আধুনিক বিমানের আবিষ্কারক - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

01 October, 2020

আধুনিক বিমানের আবিষ্কারক

 অনশ্বো জাতো অনভিশু রকথ্যে রথস্ত্রিচক্রঃ 

পরিবর্তে রজঃ মহত্তদ্বো দেবস্য প্রবাচনং 
               দ্যামৃভবঃ পৃথিবীং যচ্ছ পূষ্যথ।।  (ঋগ্বেদ ৪।৩৬।১)
-হে রথ নির্মাতা মনুষ্যগণ! তোমাদের নির্মিত প্রশংসনীয় রথ অশ্ববিহীন,বলাহীন,তিনচক্র বিশিষ্ট এবং আকাশে ভ্রমণকারী।তোমাদের এই দিব্য সুখ্যাতিযোগ্য মহান কর্মদ্বারা অন্তরিক্ষ ও পৃথিবী উভয়ই পুষ্ট হয়।
বিমানের কথা চিন্তা করলেই প্রথমেই মাথায় আসে রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ের কথা।১৯০৭ সালে তার তৈরিকৃত বিমান প্রথম উড্ডয়ন করেছিল। অথচ ৭০০০ বছর আগেই প্রাচীন বৈদিক ঋষি ভরদ্বাজ বিমানের কথা চিন্তা করেন।
রাইট ব্রাদার্সেরও ৮ বছর আগে এক ভারতীয় সর্বপ্রথম উড়োজাহাজ বানিয়েছিলেন পুরো নাম শিবকর বাপুজি তলপড়ে, ডাকনাম শিবি। জন্মেছিলেন ভারতের বোম্বের (বর্তমান মুম্বাই) চিরা বাজার নামক স্থানে। আর্য সমাজের সদস্য ছিলেন তিনি। প্রথম থেকেই সংস্কৃত, পুরাণ ও বিজ্ঞান নিয়ে আগ্রহ ছিলো তার। স্যার জামশেদজি জিজেভয় স্কুল অব আর্টে পড়াশোনা করেন তিনি। সেখানে পড়াকালে তিনি তার এক শিক্ষক চিরঞ্জিলাল বর্মার দ্বারা ভীষণভাবে প্রভাবিত হন। সেই শিক্ষকের বিমান চালনাবিদ্যা (Aeronautics) নিয়ে ছিলো বিস্তর পড়াশোনা। শিক্ষকের আগ্রহ সঞ্চারিত হয় ছাত্রের ভেতরেও।

মূলত সেই শিক্ষকের পরামর্শেই শিবকরের পরিচয় ঘটে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর লেখা বিমান চালনাবিদ্যা বিষয়ক বই ‘ঋগ্বেদ ও যজুর্বেদ ভাষ্য’-এর সাথে। সেই সঙ্গে কৃষ্ণজি বাজের উড়ান সম্পর্কিত বই থেকেই উড়োজাহাজ তৈরির পরিকল্পনা মাথায় খেলেছিলো শিবকরের। তবে ভাষ্যের একাধিক্রম থাকুক আর না থাকুক, এটা স্পষ্ট যে, শিবকর উড়োজাহাজ তৈরির প্রাথমিক ধারণাটুকু পরোক্ষভাবে বেদ থেকেই পেয়েছিলেন। কেননা উপরে বর্ণিত বইগুলোতে সংস্কৃত পুরাণ ও বেদে উল্লেখিত বিশেষ দৈবযন্ত্র ‘বিমানা’কে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক উপায়ে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

