➡ঈশ্বর শরীর ধারণ করেন না।।
করণবচ্চেন্ন ভোগাদিভ্যঃ।। (বেদান্তদর্শন-২/২/৪০)
ভাষ্যঃ- জীববৎ করণকলেবরকল্পনাপি ন সম্ভবতি ভোগাদি-প্রসক্তে।
ব্যাখ্যাঃ- জীব যেমন অশরীরী হইয়াও ইন্দ্রিয়াদিকলেবর দ্বারা দেহের সহিত সম্বন্ধবিশিষ্ট হয়েন, তদরূপ ঈশ্বরও ইন্দ্রিয়াদিকলেবর দ্বারা জগতের সহিত সম্বন্ধবিশিষ্ট হয়েন; এইরূপ কল্পনারও সম্ভাবনা হয় না ; কারণ তাহা হইলে, জীবের ন্যায় ঈশ্বরেরও সুখদুঃখাদিভোগ প্রসঙ্গ হয়, এবং তাঁহার ঈশ্বরত্ব আর কিছু থাকে না।
অন্তবত্ত্বমসর্ব্বজ্ঞতা বা।। (বেদান্তদর্শন- ২/২/৪১)
ভাষ্যঃ- তস্য পুণ্যাদিরূপাদৃষ্টযোগেহন্তবত্ত্বমজ্ঞত্বং চ স্যাৎ।
ব্যাখ্যাঃ- (ঈশ্বরের ভোগাদি স্বীকার করিলেও কোন দোষ হয় না; অতিসামান্য হিমকণিকা যেমন বৃহৎ অগ্নিকুণ্ডের উত্তাপ খর্ব্ব করিতে পারে না, তদ্রূপ উক্ত ভোগও ঈশ্বরকে খর্ব্ব করিতে পারে না। যদি এইরূপ আপত্তি হয়, তদুত্তরে বলা হইতেছে, যে এইরূপ বলিলে) পুণ্যপুণ্যাদি অদৃষ্টযোগে ঈশ্বরও জীবের ন্যায় অন্তবিশিষ্ট ও অসর্ব্বজ্ঞ হইয়া পড়েন; কারণ ইন্দ্রিয়াদিবিশিষ্ট সুখদুঃখাদিভোগ সম্পন্ন কেহই জন্মমরণাদিবিহীন এবং পূর্ণজ্ঞ বলিয়া দৃষ্ট হয় না ; লৌকিক দৃষ্টান্তে ঈশ্বরও যুগবৎ অন্তবিশিষ্ট ও অজ্ঞ হইয়া পড়েন। পরন্তু এইরূপ ঈশ্বর পাশুপতদিগেরও সম্মত নহে।
ভাষ্যানুবাদক – পণ্ডিত শ্রীনলিনীনাথ রায়।
করণবচ্চেন্ন ভোগাদিভ্যঃ।। (বেদান্তদর্শন-২/২/৪০)
ভাষ্যঃ- জীববৎ করণকলেবরকল্পনাপি ন সম্ভবতি ভোগাদি-প্রসক্তে।
ব্যাখ্যাঃ- জীব যেমন অশরীরী হইয়াও ইন্দ্রিয়াদিকলেবর দ্বারা দেহের সহিত সম্বন্ধবিশিষ্ট হয়েন, তদরূপ ঈশ্বরও ইন্দ্রিয়াদিকলেবর দ্বারা জগতের সহিত সম্বন্ধবিশিষ্ট হয়েন; এইরূপ কল্পনারও সম্ভাবনা হয় না ; কারণ তাহা হইলে, জীবের ন্যায় ঈশ্বরেরও সুখদুঃখাদিভোগ প্রসঙ্গ হয়, এবং তাঁহার ঈশ্বরত্ব আর কিছু থাকে না।
অন্তবত্ত্বমসর্ব্বজ্ঞতা বা।। (বেদান্তদর্শন- ২/২/৪১)
ভাষ্যঃ- তস্য পুণ্যাদিরূপাদৃষ্টযোগেহন্তবত্ত্বমজ্ঞত্বং চ স্যাৎ।
ব্যাখ্যাঃ- (ঈশ্বরের ভোগাদি স্বীকার করিলেও কোন দোষ হয় না; অতিসামান্য হিমকণিকা যেমন বৃহৎ অগ্নিকুণ্ডের উত্তাপ খর্ব্ব করিতে পারে না, তদ্রূপ উক্ত ভোগও ঈশ্বরকে খর্ব্ব করিতে পারে না। যদি এইরূপ আপত্তি হয়, তদুত্তরে বলা হইতেছে, যে এইরূপ বলিলে) পুণ্যপুণ্যাদি অদৃষ্টযোগে ঈশ্বরও জীবের ন্যায় অন্তবিশিষ্ট ও অসর্ব্বজ্ঞ হইয়া পড়েন; কারণ ইন্দ্রিয়াদিবিশিষ্ট সুখদুঃখাদিভোগ সম্পন্ন কেহই জন্মমরণাদিবিহীন এবং পূর্ণজ্ঞ বলিয়া দৃষ্ট হয় না ; লৌকিক দৃষ্টান্তে ঈশ্বরও যুগবৎ অন্তবিশিষ্ট ও অজ্ঞ হইয়া পড়েন। পরন্তু এইরূপ ঈশ্বর পাশুপতদিগেরও সম্মত নহে।
ভাষ্যানুবাদক – পণ্ডিত শ্রীনলিনীনাথ রায়।
যাঁরা বলেন,ঈশ্বর সর্ব শক্তিমান তাই সাকার হতে পারেন,তাঁদের উদ্দেশ্যে বলি,যেখানে স্বয়ং ঈশ্বর বেদবাণীতে বলছেন,তিনি স্থুল,সূক্ষ্ম ও কারণ শরীর ধারণ করেন না,সেখানে আপনি ও আপনাদের গুরুরা কি, ঈশ্বরের চেয়ে বেশি জ্ঞানী হয়েছেন নাকি?!!!
