কুরআন মাজীদ অথবা কুরআ-ন মাজী-দ যা আল্লাহর বাণী বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন।(Nasr, Seyyed Hossein (২০০৭)। "Qurʼān"। Encyclopædia Britannica Online।)মুসলমানদের বিশ্বাসমতে আল্লাহর ফেরেশতা জিব্রাইল এর মাধ্যমে ইসলামিক নবী মুহাম্মাদ এর কাছে মৌখিকভাবে কুরআনের আয়াতগুলো অবতীর্ণ করেন, দীর্ঘ তেইশ বছর ধরে সম্পূর্ণ কুরআন অবতীর্ণ হয়। কুরআনের প্রথম আয়াত অবতীর্ণ হয় ৬০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর যখন মুহাম্মাদের বয়স ৪০ বছর এবং অবতরণ শেষ হয় মুহাম্মাদের তিরোধানের বছর অর্থাৎ ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে।ইসলামী ইতিহাস অনুসারে দীর্ঘ তেইশ বছর ধরে খণ্ড খণ্ড অংশে এটি ইসলামের নবী মুহাম্মাদের নিকট অবতীর্ণ হয়।
তাফসীরে তাফহীমুল কুরআন pdf
কুরআনের আয়াতসমূহে কুরআন শব্দটি ৭০ বার এসেছে।কুরআনে সর্বমোট ১১৪টি সূরা আছে। আয়াত বা পঙক্তি সংখ্যা ৬,৬৬৬ টি; মতান্তরে ৬,২৩৬ টি। এটি মূল আরবি ভাষায় অবর্তীর্ণ হয়।
(Ref:-
- Chejne, A. (1969) The Arabic Language: Its Role in History, University of Minnesota Press, Minneapolis.
- ↑ Nelson, K. (1985) The Art of Reciting the Quran, University of Texas Press, Austin
- ↑ Speicher, K. (1997) in: Edzard, L., and Szyska, C. (eds.) Encounters of Words and Texts: Intercultural Studies in Honor of Stefan Wild. Georg Olms, Hildesheim, pp. 43–66.
- ↑ Taji-Farouki, S. (ed.) (2004) Modern Muslim Intellectuals and the Quran, Oxford University Press, Oxford)
আর, আরবি ব্যাকরণে "কুর'আন" শব্দটি একটি "মাসদার",যা ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ৭৫:১৭,১৮ আয়াতে এটি,(قرأ) ক্বরা'আ ('পাঠ করা' বা 'আবৃত্তি করা') ক্রিয়ার ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এই ক্রিয়াপদটিকেই কুরআন নামের মূল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।[১৮] এই শব্দটির "মাসদার" (الوزن) হচ্ছে غفران তথা "গুফরান"। এর অর্থ হচ্ছে অতিরিক্ত ভাব, অধ্যবসায় বা কর্ম সম্পাদনার মধ্যে একাগ্রতা। উদাহরণস্বরুপ, (غفر) নামক ক্রিয়ার অর্থ হচ্ছে "ক্ষমা করা"; কিন্তু এর আরেকটি মাসদার রয়েছে যার যা হলো (غفران), এই মাসদারটি মূল অর্থের সাথে একত্রিত করলে দাঁড়ায় ক্ষমা করার কর্মে বিশেষ একাগ্রতা বা অতি তৎপর বা অতিরিক্ত ভাব। সেদিক থেকে কুরআন অর্থ কেবল পাঠ করা বা আবৃত্তি করা নয় বরং একাগ্র ভঙ্গীতে পাঠ বা আবৃত্তি করা। কুরআনের মধ্যেও এই অর্থেই কুরআন শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। কুরআনের সূরা আল-কিয়ামাহের (৭৫ নং সূরা) ১৮ নং আয়াতে এই শব্দটি উল্লেখিত আছে:"অতঃপর, আমি যখন তা পাঠ করি (ক্বুরা'নাহু), তখন আপনি সেই পাঠের (কুরআ'নাহ্) অনুসরণ করুন।"[১৯]
