স্ট্রিং থিওরী - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

15 July, 2020

স্ট্রিং থিওরী

স্ট্রিং থিওরী আধুনিক বিজ্ঞান


মনে করি, নিউটনের আপেল গাছের মতো আপনার একটি আপেল গাছ আছে। তাতে অনেক সুন্দর আপেল ধরেছে। কোনো এক বিকেলে এর তলা দিয়ে যাবার সময় একটি আপেল পড়লো আপনার মাথায়। আপনি ভাবলেন এই আপেল কীভাবে তৈরি? একটু জুম করে দেখলেন কোষ, তারপর আরও জুম করলেন। এরপর জুম করতে করতে একপর্যায়ে পাবেন অণু। এরপর আরও বিবর্ধিত করলে দেখতে পারবেন পরমাণু। এখানেই কিন্তু শেষ নয়। ভিতরে আরও খুঁজে পাওয়া যাবে ইলেক্ট্রন ঘুরছে। এতেও হলো না, আরও দেখলে দেখতে পারবো একজায়গায় আরেকটি ক্ষুদ্র জিনিস। নিউক্লিয়াস। যেটি আবার আরও দুইটি জিনিস প্রোটন আর নিউট্রন দিয়ে তৈরি। এই কি শেষ? না। আমরা যদি নিউট্রনকে আবার জুম করে দেখি আমরা পাবো আরও ক্ষুদ্র পদার্থ যার নাম কোয়ার্ক। এখানেই আমদের ধারণা আপাতত বন্ধ রাখি।
স্ট্রিং থিওরি বলে, যদি আমরা এই কোয়ার্ককে বর্ধিত করি তাহলে পাবো এক শক্তি, যা সুতো বা তারের মতো। যখন কেউ গিটারে সুর তোলে গিটারের তার কেপে শব্দগুলো তৈরি করে। এখানেও স্ট্রিং অর্থাৎ সুতোটি ভাইব্রেট করে আর কোয়ার্ক তৈরি করে। কোয়ার্ক তৈরি করে নিউট্রন। এভাবে যদি আমরা সবগুলোকে আবার একত্রিত করি তাহলে পাবো সেই আপেল। তো আমরা এখন পর্যন্ত যা আবিস্কার করলাম তা আর কিছুই নয় কিছু স্ট্রিং প্রতিটি ধাপে তার নিজের রূপে কম্পিত হয়ে এগুলো সৃষ্টি করছে। এটাই স্ট্রিং থিওরির মৌলিক ধারণা।
এখানে স্ট্রিং বা তারকে একমাত্রিক হিসেবে বিবেচিত করা হয়। এই তত্ত্বের উদ্দেশ্য হলো এই তারগুলোর কোয়ান্টাম অবস্থা ও বৈশিষ্ট্যসমূহ ব্যবহার করে মহাবিশ্বের সকল মৌলিক কণা এবং বলের আচরণ ব্যাখ্যা করা। স্ট্রিং থিওরি সকল মৌলিক কণার সাহায্যে মহাকর্ষকে ব্যাখ্যা করতে পারে, ব্যাখ্যা করতে পারে চারটি মৌলিক বল ও সকল প্রকার শক্তিসহ পদার্থের অবস্থা। সেজন্য থিওরি অফ এভ্রিথিং হিসেবে নিজের জায়গা করে নিয়েছে স্ট্রিং থিওরি।
মৌলিক কণাগুলোকে তাদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী মূলত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এক শ্রেণির নাম বোসন আর আরেক শ্রেণির নাম ফার্মিয়ন। প্রথম দিকের স্ট্রিং থিওরিকে বলা হতো বোসনিক স্ট্রিং থিওরি। শুরুর দিকে এই থিওরিতে শুধু বোসন নিয়েই আলোচনা করত। পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা  ভিন্ন ধরনের মৌলিক কণাদের মধ্যে একধরনের তাত্ত্বিক যোগাযোগ বের করেন। এই দুই ভিন্ন ধরনের কণিকাদের মধ্যে এই তাত্ত্বিক সাদৃশ্যের নাম দেওয়া হয় সুপারসিমেট্রি। এরপর এই  সুপারসিমেট্রির ধারণাকে স্ট্রিং থিওরিস্টরা তাদের তত্ত্ব গঠনে ব্যবহার করেন। এই নতুন গঠন করা স্ট্রিং থিওরির নাম দেওয়া হয় সুপারস্ট্রিং থিওরি। এখন আর বিজ্ঞানীদের শুধু বোসন নিয়ে পড়ে থাকতে হচ্ছে না। স্ট্রিং থিওরি এখন বোসন ও ফার্মিওন দুই শ্রেণির কণিকাদের আচরণ নিয়েই কাজ করতে পারছে। কিন্তু সুপারস্ট্রিং থিওরি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখলেন তাদের কতগুলো অতিরিক্ত মাত্রার দরকার হচ্ছে। এই অবস্থা আমাদের কালুজা ক্লেইন তত্ত্বে নিয়ে যায়। প্রশ্নের সৃষ্টি হয় যে বাকি মাত্রাগুলো তাহলে কোথায়?
পদার্থবিদ্যার আদিযুগ থেকেই তার লক্ষ্য/প্রণালী ছিল আপাত ভিন্ন ঘটনাবলীকে একই নিয়ম দ্বারা সংযুক্ত করে এবং প্রকৃতির ক্রমশ বৃহত্তর অংশ বর্ণনার ক্ষমতাযুক্ত তত্ত্ব গঠন করে অর্থাৎ যথাক্রমে একীভূতকরণ (Unification) ও সাধারণীকরণ (Generalization)-এর মাধ্যমে প্রকৃতির বর্ণনায় যথাসম্ভব বেশী সারল্য নিয়ে আসা এবং শেষপর্যন্ত একটিমাত্র তত্ত্বে পৌঁছানো যা সমগ্র প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করবে (Theory of Everything)।
এই পদ্ধতির প্রথম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ স্যার আইজ্যাক নিউটনের ‘মহাকর্ষ তত্ত্ব’ আবিষ্কার। তিনি বুঝতে সমর্থ হন যে গাছ থেকে আপেল পড়া আর সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর পরিক্রমণ (বা পৃথিবীর চারদিকে চাঁদের পরিক্রমণ বা সেইরূপ সকলকিছু) একই বলের প্রভাবে ঘটে- মহাকর্ষ। অর্থাৎ, পূর্বে অনুমিত পার্থিব ঘটনা ও স্বর্গীয় ঘটনার মধ্যে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ মেলবন্ধন করেন। তাঁর মহাকর্ষ সূত্র ও গতিসূত্রের দ্বারা তিনি পদার্থবিদ্যার যে শাখা গড়ে তোলেন তাকে ‘নিউটনীয় বলবিদ্যা’ (Newtonian Mechanics) বলে।
