যজুর্বেদ ৩১/ ১ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

15 September, 2020

যজুর্বেদ ৩১/ ১

যজুর্বেদ ৩১/ ১
ঋষিঃ-নারায়ণ। দেবতা-পুরুষো।ছন্দঃ-নিচৃদনুষ্টুপ। স্বরঃ-গান্ধারঃ
সহস্রশীর্ষা পুরুষঃ সহস্রাক্ষঃ সহস্রপাৎ।
 স ভূমিং সর্বত স্পৃত্বাহত্যতিষ্ঠদ্দশাঙ্গুলম্।।
-যজুর্বেদ অধ্যায় ৩১ মন্ত্র ১-
বঙ্গানুবাদঃ- যাঁহার মস্তক অসংখ্য, নেত্র অসংখ্য, পদ অসংখ্য, সর্ব্বত্র পরিপূর্ণ তিনিই পরমাত্মা। তিনিই বিশ্বের সর্বত্র ব্যাপক হইয়া পঞ্চ স্থুলভূত ও পঞ্চ সূক্ষ্মভূতে গঠিত জগৎকে অতিক্রম করিয়া অবস্থান করিতেছেন।
स॒हस्र॑शीर्षा॒ पुरु॑षः सहस्रा॒क्षः स॒हस्र॑पात्।
स भूमि॑ꣳ स॒र्वत॑ स्पृ॒त्वाऽत्य॑तिष्ठद्दशाङ्गु॒लम् ॥यजुर्वेद अध्याय 31 मन्त्र:1
पदार्थान्वयभाषाः -हे मनुष्यो! जो (सहस्रशीर्षा) सब प्राणियों के हजारों शिर (सहस्राक्षः) हजारों नेत्र और (सहस्रपात्) असङ्ख्य पाद जिसके बीच में हैं, ऐसा (पुरुषः) सर्वत्र परिपूर्ण व्यापक जगदीश्वर है (सः) वह (सर्वतः) सब देशों से (भूमिम्) भूगोल में (स्पृत्वा) सब ओर से व्याप्त हो के (दशाङ्गुलम्) पाँच स्थूलभूत, पाँच सूक्ष्मभूत ये दश जिसके अवयव हैं, उस सब जगत् को (अति, अतिष्ठत्) उल्लङ्घकर स्थित होता अर्थात् सब से पृथक् भी स्थिर होता है ॥

भावार्थभाषाः -हे मनुष्यो ! जिस पूर्ण परमात्मा में हम मनुष्य आदि के असंख्य शिर आँखें और पग आदि अवयव हैं, जो भूमि आदि से उपलक्षित हुए पाँच स्थूल और पाँच सूक्ष्म भूतों से युक्त जगत् को अपनी सत्ता से पूर्ण कर जहाँ जगत् नहीं वहाँ भी पूर्ण हो रहा है, उस सब जगत् के बनानेवाले परिपूर्ण सच्चिदानन्दस्वरूप नित्य-शुद्ध-बुद्ध-मुक्तस्वभाव परमेश्वर को छोड़ के अन्य की उपासना तुम कभी न करो, किन्तु उस ईश्वर की उपासना से धर्म, अर्थ, काम और मोक्ष को प्राप्त करो ॥-स्वामी दयानन्द सरस्वती
                                       পৌরাণিক ঈশ্বর ধারণা এরকম যে, তিনি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসে জগৎ কে নিয়ন্ত্রন করছেন। এবং তাহার একটি নির্দিষ্ট গঠন রয়েছে অর্থাৎ হাত পা চোখ ইত্যাদি [যদিও বেদের বর্ণনায় এসব অলংকারিক]  কিন্তু যিনি সর্বত্র বিরাজমান এমন কোন space নেই যে  তিনি সেখানে নেই তাহলে তাহাকে কিভাবে একটা নির্দিষ্ট গঠনকে সর্বত্র ছড়িয়ে রাখবেন?  মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী ঈশ্বর সমন্ধ্যে এরূপ ধারণার প্রচার করেছেন বলে পৌরাণিক বালকগুলোর অন্তরের সন্তাপের জ্বালা প্রজ্জলিত হয়েছে। তারা ঈশ্বরের গঠন প্রদান করতে বেদের পুরুষ সুক্তের একটি  মন্ত্রের উল্লেখ করে এবং তৎপরে মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর অনুবাদ ভূল বলে চালায়।  তারা বেদ সমন্ধে যে কতটা বিশেষ - অজ্ঞ তা আলোচনায় স্পষ্ট হবে। যজুর্বেদ অধ্যায় ৩১ মন্ত্র ১ ও ঋগ্বের মন্ডল ১০সূক্ত ৯০মন্ত্র ১ এর
 মন্ত্রটির -

