“ ওরা প্রকৃত মুসলমান নয়, প্রকৃত ইসলামে এসব নেই”
ধর্ম তরল পদার্থের মত, এমন কোন ধর্ম খুঁজে পাবেন না যা নানা ফেরকা আর উপদলে বিভক্ত নয়। ইসলামের ফেরকার বর্ণনা দিতে গেলে সাত খণ্ড রামায়ণ হয়ে যাবে। তবে, ইদানীং আমার সালাফি ও আহলে হাদিস তরিকার বন্ধুরা “প্রকৃত ইসলাম” খুঁজে পাওয়ার রাস্তা বাৎলে দিয়েছেন । উনাদের কথাটা আমার কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে । সংজ্ঞাটা বেশ সহজ : যারা শুধু মাত্র কোরান ও সুন্নাহ ভিত্তিক আকিদা মেনে চলে তারাই প্রকৃত মুসলমান। খুব হক কথা , কিন্তু সমস্যা হল , দেওয়ানবাগি, সায়দাবাদী পীর থেকে শুরু করে তবলীগী, দেওবন্দি ,ওহাবী – সালাফি এমনকি “বসেন বসেন বসে যান” বলে জিকির করা হুযুর সবাই নিজেদের প্রকৃত ইসলামি দাবি করেন। এই প্যারাডক্সের সমাধানও পেয়ে গেলাম : “নবী মোহাম্মাদ (দঃ) ও তার পরবর্তী তিন প্রজন্মের মুসলিমরাই প্রকৃত ইসলামি এবং এই সাহাবি , তাবেই , তাবেঈনদের মত,পথ,নীতি-আদর্শ হুবহু অনুসরণ করাই হল প্রকৃত ইসলামের পথ (সালাফি মতাদর্শের এটি মূলনীতি)”।
এবার অতি সংক্ষেপে এই প্রকৃত ইসলামের ইতিহাস দেখা যাক আর তথাকথিত চির অনুসরণীয় সাহাবিদের কার্যকলাপ পর্যালোচনা করা যাক। ৭ই জুন, ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে সোমবার ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক নবী মোহাম্মাদ (দঃ) এর মৃত্যু ঘটে। হযরত আলী ও তার পরিবারবর্গ ছাড়া সকল প্রধান সাহাবিগণ নবী মৃত্যুর পর পরই কে ইসলামী উম্মার শাসক হবে এই বিতর্কে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সোমবার থেকে শুরু করে বুধবার পর্যন্ত নবীর লাশ অদাফনকৄত অবস্থায় পড়ে থাকে। বুধবার মধ্যরাতে কবর খুড়ে নবীর দাফন করা হয়। হযরত আলী , আল-ফদল ইবনে আব্বাস ও তার ভাই কুথাম ইবনে আব্বাস এবং শুকরান (নবীর আযাদ ক্রিত গোলাম) নবীকে কবরে নামান। নবীর দাফনে অন্য কোন প্রধান সাহাবি যেমন আবু বকর, ওমর বা উসমান কেওই উপস্থিত ছিলেন না। নবীর জন্য কোন রাষ্ট্রীয় জানাজা বা শোক কিছুই করা হয় নাই। দশ বার জনের ছোটছোট গ্রুপে কেও কেও নবীর জানাজা পড়েছেন । সাহাবি আবু বকর, ওমর ও তাদের দল বরং আলীকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন আবু বকর এর আনুগত্য বা বয়াত গ্রহণ করতে। এতে আলী রাজি না হওয়ায় বেশ কিছু অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হয় । ওমরের নেতৃতে এক দল সাহাবি নবী কন্যা ফাতেমার বাসায় উপস্থিত হয় এবং ওমর বাসার দরজা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন এবং আলীকে টেনে হিঁচড়ে বের করে আনেন। এই প্রক্রিয়ায় নবী কন্যা ফাতেমা আঘাত প্রাপ্ত হন, ভিন্ন বর্ণনায় ওমরের নির্দেশে ফাতেমাকে প্রহার করা হয়, প্রহারকারী হিসাবে ওমরের সগোত্রীয় খালেদ বিন ওয়ালিদ বা আল্লাহর তরবারির নাম উল্লেখ আছে।