পরা ওম্ রশ্মির অপর নাম কাল রশ্মি। পরা ওম্ প্রথম সৃষ্টি হয় বলে প্রতিটি মন্ত্রের পূর্বে পরা ওম ও বাচ্য ওম্ দেখতে পাওয়া যায়। ওম্ই শব্দস্রোত। সেই শব্দস্রোত হতে সমগ্র ব্রহ্মান্ড নির্মান হতে থাকে।
পরা ওম্> মহতত্ব> অহঙ্কারতত্ব> মনস্তত্ব> সূক্ষ প্রাণ এবং ছন্দরশ্মি > মরুত রশ্মি > পার্টিকেল ইলিমেন্টারি পার্টিকেল বা কার্ক কোয়ান্টাদির নির্মান পর্যাক্রমে হয়ে থাকে।
ব্রাহ্মণ বচন অনুসারে......
১. (মৈত্রীসংহিতা ২/৭৭) প্রজাপতয়ে মনবে স্বাহা। প্রজাপতিই মন।
২. (তান্ড্য ৪/১০/২) মহতত্বই প্রজাপতি।
৩. (১০/১ ও ২৬/৩ কৌষিতকি) প্রতাপতির বৈ মনঃ। মন ই প্রজাপতি।
মন এবং মহতত্ব উভয়ই প্রজাপতি। ইহাই প্রাথমিক তত্ব সমুহ যাহা পরা ওম্ বা কাল রশ্মির প্রভাবে প্রথম উৎপত্তি হয়। ইংরেজীতে কালকে টাইম বলে। ঈশ্বর ও কাল তত্বের পশ্চাৎ মহতত্ব।
মহতত্বের মাঝে সূক্ষ ওম রশ্মি কাজ করতে থাকে ফলে অহংকার এবং মনস্তত্ব আদির সৃষ্টি হতে থাকে। সককিছুর মূলে বাচ্য ওম্ এবং পরা ওম্।।
(তৈত্ত০ স০ ৪/১/৯/১; মৈ০ স০ ২/৭/৭) তে লিখেছেন-
প্রজাপতায়ে মনয়ে স্বাহাঃ। ইহা মনকে প্রজাপতি বলে।
(তাণ্ড০ ব্রা০ ৪/১০/২) তে বলেছেন-
প্রজাপতি রূবাব মহান। ইহা মহান এই মহতত্ত্বই প্রজাপতি।
(কৈ০ ব্রা০ ১০/১/২৬/৩ আর শ০ ব্রা০ ৪/১/১/২) তে লিখেছেন-
প্রজাপতি রূয় মনঃ। মনকে প্রজাপতি বলে।
(কাঠ০ স০ ৩১/১৫ আর ৩৫/১৭) তে লিখেছে-
মন য়ে রই প্রজাপতিহিঃ। আর জৈ০ ব্রা০ ২/১২) এ লিখেছেন-
মহৎ রই প্রজাপতিহিঃ। অর্থাৎ এই প্রজাপতি মনকেই বলা হয়েছে মহৎকেও বলা হয়েছে।
অর্থাৎ ইহা সিদ্ধি হয় যে মন আর মহৎ উভয় একই পদার্থের না। কিছু অবস্তায় ভেদ অবশ্যই আছে। এখন এই সৃষ্টিতে ইহা দেখতে যায় তো এমন কোন পদার্থ আছে যে সক্রিয় আর সর্ব প্রথমে উৎপন্ন হয়েছে? আর যা এই সৃষ্টির কারণ, উপাদান কারণ ওই এই পদার্থ মহৎ তত্ত্বকে বুদ্ধিও বলা হয়। অহঙ্কার আর মন ইহাই প্রাথমিক পদার্থ। ইহা থেকে সম্পূর্ণ ব্রহ্মাণ্ড রচনা হয়েছে। ইহা থেকে স্পেজ হয়েছে, ইহা থেকে পাটিকেল বানিয়েছে, ইহা থেকে ফ্রোটন সবকিছু, ইহা তেকে বানানো হয়েছে। এর আগে কোন পদার্থ নেই।
(শুশ্রু০ স০ ১/৪) শরীর স্থানমঃ তস্মাৎ অব্যক্ত মহাৎ উৎপ্ধতি তং লিঙ্গ য়ে বঃ।।
(তস্মাৎ অব্যক্তাঃ) ওই অব্যক্ত প্রকৃতি থেকে মহান মহত্ত্ব উৎপদ্ধত্তিতে উৎপন্ন হয়েছে। ইহা কেমন?
