সনাতন ধর্মের মূল ধর্মগ্রন্থ পবিত্র বেদ। বেদ বুঝানোর জন্য উপনিষদ্। উপনিষদ্ এর সারাংশ হচ্ছে গীতা।
গীতায় (ধৃতরাষ্ট+ সঞ্জয়+শ্রীকৃষ্ণ+অর্জুন) এই চার ব্যক্তির বানীর মোট ১৮ অধ্যায়ে ৭০০ টি শ্লোক রয়েছে। ৭০০ শ্লোক থাকার কারনে গীতাকে সপ্তশতী শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতা বলা হয়।
আমরা সকলেই গীতা পাঠ করি। গীতা পাঠ করতে গিয়ে অনেক সময় অামরা অনেকই দো-টানার মধ্যে পড়ি। যেমনঃ-
★[গীতার কোথাও শ্রীকৃষ্ণ বলেছে- হে মহাবীর অর্জুন! আমার এবং তোমার বহুবার জন্ম হইয়া গিয়েছে। আমি সে সবই জানি কিন্তু তুমি তাহার কিছুই জান না। গীতা ৪/৫
(এই শ্লোক থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে অর্জুন এবং শ্রীকৃষ্ণের বহুবার জন্ম হয়েছে।)
★এবার পরের শ্লোকে দেখি কি বলা হয়েছে-
আমার জন্ম ও মৃত্যু নেই। আমি সকলের ঈশ্বর। আমি নিজ প্রকৃতিতে আশ্রয় করিয়া নিজ মায়াবলে নিজেকে সৃষ্টি করিয়া থাকি। গীতা ৪/৬
(উপরক্ত গীতার ৪/৫ নং শ্লোকের সাথে ৪/৬ নং শ্লোকে সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা বলেছে। পূর্বের শ্লোকে সাথে কোন মিল নেই)]
★[গীতায় আবার দেখুন শ্রীকৃষ্ণ বলেছে-
আমি তোমাকে অত্যান্ত ভালবাসি বা তুমি আমার অতি প্রিয়; সে কারণে তোমার কল্যাণের জন্য সর্বাপেক্ষা গোপনীয় কথা বলিতেছি শোন। গীতা ১৮/৬৪
(এখানে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে তার প্রিয় বলেছে)
★আবার কোথাও বলেছে-
আমি সর্বভূতে সমান; অতএব আমার দ্বেষ্য বা প্রিয় নাই। ভাবার্থ- সকলকে আমি সমান দেখি, বিশেষ কাহারও প্রতি আমার বিদ্বেষ নাই, আমার প্রিয় বা অপ্রিয় কেহ নাই। যাঁহারা ভক্তির সহিত আমার অর্চনা করেন, আমি তাঁহার সহিত থাকি এবং তাঁহারাও আমার সহিত থাকে। গীতা-৯/২৯
(এখানে সবাই তাঁর কাছে সমান, কেহ তাঁর প্রিয় বা অপ্রিয় নেই। সবাইকে তিনি সমান দেখেন।)]
★[এরকম আরো বলেছে-
তুমি সর্বধর্ম পরিত্যাগ করিয়া একমাত্র আমারই আশ্রয় লও; আমি তোমাকে সর্বপাপ হইতে মুক্তি করিবো। গীতাঃ ১৮/৬৬
(এখানে "আমি" শব্দ উচ্চারিত করিয়া তাঁহার শরণ নিতে বলেছেন।)
★আবার কোথাও বলেছেন-
হে অর্জুন! তুমি তাঁহার শরণ লও। তবেই তাঁহার দয়ায় তুমি পরম শান্তি ও শাশ্বত স্থান লাভ করিবে। গীতাঃ ১৮/৬২
(এখানে শ্রীকৃষ্ণ "তাঁহার" শব্দ উচ্চরণ করিয়া- তাঁহার (পরমব্রহ্মের) শরণ নিতে বলেছে, এবং তবেই অর্জুন শান্তি ও শাশ্বত স্থান লাভ করিবে।)]
»»» গীতায় অর্জুনের সাথে শ্রীকৃষ্ণের এরুপ দু'ই-রকম কথোপকথন দেখে অনেকের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ারি কথা যে, শ্রীকৃষ্ণ কে ছিলেন? কেনই বা তিনি দু'ই রকম কথা বলিতেছেন?
»» গীতায় কখনো বলিতেছেন- শ্রীকৃষ্ণের বহুবার জন্মগ্রহন করেছেন! আবার বলিতেছেন তার জন্ম ও মৃত্যু নেই?
»» আবার কখনো বলিতেছেন- হে অর্জুন! তুমি আমার প্রিয়! আবার বলিতেছেন- তাঁহার কেহ প্রিয় নাই আবার অপ্রিয় নাই! সকলকেই তিনি সমান দেখন?