কিছু অতিজ্ঞানী মূর্খ বৈষ্ণব বলেন, ঈশ্বরের শরীর অপ্রাকৃত!!ঈশ্বর জগৎ সৃষ্টি করেছেন, প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে।তাহলে নিজের অপ্রাকৃত শরীর কোন উপাদান দিয়ে সৃষ্টি করেছেন?!!এই অপ্রাকৃত শরীরের উপাদান,ঈশ্বর মনে হয়,বৈষ্ণবদের ঘর থেকে সংগ্ৰহ করেন!!!
এইজন্য বলা হয়,বেদ বিরোধী নাস্তিক সম্প্রদায়ের নাম হল,বৈষ্ণব।
স পর্যগাচ্ছুক্রমকায়মব্রণ-
মস্নাবিরং শুদ্ধপাপবিদ্ধম্।
কবির্মনীষী পরিভূঃ স্বয়ম্ভূ-
র্যাথাতথ্যতোহর্থান্ ব্যদধাচ্ছাশ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ।।যর্জুবেদ:অধ্যায় ৪০ মন্ত্র ৮
অর্থাৎ পরমাত্মা সর্বব্যাপী, জ্যোতির্ময় ও অশরীরী, ক্ষতরহিত, শিরাহীন, স্নায়ুহীন, নির্মল ও অপাপবিদ্ধ। তিনি, সর্বদর্শী, সর্বজ্ঞ, সর্বোপরি বিদ্যমান ও স্বয়ম্ভূ।
শংকর-ভাষ্যম্
যোহয়মতীতৈর্মন্ত্রৈরুক্ত আত্না, স স্বেন রূপেণ কিংলক্ষণ ইত্যাহ অয়ং মন্ত্রঃ। স পর্য্যগাৎ, স যথোক্ত আত্না পর্য্যগাৎপরি সমন্তাৎ অগাৎ গতবান্ আকাশবদ্ব্যাপীতর্থ্যঃ।
শুক্রং শুদ্ধং জ্যোতিষ্মৎ দীপ্তিমানিত্যর্থঃ।অকায়মশরীরঃ--
লিঙ্গশরীরবর্জিত ইত্যর্থঃ।অব্রণমক্ষতম্।অস্নাবিরং--স্নাবাঃ শিরা যস্মিষ্ ন বিদ্যন্ত ইত্যস্নাবিরম্।অব্রণমস্নাবিরমিত্যেতাভ্যাং স্থুলশরীরপ্রতিষেধঃ। শুদ্ধং নির্মলমবিদ্যামলরহিতমিতি কারণ শরীর প্রতিষেধঃ।অপাপবিদ্ধং ধর্মাধর্মাদিপাপবর্জিতম্।শুক্রমিত্যাদীনি বচাংসি পুংলিঙ্গত্বেন পরিণেয়ানি। 'স পর্য্যগাৎ' ইত্যুপক্রম্য 'কবির্মনীষী' ইত্যাদিনা পুংলিঙ্গত্বেনোপসংহারাৎ।কবিঃ ক্রান্তদর্শী---সর্বদৃক্। 'নান্যোহতোহস্তি দ্রষ্টা'(বৃ.আ. 3/7/23) ইত্যাদিশ্রুতেঃ। মনীষী মনস ঈষিতা-----সর্বজ্ঞ ঈশ্বর ইত্যর্থঃ।পরিভূঃ সর্বেষাং পরি উপরি ভবতীতি পরিভূঃ।স্বয়ম্ভূঃ স্বয়মেব ভবতীতি,যেষামুপরি ভবতি,যশ্চোপরি ভবতি,সঃ সর্ব স্বয়মেব ভবতীতি স্বয়ম্ভূঃ।স নিত্যমুক্ত ঈশ্বরো যাথাতথ্যতঃ, সর্বজ্ঞত্বাদ্,যথাতথাভাবো যাথাতথ্যং তস্মাদ্ যথাভূতকর্মফলসাধনতোহ-র্থান্ কর্তব্যপদার্থান্ ব্যদধাদ্বিহিতবান্ যথানুরূপং ব্যভজদিত্যর্থঃ শাশ্বতীভ্যো নিত্যাভ্যঃ সমাভ্যঃ সংবৎসরাখ্যেভ্যঃ প্রজাপতিভ্য ইত্যর্থঃ।।
'তদেজতি তন্নৈজতি তদ্ দূরে তদ্বন্তিকে।
তদন্তরস্য সর্ব্বস্য তদু সর্ব্বস্যাস্য বাহ্যতঃ।।'-যজুর্বেদ ৪০। ৫