উক্ত ব্যাখ্যাসমূহের মূল কথা এই যে, সেই ‘বিমানা’ বা ‘বিমান’-ই হচ্ছে অধুনা বায়ুগতিবিদ্যার (Aerodynamics) উড়নযন্ত্র বা উড়োজাহাজ। বেদ থেকে উড়োজাহাজের প্রাথমিক ধারণা পাবার পর শিবকর আরো বিশদ জানতে থমাস আলভা এডিসনের গ্যাসবেলুন ও হাইরাম ম্যাক্সিমের বদ্ধ-বাষ্পীয় ইঞ্জিন চালিত উড়োজাহাজের নকশা নিয়ে পড়াশোনা করেন। শুধু কি জেনেই ক্ষান্ত হলেন শিবকর? ভারতে বসে বিশ্বের প্রথম সফল উড়োজাহাজ বানানোর নেশা পেয়ে বসলো তাকে। সেই অনুযায়ী কাজে নেমে পড়লেন তিনি।


ঋষি ভরদ্বাজের লিখিত 
 
বই "বৈমানিক শাস্ত্রে" প্রায় হাজার রকমে 
 
বিমানের কথা বলা আছে। 
তার প্রকার ও সঞ্চালন সম্বন্ধীয় বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়৷ এটি তার মূলগ্রন্থ যন্ত্রসর্বেশ্বমের একটি অংশ৷ উল্লেখ অনুসারে ঐসময়ে এই বইয়ের জ্ঞান থেকে নির্মিত বিমানব্রহ্মাণ্ডের বিভিন্ন গ্রহে ঘোরাফেরা করতে সক্ষম ছিলো৷ সংস্কৃৃত ভাষাতে রচিত এই বৈমানিক শাস্ত্র গ্রন্থে আটটি অধ্যায়, একশটি অধিকরণ পাঁচশটি সিদ্ধান্তসূত্র এবং তিনসহস্র শ্লোক রয়েছে৷

রামায়ণে বর্ণিত পুষ্পক বিমান বা পুষ্পকরথটি হলো একপ্রকার আকাশযান৷ লঙ্কার রাজা রাবণ দূরবর্তী স্থানে যাতায়াতের জন্য এটি ব্যবহার করতেন৷
পুষ্পক বিমানের একাধিক গুণাবলী ছিলো যেমন প্রয়োজন মতো এই বিমানের আকার হ্রাস বা বৃদ্ধি করা যেতো৷ কোনো স্থানে দ্রুত ভ্রমনের জন্য এই বিমানৈর বেগ মাত্রাতিরিক্ত ভাবনাতীতভাবে বাড়ানো যেতো৷ আকাশপথ ছাড়া ভূমিতেও এটি অনায়াসে চলতে পারতো৷ অধীশ্বরের নির্দেশ অনুসারে বিমানটি বেগ বাড়াতো বা কমাতো আবার একসাথে বহুলোকের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা তৈরীর ব্যবস্থাও ছিলো৷
যাত্রী সংখ্যা, বায়ুর বেগ ও গতিবিধির ওপর ভিত্তি করে এর আকার পরিবর্তন হতো৷
বর্তমানে শ্রীলঙ্কাতে "শ্রীরামায়ণ রিসার্চ সমিতি"-র মতানুসারে রাবণের কিছে তার ভাইয়ের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া পুষ্পক বিমানটি রাখার জন্য চারটি বিমানবন্দর ছিলো৷ এই চারটি বিমানবন্দরের একটির নাম ছিলো উসানগোড়া, কাহিনী অনুসারে লঙ্কাদহন কালে হনুমান এই বিমানবন্দরটিকেই পুরোপুরি নষ্ট করে দিয়েছিলেন৷ অপর তিনটি বিমানবন্দর তথা, গুরূলোপোথা, তোতুপোলাকন্দা এবং বারিয়াপোলা এই সময়ে সুরক্ষিত ছিলো৷

