ওঁ ধ্বনি - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

30 July, 2020

ওঁ ধ্বনি

ওঁ ধ্বনি
অ (A), উ (U) এবং ম(M) এই ত্র্যক্ষর (তিন অক্ষর) মিলে এক ‘ওম্’ সৃষ্টি হয়েছে।ওঁ শব্দটি সংস্কৃত ‘অব’ ধাতু থেকে উৎপন্ন। এই ওঁ থেকে পরমেশ্বরের অনেক নাম সূচিত হয়। যেমন-‘অ’-কার থেকে বিরাট, অগ্নি এবং বিশ্ব প্রভৃতি; ‘উ’-কার থেকে হিরণ্যগর্ভ, বায়ু এবং তৈজস প্রভৃতি; ‘ম’-কার থেকে ঈশ্বর, আদিত্য এবং প্রাজ্ঞ প্রভৃতি নাম সূচিত ও গৃহীত হয়। প্রকরণানুসারে এই সকল যে পরমেশ্বরেরই নাম তাহা বেদাদি সত্যশাস্ত্রে সুস্পষ্টরূপে ব্যাখ্যা করা হয়েছে (সত্যার্থপ্রকাশ : পৃঃ ১। ‘‘ওম খং ব্রহ্ম’’ \ ১\ যজুঃ অ. ৪. ম. ১৭\)। ৮ম সংস্করণের সুবলচন্দ্র মিত্র সংকলিত ‘সরল বাঙ্গালা অভিধান’-এর ৩২০ পৃষ্ঠায় ‘ওঁ’-এর ব্যখ্যায় বলা আছে, ‘‘ওংকার, প্রণব, আদ্যবীজ।’’ পরে ৩২১ পৃষ্ঠার ১ম কলামে ‘ওম’-এর অর্থ লেখা আছে ‘‘প্রণব, বিষ্ণুশিবব্রহ্মাত্মক বীজমন্ত্র; স্বীকার; মঙ্গল; আরম্ভ; অপাকরণ। অব (রক্ষা করা)+ম কর্তৃ; অথবা অ (বিষ্ণু)+ উ (শিব)+ম (ব্রহ্মা), সমাহার দ্বন্দ্ব সমাসে সন্ধি করিয়া পদটি নিষ্পন্ন হইয়াছে।’’
মানব জীবনের শুরুতে একটি শিশু যখন কথা বলা শুরু করে, প্রথমে অ-অ উচ্চারন করে। এর কিছু পরে উ-উ বা ও-ও (প্লুতস্বরে) উচ্চারণ শেখে। এর পরে মা, মা-মা বলে ডাকা শুরু করে।
ॐ লেখা মুদ্রা বা পুঁথি পূর্বএশিয়ার নানান দেশের প্রাচীন সভ্যতায় পাওয়া যেত। ওমকে উনালোম বা ওউম হিসাবে ডাকা হয় থাইল্যান্ডে। বিভিন্ন সরকারি কাজে বা পতাকায় এর উপস্থিতি রাজা চতুর্থ রামের (r. 1851–1868) সময়ে দেখা যায়। শ্রীলঙ্কার Anuradhapura যুগের মুদ্রায় (প্রথম থেকে চতুর্থ শতকে)) ॐ দেখা যেত। মেডিয়াভেল ভাস্কর্য্যেও বা শিল্পেও এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
পতঞ্জলির যোগসূত্র-এ ওঁ-কারকে ঈশ্বরের প্রতীক বলে বর্ণিত হয়েছে এবং বলা হয়েছে, ওঁ-কারের স্মরণ ও উচ্চারণে সমাধি লাভ করা যায়। এটি কেবল হিন্দু দর্শনের সর্বোচ্চ ঈশ্বর, ব্রহ্মের বাচক বোধক শব্দ নয়। এই ধর্মের প্রতিটি সম্প্রদায় ও উপসম্প্রদায়, ছাড়াও হিন্দু ধর্ম থেকে সৃষ্টি হওয়া বৌদ্ধ, জৈন্য, শিখদের (ੴ ) কাছে এটি পবিত্র প্রতীক হিসাবে গণ্য করা হয়। এই প্রতীকের দেবনাগরী রূপ ॐ, চীনা রূপ (pinyin – ǎn), কিম্বা সরল চীনাঅক্ষরে (pinyin – wēng), এবং তিব্বতীয় রূপ ༀ। ভারতের উত্তরে বৌদ্ধ ধর্মের বিস্তারে ॐ সেখানে ভিন্নরূপে আবির্ভূত হয়। ওঁ- কার বাংলায় এবং ঔঁ-কার সংস্কৃতিতে। শ্রী শ্রী স্বামী স্বরুপানন্দ পরমহংসদেব বলেছেন- “ওঁ, ওম, ঔং, অউম, ঔঁ” এই পাঁচ প্রকার উচ্চারণের মধ্য বস্তুগত বা অর্থগত কোনো পার্থক্য নেই। এই শব্দ ক্রিশ্চানিটিতে ‘আমেন’ এ পরিবর্তীত হয়েছে পরবর্তী কালে।