এর পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ একীভূতকরণ হল জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল-এর ‘তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্রতত্ত্ব’ (Electromagnetic field Theory) যা পূর্ব অনুমিত আপাত ভিন্ন ঘটনাদ্বয় ‘তড়িৎ’ ও ‘চুম্বক’ বলকে একীভূত করে দেখান যে উভয়ই হল একটিমাত্র বলের দুই প্রকাশঃ তড়িৎচুম্বকীয় বল।
এরপর দেখা যায়, নিউটনীয় বলবিদ্যা ও তড়িৎচুম্বকীয় তত্ত্বের মধ্যে অমিল। একে-অপরের সাথে বনিবনা নেই দুই তত্ত্বের নিয়মের। এদের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটান আইনস্টাইন তাঁর ‘বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব’ (Special Theory of Relativity)-এর সাহায্যে।
অন্যদিকে নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্ব প্রযোজ্য হত শুধুমাত্র কম ভরের স্থির বা ধীরগতির বস্তুর ক্ষেত্রে। যেকোন ভরের ও যেকোনো গতির বস্তুর জন্য মহাকর্ষ তত্ত্বের সাধারণীকরণ ও আগে সৃষ্ট ‘বিশেষ আপেক্ষিকতা’-র সাথে মেলবন্ধন ঘটান আইনস্টাইন ‘সাধারণ আপেক্ষিকতা’ তত্ত্বে (General Theory of Relativity)।
আবার অন্য আরেকদিক থেকে নিউটনীয় বলবিদ্যার সীমাবদ্ধতা জানা যায়। দেখা যায় এটি অতিক্ষুদ্র (পারমাণবিক জগতের) বস্তুদের বেলায় প্রযোজ্য নয়। তার জন্য সম্পূর্ণ নতুন বলবিদ্যা সৃষ্টি করতে হয় যার নাম ‘কোয়ান্টাম বলবিদ্যা’। দেখা যায় এই নতুন বলবিদ্যা থেকে নিউটনীয় বলবিদ্যা পাওয়া যায় বড় বস্তুদের জন্য প্রয়োগ করলে (এবং তা হতেই হবে) অর্থাৎ সাধারণ আপেক্ষিকতার মত কোয়ান্টাম বলবিদ্যাও নিউটনীয় বলবিদ্যার একটি সাধারণীকরণ।
এরপর কোয়ান্টাম বলবিদ্যার সাথে বিশেষ আপেক্ষিকতার একীকরণ হয়। নাম- আপেক্ষকীয় কোয়ান্টাম বলবিদ্যা (Relativistic Quantum Mechanics)
এরপর তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্রতত্ত্বের জন্য আপেক্ষকীয় কোয়ান্টাম বলবিদ্যা তৈরি হয়। এর নাম ‘কোয়ান্টাম তড়িৎগতিবিদ্যা’ (Quantum Electrodynamics)। এটি একটি ‘কোয়ান্টাম ক্ষেত্রতত্ত্ব’ (Quantum Field Theory) অর্থাৎ সনাতন ক্ষেত্রতত্ত্বের সাথে আপেক্ষকীয় কোয়ান্টাম বলবিদ্যার মেলবন্ধন।
অন্যদিকে দিনে দিনে প্রচুর মূলগত কণা আবিষ্কার হচ্ছিল। মহাকর্ষ আর তড়িৎচুম্বকীয় বল ছাড়াও আরও দুটি বলও আবিষ্কার হয়ঃ সবল বল (Strong force) ও দুর্বল বল (Weak Force)। বিভিন্ন কণাদের মধ্যে ক্রিয়াশীল এইসব বিভিন্ন বলের জন্য নানারকম কোয়ান্টাম ক্ষেত্রতত্ত্ব তৈরি হয়। যেমন-
সবল বলের জন্য ‘কোয়ান্টাম ক্রোমোডায়নামিক্স’
দুর্বল বলের জন্য ‘কোয়ান্টাম ফ্লেভারডায়নামিক্স’
ইত্যাদি।
এই সকল কণা ও বলসমূহের জন্য এরপর একটি সাজানো-গোছানো একীভূত মডেল তৈরি হয় যার নাম ‘কণা পদার্থবিদ্যার স্ট্যান্ডার্ড মডেল’ যার ভিত্তি হল ‘কোয়ান্টাম ক্ষেত্রতত্ত্ব’।
এতে অজস্র কণার পরিবর্তে কেবল ১৮ টি মূলগত কণা থাকে। (যেমন- প্রোটন, নিউট্রন ইত্যাদি শুধু কোয়ার্ক দিয়ে তৈরি)
এছাড়াও ৩ টি বলকে একীভূত করার চেষ্টা চলতে থাকে। প্রথম ধাপটি সম্ভবও হয়ঃ তড়িৎচুম্বকীয় ও দুর্বল বলকে একীভূত করে যে বল সৃষ্টি হয় তার নাম ‘ইলেক্ট্রোউইক বল’ (তত্ত্বটির নাম ‘ইলেক্ট্রোউইক তত্ত্ব’)। ইলেক্ট্রোউইক বলের সাথে সবল বলকে মিলিয়ে দেওয়ার কাজেও অগ্রগতি ঘটে। এই তত্ত্বকে বলা হয় ‘মহান একীভূত তত্ত্ব’ (Grand Unified Theory)।

কিন্তু স্ট্যান্ডার্ড মডেলে মহাকর্ষ অনুপস্থিত কারণ মহাকর্ষের একটি কোয়ান্টাম তত্ত্ব (Quantum Gravity) এখনও পাওয়া যায়নি। তাই স্বাভাবিকভাবেই এরপরের ধাপঃ সাধারণ আপেক্ষিকতার সাধারণীকরণ ঘটিয়ে একটি ‘কোয়ান্টাম মহাকর্ষ’ তত্ত্ব সৃষ্টি এবং মহান একীভূত তত্ত্বের সাথে সেই মহাকর্ষের তত্ত্বের মেলবন্ধনের মাধ্যমে শেষমেশ বিজ্ঞানীদের স্বপ্নের ‘সর্ববিষয়ক তত্ত্ব’ বা ‘Theory of Everything’-এ পৌঁছানো।
অতিপ্রতিসাম্য (Supersymmetry) ও অতিমহাকর্ষ (Supergravity):
স্ট্যান্ডার্ড মডেলের বেশ কিছু সমস্যার সমাধান হিসেবে তৈরি হয় এই ‘সুপারসিমেট্রি’-র ধারণা। সুপারসিমেট্রিকে স্ট্যান্ডার্ড মডেলে যুক্ত করলে আপনা থেকেই মহাকর্ষের জন্য দায়ী একটি কণাও পাওয়া যায়। এভাবে সুপারসিমেট্রিক স্ট্যান্ডার্ড মডেল ও সাধারণ আপেক্ষিকতার যোগসাধন হয় একটি ‘কোয়ান্টাম মহাকর্ষ তত্ত্ব’-পাওয়া যায়। একে বলে ‘সুপারগ্র্যাভিটি তত্ত্ব’।
বাড়তি মাত্রা (Extra dimensions): এই তত্ত্বটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, এটি আমাদের পরিচিত ৪ মাত্রার স্থানকালে প্রযোজ্য নয় বরং ১১ মাত্রায় প্রযোজ্য এবং ১১ মাত্রায় সবচেয়ে সুন্দর। বিজ্ঞানীরা এই তত্ত্বের প্রতি উৎসাহী হয়ে ওঠেন; মনে করা হয় ১১ টি মাত্রার ৭ টিকে গাণিতিকভাবে গুটিয়ে (Compactification) দিতে পারলে ৪ মাত্রার কোয়ান্টাম মহাকর্ষ তত্ত্ব তৈরি হয়ে যাবে।