ঋগ্বেদে একাধিক মন্ত্রের মাধ্যমে ২০০র অধিকবার বিমানের উল্লেখ রয়েছে৷ এতে ত্রিতল বিশিষ্ট, ত্রিকোণাকৃতি ও ত্রিচক্রী বিশিষ্ট বিভিন্ন আদি বিমানের উল্লেখ রয়েছে৷ এগুলির প্রাথমিক নির্মাণ করেছিলেন যুগ্মদেবতা অশ্বিনীকুমার, যারা যুগল দেববৈজ্ঞানিক নামেও পরিচিত ছিলেন৷ আদিবিমানগুলিতে তিনজন যাত্রী যেতে পারতেন এবং এগুলির দুদিকে দুটি পাখা যুক্ত থাকতো৷ বিমান তৈরীর উপকরণগুলির মধ্যে মূলত তিনটি ধাতুর ব্যবহার হতো যথা- সোনা, রূপা এবং লোহা৷ বেদে বিমান তৈরীর সময়ে বিভিন্ন আকার দেওয়ার কথারও উল্লেখ রয়েছে৷ উদাহরণস্বরূপ বলা যায় অগ্নিহোত্র বিমানে ছিলো দুটি শক্তির উৎস তথা ইঞ্জিন আবার হস্তী বিমানে দুইয়ের অধিক শক্তির উৎস ছিলো৷ যে কোনো বিমানের মৌলিক আকির ছিলো আজকের মাছরাঙ্গা পাখির আকৃৃতির৷ এছাড়া একপ্রকার জলযানেরও উল্লেখ পাওয়া যায় যা জলে এবং আকাশে উভয়স্থানেই বিচরণ করতে পারতো(ঋগ্বেদ - ৬.৫৮.০৩)৷ কারা নামক বিমানটিও জল ও বায়ু উভয়ক্ষেত্রেই সচল ছিলো(ঋগ্বেদ - ৯.১৪.০১)৷ আবার ত্রিতলা নামক বিমানটি নামানুসারে তিনটি তল বিশিষ্ট ছিলো(ঋগ্বেদ - ৩.১৪.০১)৷ ত্রিচক্র নামক তিনটি চাকাযুক্ত বিমানটি আকিশে উড়তে পারতো(ঋগ্বেদ - ৪.৩৬.০১)৷ রথের মতো দেখতে অপর একটি বিমান আকাশপথে বায়ুশক্তি বা বাষ্পের ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে চলতো(ঋগ্বেদ - ৫.৪১.০৬)৷ আবার বিদ্যুৎরথ বা বিদ্যুদ্রথ নামক বিমান বৈদ্যুতিক শক্তিতে চলতো(ঋগ্বেদ - ৩.১৪.০১)৷

সমরাঙ্গণসূত্রধার নামক বাস্তুশাস্ত্রীয় বইটিতে বিমানের বিষয়ে এবং বিমানসম্বন্ধীয় বিভিন্ন বিষয়ে একাধিক রোমাঞ্চকর তথ্য পাওয়া যায়৷ বইটিতে প্রায় ২২৫টি অনুচ্ছেদে বিমান নির্মাণ, উড্ডয়ন পদ্ধতি, গতি বিষয়ক, অবতরন এবং জরুরীকালীন অবতরন সহ একাধিকবার পক্ষীকুলের সঙ্গে আকস্মিক সংঘাতের ঘটনার উল্লেখও রয়েছে৷