১৯৫২ সালে বিজ্ঞানী উইনিফ্রেড সুম্যান (Winifried Schumann) এ পৃথিবীর ৭.৮৩ হার্জে একটি স্বাভাবিক কম্পাঙ্ক খুঁজে পান। এটি ঠিক যেন পৃথিবীর হৃদস্পন্দন। অনেক বিজ্ঞানী এই সুম্যান কম্পাঙ্ককের মাধ্যমে পৃথিবীর তড়িৎ-চুম্বকীয় আবহ এবং পৃথিবীতে বসবাসকারী সকল জীবকুলের জৈব-তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের সম্পর্ক খুঁজে পান। গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে, মোবাইল, স্মার্ট মিটার থেকে যে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ নির্গত হয়, তা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সাথে শরীরের সাম্যের বিঘ্ন ঘটায়। মস্তিষ্কের মেলাটোনিনের ক্ষরণ ব্যাহত করে। আরো নানা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এই সুম্যান তরঙ্গ কেবল এই পৃথিবীর নিজস্ব তরঙ্গ নয়, সেই তরঙ্গেই সকল জীবকুল অনুরণিত হয়। ডাক্তার আঙ্কেরমুলার সর্বপ্রথম সুম্যান তরঙ্গ আর মস্তিষ্কের আলফা তরঙ্গের সম্পর্ক আবষ্কার করেন। এই গবেষণা ডঃ সুম্যানের কাছে আনলে, সুম্যান তার পিএইচডির ছাত্র, হারবার্ট কোনিগকে (Herbert König) এই নিয়ে গবেষণা করতে বলেন। পরবর্তীকালে কোনিগ সুম্যান তরঙ্গ আর ব্রেন ওয়েভ এর সম্পর্ক ব্যাখ্যা করেন ইসিজির মাধ্যমে। উনি দেখান যে, ৭.৮৩ হার্জের এর সুম্যান তরঙ্গ মস্তিষ্কের আলফা এবং থিটা কম্পাঙ্কের মধ্যেই অবস্থিত।
আধুনিক চিকিৎসায় ওষুধ বানাতে একটা বিষয় মাথায় রাখা হয়, মলিকুলার লেভেলে আমাদের শরীর হল পরমাণুর ভাইব্রেটিং সিস্টেম। যার মাধ্যমে আমরা শব্দকে গ্রহণ করতে পারি ও প্রেরণ করতে পারি। আমরা শব্দের মাধ্যমেই আমাদের শরীরে কম্পন পাঠিয়ে আরোগ্যলাভ করতে পারি এবং ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন অংশের পুননির্মাণ করতে পারি। এই কম্পাঙ্কের সাহায্যে ইথারিক প্যাটার্ণ পালটে অসুস্থতার মানসিক কারণের আরোগ্যলাভ করাতে পারি। প্রতিটি মানুষের/জীবের নিজস্ব কম্পাঙ্ক (ভাইব্রেসনাল ফ্রিকুএন্সি) আছে। অসুখের সময়, শক্তির বা কম্পাঙ্কের ওষুধগুলো ব্যবহার করে আরোগ্যলাভ সম্ভবপর হয়।
এই 'ওম' শব্দের মাধ্যমেই শরীরের সাত চক্রের মধ্যে ব্রম্ভতালুতে অবস্থিত সহস্রার চক্র জাগরিত করার চাবি কাঁঠিটি লুকিয়ে আছে। আর, সুম্যান ফ্রিকোয়েন্সি অনেকটা ওম এর মত শুনতে হয়, যা দিয়ে আধ্যাত্মিক উন্মেষ সম্ভবপর বলে বিশেষজ্ঞগন দাবী করেন।
বিভিন্ন ভাষায়ওঁ
সংস্কৃত , গুজরাটী 
(অসমীয়া, বাংলা, ওড়িয়া)
আৰ্য সমাজ 
তামিল
কন্নড়
তেলেগু 
মালয়ালম 
গ্ৰন্থ
সিদ্ধং
জৈন চিহ্ন 
চীনা
তিব্বতী
বালি(ইন্দোনেশিয়া)
জাভা (ইন্দোনেশিয়া)

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

জাতিবাদ ও ভগবান মনু

  সম্পাদকীয় বর্তমান সময়ে দেশ অনেক গম্ভীর সমস্যায় গ্রস্ত আছে, তারমধ্যে একটা হল - জাতিবাদ। এই জাতিবাদের কারণে আমাদের দেশের অনেক বড় হানি হ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