পুরাণের কৃষ্ণ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

21 June, 2020

পুরাণের কৃষ্ণ

পুরাণের কৃষ্ণ
মহান তপস্বী যোগীরাজ শ্রীকৃষ্ণ একজন বরেন্য ব্যক্তি,তিনি ছিলেন ন্যায়ের প্রতিমূর্তি,ধর্মের সংস্থাপক,মহাভারতের যুদ্ধের নায়ক, সুদর্শন চক্রধারী কিন্তু ভাগবতে সেই কৃষ্ণই হয়ে গেলেন চরিত্রহীন লম্পট নারীর সন্মান হননকারী রাসলীলার নায়ক বংশীধারী। গোপিনীদের সাথে রাসলীলায় কুরুচিপূর্ণ বস্ত্রহরণ,কুব্জা বেশ্যা সমাগম ইত্যাদি।
(ভাগবত পুরাণ ৩স্কন্ধ ২০অধ্যায়/২৩নং শ্লোক,২৪নং শ্লোক),(ভাগবত পুরাণ ১০স্কন্ধ, ২৯ অধ্যায়, ৪৩-৪৮ শ্লোক),(ভাগবত পুরাণ ১০ স্কন্ধ, ৩৩ অধ্যায়,১৭-১৯ শ্লোক), (ভাগবত পুরাণ ১০ স্কন্ধ, ৩৩ অধ্যায়,১৭-১৯ শ্লোক),(ভাগবত পুরাণ ১০স্কন্ধ, ২৯ অধ্যায়, ৪৩-৪৮ শ্লোক),(ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ , কৃষ্ণজন্মখণ্ড, অধ্যায় ২৮ )
ভাগবত পুরাণ ১০স্কন্ধ, ২৯ অধ্যায়, ৪৩-৪৮ শ্লোক
এখানে বলা হয়েছে যে- কৃষ্ণজী বৃন্দাবনে বিচরণ করতে লাগলেন, গোপীরা কখনো প্রিয়তম কৃষ্ণের গুণের এবং লীলার গান করছেন আর কখনো কৃষ্ণ গোপীদের প্রেম এবং সৌন্দর্যের গান করছেন, ইহার পর কৃষ্ণজী যমুনা নদীর চড়ায় গোপীদের সাথে ক্রীড়া শুরু করতে করলেন, কখনো গোপীদের গায়ের ওপর হাত ছড়িয়ে দিচ্ছেন, আলিঙ্গন করছেন, কখনো গোপীদের হাত টিপে দিচ্ছেন, কখনো গোপীদের স্তন কে স্পর্শ করছেন। এই রূপে বিনোদ করেই চলছেন কৃষ্ণজী এই সমস্ত ক্রিয়ার দ্বারা গোপীদের কামরস, পরম উজ্জ্বল প্রেম ভাব কে উত্তজিত করে ভগবান কৃষ্ণ গোপীদের ক্রীড়ার দ্বারা আনন্দ দিতে থাকেন।

