…উপ অর্থ "নিকটে " এবং নয়ন অর্থ "চোখ " অর্থাৎ যে সংস্কার অনুষ্টান এর ফলে জ্ঞানচক্ষু(নয়ন) দ্বারা বিদ্যার্থীকে ঈশ্বরের নিকটে নিয়ে যায় তাই উপনয়ণ ৷
উপনয়ন একটি হিন্দু শাস্ত্রানুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হিন্দু বালক-বালিকা উভয়ে দশবিধ সংস্কারে অন্যতম সংস্কারের মাধ্যমে দ্বিজত্তে উন্নিত হতে পারে । হিন্দু ঐতিহ্য অনুসারে, উপনয়ন বালকবালিকাদের শিক্ষারম্ভকালীন একটি অনুষ্ঠান।
★সনাতনধর্মে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য বর্ণের জন্য উপনয়নের ন্যূনতম বয়স যথাক্রমে অষ্টম , একাদশ ও দ্বাদশ বছর ।
উপনয়নকালে বালক ও বালিকাকে ব্রহ্মোপদেশ শিক্ষা দেওয়া হয় ৷ মনুস্মৃতি অনুযায়ী, এরপর তারা ব্রহ্মচারী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে।
★ উপনয়ন অনুষ্ঠানে শরীরে যজ্ঞোপবীত বা উপবীত (চলিত বাংলায় পৈতে) ধারণ করা হয়। উপবীত প্রকৃতপক্ষে তিনটি পবিত্র সূতো যা দেবী সরস্বতী, গায়ত্রী ও সাবিত্রীর প্রতীক। উপবীত ধারণের সময় উপবীতধারী গায়ত্রী মন্ত্র শিক্ষা করে। উপনয়নের পর ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের দ্বিজ বলা হয়, দ্বিজ শব্দের অর্থ দুইবার জাত। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রথমবার ব্যক্তির জন্ম হয় মাতৃগর্ভ থেকে; এবং দ্বিতীয়বার জন্ম হয় উপবীত ধারণ করে।
“ভগবান কে পাওয়ার জন্য যে জ্ঞান তাই ব্রহ্ম জ্ঞান, সেই জ্ঞান অর্জনের জন্য গায়ত্রী মন্ত্রসাধনের অধিকার লাভ করবার অনুষ্ঠানকে উপনয়ন বলে৷”
নিম্মের চিত্র লক্ষ্য করুন -
“ব্রহ্মেণোৎপাদিতং সূত্রং বিষ্ণুনা ত্রিগুণীকৃতম্ ,
রুদ্রেণ তু কৃতো গ্রন্থিঃ সাবিত্রায়াচাভিমন্ত্রিতম্ ”
অর্থাৎ ব্রহ্মা সূত্র প্রস্তুত করেন, বিষ্ণু ৩ দণ্ডী করেন, রুদ্র গ্রন্থি দেন ও সাবিত্রী মন্ত্র পূত করেন৷
★ মনুষ্যদেহ ৯ দ্বার যুক্ত -----২ চোখ, ২ কান, ২ নাক, মুখ, লিঙ্গ ও পায়ু এই ৯ দ্বার দিয়েই আমাদের শরীরে পাপ প্রবেশ করে -
...এই নবদ্বার বন্ধ করার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি স্বরূপ ৯ টি তন্তু সমৃ্দ্ধ যজ্ঞোপবীত বা পৈতা৷ যজ্ঞোপবীতে ৩টি গিঁট বা "ব্রহ্ম গ্রন্থি" থাকে। এই সূত্রত্রয় কর্তব্যপরায়ণ মানুষকে তিনটি ঋণের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