সহস্রশীর্ষা পুরুষঃ সহস্রাক্ষঃ সহস্রপাত্।
স ভূমিং সর্বত স্পৃত্বাহত্যষ্টদ্দশাঙ্গুলম্।।
(ঋগ্বেদ মন্ডল ১০সূক্ত ৯০মন্ত্র ১)

মহর্ষিকৃত (স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী) অর্থ -

পদার্থঃ-  হে মনুষ্য! যে (সহস্রশীর্ষা) সহস্রাণ্যসঙ্গখ্যাতানি শিরাংমি য়স্মিন্ সঃ [সহশীর্ষা শ০ ব্রা০ ১৩.৬.২.১২। তৈ০ আ০ ৩.১২.১] (পুরুষঃ) সর্বত্র পূর্ণো জগদীশ্বরঃ পুরুষ পুরিষাদঃ পুরিশয়ঃ পূর্য়তের্বা পূরয়ত্যন্তরিত্যন্তরপুরুষমভিপ্রেত্য। [য়স্মাত্পরং নাপরমস্তি কিঞ্চিদ্যস্মান্নাণীয়ো ন জ্যায়োস্তি কিঞ্চিত বৃষষ্ ইব স্তব্ধো দিবি তাষ্ঠত্যকস্তেনেদং পূর্ণ পুরুষেণ সর্বমিত্যপি নিগমো ভবতি।।. নিরু০ ২.৩] ( সহস্রাক্ষঃ) সহস্রাণ্যসংখ্যাতান্যক্ষীণি য়স্মিন্ সঃ [সহস্রাক্ষয় মীঢুষে' তৈ০ স০ ৪.৫.১.৩] তৈ০ ক০ ২.৯.২/১২.১.১৪। কা০ স০ ১৭.১১] [সহস্রপাত্রে) সহস্রাণ্যসংখ্যাতাঃ পাদা য়স্মিন্ সঃ ['সহস্রপাত্' তৈ০ আ০ ৩.১২.১] (সঃ ভূমিম্) ভূগোলম্ (সর্বত্) সর্বস্মাদ্দেশাত্ ( স্পৃত্বা) অভিব্যাপ্য ( অতি) উল্লঙ্ঘনে ( অতিষ্ঠত্) তিষ্ঠতি ( দশাঙ্গুলম্) পঞ্চস্হূলসূক্ষ্মভূতানি দশাঙ্গুলান্যঙ্গানি য়স্য তজ্জগত্।।  (সহস্রশীর্ষা) সমস্ত প্রানীর সহস্র শির (সহস্রাক্ষঃ) সহস্র নেত্র এবং (সহস্রপাত্) অসংখ্য পাদ যাহার মধ্যে,  ওইরূপ (পুরুষঃ) সর্বত্র পরিপূর্ণ ব্যাপক জগদীশ্বর (সঃ) তিনি (সর্বতঃ) সমস্ত দেশে (ভূমিম্) ভূগোলে (স্পৃত্বা) সব প্রকারে ব্যপ্ত হয়ে (দশাঙ্গুলম্) পাঁচ স্থুলভূত,  পাঁচ সুক্ষভূত  এই দশ যাহার অবয়ব,  উক্ত সমস্ত জগৎ কে (অতি অতিষ্ঠত্) উলঙ্ঘন করে স্থিত অর্থাৎ সব কিছু থেকে পৃথক হয়ে স্থিত।

