হিন্দুদের অনেক পুরাণ আছে, প্রধান পুরাণ ১৮ টি। এসবই নাকি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস লিখেছিলেন। কিন্তু ঐতিহাসিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, এগুলো কোনো নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির হাতে রচিত হয়নি ; নানা জনের হাতে এই বর্তমান পুরাণগুলি রচিত হয়েছে। ব্যাসের নামে প্রচলিত অনেক পুরাণে তো ইংরেজ আমলেও অনেক কিছু ঢোকানো হয়েছে। এসব অবশ্যই হিন্দুরাই ঢুকিয়েছিল, বিধর্মীরা নয়। যাইহোক, বিবিধ কারণে হিন্দু ধর্মে একই ঘটনার একাধিক ভার্সন আমাদের চোখে পড়ে, যা অত্যন্ত স্বাভাবিক।
ব্রহ্মার সাথে তার কন্যার অজাচারের ব্যাপারটি প্রচুর হিন্দু ধর্মগ্রন্থে উল্লেখিত আছে। বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের কাহিনীগুলোতে অনেকসময়ই কন্যার নাম বদলে গিয়েছে। কখনো সেই কন্যাকে বলা হয়েছে দৌঃ, কখনো বলা হয়েছে ‘ঊষা’ , কখনো ‘সরস্বতী’ বলা হয়েছে, কখনো বলা হয়েছে ‘সন্ধ্যা’ , আবার কখনো সে কন্যা ‘বাক’, কখনো বা ‘শতরূপা’। কন্যার নাম বদলালেও এখানে পিতার নাম মোটামুটি একই আছে। এখানে বরারবই পিতা হলেন, প্রজাপতি বা ব্রহ্মা।
ব্রহ্মার সাথে তার কন্যার অজাচারের ব্যাপারটি প্রচুর হিন্দু ধর্মগ্রন্থে উল্লেখিত আছে। বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের কাহিনীগুলোতে অনেকসময়ই কন্যার নাম বদলে গিয়েছে। কখনো সেই কন্যাকে বলা হয়েছে দৌঃ, কখনো বলা হয়েছে ‘ঊষা’ , কখনো ‘সরস্বতী’ বলা হয়েছে, কখনো বলা হয়েছে ‘সন্ধ্যা’ , আবার কখনো সে কন্যা ‘বাক’, কখনো বা ‘শতরূপা’। কন্যার নাম বদলালেও এখানে পিতার নাম মোটামুটি একই আছে। এখানে বরারবই পিতা হলেন, প্রজাপতি বা ব্রহ্মা।
শিবপুরাণে
শিবপুরাণের জ্ঞানসংহিতার ৪৯ তম অধ্যায়ে ব্রহ্মাকে তার কন্যা সরস্বতীর প্রতি কামাতুর হয়ে পড়তে দেখা যায়।
শিবপুরাণ মতে, বর্তমানে ব্রহ্মা চতুর্মুখ হলেও পূর্বে তিনি পঞ্চ মুখবিশিষ্ট ছিলেন। একবার শিব ও পার্বতীর সামনে স্রষ্টা ব্রহ্মা অপভ্রংশ শব্দ ব্যবহার করেন, এর ফলে শিব তার একটি মুখ কেটে ফেলেন।
পুরাণ বর্ণনাকার সূতের মুখে ব্রহ্মার মাথা হারানোর কাহিনী শুনে মুনিরা জিজ্ঞেস করেন, “ব্রহ্মার মুখ কেন এমন বিরুদ্ধভাষী হল?” উত্তরে সূত বলেন, “ হে ঋষিগণ! পূর্বকালে ব্রহ্মা নিজ কন্যা সরস্বতীর রূপে মুগ্ধ হয়ে তাকে অনুসরণ করে কাম বিহ্বল চিত্তে তাকে ‘অয়ি সুন্দরী! গমনে নিবৃত্ত হও’ এই কথা বলেছিলেন। তা শুনে সরস্বতী রেগে গিয়ে অভিশাপ দেন , “পিতা হয়ে তুমি যে মুখে ধর্ম বিরুদ্ধ অশুভ কথা বললে, সেই মুখে তুমি বিরুদ্ধভাষী হবে।“(শিবপুরাণ/জ্ঞানসংহিতা/৪৯ অধ্যায়/৭৭-৭৯| অনুবাদক-শ্রী পঞ্চানন তর্করত্ন )[5]
সরস্বতীর এই অভিশাপের পর থেকে ব্রহ্মা তার মুখ দিয়ে ‘অতি কঠোর দুষ্ট শব্দ’ উচ্চারণ করতেন। আর শিব ও পার্বতীর সামনে এমন দুষ্ট শব্দ ব্যবহারের ফলেই পিতামহ ব্রহ্মা তার পঞ্চম মুখ হারান।
শিব মহাপুরাণ – পঞ্চানন তর্করত্ন অনুবাদিত
স্কন্দ পুরাণে