»» আবার কোথাও বলিতেছেন- হে অর্জুন! তুমি আমার শরণ লও! আবার কোথাও বলিতেছেন- তুমি তাঁহার (পরমব্রহ্মের) সরণ নেওয়ার কথা বলিতেছেন?
»»» আসুন, গীতা থেকে এর সমাধান খুঁজি!
»» গীতায় অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে বলিতেছেন-
★ হে প্রভু! যদি তুমি মনে কর যে সেই অদ্ভুত রূপ দেখিতে আমি সমর্থ, তাহা হইলে তুমি আমাকে তোমার নিত্যরূপ দেখাও, কারণ তুমি যোগেশ্বর। গীতাঃ ১১/৪
»» শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলিতেছে-
★হে অর্জুন! তোমার এই সামান্য চক্ষু দ্বারা তুমি আমায় দেখিতে পারিবে না; তাই তোমাকে দিব্য চক্ষু প্রদান করিতেছি, তদদ্বারা তুমি আমার যোগৈশ্বর্য রুপ দেখ। গীতাঃ ১১/৮
»» সঞ্জয় ধৃতরাষ্টকে বলিতেছে-
★ ব্যাসদেবের প্রসাদে যোগরূপ পরম গুহ্য জ্ঞান সাক্ষাৎ যোগেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত বাক্য আমি নিজ কর্ণে শ্রবন করিয়াছি। গীতাঃ ১৮/৭৫
★ যেখানে শ্রেষ্ঠ যোগী শ্রীকৃষ্ণের ন্যায় উপদেষ্টা আছেন, আর মহাবীর অর্জুন আছেন, সেখানে শ্রী,বিজয়, ঐশ্বর্য, নীকি বিরাজ করিতেছে। ইহাই আমার মত। গীতাঃ ১৮/৭৮
(এখান থেকে বুঝা যায় যে- অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে যোগেশ্বর বললো আর শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং যোগেশ্বর বলে স্বীকার করলো এবং সঞ্জয় শ্রীকৃষ্ণকে যোগেশ্বর বলে সম্মধন করলেন।
এখান থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় শ্রীকৃষ্ণ একজন যোগেশ্বর বা যোগী পুরুষ ছিলেন)
»»» এখন তাহলে এবার দেখি গীতায় "আমি" কে ছিলেন!
»»আমরা মহাভারতের অশ্বমেধিক পর্বের ১৬ অধ্যায় ১৩ নং শ্লোক পড়ে জানতে পারি যে-
"পরম হি ব্রহ্ম কথিতং যোগ যুক্তেন তন্ময়,
ইতিহাসং তু বক্ষামি তস্নবন্নথৈ পুরাতনম"।।
(মহাঃ অশ্বঃ পর্ব- ১৬/১৩)
বঙ্গানুবাদঃ- সে সময় আমি যোগযুক্ত হয়ে পরমাত্মাতত্ত্বের বর্ননা বিবর্তন করেছিলাম। এখন সেই বিষয় এর জ্ঞান করানোর জন্য আমি এক প্রাচিন ইতিহাস বর্ণনা করছি।
(এখান থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত হয়ে অর্জুনকে গীতা দান করেছেন। কারন, শ্রীকৃষ্ণ একজন যোগেশ্বর ছিলেন।)
»»» কিন্তু গীতা পাঠ কালে আমারা দেখতে পারি যে, শ্রীকৃষ্ণ সর্বদা যোগযুক্ত অবস্থায় গীতা দান করে নাই। শ্রীকৃষ্ণ কখনো যোগযুক্ত অবস্থায় গীতা দান করেছেন আবার যোগ মুক্ত অবস্থায় গীতা দান করেন। যখন শ্রীকৃষ্ণ যোগমুক্ত ছিলেন তখন সেটা শ্রীকৃষ্ণের বানী ছিল। আর যখন শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত ছিল, তখন সেটা শ্রীকৃষ্ণের মাধ্যমে পরমব্রহ্মের বানী ছিল। (মনে রাখতে হবে শ্রীকৃষ্ণ যোগেশ্বর ছিলেন)।
»»» দেখুন, এ বিষয়ে শ্রীকৃষ্ণ গীতায় কি বলেছে-
★ তিনি সর্ব জীবের অন্তরে আছেন এবং বাহিরে আছেন। তিনি স্থাবর ও জঙ্গম রুপে আছেন। তিনি সূক্ষ হইতেও সূক্ষতর, তিনি কাছে থাকিয়াও দূরে বলে মনে হয়। গীতাঃ ১৩/১৬
★ হে অর্জুন! ঈশ্বর সকলের দেহে অবস্থান করিয়া যন্ত্রের ন্যায় তাঁহার কার্য চালাইতেছেন।
গীতাঃ ১৮/৬১
»»» এই যোগযুক্ত অবস্থা বলতে শ্রীকৃষ্ণ গীতায় কি বলেছে দেখুন-
★ হে ধনঞ্জয়, ইন্দ্রিয়-সঙ্গ ত্যাগ করিয়া সিদ্ধি ও অসিদ্ধিতে সমভাপন্ন হইয়া, যোগে ("আমি" "আমার" ইত্যাদি বোধ রহিত অবস্থায়) অবস্থিত হইয়া কর্ম কর; সমত্বই যোগ বলিয়া উক্ত হয়।
গীতাঃ ২/৪৮
[ব্যখাঃ তুমি যোগস্থ হইয়া কর্ম কর,
যোগস্থ— যোগে অবস্থিত; যোগ অর্থাৎ মিলন!