আহত বিবি ফাতেমার পাঁজরের হাড় ভেঙ্গে যায় এবং পেটে আঘাতের ফলে উনার গর্ভপাত হয়ে যায়, ধারনা করা হয় এর জটিলতায় নবী মৃত্যুর তিন থেকে ছয় মাসের মাথায় ফাতেমার মৃত্যু ঘটে। ফাতেমার ইচ্ছা অনুসারে তার স্বামী আলি ও পুত্র হাসান ও হোসেন গোপনে তার দাফন করেন এবং ওমর বা আবু বকর কাওকে এই খবর দেওয়া হয়না। নবীর অধিকারভুক্ত জমি ফাদাক এই উত্তরাধিকার দাবী করলেও আবু বকর ফাতেমাকে এই হাদিস বলে বঞ্চিত করেন যে নবীর কোন উত্তরাধিকার নাই। আলি, আবু বকরের বায়াত স্বীকার করে ফাতেমার মৃত্যুর পর।
তথ্যসূত্র
নবি মৃত্যুর পর মুসলমান কর্তৃক মুসলমান হত্যা
মুসলমান বিদ্রোহীদের হাতে খলিফা উসমান নিহত।
হযরত আলির সাথে বিবি আয়েশার জঙ্গে জামাল বা উটের যুদ্ধে : হতাহতের মোট সংখ্যা প্রায় ১৮,০০০। সাহাবি তালহা, জুবায়ের দুজনেই মৃত্যু বরন করেন।
হযরত আলি ও ময়াবিয়ার মধ্যে সংঘটিত হয় সিফফিনের যুদ্ধ। দুই পক্ষ মিলিয়ে হতাহতের সংখ্যা (২৫,০০০+৪০,০০০) ৬৫,০০০
হযরত আলি ও খারেজীদের মধ্যে নাহরাওয়ানের যুদ্ধে পরাজিত হতাহতের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০০০
৬৬১ খ্রিষ্টাব্দে কুফা মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ার সময়, আবদুল্লা ইবনে মুলজাম নামের এক খারেজী বিষ মাখা ছুরির আঘাতে হযরত আলিকে হত্যা করে।
কারবালা হত্যাকাণ্ড : ইমাম হোসেনের পক্ষে নিহতের সংখ্যা ৭২ । এই হত্যাকাণ্ডের পর ইমাম হোসেনের শিরচ্ছেদ করা মরদেহটি ঘোড়া দিয়ে পদদলিত করা হয় ও কুকুর শেয়ালের জন্য দাফন না করে ফেলে রেখে ছিল।
নবি মৃত্যুর খবরে আরব রাজ্যে দলে দলে বহু গোত্র ইসলাম ত্যাগ করে আবার বহু গোত্র মুসলিম থাকলেও মদিনা তথা আবু বকরের আনুগত্য অস্বীকার করে এবং কর দিতে অস্বীকৃতি জানায়, এ ছাড়ও নবির অনুকরনে অন্তত তিন জন নবুয়তের দাবি নিয়ে হাজির হয়। ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর তার দুই বছরের শাসন কালে এই সকল গোত্রদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বিগ্রহে ব্যাস্ত ছিলেন । যদিও এই বিদ্রোহীদের একটি বড় অংশ ইসলাম ত্যাগ করেনি তবুও এই যুদ্ধকে রিদা যুদ্ধ বা ধর্মত্যাগীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করা হয় । অসমর্থিত সুত্র অনুযায়ি এই যুদ্ধে মোট মৃতের সংখ্যা ৪০,০০০ পর্যন্ত বলা আছে ।
খেলাফায়ে রাশেদিনের দ্বিতীয় খলিফা ওমররের আমলে মুসলিম রাজ্যের ব্যাপক বিস্তার লাভ করে ও বিপুল গনিমতের মাল লাভ করে। ওমর প্রথমেই “আল্লাহর তরবারি” নামে পরিচিত খালিদ বিন ওয়ালিদকে বরখাস্ত করেন, যার সাফল্য ও জনপ্রিয়তায় ওমর ঈর্ষান্বিত ছিলেন। ২১ হিজরিতে দারিদ্র ও অখ্যাত অবস্থায় খালিদ বিন ওয়ালিদ মৃত্যু বরন করেন (স্পেন বিজয়ী মুসলিম সেনাপতি মুসার ভাগ্যে আরও বেশি দুর্দশা দারিদ্র জুটেছিল)। ৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দে ফিরোজ নাহাভান্দি বা আরবদের মাঝে আবু লুলাহ নামে পরিচিত এক পারসিক দাসের ছুরিকাঘাতে ওমররের মৃত্যু হয়। ফিরোজ নাহাভান্দি পারস্য দেশের একজন সেনা কমান্ডার ছিলেন, যুদ্ধবন্দী হিসাবে তিনি আল মুগিরা ইবনে সুবার দাস হিসাবে কাজ করতেন। তিনি ছিলেন দক্ষ নির্মাণ কৌশলী এবং এই পেশার মাধ্যমে নিজেই উপার্জন করতেন,মনিব আল মুগিরা ইবনে সুবা তার উপার্জন থেকে কর নিতেন। ফিরোজ নাহাভান্দি ওমোরের নিকট এই করের বোঝা লাগবের আবেদন করে বার্থ হলে আক্রোশ বশত ওমরকে হত্যা করেন, তাকে পাকড়াও করার সময় তিনি আর ৬-৭ জনকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেন ।
ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমানের শাসনকাল খুবই ঘটনা বহুল এবং ইসলামের ইতিহাসে নিরন্তর হত্যা, ফেতনা এই আমল থেকেই শুরু। উসমান ছিলেন বনি উমাইয়া গোত্রের, নবি মহাম্মাদ (দঃ) এর অন্যতম বিরুদ্ধকারিরা ছিলেন এই গোত্রের। মক্কায় এই গোত্রের নেতা ছিলেন আবু সুফিয়ান। খলিফা উসমানের বিরুদ্ধে ইসলামের ইতিহাসের প্রথম মুসলিম বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। বিদ্রোহীরা মিশর, কুফা ও বসরা থেকে মদিনায় আসে ও পরবর্তীতে উসমানের গৃহ অবরুদ্ধ করে এবং মুলত মিশর থেকে আগত বিদ্রোহীদের হাতে খলিফা উসমান নিহত হন। তার হত্যাকারীর মধ্যে ছিলেন মহাম্মাদ বিন আবু বকর (খলিফা আবু বকরের পুত্র, বিবি আয়শার ভাই, আবু বকরের মৃত্যুর পর তার বিধবা স্ত্রী আসমা বিনতে উমাইসকে বিবাহ সুত্রে হযরত আলি মহাম্মাদ বিন আবু বকরকে পালিত পুত্র হিসাবে পান )।
সংক্ষেপে খলিফা উসমানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কারণ সমূহের তালিকাঃ
স্বজন প্রীতি ও সকল গুরুত্ব পূর্ণ পদে উমাইয়া গোত্রের নিয়োগ দান। নবির ঘোর শত্রু হাকাম বিন আল আস এর পুত্র মারওয়ান বিন আল হাকাম (উসমানের চাচাতো ভাই) এর নিয়োগ দান।
দুর্নীতি ও সরকারি তহবিল থেকে আত্মীয় সজনকে বিপুল অর্থ প্রদান। মেয়ের বিয়ের সময় জামাই হারিথ ইবন আল হাকাম কে সরকারি কোষাগার থেকে দুই শত হাজার দিরহাম প্রদান। এর পর কোষাধ্যক্ষ পদত্যাগ করেন।
উসমানের নিয়োগ করা প্রাদেশিক গভর্নরদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ।
নবির গুরুত্বপূর্ণ সাহাবিদের প্রতি দুরব্যাবহার ঃ আদি ইসলামি পণ্ডিত আব্দুল্লাহ বিন মাসুদকে প্রহার, আবু দার গিফারিকে উচ্ছেদ যিনি নির্জন মরুভুমিতে মারা যান, আম্মার বিন ইয়াসির এর উপর অত্যাচার।
বিভিন্ন ভার্সনএর কোরান পুড়ানোর ফলে অনেকের অনুভুতি আহত হয়। কোরান বিষয়ক সর্ব জ্ঞানী আব্দুল্লাহ বিন মাসুদদের ভার্সন গ্রহন করা হয় নাই।
মিশরের বিদ্রোহীদের সাথে প্রথম দফায় সমঝতা হওয়ার পর বিদ্রোহীরা ফিরে যাওয়ার সময় মিশরের পথে উসমানের দাসকে এক পত্র সহ আটক করে। উসমানের সিল সহ ঐ পত্রে মিশরের শাসনকর্তার প্রতি নির্দেশ ছিল যেন ফিরে যাওয়া বিদ্রোহীদের হত্যা করা হয়। যদিও এই পত্র উসমান নিজের নয় বলে দাবি করেন। অনেকে মনে করেন মারওয়ান বিন আল হাকাম এই পত্রটি জাল করেন।