-অর্থাৎ ঈশ্বর গতিশূন্য প্রকৃতিতে গতি উৎপন্ন করে কিন্তু স্বয়ং গতিতে আসে না, সেই গতিদাতা পরমেশ্বর অজ্ঞানীর নিকট দূরে বিভিন্ন মঠ মন্দিরে কিন্তু জ্ঞানীর নিকট্ থেকে নিকটে, তিনি ব্রহ্মান্ডের সমস্ত জীব ও জগতের ভিতর ও বাইরে বিদ্যমান। আমাদের সেই সর্বব্যাপক পরমাত্মার উপাসনা করা উচিত..আবৃত্তিস্তত্রাপ্যুত্তরোত্তরযোনিযোগাদ্বেয়ঃ।। সাংখ্যঃ ৩।৫২
সরলার্থঃ যত উচ্চ জন্ম হউক না কেন তাহা জন্ম ও মৃত্যুর অধীন এবং তাহাকে স্থির রাখিবার জন্য কর্মরূপ আবৃত্তির প্রয়োজন যাহা ত্রিবিধ দুঃখের অধীন। যাহা আবৃত্তি সাপেক্ষ তাহা পরম পুরুযার্থ হইতে পারে না। সেই কারণ জন্মের নিবৃত্তি বা বন্ধন মোচনের দ্বারা মুক্তির উপায়ই পুরুষের শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থ, অন্য সমস্ত পুরুষার্থ হেয় বা গৌণ। "সমানংজরামরণাদিজং দুঃখম্ " অর্থাৎ- যত প্রকার উচ্ছ জন্ম লাভ হউক না কেন সে সমস্তই জরামরণাদি দুঃখের অধীন সেই কারণ মুক্তির প্রয়োজন। "স হি সর্ববিৎসর্বকর্ত্তা" -ঈশ্বর সর্বজ্ঞ, সর্বব্যাপক, সর্বশক্তিমান, এক রস ও অমূর্ত্ত বলিয়া সমস্তই তাঁহার অধীনে রাখিতে পারেন। তিনিই সৃষ্টির একমাত্র কর্ত্তা। জ্ঞানই কর্ত্তৃত্বের মূল। তিনি সর্বজ্ঞ বলিয়া সমগ্র সৃষ্টির একমাত্র নিরপেক্ষ কর্ত্তা। "ইদৃশেশ্বরসিদ্ধিঃ সিদ্ধা" -তিনিই সৃষ্টিকর্ত্তা, নিত্যমুক্ত, একরস। মুক্ত পুরুষ সূক্ষ্ম শরীর লইয়া মুক্তাবস্থায় ব্রহ্মানন্দে অবস্থান করেন, তিনি কখনোও ঈশ্বর হতে পারেন না..
সরলার্থঃ যত উচ্চ জন্ম হউক না কেন তাহা জন্ম ও মৃত্যুর অধীন এবং তাহাকে স্থির রাখিবার জন্য কর্মরূপ আবৃত্তির প্রয়োজন যাহা ত্রিবিধ দুঃখের অধীন। যাহা আবৃত্তি সাপেক্ষ তাহা পরম পুরুযার্থ হইতে পারে না। সেই কারণ জন্মের নিবৃত্তি বা বন্ধন মোচনের দ্বারা মুক্তির উপায়ই পুরুষের শ্রেষ্ঠ পুরুষার্থ, অন্য সমস্ত পুরুষার্থ হেয় বা গৌণ। "সমানংজরামরণাদিজং দুঃখম্ " অর্থাৎ- যত প্রকার উচ্ছ জন্ম লাভ হউক না কেন সে সমস্তই জরামরণাদি দুঃখের অধীন সেই কারণ মুক্তির প্রয়োজন। "স হি সর্ববিৎসর্বকর্ত্তা" -ঈশ্বর সর্বজ্ঞ, সর্বব্যাপক, সর্বশক্তিমান, এক রস ও অমূর্ত্ত বলিয়া সমস্তই তাঁহার অধীনে রাখিতে পারেন। তিনিই সৃষ্টির একমাত্র কর্ত্তা। জ্ঞানই কর্ত্তৃত্বের মূল। তিনি সর্বজ্ঞ বলিয়া সমগ্র সৃষ্টির একমাত্র নিরপেক্ষ কর্ত্তা। "ইদৃশেশ্বরসিদ্ধিঃ সিদ্ধা" -তিনিই সৃষ্টিকর্ত্তা, নিত্যমুক্ত, একরস। মুক্ত পুরুষ সূক্ষ্ম শরীর লইয়া মুক্তাবস্থায় ব্রহ্মানন্দে অবস্থান করেন, তিনি কখনোও ঈশ্বর হতে পারেন না..