“যোগশ্চিত্তবৃত্তি-নিরোধঃ” চিৎ- আত্মা, তদবৃত্তি অর্থাৎ প্রাণের গতি; এই গতির নিরোধাবস্থাই স্থিরাবস্থারূপ যোগ; অথাৎ প্রাণপানের গতিরূপ চিত্তের বৃত্তি স্বতঃ নিবৃত্ত হইয়া আত্মা (শ্রীকৃষ্ণ) পরমাত্মার (পরমব্রহ্ম) মিলনরূপ স্থিতির অবস্থাই যোগ। এ অবস্থায় "আমি" "আমার" বোধ থাকে না; এই অহংজ্ঞানরহিত স্থির সাম্যাবস্থারূপ সমত্বই যোগ বলিয়া উক্ত হয়।]
(যোগ অবস্থায় "আমি" "আমার" ইত্যাদি বোধ রহিত অবস্থা সম্পর্কে জানতে নিচের ৩ ও ৪ নং ছবিতে ব্যখা দেখুন )
»»এই সম্পর্কে পবিত্র বেদ মন্ত্রে কি বলা হয়েছে দেখুন-
★ "যদগ্নে স্যামহং ত্বং বা ঘাস্যা অহমৃ। স্যুষ্টে সত্যা ইহাশিষঃ"।।
(ঋগ্বেদঃ- ৮।৪৪।২৩।)
বঙ্গানুবাদঃ- হে প্রকাশ স্বরুপ পরমাত্মা্। যখন আমি তুমি হইয়া যাই বা তুমি আমি হইয়া যাও, তখনই এ সংসারে তোমার সব করুণা সার্থক হয়।
এখান থেকে বুঝতে পারি যে, যোগযুক্ত অবস্থায় "আমি" "আমার" অহম্ বোধ রহিত অবস্থা তা পরমাত্মার বানী! (গীতায় ৮/৩ বলা আছে, পরমাত্মাকেই ব্রহ্ম বলে ) । মোটেও প্রকাশকারীর বানী নয়।
(প্রমান স্বরুপ গীতার ১৮ অধ্যায় ৬১ নং শ্লোক দৃষ্টান্ত)
এরুপ অহং ভাবে গীতায় শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত অবস্থায় "আমি" "আমার" "আমাকে" শব্দের উচ্চারণ করেছে। কারন শ্রীকৃষ্ণ একজন যোগেশ্বর ছিলেন।
অনুরুপ ভাবে "অহম্' বোধে" যোগযুক্ত অবস্থায় আরো অনেকেই "আমি" "আমাকে" শব্দ উচ্চারণ করেছে।
উদাহরন স্বরুপ বলা যায় যে-
(১) লোকনাথ ব্রহ্মচারীও "আমি" "আমাকে" শব্দের উচ্চারণ করেছেন।
রণে বনে জলে জঙ্গলে, যেখানেই বিপদে পরিবে, "আমাকে" স্বরণ করিবে, "আমিই" রক্ষা করিবো।
(২) ছান্দোগ্য উপনিষদে আমরা তেখতে পাই যে, গুরু শিষ্যকে অহংভাবে "আমি" "আমার" বোধে উপদেশ দেয়ার প্রমাণ পেয়ে থাকি।
'অহম্' দৃষ্টিতে উপদেশ- আমিই অর্ধভাগে, আমিই ঊর্ধ্বে, আমি পশ্চাতে, আমি সম্মুখে, আমি দক্ষণে, আমিই বামে- আমিই এই সমস্ত।
(ছান্দোগ্য উপঃ ৭।২৫।১)
(৩) শ্রীরামকৃষ্ণ পরমাহংসদেব "আমি" শব্দের উচ্চারন করেছেন-
"সত্যে নারায়ন, ত্রেতাতে রাম, দ্বাপরে কৃষ্ণ, কলিতে আমিই রামকৃষ্ণ"
(৪) অনুরুপ ভাবে আর্চার্য শংকরও নাকি (অহম্ বোধে) "আমি" শব্দের উচ্চারণ করেছেন।
তাহলে কি - শ্রীকৃষ্ণ, লোকনাথ ব্রহ্মচারী, শ্রীরামকৃষ্ণ, শংকরাচার্য এরা সকলেই পরমেশ্বর???