নানান পুরাণে যদিও সরস্বতী ব্রহ্মার কন্যা এবং সরস্বতীর সাথে ব্রহ্মা অজাচারে লিপ্ত হয়েছিলেন কিন্তু স্কন্দ পুরাণের ব্রহ্মখণ্ডে ব্রহ্মাকে গায়ত্রী ও সরস্বতীর পতিরূপে দেখা যায়। তবে স্কন্দ পুরাণেও ব্রহ্মাকে তার ‘বাক’ নামক কন্যার সাথে অজাচারে লিপ্ত হতে দেখা যায়।
পুরাণ বর্ণনাকার সূত বলেন, “ বিপ্রগণ! পূর্বে প্রজাপতি কামুক হয়ে মোহক্রমে বাক নামের নিজকন্যার প্রতি আসক্ত হন। কন্যা বাক প্রজাপতির কামুক মনোভাব বুঝতে পেরে লজ্জায় মৃগীরূপ ধারণ করেন। তখন ব্রহ্মাও হরিণ হয়ে তার সাথে রমণ করতে অভিলাষী হন। বাগদেবী হরিণীরূপে গমন করলে, মৃগরূপী ব্রহ্মাও তার অনুগমন করেন।“ [স্কন্দ পুরাণ/ব্রহ্মখণ্ড/সেতুমাহাত্ম্য পর্ব/ অধ্যায় ৪০]
দেবতারা সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মাকে কন্যা সঙ্গমে উদ্যত দেখে তার নিন্দা করতে থাকেন। দেবতারা বলেন, “ এই ব্রহ্মা কন্যাগমনে উদ্যত হয়ে বড়োই অকার্য করছেন।“
ব্রহ্মাকে এই ধরণের অবৈধ কাজে লিপ্ত দেখে শিব ব্যাধের রূপ ধারণ করে মৃগরূপী ব্রহ্মাকে হত্যা করেন।
ব্রহ্মা নিহত হলে , ব্রহ্মার স্ত্রী গায়ত্রী এবং সরস্বতী কঠোর তপস্যা করে শিবকে সন্তুষ্ট করেন। শিব সন্তুষ্ট হলে ব্রহ্মাও আবার জীবিত হয়ে ওঠেন।
ব্রহ্মা জীবিত হয়ে মহেশ্বরকে বলেন, “ হে দেব দেবেশ! হে করুণাকর, শঙ্কর! তোমায় নমস্কার করি। হে প্রভু, করুণা সিন্ধু ! পাপাচরণ হতে আমায় পরিত্রাণ কর। হে শম্ভু, তোমার কৃপায় আমার যাতে কখনো নিষিদ্ধাচরণে পুনরায় আর প্রবৃত্তি না হয়, তুমি আমায় সেভাবে সবসময় রক্ষা কর।“
শিব ব্রহ্মাকে বলেন, “ তথাস্তু! হে বিধি! অতঃপর তুমি আর প্রমাদে পতিত হয়ো না। কুপথে চলা সমস্ত পুরুষদের আমিই সর্বদা শাসন করি। “
স্কন্দ পুরাণ ৮১,১০০টি শ্লোক নিয়ে গঠিত হিন্দুধর্মের বৃহত্তম পুরাণ। এই পুরাণটির মূল উপজীব্য শিব ও পার্বতীর পুত্র স্কন্দ বা কার্তিকের লীলা। এছাড়াও এই পুরাণে শিব ও শৈব তীর্থস্থান সংক্রান্ত অনেক উপাখ্যান রয়েছে। হিন্দু কিংবদন্তি অনুসারে ব্যাস এই পুরাণের রচয়িতা।যদিও ব্যাসদেব কোন এক ব্যক্তির নাম নয়। এটি বিভিন্ন স্থানে খণ্ডিত আকারে পাওয়া গিয়েছে।
স্কন্দ পুরাণ সাত খণ্ডে বিভক্ত- মহেশ্বরখণ্ড, বিষ্ণুখণ্ড, ব্রহ্মখণ্ড, কাশীখণ্ড, আবন্ত্যখণ্ড, নাগরখণ্ড, এবং প্রভাসখণ্ড।
কালিকা পুরাণে
বিধাতা ব্রহ্মা, দক্ষ প্রভৃতি প্রজাপতিগণকে সৃষ্টি করে যখন ক্রতু,পুলহ,পুলস্ত,বসিষ্ট,নারদ প্রভৃতি দশ মানস পুত্রকে সৃষ্টি করেন, তখন তার মন থেকে এক পরম রূপবতী উত্তম রমণী আবির্ভূত হন। তিনি সন্ধ্যা নামে বিখ্যাত হন। এই সন্ধ্যাকে সন্ধ্যাবেলায় পূজা করা হয়ে থাকে। (১/২৪-২৫)
তার মত সম্পূর্ণ গুণশালীনি রমণী তখন স্বর্গ, মর্ত্য, পাতলে আর ছিল না, তার আগে অথবা পরে হয়নি, আর হবেও না। (১/২৬)
পুরাণকারের বর্ণনা অনুযায়ী,
- সন্ধ্যা ‘স্বভাব সুন্দর সুনীল কুন্তল(কেশ) ভারে বর্ষাকালীন ময়ূরীর ন্যায়’ (১/২৭)
- তার ‘আকর্ণবিলম্বী অলকগুচ্ছ শোভিত আপাটল ললাটদেশ ইন্দ্রধনু বা নবীন শশধরের ন্যায়।‘ (১/২৮)