সেই ঋণত্রয় হল- ১) 'দেব-ঋণ' অর্থাত্ ঈশ্বরের প্রতি ঋন বা দায়িত্ব, ২) 'পিতৃ ঋণ' অর্থাত্ পিতামাতা, পরিবার পরিজান ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব এবং ৩) 'ঋষি-ঋণ' অর্থাৎ বৈদিক ঋষিগন যে মানবকল্যানের বিধিবিধান দিয়ে গেছেন তার প্রতি দায়িত্ব পালন।
→বাঙালি হিন্দু সমাজে অবশ্য কেবলমাত্র ব্রাহ্মণদের ক্ষেত্রেই উপনয়ন সংস্কার প্রচলিত হলেও নারী-পুরুষ , ক্ষত্রিয় ,বৈশ্য সকলের বিধান আছে । উপনয়নে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষের সমান অধিকার রয়েছে তার বিধান আমরা বেদ থেকেই পাই ৷ যথা:-
"ব্রহ্মচর্যেন কন্যা যুবানং বিন্দতে পতিম্। (অথর্ববেদ ১১.৫.১৮)
অর্থাত্ “ঠিক যেমন যুবক ব্রহ্মচর্য শেষ করে বিদুষী কন্যাকে বিয়ে করবে ঠিক তেমনি একজন যুবতীও ব্রহ্মচর্য শেষ করে পছন্দমত বিদ্বান যুবককে স্বামী হিসেবে গ্রহন করবে।”
🔗সর্বপ্রাচীন বৈয়াকরণিক মহর্ষি পাণিনী তার সংস্কৃত ব্যকরন শাস্ত্রে ছাত্রীদের ব্রহ্মচর্যের প্রতিষ্ঠান ছাত্রীশালা ও এর মহিলা অধ্যাপক আচার্যনি এর এর উল্লেখ করেছেন-
"মাতুলাচার্যাণামানুক্ত"
>পাণিনি ৪.১.৪৬
এবং "ছাস্যাদযঃ ছাত্রীশালাযাম্"
>পাণিনি ৬.২.৭৬
ব্রহ্মচারিনী ছাত্রীদের নারী শিক্ষক উপদেষ্টির উল্লেখ পাওয়া যায় ঋগ্বেদ ১.৩.১১,
“চোদয়িত্রী সূনৃতানাং চেতন্তি সুমতীনাং যজ্ঞম দধে সরস্বতী”
-ঋগ্বেদ ১.৩.১১
অনুবাদ :- “সুনৃত বাক্যের উৎপাদয়িত্রী , সুমতি লোকদিগের শিক্ষয়ত্রী সরস্বতী আমাদিগের যজ্ঞ গ্রহন করিয়াছেন ।”
পবিত্র বেদ ও শতপথ ব্রাহ্মনে আমরা দেখতে পাই যে কিভাবে গার্গী, মৈত্রেয়ী, অত্রেয়ী, বাক, অপালাসহ বিভিন্ন নারীরা ব্রহ্মচর্য পালনের মাধ্যমে ঋষি পর্যায়ে উন্নীত হন৷
এবার চলুন উপনয়ণ নিয়ে ভন্ডদের অপপ্রচারের জবাব দিই :-
প্রথমে লেখিয়াছেন👇👇
👉 ইহা ১ অদ্ভুত ধর্ম . নাম তার সনাতনী ধর্ম. বা. অনেকে হিন্দু ধর্ম নামেও চিনে থাকি...
যদি উক্ত পোস্টের বিষয়ে বলে থাকেন তো তার জবাব কসিয়ে পাবেন ৷
সনাতন ধর্ম কে উদ্দেশ্য করে যে জন্মদাত্রী মাকে সম্মান করা হয় না !! মাকে নত হতে হয় ছেলের পায়ের নিচে !! বেশ তো মশায় এখন আপনারা লাইনগুলার কোনো রেফারেন্স দিতে পারলেন না যে ??
বরং সনাতন শাস্ত্রে বলা হয়েছে:
"" জননী জন্মভূমিশ্চ সর্গাদপি গড়িয়শি "" অর্থাৎ জননী ও জন্মভূমি স্বর্গের চেয়েও মহান ৷৷ বরং আপনাদের আমার প্রশ্ন সনাতম ধর্মের মত মাকে এমন সম্মান কোন ধর্ম দিয়েছে বলুন ?? আপনি বলবেন আমাদের ধর্মে বলা আছে " মায়ের পদতলে বেহেস্ত !"