কুরআনে যেখানেই এই শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে সেখানেই এর যথার্থ বিশেষ্য বা বিশেষণ পাওয়া যায়। ক্বরা'আ ক্রিয়াপদ কুরআনে পুনঃপুনঃ ব্যবহৃত হয়েছে।১৭:৯৩ আয়াতে এর অর্থ 'পাঠ করা'; কিন্তু এর বহুল প্রচলিত অর্থটি হল,'আবৃত্তি করা' (তিলাওয়াঃ),৭৫: ১৬,১৭। মুহাম্মদ এর আবৃত্তি সমন্ধেও এই শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। তিনি তাঁর নিজের উপর অবতীর্ণ ওহী আবৃত্তি করেন (৭ঃ২০৪; ১৬ঃ৯৮; ১৭ঃ৪৫; ৮৪ঃ২১; ৮৭ঃ৬)। শব্দটি মুমিনদের আবৃত্তি সমন্ধেও ব্যবহৃত হয়েছে , তারা সালাতে ওহী আবৃত্তি করেন (৭৩ঃ২০)। এথেকে বোঝা যায়, কুরআন শব্দের অর্থ হল 'আবৃত্তি করা' যা মুহাম্মদ আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত হয়ে আবৃত্তি করেছেন (৭৫ঃ১৮; ৮৬ঃ৬) এবং মানুষের সম্মুখেও আবৃত্তি করেছেন। যদিও কুরআন বলতে সাধারভাবে তাঁর উপর অবতীর্ণ ওহীর সমষ্টীকে বুঝায়।তবে শব্দটি (কুরআন) তাঁর উপর অবতীর্ণ পৃথক পৃথক ওহী (১০ঃ১৫; ১২ঃ৩; ৭২ঃ১; ২ঃ১৮৫) সমন্ধে বা খন্ডে খন্ডে অবতীর্ণ (১৭ঃ১০৬; ২০ঃ১; ৭৬ঃ২৩; ২৫ঃ৩২ ; ৫৯ঃ২১) আল্লাহর ওহী সমন্ধে বলা হয়েছে যা তিঁনি আল্লাহ কতৃক পেয়েছিলেন (২৭ঃ৬; ২৮ঃ৮৫)।
আল কিতাব (ধর্ম গ্রন্থ বা পুস্তক) শব্দটি আল-কুরআনের প্রতিশব্দ হিসাবে একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। আল-কিতাব সমন্ধে বলা হয়েছে "ইহা এক কল্যানময়ী রাত্রিতে (৪৪ঃ২) অবতীর্ণ হইয়াছে" (৪০ঃ২; ৪৫ঃ২)। ১৫ঃ১ আয়াতে বলা হয়েছে, "এইগুলি আল-কুরআন এবং সুস্পষ্ট অর্থবোধক আল-কিতাবের অলৌকিক নিদর্শনসমূহ।" বিষয়বস্তু হিসেবে কুরআনকে প্রায়ই 'যি'কর' বলা হয়েছে। এখানে এর অর্থ উপদেশ, সাধারণ বানী (২১ঃ২৬,৪২; ৩৮ঃ৮৭)। যি'করকে 'অবতীর্ণ' (২১ঃ৫০; ৩৮ঃ৮) এবং 'মহান পবিত্র গ্রন্থ' (৪১ঃ৪১) বলা হয়েছে। আবার ৩৬ঃ ৬৯ আয়াতে কুরআন সমন্ধে বলা হয়েছে, "ইহা এক (মহান) যি'কর এবং সুস্পষ্ট অর্থবোধক কুরআন"।২১ঃ৭ আয়াতে আহ্'লুল-কিতাবকে আহ্'লুয যি'কর বলা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে আল-হি'কমাঃ শব্দটি উল্লেখ করা যেতে পারে। ২ঃ১২১,১৫১; ৩ঃ১৬৪; ৬২ঃ২ -এ আল-কিতাবের সাথে হি্'কমাঃ উল্লেখ করা হয়েছে। ২ঃ২৩৯; ৪ঃ১১৩ -এ কুরআনের সঙ্গে হি'কমাতের অবতীর্ণ হওয়ার উল্লেখ আছে। কুরআনে, কুরআনকে "আল-ফুরকা'ন"-ও বলা হয়েছে।