- তার চোখ ছিল হরিণীর মত। (১/ ২৯)
- “যার সৌন্দর্য ও লাবণ্যগুণে বদন মণ্ডলের পরিপূর্ণতা- চিবুকের কাছে আসার জন্যই যেন তার স্তনযুগলের উদ্যম, হে বিপ্রগণ তার সেই কমলকলিকাকৃতি , উত্তঙ্গ পীবর পরস্পর সংযুক্ত শ্যামাগ্র স্তনযুগল দেখলে মুনিরাও মোহিত হতেন।” (১/৩৩)
- “তার ত্রিবলি শোচিত ক্ষীণ কটিদেশ, বসনের ন্যায় মুষ্টিগ্রাহ্য। তার কটিদেশকে সকলেই কামদেবের শক্তি বলে মনে করেছিল।” (১/৩৪)
এই পরম সুন্দরী যিনি কিনা ব্রহ্মার নিজের কন্যা তাকে দেখে ব্রহ্মা ভাবতে লাগলেন। তাকে দেখে দক্ষ প্রভৃতি প্রজাপতিগণ ও ব্রহ্মার মরিচী প্রভৃতি মানসপুত্রগণ অত্যন্ত উৎসুক হয়ে ভাবতে থাকেন। এই রূপবতী কার হবেন, এই নিয়ে সবাই ভাবছিলেন।
ব্রহ্মা এমন চিন্তা করতে করতে এক মনোহর পুরুষ তার থেকে উৎপন্ন হন। সেই পুরুষই কামদেব নামে পরিচিত। ব্রহ্মা তাকে বর দিয়ে বলেন , “তুমি তোমার এই মনোহর মূর্তি ও পুষ্পময় পঞ্চশরে স্ত্রী পুরুষদের মোহিত করে চিরস্থায়ী সৃষ্টির প্রবর্তক হও।”(১/৫৩) ব্রহ্মা বলেন, দেব, দানব,কিন্নর,গন্ধর্ব, মানুষ,পশুপাখি,সাপ,জলজ প্রাণী সকলেই কামদেবের দ্বারা মোহিত হবে। ব্রহ্মা আরো বলেন, “অন্য প্রাণীর কথা দূরে থাক, আমি, বিষ্ণু , এবং মহেশ্বর আমরাও তোমার বশবর্তী হব” (১/৫৭)
ব্রহ্মার কাছ থেকে বর পাওয়ার পর, কামদেব ব্রহ্মার উপরেই প্রথমে তা পরীক্ষা করে দেখতে চাইলেন। কামদেব ভাবলেন,
“ব্রহ্মা আমার যে নিত্যকর্ম স্থির করে দিয়েছেন, তার পরীক্ষা এখানে মুনিদের সামনেই,এই ব্রহ্মার উপরেই করে দেখি। (২/১৭) এখানে মুনিরা আছেন, দক্ষ প্রজাপতি আছেন, স্বয়ং ব্রহ্মাও আছেন, আর সন্ধ্যাও এখানে আছেন। (২/১৮) এই সকল পুরুষ এবং ব্রহ্মাও আমার শরব্য হবেন।(২/১৯)”
এর পরেই কামদেব কামবাণে সকলকে মোহিত করলেন। “এরপর শরপীড়িত হয়ে সেইসমস্ত মুনি এবং ব্রহ্মা মোহিত হয়ে মনে মনে কিছুটা বিকার প্রাপ্ত হলেন।” (২/২৪-২৫) “তারা সকলে বিকার প্রাপ্ত হয়ে বারবার সন্ধ্যার দিকে দৃষ্টিপাত করতে লাগলেন, দেখতে দেখতে তাদের কাম বৃদ্ধি পেল। কেননা রমণী হতেই কাম বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। ” (২/২৬)
তখন সেই দুষ্ট মদন তাদের বারবার মোহিত করে,যাতে তাদের বহিরিন্দ্রিয়ের বিকার হয়,তা করলেন। (২/২৭)
এরপর যখন ব্রহ্মা ইন্দ্রিয়ের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে , সন্ধ্যাকে দেখতে লাগলেন। তখন তার শরীর হতে ৪৯ সাত্ত্বিক ভাবের উদয় হল। (২/২৮)
তারা সকলে দৃষ্টিপাত করতে থাকলে সন্ধ্যাও বারবার কটাক্ষপাত ও কটাক্ষসঙ্কোচ প্রভৃতি কামদেবের বাণ সম্ভূত বিবিধ ভাব প্রকাশ করতে লাগলেন। (২/৩০) ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তরঙ্গ উঠলে মন্দাকিনীর যেমন শোভা হয়, সেইরকম স্বভাব সুন্দরী সন্ধ্যাদেবীও মদন বিকার জনিত সেই ভাব প্রকাশ করে অত্যন্ত শোভা পেয়েছিলেন।
