গত কয়েক বছর পূর্বে সারা পৃথিবী জুড়ে মুসলমানরা চালিয়ে গেছে লগাতার খুনের উৎসব এবং এখনও দুচারটা চালিয়ে যাচ্ছে। তালিবানরা আফগানিস্তান, পাকিস্তানে; বোকোহারাম নাইজেরিয়ায়; আল শাবাব সোমালিয়ায় আর আইএস- ইরাক, সিরিয়া থেকে শুরু করে ফ্রান্স, জার্মানি, আমেরিকা ও বাংলাদেশে। অন্যান্য দেশের মুসলমানরা গুলি, বোমা মেরে কাফেরদেরকে হত্যা করলেও বাংলাদেশের মুসলমানরা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করতে খুবই আগ্রহী, যদিও তারা লেটেস্ট, বাচ্চু নামের একজনকে গুলি করে হত্যা করেছে। কিন্তু আসলে ইসলামে খুনের পদ্ধতিগুলো কী ? এ নিয়েই আজকের আমার এই আয়োজন, সেই সাথে অন্যান্য প্রসঙ্গ তো কিছু থাকছেই। ইসলামকে শান্তির ধর্ম বলে প্রচার করে মুসলমানরা প্রকৃতপক্ষে কী আড়াল করতে চেষ্টা করেছে বা করছে, তা বুঝতে পারবেন এই পোস্টটি পড়লে।
প্রথমেই দেখে নিন ইসলামের ইতিহাসের কিছু ঘটনা, মুহম্মদ কাকে, কাকে এবং কিভাবে খুন করেছে বা করিয়েছে :
মুহম্মদ, মক্কা থেকে মদীনায় পালিয়ে যাওয়ার পর, প্রথম যে তিনজনকে খুন করায়, তারা হলেন তিন ইহুদি কবি- কাব, আকাফ এবং আসমা। কারণ, মুহম্মদের নির্দেশে, মুসলমানরা কোরেশদের বাণিজ্য কাফেলার উপর যে হামলা, খুন ও লুঠপাট করছিলো, এই তিন কবি তার সমালোচনা করে কবিতা লিখেছিলো। ফলে মুহম্মদ গুপ্ত ঘাতক পাঠিয়ে এই ৩ জনকেই হত্যা করায়। মহিলা কবি আসমা এবং আকাফকে ঘুমন্ত অবস্থায় বুকে তলোয়ার ঢুকিয়ে দিয়ে এবং কাব বিন আশরাফকে তলোয়ার দিয়ে মাথা কেটে হত্যা করা হয়। এই কবিদের কবিতার মাধ্যমে মুহম্মদ বিরক্ত হয়েছিলো বলেই ইসলামে কবিতা লিখা নিষেধ। কারণ, মুহম্মদ বলে গেছে,
"পেট ভরা কবিতার চেয়ে পেট ভরা পুঁজ উত্তম।" (Sahih Muslim 28:5611)
কোরানেও কবিদেরকে অবহেলা ও ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে বলা হয়েছে,
"আর কবিদের কথা ! তাদের পেছনে চলে বিভ্রান্ত লোকেরা। তোমরা কি দেখো না যে, প্রতিটি প্রান্তরে তারা বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে মরে, এবং এমন সব কথা বার্তা বলে, যা তারা নিজেরা করে না। - (কোরান, ২৬/ ২২৩,২২৪,২২৫)
কোরানে আরও বলা হয়েছে,
“আমার বান্দার প্রতি যে গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছি, তা আমার প্রেরিত কি না, বিষয়ে তোমাদের মনে যদি কোনো প্রকার সন্দেহ থাকে, তবে তার মতো একটি সূরা রচনা করে আনো। ( কোরান- ২/২৩)
এখানে খেলাটা খেয়াল করুন, একদিকে কোরানে কবিতা লেখাকে নিরুৎসাহিত করার জন্য কবিদের নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা হচ্ছে, মুহম্মদ কবিদেরকে হত্যা করাচ্ছে, বলছে, "পেট ভরা কবিতার চেয়ে পেট ভরা পুঁজ উত্তম।" অন্যদিকে আবার কোরানের মতো একটি সূরা রচনা করে আনার জন্য কবিদেরকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে। এটা কি সুস্থ প্রতিযোগিতা, না মৃত্যুর খেলা ? কবিরা কি মানুষ নয় ? ওদের কি মৃত্যু ভয় নেই ? সবচেয়ে বড় কথা হলো পৃথিবীতে কেউ কারো মতো লিখতে পারে না। কারণ, সব মানুষই অনন্য, কেউ কারো মতো হান্ড্রেড পার্সেন্ট নয়। আমি যেমনভাবে লিখি, কেউ তার চেয়ে ভা্লো লিখতে পারে, কিন্তু আমার মতো লিখা কারো পক্ষে সম্ভব নয়।