Compactification: এটি বিশেষ গাণিতিক পদ্ধতি যাতে একটি/একাধিক মাত্রাকে গুটিয়ে ছোট করে দেওয়া যায়। এটা অনেকটা অনেক দূর থেকে দেখা একটি পাইপের মত যাকে দূর থেকে একমাত্রিক মনে হয় কিন্তু কাছে এলে বোঝা যায় তার বক্র ও ছোট আরেকটি মাত্রা আছে। তেমনই মনে করা হয় সুপারগ্র্যাভিটি তত্ত্বের ১১ টি মাত্রার মধ্যে ৪ টি বড় মাত্রা যা আমরা দেখতে পাই ও ৭ টি মাত্রা গুটিয়ে অতিক্ষুদ্র হয়ে গেছে বলে আমরা দেখতে পাই না।
তবে কিছুদিনের মধ্যে দেখা যায় সুপারগ্র্যাভিটি তত্ত্বে নানারকম সমস্যা আছে (যেমন- পদার্থবিদ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা ‘Chirality’ এই তত্ত্ব মান্য করে না)। এর ফলে সুপারগ্র্যাভিটি তত্ত্বের প্রতি বিজ্ঞানীদের আগ্রহ কমে যায়।
স্ট্রিং তত্ত্বঃ
প্রথমে নিউক্লীয় পদার্থবিদ্যার সবল বলের ব্যাখ্যা হিসেবে এই তত্ত্ব এলেও পরে তা বাতিল হয়ে ‘কোয়ান্টাম ক্রোমোডায়নামিক্স’ সবল বলের পদার্থবিদ্যার জন্য বেশী ভালো তত্ত্ব হিসেবে স্বীকৃতি পায়। কিন্তু দেখা যায়, স্ট্রিং তত্ত্ব ফেলনা নয়- এর মধ্যে এমন অনেক বৈশিষ্ট্য আছে (যার জন্য সবল বলের পদার্থবিদ্যা হিসেবে স্বীকৃত হয়নি) যেগুলি বৃহত্তর লক্ষ্যে কাজে লাগানো যায়। অচিরেই দেখা যায় এই তত্ত্ব অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী একটি তত্ত্ব যা ওপরের চিত্রের প্রশ্নচিহ্নের উত্তর হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে।
আমি অতি-সংক্ষেপে এই বিরাট তত্ত্বের উপাদান ও বিষয়গুলি সম্পর্কে লিখতে চেষ্টা করব।
স্ট্রিংঃ
স্ট্রিংতত্ত্ব সম্পূর্ণ নতুন একটি দৃষ্টিভঙ্গী থেকে কণা পদার্থবিদ্যাকে দেখতে শুরু করে। স্ট্রিংতত্ত্বের মূল উপাদান হল শক্তির অতিক্ষুদ্র কম্পনরত সুতোর মত পদার্থ যাকে বলা হয় ‘স্ট্রিং’। কণা পদার্থবিদ্যার কণাগুলিকে মাত্রাহীন বিন্দুকণা (Point particle) মনে করা হয়। কিন্তু স্ট্রিং তত্ত্বে মূলগত কণাগুলিকে একমাত্রিক স্ট্রিং দিয়ে প্রকাশ করা হয় (যারা বিন্দুবত নয়- দৈর্ঘ্য আছে)। মনে করা হয় নানারূপ কণার পরিবর্তে প্রকৃতিতে আছে কেবল এইরূপ দুইরকম স্ট্রিং (মুক্ত অর্থাৎ একটি রেখার মত এবং বদ্ধ অর্থাৎ একটি ফাঁসের মত)। এই স্ট্রিংগুলির নানারূপ কম্পনই ধরা দেয় নানারূপ ও নানা বৈশিষ্ট্যযুক্ত মূলগত কণা হিসেবে। এভাবে স্ট্রিংতত্ত্ব অনেক মূলগত কণাকে শুধুমাত্র স্ট্রিং দিয়ে একীভূত করে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, স্ট্রিং তত্ত্ব আপনা থেকেই মহাকর্ষের জন্যও একটি কণার অস্তিত্ব ঘোষণা করে অর্থাৎ এটি স্বাভাবিকভাবেই মহাকর্ষের একটি কোয়ান্টাম তত্ত্ব অর্থাৎ ‘কোয়ান্টাম মহাকর্ষ তত্ত্ব’।
ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডের মতো শারীরিক বস্তুর কোয়ান্টাম মেকানিক্স প্রয়োগ, যা স্থান ও সময়কে বর্ধিত করে, কোয়ান্টাম ফিল্ড তত্ত্ব নামে পরিচিত। কণার পদার্থবিজ্ঞানে, কোয়ান্টাম ফিল্ড থিওরিগুলি মৌলিক কণার বোঝার জন্য ভিত্তি তৈরি করে, যা মৌলিক ক্ষেত্রগুলির মধ্যে উত্সাহ হিসাবে বিবেচিত হয়। কোয়ান্টাম ফিল্ড থিওরিতে, এক সাধারণত বিশৃঙ্খলা তত্ত্বের কৌশল ব্যবহার করে বিভিন্ন শারীরিক ঘটনাগুলির সম্ভাব্যতাগুলি নির্ণয় করে। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে রিচার্ড ফাইমান এবং অন্যদের দ্বারা উন্নত, প্রতিক্রিয়াশীল কোয়ান্টাম ক্ষেত্র তত্ত্ব গণিত সংগঠিত করার জন্য ফেয়েনম্যান ডায়াগ্রামস নামে বিশেষ চিত্র ব্যবহার করে। এক এই চিত্রটি যেভাবে বিন্দু-মত কণা এবং তাদের মিথস্ক্রিয়াগুলির পাথকে চিত্রিত করে। স্ট্রিং থিওরির জন্য প্রারম্ভিক বিন্দু হল ধারণা যে কোয়ান্টাম ফিল্ড তত্ত্বের বিন্দু-মত কণার স্ট্রিংগুলি এক-মাত্রিক বস্তু হিসাবে মডেল করা যায়। সাধারণ কোয়ান্টাম ফিল্ড থিওরিতে ব্যবহার করা প্রতিক্রিয়া তত্ত্ব সাধারণকরণ দ্বারা স্ট্রিংগুলির মিথস্ক্রিয়াটি বেশ সহজভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। ফেনম্যান ডায়াগ্রামের স্তরে, এর অর্থ হলো একটি দ্বিমাত্রিক ডায়াগ্রামের পরিবর্তে একটি বিন্দু কণাের পথ নির্দেশ করে যা একটি দ্বি-মাত্রিক পৃষ্ঠ দ্বারা স্ট্রিং এর গতির প্রতিনিধিত্ব করে। কোয়ান্টাম ফিল্ড থিওরির বিপরীতে, স্ট্রিং থিওরিটির একটি সম্পূর্ণ অ-প্রতিক্রিয়াশীল সংজ্ঞা নেই, তাই তাত্ত্বিক প্রশ্নগুলির বেশিরভাগ পদার্থবিদরা উত্তর দিতে চাইবেন যা নাগালের বাইরে থাকবে। স্ট্রিং থিওরির উপর ভিত্তি করে কণা পদার্থবিজ্ঞানের তত্ত্বগুলিতে, স্ট্রিংগুলির বৈশিষ্ট্যগত দৈর্ঘ্য স্কেলটি প্লাংকের দৈর্ঘ্য, অথবা 10-35 মিটারের আকারে ধারণ করা হয়, যার স্কেলটি কোয়ান্টাম