ইন্ডিয়ান "গির"
গরুর নাম : বস ইন্ডিয়াকাস জাতের ইন্ডিয়ান যে গরুটি পৃথিবীব্যাপী সবচেয়ে বেশি জাত উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে সেটাই হচ্ছে গ্রীষ্মন্ডলীয় চরম আবহাওয়ার গরু ‘গির’ বা গুজরাটি বা দেশান। ইন্ডিয়ান নিজস্ব জাত গুলোর মধ্যে সবচে ভালো ডুয়াল পারপাস ( দুধ ও মাংস) গরু হচ্ছে আমাদের আজকের গরু। ব্রাহমা ছাড়াও এটাকেও ইন্ডিয়ার পবিত্র গরু বলে মনে করা হয়।
গড় ওজন : ষাঁড় : ৫৫০ - ৭০০ কেজি।
গাভী ৪০০-৪৫০ কেজি।
উৎস দেশ : ইন্ডিয়ার গুজরাটের সৌরাষ্ট্র এবং পার্শবর্তী 'গির' জঙ্গল এলাকার গরু বলেই জঙ্গল এর নাম এর সাথে মিল রেখে এটার নামকরণ হয়েছে 'গির'। তবে গুজরাটের আদি গরু হলেও পৃথিবীর এমন কোনো গরু পালনকারী শীতপ্রধান বা উষ্ণমণ্ডলীয় দেশ নাই যেখানে গির বা গির থেকে উন্নয়ন করা গরু পালন করা হয় না। এমনকি আমেরিকাতে উন্নয়ন করা যে ব্রহ্মা বা ব্রাহমা মাংসের গরু জনপ্রিয় হয়েছে সেটাও উন্নয়ন করা হয়েছে উনিশ শতকে ব্রাজিলে গির, কংকরেজ আর অঙ্গল থেকে উন্নয়ন করা 'ইন্দুব্রাজিল' থেকে। ইন্ডিয়ান ইন্ডিজেনাস জাতের গরু হলেও এখন পৃথিবীতে গিরের সবচে বেশি জনপ্রিয়তা ব্রাজিলে। ইন্ডিয়াতে এক গবেষণায় দেখা গেছে বর্তমানে গুজরাটে যেখানে ৫০০০ ইন্ডিজেনাস গির রয়েছে সেখানে ব্রাজিলে রয়েছে ৫ মিলিয়ন এর অধিক গির জাতের গরু।
ইতিহাস : গির ইন্ডিয়ার অতি পুরানো গরু এবং গুজরাট এবং পার্শবর্তী অঞ্চলে হাজার বছর ধরে পালন করা হলেও কবে থেকে পালন শুরু হয়েছে এর সঠিক ইতিহাস পাওয়া যায় না। তবে ধারণা করা হয় ৩০০০ বছর পূর্ব থেকে এই জাতের গরু গুজরাটের গির জঙ্গল এর পার্শবর্তী অঞ্চলে পালন করা হয়। পরবর্তীতে এটা ইন্ডিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে দুধের গরু হিসাবে বিস্তার লাভ করে। পাকিস্তানী ডুয়াল পারপাস সবচে ভালো গরু সাহিওয়াল এবং লাল সিন্ধির সাথে প্রতিযোগীতা করে গির ইন্ডিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো ডুয়াল পারপাস গরু হিসাবে টিকে রয়েছে। ব্রাজিল ১৮৫০ সালে অন্ধ্র প্রদেশ থেকে অঙ্গল এবং গুজরাট থেকে গির এবং কংকরেজ জাতের গরু আমদানি করে সেখানে গিরের জাত উন্নয়ন করা হয়। এছাড়া পরবর্তী বিভিন্ন দেশ তাদের জাত উন্নয়নের জন্য গির গরু আমদানি করে।
পালনকারী দেশ এবং সংখ্যা : যদিও গির ইন্ডিয়ার ইন্ডিজেনাস গরু কিন্তু পৃথিবীর সবচে বেশি গির পালন করা হয় ব্রাজিলে। ইন্ডিয়াতে বিশুদ্ধ গিরের সংখ্যা মাত্র ৫ হাজার। উনিশ শতকে ব্রাজিলে গির, কংকরেজ আর অঙ্গল থেকে উন্নয়ন করা 'ইন্দুব্রাজিল' মাংসের জন্য একটা বিখ্যাত জাত। এছাড়া ১৯৭৬ সালে ব্রাজিল তাদের নিজস্ব 'মোকো ন্যাশনাল' গরুর সাথে ক্রস এর মাধ্যমে যে নতুন 'রেড পোল ক্যাটল' নামের দুধের জাত সৃষ্টি করেছে, এটাই সেখানে প্রকৃত গির নামে পরিচিত। ব্রাজিলে বর্তমানে ৫ মিলিয়ন গির গরু পালন করা হয়। ব্রাজিল ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের নামিবিয়া, জাম্বিয়া, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা সহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে গির অথবা গির থেকে উন্নয়ন করা গরু পালন করা হয়। কোথাও মাংসের জন্য আবার কোথাও দুধের জন্য জাত উন্নয়নে এই জাতের গরু ব্যবহার করা হয়।
