- অধিকাংশ লোক নিরাকারকে নির্গুণ এবং সাকারকে সগুণ বলে।
- তারা বলে যখন ঈশ্বর জন্মগ্রহণ করেন না, তখন তিনি নির্গুণ আর যখন সাকার রুপ ধারণ করে অবতার হন, তখন তিনি সগুণ।
খন্ডন:
...........✍️ এটা তাদের অজ্ঞতা এবং মিথ্যা কল্পনা মাত্র। নির্গুণ মানে নিরাকার না এবং সগুণ মানে সাকার বুঝায় না। নির্গুণ মানে নিরাকার নয় তার প্রমাণ দেখুন বেদ, উপনিষদি শাস্ত্রে সেই নিরাকার পরমাত্মা কেই প্রাণস্বরুপ, সর্বব্যাপক, সর্ব্বশক্তিমান, সর্বজ্ঞ, সর্ববিদ্যার ধারণকর্তা অনাদি বলা হয়েছে। যদি নির্গুণ মানে নিরাকার হয়, তাহলে নিরাকার ব্রহ্মের কেন এইসব গুণের স্তুতি করা হয়েছে?
আবার সগুণ মানে সাকার নয়; বা সাকার রুপ ধারণ করে অবতার হন, তাই তিনি সগুণ সেটাও না; তার প্রমাণ দেখুন "বেদে" বলা হয়েছে পরমাত্মা সাকার রুপ নাই এবং শরীর ধারণ করেন না তাই তাকে শরীররহিত, জন্মরহিত, ছিদ্র রহিত, স্নায়ু আদির বন্ধন রহিত, মূর্তিশূণ্য বা অমূর্ত্ত বলা হয়েছে।
❏ স পর্যগাচ্ছুক্রমকায়ম ব্রণম স্নাবিরং
শুদ্ধ মপাপ বিদ্ধম্ কবির্মনীষী পরিভূঃ স্বয়ম্ভূর্যাথা তথ্যতোহর্থাম্ব্যদধাচ্ছা শ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ ।।
🔥যজুর্বেদ. ৪০/৮৷
বঙ্গানুবাদঃ- পরমাত্মা সর্বব্যাপক,
সর্বশক্তিমান, শরীররহিত, ছিদ্র
রহিত, স্নায়ু আদির বন্ধন রহিত,
রোগরোহিত, জম্মরহিত,শুদ্ধ,
নিষ্পাপ, সর্বজ্ঞ, অন্তর্যামী,
দুষ্টের দমন কর্তা ও অনাদি। তিনি
তাহার শ্বাশত প্রজা জীবের জন্য
যথাযথ ফলের বিধান করেন।
❏ য এক ইৎ তমু ষ্টুহি কৃষ্টীনাং বিচর্যণিঃ পতি র্জজ্ঞে বৃষক্রতুঃ।।
🔥 ঋগ্বেদ. ৬/৪৫/১৬।
বঙ্গানুবাদঃ- যিনি এক অদ্বিতীয়, যিনি মনুষ্যদের সর্ব্বদ্রষ্টা, যিনি সর্ব্বশক্তিমান ও পালক একমাত্র তাঁহাকেই উপাসনা কর।
❏ যত্তদদ্রেশ্যমগ্রাহ্মমগোত্রমবর্ণমচক্ষূঃশ্রোত্রং তদপাণিপাদম্।
নিত্যং বিভূং সর্বগতং সূসুক্ষ্মং তদব্যয়ং যদ্ভুতয়োনিং পরিপশ্যন্তি ধীরাঃ।।
🔥 মূণ্ডকোপনিষৎ ১/১/৬
বঙ্গানুবাদঃ- যিনি অদৃশ্য, অগ্রাহ্য, অগোত্র, অবর্ণ এবং অচক্ষুঃ ও অশ্রোত্র, যিনি হস্তপাদশূন্য, নিত্য, বিভু, সর্বব্যাপী এবং অতিসূক্ষ্ম, সেই অব্যয় এবং সর্বভূতের কারনকে ধীরগণ সর্বতঃ দেখতে পান।
❏ দিব্যো হ্যমুর্তঃ পূরূষঃ স বাহ্যাভ্যন্তরো হ্যজঃ।
অপ্রাণো হ্যমনাঃ শূভো হ্যক্ষরাৎ পরতঃ পরঃ।।
🔥 মূণ্ডকোপনিষৎ ২/১/২
বঙ্গানুবাদঃ- সেই দিব্য মূর্তিশূণ্য পুরুষঃ বাহ্যে এবং অন্তরে অবস্থিতি করেন। তিনি জন্মশূন্য-প্রানশূন্য-মনশূন্য এবং বিশুদ্ধ, তিনি পরম অক্ষর হতেও উর্ধে। (নীলোৎপল সিনহা)
তিনি দিব্য, তিনি অমূর্ত্ত, চিন্ময় পুরুষ, বাহিরে তিনি অন্তরে তিনি, তিনি জন্মহীন, প্রাণের অতীত, মনের অতীত, জ্যোতির্ময়, অক্ষরেরও পারে পরমতম তিনি। (শ্রী অরবিন্দ)