বিষ্ণু পুরাণে গোপীদের সঙ্গে কৃষ্ণের রমন
তা বীর্য মানাঃ পতিভিঃ পিতৃভিভ্রার্তৃমিস্তয়া।
কৃষ্ণ গোপাঙ্গনা রাত্রো রময়ন্তি রতিপ্রিয়াঃ।। ৫/১৩/৫৯শ্লোক
সৌ অপিকৈশোর কবয়ো মানয়ন্মধুসূদন।
রেমেতাভি য়মেয়াত্মা ক্ষপাসু ক্ষাপিতা হিতঃ।। ৫/১৩/৬০শ্লোক
অর্থ : সেইসব গোপীরা নিজ পতি পিতা ও ভাইদের নিষেধ সত্ত্বেও রোজ রাত্রে "বিষয় ভোগ" কামনা যুক্ত কৃষ্ণের সঙ্গে রমন "ভোগ" করতো । (শ্লোক - ৫৯ )
কৃষ্ণও তার কিশোরাবস্থার মর্যাদা রক্ষা করে রাত্রি বেলা তাদের সঙ্গে রমন করতেন । (শ্লোক -৬০)
এখানেই শেষ নয় দেখুন আর এর এক লীলা..
ভাগবত পুরাণ ১০ স্কন্ধ, ৩৩ অধ্যায়,১৭-১৯ শ্লোক
কৃষ্ণ গোপীদের সঙ্গে কিভাবে রমন করতেন ?
এর স্পষ্ট প্রমাণ দেখুন - পুরাণ রচয়িতা ধূর্তরা কৃষ্ণকে কলঙ্কিত করার জন্য লিখেছেন -
এবং পরিষ্বঙ্গ করামিমর্শ স্নিগ্ধে ক্ষণদ্দাম বিলাস হাসৈঃ।
রেসে রেমশোব্রজ সুন্দরীভি য়থার্ভকঃ প্রতিবিম্ব বিভ্রমঃ।। ১৭
অর্থাৎ , কৃষ্ণ কখনও তাদের তাদের শরীর নিজ হস্ত দিয়ে স্পর্শ করতেন , কখনও প্রেমপূর্ণ তির্যক দৃষ্টি দিয়ে তাদের দিকে তাকাতেন , কখনও আনন্দবিহ্বল হয়ে তাদের সঙ্গে উন্মুক্ত হাস্য-পরিহাস করতেন । যেমন - বালক তন্ময় হয়ে নিজের ছায়ার সঙ্গে খেলা করে সেই রূপ আনন্দবিহ্বল হয়ে কৃষ্ণ সেই সব ব্রজ সুন্দরীদের সঙ্গে রমন , কামক্রীড়া "বিষয় ভোগ" করেছেন ।
এখানে বলা হয়েছে যে যেমন ছোটো শিশু তার নিজের ছায়ার সাথে খেলা করে ঠিক এই রূপে রমণকারী ভগবান কৃষ্ণজী কখনো গোপীদের কে জড়িয়ে ধরলেন, কখনো হাত দিয়ে গোপীদের অঙ্গ স্পর্শ করছেন। এইভাবে ব্রজসুন্দরীদের সাথে ক্রীড়া, বিহার করছেন কৃষ্ণজী। কৃষ্ণের এই রাসক্রীড়া দেখে স্বর্গের দেবতারাও মিলনের কামনা হতে মোহিত হয়ে জান।
এবং..
" গোপীগণ এসে কৃষ্ণ কে স্তন এবং শ্রোণী দেখাচ্ছেন ! (শ্রোণী কাকে বলে তা অনেকেই জানেনা, পাছার আসে পাশে যে অঙ্গ গুলো থাকে যেমন যোনি, মলদ্বার এর পুরো সমষ্টি কে শ্রোণী বলা হয় ) , কোনো গোপিনী কৃষ্ণ কে সেই শ্রোণীতে স্থাপন করেছে , সেই লীলায় এক গোপিনী আর এক গোপিনী কে উলঙ্গ করছে ,কৃষ্ণ কে নিয়ে তারা কাম কর্মে লিপ্ত হইলেন গোপীগণ , কৃষ্ণও লিপ্ত হলেন । মনের আনন্দে কোনো গোপীগণ নিত্য করছে , ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কৌতূহল ভাবে গোপিনীদের উলঙ্গ করতে শুরু করলেন , গোপীগণ তাদের কাপড় নিয়ে খেলা করছে । কৃষ্ণ রাধিকাকে বক্ষে জড়িয়ে ধরেন । নবীন সঙ্গমে তার হারায় চেতন , গোপীদের স্তনের ওপর নখ দিয়ে ক্ষত করেন কৃষ্ণ জী , শুধু তাই নয় যোনি ,মলদ্বার ইত্যাদি(শ্রোণী ) তেও নখ দিয়ে দিয়ে আঘাত করে কৃষ্ণ জী এই ভাবে লীলা চলতেই থাকে ।" (ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ , কৃষ্ণজন্মখণ্ড, অধ্যায় ২৮ )
পুরাণ গুলিতে শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র জীবন সম্বন্ধে অনেক কলঙ্ক লেপন করা হয়েছে । ভাগবত , ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ ইত্যাদি এই রকম কলঙ্ক যুক্ত মিথ্যা কাহিনীতে পরিপূর্ণ যা দেখে প্রত্যেক ভারতবাসী যার মধ্যে স্বাভিমান ও সভ্যতার সংস্কার আছে , লজ্জায় মাথা অবনত করে এবং বিধর্মীরা এর সুযোগ নিয়ে হিন্দু (সনাতন) ধর্মকে বদনাম করে ।
পুরাণের কৃষ্ণ

