আমার জানা মতে গায়ত্রী মন্ত্র দ্বারাই জীব দুঃখ রূপ সংসার সাগর থেকে তারণ হয় বলেই তাকে "হরিনাম" বলা হয়। বেদের সমগ্র জ্ঞান গায়ত্রী মন্ত্রের মধ্যে সূক্ষ্মভাবে আছে, সেই জ্ঞান প্রাপ্ত দ্বারা ত্রিবিধ বিঘ্নের বিনাশ হয়। হরেরাম হরেকৃষ্ণ ষোল নাম বত্রিশ অক্ষর কতগুলি ব্যাকরণহীন মানুষের মন গড়া শব্দ তাকে মন্ত্র বলে মানুষকে ঠকানো ছাড়া কিছু নয়। সত্য ও ত্রেতা যুগের মানুষরা নিশ্চয় "হরেরাম হরেকৃষ্ণ" নাম জপ করতেন না উদ্ধার পাওয়ার জন্য তাই আমাদেরও উচিৎ বেদের "হরিনাম (গায়ত্রী মন্ত্র)"অর্থ বুঝে জপ করা। বৈষ্ণবরা বলেন চৈতন্যদেব বলেছেন হরের্নাম হরের্নাম হরের্নামৈব কেবলম [হরের্ণামৈব কেবলম]। "হরি" এই কথাটির সাথে "কেবলম্" তো বলেননি অর্থাৎ "হরি" নামৈব কেবলম্ কথাটি বলেননি। বরং জোর দিয়ে তিনি বলেছেন হরেনামৈব কেবলম্। অর্থাৎ হরির নাম। "হরি" নাম নয়। তাছাড়াও হরির নাম বাক্যটি অসম্পূর্ণ, হরির নামটি কি..? সেটা বলা নেই এখানে,জিজ্ঞাসা থেকে যায়। মুনি শব্দের ষষ্ঠির একবচনে "মুনেঃ" হয়, তেমনি হরি শব্দ ষষ্ঠির একবচনে "হরেঃ" হবে। কাজেই হরের্নাম বলতে বোঝায় হরির নাম। কিন্তু হরি নয়। এখানে বোঝা উচিত, ওই হরির নামটি হওয়া উচিত প্রণব গায়ত্রী। কারণ চৈতন্যদেব এই মন্ত্রেই দীক্ষা নিয়েছিলেন যা শ্রীকৃষ্ণ গীতায়
৮/১৩ নম্বর শ্লোকে বলেছেন।
ওম্ ইত্যেকাক্ষরং ব্রহ্ম ব্যাহরন্মামনুস্মরন্।
যঃ প্রয়াতি ত্যজন্ দেহং স যাতি পরমাং গতিম্।।৮/১৩
অনুবাদঃ যোগাভ্যাসে প্রবৃত্ত হয়ে পবিত্র ওঙ্কার উচ্চারণ করতে করতে কেউ যদি পরমেশ্বর ভগবানকে স্মরণ করে দেহত্যাগ করেন, তিনি অবশ্যই পরমা গতি লাভ করবেন।
পদার্থঃ (ওম্, একাক্ষরম্, ব্রহ্ম) 'ওঁ' হলো এক অক্ষর ব্রহ্ম অর্থাৎ ব্রহ্মের বোধক যে 'ওঁ' অক্ষর আছে উহাকে (ব্যাহরন্) কথন করে (মাম্, অনুস্মরন্) আমাকে এর অনন্তর স্মরণ করে অর্থাৎ এই পদের উপদেষ্টা হিসেবে জেনে (য়ঃ) যে পুরুষ (দেহম্, ত্যজন্) দেহকে ত্যাগ করে (প্রযাতি) মৃত্যু হয় (সঃ) সে (পরামাম্, গতিম্, যাতি) পরম গতি কে প্রাপ্ত হয়।।
