নিরাকার ঈশ্বর কিভাবে সৃজন করে - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

02 July, 2020

নিরাকার ঈশ্বর কিভাবে সৃজন করে

নিরাকার ঈশ্বর কিভাবে সৃজন করে ? কাল রশ্মি কি ও তার বিজ্ঞান ক্রিয়া কি ?
প্রশ্নের উত্তর বেদ বিজ্ঞানের আলোকে

সৃষ্টির কনায় কনায়, স্পেসে কালই কার্য করে থাকে। কালরশ্মি প্রকৃতিতে সমাহিত থাকে। সৃষ্টির প্রথম স্টেপে কালরশ্মি(পরা ওম্ রশ্মি) প্রকৃতির গুনসমুহের সাম্যবস্থা বিনষ্ট করে দেয়। কাল রশ্মি তথা ওম্ রশ্মি অনাদি। সর্বত্র বিদ্যমান থাকে। তিন কালেই কালের কোন পরিবর্তন হয় না। কাল করশ্মি তথা ওম্ রশ্মি প্রকৃতির গর্ভে মহতত্বের সৃজন করেন। মহতত্বের মাঝে পরা ওম্ তথা কাল রশ্মি কাজ করবার ফলে মহতত্ব মনস্তত্বে কনভার্ট হয়ে যায়। কাল রশ্মি পশ্যন্তি ওম্ রশ্মিকে প্রেরণ করে পশ্যন্তি ওম্ রশ্মি সাত মহা ব্যাহৃত রশ্মিকে প্রেরনা করে থাকে। উক্ত সাত রশ্মির প্রভাবে মনস্তত্বের মধ্যে দশ প্রাণরশ্মির নির্মান হয়ে যায়। উক্ত দশ প্রকারের প্রাণরশ্মি কতৃক বিভিন্ন সকল বেদ মন্ত্রকেই মনস্তত্বের মাঝে উৎপন্ন করে।  মরুত রশ্মি,ছন্দরশ্মি,প্রাণরশ্মি প্রভৃততি ফোটন,কার্ক,কোয়ান্টা,পার্টিকেল,
ইলিমেন্টারি পার্টিকেল,আয়ন অ্যাটম, এবং মলিকূল প্রভৃতি কালরশ্মি দ্বারা নির্মিত হয়ে থাকে। কাল রশ্মির প্রভাবে আস্তে আস্তে গ্যালাক্সি,নেবুলা,সূর্য,চন্দ, এবং বহু প্রকারের বলের নির্মান হতে থাকে। ঈশ্বর কালকে প্রেরণা করে কাল প্রকৃতিকে ডিষ্টার্ব করে প্রকৃতি মহতত্ব আদি অহংতত্ব এবং মনস্তত্বকে নির্মান করে বিভিন্ন প্রকারের বেদ ঋচার জন্ম দিয়ে থাকে। ছোট বড় বেদ ঋচা দ্বারা মনস্তত্ব পূর্ন হতে থাকে। মনস্তত্বের মাঝে উৎপন্ন ঋচাই হলো ফোর্স বা বৃহৎ বল।  এই সকল বলের ও বল পরা ওম্ রশ্মি তথা কাল রশ্মি।