"সূরাঃ" শব্দটি আরবী সূর (নগর প্রাচীর) হইতে গৃহীত একবচনজ্ঞাপক…. যোগ করিয়া গঠিত। সূরার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নির্দিষ্ট অংশকে আয়াত বলা হয়। হিব্রু 'ওত' শব্দের ন্যায় ইহা বিশেষ অর্থে নিদর্শন, বিশ্বাসের নিদর্শন (২ঃ২৪৮; ৩ঃ৪১; ২৬ঃ১৯৭) বিশেষত আল্লাহর অস্তিত্ব ও ক্ষমতার নিদর্শন (১২ঃ১০৫; ৩৬ঃ৩৩) বুঝায়। তাই এটি দ্বারা অলৌকিক ঘটনাকে'ও (মু'জিযাঃ) বুঝায় (৩ঃ৪৯; ৪৩ঃ৪৬)। মুহাম্মদ যে আল্লাহর নবী এর প্রমাণস্বরুপ মক্কার পৌত্তলিকরা তার নিকট অলৌকিক ক্রিয়া (মু'জিযাঃ) দেখানোর দাবী করত। যেহেতু প্রেরিত ওহীগুলোই তার অন্যতম মু'জিযাঃ (৬ঃ১৫৮; ৭ঃ২০৩; ২০ঃ১৩৩; ২৯ঃ৫০) সেজন্যই এগুলোর নাম আয়াত হয়েছে। আয়াতগুলো উর্ধ-জগত হতে (২ঃ৯৯; ২৮ঃ৮৭) আল্লাহর নবীর নিকট (২ঃ২৫২; ৩ঃ৫৮; ৪৫ঃ৫) পাঠানো হত এবং পূর্ববর্তী নবীগনের ন্যায় (২৮ঃ৫৯) তিনিও উহা লোকদেরকে আবৃত্তি করে শোনাতেন (২ঃ১৫১; ৩ঃ১৬৪; ৬৫ঃ১১)।
আরও বলা হয়েছে যে, আল্লাহ্ তাঁর আয়াতসমূহের ব্যাখ্যা করেন, (২ঃ১৮৭) ; "মুমিনগণ রাত্রিতে ইহা পাঠ করেন" (৩ঃ১১৩); "একমাত্র কাফিরগণই আমার আয়াতগুলির সত্যতা অস্বীকার করে" (২৯ঃ৪৭)। আবার কিছু যায়গায় গুরুত্ব বোঝানোর জন্য আয়াতসমূহের প্রতিই দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়েছে। যেমন,"সূরার ভিতর সুস্পষ্ট আয়াত-সমূহ নাযিল করিয়াছি"(২৪ঃ১); "একটি কিতাব যাহা আমি পাঠাইয়াছি, যেন তাহারা ইহার আয়াতগুলি সমন্ধে চিন্তা করিতে পারে" (৩৮ঃ২১); "এইগুলি হইল জ্ঞানময় কিতাবের আয়াত" (১০ঃ১; ৩১ঃ১) ; " এইগুলি সুস্পষ্ট অর্থবোধক কিতাবের আয়াত (১২ঃ১; ২৬ঃ১; ২৮ঃ১) ; "এইগুলি আল-কিতাব ও স্পষ্ট বিবরণদানকারী কু'রআনের আয়াত" (১৫ঃ১) ; "এইগুলি আল-কু'রআন ও স্পষ্ট বিবরণদানকারী" (কিতাব) (২৭ঃ১)। "একটি কিতাব যার আয়াতগুলি দৃড়রূপে প্রথিত ", (১১ঃ১, ১৩,১)। কিতাবে সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ এবং বিভিন্ন অর্থবোধক আয়াতসমূহ আছে (৩ঃ৭)। যেমন, " এবং যদি আমি একটি আয়াত বাতিল করে অথবা ভুলাইয়া দেই তবে সেই স্থানে তদপেক্ষা উত্তম অথবা অনুরূপ একটি আয়াত আনয়ন করি" (২ঃ১০৬)। "যদি আমি এক আয়াত অন্য আয়াত দ্বারা বদল করি (১৬ঃ১০১)।