বৈশিষ্ট ও সুবিধা : গারো লাল গিরের প্রধান রং হলেও হালকা হলুদাভ ও সাদা রঙের হয়ে থাকে। এছাড়া কালো রং এর গির ও দেখা যায়। মোটা এবং পিছনে দিকে বাঁকানো সিং এবং চওড়া কপাল গিরের চেহারাতে আভিজাত্যের ছাপ এনে দিয়েছে। চওড়া কপাল অতি উষ্ণ আবহাওয়াতে গিরের শরীর ঠান্ডা করার রেডিওটর হিসাবে কাজ করে। লম্বা ঝুলানো কান এবং জেবু জাতের গরুর মধ্যে সবচে উঁচু চুট গির গরুতে এনে দিয়েছে সৌন্দের্যের এক বিশেষ মাত্রা। গির গরু উষ্ণ এবং আদ্র আবহাওয়াতে খুব ঘাম দেয়। যার ফলে তাপ নিয়ন্ত্রণ এবং বিভিন্ন প্রকার পরজীবী নিয়ন্ত্রণ নিয়ন্ত্রণ এই জাতের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট। জেবু জাতের গরুর মধ্যে সবচে শান্ত এবং অনুগত গরু হিসাবে পরিচিত গির মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠ থাকতে পছন্দ করে। এই জাতের ষাঁড় গরু পুরো গরুর পালের নিরাপত্তা প্রহরী হিসাবে কাজ করে। অত্যন্ত রোগ প্রতিরোধী এই জাতের গরু পালন খুবই সহজ এবং যেকোনো খাবারে এরা অভ্যস্ত। গির জাতের গরু ২০-২৪ মাসে প্রথম প্রজননক্ষম হয় এবং গাভী ৩০-৩৪ মাসে প্রথম বাচ্চা দেয়।
গরুর নাম : বস ইন্ডিয়াকাস জাতের ইন্ডিয়ান যে গরুটি পৃথিবীব্যাপী সবচেয়ে বেশি জাত উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে সেটাই হচ্ছে গ্রীষ্মন্ডলীয় চরম আবহাওয়ার গরু ‘গির’ বা গুজরাটি বা দেশান। ইন্ডিয়ান নিজস্ব জাত গুলোর মধ্যে সবচে ভালো ডুয়াল পারপাস ( দুধ ও মাংস) গরু হচ্ছে আমাদের আজকের গরু। ব্রাহমা ছাড়াও এটাকেও ইন্ডিয়ার পবিত্র গরু বলে মনে করা হয়।
গড় ওজন : ষাঁড় : ৫৫০ - ৭০০ কেজি।
গাভী ৪০০-৪৫০ কেজি।
উৎস দেশ : ইন্ডিয়ার গুজরাটের সৌরাষ্ট্র এবং পার্শবর্তী 'গির' জঙ্গল এলাকার গরু বলেই জঙ্গল এর নাম এর সাথে মিল রেখে এটার নামকরণ হয়েছে 'গির'। তবে গুজরাটের আদি গরু হলেও পৃথিবীর এমন কোনো গরু পালনকারী শীতপ্রধান বা উষ্ণমণ্ডলীয় দেশ নাই যেখানে গির বা গির থেকে উন্নয়ন করা গরু পালন করা হয় না। এমনকি আমেরিকাতে উন্নয়ন করা যে ব্রহ্মা বা ব্রাহমা মাংসের গরু জনপ্রিয় হয়েছে সেটাও উন্নয়ন করা হয়েছে উনিশ শতকে ব্রাজিলে গির, কংকরেজ আর অঙ্গল থেকে উন্নয়ন করা 'ইন্দুব্রাজিল' থেকে। ইন্ডিয়ান ইন্ডিজেনাস জাতের গরু হলেও এখন পৃথিবীতে গিরের সবচে বেশি জনপ্রিয়তা ব্রাজিলে। ইন্ডিয়াতে এক গবেষণায় দেখা গেছে বর্তমানে গুজরাটে যেখানে ৫০০০ ইন্ডিজেনাস গির রয়েছে সেখানে ব্রাজিলে রয়েছে ৫ মিলিয়ন এর অধিক গির জাতের গরু।