ভাবার্থঃ যে পুরুষ 'ওঁ' নামক ব্রহ্ম অক্ষর কে স্মরণ করতে করতে দেহ ত্যাগ দ্বারা প্রয়াণ করে সে পুরুষ পরম গতি কে প্রাপ্ত হয়।।
ভাষ্যঃ এখানে কথন করে যে 'ওঙ্কার' এর জপ সমাধি লাভে উপযোগী, যেমন 'ঈশ্বরপ্রণিধানাদ্বা' যোগদর্শন ১/২৩ সূত্রে কথন করা হয়েছে যে ঈশ্বরের 'প্রণিধান' ভক্তি বিশেষ দ্বারা সমাধি লাভ হয়।।
এই শ্লোকের ব্যাখ্যাতে অবতারবাদী টীকাকারগণ এই অক্ষর কে কৃষ্ণের সাথে মিলিয়ে দেয় অর্থাৎ কৃষ্ণ কে পরমেশ্বর বলে কথন করে। যদি মহর্ষি ব্যাসজীর এমন তাৎপর্য হতো তাহলে এই অক্ষর এর অনন্তর কৃষ্ণজী 'মাম্ অনুস্মর' কথন কথন করতো না, আমাদের বিচারে কৃষ্ণজী নিজেই নিজেকে ওই অক্ষরের উপদেষ্টা হওয়ার কারণে মহত্ত্ব কথন করে, নিজে অক্ষর ব্রহ্ম হওয়ার অভিমানে নয়, যদি স্বয়ং অক্ষর= ব্রহ্ম হওয়ার অভিমান করতো তাহলে 'তমাহুঃ পরমাম্ গতিম্' গীতা ৮/২১ এই বাক্য দ্বারা ওই অক্ষর কে পরম গতি নিরুপণ করে নিজের ধাম কথন করতো না। 'ধাম' শব্দের অর্থ হলো স্থিতি স্থান অর্থাৎ আমার স্থিতির স্থান হয় সেই অক্ষর, এই কথন করে আবার সামনে গিয়ে ওই অক্ষর প্রাপ্তির অন্যান্য ভক্তি দ্বারা কথন করে।।
[আর্যমুনি ভাষ্য]
যদিও হরের্নামৈব শ্লোকটি বৃহন্নারদীয় পুরাণের শ্লোক যা, চৈতন্য দেবের মুখে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি ওনামের স্রষ্টা নন, কারণ স্বঃ হস্তে
তাঁর লিখিত কোন পুস্তক নেই। এছাড়াও এই নামের মধ্যে ষোল নাম বত্রিশ অক্ষর কোথায় আছে..? আছে তো তিনটি নাম-হরি,রাম ও কৃষ্ণ..?
মোট ছয়টি অক্ষর, তাহলে যোল নাম বত্রিশ অক্ষর বলা কি ঠিক..? এটা মিথ্যাচার নয় কি..? সুতরাং এই মন গড়া মিথ্যা নামের দ্বারা জীবের উদ্ধার সম্ভব কি..?
শাস্ত্র বলে- সত্যমেব জয়তে নানৃতং। সত্যেন পন্থা বিততো দেব য়ানঃ।(মুন্ডকোপনিষদ) সত্যের জয় ও মিথ্যার পরাজয় অবশ্যই। অতএব ঈশ্বরীয় জ্ঞান,বেদই
সত্য এবং তৎবিরূদ্ধ মিথ্যাই অধর্ম, দুঃখ বা নরক। সমগ্র বেদ ও বেদানুকূল গ্রন্থে কোথাও হরিনামের কথা বলানেই। তাহলে বৈষ্ণবরা হরিনামের কথা বলেন কেন...?