এইসব বিবরন হতে মুহাম্মদ এর উপর অবতীর্ণ ওহীর বিষয়বস্তু সমন্ধে জানা যায় "উহা সুরক্ষিত ফলক বা লাওহ' মাহ্'ফুজ' হইতে অবতীর্ণ হইয়াছে" (৮৫ঃ২২)। " ইহা একটি সুরক্ষিত পুস্তকে রহিয়াছে" (৫৬ঃ৭৯)। "ইহা আমার নিকট মূল কিতাবে রহিয়াছে" (৪৩ঃ৪; ৩ঃ৭)। আল-কুরআন সমন্ধে বলা হয়েছে, "ইহা একটি উপদেশ-গ্রন্থ যাহা সম্মানিত, উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন এবং পবিত্র পত্রসমূহে মহান ন্যায়নিষ্ঠ লেখকদের হস্তে লিপিবদ্ধ" (৮০; ১১-১৬)। ৫২ঃ৮২ আয়াতে বিস্তারিত পত্রে লিখিত কিতাবের শপথ করা হয়েছে এবং ৬৮ঃ১ -এ বলা হয়েছেঃ "কালাম ও যাহা দ্বারা লেখা হয় তাহার শপথ" এবং ৯৬ঃ৪-৫ এ বলা হয়েছে "কালাম দ্বারা তিনি মানবকে শিক্ষা দিয়েছেন যাহা সে জানিত না" তাঁকে আরও বলা হয়েছে, "তোমার রাব্ব- এর কিতাব হইতে যাহা তোমার প্রতি ওয়াহ্'য়িরূপে পাঠানো হইয়াছে তাহা পাঠ কর"। "আল্লাহর কথা কেহ পরিবর্তন করিতে পারে না " (১৮ঃ২৭)। ৪ঃ১৬৪; ৪০ঃ৭৮ - এ বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাঁহাকে কতক নবীর কথা বলিয়াছেন এবং কতক নবীর কথা বলেন নাই।
রাসূল এর উপর অবতীর্ণ ওহী থেকেই উম্মুল কিতাব (৪৩ঃ৪) এর মূল বিষয়বস্তু ধারণা করে নেয়া যায়। সেগুলো হল, আল্লাহর সত্তা, বিশ্ব সৃষ্টি - বিশেষত মানব সৃজন, ভাল ও মন্দ আত্না-সমূহের সৃষ্টি, শেষ বিচার, জান্নাত,জাহান্নাম, পূর্ববর্তী নবী গনের অভিজ্ঞতা, আল্লাহর ইবাদত ও সামাজিক জীবন সম্বন্ধীয় যাবতীয় আইন-কানুন এবং বিশেষ বিশেষ আইন (৪ঃ১০৩, ১২৭,১৩৮; ৩৩ঃ৬)। বার মাসের উল্লেখ প্রসঙ্গে (৯ঃ৩৬) এবং ২২ঃ৪ -এ শয়তান কতৃক মানবকে প্রলুব্ধ করার প্রয়াস প্রসঙ্গে বিশ্ব সৃজন-তত্বের আভাষ দেয়া হয়েছে। এমনকি, বিশ্বে যা কিছু সংঘটিত হয়েছে এবং সংঘটিত হবে তার সব কিছুই ঐ উম্মুল কিতাবে আছে (১০ঃ৬১; ২৭ঃ৭৫; ৩৪ঃ৩; ৬ঃ৩৮,৫৯; ১১ঃ৬; ২০ঃ৫১; ১৭ঃ৫৮)।
কুরআনের অনেকগুলি নামের মধ্যে বিশেষ চারটি নাম হল আল-কুরআন, আল-ফুরকান, আল-কিতাব ও আয-যিক্'র। ‘আল-কুরআন’ নামের অর্থ 'যাহা পঠিত হয়'। এটি বহু আয়াত ও সূরার সংকলন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, কুরআনের প্রথম আয়াতের প্রথম শব্দটি হল ‘ইকরা’-'পাঠকর'। ‘আল-ফুরকান’ নামের অর্থ পার্থক্যকারী, সত্য ও মিথ্যার, আলো ও অন্ধকারের এবং ন্যায় ও অন্যায়ের পার্থক্যকারী। ‘আল্-কিতাব’ অর্থ লিখিত গ্রন্থ যা যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। ‘আয-যিক্'র’ নামের অর্থ উপদেশ যা আল্লাহ্-তা‘আলা স্বীয় বান্দাগণকে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের নিমিত্তে দিয়েছেন।
“ | আমি স্বয়ং এ উপদেশগ্রন্থ অবতরণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক | ” |