যজুর্বেদ ৪০/৮ এ দেখুন ঈশ্বরের স্বরূপ
স পর্য়্যগাচ্ছুকমকায়মব্রণমস্নাবিরং শুদ্ধমপাপবিদ্ধম্।
কবির্মণীষী পরিভূঃ স্বয়ম্ভূর্য়াথাতথ্যতোঽর্থান্
ব্যদধাচ্ছাশ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ।। ৮।। (যজু০ ৪০/৮)
পদার্থঃ হে মনুষ্য! যে ব্রহ্ম (শুক্রম্) শীঘ্রগামী, সর্বশক্তিমান (অকায়ম্) স্থুল, সূক্ষ্ম আর কারণ শরীর থেকে রহিত, (অব্রণম্) ছিদ্র রহিত এবং যাহার দুই টুকরো হয় না, (অস্নাবিরম্) নাড়ী আদির বন্ধন থেকে রহিত, (শুদ্ধম্) অবিদ্যা আদি দোষের হইতে রহিত হয়ে সদা পবিত্র, (অপাপবিদ্ধম্) যে কখনো পাপ হইতে যুক্ত, পাপকারী আর পাপ দ্বারা প্রেমকারী হয় না, সে (পরি+অগাত্) সর্বত্র ব্যাপক; যে (কবিঃ) সর্বজ্ঞ, (মনীষী) সব জীবের মনোবৃত্তিকে জানে, (পরিভূঃ) দুষ্ট পাপিদের তিরস্কারকারী, (স্বয়ম্ভূঃ) অনাদিস্বরূপ, যাহার সংযোগ থেকে উৎপত্তি আর বিয়োগ হইতে বিনাশ হয় না, যাহার মাতা-পিতা কেউ নেই আর যাহার গর্ভবাস, জন্ম, বৃদ্ধি আর ক্ষয় হয় না, সে পরমাত্মা (শাশ্বতীভ্যঃ) সনাতন, অনাদি স্বরূপ, নিজের স্বরূপের দৃষ্টি থেকে উৎপত্তি আর বিনাশ হইতে রহিত (সমাভ্যঃ) প্রজার জন্য (য়াথাতভ্যতঃ) যথার্থ হইতে (অর্থান্) বেদের দ্বারা সব পদার্থের (ব্যদধাত্) উত্তম প্রকারে উপদেশ করে। (সঃ) সে পরমাত্মাই তোমাদের জন্য উপাসনা করার যোগ্য।। ৮।।
ভাবার্থঃ হে মনুষ্য! যদি অনন্ত শক্তিশালী, অজন্মা, অখ-, সদাই মুক্ত, ন্যায়কারী, পাপরহিত, সর্বজ্ঞ, সবার দ্রষ্টা, নিয়ন্তা আর অনাদি স্বরূপ ব্রহ্ম সৃষ্টির আদিতে স্বয়ং প্রোক্ত বেদের শব্দ দ্বারা অর্থ আর সম্বন্ধকে বুঝানোকারী বিদ্যার উপদেশ না করে তো কোন বিদ্বান হয় না; আর না ধর্ম, অর্থ কাম, মোক্ষ রূপ ফলকে প্রাপ্ত করে। এইজন্য এই ব্রহ্মকে সদা উপাসনা করো।। -ভাষ্যঃ আচার্য রাজবীর শাস্ত্রী
ন তস্য প্রতিমা অস্তি য়স্য নাম মহদ্যশঃ।
হিরণ্যগর্ভ ইত্যেব মা মা হিংসীদিত্যেবা য়স্মান্ন জাত ইত্যের্ষঃ।। (যজু০ ৩২/৩)
পদার্থঃ (য়স্য) যাহার (মহত্) মহান (নাম) প্রসিদ্ধ (য়শঃ) যশ আছে, (তস্য) ওই পরমাত্মার কোন (প্রতি-মা) প্রতিমা অথবা উপমা (ন অস্তি) নেই। (হিরণ্য-গর্ভ ইতি এবঃ) 'হিরণ্যগর্ভ' আদি মন্ত্রের দ্বারা তথা, (মা মা হিংসীত্ ইতি এষা)
'মা মা হিসীত্' এই মন্ত্রদ্বারা, আর
(য়স্মাত্ ন জাতঃ ইতি এষঃ) 'য়স্মান্ন জাত' এই মন্ত্রদ্বারা তাহার বর্ণন হয়।।
ভাবার্থঃ উক্ত মন্ত্রের দ্বারা যাহার মহান প্রসিদ্ধ যশের গায়ন হয় ওই আত্মার কোন প্রতিমা অথবা উপমা হয় না।।-ভাষ্যঃ পণ্ডিত দামোদর সাতবলেকর
প্রতিমা শব্দের অর্থ
