ভগবান শ্রীকৃষ্ণ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

11 August, 2020

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ

শ্রী কৃষ্ণের জন্ম তারিখ কত
১১-৮-২০২০
আজ শ্রাবন মাসের শুক্লপক্ষ, চতুর্থ তিথি, পূর্বাষাঢ়া নক্ষত্র ২০৭৭ বিক্রম সম্বত। আপ্ত পুরুষ ভগবান যোগীরাজ শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মদিন।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল দ্বাপর যুগে ৩২২৮ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ১৮ জুলাই ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে বুধবার রাত্রির তৃতীয় প্রহরে
অর্থাৎঃ আজ থেকে ৫২৪৮ বছর পূর্বে শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব হয়েছিল। । সেই মান্যতা অনুসারে প্রতি বছর এই তিথিতে অর্থাৎঃ সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন (জন্মাষ্টমী) পালন করা হয়। ভগবান শ্রী কৃষ্ণ জন্ম তিথিকে জন্মাষ্টমী বলা হয়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পিতার নাম বসুদেব ও মাতার নাম দেবকী। তিনি পিতামাতার অষ্টম পুত্র। রাজা উগ্রসেনের পুত্র কংসের কারাগারে পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণ আবির্ভূত হন। জন্মাষ্টমীকে কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী, শ্রীকৃষ্ণজয়ন্তী ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। এটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্টার অনুযায়ী, ফি বছর অগাস্টের মাঝখান থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝে কোনও এক সময়ে পড়ে।
আজ থেকে ৫ হাজার বছর পূর্বের ঘটনা। মগধের অধিপতি জরাসন্ধ ছিলেন এক রাজ্যলোভী রাজা। তিনি ১৮ বার মথুরা আক্রমণ করেও ব্যর্থ হন। আর সেই ব্যর্থ রাজা গ্লানিতে জরাসন্ধ অস্থির উন্মাদ হয়ে শেষে আশ্রয় নেন এক কুটকৌশলের, মথুবার রাজা উগ্রসেনের পুত্র কংসকে নিজ দলে ভীড়িয়ে তার নিজ দুই মেয়েকে অত্যাচারী কংসের সাথে বিবাহ দিলেন হীনস্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার স্বরুপ। কংসের সিংহাসন লাভের দুর্বিনীতি আকাক্সক্ষার ফলে জরাসন্ধের সাথে এই আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপন হলে জরাসন্ধ ও কংসে দুজনেই অনেকাংশে বলশালী হয়ে উঠেন। তাদের এই উত্থানে মথুরাবাসী উৎকন্ঠিত হয়ে পড়েন। কারণ মথুরাবাসী ছিল অত্যন্ত দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ। বিশেষ করে যাদবরা তাদের চিরশত্রু জরাসন্ধের সঙ্গে কংসের আত্মীয়তার বন্ধনকে মনে মনে ধিক্কার জানায়। মনেপ্রাণে তারা হয়ে ওঠে আরো বিদ্রোহী। এদিকে ক্ষমতালোভী কংস পিতা উগ্রসেনকে বন্দী করে মথুরার সিংহাসন দখল করে। তখন আত্মীয়-স্বজন ও বিশেষ করে যাদবকূল বিদ্রোহী হয়ে উঠলে তাদের সাথে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিদ্রোহ প্রশমনে কৌশল হিসেবে কংস যাদবকূলের শুর সেনের পুত্র তার বিশ্বস্ত বন্ধু বাসুদেবের সাথে তার বোন দেবকীর বিবাহ দেন। 
কংসের আশা দুরাশায় পরিণত হল।
সদ্য পরিণীতা বোন দেবকীকে বাসুদেবসহ রথে করে নিয়ে যাবার সময় কংস এক লাঞ্ছিত ঋষির কাছে শুনতে পান তাঁর বোনের অষ্টম সন্তানই হবে তাঁর মৃত্যুর কারণ।
মৃত্যুর আশংকায় উত্তেজিত কংস দেবকীকে হত্যা করতে উদ্যত হলে বসুদের কংসকে এই বলে আশ্বস্ত করেন যে, দেবকীর উদরে যে সন্তান জন্ম নেবে তাকে কংসের হাতে তুলে দেবেন। কংস বোন দেবকীকে তখন হত্যা থেকে বিরত থাকলেও বোন ও ভগ্নীপতিকে কারাগারে নিক্ষেপ করতে দ্বিধা করেন নি। এই অবস্থায় বাসুদেব ও দেবকীর বিবাহ বাসর হল কংসের কারাগারে। দশ মাস দশদিন পর দেবকী এক পুত্রসন্তান জন্ম দেন। সঙ্গে সঙ্গে কংসের হাতে তুলে দেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বসুদের সদ্যজাত সন্তান। তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন কংস। এভাবে একে একে কংসের নিষ্ঠুর নির্মমতার শিকার হন বসুদেব-দেবকী দম্পতির আরও ছয়টি সন্তান। কৃষ্ণ ছাড়া বসুদেবের আরও দুই সন্তানের প্রাণরক্ষা হয়েছিল। প্রথমজন বলরাম (যিনি বসুদেবের প্রথমা স্ত্রী রোহিণীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন) এবং সুভদ্রা (বসুদেব ও রোহিণীর কন্যা, যিনি বলরাম ও কৃষ্ণের অনেক পরে জন্মগ্রহণ করেন)।গোকুল হল ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মথুরা জেলার অন্তর্গত একটি পুরসভা। এই শহরটি মথুরা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। বসুদেব- যদুবংশীয় শূরসেনের পুত্র, বসুদেবের ভগিনী কুন্তী হলেন পাণ্ডুর স্ত্রী, যিনি মহাভারতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। পিতার নামানুসারেই কৃষ্ণের এক নাম হল বাসুদেব। হরিবংশ পুরাণ অনুসারে বসুদেব ও নন্দ (কৃষ্ণের পালক পিতা) ছিলেন দুই ভাই।
রাজা রবি বর্মার আঁকা যশোদা এবং কৃষ্ণের ছবি