প্রত্যেকটি সূরার একটি নাম রয়েছে। নামকরণ বিভিন্ন উপায়ে করা হয়েছে; তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সূরার অভ্যন্তরে ব্যবহৃত কোনো শব্দকেই নাম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এমন নামও পাওয়া যায় যা সূরার অভ্যন্তরে ব্যবহৃত হয় নি যেমন সূরা ফাতিহা। ফাতিহা শব্দটি এ সূরার কোথাও নেই। সূরাগুলোর একটি সুনির্দিষ্ট সজ্জা রয়েছে। সজ্জাকরণ তাদের অবতরণের ধারাবাহিকতা অনুসারে করা হয় নি। বরং দেখা যায় অনেকটা বড় থেকে ছোট সূরা অনুযায়ী সাজানো। অবশ্য একথাও পুরোপুরি সঠিক নয়। সজ্জার প্রকৃত কারণ কারও জানা নেই। অনেক ক্ষেত্রে বড় সূরাও ছোট সূরার পরে এসেছে। তবে একটি সূরা বা তার বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে ধারাবাহিকতার সাথেই অবতীর্ণ হয়েছিল বলে মুসলমানদের ধারণা। কুর’আনের সজ্জাটি মানুষের মুখস্থকরণের সুবিধার সৃষ্টি করেছে।
হিজ্ব বা মানজিল হচ্ছে কুরআনের প্রথম সূরা (সূরা ফাতিহা) ব্যতীত অন্য সূরাগুলো নিয়ে করা একটি শ্রেণি। হিজ্ব মুফাস্সিল একটি গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য বহন করা। এতে ৭টি মানজিলের মাধ্যমে সবগুলো সূরাকে একসাথে করা হয়েছে। মানজিলগুলো হচ্ছে:
- মানজিল ১ = ৩ টি সূরা, যথা, ২—৪
- মানজিল ২ = ৫ টি সূরা, যথা, ৫—৯
- মানজিল ৩ = ৭ টি সূরা, যথা, ১০—১৬
- মানজিল ৪ = ৯ টি সূরা, যথা, ১৭—২৫
- মানজিল ৫ = ১১ টি সূরা, যথা, ২৬—৩৬
- মানজিল ৬ = ১৩ টি সূরা, যথা, ৩৭—৪৯
- মানজিল ৭ = ৬৫ টি সূরা, যথা, ৫০—১১৪
পারা
কুরআনে মোট ৩০ টি পারা বা অধ্যায় রয়েছে। ১১৪টি পূর্নাঙ্গ সূরা রয়েছে। সূরাগুলো বিভিন্ন আকারের হলেও কুরআনের পারাগুলো প্রায় সমান আকারের। কুরআন মুখস্থকরণের ক্ষেত্রে সাধারণতম পারা অনুযায়ী শিক্ষা করানো হয়। যে সকল স্থানে সমগ্র কুরআন পাঠের আয়োজন করা হয় সেখানেও এই পারা অনুযায়ী করা হয়।০০১. সূরা ফাতিহা (7)
০০২. সূরা বাকারা (286)
০০৩. সূরা আল ইমরান (200)
০০৪. সূরা নিসা (176)
০০৫. সূরা আল মায়েদা (120)
০০৬. সূরা আল আনআম (165)
০০৭. সূরা আল আ’রাফ (206)
০০৮. সূরা আনফাল (75)
০০৯. সূরা তাওবা (129)
০১০. সূরা ইউনুস (109)
০১১. সূরা হুদ (123)
০১২. সূরা ইউসূফ (111)
০১৩. সূরা রাদ (43)
০১৪. সূরা ইব্রাহীম (52)
০১৫. সূরা হিজর (99)
০১৬. সূরা নাহল (128)
০১৭. সূরা বনী ইসরাঈল (111)
০১৮. সূরা কাহফ (110)
০১৯. সূরা মারইয়াম (98)
০২০. সূরা ত্বোয়া-হা (135)
