মানব বিবর্তন বা মানুষের উৎপত্তি বলতে বিবর্তন এর মাধ্যমে অন্যান্য হোমিনিড থেকে একটি আলাদা প্রজাতি হিসেবে হোমো স্যাপিয়েন্স-দের উদ্ভবকে বোঝায়। এই বিষয়টি নিয়ে অধ্যয়ন করতে হলে বিজ্ঞানের অনেক শাখার সাহায্য নিতে হয়, যেমন: নৃবিজ্ঞান, প্রাইমেটবিজ্ঞান, জীবাশ্মবিজ্ঞান, প্রত্নতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব এবং জিনতত্ত্ব। কিন্তু বেদ বিজ্ঞানের আলোকে কি ভাবে মানুষের উৎপত্তি হয়েছে তা এখানে আলোচনা করবো।
(ঋক ১০/১৮/১০)
ভাবার্থঃ অারম্ব সৃষ্টিতে জীবের একমাত্র মাতা পৃথিবী ই হয়ে থাকে। অত এব সেই সময় মনুষ্যের ও অমৈথুনি সৃষ্টি হয়ে থাকে। নানা ভেদে মনুষ্য অাদি শরীরের প্রাদুর্ভাব হয়ে থাকে। অারম্ব সৃষ্টিতে পৃথিবী যুবতী। যে ভাবে কৃষি জমি কোমল হয়ে থাকে ঠিক তদ্রুপ।।১০।।
পদার্থঃ- ( পৃথিবি উচ্ছবঞ্চস্ব মা নিবাধথাঃ) হে পৃথিবী! তুমি জীব গর্ভকে ধারণ করিবার জন্য পুলকিত পৃষ্ঠা- উফনী স্বরূপ হয়ে থাক এজন্য যাহাতে এই জীবের পীড়া না হয় ( অস্মৈ সুপা যনা সুপবঞ্চনা ভব) এই জীবের জন্য শরীর ধারণ করানোর যোগ্য শোভন অাশ্রয় প্রদানকারী হও ( ভূমে মাতা পুত্রং যথা সিচা এনম্ অভি ঊর্ণ হি) হে ভূমি যেভাবে মাতা পুত্রকে জানিবার পশ্চাৎ দুগ্ধবান স্তনপার্শব দ্বারা অাবৃত করে তুমি ও বনস্পতি যুক্ত পার্শব দ্বারা ইহাকে অাচ্ছাদিত কর।১১।।
ভাবার্থঃ জীব গর্ভ যখন ভূমিতে এসে থাকে তো ভূমি উপরের পৃষ্ঠা পর পুলকিত উফনী হয়ে পোলি সর হয়ে জমাট বাধে যাহাতে অাসানীর সহিত জীব বাড়িতে পারে এবং এই গর্ভের অাবশ্যকতাকে পুরন করতে পারে। গর্ভ পূর্ণ হতেই তাহার উপরের উভরনে বাহির প্রকট করিবার যোগ্য হয়ে থাকে। তথা বাইরে প্রকট হয়ে যাবার পরে ঔষধি দ্বারা তাহাকে পোষণ করে অতএব সেই সময় জীব সর্ব প্রকার কুশল কুমার অবস্থায় উৎপন্ন হয়ে থাকে।।১১।।
★ বহু প্রকার জীব নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত উৎপন্ন হতে থাকে এবং সঙ্গ দ্বারা তারা একত্রিত হয়★
।। উচ্ছবঞ্চমানা পৃথিবী সু তিষ্ঠতু সহত্রং মিত উপ হি শ্রযন্তাম্। তে গৃহাসো ভবন্তু বিশবাহাস্যৈ শরণাঃ সন্তবত্র।। ১২।।
পদার্থঃ- ( উচ্ছবঞ্চমানা পৃথিবী সুতিষ্ঠতু) যখন পুলকিত পৃষ্ঠা উফনী হয়ে - পলি হয়ে পৃথিবী হয়ে যায় তখন ( সহত্রং মিতঃ হি উপশ্রযন্তাম্) বহু সংখ্যা প্রাপ্ত জীব তাহাতে অাশ্রিত থাকে ( তে গৃহাসঃ ঘৃতশ্চুতঃ ভবন্তু অস্মৈ বিশ্বাহা অত্র শরণঃ সন্তু) জীবাত্মার জন্য এ গর্ভগৃহ রসপূর্ণ এবং সর্বদা অাশ্রায় প্রাদানকারী হয়ে থাকে।।১২।।