এরপর সেই সন্ধ্যাকে দেখতে দেখতে বিধাতার শরীরে স্বেদজলধারা বইতে লাগল।তিনি সন্ধ্যার প্রতি অভিলাষী হলেন। (২/৩২) এরপর মরীচি , অত্রি সেই সমস্ত মুনি এবং দক্ষ প্রমুখ মুনিবরেরাও ইন্দিয়বিকার প্রাপ্ত হলেন। (২/৩৩)
তখন, ব্রহ্মা ও মুনিদের অবস্থা দেখে কামদেব তার ক্ষমতার উপর বিশ্বাস আনলেন।
সেই সময়ে আকাশচারী মহাদেব ব্রহ্মা এবং দক্ষ সদৃশ পুত্রগণকে ওইরকম বিকারপ্রাপ্ত দেখে উপহাস করতে লাগলেন। (২/৩৬) শিব ধিক্কার জানিয়ে হাসতে হাসতে তাদের লজ্জায় ফেলে দিয়ে বলতে লাগলেন,
“ ওহে ব্রহ্মা! নিজের তনয়াকে দেখে, তোমার কিনা কামভাব উপস্থিত হল। যারা বেদানুসারে চলে, এ কাজ তাদের যোগ্য নয়।“ (২/৩৭-৩৮)
শিব বলেন, “ পুত্রবধূ ও কন্যা মাতৃতুল্য; এটা বেদের সিদ্ধান্ত। তুমি সামান্য কামের প্রভাবে এটা বিস্মৃত হলে কিভাবে?” (২/৩৯)
“ধৈর্য তোমার মনকে সর্বদা সতর্ক করে রাখে। বিধি তারপরেও ক্ষুদ্র কাম কিনা তোমার সেই মন বিগড়ে দিল?” (২/৪০)
শিবের কথা শুনে ব্রহ্মার ঘাম ঝরতে থাকে। “ব্রহ্মা সেই কামরূপিনী সন্ধ্যাকে গ্রহণ করতে ইচ্ছুক হলেও ইন্দ্রিয় বিকার নিয়ন্ত্রণ করলেন, তাকে আর গ্রহণ করলেন না।“ ২/৪৫
মৎস্য পুরাণে
মৎস্য পুরাণে সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা তার মেয়ে শতরূপাকে বিয়ে করেছিলেন-
“তিনি (ব্রহ্মা) জপে নিরত আছেন, এমন সময় তার পবিত্র দেহ ভেদ করে অর্ধস্ত্রীরূপ ও অর্ধপুরুষরূপ প্রাদুর্ভূত হল। স্ত্রীরূপার্ধ শতরূপা নামে বিখ্যাত হলেন। হে পরন্তপ!এই শতরূপাই সাবিত্রী,গায়ত্রী,সরস্বতী ও ব্রহ্মাণী নামে প্রসিদ্ধ। ব্রহ্মা তাকে- স্বদেহ-সম্ভূত নারীকে ‘আত্মজা’ রূপে কল্পনা করলেন। এরপর বিভু প্রজাপতি তাকে দেখে পীড়িত ও কামশরে জর্জরিত হয়ে বললেন, অহো ‘কি রূপ!’ কি অপূর্ব রূপ।‘ তখন বশিষ্ঠ প্রমুখ মহর্ষিরা তাকে বোন বলে সম্বোধন করতে লাগলেন। কিন্তু ব্রহ্মা তার মুখপঙ্কজ ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলেন না। তিনি বারবার ‘অহো কি রূপ! অহো রূপ!’ এই কথাই বলতে লাগলেন। এরপর ব্রহ্মা সেই প্রণাম-নম্রা কন্যকে পুনরায় দেখলেন। সেই বরবর্ণিনী তাকে প্রণাম করে প্রদক্ষিণ করল। তার রূপ দেখবার জন্য ব্রহ্মার একান্তই ইচ্ছা; কিন্তু তাতে তিনি পুত্রদের কাছে বিশেষরূপে লজ্জিত; কাজেই তার দক্ষিণদিকে এক পাণ্ডুবর্ণ মুখ বিকাশ পেল,এরপর বিস্ময়ে তার পশ্চিমদিকে অন্য এক মুখ বের হল।এরপরে তার কামাতুর চতুর্থ মুখ প্রকটিত হয়ে পড়ল।তার কামাতুরতার কারণে আরও এক মুখ প্রকাশিত হল। এই মুখ সেই উপরের দিকে ওঠা নারীকে দেখার কৌতুহল বশতই নির্গত হল। ব্রহ্মা সৃষ্টিকার্য সম্পন্ন করবার জন্য ভীষণ তপস্যা করেছিলেন; কিন্তু নিজের কন্যা সঙ্গমেচ্ছায় তার তা নষ্ট হয়ে গেল। তার উর্ধদিকে যে পঞ্চম মুখ বিকাশ পেয়েছিল, তা জটাজালে আবৃত হল।এরপর ব্রহ্মা তার পুত্রদের বললেন তোমরা সুর,অসুর ও মানুষী প্রজা সৃজন কর। পিতার এই কথায় তারা সকলেই বিবিধ প্রজা সৃষ্টি করতে লাগলেন। তারা সৃষ্টি কার্যের জন্য প্রস্থান করলে বিশ্বাত্মা ব্রহ্মা সেই প্রণামাবনতা অনিন্দিতা শতরূপার পাণিগ্রহণ করলেন। এবং তার সাথে তিনি অত্যন্ত কামাতুর হয়ে কাল কাটাতে লাগলেন। তিনি প্রাকৃত জনের ন্যায় সেই লজ্জিতা ললনার সাথে শতবর্ষ অবধি কমল গর্ভে থেকে রমণ করলেন। এরপর দীর্ঘকাল অতীত হলে তার এক পুত্র জন্মাল। এই পুত্র স্বায়ম্ভুব মনু নামে অভিহিত।আমরা শুনেছি ওই মনুই বিরাট পুরুষ, তার অনুরূপ গুণসমূহযোগে ইনি অধিপুরুষ নামেও নির্দিষ্ট।…”