একে একে দেবকীর সাতটি সন্তানকে হত্যার পর মৃত্যুর চিন্তায় উৎকন্ঠিত কংস হয়ে ওঠে দিশেহারা। এরপর দেবকী অষ্টম বারের মত সন্তান সম্ভবা হলে কারাগারে বসানো কয় কঠোর নিরাপত্তা। চারদিকে আলোয় উদ্ভাসিত করে অষ্টমী তিথিতে অরাজকতার দিন অবসান দিন করতে গভীর অন্ধকার রাতে জন্মগ্রহণ করেন পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। হরিবংশ ২.২২.২২ এ দেখা যায় কংসের কোন বিশ্বস্ত আমাত্য এবং চর ছিলনা,তার অত্যাচারে সবাই বিরক্ত ছিল,তিনি বলছেন "অনামত্যস্য শুন্যস্য চরঅন্ধস্য মামৈব তু", আমার কোন বিশ্বস্ত আমাত্য নেই,চর নেই,তাই চোখ থেকেও আমি অন্ধের ন্যায়।হরিবংশ ২.২২.৪৬ এ আমরা দেখতে পাই কংস কৃষ্ণের পিতা বসুদেবকেও সন্দেহ করতেন কেননা বসুদেব ছিলেন অত্যন্ত বুদ্ধিমান,বলাবাহুল্য শ্রীকৃষ্ণও পিতা হতে এই গুণপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।এই কারণেই কংস ভীত হয়ে পড়েছিল দেবকীর সন্তান নিয়ে,আর বিশ্বস্ত চরের অভাব,আমাত্যের অভাব এইসব দূর্বলতার সুযোগেই শিশু কৃষ্ণকে কারাগার হতে সরিয়ে ফেলা সম্ভব হয়েছিল বসুদেবের পক্ষে।অতএব কংস সিদ্ধান্ত নেন তাদেরকে বন্দী করার এবং কারাগারে কোন সন্তান জন্ম নিলে হত্যা করার।
এদিকে আমরা দেখতে পাই শ্রীকৃষ্ণ ও বলরাম অস্ত্রবিদ্যায় অতি পারদর্শী হয়ে উঠেন,তাঁরা নিয়মিত বৃন্দাবনে প্রভাবশালী চরিত্র হয়ে উঠছিলে,কংস নিজের প্রভাব কমে যাচ্ছে এই ভয়ে ভীত হয়ে পড়েন এবং নন্দ,তার দুই পুত্রসহ ব্রজবাসীকে মথুরায় আসার নিমন্ত্রণ দেন বার্ষিক করপ্রদান, যজ্ঞ ও ধনুক উৎসবকে কেন্দ্র করে(হরিবংশ ২.২২.৮৬,৯১)।কংসের পরিকল্পনা ছিল শ্রীকৃষ্ণ ও বলরাম বালক হলেও কুস্তি খেলায় পারদর্শী ছিল এবং তাদেরকে কুস্তি খেলার আহবান জানালে তারা অবশ্যই অংশ নেবেন।এই সুযোগে বলবান দুইজন কুস্তি খেলোয়াড়ের মাধ্যমে এদের সাথে কুস্তি খেলাবেন,তাদের শক্তি পরীক্ষা করে দেখবেন এবং সুযোগ পেলে ছলনায় বধও করবেন।কংসের দূত অক্রুরের আমন্ত্রণে-
একাদশ সমাস্তত্র গুঢ়ার্চিঃ সবলৌৎবস
১১ বছর বয়সে শ্রীকৃষ্ণ তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বলরামের সাথে করে বৃন্দাবন ত্যাগ করলেন।
(ভাগবতাম ৩.২.২৬)
আমরা বিষ্ণুপর্বের ২৭ নং অধ্যায়ে দেখতে পাই কিভাবে এক ধোপার কাছ থেকে ছদ্মবেশে তাঁরা দামী রঙীন কাপড় চাইতে গেলে ধোপা তাদেরকে সন্দেহ করে এবং তখন বলপূর্বক তাঁরা সেই ধোপা হতে কাপড় সংগ্রহ করে।এরপর এক কুব্জা মহিলা হতে তাঁরা সুগন্ধি প্রসাধনী সংগ্রহ করেন এবং এক ফুল বিক্রেতা হতে মালা সংগ্রহ করে অভিজাত ব্যাক্তি সেজে কংসের প্রাসাদে প্রবেশ করেন ছদ্মবেশে।কিন্তু সেখানে ঘটে যায় এক অঘটন।
সেখানে রাখা ছিল ধনুক উৎসবের প্রতিযোগিতার জন্য এক বিখ্যাত অতি শক্তিশালী ধনুক।প্রহরী পোশাক আশাক দেখে শ্রীকৃষ্ণ ও বলরামকে দেখে অভিজাত রাজপুত্র মনে করেছিল বিধায় তাদেরকে ধনুকটি ধরতে দেয়।২.২৭.৪৭ এ আমরা দেখতে পাই শ্রীকৃষ্ণ ও বলরাম চেয়েছিলেন ধনুকে তীর পরিয়ে দেখতে,কেবল পরীক্ষা করতে ধনুকটি কেমন।কিন্তু তাঁদের বাহুবল এতই অসাধারণ ছিল বাঁকাতে গিয়ে ধনুকটি ভেঙে যায়! প্রহরী হতবিহবল হয়ে পড়ে এবং তৎক্ষণাৎ কৃষ্ণ ও বলরাম সেখান থেকে পালিয়ে যান।এদিকে ভীত সন্ত্রস্ত প্রহরী দ্রুত রাজা কংসকে গিয়ে ঘটনাটি খুলে বলে।
