বৃহদারণ্যক উপনিষদ ৬।৪।১৮ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

10 July, 2020

বৃহদারণ্যক উপনিষদ ৬।৪।১৮

উপনিষদ বেদের অংশ হওয়ার হেতু উপনিষদে গোমাংস আহারের নির্দেশ কদাপি থাকতে পারে না।
অথ য ইচ্ছেৎ পুত্রো মে পন্ডিতো বিজিগীতঃ সমিতিঙ্গমঃ শুশ্রুষিতাং বাচ্য ভাষিতা জায়েত সর্বাণ বেদাননুববীত সর্বমায়ুরিয়াদিতি মাষৌদনং পাচয়িত্বা সর্পিষ্মন্তমশ্নীয়াতামীশ্বরৌ জনয়িতবা ঔক্ষেণ বার্ষভেণ বা।।
(বৃহঃ উপঃ ৬।৪।১৮) 
বৃহদারণ্যক উপনিষদ ৬।৪।১৮

.
শব্দার্থঃ (অথ যঃ ইচ্ছেত্ পুত্রঃ মে) এবং যে এই ইচ্ছা করে যে আমার পুত্র (পন্ডিতঃ) বিদ্বান (বিজিগীথঃ) প্রসিদ্ধ (সমিতিয় গমঃ) সভায় গমন যোগ্য (শুশ্রুষিতাম বাচম্ ভাষিতা) আদরের সহিত শ্রবণ যোগ্য ভাষনকারী (জায়েত) হবে (সর্বাণ বেদাননুববীত সর্বম্ আয়ু ইয়াত্ ইতি) সমস্ত বেদের জ্ঞাতা পূর্নায়ুর উপভোক্তা হবে তো (মাষৌদনম্) [পাঠভেদ - মাংসৌদম্] মাষের [কলাই বিশেষ] সাথে চাউল (পাচয়িত্বা সর্পিষ্মন্তম্ অশ্নীয়াতাম্ ইশ্বরী জনয়িতবৈঃ) পাক করে ঘৃতের সাথে উভয়ে [স্বামী স্ত্রী] আহার করে তো (অপেক্ষেত পুত্র) পুত্র উৎপন্ন করতে সমর্থ হবে (ঔক্ষেণ বা আর্ষভেণ) ঔক্ষ [বিধি] দ্বারা অথবা ঋষভ [বিধি] দ্বারা। 
.
সরলার্থঃ এবং যে এই ইচ্ছা করে যে আমার পুত্র বিদ্বান প্রসিদ্ধ সভায় গমন যোগ্য আদরের সহিত শ্রবণ যোগ্য ভাষনকারী হবে, সমস্ত বেদের জ্ঞাতা পূর্নায়ুর উপভোক্তা হবে তো মাষের [কলাই বিশেষ] সাথে চাউল পাক করে ঘৃতের সাথে উভয়ে [স্বামী স্ত্রী] আহার করে তো পুত্র উৎপন্ন করতে সমর্থ হবে ঔক্ষ [বিধি] দ্বারা অথবা ঋষভ [বিধি] দ্বারা