পশু-পাখি, মানুষ প্রভৃতি জীব কর্ণের দ্বারা শব্দ গ্রহণ করে, চক্ষু দ্বারা দৃশ্যমান পদার্থ দেখে থাকে, ইন্দ্রিয় দ্বারা তারা রুপ, রস, শব্দ, গন্ধ ও স্পর্শাদি বিষয় গ্রহণ করে কিন্তু ঈশ্বরের কোন প্রকার ইন্দ্রিয় নাই, তিনি নিত্য-অবিনাশি। শ্রুতি তাকে "সর্বজ্ঞ" ও "সর্ব্বশক্তিমান" বলে নির্দেশ করেছে। যিনি জ্ঞান ও ক্রিয়ার কর্ত্তা- তিনি জীবের ন্যায় কর্ণ, চক্ষুরাদি ইন্দ্রিয় দ্বারাই বিষয় গ্রহণ করে থাকেন এবং তিনি মানুষের অনুরুপ; কোন অজ্ঞানী কোন লোক যাতে এইরুপ মনে না করে, তার জন্য বলা হয়েছে....
যিনি মনদ্বারা চিন্তা করেন না, পন্ডিতগণ বলেন, যাঁর সত্তায় মন চিন্তাক্ষম হয়; যিনি চক্ষুদ্বারা দর্শন করেন না, যাঁর সত্তায় চক্ষুর বিষয়সমূহ লোকে দর্শন করে; যিনি কর্ণ দ্বারা শ্রবণ করেন না, যাঁর সত্তায় এই কর্ণ শ্রবণ করে; যিনি প্রাণবায়ুদ্বারা নিঃশ্বাস প্রশ্বাস করেন না, যাঁর সত্তায় প্রাণ নিঃশ্বাস প্রশ্বাস চালনে সক্ষম হয়, তাঁকেই তুমি ব্রহ্ম বলে জানবে; (আর) অন্য যা কিছু লোকে উপাসনা করে, তা ব্রহ্ম নয়।
🔥 কেনোপনিষৎ ১/৬-৯
সেই নিরাকার, সর্ব্বমূর্তি শূণ্য ব্রহ্ম হতেই বিশ্ব প্রকাশিত হয়েছে আবার, প্রলয়ে বিশ্ব সেই ব্রহ্মে বিলীন হবে।
❏ তদেতৎ সত্যং যথা সূদীপ্তাৎ পাবকাদ্বিস্ফূলিঙ্গাঃ সহস্রশঃ প্রভবন্তে সরুপাঃ।
তথাহ্ক্ষরাদ্বিবিধাঃ সোম্য ভাবাঃ প্রজায়ন্তে তত্র চৈবাপি যন্তি।।
🔥মূণ্ডকোপনিষৎ ২/১/১
বঙ্গানুবাদঃ- এটি সত্য, যেরুপ সুদীপ্ত পাবক হতে সেই পাবকেরই স্বরুপ বিস্ফুলিঙ্গসমূহ সহস্রশ নির্গত হয়, হে সৌম্য, সেইরুপ অক্ষর ব্রহ্ম থেকে বিবিধ জীব উৎপন্ন হয় এবং তাদের পুনরায় বিলীন হয়।
❏ সত্যমেব জয়তে নানৃতং সত্যেন পন্থা বিততো দেবযানঃ
যেনাহ্ক্রমন্ত্যৃষয়ো হ্যাপ্তকামা যত্র তৎ সত্যস্য পরমং নিধানম্।।
🔥মূণ্ডকোপনিষৎ ৩/১/৬
বঙ্গানুবাদঃ- সত্যই জয়লাভ করে, অসত্য জয়লাভ করে না। যে পথদ্বারা আপ্তকাম ঋষিগণ সেই সত্যের পরম ধামে গমন করেন, সেই দেবযান পথও সত্যপ্রভাবেই বিতত রয়েছে।
[তথ্যসূত্রঃ বেদ, উপনিষদ; মূল লেখা সত্যার্থ প্রকাশ]
...........✍️ এটা তাদের অজ্ঞতা এবং মিথ্যা কল্পনা মাত্র। নির্গুণ মানে নিরাকার না এবং সগুণ মানে সাকার বুঝায় না। নির্গুণ মানে নিরাকার নয় তার প্রমাণ দেখুন বেদ, উপনিষদি শাস্ত্রে সেই নিরাকার পরমাত্মা কেই প্রাণস্বরুপ, সর্বব্যাপক, সর্ব্বশক্তিমান, সর্বজ্ঞ, সর্ববিদ্যার ধারণকর্তা অনাদি বলা হয়েছে। যদি নির্গুণ মানে নিরাকার হয়, তাহলে নিরাকার ব্রহ্মের কেন এইসব গুণের স্তুতি করা হয়েছে?