ইতিহাস : গির ইন্ডিয়ার অতি পুরানো গরু এবং গুজরাট এবং পার্শবর্তী অঞ্চলে হাজার বছর ধরে পালন করা হলেও কবে থেকে পালন শুরু হয়েছে এর সঠিক ইতিহাস পাওয়া যায় না। তবে ধারণা করা হয় ৩০০০ বছর পূর্ব থেকে এই জাতের গরু গুজরাটের গির জঙ্গল এর পার্শবর্তী অঞ্চলে পালন করা হয়। পরবর্তীতে এটা ইন্ডিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে দুধের গরু হিসাবে বিস্তার লাভ করে। পাকিস্তানী ডুয়াল পারপাস সবচে ভালো গরু সাহিওয়াল এবং লাল সিন্ধির সাথে প্রতিযোগীতা করে গির ইন্ডিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো ডুয়াল পারপাস গরু হিসাবে টিকে রয়েছে। ব্রাজিল ১৮৫০ সালে অন্ধ্র প্রদেশ থেকে অঙ্গল এবং গুজরাট থেকে গির এবং কংকরেজ জাতের গরু আমদানি করে সেখানে গিরের জাত উন্নয়ন করা হয়। এছাড়া পরবর্তী বিভিন্ন দেশ তাদের জাত উন্নয়নের জন্য গির গরু আমদানি করে।
পালনকারী দেশ এবং সংখ্যা : যদিও গির ইন্ডিয়ার ইন্ডিজেনাস গরু কিন্তু পৃথিবীর সবচে বেশি গির পালন করা হয় ব্রাজিলে। ইন্ডিয়াতে বিশুদ্ধ গিরের সংখ্যা মাত্র ৫ হাজার। উনিশ শতকে ব্রাজিলে গির, কংকরেজ আর অঙ্গল থেকে উন্নয়ন করা 'ইন্দুব্রাজিল' মাংসের জন্য একটা বিখ্যাত জাত। এছাড়া ১৯৭৬ সালে ব্রাজিল তাদের নিজস্ব 'মোকো ন্যাশনাল' গরুর সাথে ক্রস এর মাধ্যমে যে নতুন 'রেড পোল ক্যাটল' নামের দুধের জাত সৃষ্টি করেছে, এটাই সেখানে প্রকৃত গির নামে পরিচিত। ব্রাজিলে বর্তমানে ৫ মিলিয়ন গির গরু পালন করা হয়। ব্রাজিল ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের নামিবিয়া, জাম্বিয়া, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা সহ পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে গির অথবা গির থেকে উন্নয়ন করা গরু পালন করা হয়। কোথাও মাংসের জন্য আবার কোথাও দুধের জন্য জাত উন্নয়নে এই জাতের গরু ব্যবহার করা হয়।
বৈশিষ্ট ও সুবিধা : গারো লাল গিরের প্রধান রং হলেও হালকা হলুদাভ ও সাদা রঙের হয়ে থাকে। এছাড়া কালো রং এর গির ও দেখা যায়। মোটা এবং পিছনে দিকে বাঁকানো সিং এবং চওড়া কপাল গিরের চেহারাতে আভিজাত্যের ছাপ এনে দিয়েছে। চওড়া কপাল অতি উষ্ণ আবহাওয়াতে গিরের শরীর ঠান্ডা করার রেডিওটর হিসাবে কাজ করে। লম্বা ঝুলানো কান এবং জেবু জাতের গরুর মধ্যে সবচে উঁচু চুট গির গরুতে এনে দিয়েছে সৌন্দের্যের এক বিশেষ মাত্রা। গির গরু উষ্ণ এবং আদ্র আবহাওয়াতে খুব ঘাম দেয়। যার ফলে তাপ নিয়ন্ত্রণ এবং বিভিন্ন প্রকার পরজীবী নিয়ন্ত্রণ নিয়ন্ত্রণ এই জাতের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট। জেবু জাতের গরুর মধ্যে সবচে শান্ত এবং অনুগত গরু হিসাবে পরিচিত গির মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠ থাকতে পছন্দ করে। এই জাতের ষাঁড় গরু পুরো গরুর পালের নিরাপত্তা প্রহরী হিসাবে কাজ করে। অত্যন্ত রোগ প্রতিরোধী এই জাতের গরু পালন খুবই সহজ এবং যেকোনো খাবারে এরা অভ্যস্ত। গির জাতের গরু ২০-২৪ মাসে প্রথম প্রজননক্ষম হয় এবং গাভী ৩০-৩৪ মাসে প্রথম বাচ্চা দেয়।