(অমরকোষে ২/১০/৩৫)
প্রতিমানং প্রতিবিম্বং প্রতিমাপ্রতিয়াতনা প্রতিচ্ছায়া।।৩৫।।
প্রতিকৃতিরর্চা পুংসি প্রতিনিধি-
প্রতিমা অর্থাৎ ছবির নাম।।৮।।
১. প্রতিমান। ২. প্রতিবিম্ব। ৩. প্রতিমা। ৪. প্রতিছবি। ৫. প্রতিছায়া।।৩৫।।
৬. প্রতিকৃতি। ৭. অর্চা। ৮. প্রতিনিধি।
আর বৈদিককোষ; পৃষ্টাঃ ৬৪১ তে
প্রতিমা প্রতিমীয়নোত পরিমীয়ন্তে সর্ব পদার্থা য়য়া সা
ভা০-পরিমাণসাধন পদার্থতোলনার্থম্ (বস্তু) ১৫ ৬৫
প্রতিমীয়তে য়য়া তৎপরিমাপক সদৃশ তোলনসাধন প্রতিকৃতিরাকৃতির্বা ৩২ ৩
প্রতিগোয়তে য়য়া ক্রিয়ায়া সা ১৪ ১৮
পরিমাণ, সাদৃস্য বা মূর্তি স০ প্র০ ৪৩২, ৩২ ৩
প্রতিনিধি প্রতিকৃতি, প্রতিমান তোলনসাধন, পরিমাণ, মূর্ত্যাদিকল্পনম্
ঋ০ ভূ০ ৩০০, ৩২ ৩, প্রতিমীয়তেহনয়া সা (য়য়া পরিমাণ ক্রিয়তো)
ঋ০ ভূ০ ১৪৭, ঋ০ ৮ ৭ ১৮০ ৩
অনেক নামের দ্বারা এক ঈশ্বরের বোধ হয়-
ইন্দ্রং মিত্রং বরুণমগ্নিমাহুরথো দিব্যঃ স সুপর্ণো গরুত্মান্।
একং সদ্বিপ্রা বহুধা বদন্ত্যগ্নিং য়মং মাতরিশ্বানমাহুঃ।।
(ঋ০ ১।১৬৪।৪৬; অথর্ব০ ৯।১০।২৮; নিরু০ ৭।১৮, ১৪।১; ঋগ্বেধা০ ১।২৫।৭; বৃহদেবতা ৪।৪২)
'একই সৎ স্বরূপ পরমাত্মাকে জ্ঞানীলোক অনেক প্রকারে ডেকে থাকেন। ইন্দ্র, মিত্র, বরুণ, অগ্নি, দিব্য, সুপর্ণ, উরুত্মান, সৎ, যম, মাতরিশ্বা আদি নামের দ্বারা একই পরমাত্মার বর্ণন করেন।'
অথর্ববেদে ঈশ্বরের একত্বার নিশ্চয়তা-
'সে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চাম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম আদি অনন্ত সংখ্যা দ্বারা বলা হয়নি। এই সম্পূর্ণ জগত তাহাতে নিঃশেষ হয়ে যায়। অর্থাৎ তাহার মধ্যে। সে সহন শক্তিদ্বারা যুক্ত অর্থাৎ অত্যন্ত বলবান। সে একই। কেবল একই। নিশ্চয়ই একই। সব তেজস্বী পদার্থ ইহাতে কেবল এক বানিয়ে রাখে।' (অথর্ব০ ১৩।৪।১৬-২১)
বৈ-মানরস্য প্রতিমোপরি দ্যোর্য়াবদ্রোদসী বিবাদে অগ্নিঃ।
(অথর্বঃ ৮।৯।৬)
' (বৈশ্বা-নরস্য) বিশ্বের নেতা ঈশ্বরের
(প্রতিমা) প্রতিমা এমনই হয়, যে (য়াবত্ দ্যোঃ) তেমন দ্যুলোকে উপরে থাকে, যেমন (রোদসী) উপরে নিয়ে আর নিম্নস্থ আকাশে (অগ্নিঃ) অগ্নিই (বি-ববাধে) অন্তর বানায়।' যথা-
য়স্মান্ন ঋতে বিজয়ন্তে জনাসো য়ং য়ুদ্ধয়মানা অবসে হবন্তে।।
য়ো বিশ্বস্য প্রতিমানং বভূব য়ো অচ্যুতচ্যুত্ স জনাস ইন্দ্রঃ।।
(ঋ০ ২।১২।৯; অথর্ব০ ২০।৩৪।৯)
'হে (জনাসঃ) মনুষ্য ! (য়স্মাত্ ঋতে) যাহাকে ছেড়ে (জনাসঃ) মনুষ্য (ন বিজয়ন্তে) বিজয়কে প্রাপ্ত হতে পারে না, আর (য়ুদ্ধমানাঃ) লড়াইকারী (অবসে)