কৃষ্ণদাস কবিরাজের চিতাম,ত গ্রন্থে চৈতন্যদেবের উক্তি বলে লেখা আছে য, তিনি নাকি বলেছেন-" এক নামভাসে তোমার পাপ দোষ যাবে,আর নাম লইতে কৃষ্ণ চরন পাবে।"
এই কথাটি যদি চৈতন্যদেবের উক্তি বলে ধরা হয়,তাহলেও তিনি তো হরিনামের কথা বলেন নি। তাঁর মত শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত এই সাম্প্রদায়িক বিভেদমূলক হরিনাম প্রচার
করতে পারেন কি..? বরং সকলকে গায়ত্রী মন্ত্রে দীক্ষা দেওয়ার ফলে রঘুনন্দচের কথা না শোনায়,তাঁকে বাংলা ত্যাগ করতে হয়েছিল এবং নিমাইয়ের প্রিয় সাথী
নিতাই রঘুনন্দনের নির্দেশিত এই সাম্প্রদায়িক বিভেদ মূলক হরিনাম প্রচার করার জন্য মনের দুঃখে তিনি বাংলায় আর কোনদিন ফিরে আসেননি। এটা নির্বিবাদ সত্য।
ঋগ্বেদের দশম মন্ডলের ৯৬ সূক্তে ২নম্বর মন্ত্রে হরি নাম দেখে অনেক তিলকধারী লাফাতে থাকে ই তো হরিনাম জপরে কথা লেখা আছে, মন্ত্রটির আর্যমুনি ভাষ্য দেখুনঃ
हरिं॒ हि योनि॑म॒भि ये स॒मस्व॑रन्हि॒न्वन्तो॒ हरी॑ दि॒व्यं यथा॒ सद॑: ।
hariṁ hi yonim abhi ye samasvaran hinvanto harī divyaṁ yathā sadaḥ
आ यं पृ॒णन्ति॒ हरि॑भि॒र्न धे॒नव॒ इन्द्रा॑य शू॒षं हरि॑वन्तमर्चत ॥
ā yam pṛṇanti haribhir na dhenava indrāya śūṣaṁ harivantam arcata
হরিং হি যোনিমভি যে সমন্বরন হিন্বন্তো হরি দিব্যাং যথা সদঃ।
আ যং পৃণন্তি হরিভির্ণ ধেনব ইন্দ্রায় শূষং হরিবন্তমর্চত।।
ঋগ্বেদ মন্ডল০ ১০ সূক্ত০ ৯৬ মন্ত্র০ ২
पदार्थान्वयभाषाः -(ये) जो स्तुति करनेवाले (हरिम्) आहरण करने योग्य-प्राप्त करने योग्य (योनिं हि) आनन्दगृह मोक्ष को (अभि-समस्वरन्) अभिप्राप्त करने को घोषित करते हैं, उसे हम प्राप्त करें। (यथा) जैसे (दिव्यं सदः) दिव्य सदन-अमर सदन (हरी) परमात्मा के प्रापणसाधनों को (हिन्वन्तः) प्रेरित करते हुए (यम्) जिस परमात्मा को (हरिभिः) ग्रहण करने योग्य मनुष्यों के द्वारा प्रेरित (धेनवः-न) स्तुतियाँ गौओं की भाँति (पृणन्ति) तृप्त करती हैं (इन्द्राय) उस इन्द्र परमात्मा (हरिवन्तम्) दुःखहारक गुणवाले (शूषम्) बलस्वरूप को (अर्चत) स्तुति में लाओ ॥
{(ye) jo stuti karanevaale (harim) aaharan karane yogy-praapt karane yogy (yonin hi) aanandagrh moksh ko (abhi-samasvaran) abhipraapt karane ko ghoshit karate hain, use ham praapt karen. (yatha) jaise (divyan sadah) divy sadan-amar sadan (haree) paramaatma ke praapanasaadhanon ko (hinvantah) prerit karate hue (yam) jis paramaatma ko (haribhih) grahan karane yogy manushyon ke dvaara prerit (dhenavah-na) stutiyaan gauon kee bhaanti (prnanti) trpt karatee hain (indraay) us indr paramaatma (harivantam) duhkhahaarak gunavaale (shoosham) balasvaroop ko (archat) stuti mein lao}