দুধে স্বর্ণ একটা পোস্টীক তত্ব যা দেশী গরুর দুধ ও মূত্রে পাওয়া য়ায়
দুধ ও মাংস উৎপাদন : ইন্ডিয়াতে গিরের গড় দুধ উৎপাদন ১৬০০-১৮০০ কেজি হলেও ৩১০০ কেজি দুধ উৎপাদনের রেকর্ড ইন্ডিয়াতে রয়েছে। ইন্ডিয়া তে 'হিরাল' নামের গির গরুর এক উৎপাদন সময়ে ৮২০০ লিটার দুধ দেয়ার রেকর্ড রয়েছে। তবে ব্রাজিলে গির জাতের গরুর গড় দুধ উৎপাদন ৩০০০-৩২০০ কেজি। এবং সেখানে 'শিরা' নামের এক গির গরুর ৬২ লিটার দুধ দেয়ার রেকর্ড রয়েছে। এই জাতের গাভী ৪ মাস পর্যন্ত দুধ উৎপাদন ঠিক থাকে। এরপরে দুধ উৎপাদন দ্রুত কমে যায়। তবে কমে গেলেও ২৮০-৩০০ দিন পর্যন্ত দুধ উৎপাদন চলতে থাকে। তবে ছোট উৎপাদনকাল এবং গাভীতে সিমেন দেয়ার পর দ্রুত দুধ কমে যাওয়া দুধ উৎপাদনের গরু হিসাবে এই জাতের প্রধান সমস্যা। তবে উচ্চমাত্রার ফ্যাট এবং A2 মিল্ক প্রোটিন সমৃদ্ধ গিরের দুধ খুবই সুস্বাদু। অন্যান্য জেবু জাতের গরুর মতো এই জাতের গরুতে রয়েছে ৪.১ -৪.৯ মাত্রার ফ্যাট এবং প্রায় সময় পরিমান মিল্ক প্রোটিন। আর এই জাতের ষাঁড় বড় জাতের হয়ে থাকে এবং মাংস সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদা ও বেশি। যে বৈশিষ্ট্য 'গির' কে জেবু জাতের অন্য গরু থেকে শ্রেষ্ঠত্ব এনে দিয়েছে সেটা হলো দ্রুত শারীরিক বৃদ্ধি। গির বাছুর খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব : যেহেতু গির জাতের গরু ভালো মানের এবং উচ্চ প্রোটিন ও ফ্যাট যুক্ত A2 দুধ উৎপাদন করে তাই এই জাতের দুধের রয়েছে উচ্চমূল্য এবং অধিক চাহিদা। এছাড়া এই জাতের গরুর মাংস ও যেহেতু খুব সুস্বাদু এবং ষাঁড় এর সাইজও ও যেহেতু বড় হয়ে থাকে, তাই মাংসের জন্য গির পালন লাভ জনক। তবে এই জাতের সবচে বেশি গুরুত্ব যে কারণে সেটা হলো জাত উন্নয়ন। আমাদের দেশে যতগুলো বড় খামার আছে, যারা জাত উন্নয়ন করেছে, তাদের প্রত্যেকের কাছে এই জাতের গরু আছে। কারণ গির এর সাথে উন্নয়ন করা ফ্রিজিয়ান বা জার্সি জাতের গাভী উপমহাদেশের অন্য যেকোনো জাতের গভীর চেয়ে শক্ত, রোগ প্রতিরোধী, অধিক ও উন্নত মানের দুধ, দেখতে সুন্দর এবং সাইজ ও বড় হয়ে থাকে। গির একটি উচ্চ প্রজননক্ষম গরু। বস ইন্ডিকাস জাতের অন্য গরুর জন্য যেখানে গড়ে ১.৬ টা সিমেন স্ট্রিপ দরকার হয়, সেখানে এই জাতের জন্য দরকার হয় গড়ে স্ট্রিপ দরকার হয় ১.৩ টা। এই জাতের গরু যেহেতু বস ইন্ডিকাস জাতের মধ্যে সবচে উচ্চ প্রজননক্ষম, তাই একটি গির গাভী জীবনকালে গড়ে ১২ টি বাচ্চা দেয়।