কোরান সম্পর্কে মুসলমানরা যা ই বিশ্বাস করুক, বাস্তব ব্যাপার হচ্ছে, কোরান মুহম্মদের উপলব্ধি অর্থাৎ মুহম্মদের লিখা।
মুহম্মদ মূর্খ ছিলো বলে নিজে লিখতে পারতো না, সে মাঝে মাঝে হিস্টিরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে যা বলতো, তাই তার সাঙ্গোপাঙ্গোরা মুখস্থ করতো বা লিখে রাখতো।
কোরান, আল্লার নয় মুহম্মদের নিজের কথা, এটা বুঝতে পেরে, মুহম্মদের প্রথম কোরান লেখক, হযরত ওসমানের সৎ ভাই, সাদ, মুহম্মদের সঙ্গ ও ইসলাম ত্যাগ করেছিলো। এরপর প্রাণের ভয়ে সাদকে বহুদিন পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে, যদিও ওসমান নিজের ক্ষমতা বলে তার ভাইকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে।
যা হোক, এই আয়াতের সূত্র ধরেই মুসলমানরা বলে থাকে কোরানের মতো আর একটি আয়াতও রচনা করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। জ্ঞা্ন-বুদ্ধি এবং সৃজনশীলতার অভাবে মুসলমানদের পক্ষে তা সম্ভব না হতে পারে, কিন্তু কমপক্ষে ৬/৭ হাজার বছর আগে হিন্দুর দ্বারা লিখিত দুটি মহাকাব্য, রামায়ণ ও মহাভারতের একটি শ্লোকের কাছে দাঁড়ানোর ক্ষমতা কোরানের কোনো আয়াতের নেই। এজন্যই রামায়ন, মহাভারতকে বলে মহাকাব্য; কোরানকে কেউ মহাকাব্য বলে না। লেটেস্ট, মধুসূদন দত্তের “মেঘনাদ বধ” কাব্যের সাথে কোরানের তুলনা না হয়, আর না ই করলাম।
হুরলোভী মুসলমানদের কাছে কোরান মহাগ্রন্থ হতে পারে, কিন্তু সাহিত্য জগতে কোরানের এক কানাকড়িও দাম নেই।
কোরান কেমন আল্লার বাণী চিন্তা করুন, কোরানের সমকক্ষ একটি আয়াত রচনা করার জন্য মানুষকে চ্যালেঞ্জ জানানো হচ্ছে। কোনো মানুষই অপর মানুষকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে, সৃষ্টিকর্তাকে মানুষের প্রতি চ্যালেঞ্জ জানাতে হবে কেনো ? মানুষ কি সৃষ্টিকর্তার প্রতিপক্ষ ? এই একটি তথ্যেই এটা প্রমান হয় যে, কোরান কোনো সৃষ্টিকর্তার নয়, মুহম্মদের বাণী।
মুহম্মদ, মানুষকে কোরানের আয়াতের মতো কোনো আয়াত রচনা করে আনার জন্য চ্যালেঞ্জ দিলেও কেউ সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে নি। কারণ, তখনকার আরবের লোক বুঝে গিয়েছিলো যে, মুহম্মদের বিরুদ্ধে যাওয়া মানেই নিশ্চিত মৃত্যু। মুহম্মদ যেমন মনে করতো যে, "পেট ভরা কবিতার চেয়ে পেট ভরা পুঁজ উত্তম।" তেমনি সেই সময়ের কবিরাও, তিন ইহুদি কবির পরিণতি দেখে বুঝে গিয়েছিলো যে, কবিতা লিখে মরার চেয়ে বেঁচে থাকাই উত্তম।
যা হোক, ফিরে যাই খুনের পদ্ধতির আলোচনায়। মুহম্মদের নির্দেশে, মুহম্মদের জীবদ্দশাতেই মুসলমানরা জিহাদের নামে হাজার হাজার মানুষকে খুন করেছে। এক দিনেই কুরাইজা গোত্রের ৮০০ জন ইহুদি পুরুষকে আলী এবং তার ভাই জোবায়ের গলা কেটে হত্যা করেছে, মুহম্মদ তা দিনভর বসে বসে দেখেছে। কিন্তু একটি ঘটনায় মুহম্মদ নিজের হাতে ৮ জন লোককে হত্যা করে, দেখে নিন সেই ঘটনাটি:
একবার উকল গোত্রের ৮ ইহুদি মদীনায় এসে ইসলাম গ্রহন করে। কিন্তু মদীনার আবহাওয়া সহ্য না হওয়ায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে মুহম্মদ তাদের উটের দুধ ও প্রস্রাব খাওয়ার পরামর্শ দেয় এবং উটের আস্তাবলে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। কিছুদিন পর তারা সুস্থ হয়ে উঠলে ঐ আস্তাবলের দারোয়ানকে খুন করে কয়েকটি উট নিয়ে পালিয়ে যায়। কয়েকদিনের মধ্যেই মুহম্মদের বাহিনী তাদেরকে ধরে এনে মুহম্মদের সামনে হাজির করে।
এই ৮ জন, একজনকে খুন করে উট নিয়ে পালিয়ে নিশ্চয় অন্যায় করেছিলো। কিন্তু মুহম্মদ, যিনি নাকি দয়ার নবী, সেই মুহম্মদ তাদের নিজের হাতে কী রকম নৃশংস শাস্তি দিয়েছিলো, সেটা একবার সেই সময়ে গিয়ে কল্পনার চোখে দেখুন, উপলব্ধি করতে পারবেন নৃশংসতা কাকে বলে ?
এই ঘটনাগুলোর বর্ণনা পাওয়া যাবে মুসলিম শরীফের ৪১৩০ ও ৪১৩৩ নং হাদিসে এবং বুখারী শরীফের ৬৩৩৩ থেকে ৬৩৩৬ নং পর্যন্ত হাদিসে।
মুহম্মদ প্রথমে দুটি লোহার রড চেয়ে নেয় এবং সেগুলোকে তাদের সামনেই আগুনে লাল করে গরম করে এবং তারপর ৮ জনের চোখেই একের পর এক ঢুকিয়ে দিয়ে তাদের অন্ধ করে দেয়। এরপর একটি ধারালো তলোয়ার দিয়ে তাদের প্রত্যেকের হাত পা কেটে আলাদা করে ফেলে এবং মরুভূমির বালির মধ্যে দুপুরের তপ্ত রোদের মধ্যে ফেলে রাখে। তারা জল খেতে চাইলেও মুহম্মদ তা কাউকে দিতে নিষেধ করে , এভাবে পড়ে থেকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সবাই মারা যায়।
এভাবে লোহার গরম রড দিয়ে চোখ অন্ধ করে দিয়ে হাত পা কেটে ফেলে তিলে তিলে মারা নবীর সুন্নত। কিন্তু বর্তমানের মুসলমানদের এই সুন্নত পালনের সুযোগ নেই বললেই চলে। কিন্তু অতীতের মুসলমান শাসকরা এরকম সুন্নত পালন করে হাত পা কেটে হিন্দুদেরকে যে হত্যা করেছে তার বহু উদাহরণ ইতিহাসে আছে।
ইতিহাস ছেড়ে এবার নজর দিই কোরানে। কোরানের ৩৪/৩৩ আয়াতে বলা হয়েছে,
"আমি এই অবিশ্বাসীদের গলায় ফাঁস ঝুলিয়ে দেবো, .... এছাড়া তাদেরকে অপর কোনোরূপ বদলা দেওয়া যায় কি ? "
এখানে মুহম্মদের আল্লা বলছে, যারা তার কথা মেনে নেয় নি এবং তাকে বিশ্বাস করে নি, তাদেরকে সে গলায় ফাঁস দিয়ে মারবে। এখানে তো এই প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, এ কেমন ক্ষমতাশালী আল্লা, যে আল্লা মানুষ সৃষ্টি করতে পারে, অথচ তার মধ্যে তাকেই বিশ্বাস করার সফটওয়্যার ভরে দিতে পারে না ? শেষে আল্লা আবার প্রশ্ন করেছে, এছাড়া তাদেরকে অপর কোনোরূপ বদলা দেওয়া যায় কি ? এই প্রশ্ন আল্লা কাকে করছে ? কোনো সর্বশক্তিমানকে কেনো অপরকে কোনো প্রশ্ন করতে হবে ? কাউকে প্রশ্ন করার মানেই হলো তার সমর্থন চাওয়া, আল্লা এখানে কার কাছ থেকে সমর্থন চাচ্ছে ? কোনো সর্বশক্তিমানের কি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কারো সমর্থনের প্রয়োজন আছে ? যা হোক, প্রশ্ন করে আল্লা এটা বুঝিয়ে দিয়েছে যে, অবিশ্বাসীদেরকে গলায় ফাঁসি দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো শাস্তি সে দেবে না। কিন্তু সত্যই কি তাই ? দেখুন কোরানের ৪/৫৬ নং আয়াত কী বলছে,