তাৎপর্যঃ এই কন্ডিকার মধ্যে বর্ণিত পুত্র প্রাপ্তির জন্য বলা হয়েছে যে, মাষের সাথে পাককৃত চাউল বিধির সাথে আহার করা উচিৎ। এই পুত্র এবং পুত্রি উৎপন্ন করার জন্য অপেক্ষিত সাধনের কাজে নেবার শিক্ষাকে সমাপ্ত করে ইহা বলা হয়েছে যে, সব প্রকারে পুত্র কে উৎপন্ন করা আদির কৃত্য ঔক্ষ এবং আর্ষভ বিধি দ্বারা করা উচিৎ।
.
ঔক্ষ বিধিঃ ঔক্ষ শব্দ উক্ষ (সেচনে) ধাতু হতে এসেছে। উক্ষ দ্বারা উক্ষণ এবং উক্ষণের বিশেষন ঔক্ষ। ঔক্ষ বিধি বর্ণনাকারী শাস্ত্রকে ঔক্ষ শাস্ত্র বলে। কোন মিশ্রিত ঔষধি পাক আদি তৈরীতে কোন কোন ঔষধি কি কি মাত্রায় পড়া উচিৎ তাহা বর্ণনাকারী শাস্ত্রের নাম ঔক্ষ শাস্ত্র। অভিপ্রায় এই যে, উপরিউক্ত মাষের অথবা তিলৌদন আদির প্রস্তুতে এই (ঔক্ষ শাস্ত্র) র মর্যাদা কে লক্ষ্য রেখে কাজ করা উচিৎ।
.
আর্ষভ বিধিঃ আর্ষভ - ঋষভ শব্দের বিশেষন। ঋষভ এবং ঋষি শব্দ পর্যায়বাচক। আর্ষভের অর্থ ঋষিকৃত অথবা ঋষিদের বানানো কিছু। ঔক্ষ শাস্ত্রের সাথে এই আর্ষভ শব্দের ভাব এই যে, ঋষিদের বানানো বিধি (পদ্ধতি) র নামই ঔক্ষ শাস্ত্র। অর্থাৎ কোন অনভিজ্ঞর বানানো বিধিকে ঔক্ষ শাস্ত্র বলা হয় না। ঋষিকৃত পদ্ধতিই ঔক্ষ শাস্ত্র।
.
মাষৌদনঃ যা বলা হয়েছিলো মাষৌদনে পাঠ ভেদ রয়েছে, অনেক গ্রন্থে মাংসৌদন। সিবায় মাংস শব্দের এরূপ অর্থ করেছে যে, (মনঃ সীদত্যস্মিন স মাংসঃ) যাহাতে মন প্রসন্ন হয় তাহাই মাংস। নিরুক্তেও মাংস শব্দের অর্থের মনন, সাধক, বুদ্ধিবর্ধক মন কে রুচি দানকারী বস্তুকে বলা হয়েছে। যা ফলের রসালো অংশ, ঘী, মাখন, ক্ষীর আদি পদার্থ (মাংস মাননং বা মানসং বা মনোস্মিনৎসীদতীতি ; নিরুক্ত ৪।৩)। এবং এই দৃষ্টি দ্বারা মাষৌদন কে মাংসৌদন বলা যায়। এই জন্য কোন প্রকরণে গো মাংস অর্থে মাংসের প্রয়োগ যা এই প্রকরনে নেই। এইজন্য যে দশ ঔষধিকে দ্বারা মাষ এবং ঔদন বর্ননার বিধান রয়েছে তাহার নাম স্বয়ং উপনিষদই উল্লেখ করেছে -
(i) ধান্য (ii) যব (iii) তিল (iv) মাষ (v) বাজরা (vi) প্রিয়জু (vii) গোধূম (viii) মসুর (ix) খল্ব (x) থলকুল।
(বৃহঃ উপঃ ৬।৩।১৩)
এখানে একটা বিষয়ে গভীর ভাবে মনোযোগ দেওয়া উচিৎ যে, এই ঔষধির গণনা করে দেখা যাচ্ছে তিলের পরেই মাষের উল্লেখ রয়েছে। এইজন্য সতেরো কন্ডিকায় তিলৌদন এবং তাহার পরে আঠারো কন্ডিকায় মাষৌদনের উল্লেখ। অন্যথা মাংসের তো এখানে যেমন বলা হলো তার কোন প্রকরনই নেই।
মূলত আমাদের ধর্মের মূল স্রোত হলো বেদ। বেদের জ্ঞান দ্বারাই পরবর্তিতে অনেক শাস্ত্র রচিত হয়েছে। সেই বেদে আমরা গোহত্যার বিরুদ্ধে স্পষ্ট প্রমাণ পাই। গো হত্যা সমন্ধ্যে বেদ বলছে যে, "মা গাম অনাগাম অদিতিম বধিষ্ট" (ঋগবেদ ৮।১০১।১৫) অর্থাৎনিরপরাধ গাভী এবং ভূমিতূল্য গাভীকে কখনো বধ করো না। শুধু তাই নয় গোহত্যাকারীকে দন্ডের বিধান দিয়ে বেদ বলছে যে -যদি আমাদের গাভীকে হিংসা কর যদি অশ্বকে যদি মনুষ্যকে হিংসা কর তবে তোমাকে সীসক দ্বারা বিদ্ধ করিব। (অথর্ববেদ ১।১৬।৪)। 

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অথর্ববেদ ২/১৩/৪

  ह्यश्मा॑न॒मा ति॒ष्ठाश्मा॑ भवतु ते त॒नूः। कृ॒ण्वन्तु॒ विश्वे॑ दे॒वा आयु॑ष्टे श॒रदः॑ श॒तम् ॥ ত্রহ্যশ্মানমা তিষ্ঠাশ্মা ভবতুতে তনূঃ। কৃণ্বন্তু...

Post Top Ad

ধন্যবাদ