ভাবার্থঃ জীব সৃষ্টির জন্য পৃথিবীর উপর পলী এবং মৃদু কিছু কাল পর্যন্ত হতে থাকে। পুঃন তাহাতে অসংখ্য জীব অাশ্রিত থাকে। অতএব অাজ পর্যন্ত ও স্ব স্ব জাতীয় সঙ্গে রহিবার স্বভাব প্রায় সব জীবের মধ্যে বর্তমান। অাত্মার জন্য গর্ভগৃহ স্বভাবিক রস প্রদান করে শরণীয় হয়।। ১২।।
পৃথিবীর সব থেকে উচুতম স্থানে সর্বপ্রথম অমৈথুনি স্থলচর প্রানী এবং মানুষ সৃষ্টি হয়েছিল।।
।। উতে স্তভ্রামি পৃথিবীং ত্বৎপরীমং লোগং নিদধন্মো অহং রিষম্। এতাং স্থূর্ণা পিতরো ধারযন্তু তেহত্রা যমঃ সাদনা তে মিনোতু।। ১৩।।
পদার্থঃ- ( পৃথিবীং তো উত স্তভনামি) হে জীব! তোমাদের জন্য অামি ঈশ্বর, পৃথিবীকে জলমিশ্রিত ভূগোল দ্বারা উপরে ভূভাগকে স্থাপন করছি ( ইমং ত্বত্ লোগং পরিনিদ্ধত্ ম উ অহং রিষম্) ওই স্থানে তোমাদের এই গর্ভকোশকে স্থাপন করে ও পীড়া মুক্ত রাখি অর্থাৎ অামি তোমাদের পীড়া দেই না ( এতাং স্থূণাং পিতরঃ ধারযন্তু) এই উপরে উদিত ভূভাগকে সূর্য কিরণ পালন পোষণ করে ( তত্র যমঃ তে সদনা মিনোতু) সূর্য তোমাদের জন্য সর্ব অাবশ্যক পুষ্টি কোষ প্রাপ্ত করাবে।।১৩।।
ভাবার্থঃ প্রাক্ সৃষ্টি ভূগোলের উঁচু ভাগ পরে হয়ে থাকে। এই ভাগ জলমিশ্রিত ভূগোল পর্বত ভূমির রূপে উপরে জেগে যায়। সেই জাগরিত ভূভাগকে সূর্যের রশ্নি ধারণ করে থাকে এবং সূর্য নিজের রশ্নি দ্বারা জীবাদির গর্ভকে প্রাপ্ত করিয়ে থাকে, অতএব তাহার দ্বিতীয় নাম সবিতা।।১৩।।
সত্যার্থপ্রকাশে দয়ানন্দজী যে ভাবে সৃষ্টি তত্ব এবং ভৌগলিক স্থান নির্দেশ করেছিল তাহা বেদ সিদ্ধ।। আপনারা সত্যার্থ প্রকাশের সহিত বিষয়টি ভাল করে মিলিয়ে নিন।।
পরমাত্মার সৃষ্টিতে বহু মনুষ্যের উৎপত্তি করেছিলেন
[অসংখ্য প্রজা সৃষ্টি করেছিলেন]
বেদ০
তং য়জ্ঞং বর্হিষি প্রৌক্ষন্ পুরুষং জাতমগ্রতঃ।
তেন দেবাহঅয়জন্ত সাধ্যাহঋষয়শ্চ য়ে।। (যজু০ ৩১/৯)
ভাষার্থঃ (তং) ওই (য়জ্ঞং) পুজনীয়, (অগ্রতঃ জাতম্) সর্ব প্রথমে, প্রাদুর্ভূত জগতের কর্তা, (পুরুষম্) পূর্ণ পরমেশ^রকে (অগ্রতঃ) সৃষ্টির পূর্বে (বর্হিষি) বিদ্যমান মহান ব্রহ্ম-রূপ যজ্ঞে (প্র ঐক্ষন্) উত্তম অভিষিক্ত করিয়ে। (তেন) ওই জ্ঞানময় পরম পুরুষ থেকে (সাধ্যাঃ) যোগাভ্যাস আদির সাধনাকারী জ্ঞানী আর (ঋষয়ঃ চ) ঋষিগণ (য়েচ) আর যদিও তাহারা (অয়জন্ত) পরমেশ্বরের উপাসনা করেন।। ৯।।