(তং লিঙ্গ য়ে বঃ) প্রকৃতিশীল অর্থাৎ প্রকৃতি লক্ষণযুক্ত হয়।
ইহার অর্থ যেমন প্রকৃতি অব্যক্ত হয়। ঐরূপই মহৎ তত্ত্বই অব্যক্ত হয়। যেরূপ প্রকৃতি অন্ধকার রূপ এরূপই মহৎ তত্ত্বও অন্ধকার পূর্ণ হয়। যেরূপ প্রকৃতি নিষ্ক্রীয় হয়। ঐরূপই মহৎ তত্ত্বও নিষ্ক্রীয় হয়। একেবারে একই হয় না। একই সর্বদা নিরপক্ষরূপে নিষ্ক্রীয় নিরপক্ষ রূপে অন্ধকারপূর্ণ নিরপক্ষ রূপে লক্ষণ থেকে হিত কোন পদার্থ থেকে থাকে সে প্রকৃতিই আছে। যেমন এই লোকে এই সৃষ্টিতে কোন পদার্থে সপক্ষে দেখবেন তো মহৎ তত্ত্বই এমনই যদি প্রকৃতির সপক্ষে দেখেন। তবে মহৎ তত্ত্ব ব্যক্ত, মহৎ তত্ত্ব লক্ষণযুক্ত, মহৎ তত্ত্ব দীপ্তিমান, সৃষ্টির অন্য যে পদার্থ সপক্ষে দেখেন তো মহতত্ত্ব প্রকৃতি যেমন অন্ধকারপূর্ণ অব্যক্ত পদার্থ।
সৃষ্টির উপর উক্ত রশ্মির প্রভাব:
ওম্ নামক কাল রশ্মি ই সর্বপ্রথম অ্যাকটিভ হয় সেই ওম্ রশ্মির প্রভাবেই ভূর্ভুবঃ স্বঃ নাম তিন রশ্মির সৃজন হয়। ভূঃ রশ্মি দ্বারা ঋকমন্ত্র সকল সৃষ্টি হয়। ঋক মন্ত্রের প্রভাবে যাবতীয় সূক্ষ ও স্থূল পদার্থের নির্মান হতে থাকে। র্ভূবঃ রশ্মি দ্বারা যজু র্বেদ তথা যজু রশ্মির নির্মান হয় যার প্রভাবে সৃষ্টিতে আকাশ তত্বের নির্মান হতে থাকে। স্বঃ রশ্মির দ্বারা সাম বেদের মন্ত্রসকল সৃষ্টি হয় যার প্রভাবে সৃষ্টতে অগ্নিতত্ব সমৃদ্ধ হতে থাকে। পার্টিকেল, ইলিমেন্টারি পার্টিকেল, ফোটন,তারা,বা ইলেকট্রিক বা ম্যাগনেটিক ফোর্সের নির্মান হতে থাকে। বেদ মন্ত্র সকল রশ্মিরূপী এক পদার্থ যদ্বারা পুরো ইউনির্ভাসের নির্মান হয়েছে। কিন্তু এই সাকল রশ্মিদের মূল ওম্ রশ্মি।
( ছান্দগ্যো উপনিষদ ১/১/৫)
সাংখ্য দর্শনে মহর্ষি কপিল বরলছেন-
“মহেদাকক্ষ মাধ্যেম্ কারম্ তনমহঃ” যে মহৎ তত্ত্বের পদার্থ আছে সব থেকে প্রথমে তাহা করণ রূপ পদার্ মনই। ইহা এরকম সংকেত পাওয়া যায়, মনই মহৎ হয়। আর যে আমাদের ভিতরে য়ে মন আছে, সূক্ষ্ম শরীরের ভাগ মন, বুদ্ধি আর অহঙ্কার ইহাও ওই যে সমষ্ঠি বরং সমষ্ঠিবান মন, সমষ্ঠিবান বুদ্ধি, সমষ্ঠিবান অহঙ্কার। সর্বত্র ব্যপ্ত। আর যে জীবাত্মা, কিছু ক্ষেত্রে, জীবাত্মার যে অধিকার কিছু ক্ষেত্রে তাহা আমাদের নিকটে। মহৎ তত্ত্ব অর্থাৎ বুদ্ধি তত্ত্বর লক্ষণ বলতে যেয়ে মহর্ষি কপিল মহারাজ বলেন-
“অধ্যবসায় বুদ্ধিঃ।” (সাং০ দ০ ২/১৩) এ বুদ্ধি তত্ত্ব (অধ্যবসায়ঃ) সতত প্রয়োযত্নকারী। ইহা সতত প্রয়োযত্নকারী ইহা থেকে সিদ্ধ হয় যে নিষ্ক্রীয় নয়। বর্তমান পদার্থের সপক্ষে নিষ্ক্রীয় লাগে বরং নিষ্ক্রীয় নয় কারণ তিন গুণই জাগরণ হয়ে থাকে। তিন গুণই সক্রিয় হয়ে উঠে, এইজন্য ইহাকে নিক্রিয় প্রসুপ্ত বলে না। হ্যা ওই গুণের সক্রিতাকে আমরা কিছু টেকনোলজির আধার পর কখনো অনুভব করেনি এইজন্য আমরা অবশ্যই নিষ্ক্রীয় বলি। লোকের অন্য পদার্থের অপেক্ষাতে সতত প্রয়োযত্নকারী অর্থাৎ যাহা কিছু আছে। ও হয় মহৎ তত্ত্ব যে সময় বানিয়েছে ওই কিছু ক্রিয়াকে ওই মহৎ তত্ত্ব থেকে যে-যে পদার্থ বানিয়েছে। ও বেপ্ছের অন্তর, ও পাটিকেলের অন্তর, কথিত ষ্ট্রিকংকের অন্তর, বিভিন্ন ছন্দ রশ্মির অন্তর, ও বিভিন্ন প্রাণ রশ্মির অন্তর, ও মরুত রশ্মির অন্তর ও বৃহতি রশ্মির অন্তর সবকিচুর ভিতর ওই মহৎ তত্ত্ব একটিভেট থাকে, সক্রিয় থাকে। সবই পদার্থের এক বহুত বড় কারণই হয়, সাধনই হয়, শক্তিও হয় আর সবার ধারক হয়। এইজন্য অধ্যবসাতে বুদ্ধি, সব সময় ও সক্রিয় থাকে, সব প্রয়োযত্নশীল থাকে, ধারণ করার জন্য, প্রেরণ করার জন্য, প্রত্যেক পদার্থকে, ও কখনো বিরাম করেন না, নিষ্ক্রীয় হয় না।
মহৎ তত্ত্বের বিষয়ে ভগবান ব্রহ্মা বলেছেন-
অব্যক্তাতুপূর্বমুত্পন্নো মহানাত্মা মহামতিঃ।
আদির্গুণানাং সর্বেষাং প্রথমঃ সর্গ উচ্যতে।।১।।
মহানাত্মা মতির্বিষ্ণুর্জিষ্ণুঃ শম্ভুশ্চ বীর্য়বান্।
বুদ্ধিঃ প্রজ্ঞেপলব্ধিশ্চ তথা খ্যাতির্ধৃতিঃ স্মৃতি।।২।।