মশায় মায়ের পায়ে বেহেস্ত বেশি সম্মানের না বেহেস্ত থেকে মা কে মহান বলা সম্মানের ??
তারপর লিখিলেন :-👇
👉👉ব্রাহ্মণ থেকে ধর্মান্তরিত লেখক আবুল হোসেন ভট্টাচার্যের বইতে পড়েছিলাম, হিন্দুধর্ম অনুযায়ী ব্রাহ্মণ হতে পারে কেবল পুরুষমানুষ, ব্রাহ্মণের ঘরে যে মহিলারা রয়েছে তারা কিন্তু ব্রাহ্মণ হতে পারে না। গীতা অনুযায়ী সমস্ত মহিলাই পাপযোনী প্রসূত, তাই ব্রাহ্মণের ঘরে জন্মালেও তাকে শূদ্র হতে হবে।
এরপর লিখলেন :-👇
👉 👉কিন্তু সেই মহিলার গর্ভে যখন পুত্রসন্তান জন্মায়, তখন তাকে ব্রাহ্মণ হিসেবেই ধরা হয়। মা ব্রাহ্মণের ঘরে জন্মেও শূদ্র আবার তারই গর্ভজাত ছেলে ব্রাহ্মণ, তাই মা হয়েও ছেলের পা ধরে প্রণাম করতে হবে তার পৈতাধারণ অনুষ্ঠানে।
✴আমার জবাব :-👇
👉👉এই লেখা গুলি পড়ে আমার আর সন্দেহ থাকল না যে ভন্ডদের মাথায় বড় সড় সমস্যা আছে !! একে তো তার গাজাখুড়ি গল্প শুনালেন একদিকে দাবি দেখুন " মা ব্রাহ্মণ ঘরে জন্ম নিয়ে ব্রাহ্মণ হয় না সত্য !" কিন্তু ছেলে জন্ম নিলেই ব্রাহ্মণ হয়ে যায় কিভাবে ??
আরে অল্প বুদ্ধির মুমিন “ব্রাহ্মণত্ব কেউ ব্রাহ্মণ ঘরে জন্ম নিলে হয় না , ব্রাহ্মণত্ব অর্জন করে নিতে হয় ৷ যারা বেদ ধর্মচর্চা , ধর্ম শাস্ত্র শিক্ষা , ও সব্বোপরি দশবিধ সংস্কারে সম্পুর্ণ হয়ে থাকে তাবেই ব্রাহ্মণ হবে ৷( আরো জানতে কল্কিপুরাণ প্রথম অংশ ,দ্বিতীয় অধ্যায় ছবিতে দেখুন ) ধর্মীয় কাজে নিয়োজিত নয় এমন কাউকে শাস্ত্র ব্রাহ্মণ বলে স্বীকৃৃতি দেয়নি ৷৷”
👉👉 তারপর বলছেন পৈতাধারণ অনুষ্টানে ( সে এটাও জানে না একে বলে উপনয়ন অনুষ্টান ) নাকি ব্রহ্মচারী ছেলেকে মার পা ছুয়ে প্রণাম করতে হয় !😡
→ এইখানে তারা চরম মূর্খতার পরিচয় দিয়েছে|
→তারা এই টা কোথায় পেল??? আমি তাদের কে চ্যালেন্জ দিলাম রেফারেন্স প্রদর্শনের জন্য ৷
👉 ভারতে সনাতনী ভাইবোনদের শত শত জনের উপনয়ন একসাথে হয় কই কোনোদিন দেখলাম না , শুনলাম না যে শাস্ত্রে বা অনুষ্টানে মা তার পুত্রকে প্রণাম করেছে বা বলা হয়েছে ৷ ৷
👎 আবার যদি একটি ছবিও google থেকে খুজে দিয়ে বলে যে সেই ছবিতে মহিলা একজন ছেলে কে প্রনাম করছে দেখা যাচ্ছে ! এখন মহিলাটি যে ছেলেটির মা তার প্রমাণ কি ?? আর নিচু হলেই প্রমাণ হল না কেননা তারা বলেছে পা ছুয়ে নাকি প্রণাম করে !! বুঝুন এবার !