বাল্মীকি পুষ্পক বিমানের যথাসম্ভব বিস্তৃৃত বিবরণ দিয়েছেন,

মেঘের সমান উচ্চতাযুক্ত, সোনার বরণ কান্তিময়, তথা পুষ্পককে ভূমিতে একত্রিত সোনার পিণ্ডের মতো দেখতে৷ অধিক রত্ন বিভূষিত, বিভিন্ন প্রকার ফুলে আচ্ছাদিত ও পুষ্পপরাগে ভরপুর পর্বত শিখরের মতো শোভিত৷ চন্দ্রচ্ছটায় পূজিত, মেঘের মতো রমনীয় ও রত্নজ্যোতিতে দোদীপ্যমান ছিলো বিমানটি৷ আকাশে বিচরণের সময়ে বৃহদায়তন শ্রেষ্ট হাসের দ্বারা চালিত হতো৷ এর নির্মান খুব সৌন্দর্যের সাথে অদ্ভুত শোভাযুক্ত করে করা হয়েছিলো৷ বিমানটি নির্মাণে একাধিক ধাতুর ব্যবহার এমনভাবেই করা হয়েছিলো যেন গ্রহ পর্বত শিখর ও জ্যোৎস্নার জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিনন রঙের ছটা বিচ্ছুরিত করছে এমন মনে হতো৷ ইআর ভূমি সংলগ্ন দিকটি স্বর্ণমণ্ডিত ও কৃত্রিম পর্বত শিখরের শ্রেণীর মতো দেখতে ছিলো৷ কৃত্রিম পর্বত শিখরগুলিতে গাছ এবং ফুল থাকতো এবং সাথে প্রজাপতিও অবস্থান করতো৷ বিমানেরভেতর সাদা রঙের একটি অট্টালিকা নির্মিত ছিলো এবং এই অট্টালিকার চারিদিকে অদ্ভুত সুন্দর বন এবং সরোবর তৈরী করা হয়েছিলো৷ বিমানটি রত্নমণ্ডিত ছিলো এবং প্রয়োজন মতো যেখানে খুশি ভ্রমন করা যেত৷

বিমানটিতে বিভিন্ন রত্ন ও রং ব্যবহার করে সাপের আকৃৃতি তৈরী করা হয়েছিলো তথা স্বঙ্গযুক্ত অশ্বও ছিলো এটিতে৷ বিমানটিতে কামদেবের সহায়ক সুদৃশ্য মুখ ও ডানাযুক্ত বিভিন্ন প্রজাতির পাখি অঙ্কিত ছিলো৷ গজগুলি অঙ্গারকমণি, প্রবাল ও স্বর্ণখচিত ছিলো এবং পুষ্পনির্মিত ডানাগুলি শ্রীলক্ষ্মীর আরাধনারত ছিলো৷ গজের সাথে দেবী গজলক্ষ্মীর মূর্তিও প্রতিষ্ঠিত ছিলো, যা প্রতিনিয়ত হাতিগুলির দ্বারা অভিষিক্ত হতো৷ বিভিন্ন প্রকার পতঙ্গযুক্ত পর্তশিখরগূলির বসন্ত ঋতুতে সুগন্ধি গাছে ভরে উঠতো৷ বাল্মীকি রামায়ণে পুষ্পক বিমানের উল্লেখ কিছুটা এভাবে পাওয়া যায় যে,

“ তস্য হ্ম্যর্স্য মধ্যথ্বেশ্ম চান্যত সুনির্মিতম৷
বহুনির্যূহ্সংযুক্তং দদর্শ পবনাত্মজঃ৷৷ ”
- বাল্মীকি রামায়ণ[১০]

ভক্ত হনুমানও এই বিমানের সৌন্দর্য দেখে আচম্বিত হয়ে গিয়েছিলেন৷ রাবণের রাজভবনের নিকট রাখা এই বিমানের বিস্তার ছিলো প্রায় একযোজন লম্বা ও অর্ধযোজন চওড়া৷ দেবশিল্পী বিভিন্ন রত্নের প্রয়োগ করে প্রাসাদ স্বরূপ এই বিমানটি ব্রহ্মার জন্য নির্মাণ করেছিলেন, কালান্তরে এটি রাবণের হস্তোগত হয়৷ তখনকার সময়ে সারা বিশ্বে বিমানটি আশ্চর্য বস্তু হিসাবে বিশেষ সমাদৃত হতো৷

বিভিন্ন গ্রন্থ অধ্যয়ণ করে বিশ্লেষকরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, রাবণের লঙ্কায় পুষ্পক ছাড়াও একাধিক বিমান ছিলো৷ এই বিমানগুলি তিঁনি রাজ্যের মধ্যে আলাদা আলাদা দিকে অবস্থিত বন্দরগুলি পরিদর্শন এবং রাজ্যের বাইরে ভ্রমনের জন্য ব্যবহার করতেন৷ বাল্মীকি রাময়ণ অনুসারে রামে লঙ্কাবিজয়ের পরে তিনি লক্ষ্মণকে বলেছিলেন যে, একাধিক বিমানের সমারোহে এই ধরনীতে লঙ্কা উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে।