রক্ষণের জন্য (য়ং হবন্তে) যাহার প্রার্থনা করতে হয়। আর যে (প্রতিমানম্) বিশ্বের প্রতিমা (বভূব) হয় আর যে (অচ্যুত-চ্যুত্) স্বয়ং না নড়াচড়া করে আর অন্যকে নাড়ায় (স ইন্দ্রঃ) সে ইন্দ্র অর্থাৎ সব জগতের এক রাজা।' ভাষ্যঃ পণ্ডিত দামোদর সাতবলেকর
এই দুই মন্ত্রে জগতের বরাবর ওই পরমাত্মার প্রতিমা, এরূপ বলেছে।
এই আকাশ অনন্ত। যে প্রকার আকাশের কোন সীমা নেই ওই প্রকার পরমেশ্বরেরও কোন অন্ত নেই। এই কথা উক্ত দুই মন্ত্রে বলা হয়েছে।
এখন আসি যজুর্বেদের নিম্ন মন্ত্র-
ও৩ম্ খং ব্রহ্ম।। (যজু০ ৪০। ১৭)
' (ও৩ম্ ব্রহ্ম) সবার রক্ষাকারী ব্রহ্ম (খং) আকাশের সমান ব্যাপ্ত।'
এই মন্ত্রের ভাব উক্ত অর্থের দুই মন্ত্রের সমান।
তাই আরো দেখুন-
ত্বং ভুবঃ প্রতিমানং পৃথিব্যাঃ।। (ঋ০ ১।৫২।১৩)
'তুমি পৃথিবী থেকে উল্টো প্রমাণ রাখেন।' অর্থাৎ পৃথিবী ছোট আর তুমি মহান। যথা-
সূ ভূমিং বিশ্বতো বৃত্বাহত্যতিষ্ঠদ্দশাংগুলম্।
( ঋ০ ১০।৯০।১; আরণ্য স০ ৪।২; অথর্ব০ ১৯।৬।১; যজু০ ৩১।১; তৈ০ আরণ্য০ ৩।১২।১)
'সে পরমাত্মা পৃথিবীকে (বিশ্বতঃ) চারিদিক থেকে (বৃত্বা) ঘিরে
(দশাংগুলং) দশ আঙ্গুলের সমান ছোট বিশ্বকে (অতি অতিষ্ঠত্) বিশ্বের বাহিরেও আছে অথবা বিশ্বের উপর শাসন করেন।'
এই মন্ত্রে উক্ত আশায় অনেক স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তথা আরো মন্ত্র দেখুন-
ন হীন্বমস্য প্রতিমানস্যত্যন্তর্জাতেষূত য়ে জনিত্বাঃ। (ঋ০ ৪।১৮।৪)
' (অস্য ন) নিশ্চয়ই ইহার (জাতেষু অন্তঃ) বানানো পদার্থের অন্তর (উত) আর (য়ে জনিত্বাঃ) যে বানানোকারী হয় তাহার মধ্যে কোন (প্রতিমানম্) তুলনা, প্রতিমা
(ন অস্তি) হয় না।, যথা-
এই প্রকার প্রতিমা আর প্রতিমান শব্দের প্রয়োগ বেদ মন্ত্রে এসেছে, ইহার নিম্ন লিখিত অর্থ-'প্রতি-মা' র অর্থ-বানানোকারী প্রতিমা, সাদৃশ্য, উপমা, প্রতিবিম্ব, মাপ, তোলা, বিস্তার, বরাবর, 'প্রতি-মান' এর অর্থ-নমুনা সাদৃশ্য, তোলা, ওজন, মাপ, প্রতিবিম্ব, বিপরীত, শত্রু এই বিবিধ অর্থ দেখে তথা মন্ত্রের সংবন্ধ দেখে, উক্ত মন্ত্রের অর্থ বিচার করা উচিত।
কিং সময় ঋধক্ কৃণবদ্ য়ংসহপ্রে মাসো জভার শরদশ্চ পূর্বীঃ।
নহী ধ্বস্ত প্রতিমানমত্ত্য ন্তর্জাতেষূতে য়ে জনিত্বা।।৪।।
প্র তুবিদ্যুম্নস্য স্থবিরস্য ঘৃষ্বের্দিবো ররপ্শে মহিমা পৃথিব্যাঃ।
নাস্য শত্রুর্ন প্রতিমাননস্তি ন প্রতিষ্ঠিঃ পুরুমায়স্য সহ্যোঃ।।১২।।
(ঋ০ ৪/১৮/৪; ৬।১৮।১২)
পদার্থঃ (য়) যাহার (সহস্রং মাসঃ পূর্বী শরদঃ চ) হাজার মাসের আর অনেক বর্ষ পর্যন্ত (জভার) ভরণপোষণ করেন, (সঃ) সে
(ঋধক্ কিং কৃণবত্) বিরুদ্ধ কর্ম কে করবে?