भावार्थभाषाः -स्तुति करनेवाले विद्वान् जन आनन्दसदन मोक्ष है, ऐसा घोषित करते हैं, उसे प्राप्त करना चाहिये, उसकी प्राप्ति के साधन हैं स्तुति और उपासना, इसलिए स्तुतियों द्वारा और उपासना द्वारा परमात्मा की अर्चना करनी चाहिये ॥ পরমেশ্বরের স্তুতি, উপাসনা ও জ্ঞান প্রাপ্তির দ্বারা মোক্ষ প্রাপ্তির কথা বিদ্যানগন ঘোষণা করেন।
{stuti karanevaale vidvaan jan aanandasadan moksh hai, aisa ghoshit karate hain, use praapt karana chaahiye, usakee praapti ke saadhan hain stuti aur upaasana, isalie stutiyon dvaara aur upaasana dvaara paramaatma kee archana karanee chaahiye .}
সরলার্থঃ যেমন দুগ্ধ দানকারী গাভীগন দুগ্ধ দেয় তেমনই মোক্ষ প্রদানকারী পরমাত্বা আমাদের অবিদ্যা সকল শোষণ তথা হরন করে যোনীভ্রমন থেকে মুক্তি প্রদান করেন এবং পরমপদ মোক্ষ তথা সদ্গতি দান করেন। সেই পরমাত্মাকে আমাদের সর্বক্ষন স্তব করা উচিৎ।
বর্ণাত্মক কোন রাম রাম কৃষ্ণ কৃষ্ণ কালী কালী বা সোহাং সোহাং জিহ্বাতে মনে মনে বা শ্বাসে শ্বাসে জপ করে কেউ পরমেশ্বর কে জানতে পারবেন না।
ভাগবত মতেই কৃষ্ণের প্রাকৃত জন্ম কর্ম ! সৰ্ব্বব্যাপক ব্ৰহ্মসত্ত্বা, দেশকালের দ্বারা পরিচ্ছিন্ন একটি সীমাবদ্ধ পাঞ্চভৌতিক দেহের মধ্যে এসেছিলেন, এ ধারনা কেবল তাদেরই হ'তে পারে, যারা জ্ঞানবিচারের নামে কানে আঙ্গুল দিয়ে কৃষ্ণ কৃষ্ণ জপ করে।
‘ব্রাহ্মে মুহূর্ত্তে উত্থার বার্য পদৃশ্য মাধবঃ
মধ্যে প্রসন্নকরণ-আত্মানং তমসঃ পরম।
এবং স্বয়ং জ্যোতিরনন, বায়ং, স্ব-সংয়া নিত্য নরস্তকল্পধম্
ব্ৰহ্মাধ্যমস্যোস্তুৰ নাশ হেতুভিঃ স্বশক্তিভিল ক্ষিত ভাৰনিৰ্ব তিম্।। [ শ্রীমদ্ভাগবত, ১০, ৭০]
ব্রাহ্মমুহূর্ত্তে উঠে জলস্পর্শ করে শ্রীকৃষ্ণ আচমন করে ইন্দ্রিয় সকলের প্রসন্নতা লাভ করলেন। অনন্তর যিনি উপাধিশূন্য, আত্মসংস্থিত, অব্যয় ও অখণ্ড, অজ্ঞানরহিত বলে সাক্ষাৎ জ্যোতিঃস্বরূপ, জগতের উৎপত্তি এবং নাশের হেতুভূত দ্বীয় শক্তিলক্ষণ দ্বারা ধার সত্ত্বা লক্ষিত হয়ে থাকে, শ্রীকৃষ্ণ সেই ব্রহ্মসত্ত্বার — —নিত্যানন্দময় পরমাত্মার ধ্যানে নিমগ্ন হ'লেন'।
একজন স্বধর্ম্মনিষ্ঠ যোগী গৃহস্থ যেমন সাধনা করেন, নিত্য ক্রিয়ার অনুষ্ঠান করেন শ্রীকৃষ্ণও যে তাই করতেন অন্যত্র তারও বর্ণনা মেলে ঐ বৈষ্ণবমান্য শ্রীমদ্ভাগবত থেকেই। যেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জীকে বৈষ্ণবেরা পরমেশ্বর বানানোর চেষ্টায় সদা তৎপর তারাই শ্রীকৃষ্ণ জীর কৃতকর্ম্ম না করে তাঁর নামের জপ শিখিয়ে চলেছেন।
মানুষের মন গড়া শব্দ দিয়ে হরি নামের ওরকম নানা অর্থ করা যায়ঃ
"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম, রাম রাম হরে হরে"