বিমান অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য লঙ্কায় মোট ছয়টি বিমানবন্দর ছিলো৷ এর মধ্যে কিছু বিমান ও বিমানবন্দরের বিবরণ নিম্নরূপ,

  • বেরাগনটোটা - এটি বর্তমানে মধ্য শ্রীলঙ্কার মহীয়াঙ্গনে অবস্থিত৷ সিংহলি ভাষাতে এই নামটির অর্থ বিমান অবতরণের স্থল৷
  • তোটুপোলা কন্দ - তোটুপোলার আক্ষরিক অর্থও বিমান সম্বন্ধীয় তথা যেই স্থান থেকে কেউ যাত্রারম্ভ করে তাই তোটুপোলা৷ কন্দ অর্থ পর্বত৷ সমুদ্রতল থেকে ছয় হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই স্থানটি ছিলো বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের অনুকুল৷
  • দণ্ডুমোনরা বিমান - রাবণ দ্বারা ব্যবহৃত এই বিমানটির স্থানীয় সিংহলি ভাষায় অর্থ, যা ময়ূরের মতো উড়তে পারে৷ স্থানীয় ভাষায় মোনরা শব্দের অর্থ ময়ূর৷
  • বারিয়াপোলা - এটি বর্তমানে শ্রীলঙ্কার মাতালে অঞ্চলে অবস্থিত৷ বা (ওয়া) শব্দের অর্ত বায়ু, রিযা শব্দের অর্থ যান এবং পোলা শব্দের অর্থ স্থান অর্থাৎ আক্ষরিক ভাবে এটি ছিলো আকাশযান অবতরণের একটি স্থান৷
  • গুরূলোপোথা - সিংহলি ভাষায় এর আক্ষরিক অর্থ পাখিদের দেহাংশ৷ এই বিমানবন্দরটিতে বিমানঘর ঐ বিমান মেরামতিকেন্দ্র ছিলো বলে অনুমান করা হয়৷
পাঠ্যবইতে ছোটবেলা থেকে আমরা পড়ে এসেছি, প্রথম উড়োজাহাজ বা এরোপ্লেন বানিয়েছিলেন রাইট ভ্রাতৃদ্বয়। ১৯০৩-০৪ সাল নাগাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই দুই ভাই মিলেই নাকি বানিয়েছিলেন বিশ্বের প্রথম উড়োজাহাজ। ঘটনাটা কিন্তু তেমনটা নয়। বিশ্বের প্রথম উড়োজাহাজ কিন্তু বানিয়েছিলেন এক ভারতীয় বিজ্ঞানী। তাঁর নাম শিবকর বাপুজি তালপাড়ে। অরভিল রাইট ও ইউলবার রাইট, এই দুই ভাইয়ের অন্তত ৮ বছর আগে।
কিন্তু কেন বিশ্ব আজও মানে রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ই উড়োজাহাজ আবিষ্কার করেছিল? আসলে এটা প্রথম বিশ্বের দাদাগিরি বলা চলে। আজ থেকে প্রায় শখানেক বছর আগে কোথায় তথ্যের সাবলীলতা? তখন প্রথম বিশ্বের দেশ আমেরিকা যা বলবে, তাই মাথা পেতে নিতে হত তৎকালীন তৃতীয় বিশ্বের মত দেশগুলিকে। শিবকর বাপুজি তালপাড়েও তারই শিকার হন। অনেকেই জানেন না, বলিউডে “হাওয়াইজাদে” বলে এই নিয়ে একটি সিনেমাও তৈরি হয়েছে। এখন এই সমস্ত তথ্য প্রকাশ্যে আসায় ভারতীয়দের মধ্যে অনেকেই শিবকরের নাম জানতে পেরেছে।