আবার সগুণ মানে সাকার নয়; বা সাকার রুপ ধারণ করে অবতার হন, তাই তিনি সগুণ সেটাও না; তার প্রমাণ দেখুন "বেদে" বলা হয়েছে পরমাত্মা সাকার রুপ নাই এবং শরীর ধারণ করেন না তাই তাকে শরীররহিত, জন্মরহিত, ছিদ্র রহিত, স্নায়ু আদির বন্ধন রহিত, মূর্তিশূণ্য বা অমূর্ত্ত বলা হয়েছে।
❏ স পর্যগাচ্ছুক্রমকায়ম ব্রণম স্নাবিরং
শুদ্ধ মপাপ বিদ্ধম্ কবির্মনীষী পরিভূঃ স্বয়ম্ভূর্যাথা তথ্যতোহর্থাম্ব্যদধাচ্ছা শ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ ।।
🔥যজুর্বেদ. ৪০/৮৷
বঙ্গানুবাদঃ- পরমাত্মা সর্বব্যাপক,
সর্বশক্তিমান, শরীররহিত, ছিদ্র
রহিত, স্নায়ু আদির বন্ধন রহিত,
রোগরোহিত, জম্মরহিত,শুদ্ধ,
নিষ্পাপ, সর্বজ্ঞ, অন্তর্যামী,
দুষ্টের দমন কর্তা ও অনাদি। তিনি
তাহার শ্বাশত প্রজা জীবের জন্য
যথাযথ ফলের বিধান করেন।
❏ য এক ইৎ তমু ষ্টুহি কৃষ্টীনাং বিচর্যণিঃ পতি র্জজ্ঞে বৃষক্রতুঃ।।
🔥 ঋগ্বেদ. ৬/৪৫/১৬।
বঙ্গানুবাদঃ- যিনি এক অদ্বিতীয়, যিনি মনুষ্যদের সর্ব্বদ্রষ্টা, যিনি সর্ব্বশক্তিমান ও পালক একমাত্র তাঁহাকেই উপাসনা কর।
❏ যত্তদদ্রেশ্যমগ্রাহ্মমগোত্রমবর্ণমচক্ষূঃশ্রোত্রং তদপাণিপাদম্।
নিত্যং বিভূং সর্বগতং সূসুক্ষ্মং তদব্যয়ং যদ্ভুতয়োনিং পরিপশ্যন্তি ধীরাঃ।।
🔥 মূণ্ডকোপনিষৎ ১/১/৬
বঙ্গানুবাদঃ- যিনি অদৃশ্য, অগ্রাহ্য, অগোত্র, অবর্ণ এবং অচক্ষুঃ ও অশ্রোত্র, যিনি হস্তপাদশূন্য, নিত্য, বিভু, সর্বব্যাপী এবং অতিসূক্ষ্ম, সেই অব্যয় এবং সর্বভূতের কারনকে ধীরগণ সর্বতঃ দেখতে পান।
❏ দিব্যো হ্যমুর্তঃ পূরূষঃ স বাহ্যাভ্যন্তরো হ্যজঃ।
অপ্রাণো হ্যমনাঃ শূভো হ্যক্ষরাৎ পরতঃ পরঃ।।
🔥 মূণ্ডকোপনিষৎ ২/১/২
বঙ্গানুবাদঃ- সেই দিব্য মূর্তিশূণ্য পুরুষঃ বাহ্যে এবং অন্তরে অবস্থিতি করেন। তিনি জন্মশূন্য-প্রানশূন্য-মনশূন্য এবং বিশুদ্ধ, তিনি পরম অক্ষর হতেও উর্ধে। (নীলোৎপল সিনহা)
তিনি দিব্য, তিনি অমূর্ত্ত, চিন্ময় পুরুষ, বাহিরে তিনি অন্তরে তিনি, তিনি জন্মহীন, প্রাণের অতীত, মনের অতীত, জ্যোতির্ময়, অক্ষরেরও পারে পরমতম তিনি। (শ্রী অরবিন্দ)