শব্দার্থঃ- হরে (হরি-ঈশ্বর) কৃষ্ণ (ভগবান শ্রীকৃষ্ণ) হরে (ভগবান বিষ্ণু) কৃষ্ণ (যোগীরাজ শ্রীকৃষ্ণ) কৃষ্ণ (ভগ-ঐশ্বর্যশালী) কৃষ্ণ (ভগবান শ্রীকৃষ্ণ) হরে (নারায়ণ-ঈশ্বর) হরে (নারায়ণ-ঈশ্বর) হরে (নারায়ণ-ঈশ্বর) রাম (ভগবান শ্রীরামচন্দ্র) হরে(হরি-নারায়ণ) রাম (মানবশ্রেষ্ঠ শ্রীরামচন্দ্র), রাম(পুরুষোত্তম ভগবান শ্রী রামচন্দ্র) রাম হরে (হরি-ঈশ্বর) হরে (হরি-ঈশ্বর)
ভাবার্থঃ- যিনি নিরাকার ও সর্ব্বব্যাপক সেই ভগবান হরির বা বিষ্ণুর ভক্ত ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যিনি ভগ-ঐশ্বর্যবান। সেই সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর বা হরি, তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নন আবার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর নন তাই বলা হয় (কৃষ্ণ কৃষ্ণ ই) / হরে হরে অর্থাৎ হরি হরি ই। সেরূপ রাম রামই আর হরি হরি দুজন ভিন্ন সত্বা।
ও৩ম্ হল ঈশ্বরের প্রধান নাম।প্রমাণের জন্য,বেদের এই মন্ত্রটি দেখুন-----
বায়ুরনিলমমৃতমথেদং ভস্মান্তং শরীরম্।
ওম্ ক্রতো স্মর ক্লিবে স্মর কৃতং স্মর।।
যর্জুবেদ অধ্যায় 40 মন্ত্র 15
অনুবাদ--- প্রাণবায়ু মহাবায়ুতে মিলিত হইবে এবং শরীরও ভস্মসাৎ হইবে ইহা নিশ্চয় জানিয়া সতত "ওম্" নামে উপাস্য পরমাত্মাকে স্মরণ কর,---কোথা হইতে আসিয়াছ? কোথায় যাইবে? [এই কথা] স্মরণ কর এবং এই কর্ম-ভূমিতে আসিয়া কি কি করিলে তাহাও স্মরণ কর।
অর্থাৎ,পরমাত্মা বেদমুখে, মানুষদের উপদেশ দিচ্ছেন যে, মৃত্যুর সময় প্রাণবায়ু বায়ুতে মিশে যাবে আর এই স্থুল শরীরও আগুন দ্বারা পুড়ে নষ্ট হয়ে যাবে। এই সত্য হৃদয়ে ধারণ করে মানুষের উচিত, সবসময় ওম্ নামে,তাঁকে (পরমাত্মাকে) স্মরণ করা!
মহাভারতে বৈষ্ণব কথাটির উল্লেখ পাওয়া যায় বটে। কিন্তু বৈষ্ণব বলতে বর্তমানে মালা তিলকধারী যে সব কৃষ্ণ ভক্ত বৈষ্ণব দেখি,মহাভারতে সেই অর্থে কথাটির ব্যবহার হয়নি।
বিখ্যাত গবেষক পন্ডিতরাও সে কথা স্বীরাক করেছেন- vide early History of Visnava Faith and movement in Bengali by Dr.S.K.Dey এবং Early Vaisnism and Narayania worship by Sreemati Mrinal Dasgupta (I.H.D.Vol VII-1931),
গুজরাটে এখনও ঐ সাত্বত বংশের পরিচয় পাওয়া যায়। ঐ বংশের বিখ্যাত নায়ক ছিলেন বাসুদেব শ্রীকৃষ্ণ। বাসুদেবের ভক্তদের পরম "ভাগবত"বা ভট্টারক বলা হত, কিন্তু বৈষ্ণব নয়।
গুপ্ত সম্রাটগন ও এই "পরম ভাগবত" উপাধি গ্রহণ করেছিলেন। ইহা Dr.J.N.Banerjee-র Hindu Iconography থেকে জানা যায়। সেযুগে বিষ্ণর কোন মূর্তি বা পূজার
প্রচলন ছিল না। সাত্বত বংশীয় বাসুদেব যে ধর্ম প্রচলন করেন তার নামছিল ভাগবত ধর্ম, বৈষ্ণব ধর্ম নয়, শ্রীকৃষ্ণ গীতায় নিজেকে বৃষ্ণীনাং "বাসুদেবোহষ্মি" বলেছিলেন। এই বাসুদেব ও তিনি যে একই ব্যাক্তি সেটাই বলেছেন।
অথচ বৈষ্ণবরা ভাগবতে তাঁকে বলে গোবিন্দ বা গোপিকাজন বল্লভ,এটা বলা কি ঠিক..?