মাধ্যাকর্ষণ প্রভাবকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। পদার্থবিদ্যা ল্যাবরেটরিতে দেখা যায় এমন অনেক বড় দৈর্ঘ্যের আইশের মতো, বস্তুটি শূন্য-মাত্রিক বিন্দুর কণা থেকে আলাদা হবে না এবং স্ট্রিং এর কম্পনশীল অবস্থা কণার ধরন নির্ধারণ করবে। একটি স্ট্রিং একটি vibrational রাজ্যের এক মহাকর্ষীয় শক্তি বহন করে যে একটি কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল কণা, মহাকর্ষ। স্ট্রিং থিওরির মূল সংস্করণ ছিল বোসোনিক স্ট্রিং থিওরি, কিন্তু এই সংস্করণটি শুধুমাত্র বোসনকে বর্ণিত করে, কণার একটি বর্গ যা বস্তুর কণার বা প্যাটার্নগুলির মধ্যে বাহিনী প্রেরণ করে। বসনিয়িক স্ট্রিং তত্ত্বকে অবশেষে superstring তত্ত্ব বলা তত্ত্ব দ্বারা স্থানান্তরিত হয়। এই তত্ত্বগুলি বোসন এবং ফারাম উভয়ই বর্ণনা করে, এবং তারা সুপারিশম্যাট্রি নামে একটি তাত্ত্বিক ধারণাকে অন্তর্ভুক্ত করে। এটি একটি গাণিতিক সম্পর্ক যা বোসনস এবং ফারমারগুলির মধ্যে নির্দিষ্ট শারীরিক তত্ত্বগুলিতে বিদ্যমান। সুপারসোমেমিটির সাথে তত্ত্বগুলিতে, প্রতিটি বোসনের সমতুল্য যা একটি ফারমারন এবং এর বিপরীত। সুপারস্ট্রিং তত্ত্বের বেশ কয়েকটি সংস্করণ আছে: টাইপ I, টাইপ IIA, টাইপ আইআইবি, এবং হেক্টর্টিক স্ট্রিং তত্ত্ব (SO (32) এবং E8 × E8) এর দুটি স্বাদ। বিভিন্ন তত্ত্ব বিভিন্ন ধরনের স্ট্রিংগুলিকে অনুমোদন করে, এবং নিম্ন শক্তিগুলিতে উৎপন্ন কণার বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা প্রদর্শন করে। উদাহরণস্বরূপ, টাইপ আই তত্ত্বের মধ্যে রয়েছে উভয় খোলা স্ট্রিং (যা বিন্দুগুলির সাথে অংশ) এবং বন্ধ স্ট্রিং (যা বন্ধ লোড হয়ে থাকে) উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, তবে IIA, IIB এবং হের্টারোটি কেবল বন্ধ স্ট্রিংগুলি অন্তর্ভুক্ত।
বেকেনস্টাইন-হকিং সূত্র:
পদার্থবিজ্ঞানের শাখায় পরিসংখ্যানগত বলবিজ্ঞান বলা হয়, এনট্রপি একটি দৈহিক সিস্টেমের র্যান্ডমাইজ বা ব্যাধি একটি পরিমাপ। 1870-এর দশকে অস্ট্রিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী লুডভিভ বোল্টজম্যান এই গবেষণাটি আবিষ্কার করেছিলেন, যে দেখিয়েছেন যে গ্যাসের তাপদ্বয়ীয় বৈশিষ্ট্যগুলি তার বেশির ভাগ উপাদান অণুগুলির মিলিত বৈশিষ্ট্য থেকে উদ্ভূত হতে পারে। বোল্টজম্যান যুক্তি দেন যে গ্যাসের বিভিন্ন অণুগুলির আচরণের গড়ন দ্বারা, এক ম্যাক্রোস্কোপিক বৈশিষ্ট্য যেমন ভলিউম, তাপমাত্রা এবং চাপ বুঝতে পারে। উপরন্তু, এই দৃষ্টিকোণটি তাঁকে অণু বিভিন্ন প্রজাতির (এছাড়াও microstates বলা হয়) নম্বরের প্রাকৃতিক লগারিদম হিসাবে এনট্রপি একটি সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা দিতে পারে যে একই ম্যাক্রোস্কোপিক বৈশিষ্ট্য বৃদ্ধি। বিংশ শতাব্দীতে, পদার্থবিদরা একই ধারণাগুলি ব্ল্যাক হোলগুলিতে প্রয়োগ করতে শুরু করেছিল। অধিকাংশ সিস্টেম যেমন গ্যাস, ভলিউম দিয়ে এনট্রপি স্কেল। 1970 এর দশকে পদার্থবিজ্ঞানী জ্যাকব বেকেনস্টাইন বলেছিলেন যে, একটি কালো গহ্বরের এনট্রপিটি এর ঘটনাটি দিগন্তের পৃষ্ঠভূমির সমানুপাতিক, সীমানা অতিক্রম করে যা তার মহাকর্ষীয় আকর্ষণের কারণে বস্তু এবং বিকিরণ হারিয়ে যায়। যখন পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের ধারণা নিয়ে মিলিত হয়, বেকেনস্টাইনের কাজটি একটি কালো গর্তের এনট্রপিটির জন্য একটি সুনির্দিষ্ট সূত্র লাভ করে। বেকসেনস্টাইন-হকিং সূত্র এনট্রপি এস প্রকাশ করেন
যেখানে c হল আলোর গতি, k Boltzmann এর ধ্রুবক, h এটি হ'ল প্ল্যাংক ধ্রুবক, G নিউটন এর ধ্রুবক, এবং A হল ইভেন্ট দিগন্তের পৃষ্ঠভূমি।
কোনও শারীরিক সিস্টেমের মত, একটি কালো গহ্বর একই মাইক্রোস্ট্যাটিক বৈশিষ্ট্যগুলির মাপকাঠিতে থাকা ম্যাক্রোস্কোপিক বৈশিষ্ট্যগুলির সংখ্যার সংজ্ঞায়িত একটি এনট্রপি রয়েছে। বেকেনস্টাইন-হকিং এন্ট্রপি সূত্র কালো গহ্বরের এনট্রপিটির প্রত্যাশিত মূল্য প্রদান করে, কিন্তু 1990-এর দশক পর্যন্ত, পদার্থবিজ্ঞানীগণ এখনও কোয়ান্টাম মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্বের ভিত্তিতে মাইক্রোস্টেটের গণনা দ্বারা এই সূত্রটির একটি অভাব অনুপস্থিত ছিলেন। এই সূত্রের এইরকম একটি বক্ররেখার সন্ধানে কোয়ান্টাম মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্ব যেমন স্ট্রিং থিওরির মতন তত্ত্বের কার্যকরতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হয়।
গণিত থেকে সংযোগ:

তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণাকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি স্ট্রিং থিওরিটি বিশুদ্ধ গণিতের বেশ কয়েকটি উন্নয়নকে অনুপ্রাণিত করেছে। তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে অনেক উন্নয়নশীল ধারণাগুলির মতো, স্ট্রিং থিওরিটি বর্তমানে একটি গাণিতিকভাবে কঠোর গঠন করে না যার মধ্যে তার সমস্ত ধারণার সঠিকভাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। ফলস্বরূপ, পদার্থবিজ্ঞানীরা স্ট্রিং থিওরি অধ্যয়ন করে যা প্রায়ই তত্ত্বগতভাবে বিভিন্ন গাণিতিক কাঠামোর মধ্যে সম্পর্কের ধারণাগুলি বোঝানোর জন্য শারীরিক অন্তর্দৃষ্টি দ্বারা পরিচালিত হয় যা তত্ত্বের বিভিন্ন অংশগুলিকে ফরম্যাট করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই অনুমানগুলি পরে গণিতজ্ঞ দ্বারা প্রমাণিত হয়, এবং এইভাবে, স্ট্রিং তত্ত্ব বিশুদ্ধ গণিতের নতুন ধারণার উৎস হিসেবে কাজ করে।
সুপারস্ট্রিং তত্ত্বঃ
শুরুতে স্ট্রিং তত্ত্বের রূপটি সীমিত ছিল স্ট্যান্ডার্ড মডেলের শুধুমাত্র শক্তিকণা (Boson) দের জন্য। একে ‘বোসনিক স্ট্রিং তত্ত্ব’ (Bosonic String theory) বলা হত (যা প্রযোজ্য স্থানকালের ২৬ মাত্রায়)। পরে এর সাথে ‘অতিপ্রতিসাম্য’ (Supersymmetry) যুক্ত করে ‘সুপারস্ট্রিং তত্ত্ব’ (‘Superstring theory) গড়ে তোলা হয় যা শক্তিকণা ও পদার্থকণা (Fermions)-উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হয় (এবং ২৬ এর পরিবর্তে স্থানকালের ১০ মাত্রায় প্রযোজ্য)। সুপারস্ট্রিং তত্ত্বে সুপারগ্র্যাভিটি তত্ত্বের সমস্যাগুলি নেই (যেমন এটি Chirality মান্য করে)। ফলে বহু পদার্থবিদ ‘কোয়ান্টাম মহাকর্ষ’ তৈরির আশায় স্ট্রিং তত্ত্বে আগ্রহী হয়ে পড়েন।
সুপারস্ট্রিং তত্ত্ব অনুযায়ী স্থানকাল ১০ মাত্রিক যার ৪ টি বৃহৎ মাত্রা ও ৬ টি গোটানো বা কুঞ্চিত মাত্রা। এরকম স্থানকালের উদাহরণ হলঃ কালাবি-ইয়াউ আকৃতি। সুপারস্ট্রিংগুলি এইরূপ স্থানকালে কাঁপতে থাকে ও তারফলে উৎপন্ন নানারূপ কম্পন নানারূপ কণা হিসেবে প্রকাশিত হয়।
সুপারস্ট্রিং তত্ত্ব একীকরণ:
১৯৭০-এর দশকে অনেক পদার্থবিজ্ঞানী হ'ল সুপারভাইভারিটি তত্ত্বগুলিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে, যা সুপারস্পাইম্যাট্রি সহ সাধারণ আপেক্ষিকতাকে একত্রিত করে। যেহেতু সাধারণ আপেক্ষিকতা কোনও মাত্রার অনুভূতি তৈরি করে, অতিপ্রাকৃতিকতা মাত্রা সংখ্যা উপর একটি ঊর্ধ্ব সীমা রাখে। ১৯৭৮ সালে, ওয়েনের নাহমের কাজটি দেখিয়েছেন যে সর্বাধিক স্পেসটাইমের মাত্রা যা এক সুস্পষ্ট সুপারসামম্যাট্রিক তত্ত্ব তৈরি করতে পারে। একই বছরে, ইউজিন কেরমেমার, বার্নার্ড জুলিয়া এবং ইওল নরমাল সুপারেরিয়ের জোয়েল স্কেরক দেখিয়েছেন যে অতিরঞ্জিততা কেবল মাত্র 11 টি মাত্রার মাপকাঠি নয় কিন্তু আসলে এই মাত্রাগুলির সংখ্যা সর্বাধিক মার্জিত। প্রাথমিকভাবে, অনেক পদার্থবিজ্ঞানী আশা করেছিলেন যে এগারো-মাত্রিক সুপারগ্যাভাটিকে সংমিশ্রণ করে, আমাদের চার-মাত্রিক বিশ্বের বাস্তবিক মডেল তৈরি করা সম্ভব হতে পারে। আশা ছিল এই ধরনের মডেল প্রকৃতির চার মৌলিক শক্তির একটি ইউনিফাইড বিবরণ প্রদান করবে: ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিজম, শক্তিশালী এবং দুর্বল নিউক্লিয়ার শক্তি, এবং মাধ্যাকর্ষণ এগারো-ত্রিমাত্রিক আধিকারিকদের আগ্রহ হ্রাস পায় কারণ এই স্কিমের বিভিন্ন ত্রুটি আবিষ্কার করা হয়েছিল। সমস্যা এক যে পদার্থবিজ্ঞান আইন ঘড়ির কাঁটার এবং বিপরীত দিকের মধ্যে পার্থক্য প্রদর্শিত, chirality হিসাবে পরিচিত একটি প্রপঞ্চ। এডওয়ার্ড উইটনের এবং অন্যদের এই chirality সম্পত্তি অবিলম্বে Eleven মাত্রা থেকে compacting দ্বারা প্রাপ্ত করা যাবে না। ১৯৮৪ সালে প্রথম সুপার স্ট্রিং বিপ্লবের সময়ে, অনেক পদার্থবিজ্ঞানী কণা পদার্থবিজ্ঞান এবং কোয়ান্টাম মাধ্যাকর্ষণ একটি ইউনিফাইড তত্ত্ব হিসাবে স্ট্রিং থেরাপি পরিণত। সুপারগ্যাভিটি তত্ত্বের বিপরীতে, স্ট্রিং থিওরিটি আদর্শ মডেলের চৈতন্যতা ধারণ করতে সমর্থ হয়েছিল এবং এটি কোয়ান্টাম প্রভাবগুলির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্বকে উপলব্ধ করেছিল। স্ট্রিং থিওরির আরেকটি বৈশিষ্ট্য যা ১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকে অনেক পদার্থবিজ্ঞানীকে টেনে আনা হয়েছিল তার উচ্চতম স্বতন্ত্রতা। সাধারণ কণা তত্ত্বগুলিতে, কেউ মৌলিক কণিকাগুলির কোনও ধারণাকে বিবেচনা করতে পারে যার শাস্ত্রীয় আচরণ একটি আভ্যন্তরিত Lagrangian দ্বারা বর্ণিত। স্ট্রিং থিওরিতে, সম্ভাব্যতা অনেক বেশি সীমাবদ্ধ: 1990 এর দশকে পদার্থবিজ্ঞানীরা যুক্তি দিয়েছিল যে এই তত্ত্বের মাত্র পাঁচটি সুষম সুপারিশমর্ট সংস্করণ রয়েছে। যদিও একমাত্র সঙ্গতিপূর্ণ superstring তত্ত্ব ছিল, এটি একটি রহস্য ছিল কেন শুধুমাত্র একটি সুসংগত সূত্র ছিল