'গির' গরু পালনে সমস্যা : গির যেহেতু উপমহাদেশের বস ইন্ডিকাস জাতের গরু তাই দুধ উৎপাদনকাল ইউরোপের বস টোরাস জাতের ক্রস এর চেয়ে ছোট এবং দুধ উৎপাদন কম লাভজনক। এছাড়া এই জাতের গরু ইউরোপের ক্রস জাতের গরুর চেয়ে প্রথম বাচ্চা দিতে ৪ মাস সময় বেশি লাগে। ক্রস জাতের গরু যেখানে ২৮ মাসের মধ্যে প্রথম বাচ্চা দেয় সেখানে এই জাতের সময় লাগে ৩০-৩৪ মাস।
জীবনকাল : একটি গির গরুর গড় জীবনকাল সাধারণত ২০-২২ বছর। এই জাতের গরু যেহেতু বস ইন্ডিকাস জাতের মধ্যে সবচে উচ্চ প্রজননক্ষম, তাই একটি গির গাভী জীবনকালে গড়ে ১২ টি বাচ্চা দেয়।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব : যেহেতু গির জাতের গরু ভালো মানের এবং উচ্চ প্রোটিন ও ফ্যাট যুক্ত A2 দুধ উৎপাদন করে তাই এই জাতের দুধের রয়েছে উচ্চমূল্য এবং অধিক চাহিদা। এছাড়া এই জাতের গরুর মাংস ও যেহেতু খুব সুস্বাদু এবং ষাঁড় এর সাইজও ও যেহেতু বড় হয়ে থাকে, তাই মাংসের জন্য গির পালন লাভ জনক। তবে এই জাতের সবচে বেশি গুরুত্ব যে কারণে সেটা হলো জাত উন্নয়ন। আমাদের দেশে যতগুলো বড় খামার আছে, যারা জাত উন্নয়ন করেছে, তাদের প্রত্যেকের কাছে এই জাতের গরু আছে। কারণ গির এর সাথে উন্নয়ন করা ফ্রিজিয়ান বা জার্সি জাতের গাভী উপমহাদেশের অন্য যেকোনো জাতের গভীর চেয়ে শক্ত, রোগ প্রতিরোধী, অধিক ও উন্নত মানের দুধ, দেখতে সুন্দর এবং সাইজ ও বড় হয়ে থাকে। গির একটি উচ্চ প্রজননক্ষম গরু। বস ইন্ডিকাস জাতের অন্য গরুর জন্য যেখানে গড়ে ১.৬ টা সিমেন স্ট্রিপ দরকার হয়, সেখানে এই জাতের জন্য দরকার হয় গড়ে স্ট্রিপ দরকার হয় ১.৩ টা। এই জাতের গরু যেহেতু বস ইন্ডিকাস জাতের মধ্যে সবচে উচ্চ প্রজননক্ষম, তাই একটি গির গাভী জীবনকালে গড়ে ১২ টি বাচ্চা দেয়।
'গির' গরু পালনে সমস্যা : গির যেহেতু উপমহাদেশের বস ইন্ডিকাস জাতের গরু তাই দুধ উৎপাদনকাল ইউরোপের বস টোরাস জাতের ক্রস এর চেয়ে ছোট এবং দুধ উৎপাদন কম লাভজনক। এছাড়া এই জাতের গরু ইউরোপের ক্রস জাতের গরুর চেয়ে প্রথম বাচ্চা দিতে ৪ মাস সময় বেশি লাগে। ক্রস জাতের গরু যেখানে ২৮ মাসের মধ্যে প্রথম বাচ্চা দেয় সেখানে এই জাতের সময় লাগে ৩০-৩৪ মাস।
জীবনকাল : একটি গির গরুর গড় জীবনকাল সাধারণত ২০-২২ বছর। এই জাতের গরু যেহেতু বস ইন্ডিকাস জাতের মধ্যে সবচে উচ্চ প্রজননক্ষম, তাই একটি গির গাভী জীবনকালে গড়ে ১২ টি বাচ্চা দেয়।
২০০৫ সালে পোলিশ জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজের একটা রিপোর্ট অনুসারে। "The content of Microelements and Trace Elements in Raw Milk from Cows in the Silesian Region" শীর্ষক রিপোর্ট খানিকটা এই ধরণের কথাই বলছে। মধ্য ইউরোপের সিলেসিয়া অঞ্চলের বেশিরভাগটাই পোলান্ডের মধ্যে পড়ে। তাই এই উচ্চ সিলেসিয়া আর নিম্ন সিলেসিয়া অঞ্চলের গরু আর সেই গরুর দুধের মধ্যে থাকা খনিজের পরিমাণ, ব্যবধান নিয়ে গবেষণা। দেখা গিয়েছে অঞ্চল ভেদে গরুর দুধের প্রভাব রয়েছে। আর এই রিপোর্টেই, গরুর দুধে ১৬টি খনিজের মধ্যে রয়েছে অরাম বা সোনা।