বর্তমানে নানান সম্প্রদায়ের মানুষরা তাদের গুরুদের নামে যশ,খ্যাতি, প্রতিষ্ঠার জন্য নানা উপনিষদ তৈরী করেছেন,তেমন বৈষ্ণবরাও রচনা করেছেন। গীতাগোবিন্দ,গোপাল তাপনী
উপনিষদ,কৃষ্ণোপনিষদ ইত্যাদি।
রাম ভক্তরাও তেমন রচনাকরেছেন শ্রীরাম পূর্বতাপনী উপনিষদ, রামগীতা প্রভৃতি। বর্তমানে আবার আল্লার নামে আল্লোপনিষদ্ও তৈরী হয়ে গেছে।
বৈষ্ণব সম্প্রদায় প্রথমদিকে একটি মাত্র থাকলেও বর্তমানে নানা নামে,নানা দলে নানা মতে বিভক্ত হয়ে গেছে আউল,বাউল,সাঁই,দরবেশ,কর্তাভজা,নিমাইচাঁদ,
সহজীয়া,গৌড়ীয় প্রভৃতি। বেদানুকূল ব্যখ্যা দ্বারা মানুষকে উপদেশ দেওয়ার জন্য ঋষিরা পুরাকালে উপনিষদের সৃষ্টি করেছিলেন এবং বর্তমানে প্রাপ্ত ঐ এগারোটি
উপনিষদই হলো আসল এবং বেদানুকূল ও বিজ্ঞান সন্মত সার্বভৌমিক। যা, আজ বর্তমান সমাজের অধিকাংশ মানুষের নিকট অবহেলিত বা উপক্ষিত। যা একদিন
তৈরী হয়েছিল ঈশ্বরকে জানবার উদ্দেশ্যে, আজ তা তৈরী হচ্ছে স্ব,স্ব দলের গুরুদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিপন্নের জন্য। এটাই আজ মনুষ্য জাতির তথা হিন্দুর সব থেকে বড় দুর্ভাগ্য।
হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় দর্শন ও উপনিষদ পড়ান হত না। যখন তাদেরকে ভারতীয় দর্শন ও উপনিষদ পড়ানোর কথা বলা হল। তখন তাঁরা বললেন, আগে ভারতে গিয়ে
উপনিষদ ও দর্শন পড়ে দেখি, তার পর সিদ্ধান্ত নেব। তাঁরা ভারতে এসে উপনিষদ ও দর্শন পড়ে দেখলেন এবং ফিরে যাওয়ার সময় বললেন- "we go affirmed with the option India philosophy and upanisad are the greatest book of the world. But now here we have not fount the bllod of ancient Rishi in the veins of present genaration. They have begun to ape without tail and westarn civilization."