(য়ে জনিত্বাঃ) যে উৎপন্নকারী তাহার আর (গাতেষু) উৎপন্ন হওয়ার (অন্তঃ) মাধ্যমে (অস্য প্রতিমানম্ নহি) এই ইন্দ্রের কোন উপমা নেই।।৪।।
ভাবার্থঃ যাহার অনেক মাসের আর বর্ষ পর্যন্ত ভরণপোষণ করেন, সে নিজের পোষণকরীর কোন কার্য কে করবে? অর্থাৎ কেউ করবে না। উৎপন্নকারী আর উৎপন্ন হওয়ার মধ্যে এই ইন্দ্রের সমান কেউ নেই।।৪।।
পদার্থঃ (তুবি-দ্যু-ম্নস্য) অত্যন্ত তেজস্বী (স্থবিরস্যা) স্থির আর (ঘৃষ্বেঃ) দুষ্টতাকে চূর্ণকারী ঈশ্বরের (মহিমা)
মহত্তা দ্যুলোক আর পৃথিবীর মর্যাদার থেকেও বাহিরে (ররশ্পে) বিস্তার। (ন অস্য শত্রুঃ) এই ঈশ্বরের কোন শত্রু নেই (ন অস্য প্রতিমানম্) না ইহার কোন প্রতিমা আছে। (পুরু-মায়স্য) অনন্ত জ্ঞানবান
(সহ্যোঃ) আর সহন শক্তিবান বলবান ঈশ্বরকে ছেড়ে আর (প্রতিষ্ঠিঃ) আশ্রয় হয় না। অর্থাৎ সেই এক সবার আশ্রয়।।১২।।
ভাবার্থঃ তেজস্বী শ্রেষ্ঠ শত্রুনাশক বীরের মহিমা পৃথিবী থেকে আর দ্যুলোক থেকেও মহান। অনেক প্রজ্ঞাবান আর শত্রুনাশক বীরের কোন শত্রু হয় না। অধিক কুশল আর শান্তি, সুখ, দানকারী বীরের জন্য তুলনা হয় না।।১২।।
ভাষ্যঃ পণ্ডিত দামোদর সাতবলেকর
এখন আসি প্রতিমানম্ শব্দের কি অর্থ করেছেন বৈদিককোষ
বৈদিককোষ প্রতিমানম্; পৃষ্টা ৬৪১।
পরিমাণসাধনানম্ ৪ ১৮ ৪ সাদৃশ্য পরিগান বা ১ ৩২ ৩ রামন্তাত্ প্রতিমীয়তে
পরিণীয়তে প্রতিক্রিয়তে গেন তত্ (স্ব-সুখমন্তরিক্ষ বা) ১ ৫২ ১২
প্রতিমীয়তে য়ত্ (জগত্) ১ ১০২ ৮ অতিসমর্থানামুপমা ১ ১০২ ৬
পরিমাণসাধক (ইন্দ্র=পরমেশ্বরী বিদ্যুদ্বা) ২ ১২.৯
পরিমাণসাধকম্ (জ্ঞানম্) ৩ ৩১ ৮ প্রতিমান অর্থাৎ পরিমাণের কর্তা (ঈশ্বর) আর্যাভি০ ১ ১৩,
ঋ০ ১ ৪.১৪ ১২, [প্রতি+মাঙ্মানে (জু০) ধাতো করণে ল্যুট্]
তাই সামবেদও ঘোষণা করছেন-
মা চিদন্যদ্ বি শংসত সখায়ো মা রিষণ্যত।
ইন্দ্রমিত্স্তোতা বৃষণং সাচ সুতে মুহুরুক্থা চ শংসত।।১০।।
সামবেদ ২৪২
পদার্থঃ হে (সখায়ঃ) মিত্র! তুমি (অন্যত্) দ্বিতীয় কোন বস্তু পাথরের মূর্তি, নদী, পর্বত ইদিকে (মা চিত্) না কখনো (বি শংসত) উপাস্য রূপে পূজা করো, (মা রিষণ্যত) যে উপাসনীয় নয় তাহার উপাসনা করে হানি প্রাপ্ত করো না। (সুতে) জ্ঞান, কর্ম আর ভক্তির রস নিষ্পাদিত হয়ে (সচা) সাথে মিলে (বৃষণম্) সুখবর্ধক (ইন্দ্রম্ ইত্) পরমেশ্বরেরই (স্তোত) স্তুতি-উপাসনা করো আর (শংসত) গান করো।।
ভাবার্থঃ পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র আর জগতে যে সম্মানের যোগ্য তাহাকে সম্মান তো করাই উচিত, কিন্তু তাহাদের মধ্য থেকে কাউকে পরমেশ্বরের রূপে পূজা করা উচিত নয়, না নদী, বৃক্ষ, পর্বত আদি জড় পদার্থকে পূজা করা উচিত নয়। ইন্দ্র আদি নামের দ্বারা বেদের মধ্যে প্রসিদ্ধ সুখবর্ষী এক জগদীশ্বরই পুনঃ-পুনঃ স্তুতি, প্রার্থনা, অর্চনা আর উপাসনা করার যোগ্য।।-ভাষ্যঃ আচার্য ড. রামনাথ বেদালঙ্কার বিদ্যামার্তণ্ড
ঈশ্বরকে পুরুষ কেন বলা হয়ঃ-
পুরুষ অর্থাৎ জীবাত্মা এবং পরমাত্মা..ন্যায়মতে ঈশ্বরই পরমাত্মা। এই পরমাত্মা জগতের সৃষ্টি, স্থিতি ও লয়ের কারণ। মহর্ষি গৌতম দৃঢ়ভাবে বলেছেন যে ঈশ্বরই জীবের কর্মফলের প্রদাতা ।