 
আর রাইট ভ্রাতৃয়ের কথা কী বলব! শিবকর যখন তাঁর উড়োজাহাজের নকশা বানাচ্ছেন, এই দুই ‘কৃতী’ ভাই তখন স্কুল থেকে বহিষ্কৃত। পরে তাঁরা একটি ছাপাখানার ব্যবসা খুলে সম্পদে ফুলেফেঁপে ওঠেন। সেই সময় একটি কাগজ পড়েই তারা জানতে পারেন, ভারতে এক বিজ্ঞানী সাফল্যের সঙ্গে উড়োজাহাজ বানিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা কি সেই আইডিয়া চুরি করলেন? না!
ঘটনা হল, ভারতেই শিবকরের ঈর্ষণীয় সাফল্যের পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে রলি ব্রাদার্স কোম্পানি। তখন দেশে ব্রিটিশ শাসন। শাসকরা শিবকরকে হুমকি দেন, তাঁর ড্রয়িং এখনই ব্রিটিশদের হস্তান্তরিত না করলে শিবকরকে গ্রেফতার করা হবে। তখন শিবকর এই শর্তে তাঁর সমস্ত ড্রয়িং  রলি ব্রাদার্স কোম্পানির হাতে তুলে দেন, যেন প্রথম উড়োজাহাজের আবিষ্কারক হিসেবে তাঁর নামই লোকে জানতে পারে। সে সময় ধূর্ত ব্রিটিশরা সেই কথায় সম্মতি দেয়। তারপর আর সেই কোম্পানির আধিকারিকদের ভারতে দেখা যায়নি। রাইট ভাতৃদ্বয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতার খতিয়ানে কোথাও তাদের বিজ্ঞানের উপর দখলের কথা লেখা নেই। তারা কী করে বানাবে উড়োজাহাজ, এতদিন প্রশ্নটা কারও মনেই জন্মায়নি।

 
শেষ পর্যন্ত, প্রথম উড়োজাহাজ আবিষ্কার শীর্ষক এক আলোচনাসভায় অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালক আনন্দ বদাস এই তথ্য ফাঁস করেন। তারপর ২০১১ সালে দ্য বিজনেস ইনসাইডার পত্রিকায় এক তালিকা প্রকাশিত হয়। সেই তালিকায় শিবকরের নাম বেরোয়। লোকে জানতে পারে, রাইট ব্রাদার্স নয়, ভারতীয় বিজ্ঞানী শিবকর বাপুজি তালপাড়েই বাস্তবে প্রথম উড়োজাহাজ বানিয়েছিলেন।


প্রাচীন ভারতীয় আরেক গ্রন্থ সমর সূত্রধারাতে বিমান নির্মাণ,আরোহণ অবতরণ সহ বিমানের নানা খুঁটিনাটি দিক নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করা হয়েছে .. ওখানে বলা আছে হালকা শক্ত  টেকসই ধাতু দ্বারা তৈরি বিমান দেখতে হবে পাখির মতএর ভিতর রাখতে হবে হিটিং সিস্টেমসহ পারদ ইঞ্জিনপারদ উত্তপ্ত হলে বিমান বৃত্তাকার ভাবে উড়তে এবং নামতে পারবে বিমান তেরচাভাবে পিছনে বা সামনে যেতে সক্ষমএবং এতে করে মানুষ আকাশে উড়তে পারবে  স্বর্গীয় দেবতfরা ধরাতে আসতে পারবে ফ্লাইং সসারের সাথে তাজ্জব মিলতাই নাইঞ্জিনের গঠন নিয়েও বিস্তারিত লেখা আছে বইটিতেতাতে বলা আছে বৃত্তাকার বিমান কাঠামোর ভিতরে সোলার মার্কারি(পারদবয়লার সহ মার্কারি ইঞ্জিন বসাতে হবে চারটি পারদ বিশিষ্ট শক্তিশালী কনটেইনার স্থাপন করতে হবে ভিতরেযেগুলো সৌর শক্তিতে উত্তপ্ত হয়ে ইঞ্জিন চালু হবেসোলার প্ল্যান্টকত হাজার বছর আগেখায়সেভাল কথা সমর সূত্রধারা কিন্তু বেদ থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে লেখা এই লেখার আরও হাজার হাজার বছর পর মার্কারি ইঞ্জিন আবিষ্কার নিয়ে গবেষণা শুরু করে নাসা!
বই এর বর্ণনামতে একটি বিমান ছিল বৃত্তাকার এবং এগুলো দ্বারা আকাশে উড়া যায়!