“যে সব লোক আমার কথা মেনে নিতে অস্বীকার করেছে, তাদেরকে নিঃসন্দেহে আমি আগুনে নিক্ষেপ করবো।"
এটা কোনো সর্বশক্তিমান সর্বজ্ঞানীর কথা, না পাগলের প্রলাপ ? কখন কী বলছে তার ঠিক নেই ! এবার নিচের আয়াতটি ভালো করে খেয়াল করুন, এটা না বলেছে আল্লা্, না বলেছে নবী, বাক্যের গঠনই বলছে, এটা তৃতীয় কোনো ব্যক্তি বলেছে,
“আল্লাহ ও রসূলের প্রতি যে সব লোক ঈমানদার নয়, এমন কাফেরদের জন্য আমি দাউ দাউ করে জ্বলা অগ্নিকুণ্ডলী প্রস্তুত করে রেখেছি।”- ( কোরান, ৪৮/১৩)
বাক্যটি যদি আল্লা বলতো শুরু হতো এভাবে, “আমার ও রসূলের প্রতি যে সব লোক ঈমানদার নয়”
আবার মুহম্মদ বললে বাক্যটি হতো, “আল্লাহ ও আমার প্রতি যে সব লোক ঈমানদার নয়”
তাহলে কোরানের এই বাক্যটি কে বললো ?
মুসলমানরা দাবী করে কোরানের সমস্ত কথা ই আল্লার। কাফেররা বলে, কোরানের কথা মুহম্মদের, মুহম্মদ তা তার কল্পিত আল্লার নামে চালিয়েছে। কিন্তু এই আয়াতটি তো এই দুই দাবীর কোনোটাকেই স্বীকার করছে না। এই একই ব্যাকরণগত ঝামেলায় পড়বেন, নিচের এই আয়াতটি পড়লে,
“যারা আল্লা সম্বন্ধে মন্দ বলে এবং রসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লা তাদের ইহলোক,পরলোক অভিশপ্ত করেন এবং তিনি তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন”। ( কোরান- ৩৩/৫৭)
উপরে যেসব শাস্তির কথা বললাম, সেগুলো আল্লা, কাফেরদেরকে পরকালে দেবে। কিন্তু নিচের এই আয়াতে দেখুন, পৃথিবীতে ইসলা্ম বিরোধীদের জন্য কী শাস্তির ব্যবস্থা;
"যারা আল্লাহ এবং তার রসূলের সাথে লড়াই করে এবং যমীনে ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়ায় তাদের জন্য নির্দিষ্ট শাস্তি, হত্যা কিংবা শূলে চড়ানো। অথবা তাদের হাত পা উল্টা দিক থেকে কেটে ফেলা, কিংবা দেশ হতে নির্বাসিত করা। এ লাঞ্ছনা ও অপমান হবে এই দুনিয়ায়, কিন্তু পরকালে তাদের জন্য এ অপেক্ষাও কঠিন শাস্তি নির্দিষ্ট আছে।”-
(কোরান- ৫/৩৩)
এই বাক্যটিও যে, কোনো থার্ড পার্সন বলেছে, সেই আলোচনায় আর যাচ্ছি না, আপনারা একটু বুঝে নেন। এখানে বলা হচ্ছে, যারা আল্লা ও মুহম্মদের সাথে লড়াই করবে, তাদেরকে শুলে চড়িয়ে হত্যা করা হবে বা উল্টো দিক থেকে হাত পা কেটে ফেলা হবে বা দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে।
শুলে চড়ানো প্রাচীন এক হত্যা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে মানুষকে বেশ কিছু সময় ধরে তিলে তিলে যন্ত্রণা দিয়ে মারা হয়। পদ্ধতিটি সম্পর্কে যারা জানেন না, তাদের জন্য বলছি, এ পদ্ধতিতে একটি সুচালো লোহার রড, যা গোড়ার দিকে ক্রমশ মোটা, তা মাটির উপর শক্ত করে পোঁতা থাকে। যাকে হত্যা করা হবে, তাকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে তার হাত পা বেঁধে ঐ সুচালো রডের উপর এমনভাবে বসানো হয়, যাতে রডটি তার পায়ুপথে ঢুকে যায়, একসময় ঐ রডটি তার মুখ, মাথা বা ঘাড়-পিঠ ফুড়েঁ বেরিয়ে যায় এবং ভিকটিমের মৃত্যু ঘটে।