এই অদ্ভুত খবর পেয়ে কংস ভাবলেন-
কথম বালো বিগতভিরবমত্য মহাবলম্
কারা এই মহাবলশালী বালকদ্বয়!
যস্যর্থে দারুণম কর্ম কৃতম্ লোকবিগর্হিতম্
এরাই কি সেই বালকদ্বয় যাদের হত্যা করার জন্য আমি এতদিন নানা গর্হিত কাজ করেছি!
(হরিবংশ ২.২৮.২-৩)
বলা বাহুল্য যে কৃষ্ণ ও বলরামকে হত্যার অনেক চেষ্টা ই করেছেন এত বছরে কংস।তাই আজকে তার এই উপলব্ধি হল।
এই দুশ্চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে কংস গেলেন পরেরদিনের উৎসবের ষড়যন্ত্রমূলক কুস্তিখেলার আসর পরিদর্শন করতে গেলেন,দেখে আসলেন সব ঠিকঠাক আছে কিনা(২.২৮.৬)।এরপর কংস তার আসল পাশার চাল খেললেন,ডাকলেন দুই মহাবলী চানূড় ও মুষ্টিকাকে,বললেন-
তভ্যম যুধি নিরস্তভ্যম্ গোপাভ্যাম্ রঙ্গসন্নিধৌ।
অয়ত্যাম্ চ তদাত্বে চ শ্রেয়ো মম ভবিষ্যতি।।
(হরিবংশ,২.২৮.২৫)
অনুবাদ- এই, গোপবালক দুইটিকে কালকের ক্রীড়ায় বধ কর তোমরা,এতে আমার বর্তমান ও ভবিষ্যত উভয়ের ই উপকার হবে।
তবে ধুরন্ধর রাজা কংসের এটি ছিল প্ল্যান বি বা ব্যাকাপ প্ল্যান।তার আসল পরিকল্পনা ছিল অন্য,এমনভাবে দুই যাদব ভ্রাতাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করলেন যেন সবাই মনে করে এটা দূর্ঘটনা।
তিনি কুবলয়াপীঢ় নামে একটি পাগলা হাতির ব্যাবস্থা করলেন।হস্তী দুটির মাহুতকে বললেন যদি কুস্তিক্রীড়ায় মৃত্যু না হয় তবে হাতিদুটোকে ওদের উদ্দেশ্য করে ছেড়ে দেবে,পিষ্ট করে মেরে ফেলবে ওদের।
বললেন-
"যাদবরা আমার পিতার ভক্ত যাকে আমি বন্দী করে রাজ্য দখল করেছি।এই দুই যাদবশ্রেষ্ঠকে হত্যা করতে পারলে যাদবদের আমার বিরুদ্ধে যাবার আর ক্ষমতা থাকবেনা,আমি নিশ্চিন্তে থাকব।"
(২.২৮.৩০,৩৪,৩৬,৩৭)
উৎসবের প্রথম দিন অতিক্রান্ত হল,দ্বিতীয় দিনের উৎসব শুরু হল,সাজ সাজ রব।কুবলয়াপীঢ় হাতিটিকে নিয়ে তার মাহুত প্রবেশ করল অনুষ্ঠানস্থলে,যেই কৃষ্ণ ও বলরাম প্রবেশ করলেন সেখানে আগের ইংগিত অনুযায়ী পাগলা হাতিটিকে লেলিয়ে দেয়া হল তাদের হত্যা করতে।
কিন্তু যাদবরা ছিল পশুপালনে দক্ষ,তারা ভালো করে জানেন কিভাবে পশুকে বশ বা পরাজিত করতে হয়।কৌশলে তারা হাতিটিকে ভূমিতে ফেলে দিলেন এবং হাতিটির নিজের দাঁতদুটো দিয়েই হাঁতিটিকে আহত করে দিলেন,পরিণামে হাঁতিটি মারা গেল।উপস্থিত সকলে এই আকস্মিক দূর্ঘটনায় বিহ্বল হলেও হাতিটি পরাজিত হওয়া মাত্রই দুই বালকের বীরত্বে চারদিকে প্রচুর তালি বাজতে লাগল,সবাই প্রশংসাবৃষ্টিতে ভাসিয়ে দিল দুই ভাইকে।কংসের পরিকল্পনা অর্ধেক সফল হল,সবাই ভাবল এটি দূর্ঘটনা।
কৃষ্ণম ভৃশ্যাস্তমুখঃ সরোশম্ সমুদৈক্ষত..
কংসের মুখ বিবর্ণ হয়ে গেল দুইভাইয়ের এই বীরত্ব দেখে,রাগত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন তিনি কৃষ্ণের দিকে। অবশেষে শ্রীকৃষ্ণের কাছে মৃত্যুবরন করে কংশ।
পরে  ৩১৪৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ থামানোর লক্ষ্যে হস্তিনাপুরের উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা করেন। ওই বছরেরই ১৩ নভেম্বর কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শুরু হয়।
