অন্য সব ধর্মের জঙ্গিবাদের তুলনায় ইছলামী জঙ্গিবাদ এতো প্রবল, পরাক্রমশালী ও সর্বগ্রাসী কেন? কেন এখন জঙ্গি শব্দটির শুনলে অবধারিতভাবে মুছলিম জঙ্গির কথাই মাথায় আসে শুধু? মুছলিম জঙ্গিরা এতো সংখ্যাবহুল কেন? সাধারণ মুছলিমদেরকে কোন পদ্ধতিতে এবং নবীর জীবনের কোন কোন বীভৎস ও অমানবিক ঘটনার উদাহরণ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করা হয় জঙ্গিবাদের পথে আসতে, এবং জঙ্গি হওয়া প্রতিটি মুছলিমের একটি ঈমানী দায়িত্ব কেন, এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া যাবে এই ইবুক-এ। বর্তমান ইবুকের অনুবাদক, সম্পাদক ও নির্মাতা নরসুন্দর মানুষ লিখছেন:
"প্রায়শই একটি চিন্তা মাথায় আসে আমাদের: জঙ্গি মনস্তত্ত্বের মূল উৎস কোথায়? রাজনীতি, তেলসম্পদ, ক্ষমতা; নাকি ধর্মেই? ইসলাম কি শান্তির ধর্ম? ইসলাম কি যুদ্ধের ধর্ম? ঘুরপাক খান অনেকেই! সত্যিই কি গোড়ায় গলদ না থাকলে শুধুমাত্র রাজনীতি, তেলসম্পদ আর ক্ষমতার মারপ্যাঁচ দিয়ে একজন যুবককে জঙ্গি তৈরি করা সম্ভব?
আমরা যারা নাস্তিকতার চর্চা করি, তাদের বক্তব্য মানতে চান না কোনো মডারেট মুসলিম; কিন্তু একই বক্তব্য যদি একজন ইসলামিক বিশেষজ্ঞ দেন; এমন একজন, যিনি আধুনিক শিক্ষায় ডক্টরেট ডিগ্রী পর্যন্ত অর্জন করেছেন; তখন তথাকথিত মডারেট মুসলিমদের ভাষ্য কী হতে পারে? একজন মানবতাবাদী মানুষ (সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী অথবা অবিশ্বাসী) কীভাবে নিতে পারেন ধর্মের অমানবিক বিষয়গুলোকে; তা দেখার ইচ্ছাতেই এই ইবুক-টির জন্ম।
খ্যাতনামা ইছলামবিদ শাইখ আনোয়ার আল আওলাকি’র ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে দেয়া একটি লেকচারের অডিও প্রতিলিপিই হচ্ছে এই ইবুক-টি। আমরা তার লেকচারের বিন্দুবিসর্গ পরিবর্তন করিনি; ঠিক যেভাবে তিনি শুরু এবং শেষ করেছেন, আমরাও ঠিক তেমনটাই রেখেছি; কেবল বিশেষ অংশগুলো হাইলাইট করে দিয়েছি।"
এই লেকচারে উদ্ধৃত ইছলামী ইতিহাসের ঘটনাগুলো ইছলামের আলোকে বিশ্লেষণ করে বক্তা এটাই প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, শুধু জঙ্গিরাই সঠিক ইছলাম মেনে চলে এবং কোরান, হাদিস ও নবীর আদর্শকে সঠিকভাবে মেনে চলতে চাইলে জঙ্গি হওয়া ছাড়া একজন মুছলিমের অন্য কোনও পথ নেই ও থাকতে পারে না।
প্রত্যেক মুছলিমের জন্য ফরজ করা হয়েছে জিহাদ নামের ইছলামী বর্বরতা। অনেক ভণ্ড মুছলিম জিহাদকে কোমল ও সুমিষ্ট মোড়কে উপস্থাপন করতে চাইলেও বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। সেই মুছলিমদের প্রতারণার জাঙ্গিয়া-নামানো জবাব দেয়া হয়েছে জঙ্গিনামা নামের অভিনব এই ইবুকে।
➜ জিহাদ দ্বারা কিভাবে ফিৎনা ফ্যাসাদ নির্মূল করা সম্ভব অথচ জিহাদ করতে গেলে তো ব্যাপক রক্তপাত হয়, অসংখ্য মানুষের প্রাণনাশ ঘটে?