(মহা০ ভা০ আশ্ব০পর্ব০ ৪০/১-২ গীতাপ্রেস)
ব্রহ্মা জী বলেন- মহর্ষিগণ! প্রথমে অব্যক্ত প্রকৃতি থেকে উৎপন্ন মহান আত্মত্বরূপ মহাবুদ্ধিতত্ত্ব উৎপন্ন হয়। ইহা সবগুণের আদি তত্ত্ব আর প্রথম সর্গ বলা হয়।।১।।
মহান আত্মা, মতি, বিষ্ণু, জিষ্ণু, শম্ভু, বীর্যবান, বুদ্ধি, প্রজ্ঞা, উপলব্ধি, খ্যাতি, ধৃতি, স্মৃতি-এই পর্যায়বাচী নামের দ্বারা মহান আত্মার পরিচয় হয়। তাহার তত্ত্বকে প্রাপ্তকারী বিদ্বান ব্রাহ্মণ কখনো মোহতে পড়ে না।।২।।
অনেক পর্যায়বাচী গুণবাচী নাম এই শ্লোকে উদ্ধৃত করেছেন-ইহার প্রথম নাম অব্যক্তা প্রকৃতি উৎপন্ন মহান প্রথম লক্ষণ, প্রথম বিশেষণ (মহান) অত্যন্ত ব্যাপক, এই সৃষ্টিতে যত পদার্থ আছে, ওই সব পদার্থ থেকে সব থেকে অধিক সর্বব্যাপক থাকে, নিরপক্ষ রূপে সর্বব্যাপক ঈশ্বর! ঈশ্বর নিপক্ষরূপে সর্বব্যাপক পদার্থ, চেতন। আর তাহার পরে যে দ্বিতীয় পদার্থ আছে সে (প্রকৃতি) ঈশ্বরের অপেক্ষা, প্রকৃতি সর্বব্যাপক নয়, কেননা সৃষ্টির অপেক্ষা প্রকৃতি সর্বব্যাপক অথবা কোন জড় পদার্থের অপেক্ষা প্রকৃতি, প্রকৃতিরূপী জড় পদার্থ সর্বব্যাপক। সব থেকে সূক্ষ্ম কিন্তু ঈশ্বরের অপেক্ষা সর্বব্যাপকই নয় আর সব থেকে সূক্ষ্মই নয়। কেননা প্রকৃতি ঈশ্বর থেকে স্থুল এইজন্য ঈশ্বর প্রকৃতিতে ব্যাপক আর ঈশ্বর প্রকৃতি থেকে ব্যাপক বিস্তারকারী এইজন্য ঈশ্বরই প্রকৃতির ভিতরেও আর বাহিরেও। আর সম্পূর্ণ সৃষ্টি তত্ত্ব, মনস তত্ত্ব, মহৎ তত্ত্ব প্রকৃতির অন্তরই আছে, আর প্রকৃতি তাহাদের অন্তর ব্যাপ্ত আছে। কিন্তু যতদূর বিস্তার প্রকৃতির, যতদূর ভলিয়ম, যতদূর আয়তনে প্রকৃতি আছে। তাহার থেকে কম আয়তনে মহৎ তত্ত্ব, অর্থাৎ প্রকৃতি অধিক ব্যপ্ত। মহৎ তত্ত্বের অপেক্ষা, ঈশ্বরের অপেক্ষা কম। এই মহৎ তত্ত্বের এক নাম আত্মা, আত্মা আর পরমাত্মার কথা বলছি না। আত্মা মহৎ তত্ত্বেরই নাম। কেননা সতত রূপে, সূক্ষ্ম রূপে, সৃষ্টির প্রত্যেক পদার্থে নিরন্তর বিচারণ করে, নিরন্তর নিজের কর্ম করে। আর ইহা বলে নিরন্তর প্রেরিত করে, আত্মা রূপ যেভাবে আমাদের শরীরকে আত্মা প্রেরিত করে। ঐরূপ সম্পূর্ণ সৃষ্টির জড় পদার্থকে মহৎ তত্ত্বই প্রেরিত করেন। ঈশ্বর আর কাল তত্ত্বের পশ্চাৎ, এইজন্য ইহাকে বলে আত্মা কোথাও যদি কোন ভাইব্রেশন যায় তো মহৎ তত্ত্ব যায়, কোথাও যদি পাটিকেল কমেন্ট করে তো মহৎ তত্ত্ব করে, স্পেজ এর ইউনিট মহৎ তত্ত্বের অন্তর বসে, পাটিকেলের ভিতর মহৎ তত্ত্ব বসায় আর বিভিন্ন গ্যালাক্সির ধারণকারী সব থেকে অন্তিম পদার্থ মহৎ তত্ত্ব হয় এইজন্য ইহাকে বলে আত্মা। সতত বিচারণকারী সবার নিয়ন্ত্রক, আর তৃতীয় বিশেষণ (মতিহি) “মন্যতে ইতি কান্তিকর্মা মন্যতে ইতি অর্চতিকর্মা” (নিঘ০ ২/৬ আর ৩/১৪) ইহা পদার্থ সূক্ষ্ম, ব্যাপকবল আর অত্যন্ত মন্দ অব্যক্ত দীপ্তি থেকে যুক্ত হয়। ইহার দীপ্তি “প্রকৃতি তমোভূতম্.............” এই স্বরূপযুক্ত কিন্ত এই মহৎ তত্ত্ব এস্বরূপযুক্ত নয়।তথাপি জগতের সাপেক্ষ তমোগুণ, বরং প্রকৃতি সাপেক্ষ “অর্চতিকর্মা.....” অর্থাৎ দীপ্তিযুক্ত অত্যান্ত মন্দ দীপ্তি ইহার তুলনা স্থান প্রকৃতি থেকে কোন অন্ধকারযৃক্ত পদার্থ করেন তো মহৎ তত্ত্ব তাহার থেকে গাঢ় অন্ধকারে পরন্তু ঐ মহৎ তত্ত্বের তুলনা প্রকৃতির সম্যবাস্থাতে করেন প্রকৃতিরূপী পদার্থে করেন ঐ মতৎ তত্ত্বে সূক্ষ্ম দীপ্তি উৎপন্ন হয়ে থাকে আর এইজন্য ইহাকে বলা হয় মতিহি। আর দ্বিতীয় কথা এই মহৎ তত্ত্বে সূক্ষ্ম ও৩ম্ রশ্মি, কালতত্ত্ব নিরন্তর ব্যাপ্ত থাকে ইহার কারণে মহর্ষি য়জ্ঞবাল্য মহারাজ শতপথ ব্রাহ্মণে লিখেছেন-
বাক্ মই মতির বাচম্ হিদম্ সর্বম্ মনুতে।। ইহা বাক্ ওঙ্কার রূপী বাক্, ওঙ্কার রূপী বাক্ ইহাই মহৎ তত্ত্ব। ইহা থেকে সম্পূর্ণ সৃষ্টিকে প্রকাশিত করে রেখেছে, দীপ্তিযুক্ত করে রেখেছে, কান্তিযুক্ত করে রেখেছে। যেখানে এই কথার প্রকাশের সম্বন্ধ আছে, প্রকাশ যেখানে-যেখানে আছে ওই-ওই মূলের সবথেকে মূল তো ঈশ্বরই