ভাবার্থঃ পরমাত্মা সৃষ্টিতে যোগাভ্যাস আদি সাধনার জন্য অনেক জ্ঞানী ঋষিগণ [নর-নারী] উৎপন্ন করেছিল।। ৯।।
ভাষ্যঃ পণ্ডিত জয়দেব শর্মা বিদ্যালঙ্কার
উপনিষদ০
তস্মাদগ্নিঃ সমিধো য়স্য সূর্য়ঃ সোমাত্ পর্জন্য ওষধয়ঃ পৃথিব্যাম্।
পুমান্ রেতঃ নিঞ্চতি য়োষিতায়াং বহ্বীঃ প্রজাঃ পুরুষাত্ সম্প্রসূতাঃ।।(মুণ্ডকোপনিষদ ২/১/৫)
পদার্থঃ (তস্মাদ্) তাহার থেকে; (অগ্নিঃ) অগ্নি, তেজ; (সমিধঃ) অগ্নিকাষ্ঠ, প্রকাশক; (য়স্য) যাহাকে; (সূর্য়ঃ) সূর্য; (সোমাত্) সোম দ্বারা, স্রষ্টা থেকে; (পর্জন্যঃ) মেঘ; (ওষধপঃ) বনস্পতির; (পৃথিব্যাম্) পৃথিবীতে; (পুমান্) পুরুষ, [পুংলিঙ্গ প্রাণী]; (রেতঃ) বীর্যকে; (সিঞ্চতি) সিঞ্চন করে ঢেলে দিয়ে; (য়োষিতায়াম্) স্ত্রী [স্ত্রীলিঙ্গ প্রাণির] মধ্যে; (বহ্বী) বহু, অনেক; (প্রজা) প্রজা, সন্ততি; (পুরুষাত্) বিরাট পুরুষ হইতে; (সপ্রসূতা) উৎপন্ন হয়েছে।।৫।।
ভাবার্থঃ যে বিরাট-পুরুষের জন্য সূর্য অগ্নিকাষ্ঠ-রূপ হয়, অর্থাৎ যেরূপ অগ্নিকাষ্ঠ প্রদীপ্ত হয় না, ঐরূপ যে তেজের পুঞ্জ ভগবানের সম্মুখে সূর্য যেভাবে দীপ্তিমান তেজের পুঞ্জ অগ্নিকাষ্ঠে পদ্ধতি তেজ-হীন হয়, ওই বিরাট-পুরুষ থেকে অগ্নি উৎপন্ন হয়েছে। চন্দ্র যেরূপ পৃথিবীতে বর্ষার সিঞ্চন করেন আর তাহাতে ওষধির উৎপন্ন হয়, পুরুষ যেরূপ স্ত্রীতে বীর্যসিঞ্চন করেন আর তাহাতে প্রজা উৎপন্ন হয়, ইহা পদ্ধতি বিরাট-পুরুষ থেকেই সব-কিছু প্রসূত হয়।।৫।।
ভাষ্যঃ ডা. সত্যব্রত সিদ্ধান্তলঙ্কার
সোহকাময়ত বহু স্যাং প্রজায়েয়েতি। স তপোহতপ্যত। স তপস্তপ্ত্বা।
ইদং সর্বমসৃজত। যদিদং কিন্ঞ্চ। তৎ সৃষ্ট্বা। তদেবানুপ্রাবিশত্।।(তৈত্তি০ ২/৬)
পদার্থঃ (সঃ) সেই পরমাত্মা (অকাময়ত) কামনা করিলেন (বহু) অনেক প্রকার (স্যাম্) হইব, (প্রজায়েয়) উৎপন্ন হইব (ইতি) এই কথা। (সঃ) পরমাত্মা (তপঃ তপ্ত্বা) সৃষ্টি বিষয়ক আলোচেনা করিয়া (ইদম্) এই (সর্বম) সমুদয় (য়ত্ ইদম্ কিম্ চ) এই যাহা কিছু আছে তত্সমুদয়ই (অসৃজত) সৃষ্টি করিলেন। (তত্) সেই সমস্ত (সৃষ্ট্বা) সৃষ্টি করিয়া (তত্ এব) সেই সকলের মধ্যে (অনুপ্রাবিশত্) অনুপ্রবেশ করিলেন।।৬।।