এই পদ্ধতিটি প্রাচীন রোমে আবিষ্কৃত হয়েছিলো এবং মোটামুটি রাজা বাদশাহদের সময় পর্যন্ত চালু ছিলো, কিন্তু বর্তমানে এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদন্ড কোথাও আর কার্যকর হয় না। একসময় পৃথিবী থেকে এই পদ্ধতি যে উঠে যাবে, সেই জ্ঞান সর্বজ্ঞানী আল্লা এবং মুহম্মদের জানা ছিলো না, জানা থাকলে কেয়ামত পর্যন্ত অপরিবর্তনীয় বিধান কোরানে তারা এই পদ্ধতিটি যুক্ত করতো না।
ঐ আয়াতে শুরুতেই বলা হয়েছে, যারা আল্লা ও মুহম্মদের সাথে লড়াই করবে, তাদেরকে ঐ শুলে চড়ানোর শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু ইসলামের ইতিহাসে এটা স্পষ্ট যে, যে দিন থেকে মুহম্মদের মাথায় ইসলামের ভূত চেপেছে, সেদিন থেকে সে পায়ে পা দিয়ে অমুসলিমদের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়েছে, তা না হলে, যে কাবা একটি মন্দির ছিলো, যাতে ৩৬০ টি দেব-দেবী ছিলো, কেনো তাকে সেই কাবায় গিয়ে নামাজ পড়তে হবে ? কেনো তাকে কাবা দখল করতে হবে ? মুহম্মদ যদি শান্তিবাদী হতো, তাহলে সে কি কাবার পাশে তার একটি মসজিদ বানিয়ে নিতে পারতো না ? আসলে মুহম্মদের উদ্দেশ্যই ছিলো দখল করা আর লুঠপাট করে খাওয়া, তাই সে গনিমতের মালের থিয়োরির আমদানী করে। আর এই দখল ও লুঠপাট করে খেতে গিয়েই মুসলিমরা সেই শুরু থেকে আজ পর্যন্ত অমুসিলমদের সাথে লড়াই এ লিপ্ত আছে। সুতরাং, আয়াতে যে বলা আছে, যারা আল্লা ও রসূলের সাথে লড়াই করে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বরং মুসলমানরাই আগ বাড়িয়ে সবার সাথে ঝাগড়া বাধিয়ে লড়াইএ লিপ্ত।
ঐ আয়াতে আরও বলা আছে,
“যমীনে ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়ায়”,
সারা পৃথিবীতে ইসলাম কায়েমের নেশায় মুসলমানরাই যে ইসলামের আবির্ভাবের পর থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টি করে চলেছে, ইসলামের ইতিহাস জানা না থাকলেও, তালেবান-বোকোহারা-আইএস এর কর্মকাণ্ডে এখন তো সেটা সবার কাছে দিবালোকের মতো স্পষ্ট।
আয়াতে মধ্যে আরও বলা আছে, “তাদের হাত পা উল্টা দিক থেকে কেটে ফেলা, কিংবা দেশ হতে নির্বাসিত করা।” হাত পা উল্টা দিক থেকে কেটে ফেলার মানে ডান হাত কাটলে, কাটতে হবে বাম পা। এতে কোনো লোক বেঁচে থাকলে সম্পূর্ণ পঙ্গু হতে বাধ্য। আর দেশ থেকে বিতাড়ন করার জন্য তো আল্লা ও মুহম্মদের সাথে লড়াই করার প্রয়োজন হয় না, ইসলামে অবিশ্বাস করলেই হয়। কারণ, মানবতার চরম শত্রু মুহম্মদ, মরতে মরতে বলে গেছে, সমগ্র আরবে ইসলাম ছাড়া যেন কোনো ধর্ম না থাকে (মুসলিম শরীফ, ৮০১৮)। তাই সৌদি আরবে কোনো অমুসলিম নাগরিক নেই। হয় তারা চাপে পড়ে ইসলাম গ্রহণ করেছে, না হয় মরেছে। মুহম্মদের এই নীতি অনুসরণ করেই পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মুসলমানরা হিন্দুদেরকে দেশ থেকে বিতাড়িত করে চলেছে।