না। যাইহোক, পদার্থবিজ্ঞানীরা স্ট্রিং থিওরিটি আরো ঘনিষ্ঠভাবে পরীক্ষা করতে শুরু করে, তারা বুঝতে পেরেছিল যে এই তত্ত্বগুলি জটিল এবং নন্ট্রিয়াল পদ্ধতিতে সম্পর্কিত। তারা দেখে যে দৃঢ়ভাবে স্ট্রাইকিং স্ট্রিং একটি সিস্টেম, কিছু ক্ষেত্রে, দুর্বলভাবে ইন্টারঅ্যাক্টিং স্ট্রিং সিস্টেম হিসাবে দেখা যাবে। এই প্রপঞ্চটি এস-দ্বৈত নামে পরিচিত। অশোক সেনের চারটি মাত্রা এবং ক্রিস হুল এবং পল টাউনসেন্ডের প্রকারে আইবিবি তত্ত্বের প্রেক্ষিতে হেটারটিক স্ট্রিংয়ের প্রসঙ্গে এটি অধ্যয়ন করা হয়েছিল। তত্ত্ববিদরাও দেখেছিলেন যে বিভিন্ন স্ট্রিং থিমগুলি টি দ্বৈত দ্বারা সংযুক্ত হতে পারে। এই দ্বৈততাটি বোঝায় যে সম্পূর্ণ স্পেসটাইম জ্যামিতিগুলিতে প্রচারিত স্ট্রিং শারীরিক সমতুল্য হতে পারে। প্রায় একই সময়ে, অনেক পদার্থবিজ্ঞানীরা স্ট্রিংগুলির বৈশিষ্ট্যগুলি অধ্যয়ন করছিল, অনেকগুলি পদার্থবিদরা উচ্চতর মাত্রিক বস্তুর সম্ভাব্য প্রয়োগগুলি পরীক্ষা করছিলেন। ১৯৮৭ সালে, এরিকে বার্জশোফ, ইরিগিন সেজিন এবং পল টাউনসেন্ড দেখিয়েছিলেন যে এগারো-মাত্রিক সুপারগ্যাভটিটিটি দ্বি-মাত্রিক ব্রানে অন্তর্ভুক্ত। তাত্পর্যপূর্ণভাবে, এই বস্তুগুলো 11-তম মাত্রিক স্পেসটাইমের মাধ্যমে প্রচারিত শীট বা ঝিল্লির মত দেখাচ্ছে। এই আবিষ্কারের অল্প পরেই, মাইকেল ডাফ, পল হাভ, টেকো ইনামি এবং কেলগ স্টেলে 11-এর মাত্রিক আধিকারিকদের একটি বিশেষ কম্প্যাক্টিফিকেশন বিবেচনা করে একটি মাত্রাটি বৃত্তের মধ্যে ঘোরা। এই সেটিংয়ে, বৃত্তাকার মাত্রার চারপাশে ঝিল্লি মোড়কে কল্পনা করতে পারে। যদি বৃত্তের ব্যাসার্ধটি যথেষ্ট ছোট হয়, তবে এই ঝিল্লিটি দশ-মাত্রিক স্পেসটাইমের মতো একটি স্ট্রিংের মত দেখতে যায়। বস্তুত, ডাফ এবং তার সহযোগীরা দেখিয়েছেন যে এই নির্মাণটি একই ধরনের টাইপ IIA সুপার স্ট্রিং তত্ত্বের মধ্যে প্রকাশ করে। ১৯৯৫ সালে স্ট্রিং থিওরি কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন, এডওয়ার্ড উইথন বিস্ময়কর পরামর্শ দিয়েছিলেন যে সমস্ত পাঁচটি সুপার স্ট্রিং তত্ত্ব আসলেই একমাত্র তত্ত্বের সীমিত ক্ষেত্রে একাদশ স্থানকালের মাত্রা। Witten এর ঘোষণা S- এবং T- দ্বৈত নেভিগেশন পূর্ববর্তী সব ফলাফল একত্রিত এবং স্ট্রিং তত্ত্ব উচ্চতর মাত্রিক ব্রাউন চেহারা। উইটনের ঘোষণার পরের কয়েক মাসে, কয়েক হাজার নতুন কাগজপত্র ইন্টারনেটে তার প্রস্তাবের বিভিন্ন অংশ নিশ্চিত করেছে। আজকের এই ভয়াবহ কাজটি দ্বিতীয় সুপারস্ট্রিং বিপ্লবের নামে পরিচিত। প্রাথমিকভাবে, কিছু পদার্থবিজ্ঞানী প্রস্তাব করেছিলেন যে নতুন তত্ত্বটি ঝিল্লির একটি মৌলিক তত্ত্ব ছিল, কিন্তু উইথেন তত্ত্বের ক্ষেত্রে ঝিল্লির ভূমিকা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। ১৯৯৬ সালের একটি প্রবন্ধে হোভারা ও উইথন লিখেছিলেন "এটি প্রস্তাব করা হয়েছে যে এগারো-ত্রিমাত্রিক তত্ত্ব একটি সুপারমেমব্রেন তত্ত্ব কিন্তু এই ব্যাখ্যাটি সন্দেহ করার কিছু কারণ রয়েছে, আমরা অকথ্যভাবে এটি এম তত্ত্ব বলিl
দর্পন সমানুতা:
ক্যালবি-ইউ-এর পরে বহু পদার্থবিজ্ঞান স্ট্রিং থিওরিতে অতিরিক্ত মাত্রা সংমিশ্রণ করার উপায় হিসেবে পদার্থবিজ্ঞানে প্রবেশ করে, অনেক পদার্থবিজ্ঞানী এই বহুবিধ গুণাবলির অধ্যয়ন শুরু করেন। 1980 এর দশকের শেষের দিকে, বেশ কিছু পদার্থবিদরা লক্ষ্য করেছিলেন যে স্ট্রিং থিওরির এই ধরনের কম্প্যাক্টিকেশন দেওয়া হয়েছে, এটি একটি আলাদা আলাদা ক্যালবি-ইয়ু ম্যানিফোনের পুনর্গঠন করা সম্ভব নয়। পরিবর্তে, স্ট্রিং থিওরির দুটি ভিন্ন সংস্করণ, টাইপ IIA এবং টাইপ আইআইবি, সম্পূর্ণ আলাদা আলাদা পদার্থবিজ্ঞানে উদ্ভূত Calabi-Yau manifolds উপর কম্প্যাক্ট করা যেতে পারে। এই অবস্থায়, ম্যানিফ্লাইড্সকে মিরর ম্যানিফেক্স বলা হয় এবং দুটি শারীরিক তত্ত্বের মধ্যে সম্পর্ককে মিরর সমতা বলে। যেহেতু স্ট্রিং তত্ত্বের ক্যালবি-ইউ কম্প্যাক্টিফিকেশন প্রকৃতির সঠিক বর্ণনা প্রদান করে না, তবে বিভিন্ন স্ট্রিং তত্ত্বগুলির মধ্যে আয়না দ্বৈততার অস্তিত্ব উল্লেখযোগ্য গাণিতিক পরিণতিগুলির মধ্যে রয়েছে। স্ট্রিং থিওরিতে ব্যবহৃত ক্যালবি-ইউ ম্যানিফ্ডগুলি সুস্পষ্ট গণিতের স্বার্থের বিষয় এবং মিরর সমবায় গণিতবিদগণ জ্যামিতিক প্রশ্নগুলির সমাধানগুলির সংখ্যা গণনা করার সাথে সম্পর্কিত গণিতশাস্ত্রের একটি শাখাকে গণনাকারী জ্যামিতিতে সমস্যা সমাধান করতে দেয়। উল্লেখযোগ্য জ্যামিতি জ্যামিতিক বস্তুর একটি বর্গ অধ্যয়ন করে যা বীজগাণিতার বৈচিত্র বলে দেয় যা পলিনোমিয়ালের অদৃশ্য দ্বারা সংজ্ঞায়িত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ডান দিকে চিত্রিত ক্লেবসক ঘনটি একটি বীজগাণিতিক বৈচিত্র যা সংজ্ঞায়িত