ওম্ যখন সৃষ্টি ছিল না তখন এক অব্যক্ত প্রকৃতি ছিল। তখন।পরামাত্মা প্রকৃতির মাঝে পরা ওম্ রশ্মি সক্রিয় করলেন তখন প্রকৃতির মাঝে সূক্ষ মৃদু কম্পনের সৃষ্টি হল। সমগ্র প্রকৃতি জুড়ে চিত্রে বর্নিত কম্পনের ন্যায় তরঙ্গ সৃষ্টি হয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকল। এই।ভাবে ক্রমে মহৎ, অহঙ্কার, মনস্তত্ব আদি সৃষ্টি হল। মনস্তত্বের মাঝে আরো গাঢ়ো কম্পনের নির্মান হল। উক্ত কম্পনগুলো আর কিছুই নয় উহা সব বেদ মন্ত্রই। সৃষ্টির প্রথম এইভাবেই বৈদিক রশ্মির স্থাপনা হয়ে থাকে।
প্রকৃতিকে ডিষ্টার্ব করবার জন্য পরমাত্মা হতে কোন শক্তি বা বল প্রয়োগের দরকার হয় না। পরমাত্মার স্বাভাবিক গুণ ঈক্ষণ অর্থাৎ জ্ঞান ইশারা করা মাত্রই প্রকৃতির সাম্য অবস্থা ভঙ্গ হয়ে সৃষ্টির নির্মান আরম্ব হয়ে যায়। এই ক্ষেত্র প্রকৃতি উপাদানকারণ এবং পরমাত্মা নিমিত্ত কারণ।
যেমন কোন মানুষ তার মুখ-আয়ব দ্বারা ইশারা করে কোন বালকে উত্তেজিত করে থাকে তদ্রুপ পরমাত্মার ইশারা অতিসূক্ষাতিসূক্ষ। পরমাত্মার সাথে প্রকৃতির মধ্যে এই সম্বন্ধ খুব সূক্ষ। পরমাত্মার ইশারা পেলেই প্রকৃতি প্রজাবতী হতে আরম্ব করেন। সৃষ্টির সকল বস্তুই প্রকৃতির দ্বারা নির্মিত হয়ে থাকে এবং পরমাত্মা জ্ঞান তথা ঈক্ষণ কর্ম দ্বারা সব কিছুর তূল্যতার নিয়ামক হয়ে থাকেন।
যেমন কোন মানুষ তার মুখ-আয়ব দ্বারা ইশারা করে কোন বালকে উত্তেজিত করে থাকে তদ্রুপ পরমাত্মার ইশারা অতিসূক্ষাতিসূক্ষ। পরমাত্মার সাথে প্রকৃতির মধ্যে এই সম্বন্ধ খুব সূক্ষ। পরমাত্মার ইশারা পেলেই প্রকৃতি প্রজাবতী হতে আরম্ব করেন। সৃষ্টির সকল বস্তুই প্রকৃতির দ্বারা নির্মিত হয়ে থাকে এবং পরমাত্মা জ্ঞান তথা ঈক্ষণ কর্ম দ্বারা সব কিছুর তূল্যতার নিয়ামক হয়ে থাকেন।
সর্ব প্রথম পরমাত্মা পরা ওম্ রশ্মিকে মুক্ত করেন। পরা ওম্ অনাদি সত্বা কিন্তু তাহার গুণ সক্রিয় এবং নিষ্ক্রিয়। সৃষ্টিতে সক্রিয় এবং প্রলয়ে নিষ্ক্রিয় থাকে। পরমাত্মা যে সব কার্য সম্পন্ন করেন তাহা ওম্ রশ্মি দ্বারাই করে থাকেন।
।। যজ্ঞেন বাচঃ পদবীয মাযন্তা মন্ববিন্দ ত্রিৃষিষু প্রবিষ্টাম্।
তামা ভৃত্যা ব্যদধুঃ পুরুত্রা তাং সপ্ত রেভা অভি সং নবন্তে।।
(ঋক ১০/৭১/৩)
বাক বৈ বৃহস্পতি।। জ্ঞানম্ বৈ মনস্তত্ব।।
পদার্থঃ- ( যজ্ঞেন) পরম্ত্মার ( বাচঃ) পরা, পশ্যন্তি বানী রূপ সূক্ষ রশ্মি মনস্তাত্ত্বিক ফ্লাকচুয়েশন ( পদবীযম্) আকাশ মার্গে ভাসমান এবং গতি যুক্ত তরঙ্গ রূপে বিরাজ করে (আযন্) সর্বত্র সদা ব্যাপ্ত তথা প্রাপ্ত (ঋষিষু প্রবিষ্টাম্) সেই বেদ রূপি ছন্দ রশ্মি আদি চার ঋষির হৃদয় মধ্যে শ্বাস প্রশ্বাসের ন্যায় স্বাভাবিক ভাবে প্রবেশ করে ( তাম্) সেই ছন্দ রশ্মি রূপি বেদ বানীকে ( অন্ববিন্দন) সকল ঋষির মধ্যে অনায়াসে প্রবেশ করিবার শক্তি পরমাত্মাই প্রদান করে ( তাং আমৃত্যা) সেই বেদ বানীকে উত্তমতায় ধারন করে তাহাকে ( পুরুত্রা) পৃথিবী পৃষ্ঠের বহু স্থানে ( মে ব্যদধুঃ) প্রচার করে ( তাম্) সেই বেদ বানীকে ( সপ্ত রেভাঃ) ঋষিরা সাত ছন্দ রূপ তরঙ্গে বেদ রূপি অক্ষর রশ্মি এবং ছন্দরশ্মি আকারে (অভিসংনবন্তে) ধারন করে ।।
ভাবার্থঃ-পশ্যন্তি ওম্ রশ্মির দ্বারা মমনস্তত্বের মধ্য ঘটা প্রাণ রশ্মি এবং ছন্দ রশ্মির কম্পনই বেদ রূপি ঋচা। পরমাত্মার কৃপায় অগ্নি ঋষি,বায়ূ ঋষি,অঙ্গিরা ঋষি এবং আদিত্য ঋষি পরমাত্মার পরা, পশ্যন্তি বেদ বানী তরঙ্গকে তথা সাত ছন্দযুক্ত অক্ষর রশ্মি তরঙ্গকে স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহনের ন্যায় আকাশ থেকে গ্রহন করে নেয়। সমগ্র আকাশেই বেদ মন্ত্র ভরা আছে। পরে সেই বানীকে মানব সমাজে বৈখরী বানীর আকার দিয়ে অন্য ঋষিদের মাঝে প্রচার করেন।।