অর্থাৎ আমরা ভরতে এসে দর্শন ওউপনিষদ পড়ে জেনেছি ইহা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ, এই নিশ্চয়তা নিয়েই আমরা স্বদেশে ফিরে যাচ্ছি। পরন্তু ভারতের বর্তমান সন্তান সন্ততির
শিরায় কোথাও প্রাচীন ঋষিদের রক্ত দেখলামনা,হ্যাঁ তারা অবশ্যই লেজহীন বানরের মত দেখতে এবং পাশ্চাত্য সভ্যতার নকল শুরু করে দিয়েছে। এটাই আজ বর্তমান ভরতবর্ষের মানুষ তথা হিন্দুদের দুর্ভাগ্য।
প্রাণো বৈ হরিঃ স হি হরতি। কৌ০ ব্রা০ ১৭।১ প্রাণরশ্মিই হরিঃ।।
ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ
তৎসবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো
দেবস্য ধীমহি।
ধিয়ো য়ো নঃ প্রচোদয়াৎ।।
(ঋগ্বেদ ৩/৬২/১০; যজুর্ব্বেদ ৩/৩৫, ৩০/২; সামবেদ উত্তরার্চ্চিক ৬/৩/১০)
বঙ্গানুবাদঃ- পরমাত্মা প্রাণস্বরুপ, দুঃখনাশক ও সুখ স্বরুপ। তিনি আমাদের বুদ্ধিকে শুভ গুণ, কর্ম ও স্বভাবের দিকে চালনা করেন। সেই জগদুৎপাদক ও ঐশ্বর্যপ্রদাতা পরমাত্মার বরণযোগ্য পাপ-বিনাশক তেজকে আমরা ধারণ করি।
ভাবার্থঃ পরমাত্মাই জগতের স্রষ্টা এবং জীবনের কর্মফলদাতা; তিনি জীবনের একমাত্র উপাস্যদেব; তাঁহার স্বরুপ চিন্তাই উপাসনা; তাঁহার উপাসনা করলে বুদ্ধিবৃত্তি শুভ গুণ, কর্ম ও স্বভাবের দিকে চালিত হয় এবং ইহাতে জীবের অভীষ্ট সিদ্ধ হয়।
গায়ত্রী বেদের সর্বশ্রেষ্ঠ মন্ত্র। পরমাত্মার ধ্যানের জন্য গায়ত্রী সিদ্ধ বৈদিক মন্ত্র। এই মন্ত্রের দ্রষ্টা ঋষি বিশ্বামিত্র এবং দেবতা সবিতা। ঋষি বিশ্বামিত্র সর্বপ্রথম এই মন্ত্রের মর্ম্ম উপলব্ধি করে প্রচার করেছিলেন। মন্ত্রের দেবতা বা বিষয় সবিতা অর্থাৎ জগৎ-স্রষ্টা ব্রম্ম। বেদারম্ভ সংস্কারে আচার্য এই মন্ত্রে ব্রম্মচারীকে দীক্ষা দান করেন। এই মন্ত্রের ছন্দের নাম গায়ত্রী। গানকারীকে ত্রাণ করে বলে এই মন্ত্রের নাম গায়ত্রী। প্রতিদিন উপাসনায় গায়ত্রী মন্ত্র জপ বা পাঠ করা আবশ্যক। গায়ত্রী মন্ত্রে দশটি শব্দ আছে।
যেমন- তৎ, সবিতুঃ, বরেণ্যম্, ভর্গঃ, দেবস্য, ধীমহি, ধিয়ঃ, যঃ, নঃ, প্রচোদয়াৎ। গায়ত্রী মন্ত্রের পূর্ব্বে প্রণব মন্ত্র "ওঁ" এবং "ভূর্ভুবঃ স্বঃ"(ভূঃ, ভুয়ঃ, স্বঃ) যোগ করে উচ্চারণ করতে হয়।
"ওঁ" এই ওঙ্কার শব্দ পরমেশ্বরের সর্বোত্তর নাম। এতে অ, উ এবং ম্ এই তিন অক্ষর মিলে এক "ওঁ" সমুদায় হয়েছে। এই একটি নাম হতে পরমেশ্বরের অনেক নাম সূচিত হয়। "অ"কার হতে বিরাট, অগ্নি এবং বিশ্ব প্রভৃতি; "উ"কার হতে হিরণ্যগর্ভ, বায়ু, তৈজস্ব প্রভৃতি; "ম" কার হতে ঈশ্বর, আদিত্য এবং প্রাজ্ঞ প্রভৃতি নাম সূচিত হয়।