নবির বহু গুরুত্বপূর্ণ সাহাবিরা উসমানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে মদদ যুগিয়েছিলেন, এদের মধ্যে তালহা, জুবায়ের, আমর বিন আসের নাম উল্লেখযোগ্য। এমনকি বিবি আয়েশা কেও উসমানের ব্যাপারে বলতে শুনা যায় “ এই দাড়িওয়ালা নাথাল কে হত্যা কর, সে সীমা লঙ্ঘনকারী” । আশ্চর্য হল, এই সাহাবিরাই আবার উসমানের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আলির বিরুদ্ধে জঙ্গে জামাল বা উটের যুদ্ধে লড়াই করেন বসরাতে। উটের পিঠে থেকে আলির বিরুদ্ধে বিবি আয়েশা জঙ্গে জামালে অংশ নেন বিধায় যুদ্ধের এই নামকরন। যুদ্ধে আলির বাহিনী বিজয়ী হয়, তালহা, জুবায়ের দুজনেই মৃত্যু বরন করেন। আয়েশাকে তার ভাই মহাম্মাদ বিন আবু বকর (যিনি আলির পক্ষের হয়ে যুদ্ধ করেন) হযরত আলির নির্দেশে মদিনায় পৌছিয়ে দেন, জঙ্গে জামালের পর আয়েশা আর কোন রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে অংশ নেন নি। জঙ্গে জামালে হতাহতের মোট সংখ্যা প্রায় ১৮,০০০।
আলির শাসন আমল পুরটাই কেটেছে সিরিয়ার উমাইয়া শাসক আবু সুফিয়ানের পুত্র ময়াবিয়া আর খারেজীদের সাথে যুদ্ধ করে। উসমানের হত্যার বিচার দাবি করে ময়াবিয়া আলির খিলাফত মেনে নেয় নি, যার পরিপ্রেক্ষিতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘটিত হয় সিফফিনের যুদ্ধ। এই যুদ্ধ কোন ফলাফল ছাড়া উভয় পক্ষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে থাকে, এক পর্যায়ে আলির দল এগিয়ে যেতে থাকলে ময়াবিয়ার চতুর সেনাপতি আমার ইবনে আস এক অদ্ভুত কৌশল অবলম্বন করেন। তার সৈন্যরা বর্শার আগায় কোরানের পাতা লাগিয়ে বলতে থাকে “কোরানের আইনই হোক আমাদের মধ্যে মীমাংসার করতৄপক্ষ” এই কৌশল কাজে দেয় এবং আলির শিবিরে বিভক্তি সৃষ্টি করে। আলি তার দলকে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য তগিদ দেয় এবং ময়াবিয়ার ও আমর ইবনে আসের চতুরতা সম্পর্কে সাবধান করে। শেষ পর্যন্ত আলি তার সৈন্য দলের এক অংশের দাবি অনুযায়ি মধ্যস্থতায় রাজি হয়। আলির সৈন্য দলের এই অংশেই পরবর্তীতে খারেজী হিসাবে দলত্যাগ করে। এই দলের পছন্দ মত আলির পক্ষে মালিক আল আসতারকে মধ্যস্থতাকারি হিসাবে মনোনীত করা হয় আর ময়াবিয়ার পক্ষে আমর ইবনে আস হন মধ্যস্থতাকারি। অতি সংক্ষেপে এই মধ্যস্থতা ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়, কিন্তু এর ফলে আমিরুল মুমিনিন বা মুসলমানদের খলিফা রূপে আলির মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়। যদিও অচলবস্থার মধ্যেই যুদ্ধের আপাত সমাপ্তি ঘটে । এই পরিপ্রেক্ষিতেই খারেজী দলের উদ্ভব হয় যা ইসলাম ও পরবর্তী ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা যা অন্তত কিছুটা বর্ণনার দাবি রাখে।
খারেজীরা ইসলামের ইতিহাসে প্রথম দলত্যাগী মৌলবাদী দল। আলির দল থেকে প্রায় ৬০০০ জন পৃথক হয়ে হারুরা নামক ইরাকের এক স্থানে ঘাঁটি স্থাপন করে ও প্রচারণার মাধ্যমে দল ভারী করে। যদিও এই দলই আলিকে সিফফিনের যুদ্ধে মধ্যস্থতাকারি নিয়োগে বাধ্য করেছিল, তারাই পরে আল্লহর আইন বরখেলাপ করে মানুষের মধ্যস্থতা গ্রহনের ফলে আলিকে কুফরি করার অভিযোগে দায়ি করে। তারা এই মর্মে ফতওয়া দেয় যে মানবের বিচার মানার ফলে হযরত আলি ও ময়াবিয়া উভয়েই কাফের হয়ে গেছে।