বিমানের জ্বালানিতে ব্যবহার করা হত পারদ আবার কখনও হলুদেটে সাদা তরল খুব সম্ভবত তিনি গ্যাসোলিন এর কথা বলেছেন উনার বিবরণ দ্বারা বুঝা যায় বিমানগুলোতে কম্বাসচন ইঞ্জিন এবং পালস-জেট ইঞ্জিন দুই ধরনের ইঞ্জিনই ব্যবহার করা হত যে পালস-জেট ইঞ্জিন নিয়ে হাজার বছর পর নাৎসিরা গবেষণা শুরু করেতাদের রকেটে ব্যবহার করার জন্য যেভাবেই হোক হিটলার প্রাচীর ভারতের এই গ্রন্থগুলো সম্পর্কে জানতেন এবং এগুলো সংগ্রহ করার জন্য তার প্রতিনিধিদের ভারতবর্ষে পাঠিয়েছিলেনও
                         শিবকরকে নিয়ে লন্ডন টাইমসে ছাপা একটি আর্টিকেল; Source:factsfootprint.blogspot.com

শিবকরের উড়োজাহাজ তৈরির ঘটনাটি বিশদে বর্ণিত হয়েছে মারাঠি স্থপতি ও ঐতিহাসিক প্রতাপ বেলকারের বই ‘পাথারে প্রভুঞ্চ ইতিহাস’ নামক বইটিতে। শিবকরের ভাইঝি রোশান, নিকটাত্মীয় চন্দ্রকান্তের বিভিন্ন বক্তব্য এবং ছাত্র পি. সাটওয়ালকারের কিছু প্রবন্ধকে রেফারেন্স হিসেবে বইটিতে ব্যবহার করেছেন বেলকার। সেখানে বর্ণিত হয়েছে, জেজে স্কুল অব আর্টের ওয়ার্কশপে গাড়ির চাকা আর পাখির ডানা- এ দুইয়ের নকশা নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন শিবকর। এদের সংমিশ্রণে তিনি এরপর এমন একটি যন্ত্র তৈরি করতে চাইলেন, যা মাটি থেকে উড়ে যেতে সক্ষম।

শিবকরের তৈরি করা সে যন্ত্রটির নকশা সাজানো হয়েছিলো পারদ ও সৌরশক্তিকে ব্যবহার করে। শিবকর শখ করে এর নাম দেন মরুৎসখা। সংস্কৃতে মরুৎ অর্থ বায়ু ও সখা অর্থ বন্ধু। কোথাও বর্ণিত হয়েছে এ উড়োজাহাজটি ছিলো মোচাকৃতির, কোথাও বর্ণিত হয়েছে নলাকৃতির। তবে মজার বিষয়, উড়োজাহাজটিতে কোনো ডানা ছিলো না।


১৮৯৫ সালের কোনো এক সময়। উড়োজাহাজ তৈরি শেষ। এরপর এটিকে শিবকর নিয়ে যান চৌপত্তির বালুকাময় বেলাভূমিতে। অসংখ্য উৎসুক মানুষের চোখ তখন উড়োজাহাজের পানে। মোচাকৃতির বাঁশের তৈরি কাঠামোর ভেতর রাখা ছিলো গলিত পারদ। সূর্যের তাপে পারদের উদ্বায়নের দরুণ নির্গত হাইড্রোজেন গ্যাস বায়ুর থেকে হালকা। এতটাই হালকা যে, সেই হাইড্রোজেনের তোড়েই শূন্যে ভাসলো মরুৎসখা।