এখন শুধু গরু নয়। অনেক প্রাণীর দেহেও সোনা মেলে। ৯৮ সালে জন এমসলের লেখা গবেষণাপত্রে মানুষের শরীরেও সোনার অস্তিত্ব দেখানো হয়েছে। ৭০ কেজি ওজনের একজন মানুষের শরীরে ০.২ মিলিগ্রাম সোনা রয়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীর।
তবে এতে অবশ্য গরুর শরীরে ভরপুর সোনা আর তা থেকে স্বর্ণবর্ণা দুধের যুক্তি দাঁড় করানো যায় না। কিন্তু সোনা যে আছে, তা ঠিক। এবং তা প্রাকৃতিক কারণেই। ফলে বক্তব্য পুরোটা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এবার আসা যাক স্বর্ণনাড়ির প্রসঙ্গে।
এটা স্রেফ শাস্ত্র কথা। দিলীপ বাবুর মনগড়া গপ্পো মোটেই নয়। সেখানে একে বলা হচ্ছে সূর্যকেতু নাড়ি। ওই সূর্য থেকে কুঁজ হয়ে সোনা তৈরির যে বক্তব্য, সেটাই রয়েছে প্রাচীন শাস্ত্রে। গরুর কুঁজের মধ্যে দিয়ে নাকি গিয়েছে এই সূর্যকেতু নাড়ি। যার সঙ্গে সূর্যের সরাসরি সংযোগ। শাস্ত্রমতে সেই কারণেই ঘি, মাখন ও দুধ স্বর্ণরঙা। এই রঙ নিয়ে বিজ্ঞান অবশ্য বলে বিটা ক্যারোটিনের কথা। গরু যেহেতু ঘাস-খড় খেয়ে থাকে, সেখান থেকে বিটা ক্যারোটিনের জেরে এই রঙ। যাইহোক বিজ্ঞান-শাস্ত্রের দ্বন্দ্ব চলতে থাকুক। দিলীপ ঘোষ এখানে শাস্ত্রকথা শুনিয়েছেন। এই কথা নতুন কিছু না। আদৌ সূর্যকেতু নাড়ি বা দিলীপ বাবুর স্বর্ণনাড়ির অস্তিত্ব আছে কি না, তা নিয়ে তর্ক চলতেই পারে।
এবার হাম্বা গরু আর আন্টি গরুর দুধের গুণগতমানের প্রশ্ন। ভারতীয় কুঁজওয়ালা গরুর দুধ নিঃসন্দেহে গুণগতভাবে অনেক উন্নত। বিশেষ করে গুজরাটের গিরের গরুর নামডাক অনেক। উন্নত দেশগুলিতেও এখন কুঁজওয়ালা গরুর চাহিদা বাড়ছে। এখানেই আসে A1 এবং A2 দুধের তুলনা। ভারতীয় গরুর দুধ A2 পর্যায়ের। দুই রকম দুধে বিটা কেসিনের তারতম্য রয়েছে। A1 বিটা কেসিন হজমের সময় বিটা ক্যাসামরফিন-৭-এর মতো ওপিওয়েড পেপটাইড নিঃসৃত হয়, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে একটু ক্ষতিকর বলেই অনেকে মনে করেন। হজমেও গোলমাল হয়। এই কারণেই কুঁজওয়ালা গরুর A2 দুধের চাহিদা বেড়েছে। আর এই নিয়ে বিস্তর রাজনীতি ও ব্যবসায়িক স্বার্থও জড়িয়ে রয়েছে। কেথ উডফোর্ডের Devil in the Milk বলে একটা বইও আছে এই নিয়ে। দেশী গরু বলতে কিন্তু বস ইন্ডিকাসের কথাই এখানে বলছি। হাইব্রিড জার্সি গরু নয়। জার্সি গরু দুধ দেয় বেশি। ভারতের দুগ্ধ বিপ্লব এই ডেয়ারি শিল্পে অনেক হিসেব পাল্টে দিয়েছে। ব্যবসা বেড়েছে যত, তত গরুর আভিজাত্য নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে এক শ্রেণির। মিল্ক পলিটিক্স আর বিজনেসের ঝামেলা নিয়ে না হয় আরেকদিন লেখা যাবে। কিন্তু এটা বিজ্ঞানসম্মত ভাবেই ঠিক, দিলীপ ঘোষের হাম্বা গরুর দুধের মান বেশি। এখন এটা ওই সূর্য, সোনা আর স্বর্ণ নাড়ির দৌলতে কি না সে ভাবার বিষয়। আর জায়গা আর পরিবেশগত প্রভাবে গরুর কুঁজে কেমিক্যাল লোচার বিষয়টিও খুব একটা অবৈজ্ঞানিক নয়।