দেখি বহু ঈশ্বর সম্পর্কে পবিত্র বেদে কি বলেছে-
"ন দ্বিতীয় ন তৃতীয় শ্চতুর্থো নাপ্যুচ্যতে।
ন পঞ্চমো ন ষষ্ঠ সপ্তমো নাপ্যুচ্যতে।
নাষ্টমো ন নবমো দশমো নাপ্যুচ্যতে।
য এতং দেবমেক বৃতং বেদ"।।
(অথর্ব্ববেদঃ ১৩।৪।২।) ও (১৬।১৭।১৮।)
বঙ্গানুবাদঃ পরমাত্মা এক, তিনি ছাড়া কেহই দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম্, নবম বা দশম ঈশ্বর বলিয়া অভিহিত হয় না। যিনি তাঁহাকে শুধু এক বলিয়া জানেন তিনিই তাঁহাকে প্রাপ্ত হন।
»»শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন-
★"অক্ষরং ব্রহ্ম পরমং"
অর্থাৎ পরমাত্মাকেই ব্রহ্ম বলে। (গীতা ৮/৩)
»« তাহলে এখান থেকে এটা স্পষ্ট যে, যোগযুক্ত অবস্থায় যোগীপুরুষগণ (অহম্ বোধে) "আমি" "আমাকে" ইত্যাদি শব্দের উচ্চরণ করে। প্রকৃত পক্ষে এটা ("আমি" "আমার") শব্দ ঈশ্বরের বাণী!!! যোগীদের বানী নয়।
গীতায় (ধৃতরাষ্ট+ সঞ্জয়+শ্রীকৃষ্ণ+অর্জুন) এই চার ব্যক্তির বানীর মোট ১৮ অধ্যায়ে ৭০০ টি শ্লোক রয়েছে। ৭০০ শ্লোক থাকার কারনে গীতাকে সপ্তশতী শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতা বলা হয়।
আমরা সকলেই গীতা পাঠ করি। গীতা পাঠ করতে গিয়ে অনেক সময় অামরা অনেকই দো-টানার মধ্যে পড়ি। যেমনঃ-
★[গীতার কোথাও শ্রীকৃষ্ণ বলেছে- হে মহাবীর অর্জুন! আমার এবং তোমার বহুবার জন্ম হইয়া গিয়েছে। আমি সে সবই জানি কিন্তু তুমি তাহার কিছুই জান না। গীতা ৪/৫
(এই শ্লোক থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে অর্জুন এবং শ্রীকৃষ্ণের বহুবার জন্ম হয়েছে।)
★এবার পরের শ্লোকে দেখি কি বলা হয়েছে-
আমার জন্ম ও মৃত্যু নেই। আমি সকলের ঈশ্বর। আমি নিজ প্রকৃতিতে আশ্রয় করিয়া নিজ মায়াবলে নিজেকে সৃষ্টি করিয়া থাকি। গীতা ৪/৬
(উপরক্ত গীতার ৪/৫ নং শ্লোকের সাথে ৪/৬ নং শ্লোকে সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা বলেছে। পূর্বের শ্লোকে সাথে কোন মিল নেই)]
★[গীতায় আবার দেখুন শ্রীকৃষ্ণ বলেছে-
আমি তোমাকে অত্যান্ত ভালবাসি বা তুমি আমার অতি প্রিয়; সে কারণে তোমার কল্যাণের জন্য সর্বাপেক্ষা গোপনীয় কথা বলিতেছি শোন। গীতা ১৮/৬৪
(এখানে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে তার প্রিয় বলেছে)
★আবার কোথাও বলেছে-
আমি সর্বভূতে সমান; অতএব আমার দ্বেষ্য বা প্রিয় নাই। ভাবার্থ- সকলকে আমি সমান দেখি, বিশেষ কাহারও প্রতি আমার বিদ্বেষ নাই, আমার প্রিয় বা অপ্রিয় কেহ নাই। যাঁহারা ভক্তির সহিত আমার অর্চনা করেন, আমি তাঁহার সহিত থাকি এবং তাঁহারাও আমার সহিত থাকে। গীতা-৯/২৯
(এখানে সবাই তাঁর কাছে সমান, কেহ তাঁর প্রিয় বা অপ্রিয় নেই। সবাইকে তিনি সমান দেখেন।)]
★[এরকম আরো বলেছে-
তুমি সর্বধর্ম পরিত্যাগ করিয়া একমাত্র আমারই আশ্রয় লও; আমি তোমাকে সর্বপাপ হইতে মুক্তি করিবো। গীতাঃ ১৮/৬৬
(এখানে "আমি" শব্দ উচ্চারিত করিয়া তাঁহার শরণ নিতে বলেছেন।)
★আবার কোথাও বলেছেন-
হে অর্জুন! তুমি তাঁহার শরণ লও। তবেই তাঁহার দয়ায় তুমি পরম শান্তি ও শাশ্বত স্থান লাভ করিবে। গীতাঃ ১৮/৬২
(এখানে শ্রীকৃষ্ণ "তাঁহার" শব্দ উচ্চরণ করিয়া- তাঁহার (পরমব্রহ্মের) শরণ নিতে বলেছে, এবং তবেই অর্জুন শান্তি ও শাশ্বত স্থান লাভ করিবে।)]
»»» গীতায় অর্জুনের সাথে শ্রীকৃষ্ণের এরুপ দু'ই-রকম কথোপকথন দেখে অনেকের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ারি কথা যে, শ্রীকৃষ্ণ কে ছিলেন? কেনই বা তিনি দু'ই রকম কথা বলিতেছেন?