[মৎস্য পুরাণ/৩য় অধ্যায়| শ্রী পঞ্চানন তর্করত্ন কর্তৃক সম্পাদিত]
মৎস্য পুরাণ – মহর্ষি শ্রীকৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস প্রণীত – পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত
শ্রীযুক্ত পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত
সন ১৩১৬ সাল
ডাউনলোড লিঙ্ক-
মহাভাগবত পুরাণে
মহাভাগত পুরাণে স্রষ্টা ব্রহ্মার তার কন্য সন্ধ্যার প্রতি অজাচারের মনোভাব দেখা যায়-
“ ইতোমধ্যে একদা পর্বত নন্দিনী নিভৃত সময়ে মেনকার পার্শ্বস্থিত হইয়া পিতামাতা উভয়কে বলিতে লাগিলেন, জনকজননি! আপনারা উভয়েই মনোযোগ করুন, মহাদেব যে স্থানে আছেন, আমি সেই স্থানে তপস্যা করিতে গমন করিব। পূর্বকালে ব্রহ্মা একদা কামমোহিত হইয়া নিজ তনয়া সন্ধ্যার প্রতি ধাবমান হইলে পর আকশ পথে অবস্থিত মহাদেব তাহা দর্শন করিয়া কটূক্তি ও উপহাস পূর্বক বারংবার ব্রহ্মাকে নিন্দা করেন, সেই নিন্দা বাক্যে চতুর্বদন অত্যন্তই ম্লান বদন হইলে, ধৈর্যাবলম্বন করিয়া ইন্দ্রিয় বিকারের শাম্য করিলেন; কিন্তু ঐ লজ্জাজনিত ক্লেশে ক্লিষ্ট হইয়া এক নির্জন গিরিকাননে একাগ্রমনে বিধাতা আমার আরাধনা করিতে থাকিলেন। বহুকাল উগ্রতর তপস্যা দ্বারা আমাকে প্রশান্ত করিয়া বর প্রার্থনা করিলেন যে, মাতঃ! আপনি যদি প্রসন্না হইলেন তবে আমার নিকটে এই স্বীকার করুন যে, সংসার বিমুখ হইয়া সমুদায় বিষয় সুখ পরিত্যাগ করিয়া নিরন্তর ব্রহ্মচর্যতে ব্রহ্মধ্যানে পরায়ণ যে মহাদেব তাহাকে আপনি বিমোহিত করিবেন। হে জননি! আপনি ব্যাতিরেকে মহেশমনোরমা আর কেহই হইতে পারিবেন না। অতএব আপনি জন্মগ্রহণ করিয়া হরমোহিনী হউন। দুর্দৈববশতঃ ক্ষণকালের নিমিত্ত আমার ইন্দ্রিয় বিকার হইয়াছিল, তাহাতে উপদেশ প্রদান না করিয়া মহেশ্বর উপহাসপুরঃসর আমাকে নিন্দা করিয়াছেন; সেই জন্য যৎপরোনাস্তি দুঃখিত হইয়া আপনার শরণাগত হইয়াছি। আপনি সেই মহেশানকে মোহিত করিয়া আমার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করুন…” [ মহাভাগবত পুরাণ/ ১ম খণ্ড/ ২১ অধ্যায় ; অনুবাদক- শ্যামাপদ ন্যায়ভূষণ]
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে
কৃষ্ণ রাধাকে বলছেন, ” কান্তে! পূর্বে মহাত্মাদিগের গোপনীয় অকথ্য ও নিন্দনীয় যে সমস্ত বিষয় আছে তাহা তোমার নিকটে বলিতেছি শ্রবণ কর!” এরপর কৃষ্ণ সেই গোপনীয়, অকথ্য ও নিন্দনীয় কাহিনীর বর্ণনা দেওয়া শুরু করেন।