.. If they has guts lets them prove that ..
সবশেষ একটা কথা বলি “এই সামান্য বিষয় যাদের মাথায় ঠুকে না তাদের সনাতন ধর্ম নিয়ে মূর্খের মত ভূয়া পোস্ট দেয়ার যোগ্যতাই আছে মাত্র ৷৷ ”"মাতুলাচার্যাণামানুক্ত" ........ পাণিনি ৪.১.৪৬ এবং "ছাস্যাদযঃ ছাত্রীশালাযাম্" ........ পাণিনি ৬.২.৭৬, ব্রহ্মচারিনী ছাত্রীদের নারী শিক্ষক উপদেষ্টির উল্লেখ পাওয়া যায় ঋগ্বেদ ১.৩.১১ , ১০.১৫৬.২ প্রভৃতিতে ৷""
পবিত্র গীতা অনুসারে সকল মহিলা পাপযোনী প্রসূত !! এই লেখাটা তিনি শ্রীমদভগবত গীতার কোথায় পেলেন কিছুই তো বললেন না ❗ ❗ তার মানে ভন্ডামি নয় ❓ ❓
আর তিনি যখন একজন ব্রাহ্মণ ধর্মান্তরিত হওয়ার কথা বলিলেন , আমিও একজন মসজিদের ইমামের সনাতনে ধর্মান্তরিত ব্যক্তির উদাহরণ দিই তার নাম পূর্বে ছিল মেহবুব আলী বর্তমানে ধর্মপ্রচারে নিয়োজিত তার বর্তমান নাম " মহেন্দপাল আর্য" ৷ আরো জানতে( http://bangalihindupost.blogspot.com/2012/08/blog-post_21.html )
যজ্ঞোপবীত বা পৈতার অপরনাম প্রতিজ্ঞাসূত্র বা ব্রতসূত্র। আটবছর থেকে বার বছর বয়সের ভেতর প্রতিটি বৈদিক ধর্মালম্বীর উপনয়ন আবশ্যক এবং উপনয়নের মাধ্যমে এই পবিত্র সুত্রটি সে গুরুকর্তৃক প্রাপ্ত হয়। যদিও বর্তমানে পুরুষশাসিত ঘুনে ধরা সমাজ নারীদের থেকে এই অধিকার কেড়ে নিয়ে বেদের বিরুদ্ধাচরন করছে। প্রতিটি পৈতা তিনটি আলাদা সূত্রকে গিট দিয়ে বেঁধে তৈরী। এই গিট বা বন্ধনকে ব্রহ্মগ্রন্থি বা ঈশ্বর কর্তৃক প্রদত্ত গ্রন্থি বলা হয়। এই তিনটি সূত্র ঈশ্বর কর্তৃক নির্দেশিত প্রতিটি মানুষের তিনটি ব্রত বা ঋন বা দায়িত্বের প্রতীক।কি সেই তিনটি ঋন যা প্রত্যেকটি মানুষকে শোধ করতে হয়?