»» গীতায় কখনো বলিতেছেন- শ্রীকৃষ্ণের বহুবার জন্মগ্রহন করেছেন! আবার বলিতেছেন তার জন্ম ও মৃত্যু নেই?
»» আবার কখনো বলিতেছেন- হে অর্জুন! তুমি আমার প্রিয়! আবার বলিতেছেন- তাঁহার কেহ প্রিয় নাই আবার অপ্রিয় নাই! সকলকেই তিনি সমান দেখন?
»» আবার কোথাও বলিতেছেন- হে অর্জুন! তুমি আমার শরণ লও! আবার কোথাও বলিতেছেন- তুমি তাঁহার (পরমব্রহ্মের) সরণ নেওয়ার কথা বলিতেছেন?
»»» আসুন, গীতা থেকে এর সমাধান খুঁজি!
»» গীতায় অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে বলিতেছেন-
★ হে প্রভু! যদি তুমি মনে কর যে সেই অদ্ভুত রূপ দেখিতে আমি সমর্থ, তাহা হইলে তুমি আমাকে তোমার নিত্যরূপ দেখাও, কারণ তুমি যোগেশ্বর। গীতাঃ ১১/৪
»» শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলিতেছে-
★হে অর্জুন! তোমার এই সামান্য চক্ষু দ্বারা তুমি আমায় দেখিতে পারিবে না; তাই তোমাকে দিব্য চক্ষু প্রদান করিতেছি, তদদ্বারা তুমি আমার যোগৈশ্বর্য রুপ দেখ। গীতাঃ ১১/৮
»» সঞ্জয় ধৃতরাষ্টকে বলিতেছে-
★ ব্যাসদেবের প্রসাদে যোগরূপ পরম গুহ্য জ্ঞান সাক্ষাৎ যোগেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত বাক্য আমি নিজ কর্ণে শ্রবন করিয়াছি। গীতাঃ ১৮/৭৫
★ যেখানে শ্রেষ্ঠ যোগী শ্রীকৃষ্ণের ন্যায় উপদেষ্টা আছেন, আর মহাবীর অর্জুন আছেন, সেখানে শ্রী,বিজয়, ঐশ্বর্য, নীকি বিরাজ করিতেছে। ইহাই আমার মত। গীতাঃ ১৮/৭৮
(এখান থেকে বুঝা যায় যে- অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে যোগেশ্বর বললো আর শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং যোগেশ্বর বলে স্বীকার করলো এবং সঞ্জয় শ্রীকৃষ্ণকে যোগেশ্বর বলে সম্মধন করলেন।
এখান থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় শ্রীকৃষ্ণ একজন যোগেশ্বর বা যোগী পুরুষ ছিলেন)
»»» এখন তাহলে এবার দেখি গীতায় "আমি" কে ছিলেন!