তাদের প্রধান শ্লোগান আর বর্তমানের ইসলামি মৌলবাদী বা জঙ্গি দলের মুল মন্ত্র হবহু এক ঃ “ লা হুকমা ইল্লা লিল্লাহ “ অর্থাৎ বিচার বা কর্তৃত্ব শুধুমাত্র আল্লহর, অন্য কথায় আল্লহর আইন চাই আর মানব রচিত তাগুতি আইন হারাম।
প্রাসঙ্গিকভাবে এই লেখাটির কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। খারেজীদের বাহ্যিক ধর্ম পালন ছিল অত্যধিক । আলির পক্ষ হয়ে নবির আরেক চাচাতো ভাই ইবনে আব্বাস যখন খারেজীদের ঘাঁটিতে যান মধ্যস্থতা করতে, তখন লক্ষ করেন তাদের কোরান তেলওয়াতের আওয়াজ মৌমাছির গুঞ্জনের মত শোনা যাচ্ছে আর সারা রাত এবাদত করায় তাদের চোখ লাল হয়ে আছে। খারেজীরা প্রথমে বাণিজ্য কাফেলা লুটতরাজ শুরু করে। তবে ঘটনার মোড় ঘুরে যখন এরা নবির এক প্রখ্যাত সাহাবির ছেলে আব্দুল্লাহ বিন খাব্বাবকে হত্যা করে। বর্ণনায় প্রকাশ, আব্দুল্লাহ বিন খাব্বাব তার কাফেলা নিয়ে যাওয়ার সময় খারেজীরা তাকে আটক করে জানতে চায় যে তাদের আর আলির মধ্যে কে সঠিক পথে আছে, আব্দুল্লাহ বিন খাব্বাব আলির পক্ষে মত দিলে খারেজীরা তাকে ও তার গর্ভবতী দাশীকে বেঁধে তাদের ঘাটিতে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে এক খারেজী এক খ্রিস্টানের শুকর হত্যা করলে অন্য খারেজিরা তার সমালোচনা করে ও ইসলামের নিয়ম অনুযায়ি খ্রিস্টানকে শুকররের মূল্য পরিশোধ করতে বলে। এতে বন্দি আব্দুল্লাহ এই বলে বিস্ময় প্রকাশ করে যে তার জীবনের মূল্য কি ঐ শুকররের চেয়ও নীচে ? খারেজীরা আব্দুল্লাহকে পশু জবাইয়ের মতো করে হত্যা করে আর তার দাসীর পেট কেটে বাচ্চা বের করে নৃশংস ভাবে হত্যা করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে হযরত আলি নাহরাওয়ান নামক বাগদাদের নিকটবর্তী স্থানে এক যুদ্ধে খারেজীদের পরাজিত করে এতে হতাহতের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০০০। প্রায় ৫০০ খারেজী পালিয়ে বিভিন্ন স্থানে তাদের মতবাদ প্রচার অব্যাহত রাখে। জানুয়ারির ২৬ তারিখে , ৬৬১ খ্রিষ্টাব্দে কুফা মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ার সময়, আবদুল্লা ইবনে মুলজাম নামের এক খারেজী বিষ মাখা ছুরির আঘাতে আলিকে হত্যা করে।
খারেজীদের সাথে আইসিস দের আদর্শগত ও নৃশংসতায় অদ্ভুত মিল দেখা যায়। খারেজীরা যেমন কোরানকে আক্ষরিক অর্থের ভিত্তিতে পালন করে, এই অর্থে আইসিস, আল কায়েদা, সালাফি, ওয়াহাবি , আহলে হাদিস এই সব ফেরকা খারেজীদের মতই। দ্বিতীয় মিলটিকে বলা হয় তাকফির, যার অর্থ নিজের মতের বাইরে সকল ভিন্নমতের মুসলিমকে কাফির বা মুরতাদ বলা।
উল্লেখিত ফেরকাগুলো এই তাকফিরি পন্থা অনুসরণ করে। এই সবই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি প্রমান করে।
ইসলামি এপোলোজিস্টদের অজুহাতঃ জনৈক আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা
ইসলামের ইতিহাসে নবির জীবনের সবচেয়ে কাছাকাছি আসতে পারা সাহাবি, তাবেই তাবেঈনদের হিংসা , বিদ্বেষ আর নিরন্তর খুনাখুনির ইতিহাস হালের ইসলামি এপোলোজিস্টদের করেছে বিচলিত। সব দোষ যেমন ইহুদি নাসারাদের উপর চাপিয়ে আমাদের ইসলামিস্ট ভাইয়েরা পার পেতে চান, তেমনি অতি হাস্যকর ভাবে ইসলামের প্রাথমিক যুগের খুনাখুনির সব দোষ এক অখ্যাত জনৈক আব্দুল্লাহ ইবনে সাবার উপরে চাপানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে সাবার আমদানি হয়েছে মুলত হালের সুন্নি শিয়া রাজনৈতিক বিরোধ থেকে। এক শ্রেণীর সালাফিরা আব্দুল্লাহ ইবনে সাবাকে শিয়া মতবাদের জনক হিসাবে উপস্থাপন করে তাদের প্রতিপক্ষ শিয়াদের ঘায়েল করতে চায় এবং বর্তমান মধ্যপ্রােচ্যর সৌদি বনাম ইরানের শিয়া-সুন্নি রাজনীতিতে এই নামটি বহুল ব্যাবহারীত । ইতিহাসে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা আদৌ ছিল কিনা তা নিয়ে ঐতিহাসিকরা এক মত নন। তবে, সেই ইতিহাসে যাওয়ার পূর্বে এই কথা বলা যায় যে, এই অখ্যাত আব্দুল্লাহ ইবনে সাবার কথা শুনে নবির বিচক্ষণ সাহাবিরা সবাই নিজেদের মধ্যে হাজার হাজার খুন খারাবি করে ফেলবে এটা কোন সুস্থ মস্তিস্কে ভাবা যায় না। সাইফ বিন ওমর নামের এক বাক্তির বরাত দিয়ে তাবারিতে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবার বর্ণনা আছে। দাবি করা হয় উসমান হত্যা, জঙ্গে জামাল, সিফফিনের যুদ্ধ সব কিছুর জন্য আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা দায়ি। ইবনে সাবাকে দাবি করা হয় যে সে ইয়ামেন থেকে আগত ইহুদি যে পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছিল এবং হযরত আলিকে আল্লাহর মত ভাবতেন। যে সাইফ বিন ওমরের বরাতে ইবনে সাবার গল্প তাবারিতে স্থান পেয়েছে, সেই সাইফ বিন ওমরকে বেশির ভাগ ইসলামি স্কলারগন মিথ্যাবাদী, অবিশ্বাসযোগ্য বর্ণনাকারী হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ও তার বর্ণিত হাদিস অগ্রহণযোগ্য মনে করেছেন, এই সব স্কলারদের মধ্যে আল-নাসাই, আবু দাউদ, আল-আসকালাইনি ও আল-সুয়ুতির নাম উল্লেখযোগ্য। শিয়া ঐতিহাসিক সুত্রে জনৈক ইবনে সাবার নাম পাওয়া যায়, যিনি হযরত আলিকে আল্লাহর সাথে এক করে বলার অপরাধে মাদাইনে নির্বাসিত হয়েছিল অন্য বর্ণনায় হযরত আলি তাকে মুরতাদ হিসাবে পুড়িয়ে হত্যা করেন। ইবনে সাবাকে কোন ঐতিহাসিক বিবেচনায় মোটেও গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় নি তাই এ নিয়ে আর বিস্তারিত বর্ণনার প্রয়োজন দেখছি না। আগ্রহি পাঠকদের জন্য লেখার শেষে লিঙ্ক দিয়ে দেব, তবে যেহেতু ইবনে সাবাকে ঘিরে শিয়া-সুন্নি পক্ষ কলম যুদ্ধ করে যাচ্ছে, কাজেই দুই পক্ষের লেখা পড়ে নিজের বিবেচনায় যাচাই করবেন।
হায় হোসেন হায় হোসেন !