➜ মুসলমানদের উপর জিহাদের হুকুম কী? অনেকেই তো জিহাদ পছন্দ করে না, বা জিহাদ করতে চায় না।
➜ কোন কোন লোকদের সাথে আমাদের জিহাদ করতে হবে?
➜ কাফির মুশরিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের জিহাদ আমাদেরকে কতদিন পর্যন্ত চালিয়ে যাতে হবে?
➜ আমরা তো দেখি যে, কাফির-মুশরিকরাই ধন-দৌলতের প্রাচুর্যের মধ্যে আরামে আছে। আর আমাদেরকে আল্লাহ্ তা'আলা যদি সত্যিই ভালোবাসেন, তাহলে কাফির-মুশরিকদের মতো আমাদের এতো ধন-দৌলত নেই কেন?
➜ আমাদেরকে সর্বদা এ ধরনের প্রস্তুত হয়ে থাকতে হবে কেন? আর কেনই বা সর্বদা সাথে অস্ত্র রাখতে হবে?
➜ যদি নিজেদের বাপ, ভাইদের মধ্য থেকে কেউ কাফের হয় বা ঈমানের তুলনায় কুফরকে বেশি পছন্দ করে, তাহলে তাদেরকেও কি অভিভাবক রূপে গ্রহণ করা যাবে না?
➜ জিহাদ ছাড়ার কারণে আমাদের উপর যেই শাস্তি আসবে, তার ধরনটা কী রকম হবে? তা কি শুধু আখিরাতেই আসবে, নাকি দুনিয়াতেও আসবে?
➜ জিহাদ না করলে আমরা কি জান্নাতেও যেতে পারবো না?
➜ জিহাদের কথা বললে তো অনেকেই অব্যাহতি চায়, বিভিন্ন ওজর দেখায়, যারা এ ধরনের কার্যকলাপে লিপ্ত, তাদের ঈমান কোন পর্যায়ের?
এমন ১০০টি প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়েছে শুধু কোরানের আয়াত উদ্ধৃত করে। এ বিষয়ে নিচের কথাগুলো বলেছেন বইটির সংকলক, অনুবাদক, প্রচ্ছদশিল্পী ও নির্মাণকারী নরসুন্দর মানুষ।
এই ইবুক সিরিজটির প্রথম খণ্ড পাঠের পর যেসব মুসলিমদের রেফারেন্স-রেফারেন্স (তথ্যসূত্র-তথ্যসূত্র) বলে চিৎকার ছিলো, তাদের মাথায় ঠাণ্ডা পানি ঢালতেই প্রথম খণ্ডের তাফসীর (ব্যাখ্যা) হিসেবে দ্বিতীয় খণ্ডের জন্ম দেয়া হয়!
কিন্তু অতি সম্প্রতি পৃথিবীতে কিছু নতুন জাতের মুসলিম জন্মেছে, যাদের বলা হয় 'কোরান অনলি' (শুধু কোরান মানি) মুসলিম। এই উদ্ভট ধরনের মুসলিমদের প্রশ্নের জবাব দিতে; এই খণ্ডে সরাসরি কোরানকেই তাদের মুখোমুখি বসিয়ে দেওয়া হলো; যেহেতু এটি 'কোরান' ও 'শুধু কোরান মানি' মুসলিমের মধ্যে একটি কথোপকথনমূলক ইবুক, তাই পাঠক কোরানের ভাষাতেই পেয়ে যাবেন ইসলামে জিহাদের প্রয়োজনীয়তা এবং ইসলাম ধর্মের আসল চরিত্রের দিক-নির্দেশনা!
চলবে.....
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