গরু নিয়ে বিজেপি শিবিরের 'বাড়াবাড়ি' অনেকেই ভাল চোখে দেখেন না। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে, এই গরুই কিন্তু প্রাচীন ভারতের অর্থনীতির অন্যতম নিয়ন্ত্রক। আর এখনও গরু যথেষ্ট অর্থকরী পশু!জার্সি বা বিদেশি গাই-এর দুধে এমন প্রোটিন থাকছে যা শরীরে ক্ষতিই করছে৷ ১৯৯২ সালে নিউজিল্যান্ডের গবেষক ডক্টর এলিয়ট ও তাঁর টিম বিভিন্ন গরুর দুধ নিয়ে পরীক্ষা করেন৷ সেখানেই উঠে আসে ভয়ঙ্কর তথ্য যার নাম A1 প্রোটিন!১৯৯২ সালে ডক্টর এলিয়ট এবং পরে ভারতীয় প্রাণীবিদ ডক্টর এন মুরলি যিনি Department of Animal Genetics and Breeding at the Veterinary College and Research Institute in Namakkal এর প্রধান ছিলেন, তিনিও দুধে পাওয়া A1 প্রোটিন নিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেন।
কী সমস্যা হয় A1 প্রোটিনে? ডঃ এলিয়টদের গবেষণা বলছে , A1 মধুমেহ, আরথ্রাইটিস এমনকি ক্যান্সারের প্রবণতা বাড়ায়। শরীরে ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করে। অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বব এলিয়ট জানান, আমেরিকার চারজন মানুষের মধ্যে একজন যে সমস্ত শারীরিক অসুস্থতা বোধ করেন তাঁর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব যদি তাঁরা প্রতিদিন A1 টাইপ দুধ বন্ধ করে A2 টাইপ দুধ পান শুরু করেন৷জার্সি বাদ দিলে, ৭৫ রকমের দেশি গরুর প্রজাতি রয়েছে৷ যার মধ্যে ৩০টি প্রজাতি পাওয়া যায় কেবলমাত্র ভারতে। এই দেশি গরুর দুধে A1 প্রোটিন পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। দেশি গরুর দুধে প্রোটিনের যে প্রকারটি পাওয়া যায় সেটি হল A2, এটি স্বাস্থ্যের জন্য সোনার মতোই উপকারী।
ভারতীয় দেশী গরুর দুধের গুরুত্ব বুঝতে হলে পড়ুন * Devil IN The MILK * Revision Book * www.chelseagreen.com * প্রফেসর কেইথ উডফোর্ডের লেখা ।
ভারতীয় দেশী গরু (গরু ও নন্দী) এবং বিদেশী গরুর মধ্যে পার্থক্য *
ভারতীয় 1. টি গরুর বৈজ্ঞানিক নাম বস ইন্ডিয়ান । বিদেশী গরুর বৈজ্ঞানিক নাম BOSS TAURUS ।
2. টি ভারতীয় দেশী গরুর পিছনে আধা-সার্কুলার ভাসাইন্ড (HUMP) আছে । বিদেশী গরুর পিঠ সহজ ।
3. ভারতীয় দেশী গরুর একটি গোল ব্যাকড্রপ আছে । বিদেশী গরুর পুসি ব্যাকসাইড সহজ ।
4. ভারতীয় দেশী গরুর গলার নিচে একটি ঝালর আছে, যা গরুকে গুড়িয়ে পরম সুখ দেয় । বিদেশী গরুর গলায় ঝালাই নেই ।
5. ভারতীয় দেশী নন্দী বা জামিন প্রতি ঋতুতে বেশি পরিশ্রমী ও বন্ধুত্বপূর্ণ । বিদেশী ষাঁড়রা তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে যায় এবং গরম সহ্য করতে পারে না ।
ভারতের 6. টি গরুর চোখে ভালোবাসার অনুভূতি দেখা যায় । বিদেশী গরুর চোখে ভয়াবহতা আছে ।