গোপাল সহস্র নাম গ্রন্থে শ্রীকৃষ্ণকে চোর ও ব্যাভীচারের শিরোমনি আখ্যা দেওয়া হয়েছে । যথা - "গোপাল কামিনী জারশ্চার জার শিখামণি" - শ্লোক ১৩৭ । এর উপর প্রতিপক্ষী লিখলেন - "জার" শব্দের অর্থ আমরা ভুল করেছি । বাস্তবে এখানে "জার" শব্দের অর্থ "ব্যাভিচারী"ই । পাঠক সনাতনী পন্ডিতের অর্থ যা বোম্বাই ভূষণ প্রেস মথুরা উক্ত গ্রন্থের টীকায় ছেপেছেন - দেখে নিতে পারেন (গোপাল কামিনী জার) গোপীদের সঙ্গে প্রেম করার কারণে (চোর জার শিখামণি) চোর ও ব্যাভিচারীদের মধ্যে শিরোমণি হওয়ার কারণে অর্থাৎ কৃষ্ণ , চোর ও ব্যাভিচারীদের মধ্যে শিরোমণি ছিলেন । এই অর্থ আমাদের বা কোনো আর্য সমাজী দ্বারা করা হয়নি , সনাতনী পণ্ডিতদের করা । বাস্তবে এই অর্থই ঠিক । মাধবাচার্য তার সমস্ত মিথ্যা প্রভাব খাটিয়েও এই অর্থকে মিথ্যা করতে পারেন না , অবশ্য গলা-বাজি করতে পারেন ।
গোপাল কেমন কামিনী জার ছিলেন পুরাণে এ সম্বন্ধে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে -
ভাগবত ১০/৩৩/১৯-২১ শ্লোক
অর্থ : কৃষ্ণের রাসের কামক্রীড়া দেখে দেবতাদের পত্নীরাও কামার্তা হয়ে গেলেন । কামদেবের উগ্র ইচ্ছা সঞ্চারিত হলে তাদের শরীর কামরসে আর্দ্র অর্থাৎ সিক্ত হয়ে গেলো । চন্দ্র , তারা ও গ্রহ সহ হতভম্ব হয়ে গেল । যতোজন গোপী ছিলো কৃষ্ণ ততো রূপ ধারন করে তাদের সঙ্গে রমন করলেন । যখন রতি রমন করার ফলে তারা সকলে অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে গেলো (এবং তাদের ঘাম বেরিয়ে এলো) তখন কৃষ্ণ তার কোমল হস্ত দ্বারা সেই সব প্রেমিকাদের (গোপীদের) মুখ মুছে দিলেন ।
কৃষ্ণ বিক্রীড়িতং বীক্ষ্য মুমূর্হঃ খেচর স্ত্রিয় ।
কামর্দতাঃ শশাংকশ্চ সগণাং বিস্মিতো অভবৎ ।। ১৯
কৃত্বা তাবন্তমাত্মানং য়াবতীর্গোপয়োষিতঃ।
রেমে স ভগবাংস্তাভিরাত্মারামো অপি লীলয়া।। ২০
তাসাং মতিবিহারেণ শ্রৌতানাং বদনানিসঃ।
প্রামৃজতকরুণঃ প্রেম্ ণাশংতমেনাংগ্বং পাণিনা।। ২১
অর্থ : কৃষ্ণের রাসের কামক্রীড়া দেখে দেবতাদের পত্নীরাও কামার্তা হয়ে গেলেন । কামদেবের উগ্র ইচ্ছা সঞ্চারিত হলে তাদের শরীর কামরসে আর্দ্র অর্থাৎ সিক্ত হয়ে গেলো । চন্দ্র , তারা ও গ্রহ সহ হতভম্ব হয়ে গেল । যতোজন গোপী ছিলো কৃষ্ণ ততো রূপ ধারন করে তাদের সঙ্গে রমন করলেন । যখন রতি রমন করার ফলে তারা সকলে অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে গেলো (এবং তাদের ঘাম বেরিয়ে এলো) তখন কৃষ্ণ তার কোমল হস্ত দ্বারা সেই সব প্রেমিকাদের (গোপীদের) মুখ মুছে দিলেন ।
তারপর দেখুন -
ভাগবত ২০/২৯/৪৫-৪৬ শ্লোক
নদ্যাঃ পুলিনমাবিশ্য গোপী মির্হিম বালুকম্।
রেমে তত্তরলানন্দ কুমুদামোহা বায়ুনাঃ।। ৪৫
হাহু প্রসার পরিরম্ভকলারকোরু ,
নীবীস্তনালভ ননর্মনখাগ্রপাতৈঃ।
ক্ষ্বেল্যাবলোক হসিতৈর্ব্রজ সুন্দরীণাং ,
মত্তম্ভয়ন্ রতিপতিরময়াং শ্চকার।। ৪৬
অর্থ : কৃষ্ণ যমুনার কর্পূর সমান উজ্জ্বল বালুতটে গোপীদের নিয়ে উপস্থিত হলেন । এই স্থান জলতরঙ্গে শীতল ও কুমুদিনীর সুগন্ধে সুবাসিত ছিলো । সেখানে কৃষ্ণ গোপীদের সঙ্গে রমন (ভোগ) করলেন । বাহু বিস্তার করে আলিঙ্গন করা , গোপীদের হাতে চাপ দেওয়া , তাদের শিখা ধরা , উরুতে হস্তাবলেপ , সায়ার দড়ি ধরে টান দেওয়া , স্তন ধরা , রসিকতা করা , নখ দিয়ে , অঙ্গ ক্ষত-বিক্ষত করা , বিনোদপূর্ণ তির্যক দৃষ্টি দিয়ে দেখা এবং মৃদু হাসি হাসা এবং এই সব ক্রিয়া দ্বারা নবযৌবনা গোপীদের মধ্যে কামদেবকে খুব জাগ্রত করে তাদের সঙ্গে কৃষ্ণ রাতে রমন (বিষয় ভোগ) করলেন ।
এর মধ্যে কামদেবকে জাগ্রত করে রমন করা স্পষ্ট ভাবে প্রমাণ করে যে - রাসের অন্তরালে বিষয়ভোগ করা হতো ।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

ব্রহ্মচর্যের সাধনা ভোজন

  নবম ভাগ ভোজন ভূমিকা - "ধর্মার্থকামমোক্ষাণামারোগ্যম্ মূলমুত্তমম্" . ধর্ম-অর্থ-কাম আর মোক্ষ এই পুরুষার্থচতুষ্টয় হল মানব জীবনের উ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