ইসলামের ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত ও তাৎপর্যপূর্ণ সম্ভবত কারবালা হত্যাকাণ্ড। ১০ ই মহররম বা ১৩ ই অক্টোবর, ৬৮০ খ্রিষ্টাব্দে নবি মহাম্মাদের (দঃ) দৌহিত্র ইমাম হোসেন তার পরিবারবর্গ ও সঙ্গিরা দ্বিতীয় উমাইয়া খলিফা ইয়াজিদ বিন ময়াবিয়ার বাহিনীর হাতে নির্মম ভাবে নিহত হন। ইসলামের প্রধান বিভাজন ও আজ পর্যন্ত ইসলামে শিয়া সুন্নির রাজনীতির প্রধানতম নিয়ামক হিসাবে কারবালা হত্যাকাণ্ড আজীবন গুরুত্ব বহন করবে। নবি মহাম্মাদের মৃত্যুর ৫০ বছরের পূর্বেই সম্পূর্ণ মুসলিম সেনাদের হাতে নবির নিকটতম আত্মীয়দের হত্যা অনেকের চিন্তার অতীত হলেও এর বাস্তবতার অতি সংক্ষিপ্ত বিবরণটি এরকমঃ ইমাম হোসেনের ও তার নিকট আত্মীয়দের নারি ও শিশু বাদ দিলে তার সৈন্য সংখ্যা ছিল ৭২ জন (৩২ জন অশ্বারোহী ও ৪০ জন পদাতিক সৈন্য) । উবাইদুল্লাহ বিন জিয়াদ ছিল ইয়াজিদের পক্ষ থেকে কুফার গভর্নর , যিনি উমার বিন সাদের নেতৃত্বে ৪০০০ সৈন্য প্রেরন করে। ইমাম হোসেনের মৃত্যুর আগে তাকে ঘিরে ফেলে সিমর বিন ধীই জাওশান নামের এক কমান্ডারের অধীনে থাকা সৈন্যরা। সিমর একজন তাবেঈন। প্রথমে ইমাম হোসেনকে চতুর্দিক থেকে তীর বিদ্ধ করা হয় এর পর পাথর ছুড়ে মুখমণ্ডল রক্তাত্ত করা হয় এর পর সিমররের সৈন্যরা তরবারি দিয়ে তার শিরস্ত্রাণটি ভেঙ্গে ফেলে ও বর্শার আঘাতে ইমাম হোসেন মাটিতে পড়ে যান। এ অবস্থায় সিমর তার এক সৈন্যকে ইমাম হোসেনের শিরচ্ছেদ করতে বললে তার হাতে কাঁপুনির জন্য সে অপারগ হয়। সিমর নিজেই ইমাম হোসেনের শিরচ্ছেদ করেন (কিছু সূত্র অনুযায়ি সিনান বিন আনাস আল নাখাই এই কাজটি করেন)। এই হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহটি ঘোড়া দিয়ে পদদলিত করা হয় ও ইমাম হোসেনের জামা কাপড় , বর্ম সবকিছু লুট করা হয়। ৭২ জন মৃত অন্যদেরও শিরচ্ছেদ করা হয়। এর পর ইমাম হোসেনের দলের তাবু লুট করে নারি ও শিশুদের বন্দি করা হয়, এই বন্দির তালিকায় ছিল বিবি জয়নব (ইমাম হোসেনের বোন বা আলি ও ফাতেমার কন্যা ,যার ২ সন্তান কারবালার যুদ্ধে প্রান হারান )। ইমাম হোসেনের কর্তিত মস্তক সহ অন্যদের মস্তক কুফার রাস্তায় প্রদর্শনী করা হয়। কুফার গভর্নর উবাইদুল্লাহ বিন জিয়াদ তার দরবারে ইমাম হোসেনের কর্তিত মস্তকে একটি লাঠি দিয়ে আঘাত করতে থাকেন ও বাঙ্গ বিদ্রূপ করেন। কর্তিত মস্তক ও নবির বংশের যুদ্ধবন্দী দের প্যারেড করিয়ে দামেস্কে ইয়াজিদের দরবারে নিয়ে যাওয়া হয় । ইমাম হোসেন সহ তার দলের অন্য সেনাদের দেহ কোন দাফন ছাড়া কারবালায় পড়ে থাকে, রাত্রিতে বানু আসাদ গোত্রের লোকেরা লুকিয়ে মৃত দেহের দাফন করেন।
উপসংহারঃ
আমাদের বাঙালি মুসলিম ঘরে ঘরে ইসলাম বিষয়ে নানা বই পুস্তক বুক সেলফে সাজানো থাকে , মক্সুদুল মোমিন , অজিফা জাতীয় বই বাদ দিলে ইসলামের ইতিহাস বিষয়ক মোস্তফা চরিত, খলিফাদের মহান জীবনী জাতীয় কিছু রুপকথার বই পাওয়া যায়। এই বইগুলো ছোটবেলায় পড়ে ইসলামের এই দয়ার সাগর নবি- খলিফাদের জন্য গর্ব অনুভব করেছি অনেক। অনেক পরে জানতে পেরেছি , এই সব বই পুস্তকে গাঁজাখুরি কিচ্ছা কাহিনী ছাড়া রেফারেন্স ভিত্তিক ইতিহাসের ছিটে ফোটাও নেই। কিন্তু কেন এই মিথ্যাচার ? ধর্মীয় ভক্তিবাদ দিয়ে সত্য ইতিহাস কতদিন চেপে রাখা যায়?