০২১. সূরা আম্বিয়া (112)
০২২. সূরা হাজ্জ্ব (78)
০২৩. সূরা মুমিনূন (118)
০২৪. সূরা নূর (64)
০২৫. সূরা ফুরকান (77)
০২৬. সূরা শুয়ারা (227)
০২৭. সূরা নমল (93)
০২৮. সূরা কাসাস (88)
০২৯. সূরা আনকাবুত (69)
০৩০. সূরা রুম (60)
০৩১. সূরা লোকমান (34)
০৩২. সূরা সেজদাহ (30)
০৩৩. সূরা আহযাব (73)
০৩৪. সূরা সাবা (54)
০৩৫. সূরা ফাতির (45)
০৩৬. সূরা ইয়াসিন (83)
০৩৭. সূরা আস-সাফফাত (182)
০৩৮. সূরা সাদ (88)
০৩৯. সূরা যুমার (75)
০৪০. সূরা মুমিন (85)
০৪১. সূরা হা-মীম সেজদাহ (54)
০৪২. সূরা আশশুরা (53)
০৪৩. সূরা যুখরুফ (89)
০৪৪. সূরা দুখান (59)
০৪৫. সূরা জাসিয়া (37)
০৪৬. সূরা আহকাফ (35)
০৪৭. সূরা মুহাম্মদ (38)
০৪৮. সূরা ফাতহ (28)
০৪৯. সূরা হুজরাত (18)
০৫০. সূরা কাফ (45)
০৫১. সূরা যারিয়াত (60)
০৫২. সূরা তূর (49)
০৫৩. সূরা নাজম (62)
০৫৪. সূরা কামার (55)
০৫৫. সূরা রাহমান (78)
০৫৬. সূরা ওয়াকিআ (96)
০৫৭. সূরা হাদীদ (28)
০৫৮. সূরা মুজাদালা (22)
০৫৯. সূরা হাশর (24)
০৬০. সূরা মুমতাহিনা (13)
০৬১. সূরা সাফ্ফ (14)
০৬২. সূরা জুমআ (11)
০৬৩. সূরা মুনাফিকুন (11)
০৬৪. সূরা তাগাবুন (18)
০৬৫. সূরা তালাক (12)
০৬৬. সূরা তাহরীম (12)
০৬৭. সূরা মুলক (29)
০৬৮. সূরা কালাম (52)
০৬৯. সূরা হাক্কাহ (52)
০৭০. সূরা মাআরিজ (44)
০৭১. সূরা নূহ (28)
০৭২. সূরা জ্বিন (28)
০৭৩. সূরা মুযযাম্মিল (20)
০৭৪. সূরা মুদ্দাসসির (56)
০৭৫. সূরা কিয়ামত (40)
০৭৬. সূরা দাহর (31)
০৭৭. সূরা মুরসালাত (50)
০৭৮. সূরা নাবা (40)
০৭৯. সূরা নাযিয়াত (46)
০৮০. সূরা আবাসা (42)
০৮১. সূরা তাকভীর (29)
০৮২. সূরা ইনফিতর (19)
০৮৩. সূরা মুতাফফিফীন (36)
০৮৪. সূরা ইনশিকাক (25)
০৮৫. সূরা বুরূজ (22)
০৮৬. সূরা তারিক (17)
০৮৭. সূরা আ'লা (19)
০৮৮. সূরা গাশিয়াহ (26)
০৮৯. সূরা ফজর (30)
০৯০. সূরা বালাদ (20)
০৯১. সূরা শামস (15)
০৯২. সূরা লাইল (21)
০৯৩. সূরা দুহা (11)
০৯৪. সূরা ইনশিরাহ (8)
০৯৫. সূরা ত্বীন (8)
০৯৬. সূরা আলাক (19)
০৯৭. সূরা কদর (5)
০৯৮. সূরা বাইয়ানা (8)
০৯৯. সূরা যিলযাল (8)
১০০. সূরা আদিয়াত (12)
১০১. সূরা কারেয়া (8)
১০২. সূরা তাকাসূর (10)
১০৩. সূরা আসর (3)
১০৪. সূরা হুমাযাহ (9)
১০৫. সূরা ফীল (5)
১০৬. সূরা কোরাইশ (4)
১০৭. সূরা মাউন (7)
১০৮. সূরা কাওসার (3)
১০৯. সূরা কাফিরুন (6)
১১০. সূরা নাসর (3)
১১১. সূরা লাহাব (5)
১১২. সূরা এখলাস (4)
১১৩. সূরা ফালাক্ব (5)
১১৪. সূরা নাস (6)
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