খ্রিষ্টপূর্ব ৩১০২ সালর ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১২৬ মতান্ত্বরে ১২৫ বছর বয়সে মৃত্যু বরন করেন।
জন্মাষ্টমী
জন্মাষ্টমী [Knott 2000, পৃ. 61] মূলত পালন করা হয় মথুরা এবং বৃন্দাবনে। তাছাড়া মনিপুর, আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, এবং ভারতবর্ষের অন্যান্য রাজ্যে যেখানে প্রচুর বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মানুষ থাকেন সেখানে পালন করা হয়।কৃষ্ণ শব্দের অর্থ কালো বা ঘন নীলকৃষ্ণ নামের অর্থ-সংক্রান্ত একাধিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। মহাভারতের উদ্যোগপর্বে (৫।৭১।৪)বলা হয়েছে কৃষ্ণ শব্দটি কৃষ এবং  এই দুটি মূল থেকে উৎপন্ন। কৃষ শব্দের অর্থ টেনে আনা বা কর্ষণ করা; সেই সূত্রে শব্দটি ভূ (অর্থাৎ, অস্তিত্ব বা পৃথিবী) শব্দটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।  শব্দটিকে নিবৃত্তি শব্দের প্রতিভূ ধরা হয়। 
কৃষ্ণ বিদর্ভ রাজ্যের রাজকন্যা রুক্মিণীকে তার অনুরোধে শিশুপালের সাথে অনুষ্ঠেয় বিবাহ মণ্ডপ থেকে হরণ করে নিয়ে এসে বিবাহ করেন। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর রচিত কৃষ্ণচরিত্র প্রবন্ধে শ্রীকৃষ্ণের বহুবিবাহের ভিত্তিহীন তথ্য সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ দেওয়া আছে ৷ কৃষ্ণচরিত্রে দেখা যায় যে, কৃষ্ণের ১৬০০০ অধিক পত্নী শুধু পুরাণের একটি অংশে সীমাবদ্ধ ৷ শ্রীকৃষ্ণের জীবনের অন্য কোনো কার্যক্ষেত্রে এসবের উল্লেখ নেই ৷ তিনি এটাকে নেহাতই উপকথা বা গল্প বলে উল্লেখ করেন ৷ শ্রীকৃষ্ণের জীবনচরিতে রুক্মিনী ভিন্ন অন্য কোনো পত্নীর কার্যক্রম দেখা যায় না৷
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়ে তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন যখন উপলব্ধি করলেন যে যাঁরা তার প্রতিপক্ষ তারা তার আত্মীয়বর্গ এবং অত্যন্ত প্রিয়জন তখন তিনি যুদ্ধের বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়লেন। তিনি সমস্ত আশা ত্যাগ করে তার ধনুক গাণ্ডীব নামিয়ে রাখলেন। তখন অর্জুনের মোহ দূর করার জন্য কৃষ্ণ অর্জুনকে সেই ধর্মযুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে উপদেশ দেন যা গীতা নামে খ্যাত।
কৃষ্ণ ছিলেন প্রখর কূটবুদ্ধিসম্পন্ন পুরুষ এবং মহাভারতের যুদ্ধ ও তার পরিণতিতে তার প্রগাঢ় প্রভাব ছিল। তিনি পাণ্ডব এবং কৌরবদের মধ্যে শান্তি স্থাপন করতে যথাসম্ভব উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু দূর্যোধনের কূপ্রচেষ্টায় তার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে তখন তিনি ক্রূর কূটনীতিকের ভূমিকা গ্রহণ করেন। হিন্দু পঞ্জিকা মতে, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার মতে, প্রতিবছর মধ্য আগস্ট থেকে মধ্য সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো একসময়ে এ উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