কৃষ্ণ বলেন, “… তাহার পর পরমাত্মা স্বরূপ সৌম্যমূর্তি যোগিশ্রেষ্ঠ ব্রহ্মা যোগবলে আমাকে ধ্যান করত বশিষ্ঠ, পুলহ, ক্রতু, অঙ্গীরা, ভৃগু, অত্রি, পুলস্ত, দক্ষ, কর্দম, মরীচি প্রভৃতি পুত্রগণকে সৃজন করিয়া সৃষ্টির নিমিত্ত আদেশ পূর্বক প্রহৃষ্টমনে আর একটি পুত্র ওকন্যা সৃজন করিলেন। ঐ পুত্র কামদেব নামে বিখ্যাত হইলেন; কন্যাও রত্নময়ভূষণে বিভূষিতা ষোড়শ বর্ষীয়া হইয়া মনোহর শোভা শালিনী হইলেন। তৎপরে বিধাতা মৎকুলাংশসম্ভূত স্বাত্মারাম দুর্নিবার্য মনোহর সুদীপ্ত সমীপস্থিত সুন্দর পুত্রকে বলিলেন বৎস! আমি তোমাকে স্ত্রী পুরুষের ক্রীড়ার নিমিত্ত সানন্দে সৃজন করিয়াছি। তুমি যোগবলে সকলের হৃদয়ে অধিষ্ঠান করিবে। আমি তোমাকে সম্মোহন, স্তম্ভনকারণ,উন্মত্তবীজ, জ্বরদ, নিরন্তর চেতনহারক এই বাণ সকল প্রদান করিলাম; তুমি এই সমস্ত গ্রহণ করিয়া সকলকে সম্মোহিত কর। বৎস! তুমি আমার বরে দুর্নিবার্য হও; এইরূপ বর প্রদান করিয়া জগৎবিধাতা আনন্দিত হইলেন। তৎপরে সম্মুখে দুহিতাকে দেখিয়া বর প্রদান করিতে উদ্যত হইলেন। এই সময়ে কাম মনে মনে যুক্তি স্থির করিয়া অস্ত্রপরীক্ষার নিমিত্ত ব্রহ্মাতেই সে সমস্ত অস্ত্র নিক্ষেপ করিলেন। তখন সিদ্ধ মহাযোগী ব্রহ্মা স্মরনিক্ষিপ্ত মন্ত্রপূত দুর্নিবার্য বাণপ্রভাবে হতচেতন হইয়া মূর্ছিতপ্রায় হইলেন। ক্ষণকাল পরে চৈতন্য লাভ করিয়া সম্মুখে কন্যাকে দেখিতে পাইলেন। তখন হতজ্ঞান ব্রমা তাহাকে সম্ভোগ করিবার নিমিত্ত অভিলাষ করত তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ ধাবমান হইলে, সেই সতী ভয়ে পলায়ণ করিল। সেই কন্যা হতচেতন পিতাকে পশ্চাতে ধাবিত দেখিয়া , শীঘ্র তপস্বী ভ্রাতৃগণের শরণাপন্ন হইলেন। তখন সেই মুনিগণ, ভগিনীকে নিকটে রাখিয়া ক্রোধে পিতাকে হিতকর বেদসার নীতিপূর্ণ সত্য বাক্য বলিতে লাগিলেন, অহো পিতঃ! আপনার এ কি গর্হিত কার্য! নীচ ব্যক্তিগণের আচরিত কার্যে প্রবৃত্ত হইয়াছে? সাধু ব্যক্তিগণ পরস্ত্রীকে সর্বদা জননীর ন্যায় দর্শন করেন, এই জন্যই সেই জিতেন্দ্রিয় সাধুগণ ইহকাল ও পরকালে সকল স্থানেই পূজনীয় হইয়া থাকেন। কন্যা মাতৃবর্গের মধ্যে পরিগণিতা, এইটি বেদে উক্ত আছে; আপনি স্বয়ং সেই বেদকর্তা হইয়া কন্যাকে সম্ভোগ করিতে উদ্যত হইয়াছেন? তাত! গুরুপত্নী, রাজপত্নী, বিপ্রপত্নী, সাধ্বী নারী, ভ্রাতৃবধূ, পুত্রবধূ, মিত্রজননী, মিত্রপত্নী, পিতামহী, পিতামাতার ভ্রাতৃপত্নী, স্বীয় কন্যা, জননী, বিমাতা, ভগিনী, সুরভী, অভীষ্ঠ, গুরুপত্নী, কাল্প্রদায়িকা ধাত্রী, গর্ভধারিণীনাম্নী রমণী, ভয়ত্রাতার কামিনী, এই সকল রমনীগণ সকলের মাতৃবর্গ বলিয়া নির্দিষ্ট আছেন। ইহাদের সকলের মধ্যে কাহারও অপেক্ষা কাহার ন্যূনতানাই, এবং বেদে কন্যাদাতা, অন্নদাতা, জ্ঞানদাতা, অভয়দাতা, জন্মদাতা, মন্ত্রদাতা, জ্যেষ্ঠভ্রাতা, মাতামহ, ইহারা সকল পিতৃবর্গ বলিয়া উক্ত আছেন; যশস্বীদের অযশ প্রাণত্যাগ অপেক্ষাও দুঃখকর। যে মূঢ়গণ এই যশের হানি করে এবং যাহারা এই জনকদিগকে পীড়ন করিতে চেষ্টা করে,তাহারা ব্রহ্মার বয়ঃকালপর্যন্ত নিরয়যাতনা ভোগ করে এবং দুরন্ত যমকিঙ্করগণ তাহাদিগকে অন্ধকূপ নরকে রাখিয়া ভীষণ তাড়না করে ও নিরন্তর অভক্ষ্য বিষ্ঠা প্রভৃতি ভোজন করায়। আপনি স্বয়ং বিশ্বকর্তা এবং শমনের