পদার্থ- হে মনুষ্য! যিনি ( সহস্রশীর্ষা) সকল প্রাণীর অজারো শির ( সহস্রাক্ষঃ) অজারো নেত্র এবং (সহস্রপাত্) অসংখ্য চরণ যাহার মধ্যে ও ( পরুষ) সর্বত্র পরিপূর্ণ ব্যাপক জগদীশ্বর ( সঃ) তিনি (সর্বতঃ) সকল দিশাতে ( ভূমিম্) ভূগোলে ( স্পৃত্বা) সকলদিকে ব্যাপ্ত হইয়া (দশাঙ্গুলম্) পাঁচ স্হূল ভূত,পাঁচ সূক্ষ্ম ভূত এই দশ যেখানে অবয়ব আছে সেই সব জগতেকে (অতি অতিষ্ঠত) উলঙ্ঘন করিয়া স্হিত অর্থাৎ সর্বোৎকৃষ্ট পৃথক হইয়াও বিদ্যমান।।

ভাবার্থঃ- হে মনুষ্য! যে পূর্ণ পরমাত্মা আমাদের মনুষ্য আদির যে অসংখ্য শির,চক্ষু এবং চরণ আদি অবয়ব আছে। যিনি ভূমি আদি হইতে উপলক্ষিত হইয়া পাঁচ স্হূল এবং পাঁচ সূক্ষ্ম ভূত দ্বারা যুক্ত জগতের নিজের সত্ত্বা দ্বারা পূর্ণ,যেখানে জগত নাই সেখানেও পূর্ণ, তিনি সমগ্র জগতের নির্মাণকারী পরিপূর্ণ সচ্চিদানন্দ স্বরূপ নিত্য, শুদ্ধ,বুদ্ধি মুক্তস্বভাব পরমেশ্বরকে ত্যাগ করিয়া অন্যকে উপাসনা কখনও করো না কিন্তু নিরাকার ঈশ্বরের দ্বারা ধর্ম,অর্থ,কাম এবং মোক্ষকে প্রাপ্ত কর।

পৌরাণিক আক্ষেপঃ উক্ত মন্ত্রে কোন মনুষ্য কিংবা প্রাণীর কথা বলা হয় নি তবে দয়ানন্দ সরস্বতী কিভাবে প্রাণী কিংবা মনুষ্যের কথা তুললেন?  দেখুন বিজনবিহারীর ভাষ্য - 
"অসংখ্য যার মস্তক চক্ষু ও চরণ সে পুরুষ ব্রহ্মান্ডলোক ব্যেপে দশ আঙ্গুলি পরিমিত হৃদয় প্রদেশে অন্তর্যামী পুরুষরূপে অবস্থান করেন।"
[ ভাষ্যকার--বিজন বিহারী ]
অতবএব দয়ানন্দ ছল করে এরকম অর্থ করেছে ইত্যাদি ইত্যাদি --

প্রত্যুত্তরঃ আচ্ছা পৌরাণিক মশাই বিজন বিহারী কার ভাষ্য থেকে অনুবাদ করেছে তা জানেন তো? যদি না জানেন তবে ভূমিকা অংশ পড়ে নেবেন। সেখানে বিজন বিহারী বলেছেন তিনি তারা ভাষ্য মহিধর,  সায়নের ভাষ্য অবলম্বন করে লিখেছেন।



আর যজুর্বেদের উক্ত মন্ত্রের  মহিধর ভাষ্য নিজে কখনো দেখেছেন না কি বিজন বিহারী পর্যন্তই দৌড় আপনার?  আচ্ছা মহিধর ভাষ্য দেখুন - "যানি সর্বপ্রাণিনাং শিরাংসি তানি সর্বাণি তদ্দেহান্তঃ পাতিত্বাত্ তসৈবেতি সহস্রশীর্ষত্বম" অর্থাৎ সমস্ত প্রাণীর শির যাহার মধ্যে তাহাকে সহস্রশীর্ষ বলে জানবে।