ঈশ্বর বিশেষ নিমিত্তকারণ।
পরাওম্ তথা কাল রশ্মি সাধারণ নিমিত্ত কারণ।বলে জানিও।

ওম্ রশ্মি নিয়ে অথর্ববেদে একটি সূক্ত আছে যেখানে কালের তথা পরা ওমের বিশদ ভাবে ৭  বিশেষন ব্যক্ত করা হয়েছে-
ঋষিঃ ভৃগু /দেবতা কাল /ছন্দ ত্রিষ্টুভ।
কালো অশ্বো বহতি সপ্তরশ্মিঃ সহস্ত্রাক্ষো অজরো ভূরিরেতাঃ। 
তমা রোহন্তি কবয়ো বিপশ্চিৎ সপ্ত চক্রা ভূবনানি।। 
(অথর্ব ১৯/৫৩/১)
মন্ত্রপদার্থের অর্থঃ
(১) সহস্রাক্ষ-কালের হাজর অক্ষ। অক্ষ শব্দের অর্থ অক্ষর। প্রকৃতি অক্ষর রূপই হয়। প্রকৃতির মাঝে শায়িত থাকে সহস্র অক্ষর। যাহা স্বর এবং ব্যঞ্জন অক্ষর রশ্মিরূপে সৃষ্টি হয়ে থাকে।
(২) সপ্তরশ্মিঃ-কাল রশ্মি জতে জন্ম নেয় সাত প্রকারের মহাব্যাহৃত রশ্মি। ভূঃ র্ভবঃ স্বঃ মহঃ জনঃ     তপঃ সত্যঃ। উহারা কাল রশ্মি তথা পরা ওম রশ্মি দ্বারা প্রেরিত হয়ে কার্য করতে থাকে।                         (নিরুক্ত ৪/২৬ সপ্ত সংখ্যা মহাব্যাহৃত রশ্মি)।। প্রথমে এ সকল বানী পরা অবস্থায় উৎপন্ন                       হয়।
(৩)অশ্ব- কাল তীব্রগামী। কাল রশ্মি মহতত্বের সকল স্থানে একসাথে কার্য করতে থাকে সর্বত্র স্পন্দন করে থাকে বলে কালের আরেক নাম অশ্ব।
(৪) অজর- কাল রশ্মি অনাদি অবিনাশী। কাল দ্বারা সকল সৃষ্টির নির্মান হয় তথাপি সৃষ্টি জীর্ণ হলে ও   কাল রশ্মি জীর্ণ হয় না। তাই কাল অজর।
(৫)ভূরিরেতা- কাল রেতবান। কালের স্বভাব সৃষ্টি রচনা করা তাহা ধারণ করা এবং প্রলয় করা। কালই   স্বয় অনেক প্রকারের পদার্থ উৎপন্ন করে থাকে।  মহতত্ব হতে পৃথিবী,চন্দ্র,সূর্য পর্যন্ত কাল                      সৃষ্টি করে থাকে বলে কালের অারেক বিশেষন ভূরিরেতা।
(৬) সপ্ত চক্র- কাল পাচ প্রাণ রশ্মি এবং ধনঞ্জয় প্রাণ ও সূত্রাত্মার নির্মান করে বলে কালের বিশেষণ     সপ্ত চক্র।
(৭) সপ্তনাভি-  ভূঃ র্ভবঃ স্বঃ মহঃ জনঃ তপঃ সত্যঃ আদি সাত রশ্মিই সপ্তনাভি বিশেষনে খ্যাত। ভূ রশ্মি পৃথিবীর নাভি, ভূবঃ রশ্মি আকাশের নাভি,স্বঃ রশ্মি সূর্য আদি প্রকাশিত লোকের নাভি। মহঃ সর্বলোকের নাভি। সর্বলোকে ইহার কার্য ক্ষেত্র বিস্তার ঘটে। এভাবে সাত রশ্মি  নাভির ন্যায় কার্য করে বলে কালের আরেক বিশেষণ সপ্তনাভি।