বেদ রূপি ঋচা তথা অক্ষর রশ্মি এবং ছন্দ রশ্মি এবং প্রাণরশ্মি। সূর্যাদি সৃষ্টির পূর্বেই পরমাত্মা কতৃক বেদ বানী সৃষ্টি হয়। এই তরঙ্গরূপি বেদ বানীর প্রভাবে সূর্যাদি সকল দৈব পদার্থের সৃষ্টি হয়।।
বৈখরী, মধ্যমা, প্রশ্যন্তি, পরা এই হলো জ্ঞানের 4 অধ্যায়।
বৈখরী - আমি অন্য জায়গা বা অন্যের কাছ থেকে জেনে যেই জ্ঞানটা অর্জন করি সেটাই বৈখরীবাক|
বৈখরী, মধ্যমা, প্রশ্যন্তি, পরা এই হলো জ্ঞানের 4 অধ্যায়।
বৈখরী - আমি অন্য জায়গা বা অন্যের কাছ থেকে জেনে যেই জ্ঞানটা অর্জন করি সেটাই বৈখরীবাক|
মধমা - অনেক ব্যাক্তি দূরদৃষ্টি সম্পর্ন হয়, যেমন ধরো তাঁরা আজ যা বলছে 10, 20, 50, 100, 150 বছর পরে সেটাই ঘটছে !
উদাহরণ -রবিন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথ | রবিন্দ্রনাথের অনেক লেখা পড়লে মনে হয় না সে এটা 150 বছর আগে লিখেছে ! এই জ্ঞানটাকেই বলে মধ্যমাবাক |
প্রশ্যন্তি - ধ্যানের একটা পর্যায়ে সাধকের সামনে সব ছবির মতো ফুটে উঠে !এই কারণে তাকে দ্রষ্টা বলা হয় !
ঋষি সংজ্ঞা -- যার কাছে বেদবানী স্বয়ং আগমন করে | এই দেখা বাকটাই হলো বেদ !
পরা -- সাধক যখন ধ্যানস্থ থাকে তখন সে পরমশান্তি এবং ঈশ্বর উপলব্ধি করে \| কিন্তু সে কোনোদিন ভাষায় প্রকাশ করতে পারে না ! সাধক তখন পরমাত্মায় লীন থাকে ! ধ্যানের এই চরম পর্যায়ে যেই জ্ঞানটা উপলব্ধি করে সেটাই পরাবাক |
প্রথমে এই জ্ঞান গুরু শিষ্য পরম্পরায় চললেও একটা সময় খরার ফলে অনেকে তাঁদের ছেলে মেয়েদের শিক্ষা দেওয়া বন্ধ করে দেয়, তখন এই ঋষিদের থেকে জ্ঞানপ্রাপ্ত করে বেদ সম্পাদন করেন এবং লিপিবদ্ধ করেন এক ব্যাক্তি, তাঁর নাম কৃষ্ণ ! কারণ নাহলে বেদজ্ঞান বিলুপ্তি হয়ে যাবে !
তিনি এক দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন তাই তাঁর নামে যুক্ত হয় দৈপায়ন !
তিনি জেলে বর্মাছত্রপতির পুত্র !
তিনি বেদকে সম্পাদন করেন বলে তাঁর নামের সাথে যুক্ত হয় বেদব্যাস!
রশ্মি
নিরুক্তকারের মতে রশ্মি, যাহা অনাদি সত্বা।
নিরুক্তকারের মতে রশ্মি, যাহা অনাদি সত্বা।
অর্থাৎ। যাহা কোন কিছুকে উৎপন্ন করে ধারণ পালন পোষণ নিয়ামন,নির্মান করতে থাকেন তাহাই রশ্মি। সৃষ্টির বহু রশ্মি আছে।বেদে যত মন্ত্র আছে ততই রশ্মি সৃষ্টিতে আছে। একেকটি বেদ মন্ত্রই রশ্মি। তাই নিরুক্তকার বলেছেন রশ্মির যমুনাম। বেদ অনন্ত।তাই ব্রাহ্মণ গ্রন্থের ঋষিরা বলছেন। অনন্ত বৈ বেদা। সৃষ্টিতে বেদ অনন্ত। মানবীয় ঋষিগণ তাদের মানবীয় সামর্থ দ্বারা যতটুকু বৈদিক রশ্মিকে শোষণ করে নিতে পেরেছেন ততটুকুই মনুষ্যের জন্য বিদিত হয়েছেন।
সৃষ্টির আদিতে অমৈথুনি মনুষ্য সৃষ্টি হইলে পাঁচ বৎর পরে অগ্নি,বায়ু,অঙ্গিরা,আদিত্য নাম্মী উপাধি প্রাপ্ত চার ঋষি শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহনের ন্যায় বেদ ঋচা সমুহ মনস্তত্ব হতে শোষন করে নেন। মনস্তত্ব বিশ্বজগতের পূর্ব অবস্থা যেটা সর্বত্র পরিব্যাপ্ত আছে।
দুইটি চার্জ পার্টিকেল যখন একে অপরের নিকট চলে আসে তখন ধনাত্মক চার্জ হতে ধনঞ্জয় প্রাণরশ্মি এবং ঋনাত্মক চার্জ হতে মরুৎ রশ্মি বের হয়ে আসে। যখন দুই প্রকার রশ্মি আকাশকে খিচতে থাকে তখন উক্ত রশ্মি হতে সৃষ্ট বজ্ররশ্মির বর্চল অগ্নির ফোটন কনা আকাশকে খিচতে খিচতে দুচার্জ পার্টিকেল পরস্পর মিলে বৃহৎ বজ্র রশ্মির নির্মান করে ফোটন বা অগ্নিপ্রকাশের সৃষ্টি করে থাকে। ধনঞ্জরশ্মি + মরুত রশ্মি উক্ত চার্জ পার্টিকেলের মধ্য বিদ্যমান আছে। আবার ব্যাহৃত রশ্মি উক্ত দুই বৈদিক রশ্মিকে প্রেরণ করে থাকে। আবার ব্যাহৃত রশ্মিকে পরা ওম্ রশ্মি প্রেরণ করে থাকে। সৃষ্টিতে এইরূপ বিজ্ঞান দ্বারাই পরমাত্মা সর্বকার্য সম্পন্ন করে থাকে।
সৃষ্টিকে ঈশ্বর কিভাবে ধারণ করে আছেন
বেদ বলে সেই আত্মাই সৃষ্টিকে ধারণ করে আছে। বেদ আবার ও বলছে সেই মাতরিশ্বাই সৃষ্টির প্রতিটি পদার্থকে ধারণ করে আছে, ইত্যাদি।