ইতিহাসের আলোকে এটা স্পষ্ট যে, অমুসলিমরা কখনো আগ বাড়িয়ে মুসলমানদের সাথে লড়াই করতে যায় নি, অমুসলিমরা যা করেছে, তা মুসলমানদের ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া মাত্র। তাহলে এই আয়াতে যমীনে ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টির কথা বলা হলো কেনো ? মুসলমানদের কাছে ফ্যাসাদ ও বিপর্যয় সৃষ্টির অর্থ আলাদা। এটা বুঝতে হলে আবার আপনাকে ঢুকতে হবে ইসলামের ইতিহাসের ভেতরে।
মুহম্মদ মদীনায় ক্ষমতাশালী হওয়ার পর পরই, আশে পাশের বিভিন্ন গোত্রপতিদের কাছে লিখিত বা্ মৌখিকভাবে এই আদেশ দিতো যে, হয় ইসলাম গ্রহণ করো বা আমার বাহিনীর মোকাবেলা করো। মুহম্মদের এই যে আদেশ, এটা অমান্য করাই ছিলো যমীনে ফ্যাসাদ বা বিপর্যয় সৃষ্টি। এর সরল মানে হলো, কোনো মুসলমান এসে আপনাকে বললো, ইসলাম গ্রহণ করো, আপনি যদি তার কথাকে অমান্য করেন, তাহলেই সেটা হবে ফেতনা বা ফ্যাসাদ, আর এই ফেতনা বা ফ্যাসাদ সৃষ্টির জন্য ঐ মুসলমান আপনাকে হত্যা করতে পারবে, এতে ধর্মীয়ভাবে তার তো কোনো পাপ হবেই না, বরং কাফের হত্যার জন্য তার বেহেশত প্রাপ্তির পথ সুগম হবে। এজন্যই কোরানের ২/১৯৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে,
“তোমরা তাদের সাথে লড়াই করতে থাকো, যতক্ষণ না ফেতনা চুড়ান্তভাবে শেষ হয়ে যায় এবং দ্বীন কেবলমাত্র আল্লার জন্য নির্দিষ্টি না হয়।”
অর্থাৎ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে মুসলমান না বানানো পর্যন্ত মুসলমানারা জিহাদের নামে অমুসলিমদের বিরুদ্ধে খুন ধর্ষণ হত্যা চালিয়ে যাবে।
এখন বুঝতে পারছেন, আপনার প্রতিবেশি বা আশে পাশে ঘুরে বেড়ানো মুসলমানদের মাথায় কী ভয়ঙ্কর চিন্তা কাজ করছে ?
এছাড়াও কোরানের ৩৩/৬০-৬১ আয়াতে বলা আছে,
"...ওদের যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই ধরা এবং নির্দয়ভাবে হত্যা করা হবে।“
এখানে, ‘ওদের’ শব্দ দ্বারা বোঝানো হয়েছে আমি আপনি অর্থাৎ সকল অমুসলিমকে। আর তাদেরকে নির্দয়ভাবে হত্যা করার পদ্ধতিটা কী ? দেখে নিন নিচের আয়াতে-
"তাদের গর্দানে আঘাত করে মস্তক ছিন্ন করো এবং তাতের অঙ্গুলিসমূহ ছিন্ন করো। ইহা এজন্য যে তারা আল্লার রাসূলের বিরোধিতা করেছিলো।”- ৮/১২-১৩
গর্দান মানে ঘাড়ে আঘাত করে মস্তক ছিন্ন করলেই তো যে কারো মৃত্যু নিশ্চিত, তাহলে তার অঙ্গুলি ছিন্ন করার দরকার কী ? এটাই হলো নির্দয়ভাবে হত্যা করা। যাতে অন্যরা তার মৃতদেহ দেখে তা ভয় পায় এবং তাড়াতাড়ি মুসলমানদের কাছে আত্মসমর্পণ ক’রে ইসলাম গ্রহণ করে।
ঘাড়ের উপর আঘাত করেই যে কাফেরদেরকে মারতে হবে, সে কথা আবারও বলা আছে ৮/১২ আয়াতে, দেখে নিন সেটা-
“ তোমরা তাদের ঘাড়ের উপর আঘাত হানো এবং জোড়ায় জোড়ায় আঘাত লাগাও।”