»»আমরা মহাভারতের অশ্বমেধিক পর্বের ১৬ অধ্যায় ১৩ নং শ্লোক পড়ে জানতে পারি যে-
"পরম হি ব্রহ্ম কথিতং যোগ যুক্তেন তন্ময়,
ইতিহাসং তু বক্ষামি তস্নবন্নথৈ পুরাতনম"।।
(মহাঃ অশ্বঃ পর্ব- ১৬/১৩)
বঙ্গানুবাদঃ- সে সময় আমি যোগযুক্ত হয়ে পরমাত্মাতত্ত্বের বর্ননা বিবর্তন করেছিলাম। এখন সেই বিষয় এর জ্ঞান করানোর জন্য আমি এক প্রাচিন ইতিহাস বর্ণনা করছি।
(এখান থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত হয়ে অর্জুনকে গীতা দান করেছেন। কারন, শ্রীকৃষ্ণ একজন যোগেশ্বর ছিলেন।)
»»» কিন্তু গীতা পাঠ কালে আমারা দেখতে পারি যে, শ্রীকৃষ্ণ সর্বদা যোগযুক্ত অবস্থায় গীতা দান করে নাই। শ্রীকৃষ্ণ কখনো যোগযুক্ত অবস্থায় গীতা দান করেছেন আবার যোগ মুক্ত অবস্থায় গীতা দান করেন। যখন শ্রীকৃষ্ণ যোগমুক্ত ছিলেন তখন সেটা শ্রীকৃষ্ণের বানী ছিল। আর যখন শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত ছিল, তখন সেটা শ্রীকৃষ্ণের মাধ্যমে পরমব্রহ্মের বানী ছিল। (মনে রাখতে হবে শ্রীকৃষ্ণ যোগেশ্বর ছিলেন)।
»»» দেখুন, এ বিষয়ে শ্রীকৃষ্ণ গীতায় কি বলেছে-
★ তিনি সর্ব জীবের অন্তরে আছেন এবং বাহিরে আছেন। তিনি স্থাবর ও জঙ্গম রুপে আছেন। তিনি সূক্ষ হইতেও সূক্ষতর, তিনি কাছে থাকিয়াও দূরে বলে মনে হয়। গীতাঃ ১৩/১৬
★ হে অর্জুন! ঈশ্বর সকলের দেহে অবস্থান করিয়া যন্ত্রের ন্যায় তাঁহার কার্য চালাইতেছেন।
গীতাঃ ১৮/৬১
»»» এই যোগযুক্ত অবস্থা বলতে শ্রীকৃষ্ণ গীতায় কি বলেছে দেখুন-
★ হে ধনঞ্জয়, ইন্দ্রিয়-সঙ্গ ত্যাগ করিয়া সিদ্ধি ও অসিদ্ধিতে সমভাপন্ন হইয়া, যোগে ("আমি" "আমার" ইত্যাদি বোধ রহিত অবস্থায়) অবস্থিত হইয়া কর্ম কর; সমত্বই যোগ বলিয়া উক্ত হয়।
গীতাঃ ২/৪৮
[ব্যখাঃ তুমি যোগস্থ হইয়া কর্ম কর,
যোগস্থ— যোগে অবস্থিত; যোগ অর্থাৎ মিলন!
“যোগশ্চিত্তবৃত্তি-নিরোধঃ” চিৎ- আত্মা, তদবৃত্তি অর্থাৎ প্রাণের গতি; এই গতির নিরোধাবস্থাই স্থিরাবস্থারূপ যোগ; অথাৎ প্রাণপানের গতিরূপ চিত্তের বৃত্তি স্বতঃ নিবৃত্ত হইয়া আত্মা (শ্রীকৃষ্ণ) পরমাত্মার (পরমব্রহ্ম) মিলনরূপ স্থিতির অবস্থাই যোগ। এ অবস্থায় "আমি" "আমার" বোধ থাকে না; এই অহংজ্ঞানরহিত স্থির সাম্যাবস্থারূপ সমত্বই যোগ বলিয়া উক্ত হয়।]
(যোগ অবস্থায় "আমি" "আমার" ইত্যাদি বোধ রহিত অবস্থা সম্পর্কে জানতে নিচের ৩ ও ৪ নং ছবিতে ব্যখা দেখুন )
»»এই সম্পর্কে পবিত্র বেদ মন্ত্রে কি বলা হয়েছে দেখুন-
★ "যদগ্নে স্যামহং ত্বং বা ঘাস্যা অহমৃ। স্যুষ্টে সত্যা ইহাশিষঃ"।।
(ঋগ্বেদঃ- ৮।৪৪।২৩।)