পশু-পাখি, মানুষ প্রভৃতি জীব কর্ণের দ্বারা শব্দ গ্রহণ করে, চক্ষু দ্বারা দৃশ্যমান পদার্থ দেখে থাকে, ইন্দ্রিয় দ্বারা তারা রুপ, রস, শব্দ, গন্ধ ও স্পর্শাদি বিষয় গ্রহণ করে কিন্তু ঈশ্বরের কোন প্রকার ইন্দ্রিয় নাই, তিনি নিত্য-অবিনাশি। শ্রুতি তাকে "সর্বজ্ঞ" ও "সর্ব্বশক্তিমান" বলে নির্দেশ করেছে। যিনি জ্ঞান ও ক্রিয়ার কর্ত্তা- তিনি জীবের ন্যায় কর্ণ, চক্ষুরাদি ইন্দ্রিয় দ্বারাই বিষয় গ্রহণ করে থাকেন এবং তিনি মানুষের অনুরুপ; কোন অজ্ঞানী কোন লোক যাতে এইরুপ মনে না করে, তার জন্য বলা হয়েছে....
যিনি মনদ্বারা চিন্তা করেন না, পন্ডিতগণ বলেন, যাঁর সত্তায় মন চিন্তাক্ষম হয়; যিনি চক্ষুদ্বারা দর্শন করেন না, যাঁর সত্তায় চক্ষুর বিষয়সমূহ লোকে দর্শন করে; যিনি কর্ণ দ্বারা শ্রবণ করেন না, যাঁর সত্তায় এই কর্ণ শ্রবণ করে; যিনি প্রাণবায়ুদ্বারা নিঃশ্বাস প্রশ্বাস করেন না, যাঁর সত্তায় প্রাণ নিঃশ্বাস প্রশ্বাস চালনে সক্ষম হয়, তাঁকেই তুমি ব্রহ্ম বলে জানবে; (আর) অন্য যা কিছু লোকে উপাসনা করে, তা ব্রহ্ম নয়।
🔥 কেনোপনিষৎ ১/৬-৯
সেই নিরাকার, সর্ব্বমূর্তি শূণ্য ব্রহ্ম হতেই বিশ্ব প্রকাশিত হয়েছে আবার, প্রলয়ে বিশ্ব সেই ব্রহ্মে বিলীন হবে।
❏ তদেতৎ সত্যং যথা সূদীপ্তাৎ পাবকাদ্বিস্ফূলিঙ্গাঃ সহস্রশঃ প্রভবন্তে সরুপাঃ।
তথাহ্ক্ষরাদ্বিবিধাঃ সোম্য ভাবাঃ প্রজায়ন্তে তত্র চৈবাপি যন্তি।।
🔥মূণ্ডকোপনিষৎ ২/১/১
বঙ্গানুবাদঃ- এটি সত্য, যেরুপ সুদীপ্ত পাবক হতে সেই পাবকেরই স্বরুপ বিস্ফুলিঙ্গসমূহ সহস্রশ নির্গত হয়, হে সৌম্য, সেইরুপ অক্ষর ব্রহ্ম থেকে বিবিধ জীব উৎপন্ন হয় এবং তাদের পুনরায় বিলীন হয়।
❏ সত্যমেব জয়তে নানৃতং সত্যেন পন্থা বিততো দেবযানঃ
যেনাহ্ক্রমন্ত্যৃষয়ো হ্যাপ্তকামা যত্র তৎ সত্যস্য পরমং নিধানম্।।
🔥মূণ্ডকোপনিষৎ ৩/১/৬
বঙ্গানুবাদঃ- সত্যই জয়লাভ করে, অসত্য জয়লাভ করে না। যে পথদ্বারা আপ্তকাম ঋষিগণ সেই সত্যের পরম ধামে গমন করেন, সেই দেবযান পথও সত্যপ্রভাবেই বিতত রয়েছে।
[তথ্যসূত্রঃ বেদ, উপনিষদ; মূল লেখা সত্যার্থ প্রকাশ]
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