স সূর্যস্য রশ্মিভিঃ পরিব্রুথম তন্তু
তন্বস্ত্রিব্রুথ ম যথাবিদে।
প্রশিশো নবিয়সি পথিরজনীনমুপা
যথি নিষ্কৃতম।
(ঋগ্বেদ ৯.৮৬.৩২)
অনুবাদ: এই তিনসূত্র পরিধান করতে হয় জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য জানতে। যে ব্যক্তি যজ্ঞোপবীত ধারন করেন তিনি গুরুর কাছে এটা অবগত হন যে তিনটি ঋন তার শোধ করতে হবে-দেব, পিতৃ, ঋষি।
১) দেবঋণ- ঈশ্বর কর্তৃক প্রদত্ত আমাদের বেঁচে থাকার অপরিহার্য এ পৃথিবী, পরিবেশ ও প্রানীকুলের প্রতি দায়িত্ব। পৃথিবী কে সুন্দর করে গড়ে তোলা, পরিবেশ শুদ্ধ করা ও জীবে সেবা করা দেবঋণের অন্তর্গত।
২) পিতৃঋণ-পিতামাতার প্রতি ঋন। নিঃস্বার্থ ভাবে এই দুই জীবন্ত দেবতা আমাদের মানুষ করেন, তাদের যথাসাধ্য সেবাযত্ন করা আমাদের কর্তব্য।
৩) ঋষিঋণ- প্রাচীন বৈদিক ঋষিগন থেকে শুরু করে নিজের গুরু- শিক্ষক, এরাই
আমাদের প্রকৃত মানুষ করে গড়ে তোলেন। এদের সেবা,অনুসরন করাই ঋষিঋণ।
পঞ্চগিট-যজ্ঞোপবীত বা পৈতাতে মোট পাঁচটি গিট থাকে। এই পাঁচটি গিট উপরোক্ত ঋনসমূহ পরিশোধে পাঁচটি বাঁধার কথাকে স্মরন করিয়ে দেয়-কাম, ক্রোধ, লোভ, হিংসা, মোহ। অবস্থান-যজ্ঞোপবীত বাঁম কাধ থেকে ঝুলিয়ে ডান দিকের কোমর পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে কেননা এত সূত্রটি ঠিক হৃদপিন্ডের উপর দিয়ে যায় যার মাধ্যমে প্রতীকিভাবে বোঝানো হয় নিজের দায়িত্বগুলো হৃদয় থেকে পালন করতে।
উপনয়ন ও যজ্ঞোপবীত :-
উপ = নিকটে, নয়ন = চোখ
উপনয়ন একটি হিন্দু শাস্ত্রানুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হিন্দু বালকেরা ব্রাহ্মণ্য সংস্কারে দীক্ষিত হয়। হিন্দু ঐতিহ্য অনুসারে, উপনয়ন হিন্দু বালকদের শিক্ষারম্ভকালীন একটি অনুষ্ঠান। হিন্দুধর্মে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য বর্ণের জন্য উপনয়নের ন্যূনতম বয়স যথাক্রমে সাত, তেরো ও সতেরো বছর। উপনয়নকালে বালকদের ব্রহ্মোপদেশ শিক্ষা দেওয়া হয়। মনুস্মৃতি অনুযায়ী, এরপর তারা ব্রহ্মচারী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। বাঙালি হিন্দু সমাজে অবশ্য কেবলমাত্র ব্রাহ্মণদের ক্ষেত্রেই উপনয়ন সংস্কার প্রচলিত। উপনয়ন অনুষ্ঠানে শরীরে যজ্ঞোপবীত বা উপবীত (চলিত বাংলায় পৈতে) ধারণ করা হয়। উপবীত প্রকৃতপক্ষে তিনটি পবিত্র সূতো যা দেবী সরস্বতী, গায়ত্রী ও সাবিত্রীর প্রতীক। উপবীত ধারণের সময় উপবীতধারী গায়ত্রী মন্ত্র শিক্ষা করে। উপনয়নের পর ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের দ্বিজ বলা হয়, দ্বিজ শব্দের অর্থ দুইবার জাত। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রথমবার ব্যক্তির জন্ম হয় মাতৃগর্ভ থেকে; এবং দ্বিতীয়বার জন্ম হয় উপবীত ধারণ করে। ভগবান কে পাওয়ার জন্য যে জ্ঞান সেই জ্ঞান অর্জনের জন্য গায়ত্রী মন্ত্রসাধনের অধিকার লাভ করবার অনুষ্ঠানকে উপনয়ন বলে৷
যজ্ঞোপবীতের / পৈতার এক এক একটি সুত্রে এক একজন দেবতা আছেন, ১ম তন্তুতে ওঁকার, ২তন্তুতে অগ্নি, ৩ তন্তুতে অনন্তনাগ, ৪ তন্তুতে চন্দ্র, ৫ তন্তুতে পিতৃগণ, ৬ষ্ঠ তন্তুতে প্রজাপতি, ৭ম তন্তুতে বসুগন, ৮ম তন্তুতে যক্ষ। ৯ম তন্তুতে শংকর৷
এই যজ্ঞোপবীতের / পৈতার ঊৎপত্তি সম্বন্ধে গৃহ্যাসংগ্রহে বর্ণিত আছে।
“ব্রহ্মেণোৎপাদিতং সূত্রং বিষ্ণুনা ত্রিগুণীকৃতম্ …. রুদ্রেণ তু কৃতো গ্রন্থিঃ সাবিত্রায়াচাভিমন্ত্রিতম্.” অর্থাৎ ব্রহ্মা সূত্র প্রস্তুত করেন, বিষ্ণু ৩ দণ্ডী করেন, রুদ্র গ্রন্থি দেন ও সাবিত্রী মন্ত্র পূত করেন৷ মনুষ্যদেহ ৯ দ্বার যুক্ত —— ২ চোখ, ২ কান, ২ নাক, মুখ, লিঙ্গ ও পায়ু——— এই ৯ দ্বার দিয়েই আমাদের শরীরে পাপ প্রবেশ করে ————- এই নবদ্বার বন্ধ করার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি স্বরূপ ৯ টি তন্তু সমৃ্দ্ধ যজ্ঞোপবীত বা পৈতা৷
যজ্ঞোপবীতে ৩টি গিঁট বা “ব্রহ্ম গ্রন্থি” থাকে। এই সূত্রত্রয় কর্তব্যপরায়ণ মানুষকে তিনটি ঋণের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সেই ঋণত্রয় হল-
১) ‘দেব-ঋণ’ অর্থাত্ ঈশ্বরের প্রতি ঋন বা দায়িত্ব,
২) ‘পিতৃ ঋণ’ অর্থাত্ পিতামাতা, পরিবার পরিজান ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব এবং
৩) ‘ঋষি-ঋণ’ অর্থাৎ বৈদিক ঋষিগন যে মানবকল্যানের বিধিবিধান দিয়ে গেছেন তার প্রতি দায়িত্ব পালন।
পৈতাকেই যজ্ঞউপবীত, যজ্ঞসুত্র বা ব্রম্মসুত্র বলে I ত্রিদন্ডীতে ( তিন ফের সুতায় একটি গ্রন্থী ) একটি যজ্ঞউপবীত হয় I ব্রম্মচারিকে একটি যজ্ঞউপবীত ধারণ করিতে হয় I সমাবর্তনের পর একটি যজ্ঞউপবীত ধারণ করিতে নাই, চারটি ধারণ করিবে I দুইটি দৈব ও পৈত্র কার্যের জন্য, তৃতীয় যজ্ঞ সুত্রে উত্তরীয় বস্ত্রের (চাদরের ) অভাব দূর করে I কোন একটি সুত্র কখনও ছিন্ন হইলে তাহার স্থান পূরণের জন্য চতুর্থ ত্রিদন্ডী ধারণ করিতে হয় I নতুন যজ্ঞ উপবীত মন্ত্রপূত করিয়া ধারণ করিবে এবং অব্যবহার্য যজ্ঞ উপবীত পায়ের তলা দিয়া গলাইয়া জলে ফেলিবে I যজ্ঞ উপবিতের পরিমান সামবেদীয়দের পাছার নিন্মদেশ পর্যন্ত এবং যযুর্ব্বেদির ও