ভাবার্থঃ সেই পরমাত্মা কামনায় বহু প্রজা (মনুষ্যাদি+অন্যান্যপ্রানী বর্গ) উৎপন্ন হইলেন। আমি উৎপন্ন করিব। তিনি সৃষ্টি বিজ্ঞান বিষয় ও কার্য কারন অবলম্বনে সব কিছু সৃষ্টি করিলেন এবং সৃষ্টির মধ্যে প্রবিষ্ট হইলেন।।৬।।
অজামেকাং লোহিতশুক্লকৃষ্ণাং বহ্বীঃ প্রজাঃ সৃজমানাং সরূপাঃ।
অজো হ্যেকো জুষ মানো হনু শেতে জহাত্যেনাং ভুক্তভোগামজোহন্যঃ।।(শ্বেতা০ ৪/৫)
পদার্থঃ (সঃ) পরমাত্মার (রূপাঃ) সত্ব, তম,রজ প্রকৃতি (বহ্বীঃ) অনেক (প্রজাঃ) সন্তান বা মনুষ্যাদি+ অন্যান্যা প্রানীসকল (সৃজমানাম্) সৃজনকারিনী (লোহিত শুক্ল কৃষ্ণাম্) রক্ত, শ্বেত ও কৃষ্ণাবর্ন বিশিষ্টা (একাম্) একমাত্র (অজাম) জন্ম রহিত প্রকৃতিক ও পরমাত্মা (একঃ হি) কোন (অজঃ) জন্মরহিত অবিদ্যাগ্রস্থ জীব (জুষমাণঃ) সেবা পরায়ন হইয়া (অনুশেতে) ভোগ করে (অন্যঃ) মুক্ত জীব (ভুক্ত ভোগাম্) ভোগ করে বিরত হয়েছে (এমাম্) এই প্রকৃতিকে (জহাতি) ত্যাগ করে।।৫।।
ভাবার্থঃ প্রকৃতি, জীব এবং পরমাত্মা এই তিন অজ অর্থাৎ 'যাহার কখন ও জন্ম হয় না এবং ইহারা কখনও জন্ম গ্রহন করেন না। অর্থাৎ এই তিন সমগ্র জগতের কারন নাই। অনাদিজীব, এই অনাদি প্রকৃতিকে ভোগ করিতে আবদ্ধ হয় কিন্তু পরমাত্মা ও মুক্ত পুরুষ তাহাতে আবদ্ধ হন না এবং ভোগ করেন না। সেই পরমাত্মা বহু মনুষ্যাদি সৃজন করেছিলেন।।৫।।
অনেকে বলে থাকে যে, শতরূপা ও মনু নাকি প্রথমে সৃষ্টি হয়েছিলেন কিন্তু এ কথা নিত্যান্ত মিথ্যা কথা। উপনিষদ বচনে প্রমাণিত হয় যে পরমাত্মা সৃষ্টির প্রারম্ভে এক সাথে বহু প্রজার সৃষ্টি করেন অতএব মনু আর শতরূপার গল্প সত্য নয়।
ভাষ্যঃ মহাত্মা নারায়ণ স্বামী
।। উপ সর্প মাতরং ভূমিমেতামুরুব্যচসং পৃথিবীং সুশোবাম্। ঊর্ণম্রদা যুবতির্দক্ষিণাবত এষা ত্বা পাতু নির্ঋতেরুপস্থাত্।।১০।।
পদার্থঃ ( এতাম্ উরুব্যচসং পৃথিবীং সুশোবাং ভূমিং সাতরম্ উপসর্প) হে জীব! জন্ম ধারণ করিবার জন্য তুমি এই বহু প্রকারে জীব ব্যক্তিকে প্রকটকারী বিস্তৃত এবং অনুকুশলতার সম্পাদিকা ভূমি রূপী মাতাকে প্রাপ্ত হও ( দক্ষিণাবতে এষা যুবতিঃ ঊর্ণম্রদাঃ) স্বকর্ম ফল শরীর ধারণ যোগ্য জীবের জন্য এই যুবতি দ্যুতি যা বীজকে নিজের ভীতরে মিলনকারী কৃষি ভূমির দ্যুতি ( নির্ঋতেঃ উপস্থাত্ ত্বা পাতু) মৃত্যু রূপ ঘোর অাপত্তিকে অাচল দ্বারা তোমার রক্ষা করে।। ১০।।(ঋক ১০/১৮/১০)
