কুরবানী কি - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

02 August, 2020

কুরবানী কি

ইসলামের বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী, মহান আল্লাহ তা’আলা ইসলামের রাসুল হযরত ইব্রাহীম কে স্বপ্নযোগে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কুরবানি করার নির্দেশ দেনঃ “তুমি তোমার প্রিয় বস্তু আল্লাহর নামে কোরবানি কর”। ইব্রাহীম স্বপ্নে এ আদেশ পেয়ে ১০টি উট কোরবানি করলেন। পুনরায় তিনি একই স্বপ্ন দেখলেন। ইব্রাহীম আবার ১০০টি উট কোরবানি করেন। এরপরেও তিনি একই স্বপ্ন দেখে ভাবলেন, আমার কাছে তো এ মুহূর্তে প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.) ছাড়া আর কোনো প্রিয় বস্তু নেই। তখন তিনি পুত্রকে কোরবানির উদ্দেশ্যে আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। যখন ইব্রাহীম আরাফাত পর্বতের উপর তাঁর পুত্রকে কোরবানি দেয়ার জন্য গলদেশে ছুরি চালানোর চেষ্টা করেন, তখন তিনি বিস্মিত হয়ে দেখেন যে তাঁর পুত্রের পরিবর্তে একটি প্রাণী কোরবানি হয়েছে এবং তাঁর পুত্রের কোন ক্ষতি হয়নি। এই ঘটনাকে স্মরণ করে সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতি বছর এই দিবসটি ঈদ উল আধহা নামে উদযাপন করে।
ইসলামের রাসুল হযরত ইব্রাহীমের প্রীয় আল্লাহ না হয়ে তার পুত্র।
ইসলামে কুরবানীর ইতিহাস বেশ প্রাচীন।  আল কুরআনে হাবিল এবং কাবিলের উল্লেখ পাওয়া যায়। হাবিল প্রথম মানুষ যে আল্লাহর জন্য একটি পশু কুুরবানী করেন । ইবনে কাসির বর্ণনা করেছেন যে, হাবিল একটি ভেড়া এবং তার ভাই কাবিল তার ফসলের কিছু অংশ স্রষ্টার উদ্দেশ্যে নিবেদন করে। আল্লাহর নির্ধারিত পদ্ধতি ছিল যে আগুন আকাশ থেকে নেমে আসবে এবং গ্রহণযোগ্য কুরবানী গ্রহণ করবে। তদনুসারে, আগুন নেমে আসে এবং হাবিলের জবেহকৃত পশুটির কুরবানী গ্রহণ করে। অন্যদিকে কাবিলের ফসল কুরবানী প্রত্যাখ্যান করে। কাবিল এই ঘটনায় ঈর্ষান্বিত হয় ও সামাজিভাবে অপমানবোধ করে কুরবানী কবুল না হওয়ার বিষয়টি তার ভাই হাবিলকে হত্যা করে, যা মানব ইতিহাসের প্রথম হত্যাকান্ড হিসেবে পরিচিত। কাবিল তার কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হওয়ায় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেননি।
পশু জবাইকে আরবিতে বলা হয় দাবিহা বা কুরবান । শব্দটির মূল সম্ভবত ইহুদি শব্দ কোরবান। কিছু জায়গা যেমন বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ভারতে কুরবানী বলা হয়ে থাকে। ইসলামী প্রেক্ষাপটে পশু বলিদানকে দাবিহা বলা হয় যার অর্থ ধর্মানুষ্ঠানের মাধ্যমে পশু জবাই। শুধু মাত্র ঈদ-উল-উল-আযহায় পশু উৎসর্গ করা হয়। উৎসর্গীকৃত পশুটি একটি ভেড়া, একটি ছাগল, একটি উট অথবা একটি গাভী হতে পারে। তবে পশুটিকে অবশ্যই সুস্থ এবং জীবিত হতে হবে। ... অতএব আল্লাহ নামাজ এবং কুরবানীর আদেশ দিলেন। (সূরা আল-কাউসার) কুরআন ১৯৮.২ ।
উটের কোরবানি কী'ভাবে দেয়। উট খুব উঁচু প্রাণী। আমাদের সমাজের শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মতই। তবে বড়ই অসাম্প্রদায়িক। সার-সার কোরবানি দেওয়া উটের মাঝে আরেকটা নতুন উট দিব্যি চলে এসে দাঁড়িয়ে যায়। কোরবানির কসাই তার গলায় হাত বুলোতে থাকে, মরা উটেদের পাশ কাটিয়ে উট চলে যায় আদর খেতে খেতে। যারা এ দৃশ্য দেখেননি, তারা যাদবপুর বা প্রেসিডেন্সী চত্ত্বরে গেলেই খানিকটা বুঝে যাবেন। তো যা বলছিলাম, উট চলে যায়। খানিকটা জায়গা রেখে কসাইয়ের হেল্পাররা সামনের একটি পা ভাঁজ করিয়ে বেঁধে দেয় আলতো করে। উট খুব একটা উচ্চবাচ্য করে না। অথচ কষে লাথালেই হেল্পারের মুন্ডু মধুপুরে উড়ে যাবে সেই সময়। কিন্তু উট অসাম্প্রদায়িক, লিবারাল। সামান্য এইটুকু অত্যাচার ভেবে পা বাঁধা সহ্য করে নেয়। ঘুঙুর বেজে ওঠে চার পায়ে। লিবারাল ঘুঙুরের শব্দ, যেমন শোনা যায় - সমাজতন্ত্র দিচ্ছে ডাক, শোষণযন্ত্র নিপাত যাক। ধীরে ধীরে পেছনের দুটি পা খুঁটিতে বাঁধা হয়ে যায়। কোন কোন উট ডেকে ওঠে বিশ্রী ভাবে দু'একবার। কিন্তু পাছে কেউ সাম্প্রদায়িক বলে দেগে দেয়, তাই চুপ করে থাকে। কসাইয়ের হাতের ছোরা চকচক করে ওঠে, হাত বুলিয়ে জুগুলার ভেন খুঁজে নেয় সে। উট তখনও এদিক ওদিক তাকায়, আওয়াজ করেনা। জাঁ পল সার্ত্র, সাইমন বলিভার, চে গ্যেভেরা পড়তে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই 'বিসমিল্লাহ' বলে ছুরি নেমে আসে গলার ওপর। ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে, বৈজ্ঞানিক মৃত্যু আসার আগে রক্তে পিছলে পড়ে তার ক্ষুর, অদ্ভুত চোখে তাকায় কসাইয়ের দিকে, দু'এক কদম পিছিয়েও যায় এক-একটা। কিন্তু রক্ত ফুরোতে থাকে দ্রুত। মস্তিষ্কের স্মৃতি মিলিয়ে যায়, মুছে যায় সাইমন বলিভার, সার্ত্র কিংবা চে। অর্থনীতি, বিকাশ, মানবাধিকার, মানচিত্র মানি না -- সব ছাপিয়ে একবার জোড়া পায়ের লাথি মারতে ইচ্ছে করে উটটার। কিন্তু পেশী নির্জীব হয়ে এলিয়ে পড়ে সে ধীরে ধীরে। একটি অসাম্প্রদায়িক জীবন শেষ হয়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, পরের উটটাও একই জায়গায় এসে দাঁড়ায়, যেমনভাবে বাঙ্গালী নোয়াখালি থেকে এসে দাঁড়িয়েছিল দেগঙ্গা আর বসিরহাটে...

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