ঋগ্বেদীর নাভিদেশ পর্য্যন্ত হইবে I যজ্ঞ উপবীত কন্ঠচুত করা , মালার ন্যায় গলায় ধারণ করা বা কোমরে গুজিয়া রাখা শাস্ত্রবিরুদ্ধ I মল মুত্র ত্যাগ করিবার সময়ে কর্নে বা দুই ভাজে মালার ন্যায় করিয়া পিঠে ঝুলাইয়া রাখিতে হয় I যদি ভুলে তাহা করা না হয়, তাহা হইলে সেই যজ্ঞ উপবীত ছাড়িয়া নতুন যজ্ঞ উপবীত ধারণ করিতে হয় I ব্রাম্মন কার্পাসের, ক্ষত্রিয় শনের এবং বৈশ্য মেষ লোমের উপবীত করিবে :
যজ্ঞ উপবীত বা পৈতার গ্রন্থী মন্ত্র जज्ञोपवित ग्रंथि मंत्र:
সামবেদী- साम वेदी
অমুক…………..গোত্রস্য, অমুক……. আঙ্গিরস, অমুক …….প্রবরস্য অমুক …… দেবশর্মন গ্রন্থী কর্মাহং (নিজে হইলে) করিস্যে বা (অন্যে হইলে) করিস্যামি I যথা:-
भ्वरद्वाज गोत्रस्य भ्वद्वाज आङिरष बार्हस्पत्य प्रवरस्य श्री रविन्द्र प्रसाद देब्शर्मन ग्रन्थी कर्माहङ करिस्ये (अथवा करिष्यामी)I
যজ্ঞউপবীত গ্রন্থী দিবার পর উহা ধরিয়া গায়ত্রী পাঠ করিবে I
যজ্ঞউপবীত ধারণ মন্ত্র – जज्ञोपबित धारण मंत्रम :
সামবেদী- साम वेदी
ॐ जज्ञोपवितमसि, जज्ञस्य त्वा जज्ञोपवितेन उपनेह्यामी
यजुर्वेद्यीय एबम ऋग्वेदीय मन्त्रम :
ॐ जज्ञोपवीतंग परमंग पवित्रंग वृहस्पतेर्षत सहजंग पुरस्तात I
आयुष्यमग्रंग प्रतिमुंच शुभ्रंग जज्ञोपवीतंग बलमंत्र तेज: II
যজ্ঞউপবীত মার্জন – জজ্ঞসুত্র দুগ্ধ, দধি, সর্ষপতৈল, পিটুলি বা বেলের আঠা দ্বারা মার্জন করিবে I
গোত্র প্রবর মালা –
অগস্ত্য – অগস্তি, দধীচি জৈমিন অথবা আগস্ত্যা ,দাঢর্চ্যুত, ইন্মবাহ
अगस्त्य -अगस्ति, दधीचि, जैमिन अथवा आगस्त्य, दाढर्च्युत, इन्म्वाह
Agastya -Agasti, Dadheechi, Jaimin or Aagastya, Vaadhrchyut, Inmavaaha
অগ্নিবেশ্য – আঙ্গিরষ, বার্হস্পত্য ভরদ্বাজ
अग्निवेश्य – आंगिरष,वार्हस्पत्य, भरद्वाज
Agniveshya -AangiraSH,Vaarhaspatya, Bharadwaaj
অত্রি – অত্রি, আত্রেয়, শাতাতপ অথবা আত্রেয়, আর্চনাসা, শ্যাবাশ্ব
अत्रि – अत्रि, आत्रेय, शातातप अथवा आत्रेय आर्चनासा, श्यावाश्व
Atri – Atri, Aatreya, Shaataatap Or Aatreya Aarchanaasaa, Shyaavaashw
ভরদ্বাজ – ভরদ্বাজ, আঙ্গিরষ, বার্হস্পত্য
भरद्वाज – भरद्वाज, आंगिरष,वार्हस्पत्य,
Bharadwaaj – Bharadwaaj, AangiraSH,Vaarhaspatya
কাশ্যপ – কাশ্যপ, আপসার, নৈধ্রুব
काश्यप – काश्यप्, आपसार, नैध्रुव
Kaashyap – Kaashyap, Aapasaara, Naidhruv
পরাশর – পরাশর, শক্তি বশিষ্ঠ অথবা বশিষ্ঠ, শক্তি, পারাশর্য
पराशर – पराशर्, शक्ति, वशिष्ठ अथवा वशिष्ठ्, शक्ति, पाराशर्य