ভাবার্থঃ অারম্ব সৃষ্টিতে জীবের একমাত্র মাতা পৃথিবী ই হয়ে থাকে। অত এব সেই সময় মনুষ্যের ও অমৈথুনি সৃষ্টি হয়ে থাকে। নানা ভেদে মনুষ্য অাদি শরীরের প্রাদুর্ভাব হয়ে থাকে। অারম্ব সৃষ্টিতে পৃথিবী যুবতী। যে ভাবে কৃষি জমি কোমল হয়ে থাকে ঠিক তদ্রুপ।।১০।।
★ অমৈথুনি জীবকে পৃথিবী মাতা তার গর্ভ কোশে ধারণ করেন★
।। উচ্ছবঞ্চস্ব পৃথিবি মা নি বাধথাঃ সুপায়নাসম্মৈ ভব সুপবঞ্চনা।
মাতা পুত্রং যথা সিচাভ্যেনং ভূম ঊর্ণহি।। ১১।।
পদার্থঃ- ( পৃথিবি উচ্ছবঞ্চস্ব মা নিবাধথাঃ) হে পৃথিবী! তুমি জীব গর্ভকে ধারণ করিবার জন্য পুলকিত পৃষ্ঠা- উফনী স্বরূপ হয়ে থাক এজন্য যাহাতে এই জীবের পীড়া না হয় ( অস্মৈ সুপা যনা সুপবঞ্চনা ভব) এই জীবের জন্য শরীর ধারণ করানোর যোগ্য শোভন অাশ্রয় প্রদানকারী হও ( ভূমে মাতা পুত্রং যথা সিচা এনম্ অভি ঊর্ণ হি) হে ভূমি যেভাবে মাতা পুত্রকে জানিবার পশ্চাৎ দুগ্ধবান স্তনপার্শব দ্বারা অাবৃত করে তুমি ও বনস্পতি যুক্ত পার্শব দ্বারা ইহাকে অাচ্ছাদিত কর।১১।।
ভাবার্থঃ জীব গর্ভ যখন ভূমিতে এসে থাকে তো ভূমি উপরের পৃষ্ঠা পর পুলকিত উফনী হয়ে পোলি সর হয়ে জমাট বাধে যাহাতে অাসানীর সহিত জীব বাড়িতে পারে এবং এই গর্ভের অাবশ্যকতাকে পুরন করতে পারে। গর্ভ পূর্ণ হতেই তাহার উপরের উভরনে বাহির প্রকট করিবার যোগ্য হয়ে থাকে। তথা বাইরে প্রকট হয়ে যাবার পরে ঔষধি দ্বারা তাহাকে পোষণ করে অতএব সেই সময় জীব সর্ব প্রকার কুশল কুমার অবস্থায় উৎপন্ন হয়ে থাকে।।১১।।
★ বহু প্রকার জীব নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত উৎপন্ন হতে থাকে এবং সঙ্গ দ্বারা তারা একত্রিত হয়★
।। উচ্ছবঞ্চমানা পৃথিবী সু তিষ্ঠতু সহত্রং মিত উপ হি শ্রযন্তাম্। তে গৃহাসো ভবন্তু বিশবাহাস্যৈ শরণাঃ সন্তবত্র।। ১২।।
পদার্থঃ- ( উচ্ছবঞ্চমানা পৃথিবী সুতিষ্ঠতু) যখন পুলকিত পৃষ্ঠা উফনী হয়ে - পলি হয়ে পৃথিবী হয়ে যায় তখন ( সহত্রং মিতঃ হি উপশ্রযন্তাম্) বহু সংখ্যা প্রাপ্ত জীব তাহাতে অাশ্রিত থাকে ( তে গৃহাসঃ ঘৃতশ্চুতঃ ভবন্তু অস্মৈ বিশ্বাহা অত্র শরণঃ সন্তু) জীবাত্মার জন্য এ গর্ভগৃহ রসপূর্ণ এবং সর্বদা অাশ্রায় প্রাদানকারী হয়ে থাকে।।১২।।
ভাবার্থঃ জীব সৃষ্টির জন্য পৃথিবীর উপর পলী এবং মৃদু কিছু কাল পর্যন্ত হতে থাকে। পুঃন তাহাতে অসংখ্য জীব অাশ্রিত থাকে। অতএব অাজ পর্যন্ত ও স্ব স্ব জাতীয় সঙ্গে রহিবার স্বভাব প্রায় সব জীবের মধ্যে বর্তমান। অাত্মার জন্য গর্ভগৃহ স্বভাবিক রস প্রদান করে শরণীয় হয়।। ১২।।
