করতঃ যোগাভ্যাস দ্বারা তাঁহার সাক্ষাৎ করণকে উপাসনা বলে।
ফলপ্রাপ্তিঃ জ্ঞানের উন্নতি এবং উপাসনা হতে পরব্রম্ভ্রে ঐক্য ও তাঁহার সাক্ষাৎকার।
অথঃ ঈশ্বরস্তুতি-প্রার্থনা-উপাসনা মন্ত্র
ওতম্ বিশ্বানি দেব সবিতর্দুরিতানি পরাসুব।
যদভদ্রন্তন্ন আসুব।।-[যজুঃ৩০।৩]
-হে সকল সৃষ্টির রচয়িতা পরমেশ্বর! আমাদের সব দূর্গুণ দূর করিয়া যাহা কিছু কল্যাণকর তাহাই দান করুন।।
ওতম্ হিরণ্যগর্ভঃ সমবর্ত্ততাগ্রে ভূতস্য জাতঃ পতিরেক আসীৎ।
স দাধার পৃথিবীং দ্যামুতেমাং কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম।।-[যজুঃ১৩।৪]
যে পরমাত্মা গর্ভে জ্যোতিষ্ক মন্ডল ধারণ করিয়া আছেন, যিনি এই সৃষ্টির উৎপত্তির পূর্ব হইতেই বিদ্যমান আছেন এবং
যিনি এই উৎপন্ন জগতের সর্ববিদিত স্বামী, তাঁহারই আশ্রয়ে পৃথ্বীলোক ও দ্যুলোক স্থিত রহিয়াছে। আমরা সেই সুখ স্বরূপ সৃষ্টিকর্ত্তা পরমাত্মাতে আত্মসমর্পণ করিয়া স্তুতি ও উপাসনা করিতেছি।।
ও৩ম্ য আত্মদা বলদা যস্য বিশ্ব উপাসতে প্রশিষং যস্য দেবাঃ।
যস্যচ্ছায়াহমৃতং যস্য মৃতুঃ কস্মৈ দেবায হবিষা বিধেম।।-[যজুঃ২৫।১৩]
যিনি আত্মবল ও দেববলের দাতা, যাঁহার শাসনকে বিদ্বানেরা প্রশংসা করেন, যাঁহার আশ্রয়ই অমৃত ও যাঁহার বিয়োগই মৃত্যু, আমরা সেই সুখস্বরূপ সৃষ্টিকর্তা পরমাত্মায় আত্মসমর্পণ করিয়া স্তুতি ও উপাসনা করিতেছি।।
ও৩ম্ যঃ প্রাণতো নিমিষতো মহিত্বৈক ইদ্রাজা জগতো বভূব।
য ঈশে অস্য দ্বিপদশ্চতুস্পদঃ কস্মৈ দেবায হবিষা বিধেমঃ।।-[যজুঃ২৩।৩]
যিনি স্বীয় মহিমায় প্রাণী ও অপ্রাণী জগতের একমাত্র রাজা এবং সব দ্বিপদ ও চতুস্পদ প্রাণীর উপর শাসন করিতেছেন, আমরা সকলে সেই সুখস্বরূপ সৃষ্টিকর্তা পরমাত্মায় আত্মসমর্পণ করিয়া স্তুতি ও উপাসনা করিতেছি।।
ও৩ম্ যেন দ্রৌরুগ্রা পৃথিবী চ দৃঢ়া যেন স্বঃ স্তুভিতং যেন নাকঃ।
যো অন্তরিক্ষে রজসো বিমানঃ কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেমঃ।।-[যজুঃ৩২।৬]
যাঁহার দ্বারা আকাশ উজ্জ্বল ও পৃথিবী স্বীয় কক্ষপথে দৃঢ় হইয়া আছে, যিনি আকাশে সব লোক লোকান্তকে নির্মাণ করিয়াছেন, আমরা সেই সুখস্বরূপ সৃষ্টিকর্তা পরমাত্মায় আত্মসমর্পণ করিয়া স্তুতি ও উপাসনা করিতেছি।।
ও৩ম্ প্রজাপতে ন ত্বদেতান্যন্যো বিশ্বা জাতানি পরি তা বভুব।
যৎকামাস্তে জুহুমস্তন্নো অস্তু বয়ং স্যাম পতযো রযীণাম্।।-[ঋগ্বেদঃ১০।১২১।১০]
হে প্রজাপতি পরমাত্মন্ ! তুমি ছাড়া এই সব উৎপন্ন জড় চেতনাদি পদার্থের উপর অন্য কাহারও রাজ্য নাই। আমরা তোমাকে যে ইচ্ছা করিয়া প্রার্থনা করিতেছি, আমাদের সেই ইচ্ছা পূর্ণ হউক। আমরা সকলে যেন পার্থিব ও অপার্থিব ধনৈশ্বর্য্যের অধিপতি হইতে পারি।।
ও৩ম্ স নো বন্ধুর্জনিতা স বিধাতা ধামানি বেদ ভুবনানি বিশ্বা।
যত্র দেবা অমৃতমানশানাস্ততীযে ধামান্নধ্যৈরযন্ত।।-[যজুঃ৩২।১০]
সেই পরমাত্মা আমাদের জন্মদাতা, পালক, পোষক ও বন্ধু। তিনি সব লোক লোকান্তকে জানেন। মুক্ত পুরুষেরা মুক্তিকালে অমৃত সুখের আস্বাদন করিয়া তাঁহার আশ্রয়েই বিচরণ করেন।।
ও৩ম্ অগ্নে নয় সুপথা রায়ে অস্মান্ বিশ্বানি দেব বয়ুনানি বিদ্বান্।
যুযোধ্যস্মজ্জুহুরাণমেনো ভূষিষ্ঠান্তে নম উক্তিং বিধেমঃ।।-[যজুঃ৪০।১৬]
হে সর্বপ্রকাশক পরমাত্মন্ ! তুমি আমাদিগকে ঐশ্বর্ষ্যলাভের জন্য সুপথে চালনা কর। তুমি সব শুভ কর্মের জ্ঞাতা। তুমি আমাদের নিন্দনীয় পাপরাশি নষ্ট করিয়া দাও। আমরা বারংবার তোমাকে নমস্কার করিতেছি।।
ইতি ঈশ্বর স্তুতি-প্রার্থনা-উপাসনা মন্ত্র
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