সেই আত্মা হল সূত্রাত্মাক বায়ূ। মাতরিশ্বাই বায়ূর নামান্তর। আবার বায়ূরীতি কর্ম নাম সুপঠিতম। আবার যাহাই বেগ বল তাহাই বায়ূ।
সৃষ্টির প্রথমে পরমাত্মা মনস্তত্বের মাঝে সূত্রাত্মা বায়ূ রশ্মিকেই সৃষ্টি করেন। সূত্রাত্মা বায়ূর কাজ হল কোন কিছুকে নির্মান করে যথারীতি ধরণ এবং পালণ পোষণ করা। সৃষ্টির সর্বত্র এই বায়ূ পরমাত্মার ন্যায় ব্যাপ্ত তাই ইহার নাম হয়েছে সূত্রাত্মা বায়ূ। প্রতিটি মূল কনা উপরে ৬ টি রশ্মির আরবরণ আছে। কিন্তু সূত্রাত্মা বায়ূ সকল স্থানে ব্যাপ্ত থেকে মাতার ন্যায় ঈশ্বরের সৃষ্টিকে পালন করছেন তাই। সৃষ্টি স্থিত আছে সূত্রাত্মার বায়ূর জন্য। আবার যখন প্রলয় হবে তখন পরমাত্মা ওম্ রশ্মি দ্বারা সূত্রাত্মা বায়ূর বিনাশ করে দিতেই প্রতিটি মূল কনা ভেঙ্গে গিয়ে রশ্মিতে কনভার্ট হয়ে যাবে আবার রশ্মি প্রকৃতি অবস্থায় সমাহিত হয়ে যাবে। এই ভাবে প্রলয় ও হয়ে যাবে।
পদার্থের বিভাজনের চরম শেষ পরিনতি স্ট্রিং থিওরি (বৈদিক রশ্মি থিওরি দ্বারা খন্ডন করা হয়েছে)।
যেখানে পার্টিকেল স্টেট বিনষ্ট হয়ে রশ্মি স্টেট আরম্ব হয়। সেই রশ্মি সকল বৈদিক ছন্দ। বেদে যে ৭ ছন্দ এবং ৫৬ উপছন্দ আছে তাহা এই রশ্মি স্টেট হতে আরম্ব হয় উক্ত কারণে বেদ অতি সূক্ষ বিষয়। যাহার জন্য বেদ সমকলের বেদগম্য হয় না। বেদ সৃষ্টি বিদ্যার জ্ঞান ও সৃষ্টির মূল পদার্থ। বেদ দ্বারাই আমাদে ইউনিভার্স নির্মিত। বৈদিক রশ্মির স্থাপনা করেই পরমাত্মা সৃষ্টির নির্মান করেন।
সৃষ্টির সমগ্র মলিকূলার স্টেটই পৃথিবী তত্ব।
বেদ অনুসারে পৃথিবীর তন্মাত্রা গন্ধ। আধুনিক বিজ্ঞান অনুসারে মলিকূলার স্টেট থেকেই গন্ধের সৃষ্টি বলে মানা হয়। আয়ণ এবং অ্যাটমে কোন গন্ধ তন্মাত্রা নাই। কিন্তু আয়ণ এবং আ্যাটম যখন যখন পরস্পর মিশ্রিত হয়ে মলিকূল সৃষ্টি করল তখন গন্ধ তন্মাত্রার নির্মান হল। তাই বেদের থিওরি অনুসারে মলিকূলার স্টেটই পৃথিবী তত্ব।
ফোটন একটি গ্রিক শব্দ যার অর্থ হল আলো ।ফোটন হল অ্যাটম হতে শোষিত ইলেকটন দ্বারা অ্যাবজর্ড হওয়া প্রকাশ বিন্দু।
প্রাণ+ অপাণ+ ব্যান এবং উদান রশ্মি দ্বারা ফোটন নির্মান হয়। উক্ত প্রান অপান ব্যান রশ্মির সাথে ৩৬০ প্রকারের বৈদিক রশ্মি সংযুক্ত। অর্থাৎ সামবেদের ৩৬০ টি মন্ত্রবল যুক্ত হয়ে একবিন্দু।ফোটনকনা নির্মান করে।
১৬৮৭ সালে স্যার আইজ্যাক নিউটনের প্রকাশিত মহাকর্ষীয় সুত্র অনুযায়ী আমরা জানি , "এই মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণা একে অপরকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে এবং এই আকর্ষণ বলের মান বস্তু কণাদ্বয়ের ভরের গুণ ফলের সমানুপাতিক, এদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক এবং এই বল বস্তুদ্বয়ের কেন্দ্র সংযোজক সরলরেখা বরাবর ক্রিয়া করে।" ... m1 ও m2 ভরের দুইটি বস্তু পরস্পর r দুরত্বে অবস্থান করলে এদের আকর্ষণ বলের মান ,
F∝ m1*m2/ r^2
বা, F = G m1*m2/ r^2 ,যেখানে G হল মহাকর্ষীয় ধ্রূবক
F∝ m1*m2/ r^2
বা, F = G m1*m2/ r^2 ,যেখানে G হল মহাকর্ষীয় ধ্রূবক
সমীকরনটি থেকে সহজে প্রতীয়মান যে যদি একটি বস্তুর ভর শূন্য হয় , তাহলে তাদের অধ্যে ক্রিয়াশীল বলের পরিমান শূন্য ! স্পষ্টত দ্বন্দ্ব লক্ষণীয় যে কীভাবে ভরহীন ফোটন তাহলে ব্ল্যাকহোল বা ভরযুক্ত মহাকর্ষ দ্বারা আকৃষ্ট হয় ! এই ব্যাপারটিকে চিরায়ত বা ক্লাসিক্যাল মেকানিক্স ব্যাখ্যা করতে পারে না ! তবে , আইন্সটাইন ভ্রূ কুঁচকে সুন্দরতম উত্তর দিয়েছেন আপেক্ষিক তত্ত্বের মাধ্যমে । তিনি হাজির করেন চতুর্মাত্রিক মহাবিশ্ব ব্যাবস্থা যেখানে মহাকর্ষকে বল হিসেবে না ধরে নিছকই স্থান-কালে বক্রতা হিসেবে উল্লেখ করলেন । নিউটন যেখানে বলেছেন যে বস্তুর ভর যত বেশি তার আকর্ষণ করার ক্ষমতা তত বেশি , তার পরিবর্তে আইনস্টাইন দেখালেন যে বস্তুর ভর যত বেশি তার কর্তৃক স্থান-কালে সৃষ্ট বক্রতার পরিমানও বেশি !