কয়েকটি ভেরিয়েবলের মধ্যে তিনটি ডিগ্রি একাধিপত্য ব্যবহার করে। ঊনবিংশ শতাব্দীর গণিতবিদ আর্থার ক্যালী এবং জর্জ সেলমানের একটি উদ্যাপিত ফলাফল বলে যে ২7 টি সরাসরি লাইন রয়েছে যা এই পৃষ্ঠের উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল। এই সমস্যাটি সাধারণীকরণের জন্য, কেউ কেউ জিজ্ঞাসা করতে পারেন যে কত সংখ্যক লাইনগুলি একটি ক্যালেন্টি ক্যালাবী-ইয়ু ম্যানিফোডের উপর আঁকতে পারে, যেমন উপরে বর্ণিত এক, যা ডিগ্রি পাঁচের বহুভাষীর দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়। এই সমস্যাটি উনিশ শতকের জার্মান গণিতবিদ হারমান স্কুবার্টের দ্বারা সমাধান করা হয়েছিল, যিনি ২৮৭৫ টি ঠিকানায় লিখেছেন। 1986 সালে, জ্যামোমিটার শেলেডন কাটজ প্রমাণ করেছিলেন যে বৃত্তগুলির সংখ্যা, যা ডিগ্রি দুইটির বহুসংখ্যক বিন্যাস দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয় এবং সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ করে ৬০৯২৫০ হয়। ১৯৯১ সালের মধ্যে, পরিসংখ্যানগত জ্যামিতিগুলির বেশিরভাগ শাস্ত্রীয় সমস্যা সমাধান করা হতো এবং গণিত জ্যামিতিতে আগ্রহ কম হতো। 1991 সালের মে মাসে পদার্থবিজ্ঞানী ফিলিপ কামেলাস, জিনিয়া দে লা ওসা, পল গ্রিন এবং লিন্ডা পার্সের মতে, মিরর সমীকরণটি ক্যালবুই-ইয়াউ সম্পর্কে একাধিক গাণিতিক প্রশ্নকে তার আয়না সম্পর্কে সহজ প্রশ্নে অনুবাদ করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। বিশেষ করে, তারা মিরর সমতা ব্যবহার করে দেখিয়েছেন যে, ছয়টি মাত্রিক ক্যালাবী-ইয়ু মাইনফোল্ডটি 3 ডিগ্রি 317,206,375 কার্ভে ধারণ করতে পারে। ডিগ্রি-তিন কার্ভ গণনা ছাড়াও, ক্যান্ডেলাস এবং তার সহযোগীরা আরও জটিল ফলাফলের গণনা করার জন্য বেশ কয়েকটি সাধারণ ফলাফল অর্জন করেছেন যা গণিতজ্ঞদের প্রাপ্ত ফলাফলের বাইরেও বেশি। মূলত, ক্যান্ডেলাসের এই ফলাফলগুলি প্রকৃত ভিত্তিতে প্রমাণিত ছিল। যাইহোক, গণিতজ্ঞরা সাধারণত কঠোর প্রমাণ পছন্দ করে যা শারীরিক স্ববিরোধের জন্য আপীলের প্রয়োজন হয় না। মিরর সমান্ত্রায় পদার্থবিদদের কাজ দ্বারা অনুপ্রাণিত, গণিতজ্ঞেরা তাই তাদের নিজস্ব আর্গুমেন্টগুলি তৈরি করেছেন যা মিরর সমীকরণের পরিমান পূর্বাভাস প্রমাণ করে। আজকে মিরর সমতাটি একটি গণিত বিষয়ে গবেষণার সক্রিয় ক্ষেত্র এবং গণিতজ্ঞগণ আরও পূর্ণ গাণিতিক বোঝার পদার্থবিজ্ঞানের অন্তর্দৃষ্টি উপর ভিত্তি করে আয়না সমতা। মিরর সমাহারের প্রধান পন্থাগুলি ম্যাক্সিম কনটেসভিচের উত্সব সমবায় প্রোগ্রাম এবং অ্যান্ড্রু স্ট্রোমিংগার, শিং-টুং ইয়াও এবং এরিক জাস্লোের SYZ এর অনুমানের অন্তর্ভুক্ত।
M-তত্ত্বঃ
তবে সুপারস্ট্রিং তত্ত্বে একটা বড় সমস্যা দেখা দেয়। দেখা যায় সুপারস্ট্রিং তত্ত্ব হতে পারে ৫ রকমেরঃ
Type I
Type IIA
Type IIB
SO(32) Heterotic
E8xE8 Heterotic
যে ‘একটিমাত্র সর্ববিষয়ক তত্ত্ব’-এর জন্য এত খোঁজ, তার কিনা নিজেরই ৫ রকম ধরণ! এ কেমন একীভবন?
ওদিকে সুপারগ্র্যাভিটি তত্ত্বও কিন্তু মৃত হয়নি। কিছু বিজ্ঞানী দেখাতে সমর্থ হন, ১০ মাত্রিক সুপারস্ট্রিং তত্ত্বে যেমন একমাত্রার বস্তুর (স্ট্রিং) উপস্থিতি আছে, ১১ মাত্রিক সুপারগ্র্যাভিটি তত্ত্বে আছে দুইমাত্রার বস্তুর উপস্থিতি। তাঁরা এর নাম দেন ব্রেন বা স্তর (Membrane বা সংক্ষেপে Brane)। তাঁরা দেখান যে এই সুপারগ্র্যাভিটি তত্ত্বের ১১ টি মাত্রার একটিকে বিশেষ ভাবে গোটালে (Compactification) ব্রেনগুলি তাতে ১০ মাত্রার সুপারস্ট্রিং তত্ত্বের Type IIA-র স্ট্রিং এর মত দেখায়।
আবার, বিভিন্ন ধরণের সুপারস্ট্রিং তত্ত্বগুলির নিজেদের মধ্যে কতগুলি অপ্রত্যাশিত দ্বৈততা (Duality)-র সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। এগুলি একটি ধরণের সাথে অন্য একটি ধরণকে যুক্ত করে।
এরপর এটাও জানা যায় যে সুপারস্ট্রিং তত্ত্বের বিশেষ ধরণের কিছু স্ট্রিং ৫ মাত্রার ব্রেনের মত আচরণ করে।
সুপারস্ট্রিং তত্ত্বের একধরণের ব্রেন (D-ব্রেন)
এই সংযোগগুলি দেখে বোঝা যায় ৫ টি সুপারস্ট্রিং তত্ত্ব ও সুপারগ্র্যাভিটি তত্ত্ব আসলে একটিমাত্র বৃহত্তর তত্ত্বের নানারূপ প্রকাশ। এই সম্পূর্ণ একীভূত মহাতত্ত্বকে বলে ‘M-তত্ত্ব’। এটি ১১ মাত্রিক তত্ত্ব (যার ৪ টি বৃহৎ মাত্রা ও ৭ টি গোটানো বা কুঞ্চিত মাত্রা) যাতে আছে স্ট্রিং ছাড়াও ২ ও ৫ মাত্রার ব্রেন।
এটা অনেকটা জিগস পাজলগুলির মত যাতে টুকরোগুলি সাজিয়ে সম্পূর্ণ চিত্রটি গড়ে তুলতে হয়। এম-তত্ত্বের ক্ষেত্রে সুপারস্ট্রিং ও সুপারগ্র্যাভিটি তত্ত্বগুলি হল চারদিকটা। এটুকু বোঝা গেছে যে সেটা একটা সম্পূর্ণ চিত্রের অংশ। কিন্তু মধ্যবর্তী অংশটি এখনও অস্পষ্ট যাতে সম্পূর্ণ চিত্রটি ফুটে ওঠে। এই এম-তত্ত্বই হল স্ট্রিং তত্ত্বের সর্ববৃহৎ সাধারণীকৃত রূপ এবং স্ট্রিং তাত্ত্বিকদের মতে ‘Theory of Everything’ হয়ে ওঠার মত সব উপাদানই এতে আছে।