Paraashar – Paraashar, Shakti, VashiSHTh Or VashiSHTh, Shakti, Paaraasharya
শান্ডিল্য – শান্ডিল্য, আসিত, দেবল
शान्डिल्य – शान्डिल्य,आसित,देवल
ShaanDilya – ShaanDilya,Aasita,Deval
বত্স্য, (বাত্স্য), ও সাবর্ণ – ঔর্ব, চ্যবন, ভার্গব
वत्स (वात्स्य) एबंग सावर्ण – और्व, च्यवन, भार्गव
Vatsa (Vaatsya) and SaavarNa – Aurva, Chyavan, Bhaargava,
কুশিক – কুশিক, বিশ্বামিত্র, দেবরাজ অথবা কুশিক, কৌশিক, বিশ্বামিত্র
कुशिक – विश्वामित्र, देवराज्, औदस अथवा कुशिक कौशिक्, विश्वामित्र
Kushik – Vishwaamitra, Devaraaj, Audas Or Kushik Kaushik, Vishwaamitra
মৌদগল্য – ঔর্ব, চ্যবন , ভার্গব , জামদগ্ন
मौद्गल्य – और्व, च्यवन, भार्गव, जामदग्न
Maudgalya – Aurva, Chyavana, Bhaargava, Jaamadagna
গৌতম – আপাস, আঙ্গিরষ, বার্হস্পত্য, বানৈধ্ব
गौतम- आपास्, आंगिरष वार्हस्पत्य, वानैधव
Gautama- Aapaas, AngirasHa, Vaarhaspatya, Vaanaidhadv
বিশ্বামিত্র – বিশ্বামিত্র, মরীচি, কৌশিক অথবা বিশ্বামিত্র, ঔদল, দেবরাট
विश्वामित्र – बिश्वामित्र, मरीचि, कौशिक अथवा बिश्वामित्र, औदल्, देवराट
Vishwaamitra – Vishwaamitra, Mareechi, kaushik Or bishwaamitra, audal, devaraaT
আলম্ব্যায়ন – আলম্ব্যায়ন, শালন্কারণ, শাকটারন
आलम्ब्यायन – आलम्ब्यायन्, शालन्कारन्, शाकटारन
Aalambyaayan – Aalambyaayan, Shaalankaaran, ShaakTaaran
কাত্যায়ন – অত্রি, ভৃগু, বশিষ্ঠ
कात्यायन – भृगु, बैशिष्ठ, अत्रि
Kaatyaayon – Atri, Bhrigu, VasisSHTh
গোতম – গোতম, বৈশিষ্ঠ বার্হস্পত্য
गोतम – गोतम् , वशिष्ठ्, वार्हस्पत्य
Gotam – Gotam, VashiSHTh, Vaarhaspatya
গর্গ – গার্গ্য, কৌস্তব, মন্ডব
गर्ग – गार्ग्य, कौस्तव, मन्डब
Garg – Gaarya, Kaustava Mandav
বৃহস্পতি – বৃহস্পতি, কপিল, পার্বণ
वृहस्पति, – बृहस्पति, कपिल, पार्वण
vrihaspati – brihaspati, kapila, paarvaN
ধন্বন্তরি – আঙ্গিরষ, অপসার বার্হস্পত্য, নৈধ্রুব धन्वन्तरि, – आंगिरष, अपसार, वार्हस्पत्य, नैध्रुव
Dhanwantari, – Apasaara, Vaarhaspatya, Naidhruv
বিষ্ণু – বিষ্ণু, বৃদ্ধি, কৌরব
विष्णु – विष्णु, वृद्धि, कौरव
ViSHNu – ViSHNu, Vriddhi, Kaurav
শিব – শিব, ভৃগু, ব্রম্মঋষয়
शिव – शिव, भृगु, ब्रम्मऋषय
Shiv- Shiv, Bhrigu, BrammRiSHya
উপনয়নে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষের সমান অধিকার।
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