তথ্যসূত্রঃ-

  1.  See horoscope number 1 in Dr. B.V. Raman (১৯৯১)। Notable Horoscopes। Delhi, India: Motilal Banarsidass। আইএসবিএন 8120809017
  2.  Arun K. Bansal's research published in Outlook India, September 13, 2004. "Krishna (b. July 21, 3228 BC)"। ২৬ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৩
  3.  N.S. Rajaram takes these dates at face value when he opines that "We have therefore overwhelming evidence showing that Krishna was a historical figure who must have lived within a century on either side of that date, i.e., in the 3200-3000 BC period". (Prof. N. S. Rajaram (সেপ্টেম্বর ৪, ১৯৯৯)। "Search for the Historical Krishna"। www.swordoftruth.com। সেপ্টেম্বর ১৯, ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৬-১৫
  • A. L. Dallapiccola (1982), London Krishna the Divine Lover: Myth and Legend Through Indian Art
  • History of Indian Theatre By M. L. Varadpande. Chapter Theatre of Krishna, pp. 231–94. Published 1991, Abhinav Publications, আইএসবিএন ৮১-৭০১৭-২৭৮-০.

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

ব্রহ্মচর্য ও য়জ্ঞোপবীত

একাদশ অধ্যায় মেখলা প্রাচীনকালে গুরুকুলগুলোতে বেদের বিদ্বান বেদসংজ্ঞক আচার্য য়জ্ঞোপবীত সংস্কার করাতেন আর তারপর তারা বেদারম্ভসংস্কারের সময়...

Post Top Ad

ধন্যবাদ