কোন ভারী বস্তু স্থান-কালে যে বক্রতা সৃষ্টি করে , অপর বস্তুর গতিপথ সেই বক্রতার জন্যই পরিবর্তিত হয়, যাকে আমরা মহাকর্ষ বলি । আর এই বক্রতা ভরযুক্ত বা ভরহীন সকল বস্তুর জন্য একইভাবে কাজ করে । অর্থাৎ , ফোটন যখন কোন ভারী বস্তুর নিকট দিয়ে অতিক্রম করে তখন ভারী বস্তু কর্তৃক কৃত বক্রতার জন্য তার গতিপথ পরিবর্তিত হয় । তার ভর শূন্য হলেও তাই মহাকর্ষ দ্বারা তার গতিপথের পরিবর্তন হয় ! অর্থাৎ, কোন উৎস থেকে আসা আলোর গতিপথ ভারী বস্তুর দ্বারা প্রভাবিত হয় ! আর আলো তথা ফোটনের গতিপথ পরিবর্তনের জন্য
আমরা বস্তুর আসল অবস্থান না দেখে আপাত অবস্থান দেখি । যাকে গ্রাভেটিশনাল লেন্সিং বলে ! শুধু ভরহীন ফোটনের উপর মহাকর্ষের প্রভাব নয় এছাড়াও ফোটনের আধুনিক ধারণাটি ব্যাখ্যা করেছিলেন আলবার্ট আইনস্টাইন । প্রমাণ অবশ্য করেছিলেন স্যার এডিংটন , যা নিয়ে ও গ্রাভেটিশনাল লেন্সিং নিয়ে মাত্র কয়েকদিন আগে আলোচনা করেছিলাম !
আরো বেশ কয়েকটি মজার ব্যাপার আছে । ফোটনের তো শক্তি আছে জানি , কিন্তু ভর নেই । আমরা E= mc^2 অনুযায়ী জানি ভর আর শক্তি একই জিনিস । ফোটনের শক্তি থাকলে তাহলে ভর কেন নেই । আবার সকল কণার মোট ফোটনেরও ভরবেগ আছে । কিন্তু ফোটনের তো ভরই নাই জানি । তাহলে ভরবেগ কীভাবে থাকে ?
ব্লাকহোল সম্পর্কে আধুনিক প্রচলিত ধারণাকে ২০০৪ সালে ভারতীয় কসম্লোজির বড় বিজ্ঞানী আভাস মিত্র জী খন্ডন করেন এবং তিনি ব্লাকহোলের সম্পূর্ন সত্য তথ্য সকলের নিকট পেশ করেন।
এদিকে বেদ বিজ্ঞানী স্বামী অগ্নিব্রত ন্যাষ্ঠীকজী ব্লাকহোলের পূর্ণ বিজ্ঞান ঐতরেয় ব্রাহ্মণ ভাষ্য করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। ঐতরেয় ঋগ্বেদীয় ব্রাহ্মণ। ঋগ্বেদ বোঝার জন্য ঐতরেয় ব্রাহ্মণ সুনিপুণ ভাবে অধ্যায়ণ করা চাই তা হলে ঋগ্বেদ বোধগম্য হবে।
ব্লাকহোল বৃহতী ছন্দ রশ্মিপ্রধান পদার্থ। ভূঃ র্ভবঃ স্বঃ এই তিন রশ্মি নিয়ে বৃহতী ছন্দ তৈরী হয়ে থাকে। আচার্য পিঙ্গলের মতে বৃহতী ছন্দ কালোবর্ণ সৃষ্টি করে থাকে। তাই ব্লাকহোলের মাঝখানে কালো দেখায়। মূলত ঐ কাল অঞ্চল স্ট্রিং ফোর্স সম্পন্ন। ব্যাহৃতরশ্মি দ্বারা বৃহতী ছন্দ সৃষ্টি হয় অতএব উক্ত স্থানে প্রচন্ড গ্রাভিটির নির্মান হয়। মোট ১০ প্রকারের ছন্দ রশ্মি দ্বারা গ্রাভিটির নির্মান হয়। ব্লাকহোলে স্ট্রিং ফোর্স তথা ব্যাহৃত রশ্মি কার্য করে। সময় তথা পরা ওম্ রশ্মি ঐ সকল বলের মূল বল। অতএব সময়ই তথা কাল রশ্মিই ব্লাকহোলের মূল বল। ঐতরেয় ব্রাহ্মণের ভাষায় ব্লাকহোলের নাম দেবাকীর্তি বা বৃহৎ আদিত্যলোক।
গ্যালাক্সির ভীতর বাইরে অনেক ছন্দ উপছন্দ কাজ করে থাকে। ব্লাকহোল নির্মানের সময় ধাপে ধাপে ১৭ টি লেয়ার সৃষ্টি হয় যেগুলো পুরো গ্যালাক্সিকে সৃষ্টি করে ধারণ করে আছে। অভিজিৎ,আদিত্য আয়ূ ইত্যাদি নামে লেয়ারগুরো বিভক্ত। ঐ লেয়ারে বৈদিক ছন্দরশ্মির স্থাপনা হয়ে নক্ষত্র সমুহতে ব্লাকহোল ধারণ করে থাকে।