যজুর্বেদ, অধ্যায়_40,মন্ত্র_8 থেকে আমরা জানি ঈশ্বর হলেন নিরাকার।
অর্থাৎ ঈশ্বরের লিঙ্গ নেই। কিন্তু বেদে ও বেদানুকূল শাস্ত্রে অনেক সময় ঈশ্বরকে পুরুষ বলা হয়। দর্শন কারের মতে যে পুরুষ জ্ঞান ও আনন্দ স্বরূপ তিনিই ঈশ্বর।
মহাভারত শান্তিপর্ব ২১৮।৯০ ঈশ্বর স্ত্রী,পুরুষ(লিঙ্গ)এবং নপুংসকও নয়, লিঙ্গ শরীরের হয়।
পুরুষ শব্দের প্রকৃত অর্থঃ-
পুরুষঃ পুরিষাদঃ পুরিশয়ঃ পুরয়তের্বা পূরয়ত্যন্তরিত্যন্তরপুরুষমভিপ্রেত্য।।-[নিরুক্ত২।৩]
শব্দার্থ : পুরুষঃ (পুরুষ) পুরিষাদঃ (পুরে অধিষ্ঠানকারী) বা (অথবা) পুরিশয়ঃ (পুরে শয়নকারী) বা (অথবা) পূরয়তেঃ (পুর্' ধাতু থেকে নিষ্পন্ন)। [এর অর্থ ] অন্তঃ (অন্ত প্রদেশ) পূরয়তি (পূরণ করেন) ইতি (এই নির্বচন) অন্তরপুরুষম্ (অন্তরে অবস্থিত পুরুষ বা পরমাত্মাকে বা ব্রহ্মাকে) অভিপ্রেত্য (লক্ষ্য করে ব্যবহৃত হয়েছে)।
অনুবাদ : পুরুষ = পুরিষাদ বা পুরে অধিষ্ঠিত, অথবা হৃদয়পুরে শয়নকারী অথবা ‘পূর্’ ধাতু থেকে গঠিত। পরমাত্মা বা ব্রহ্ম সকলের অন্তঃপ্রদেশ পূর্ণ করেন বলে তিনি পুরুষ।
সাংখ্য দর্শন ১।১৫
"অসঙ্গোহয়ং পুরুষ ইতি"-পুরুষ চৈতন্য, অনাদি, নিত্য কোন পদার্থের সংযোগ দ্বারা উৎপন্ন হয় না। শরীরাদি হতে পুরুষ পৃথক[সাংখ্য০ ১।১৪২,১৪৩]
কর্ত্তা প্রতক্ষ্য না হলে যে দ্রব্যে মনুষ্যের কর্ত্তৃত্ত্ব বুদ্ধির চিহ্ন পাওয়া য়ায় তাকে পৌরুষেয় বলে.. এই ক্ষেত্রে ছেলে না মেয়ে তার প্রশ্ন আসে না।
••টীকা : পূঃ শরীরং বুদ্ধির্বা তয়োরসৌ বিষয়োপলব্ধ্যর্থ সীদতীতি পুরিসীদনাত্ পুরিষাদঃ।
স এবাতিপরোক্ষবৃত্তিতামাপাদিতঃ পুরুষঃ। যদ্বা তয়োরসৌ শেতে বিশেষেণাস্ত ইতি পুরিশয়ঃ সন্ পুরুষ ইত্যুচ্যতে। পূরয়ত্যর্থকস্য পৃ ধাতোঃ (জু.প) ‘পুরঃ ক্তৃষন’ (উ. 4/74) ইতি কুষন্ প্রত্যয়ে ‘উদোষ্ঠ্যপূর্বস্যে—' (পা–7/12/102) ত্যুত্যমৃকারস্য তস্য (উকারস্য) চ রপরত্ব ‘উরণরপর (পা 1/1/51) ইতি। পূর্ণমনেন পুরুষেণ সর্বগতত্বাজ্জগদিদমিতি পুরুষঃ। তদেতদর্থতোঽনুবদতি—অন্তরিত্যে বমন্তরপুরুষস্য ব্রহ্মণোহভিপ্রায়েণ প্রাসঙ্গিকমুচ্যতে। অত্র (বাক্যদ্বয়েনোক্তেহর্থে) নিগমং প্রমাণয়তি—
আলোচনা : পুরিষদ = পুরি + সদ্। পুরিষদ্ থেকে পুরিষাদ্ শব্দ গঠিত। এর অর্থ—বিষয়ের উপলব্ধির জন্য বুদ্ধিতে বা দেহে যে জীবাত্মা অবস্থান করেন, তিনিই পুরুষ।
পুরিশয়, শব্দ থেকেও পুরুষ শব্দটি আসতে পারে, এক্ষেত্রে পুরি + শী ধাতু আছে। বিষয়ের উপলব্ধির জন্য বুদ্ধিতে বা দেহে শয়ান করে আছেন যে জীবাত্মা। দুটি ক্ষেত্রেই বর্ণবিপত্তি ও বর্ণবিকারের দ্বারা পুরুষ শব্দটি গঠিত। ণিজন্ত পৃ ধাতু থেকে ‘পুর্' ধাতু গঠিত। পুর্ + উণাদি কুষন্ প্রত্যয় করে পুরুষ হয়।
তাহলে এর অর্থ হবে------
যিনি সর্বগত, যাঁর দ্বারা জগৎ ব্যাপ্ত, আবার সকলের অন্তরে অবস্থিত পরমাত্মা বা ব্রহ্মই হলেন পুরুষ।
ওম্ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