শাসনকর্তা ও জগদ্বিধাতা হইয়াও স্বীয় কন্যাকে গ্রহণ করিতে অভিলাষ করিয়াছেন? কামুক! তুমি আমাদের সম্মুখ হইতে দূর হও, তোমার মন কাম পীড়ায় নিতান্ত কলুষিত হইয়াছে; আমরা ওমাকে ভস্মসাৎ করিতে সমর্থ হইয়াও পিতা বলিয়া ক্ষমা করিলাম। গুরুর সহস্র দোষ হইলেও পণ্ডিতগণ তাহা ক্ষমা করিবে। নীতিজ্ঞ ব্যক্তিগণ গুরু ব্যতিত পীড়নকারীকে বিনাশ করিয়া থাকেন। গুরু যদ্যপি নিষ্ঠুরভাবে আগমন করত সর্বস্ব গ্রহণ কিংবা শাপ প্রদান করিতে সমুদ্যত হন, তাহা হইলে জ্ঞানী ব্যক্তিগণ সেই সমীপস্থ গুরুকে নিন্দা না করিয়া বরং ভক্তিপূর্বক প্রণাম করিয়া থাকেন। যে ব্যক্তিগণ পরাৎপর গুরুকে নিন্দা কি দ্বেষ করে , তাহারা চন্দ্র সূর্যের অবস্থিতিকাল পর্যন্ত অন্ধকূপ নরক যাতনা ভোগ করে এবং তাহারা যম তাড়নার ক্ষুধিত হইয়া বিষ্ঠা ভক্ষণ করে , ও তাহাদিগকে শাল প্রমাণ কীটসমূহে দিবানিশি নিয়ত দংশন করে। মুনিগণ এই কথা বলিয়া তাহার পাদপদ্মে প্রণাম করত স্বীয় কার্যে নিমগ্ন হইলেন। তখন ব্রহ্মা দৈব সংঘটনায় এইরূপ সমস্তই হইয়া থাকে, ইহাই বিবেচনা করত লজ্জায় শরীর পরিত্যাগ করিতে উদ্যত হইয়া যোগবলে ষটচক্র ভেদপূর্বক প্রাণ সকলকে নিরোঢ করিলেন এবং ঐ প্রাণসকলকে ব্রহ্মরন্ধ্রে আনয়ন করিয়া স্বীয় কর্মফলে পরিত্যাগ করিলেন। সেই প্রাণত্যাগকালে তিনি মনে মনে শ্রীহরিকে স্মরণ করত এই কামনা করিলেন,হে ঈশ্বর! আমার মন যেন পরদ্রব্যে চঞ্চল না হয়। এই বিষয় মনে চিন্তা করিতে করিতে ব্রহ্মা পরম ব্রহ্মে লীন হইলেন। সেই কন্যাও পিতার মৃত্যুঅবস্থা দর্শনে পুনঃপুন বিলাপ করিয়া যোগবলে দেহ ত্যাগ করত পরব্রহ্মে লীনা হইলেন। তৎপরে মহর্ষিগণ পিতা ও ভগিনী মৃত হইয়াছেন দেখিয়া বিলাপ করত কোপবশে স্বাত্মারাম শ্রীহরিকে স্মরণ করিলেন। তখন আমার অংশজাত নারায়ণ কৃপা করিয়া সত্বর তথায় আগমন করত ব্রহ্মা ও সেই কন্যাকে পুনর্জীবিত করিলেন। … ”[ ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ/ শ্রীকৃষ্ণজন্মখণ্ড/ ৩৫ অধ্যায় ; পণ্ডিতবর শ্রীযুক্ত পঞ্চানন তর্করত্ন কর্তৃক অনুবাদিত ও সম্পাদিত; শ্রী শ্রীজীব ন্যায়তীর্থ কর্তৃক পরিশোধিত; নবভারত পাবলিশার্স ]
তথ্যসূত্র এবং টিকা
[1] মূল সংস্কৃতঃ
স বৈ নৈব রেমে তস্মাদেকাকী ন রমতে স দ্বিতীয়মৈচ্ছৎ। স হৈতাবানাস যথা স্ত্রীপুমাংসৌ সংপরিষ্বক্তৌ স ইমমেবাত্মানং দ্বেধাপাতয়ত্ততঃ পতিশ্চ পত্নী চাভতাং তস্মাদিদমর্ধবৃগলমিব স্ব ইতি স্মাহ যাজ্ঞবল্ক্যস্তস্মাদয়মাকাশঃ স্ত্রিয়া পূর্যত এব তাং সমভবত্ততো মনুষ্যা অজায়ন্ত। (ব্রিহদারণ্যক উপনিষদ ১/৪/৩)
[2] মূল সংস্কৃতঃ
সো হেয়মীক্ষাচক্রে কথং নু মাত্মন এব জনয়িত্বা সংভবতি হন্ত তিরোহসানীতি সা গৌরবভবদৃষভ ইতরস্তাং সমেবাভবত্ততো গাবোহজায়ন্ত বড়োতেতরাভবদশ্ববৃষ ইতরো গর্দভীতরা গর্দভ ইতরস্তাং সমেবাভবত্তত একশফমজায়তাজেতরাভবদ্বস্ত ইতরোহবিরিতরা মেষ ইতরস্তাং সমেবাভবত্ততোহজাবয়োহজায়ন্তৈবমেব যদিদং কিংচ মিথুনমাপিপীলিকাভ্যস্তৎ সর্বমসৃজত।। ১/৪/৪