7. ভারতীয় দেশি গরুর বাছুর হাম্মা বা মা শব্দটির মত আওয়াজ দেয় । বিদেশী গরুর বাছুর হাস্কি এবং উদ্ভট শব্দ করে ।
8. ভারতীয় দেশী গরুর সূর্যাস্ত আছে ভাসিন্দায় যা সূর্যরশ্মির কারণে জেগে ওঠে গরুর দুধে সোনালী অংশ তৈরি করে বিশেষ ধরনের ক্যারোটিন উপাদান দিয়ে, যা গরুর দুধে হলুদ করে তোলে । বিদেশী গরুর দুধ সাদা ।
9. ভারতীয় দেশী গরুর লম্বা শিং আছে । বিদেশী গরুর শিং ছোট ।
ভারতীয় 10. টি দেশি গরু দেখতে সুন্দর এবং শ্বাসরুদ্ধকর । বিদেশী গরুগুলো অদ্ভুত এবং দেখতে ভয়ঙ্কর ।
11. ভারতীয় দেশী গাভী কম খায় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী । বিদেশী গরু যত পারে খায়, রিজার্ভ খালি করে ।
12. টি ভারতীয় গরুর গোবর সুস্থ থাকলে না এর সমান । বিদেশী গরুর গন্ধ গোবরের ময়লার মত ।
14. ভারতীয় দেশি গরুর দুধ হালকা ও হজমে মিষ্টি । বিদেশী গরুর দুধ হজম করতে সময় লাগে ।
15. টি গোরোচান আইটেম শুধুমাত্র ভারতীয় দেশী গরুতে পাওয়া যায় । বিদেশী গরুচান উপাদান পায় না ।
16. ভারতীয় দেশী গরু মানুষের অনুভূতি, গলা, অঙ্গভঙ্গি খুব ভালো বোঝে । সেই অনুভূতিগুলো কর্তৃত্বপূর্ণ । বিদেশী গরুকে মানুষ মনে না করা সমান । তারা খুবই আবেগহীন ।
17. ভারতীয় দেশী গরু শীঘ্রই নতুন পরিবেশে বিলীন হবে । বিদেশী গরু নতুন পরিবেশে বিলীন হতে সময় নেয় ।
গোপালকের পরিবারের সুখ-দুঃখ বোঝে ভারতের 18. টি আদিবাসী গরু । পরিবারের কারো মৃত্যুতে ফোর্ড করা নিষেধ যতক্ষণ না পানি আর চোখ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয় । বিদেশী গরুগুলো বেহুশ ।
19. মহিলাদের দুধের সাথে ভারতের দেশি গরুর দুধের উপাদানের মিল আছে । হরমোন একই রকম । গর্ভাবস্থার সময়ও 9 মাস 9 দিনের সমান । মেয়েদের দুধ আর বিদেশী গরুর দুধে কোন মিল নেই । বিদেশী গরুর দুধ বিষাক্ত ।
20. ভারতীয় দেশি গরুর দুধে A2 beta casein ধরনের প্রোটিন থাকে, তাই ভারতীয় আদিবাসী গরুর দুধকে A2 দুধ বলা হয় । এ দুধের তৈরি ঘি কে এ ঘি বলে । বিদেশী গরুর দুধে এ বেটা কেসিন টাইপের প্রোটিন তাই বিদেশী গরুর দুধ এ দুধ । এ দুধের ঘি কে এ ঘি বলে ।
21. ভারতীয় আদিবাসী গরুর দুধে প্রলিন নামক অ্যামাইনো অ্যাসিডের ডিএনএতে 67 র্থ স্থান রয়েছে, যা পুষ্টিকর এবং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী । বিদেশী গরুর দুধে রয়েছে হেস্টিডাইন নামক অ্যামাইনো এসিড, যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক ।
22. ভারতীয় গরুর দুধে ডি 22. ভিটামিন আছে, যা এটিকে সেরা করে তোলে । বিসিএম 7 (বিটা ক্যাসো মর্ফাইন-7) বিদেশী গরুর দুধে । এটি একটি ক্ষতিকর পদার্থ যা অ্যামালিব্রেশন এর মধ্যে আসে, যার ফলে 80 ধরনের রোগ যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস টাইপ ওয়ান, অটিজম, স্কিজোফ্রেনিয়া
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