এম-তত্ত্বের খোঁজঃ
এম-তত্ত্বের অন্তর্বর্তী গঠন খোঁজার জন্য একটি পদ্ধতি হল BFSS ম্যাট্রিক্স মডেল। এই মডেলটিকে এম-তত্ত্ব তৈরির জন্য একটি প্রোটোটাইপ মনে করা হয়।
AdS/CFT Correspondence:
স্ট্রিংতত্ত্বের দুরূহ গণিতের কারণে স্ট্রিংতত্ত্বের অনেক বিষয় বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু AdS/CFT correspondence ব্যবহার করে একটি স্ট্রিং তত্ত্বকে একটি কোয়ান্টাম ক্ষেত্রতত্ত্বে পরিণত করা যায় যেগুলি অনেকটা বেশী ভালো করে বোঝা গেছে। ফলে স্ট্রিংতত্ত্বের আলোচনা অনেকটা সুবিধেজনক হয়। এই পদ্ধতি পদার্থবিদ্যার নানাক্ষেত্রের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি।
স্ট্রিংতত্ত্ব বা বৃহত্তর এম-তত্ত্ব বহুরকম ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয় পদার্থবিদ্যার এখনও সমাধান না হওয়া প্রশ্নগুলি সমাধানের চেষ্টায়। তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হল- বিশ্বতত্ত্ব (Cosmology)
ব্রেন বিশ্বতত্ত্ব (Brane Cosmology):
এতে স্ট্রিংতত্ত্বের সাহায্যে মহাবিশ্বের সৃষ্টি ও গঠন বর্ণনা করার চেষ্টা হয়। এর মধ্যেকার কিছু বিশেষ ধারণা হলঃ
বহু-মহাবিশ্বঃ স্ট্রিং থিওরী ল্যান্ডস্কেপ (String theory landscape) তত্ত্ব বলে আমাদের মহাবিশ্বই একমাত্র নয়, আরও অকল্পনীয় বিরাট সংখ্যক মহাবিশ্ব থাকা উচিত। এর কোনটা সম্পূর্ণ অন্যরকম, কোনটা প্রায় একই, কোনটায় প্রাণ নেই, কোনটায় আছে, কোনটায় আমরা পর্যন্ত আছি সামান্য কিছু তফাৎসহ (যেমন হয়ত সেখানে আমি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ফুটবলার বা পৃথিবীর একটি বলয় আছে!) এমনকি সম্পূর্ণ একই একটি মহাবিশ্ব থাকাও আশ্চর্য নয়! একে বলে বহু-মহাবিশ্ব (Multiverse)।
সমান্তরাল মহাবিশ্বঃ ব্রেন বিশ্বতত্ত্ব মতে মহাবিশ্ব ১১ মাত্রার বটে কিন্তু তার ৪ টি বাদে বাকী সবগুলোই কুঞ্চিত তাও হয়ত নয়। হয়ত কোন একটি আমাদের ৪ মাত্রার চেয়েও অনেক বড় তাই তাদের দেখা/বোঝা যায়না। এমনকি এও হতে পারে যে আমাদের ৪ মাত্রার মহাবিশ্ব আসলে নিজেই একটি বিরাট ব্রেন যা আরও বড় একটি মাত্রায় ভাসছে। হয়ত আশেপাশে ৪ মাত্রার আরও ব্রেন আছে যারাও একেকটি মহাবিশ্ব। এদের বলে ‘সমান্তরাল মহাবিশ্ব’ (Parallel Universe)। মনে করা হয় সমান্তরাল ব্রেন মহাবিশ্বগুলি শুধুমাত্র মহাকর্ষের মাধ্যমে একে অপরকে প্রভাবিত করতে পারে। কারণ মহাকর্ষের কণা গ্র্যাভিটন-এর স্ট্রিংগুলি বদ্ধফাঁস বলে এক ব্রেন থেকে ছাড়া পেয়ে অন্য ব্রেনে যেতে পারে কিন্তু অন্যান্য কণার (যেমন আলোর কণা ফোটন) স্ট্রিংগুলি মুক্তপ্রান্ত বলে ব্রেনের সাথে আটকে থাকে। ফলে আমরা সমান্তরাল মহাবিশ্বগুলিকে দেখতে পাইনা। মহাকর্ষ অন্যান্য বলগুলির তুলনায় খুব দুর্বল কেন তারও ব্যাখ্যা মেলে কারণ উপরোক্ত পদ্ধতিতে মহাকর্ষ যেন বাড়তি মাত্রায় leak করতে থাকে।
বারবার মহাবিস্ফোরণ ও চক্রীয় মহাবিশ্বঃ বলা হয় যে হয়ত এরকম দুটি সমান্তরাল ব্রেনের ধাক্কার ফলেই মহাবিস্ফোরণ (Big Bang) ঘটেছিল এবং তার ফলেই হয়ত মহাবিস্ফোরণ কোনও একক ও অদ্বিতীয় ঘটনাও নয়- হয়ত বারবার মহাবিস্ফোরণ চলতে থাকে।
স্ট্রিং থিওরীর সত্যতাঃ
দুঃখের বিষয় এত বড় আর সমৃদ্ধ তত্ত্বের স্বপক্ষে কোনও পরীক্ষামূলক প্রমাণ আজও নেই। এমনকি পরীক্ষা করে দেখাও নিতান্ত কঠিন বিভিন্ন কারণে। একটা প্রধান কারণ হল- স্ট্রিং এত অকল্পনীয় রকম ক্ষুদ্র যে এখনকার সবচেয়ে শক্তিশালী যন্ত্রেও সেটা ধরা পরার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। উপযুক্ত শক্তিশালী যন্ত্র তৈরি করাও প্রায় অসম্ভবের পর্যায়ে কারণ সেই শক্তির পরিমাণ আজকের যন্ত্রগুলির বিলিয়ন বিলিয়ন গুণ বেশী প্রয়োজন। তাই স্ট্রিং তাত্ত্বিকরা পরোক্ষভাবে প্রমাণের উপায় বের করতে চেষ্টা করছেন। স্বপক্ষে প্রমাণ মিললে তা হবে পদার্থবিদ্যার এক মস্ত বড় জয়। প্রমাণ না মিললে/বিপক্ষে প্রমাণ মিললে এত সুন্দর ও প্রকাণ্ড তত্ত্ব হয়ে যাবে রাতারাতি বাতিল। বিজ্ঞান এরকমই। তবে হ্যাঁ, স্ট্রিং তত্ত্বে ব্যবহৃত গণিত এত উচ্চমানের যে তা গণিতশাস্ত্রকেই এগিয়ে দিয়েছে বেশ খানিকটা। পদার্থবিদ্যার তত্ত্ব হিসেবে স্ট্রিংতত্ত্ব ভুল প্রমাণ হলেও গণিতে অবদানগুলি থেকে যাবে।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অথর্ববেদ ২/১৩/৪

  ह्यश्मा॑न॒मा ति॒ष्ठाश्मा॑ भवतु ते त॒नूः। कृ॒ण्वन्तु॒ विश्वे॑ दे॒वा आयु॑ष्टे श॒रदः॑ श॒तम् ॥ ত্রহ্যশ্মানমা তিষ্ঠাশ্মা ভবতুতে তনূঃ। কৃণ্বন্তু...

Post Top Ad

ধন্যবাদ