[3] “Prajapati longed to poses his own daughter Usas. He lost his seed; this was poured down on the earth; he strengthened it, (thinking): ‘may this of me not be spoiled’ he sat it right and made the cattle out of it.”
[translated by Dr. W. Caland | Published by the Asiatic Society of Bengal]
[4] “ 1.Prjapati conceived a passion for his owndaughter,—either the Sky or the Dawn. ‘May Ipair with her’ thus (thinking) he united with her.2. This, assuredly, was a sin in the eyes of the gods.‘He who acts thus towards his own daughter, our sister, (commits a sin),’ they thought. 3.The gods then said to this god who rules over the beasts (Rudra), ‘This one, surely, commits a sin who acts thus towards his own daughter, our sister. Pierce him! Rudra, taking aim, piercedhim. Half of his seed fell to the ground. And thus it came to pass. “
[Translated by JULIUS EGGELING | motilalbanarsidass publishers PRIVATE LIMITED]
[5] মূল সংস্কৃত-
“পুরা ব্রহ্মা বিমোহেন সরস্বতা রূপদ্ভুতম্।
দৃষ্ট্বা জগাম তাং পশ্চাৎ তিষ্ঠতি বিহ্বলঃ স্বয়ম্।।
তদ্বচনং তদা পুত্রী শ্রুষা কোপসমন্বিতা।
উবাচ কিং ব্রবীষি তং মুখোনাশুভভাষিণা।।
ব্রবীষি চেদ্বিরুদ্ধং বৈ বিভাষী ভব সর্বদা”
[6] “Prajapati felt love towards his own daughter , the sky some say, Usas others. Having become a stag he approached her in the form of a deer. The gods saw him , ‘ A deed unknown Prajapati now does.’ They sought one to punish him ; they found him not among one another. These most dreads forms they brought together in one place . Brought together they become this deity here; therefore is his name containing (the word) Bhuta; he prospers who knows thus his name. To him the gods said ‘ Prajapati here had done a deed unknown; pierce him .’ ‘Be it so,’ he replied, ‘ Let me choose a boon from you.’ ‘ Choose’ (they said). He chose this boon , the overlordship of cattle; therefore does his name contain the word ‘cattle’ . Rich in cattle he becomes who knows thus this name of his. Having aimed at him he pierced him; being pierced he flew upwards ; him they call ‘the deer’. The piercer of the deer is he of that name. The female deer is rohini ; the three pointed arrow is the three pointed arrow . The seed of Prajapati outpoured ran ; it became a pond. The gods said ‘Let not this seed of Prajapati be spoiled’ . It became ‘not to be spoilt’, that is why ‘not to be spoilt’ (madusa) has its name; …” [ Aitareya Brahmana/ III/33 ; Translated by Keith , Harvard University Press]
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