বঙ্গানুবাদঃ- হে প্রকাশ স্বরুপ পরমাত্মা্। যখন আমি তুমি হইয়া যাই বা তুমি আমি হইয়া যাও, তখনই এ সংসারে তোমার সব করুণা সার্থক হয়।
এখান থেকে বুঝতে পারি যে, যোগযুক্ত অবস্থায় "আমি" "আমার" অহম্ বোধ রহিত অবস্থা তা পরমাত্মার বানী! (গীতায় ৮/৩ বলা আছে, পরমাত্মাকেই ব্রহ্ম বলে ) । মোটেও প্রকাশকারীর বানী নয়।
(প্রমান স্বরুপ গীতার ১৮ অধ্যায় ৬১ নং শ্লোক দৃষ্টান্ত)
এরুপ অহং ভাবে গীতায় শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত অবস্থায় "আমি" "আমার" "আমাকে" শব্দের উচ্চারণ করেছে। কারন শ্রীকৃষ্ণ একজন যোগেশ্বর ছিলেন।
অনুরুপ ভাবে "অহম্' বোধে" যোগযুক্ত অবস্থায় আরো অনেকেই "আমি" "আমাকে" শব্দ উচ্চারণ করেছে।
উদাহরন স্বরুপ বলা যায় যে-
(১) লোকনাথ ব্রহ্মচারীও "আমি" "আমাকে" শব্দের উচ্চারণ করেছেন।
রণে বনে জলে জঙ্গলে, যেখানেই বিপদে পরিবে, "আমাকে" স্বরণ করিবে, "আমিই" রক্ষা করিবো।
(২) ছান্দোগ্য উপনিষদে আমরা তেখতে পাই যে, গুরু শিষ্যকে অহংভাবে "আমি" "আমার" বোধে উপদেশ দেয়ার প্রমাণ পেয়ে থাকি।
'অহম্' দৃষ্টিতে উপদেশ- আমিই অর্ধভাগে, আমিই ঊর্ধ্বে, আমি পশ্চাতে, আমি সম্মুখে, আমি দক্ষণে, আমিই বামে- আমিই এই সমস্ত।
(ছান্দোগ্য উপঃ ৭।২৫।১)
(৩) শ্রীরামকৃষ্ণ পরমাহংসদেব "আমি" শব্দের উচ্চারন করেছেন-
"সত্যে নারায়ন, ত্রেতাতে রাম, দ্বাপরে কৃষ্ণ, কলিতে আমিই রামকৃষ্ণ"
(৪) অনুরুপ ভাবে আর্চার্য শংকরও নাকি (অহম্ বোধে) "আমি" শব্দের উচ্চারণ করেছেন।
তাহলে কি - শ্রীকৃষ্ণ, লোকনাথ ব্রহ্মচারী, শ্রীরামকৃষ্ণ, শংকরাচার্য এরা সকলেই পরমেশ্বর???
দেখি বহু ঈশ্বর সম্পর্কে পবিত্র বেদে কি বলেছে-
"ন দ্বিতীয় ন তৃতীয় শ্চতুর্থো নাপ্যুচ্যতে।
ন পঞ্চমো ন ষষ্ঠ সপ্তমো নাপ্যুচ্যতে।
নাষ্টমো ন নবমো দশমো নাপ্যুচ্যতে।
য এতং দেবমেক বৃতং বেদ"।।
(অথর্ব্ববেদঃ ১৩।৪।২।) ও (১৬।১৭।১৮।)
বঙ্গানুবাদঃ পরমাত্মা এক, তিনি ছাড়া কেহই দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম্, নবম বা দশম ঈশ্বর বলিয়া অভিহিত হয় না। যিনি তাঁহাকে শুধু এক বলিয়া জানেন তিনিই তাঁহাকে প্রাপ্ত হন।
»»শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন-
★"অক্ষরং ব্রহ্ম পরমং"
অর্থাৎ পরমাত্মাকেই ব্রহ্ম বলে। (গীতা ৮/৩)
»« তাহলে এখান থেকে এটা স্পষ্ট যে, যোগযুক্ত অবস্থায় যোগীপুরুষগণ (অহম্ বোধে) "আমি" "আমাকে" ইত্যাদি শব্দের উচ্চরণ করে। প্রকৃত পক্ষে এটা ("আমি" "আমার") শব্দ ঈশ্বরের বাণী!!! যোগীদের বানী নয়।
আত্মার সাথে পরমাত্মার মিলন ঘটিয়েছেন যাঁরা, তাঁরা সবাই নিজেকে আমিই বলেছেন।
তাহলে ঐ আমি কে? যিনি আমি বলেছেন আসলেই তিনি নিজেই কি ঈশ্বর?