কালাদাপ সমভবন্কারাদ্ ব্রহ্ম তপো দিশঃ।
কালেনোদেতি সূর্য়ঃ কালে নি বিশতে পুনঃ।।১।। (অথর্ব০ ১৯/৫৪/১)
পদার্থঃ (কালাত্) কাল দ্বারা (আপঃ) জল (সমভবন্) প্রকট হয়ে। (কালাত্) কাল দ্বারা (ব্রহ্ম) বেদ, (তপঃ) প্রতপ্ত সূর্য, আর (দিশঃ) দিমার প্রকট হয়। (কালেন) কাল দ্বারা (সূর্য়ঃ উদেতি) সূর্য উদিত উদিত হয়। (কালে) আর কালে (পুনঃ) আবার (নি বিশতে) প্রবেশ হয়ে যায়, অস্ত হয়ে যায়।।১।।
[আপঃ “তস্মাদ্বা এতস্মাদাত্মাদাত্মনঃ আকাশঃ সম্ভূতঃ। আকাশাদ্বায়ুঃ বায়োরাগ্নিরগ্নেরাপ অদভ্যঃ পৃথিবী” (উপনিষদ) এর অনুসার অগ্নি দ্বারা আপঃ প্রকট হয়ে। মন্ত্র ১৯, ৫৩, ১০ মধ্যে “তপঃ” দ্বারা অগ্নির উৎপত্তি দর্শায়, আর ১৯. ৫৪.১ মধ্যে “আপঃ” এর। এই ক্রম উপনিষদ দ্বারাও নির্দিষ্ট করে যায়। ব্রহ্ম=বেদ, দেখ (১৯.৫৩.৮)। দিশঃ=দিমার পরিজ্হান সূর্যাদয়ের দিমার দৃষ্টি দ্বারা হয়, এইজন্য তপঃ=প্রতপ্ত সূর্য।]
কাল রশ্মিই পরা ওম্ রশ্মি পরা ওম্ ই কাল রশ্মি।
✍ আচার্য অগ্নিব্রত ন্যাষ্টিক
প্রশ্নঃ ঈশ্বর হতে সব সৃষ্টি হলে সব কিছুই কি ব্রহ্ম বা ঈশ্বর??
উত্তরঃ ব্রহ্ম হলে ও ঈশ্বর নয়। প্রকৃতির অনেক বস্তুর নাম ব্রহ্ম। অন্নকে ব্রহ্ম বলে, ব্রহ্ম চর্যকে ও ব্রহ্ম বলে, অধ্যায়নকে ও বলে। জড় পদার্থ চেতন ব্রহ্ম নন।
উপনিষদের আলোকেই আমি বিষয় টি বর্ননা করলাম।
(ওম্ ইতি ব্রহ্ম) ব্রহ্মই ওম্ ( ওম্ ইতি সর্বম্) ওম্ ই সব কিছু।। ( তৈত্তিরীয় ১/৮) ---ঋষি তিত্তীরের বচন।
ব্রহ্ম শব্দে বৃহৎ।।
ওম্ শব্দে বাচ্য ও বাচক।
বাচক ওম যেটি পরা ওম্।।
বাচ্য ওম্ যিনি সৃষ্টিকর্তা সয়ম্ভূঃ।।
ঋষি তিত্তীর এখানে বাচ্য বাচক দুই প্রকারের ওমেরই বর্ণনা করেছেন।
পরা ওম্ যেটি বাচক। যেটিকে ওম্ রশ্মি বলি সেটি একটি দ্রব্য। যাহা কাল রশ্মি। সৃষ্টির প্রথম পদার্থ এই পরা ওম্ রশ্মি। ঋষি কনাদ পরা ওম্ তথা কালকে দ্রব্য বলে গন্য করেছেন। পরমাত্মা কতৃক পরা ওম্ রশ্মি প্রথমেই অ্যাকটিভ হয়। সেই ওম্ রশ্মি দ্বারা সকল সৃষ্টির নির্মান হতে থাকে।
তাই ঋষি তিত্তীর বলেছে ( ওম্ ইতি সর্বম্) ওম্ ই সব। অর্থাৎ ওম্ ই সব হয়েছেন। এই ওম্ পরা ওম্।
বাচ্য ওম্।
সয়ম্ভূঃ পরমাত্মাই বাচ্য ওম্। (তস্য বাচকঃ প্রণবঃ)। সয়ম্ভূঃ পরমাত্মা কতৃক পরা ওম্ জগৎ নির্মান করেন। সয়ম্ভূঃ নিজে সৃষ্টি হন না বা তাহা হতে কোন এনার্জি ও ট্রান্সফার হয় না। পরমাত্মা তথা সয়ম্ভূঃ হতে কোন ম্যাটারিয়াল ও উৎপত্তি হয়ে জগৎ নির্মান করে না - কারণ বাচ্য ওম্ নিমিত্ত কারণ। সযম্ভূঃ পরমাত্মা বিকার রহিত। তাই সয়ম্ভূঃ পরমাত্মা নিজে সৃষ্টি হন না বা নিজ হতে সৃষ্টি করেন না তিনি অখন্ড পূর্ণ।
পরা ওম্ রশ্মির দ্বারাই ইউনির্ভাসের নির্মান।
পরা ওম্ রশ্মিই অনাদি সত্বা। প্রলয়ে নিষ্ক্রিয় সৃষ্টির সময় সক্রিয় হয়ে থাকে। এটি কাল রশ্মি। কাল. দিশা. টাইম সব এক বস্তু প্রায় সামান্য ভেদ যেমন কাচা পাকা অাম। মূল প্রকৃতির সহিত পরমাত্মায় অাশ্রিত থাকে পরা ওম্। পরা ওম্ দ্বারা সয়ম্ভূঃ ঈশ্বর প্রকৃতির বিভাজন করে থাকেন। প্রকৃতিই উপাদান কারন। এই প্রকৃতি নামক উপাদাণ কারন পরা ওম্ রশ্মির দ্বারা গর্ভবতী হন। তথা মহতত্বধারী তত্বের নির্মান করেন। তার পরে ইনির্ভাসের একেক তত্বের নির্মান হতেই থাকে। শেষে চন্দ্র, সূর্য,নক্ষত্র,গ্যালাক্সি,তারামন্ডলি ইত্যাদি সৃষ্টি হন।
আশা করি নিরাকার পরমাত্মা হতে দ্রব্যময় উপাদান যুক্ত ইউনির্ভাসের নির্মান কিভাবে হয় সেটি সকলে বুঝতে পেরেছেন।

।।ও৩ম্ শান্তি শান্তি শান্তি।।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