ব্লকহোল স্টিং ফোর্স দ্বারা নির্মিত। এই স্টিং ছন্দরূপী। যাহা বৃহতী ছন্দ। যাহার বর্ণ কালো। গুণের আকর্ষণ শক্তি বা বিকর্ষণ শক্ত সম্পন্ন। ভূঃ র্ভবঃ স্বঃ তিন অক্ষর রশ্মি তার মূল বল। ওম্ রশ্মি ব্যাহৃত রশ্মির ও মূলবল।
।।স্বঃরীতি সামবেদঃ।। স্বঃ রশ্মিই সামবেদ। স্বঃই স্বর্গ লোক।
।। স্বর্গ বৈ লোকঃ সূর্যজ্যোতিরুত্তমম্।।
( শতপথ ১২/৯/২/৮)।।
অগ্নি বৈ লোকঃ স্বর্গস্য অধিপতি।।( ঐতরেয় ৩/৪২)।। অগ্নিই স্বর্গলোকের অধিপতি। ওম রশ্মিই কাল অগ্নি। সেই কাল অগ্নিই সূর্যের কেন্দ্রভাগে প্রাণন কার্য দ্বারা সূর্যের সমগ্র কার্যাবলি পরিচালনা করছেন।
।। স্বর্গ লোকঃ সরস্বান।। ( তান্ডমহাব্রাহ্মণ ১৬/৫/১৫)
সূর্য লোক ই স্বঃ রশ্মি প্রধান। স্বরস বাঙ্ নাম। স্বঃ রশ্মি ই বাক্ নাম। বাক্ ই ওম্ রশ্মি। সমগ্র সূর্যের ভীতর বাইরে বাক্ রশ্মি প্রধান। ওম্ রশ্মিই দশ প্রাণ ও ৫৬ ছন্দ উপছন্দরশ্মির নির্মান করে সূর্যের ধারণ পোষণ পালন করছেন। পরাওম্ ই কাল অগ্নি। কালই সময়। কাল রশ্মি হতে ই সকল পদার্থের নির্মান হয়।
( অথর্ব ১৯/৫৩/১)।।
।। আদিত্য স্বঃরীতি সামানি।। সূর্যই স্বর্গলোক জাত তেজ সত্তা। অগ্নি প্রকাশ স্বর্গ হতে ক্ষরিত হয়। স্বর্গই সূর্যনিউক্লিয়াস। সম্পূর্ণ নিউক্লিয়াসের ওম্ রশ্মিই মাতা স্বরূপ। নিউক্লিয়াসের মাঝে সমগ্র সাম ঋচা গুন্ঞ্জারিত হচ্ছে। যাহার দারুন প্রভাবে সূর্য প্রকাশ পাচ্ছে। তাই বলা হচ্ছে। স্বরীতি সামবেদঃ।
ঐ সূর্যের মাঝে যে তেজ তাহা প্রণব ওম্ জাত। তস্য বাচকঃ প্রণবঃ।। সেই পরমাত্মার বাচক পরা ওম্ রশ্মিই সূর্যের রক্ষক। সূর্য আমাদের রক্ষক। পরমাত্মা এমনই বিজ্ঞান কার্য দ্বারা প্রজা আদির পালন পোষন ও নির্মান করে ধারণ করে আছেন। আমরা সেই ওম্ নামের স্মরণ করি। ওম্ জপ করি। ওম্ ওম্ ওম্ ওম্। আদিত্যই সেই প্রণবঃ। তাই আমরা সেই প্রণব তেজ সূর্যের নমস্কার করি।।
যা পুরস্তাদ্যুজ্যতে যা শ পশ্চদ্যা বিশ্বতো যুজ্যতে যা চ সর্বতঃ।
যযা যজ্ঞঃ প্রাঙ্তায়তে তাং ত্বা পৃচ্ছামি কতমা সা ঋচাম্।।
-[অথর্ববেদ ১০/৮/১০]
পদার্থ- (যা পুরস্তাত্) যা শুরুতে (যুজ্যতে) যুক্ত হয় (যা চ পশ্চাত্) যা সমাপ্তিতেও যুক্ত হয়। (যা বিশ্বতঃ যা চ সর্বতঃ ) যা সর্বত্র ও সর্বকালেই (যুজ্যতে) যুক্ত হয়। (যয়া) যেই শব্দ উচ্চারিত করে (যজ্ঞঃ) শ্রেষ্ঠ কর্মসমূহকে (প্রাঙ্) সামনে (তায়তে) বিস্তার করা হয়। (তাম্) সেই শব্দ (ত্বাং) তোমায় (পৃচ্ছামি) জিজ্ঞেস করি। আমায় তুমি বল। (ঋচাম্) বেদমন্ত্রসমূহে (সা)সেই শব্দ (কতমা) কোনটি?
ব্যাখ্যা - গোপথ ব্রাহ্মণ ১/১/২২ এই মন্ত্রের উত্তরে বলছে, সেই শব্দ হল ও৩ম্।
ও৩ম্ খং ব্রহ্ম( যজুর্বেদ ৪০/১৭)
আকাশের ন্যায় সর্বত্র পরিব্যাপ্ত ব্রহ্ম ও৩ম্।
ও৩ম্ সেই পরব্রহ্মের প্রকৃষ্ট জ্ঞাপক।(কঠোপনিষদ ১/২/১৭)
পরব্রহ্মবাচক এই ও৩ম্ থেকেই সমগ্র জগত সৃষ্টি, স্থিতি ও লয় প্রাপ্ত হয়। এই ও৩ম্ শব্দ উচ্চারণ করেই সমস্ত বেদমন্ত্র, যজ্ঞাদি শুভ কর্মের শুরু ও সমাপ্তি করা হয়।
------চলবে
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