তদেজতি তন্নৈজতি তদ্ তদ্বন্তিকে। তদন্তরস্য সর্বদ্য তদু সর্বস্যাস্য বাহ্যতঃ।। ঈশাবাস্যোপনিষদ্-৫
অর্থঃ- তিনি চলেন এবং চলেনও না। তিনি বহুদুরে আবার অতি নিকটেও, তিনি সমস্ত জগতের অন্তরে পরিপূর্ণ আবার বাহিরেও পরিপূর্ণ।
জ্ঞানীদের জন্য তিনি পরমাত্মা অন্তরে বাস আর অজ্ঞানীদের জন্য দূরে থেকেও বহু দূরে।
অজ্ঞানীরা ঈশ্বরের স্বক্ষমতার বিষয়ে অজ্ঞতার কারণে আকারেই খুঁজে, ফলশ্রুতিতে তারা জন্ম মৃত্যুর আবর্তে ঘুরতে থাকে আর জ্ঞানীরা ঈশ্বের শব্দ ব্রহ্ম ও৩ম্ এর সাধনা করে আত্মার সাথে পরমাত্মার মিলন ঘঠিয়ে পরম সুখ লাভ করে।
স বেদৈতৎ পরমং ব্রহ্ম ধাম যত্র বিশ্বং নিহিতং ভাতি শুভ্রম্।
উপাসতে পুরুষং যে হ্যকামাস্তে শুক্রমেতদতিবর্তন্তি ধীরাঃ।।
মুন্ডকোপনিষদ
-৩য় মুণ্ডক/২য়/১
অর্থঃ- পরমাত্মার ধ্যানে রত নিষ্কামভাব যুক্ত সাধক প্রকাশময় পরব্রহ্ম পরমাত্মাকে উপলব্দি করেন, যার মধ্যে সম্পূর্নজগত প্রতীত হয়। সেই নিষ্কামভাবযুক্ত সাধকই বুদ্ধিমান, যাদের রজোবীর্যময় শরীর অতিক্রম করে আর পুনঃজন্ম হয়না।
অর্থাৎ তাঁহারা মোক্ষ লাভ করেন, বা ব্রহ্ম লাভ করেন।।
এখন দেখি ত্রিশঙ্ক মুনি ব্রহ্ম লাভের পর কি বলেছিলেনঃ-
অহং বৃক্ষস্য রেরিবা। কীর্তিঃ পৃষ্ঠং গিরেরিব। ঊর্ধ্বপবিত্রো বাজিনীব স্বমৃতমস্মি। দ্রবিণঁ সবর্চসম্। সুমেধা অমৃতোক্ষিতঃ। ইতি
ত্রিশঙ্কোর্বেদানুবচনম্।
তৈত্তিরীয়োপনিষদ- শিক্ষা বল্লী-দশম অনুবাক-১।।
অনুবাদঃ-
ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করার পর ত্রিশঙ্ক মুনি বলেছিলেন, আমি সংসাররূপী বৃক্ষের প্রেরয়িতা। ব্রহ্মে পরিনত হয়ে আমি সমস্ত বিশ্বের সাথে একাত্ম হতে পেরেছি।
গিরিপৃষ্ঠের, মতো আমার কীর্তি উচুঁ। ব্রহ্মভাব প্রাপ্ত হবার দরুন আমার কীর্তি ব্রহ্মের মতো মহান ও অনন্ত। আমি ব্রহ্মের সাথে একাত্ম হতে পেরেছি কাজেই আমি পবিত্র। সূর্যে যেমন উত্তম অমৃত আছে আমিও সেরূপ উত্তম অমৃত। আমিই সেই ধনরূপ আত্মতত্ব শ্রেষ্ট মেধাযুক্ত। আমি অমৃত ও অক্ষয়।
ছান্দোগ্য উপনিষদে সনৎকুমার
তাঁর শিষ্য নারদকে বলেছেন-
স এবাধস্তাৎ স উপরিষ্টাৎ স পশ্চাৎ স পুরস্তাৎ স দক্ষিনতঃ স উত্তরতঃ স এবেদং সর্বমিতি। অথাতোহহঙ্কারাদেশ
এবাহমেবাধস্তাদহমুপরিষ্টাদহং
পশ্চাদহং পুরস্তাদহং
দক্ষিণতোহহমুত্তরতোহহমেবেদং
সর্বমিতি। (ছান্দোগ্যোপনিষদ ৭/২৫/১)
অর্থ: সেই ভুমাই নিম্নে, তিনি উর্ধ্বে, তিনিই পশ্চাতে, তিনিই সম্মূখে, তিনিই দক্ষিনে, তিনিই বামে- তিনিই এই সমস্ত কিছু। এখন "অহম" দৃষ্টিতে উপদেশ- আমিই অধোভাগে, আমি উর্ধ্বে, আমি পশ্চাতে, আমি সম্মূখে, আমি দক্ষিণে, আমি উত্তরে-আমিই এই সমস্ত।
পরিশেষে সকলের কাছে অনুরোধ করিতেছি, আপনারা যারা অামার এই পোষ্টি পড়ে বিন্দুমাত্র যদি উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে SHARE করে অন্যকে জানার সুযোগ করে দিবেন।
অনুরোধে- বেদপ্রিয় আর্য পরিতোষ ।।
অনুরোধে- বেদপ্রিয় আর্য পরিতোষ ।।
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