ধর্মীয় মতবাদ এমনি একটি তরল বস্তু যে এটা নানা মতবাদে বিভক্ত হতে বাধ্য। আজ কাল যারা ইসলামি দাওয়া বা জোর গলায় এর প্রচার চালান সকলেই কোরান ও সুন্নাহ ভিত্তিক এক অভূতপূর্ব সমাজ গঠনের জন্য বলেন আর আদর্শ হিসাবে নবি মহাম্মাদ (দঃ) এর পরে সাহাবি, তাবেই তাবেঈনদের উদাহরন অনুসরণ করতে বলেন। হাদিস কোরানের কোন বিধান মানবতা বিরোধী মনে হলে উনারা এই সালফে-সালেহিনদের উদাহরন দেন এবং উনাদের মত করে কোরান সুন্নাহকে বুঝতে ও অনুসরণ করতে বলেন। এই জন্যই ইতিহাস ঘাটা। কেমন ছিলেন আমদের এই চির অনুসরণীয় এই সালফে-সালেহিনরা? নবির মৃত্যুর পর তার দেহটি দাফন পর্যন্ত না করে আমাদের এই সাহাবিরা নেমে গিয়েছিলেন ক্ষমতার রাজনীতিতে। আজকে অনেক মুমিন ইস্লামিসট ভাইরা নবির প্রতি কটূক্তি বা ধর্মীয় অনুভতিতে আঘাতের অভিযোগে মুরতাদের ফাঁসি চান বা ব্লাস্ফেমি আইন চান অথবা চাপাতি নিয়ে জিহাদে নেমে পড়েন। আপনাদেরই মুমিন সাহাবি-তাবেইরা যারা কিনা নবির সাথের বা অব্যবহিত পরের প্রজন্মের, তারা নবির সবচেয়ে নিকততম স্বজনদের সাথে কি ব্যবহার করেছেন তা কি বর্তমানের ইসলামিস্ট ভাইয়েরা দেখতে পান না? আপনারা কোরান হাদিসের অপব্যাখ্যার কথা বলেন অথচ কোরান হাদিসের সবচেয়ে নিকটতম বান্দারা যারা এর ব্যাখ্যা হয়ত সরাসরি নবির বা তার সাহাবির কাছ থেকে পেয়েছেন সেই সব ব্যাক্তিবরগের ইতিহাস বিচার করে দেখেন না । ব্যাক্তিগত, গোষ্ঠীগত, রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক স্বার্থের কাছে হাদিস, কোরান , নবি-রসুল , সালফে-সালেহিন কিছুই কোন কাজে আসে নাই। নবির জীবনের খুব কাছাকাছি সময়ের এই মুসলিমগন নবির সবচেয়ে নিকট পরিবারবর্গ তথা ইমাম হোসেনের মৃতদেহটি পর্যন্ত কুকুর শেয়ালের জন্য দাফন না করে ফেলে রেখে ছিলেন। যারা হাদিস-কোরান ,নবি-রাসুলের জীবনীকে সর্ব কালের নৈতিকতা আর মানবতার মানদণ্ড মনে করেন তাদের জন্য এই ইতিহাসের পাঠ ও শিক্ষা খুবই জরুরি। আপনারা ঘুম পাড়ানি মাসী পিষি জাতীয় নবি, সাহাবি তাবেই ,তাবেঈনদের মিথ্যা গল্প গাঁথা পড়ে দিলে শান্তি লাভ করেন যা কিনা কিছু অসৎ আর কপট ধর্মবাজরা যুগ যুগ ধরে আপনাদের গলাধকরন করিয়ে যাচ্ছেন। এই মিথ্যা ভক্তিবাদ থেকে যতদিন আপনারা মুক্ত হতে পারবেননা ততদিন আইসিস, জেএমবি, বকো হারাম আপনাদের সহি ইসলাম শিক্ষা দেবে আর শত শত পবিত্র বা হলি আরটিসান উপহার দেবে।
তথ্যসুত্রঃ
*এমনকি বিবি আয়েশা কেও উসমানের ব্যাপারে বলতে শুনা যায় “ এই দাড়িওয়ালা নাথাল কে হত্যা কর, সে সীমা লঙ্ঘনকারী”
“Kill this old fool (Na’thal), for he is unbeliever.”
Sunni references: History of Ibn Athir, v3, p206, Lisan al-Arab, v14, p141, al-Iqd al-Farid, v4, p290, Sharh Ibn Abi al-Hadid, v16, pp 220-223
(উল্লেখিত সুন্নি সুত্রের বইগুলো আমার সংগ্রহে না থাকায় ক্রস চেক করা যায়নি। উসমানের অপসারনের জন্য ইবনে আব্বাসকে বলা বিবি আয়েশার আরেকটি রেফারেন্স সহ উক্তি আছে যেটি আমার লেখায় উল্লেখ করা হয় নাই। নাথাল বা নাছাল শব্দটি বিভিন্ন বর্ণনায় মূর্খ বৃদ্ধ বা লম্বা দাড়িওয়ালা ইহুদি বুঝানো হয়েছে। )
আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা সংক্রান্ত তথ্যের লিঙ্ক
১। উইকিপিডিয়া
২। ইসলাম অর্গ
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