উড়োজাহাজটি মাটি থেকে ১,৫০০ ফুট ওপরে হাওয়ায় ভেসেছিলো ১৮ থেকে ২০ মিনিট অবধি। অনেক বর্ণনায় যদিও-বা বলা হয়, এই উড়োজাহাজ স্বল্প উচ্চতায় বিস্ফোরিত হয়েছিলো, কিন্তু বেলকার সে দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। তবে মরুৎসখা যে উড়েছিলো, এ ব্যাপারে দ্বিমত নেই কোনো বর্ণনায়।

এ ঘটনাকে অনুপ্রেরণা করে ২০১৫ সালে বলিউডে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র ‘হাওয়াইজাদে‘, যেখানে শিবকরের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন আয়ুষ্মান খুররানা।


"A critical study of the work Vyamanika Shastra"-pdf

Vaimanika Shastra PDF Download Link

তথ্যসুত্রঃ
  1.  http://www.samacharjagat.com/news/auto/pushpaka-vimana-of-ravana-86407
  2.  https://m-hindi.webdunia.com/dussehra-special/ravana-116100500048_3.html#
  3.  https://hindi.speakingtree.in/allslides/content-244055
  4.  https://m-hindi.webdunia.com/dussehra-special/ravana-116100500048_3.html
  5.  https://books.google.co.in/books?id=f4pUBQAAQBAJ&pg=PA102&lpg=PA102&dq=%E0%A4%85%E0%A4%B2%E0%A4%95%E0%A4%BE%E0%A4%AA%E0%A5%81%E0%A4%B0%E0%A5%80+%E0%A4%B0%E0%A4%BE%E0%A4%AE%E0%A4%BE%E0%A4%AF%E0%A4%A3+%E0%A4%AE%E0%A5%87%E0%A4%82&source=bl&ots=Fw5RYsnMpx&sig=ij1jjHJQ-WiBInjjGGCYRPQyd2U&hl=en&sa=X&ved=0ahUKEwjkvdaq4f3SAhVIz1QKHYiVAOgQ6AEIHjAB#v=onepage&q=%E0%A4%85%E0%A4%B2%E0%A4%95%E0%A4%BE%E0%A4%AA%E0%A5%81%E0%A4%B0%E0%A5%80%20%E0%A4%B0%E0%A4%BE%E0%A4%AE%E0%A4%BE%E0%A4%AF%E0%A4%A3%20%E0%A4%AE%E0%A5%87%E0%A4%82&f=false
  6.  https://www.amarujala.com/spirituality/religion/ramleela-puspak-viman-airport-of-ravan
  7.  https://www.bhaskar.com/news/PUN-JAL-airport-prevailed-in-raavan-regime-4264114-PHO.html?&storyid=8248344&photoID=2072984
  8.  https://m.bharatdiscovery.org/india/%E0%A4%AA%E0%A5%81%E0%A4%B7%E0%A5%8D%E0%A4%AA%E0%A4%95_%E0%A4%B5%E0%A4%BF%E0%A4%AE%E0%A4%BE%E0%A4%A8
  9.  अतुलनीय पुष्पक विमान (हिन्दी)। अभिगमन तिथि: २४ मई, २०१३।
  10. ↑ ঝাঁপ দাও:  http://badalav.com/ravan-ka-pushpak-plane/
  11.  http://ww1.delhitopnews.com/astro/the-history-of-this-gold-lanka/[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  12.  https://www.lexilogos.com/english/sinhala_dictionary.htm

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অথর্ববেদ ২/১৩/৪

  ह्यश्मा॑न॒मा ति॒ष्ठाश्मा॑ भवतु ते त॒नूः। कृ॒ण्वन्तु॒ विश्वे॑ दे॒वा आयु॑ष्टे श॒रदः॑ श॒तम् ॥ ত্রহ্যশ্মানমা তিষ্ঠাশ্মা ভবতুতে তনূঃ। কৃণ্বন্তু...

Post Top Ad

ধন্যবাদ