এই আয়াতটিই বাংলাদেশে কুপিয়ে হত্যার মূল অনুপ্রেরণা। আয়াতটি খুব ভালো করে লক্ষ্য করুন। দেখুন, বলা আছে, ঘাড়ের উপর এবং জোড়ায় জোড়ায় আঘাত করতে। এক জোড়ায় হয় দুইটা, দুই জোড়ায় হয় চারটা। তো কমপক্ষে চারটা আঘাত করতে হলে তো কোপাতেই হবে। এজন্যই এক জঙ্গী ধরা পড়ার পর বলেছিলো, কুপিয়ে মারলে ছোয়াব বেশি।
যা হোক, ইসলামে কাফেরদেরকে হত্যা করার নানা পদ্ধতি, যেমন- গলায় ফাঁস দিয়ে মারা, আগুনে পুড়িয়ে মারা, হাত পা কেটে টুকরো টুকরো করে মারার নির্দেশ থাকলেও, ইসলাম অপরির্তনীয় হলেও পৃথিবী যেহেতু পরিবর্তনশীল, সেহেতু বর্তমানে গুলি বোমা মেরে কাফের হত্যা বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। কারণ এতে এক সাথে মূহুর্তের মধ্যে অনেক কাফের মারা যায়। কিন্তু বাংলাদেশে, গুলি বোমা সহজলভ্য নয় বা সহজে বহন যোগ্য না হওয়ায় এবং বেশ খরচ সাপেক্ষ হওয়ায়, খুন করতে চাপাতির ব্যবহার বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। কারণ, এতে কোনো খরচ নেই, বারবার একই চাপাতি ব্যবহারযোগ্য এবং বহন করাও সহজ। চাপাতি দিয়ে কাউকে খুন করার পূর্বে ধরা পড়লেও গরুর মাংস কাটার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলাম বলেও পুলিশের কাছে পার পাওয়া যায়।
এজন্যই ইসলামের সকল প্রকার খুনের পদ্ধতির মধ্যে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে খুন বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। কারণ এতে খরচ বাঁচার পাশাপাশি কুপিয়ে কুপিয়ে খুন করার ইসলামী নির্দেশ পালন করা যাচ্ছে; আর এই খুনিরা, এই আশা ও বিশ্বাস করছে যে, তাতে নিশ্চয় মুহম্মদ খুশি হয়ে তাদেরকে বেহেশতে নসিব করে অগনিত হুর-গেলমানের সাথে শোয়ার পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করে দেবে। শালা, লম্পট, শুয়োর, মুসলমানের বাচ্চা কোথাকার!
ইসলামের এই খুনি ও ঘাতক চেহারাকে আড়াল করতেই বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকে, সারা বিশ্বের ইসলামী নেতৃবৃন্দ
লন্ডনে এক সভায় মিলিত হয়, সেখানে পজিটিভ আকারে ইসলামকে প্রচারের জন্য তারা বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহন করে, তারই একটা হলো- কথায় কথায় সকল মুসলমানকে বলতে হবে ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম শান্তির ধর্ম, কারণ ইসলাম মানে শান্তি। যদিও ইসলাম নয়, সালাম শব্দের অর্থ শান্তি। এই ধোকাবাজি চলছিলো লাদেনের টুইন টাওয়ারে হামলার আগ পর্যন্ত। কিন্তু লাদেন টুইন টাওয়ারে হামলা করে ইসলামের মুখোশ একেবারে খুলে দিয়েছে। এখন মুসলমানদের চেয়ে অমুসলিমরা কোরান হাদিস পড়ছে বেশি, আর তারা নেট- ফেসবুকে তুলে ধরছে, ১৪০০ বছর ধরে মুসলমানদের দ্বারা আড়াল করে রাখা, ইসলামের নৃশংস ও ঘাতক চেহারা; যা দেখে শিহরিত হচ্ছে মানুষ এবং ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ইসলামের থেকে। এখন দেখার বিষয়, এই নেট-ফেসবুকের দুনিয়ায় ইসলাম আর কতদিন টিকে থাকতে পারে ?
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