পৃথিবীর সব থেকে উচুতম স্থানে সর্বপ্রথম অমৈথুনি স্থলচর প্রানী এবং মানুষ সৃষ্টি হয়েছিল।।
।। উতে স্তভ্রামি পৃথিবীং ত্বৎপরীমং লোগং নিদধন্মো অহং রিষম্। এতাং স্থূর্ণা পিতরো ধারযন্তু তেহত্রা যমঃ সাদনা তে মিনোতু।। ১৩।।
পদার্থঃ- ( পৃথিবীং তো উত স্তভনামি) হে জীব! তোমাদের জন্য অামি ঈশ্বর, পৃথিবীকে জলমিশ্রিত ভূগোল দ্বারা উপরে ভূভাগকে স্থাপন করছি ( ইমং ত্বত্ লোগং পরিনিদ্ধত্ ম উ অহং রিষম্) ওই স্থানে তোমাদের এই গর্ভকোশকে স্থাপন করে ও পীড়া মুক্ত রাখি অর্থাৎ অামি তোমাদের পীড়া দেই না ( এতাং স্থূণাং পিতরঃ ধারযন্তু) এই উপরে উদিত ভূভাগকে সূর্য কিরণ পালন পোষণ করে ( তত্র যমঃ তে সদনা মিনোতু) সূর্য তোমাদের জন্য সর্ব অাবশ্যক পুষ্টি কোষ প্রাপ্ত করাবে।।১৩।।
ভাবার্থঃ প্রাক্ সৃষ্টি ভূগোলের উঁচু ভাগ পরে হয়ে থাকে। এই ভাগ জলমিশ্রিত ভূগোল পর্বত ভূমির রূপে উপরে জেগে যায়। সেই জাগরিত ভূভাগকে সূর্যের রশ্নি ধারণ করে থাকে এবং সূর্য নিজের রশ্নি দ্বারা জীবাদির গর্ভকে প্রাপ্ত করিয়ে থাকে, অতএব তাহার দ্বিতীয় নাম সবিতা।।১৩।।
সত্যার্থপ্রকাশে দয়ানন্দজী যে ভাবে সৃষ্টি তত্ব এবং ভৌগলিক স্থান নির্দেশ করেছিল তাহা বেদ সিদ্ধ।। আপনারা সত্যার্থ প্রকাশের সহিত বিষয়টি ভাল করে মিলিয়ে নিন।।
মহর্ষি মনু প্রাণীর জন্মের তিন ধরনের প্রক্রিয়ার বিষয়ে বলেছেন-জরায়ুজ, অণ্ডজ এবং স্বেদজ
(মনুস্মৃতি ১/৪৩,৪৪,৪৫)
গরু আদি পশু অহিংসক বৃত্তির বন্য পশু হরিণ আদি এবং দুই পাটি দাঁত যুক্ত হিংসক বৃত্তির পশু অর্থাৎ সিংহ, বাঘ আদি তথা রাক্ষস, পিশাচ তথা মনুষ্য আদি 'জরায়ুজ' অর্থাৎ ঝিল্লি হতে জন্ম হওয়া জীব।।
যার থেকে ধন সম্পত্তি রক্ষা করতে হয়, যে লুটপাট, চুরি, ব্যাভিচার আদি দুষ্ট কর্মে সক্রিয় থাকে তারাই রাক্ষস(নিরুক্ত ৪/১৮), যারা মাংস, রক্ত ভক্ষণ করে,হিংসক, দূরাচারী, অনাচারী তারা পিশাচ।
পাখি, সাপ, কুমির, মাছ তথা কচ্ছপ এবং অন্যান্য যে যে জীব ভূমিতে বসবাস করে এবং
জলে বসবাস করে তারা 'অণ্ডজ' অর্থাৎ ডিম হতে উৎপন্ন হয়।।
মাছি আদি উকুন মশা ছাড়পোকা আদি এই প্রকার যত জীব আছে তারা উষ্মা, গরম আদি হতে সৃষ্টি হয়, এই সমস্ত জীব 'স্বেদজ' অর্থাৎ ঘাম আদি হতে জন্ম হয়।
।।ও৩ম্ শান্তি শান্তি শান্তি।।
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