সায়ন আচার্য্য উক্ত মন্ত্রের ভাষ্যে ঋগবেদের পুরুষ সুক্তের ১ম মন্ত্রে বলেছেন -

"সর্বপ্রাণিসমষ্টিরূপো ব্রহ্মাণ্ডদেহী বিরাডাখ্যো  যঃ পুরুষ সোহয়ং সহস্রশীর্ষা। সহস্রশব্দস্যোপলক্ষণত্বাদনন্তৈঃ শিরোভির্যুক্ত ইত্যর্থঃ। যানি সর্বপ্রাণিনাং শিরাংসি তানি সর্বাণি তদ্দেহান্তঃপাতিত্বাত্তদীয়ন্যেদেতি সহস্রশীর্ষত্বম্।"


অর্থাৎ এখানে  পুরুষ দ্বারা বিরাট পুরুষ অভিপ্রেত যিনি সমস্ত প্রাণীর সমষ্টিরূপ।  সহস্র শব্দের অর্থ অনন্ত।  সমস্ত প্রাণীর যে অনন্ত শির তাহা সব ঈশ্বরের মধ্যে।  অতএব তাহার শির,  ইহা বলা হয়েছে,  এজন্য ঈশ্বরের সহস্র শির বলা হয়েছে।



মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীও একই ভাবে তাহার ভাষ্যে নিরুক্তের পুরুষ এবং সহস্র শব্দের ব্যাখ্যা দিয়ে মন্ত্রার্থ সরল করেছেন [ঋগবেদ ভাষ্যভূমিকা সৃষ্টিবিদ্যাবিষয় দ্রষ্টব্য ]।
"পুরুষঃ পুরিপাদঃ পরিশয়ঃ পুরয়তের্বা পুরয়স্যন্তরিত্যন্তরপুরুষমভিপ্রেত্য"
(নিরুক্ত ২।৩)


মন্ত্রে পুরুষ শব্দ বিশেষ্য এবং অন্যান্য পদ তাহারই বিশেষন। যিনি সমস্ত জগতে পূর্ণভাবে বিদ্যমার তাহাকেই পুরুষ বলে।  পুর শব্দে ব্রহ্মান্ড ও শরীর উভয়ার্থ বাচক। অতএব যিনি সমগ্র ব্রহ্মান্ডে ও মানবাদির শরীর স্থিত  দেহীরূপ জীবাত্মার অন্তরে অন্তর্যামীরুপে বিরাজমান তাহাকেই পুরুষ বলা হয়।

সহস্র শব্দে সম্পূর্ণ জগৎ ও অসংখ্য বুঝায় - " সর্ব বৈ সহস্রম" শতপথ  ৪।৬।১।১৫।  এজন্য যাহার মধ্যে বা ব্যাপকতায় জগতে অসংখ্য শিরঃ চক্ষু পদাদি স্থিত রহিয়াছে।  তাহাকে সহস্রশীর্ষা,  সহস্রাক্ষ ও সহস্রপাৎ বলা যায়। যেহেতু তিনি অনন্তরূপে বর্তমান রয়েছেন। যেরূপ আকাশের মধ্যে বা ব্যপকতায় সমস্ত পদার্থ স্থিত কিন্তু সেই আকাশ সমগ্র পদার্থ হতে পৃথক সেরূপ পরমেশ্বরকেও জানবে।


অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে মহর্ষির ভাষ্য সায়ন,  মহিধর সমর্থিত।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

ব্রহ্মচর্যের সাধনা ভোজন

  নবম ভাগ ভোজন ভূমিকা - "ধর্মার্থকামমোক্ষাণামারোগ্যম্ মূলমুত্তমম্" . ধর্ম-অর্থ-কাম আর মোক্ষ এই পুরুষার্থচতুষ্টয় হল মানব জীবনের উ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