"ওঁ" আদি নাম সার্থক। রক্ষা করেন বলে পরমেশ্বরের নাম "ওঁ"। আকাশের ন্যায় ব্যাপক বলে "খম" এবং সর্বপেক্ষা বৃহৎ বলে "ব্রম্ম" ঈশ্বরের নাম।
(ওমিত্যে) "ওঁ" যাহার নাম, যিনি কখনও বিনষ্ট হন না, তাহার উপাসনা করা উচিত, অন্যের নয়।
(ওমিত্যেত) বেদাদি শাস্ত্র সমূহে "ওঁ" পরমেশ্বরের প্রধান নাম বলা হয়েছে, অন্য সমস্ত নাম গৌণিক।
(সর্বে বেদা) সকল বেদ ও সকল ধর্মানুষ্ঠান রুপ তপশ্চর্য্যা যার বিষয় বর্ণনা করে। যাকে মান্য করে এবং যার প্রাপ্তি কামনা করে ব্রম্মচর্য্য আশ্রমকে অবলম্বন করা হয়, তার নাম "ওঁ"।
"ভূঃ" অর্থ প্রাণস্বরুপ।(যিনি সর্ব প্রাণীকে প্রাণ দান করেন, যিনি প্রাণ স্বরুপ, তিনিই ভূঃ।)
"ভুবঃ" অর্থ দুঃখনাশক।(যিনি দুঃখ বিনাশ করেন)
"স্বঃ" অর্থ সুখ স্বরুপ। (যিনি সর্বত্র ব্যাপক বা যিনি আনন্দস্বরুপ তিনিই স্বঃ।)
"তৎ" অর্থ সেই।
"সবিতুঃ" অর্থ সমগ্র জগতের উৎপাদক।
"বরেণ্যম্" অর্থ বরণ যোগ্য সর্বোত্তম।
"ভর্গোঃ" অর্থ পাপ নাশক তেজকে।
"দেবস্য" অর্থ সমগ্র ঐশ্বর্য দাতা। (পরমত্মা দাতা, জ্ঞানের উদ্দীপক এই অর্থে তিনি দেব।)
"ধীমহি" অর্থ ধারণ করি বা ধ্যান করি।
"ধিয়ঃ" অর্থ প্রজ্ঞা সমূহকে বা নির্ম্মল বুদ্ধির।
"যঃ" অর্থ যিনি
"নঃ" অর্থ আমাদের
"প্রচোদয়াৎ" অর্থ প্রেরণা দান করেন।
ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ
[তথ্যসূত্রঃ সত্যার্থ প্রকাশ, পৃষ্ঠা ১-৩।]কলিসন্তরণোপনিষদ্ গ্রন্থের সাথে বৈদিক কোন গ্রন্থের কোন সম্পর্ক নেই। মধ্যযুগে বৈষ্ণব কিছু পণ্ডিত দ্বারা এই বইয়ের তালিকাবদ্ধ। সম্ভবত রঘুনন্দন বইটি লিখেছিল। এই বইয়ে সর্বপ্রথম হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। এই উপনিষদ্টি সম্ভবত ১৫০০ খ্রিষ্টাব্দের পূর্বে রচিত হয়। খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মগুরুরা এটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন।এই ছোটো গ্রন্থটিতে দুটি মাত্র শ্লোক আছে। বৈষ্ণবরা এই "হরে কৃষ্ণ" মন্ত্রকে 'মহামন্ত্র’ বলে প্রচার করে,যদিও তা ভিত্তিহীন। মন্ত্রে "হরে" শিবের আরেক নাম হর থেকে হরে এসেছে যা দেবী রাধার নাম আটবার উচ্চারিত হয়েছে। সেই সঙ্গে অপর দুই হিন্দু অবতার কৃষ্ণ ও রামের নাম চারবার করে উচ্চারিত হয়েছে। এই গ্রন্থের মতে, এই মন্ত্রটি সজোরে উচ্চারণ করলে কলিযুগের সকল কুপ্রভাব কেটে যায়।যদিও এই গ্রন্থ ভিত্তিহীন তবুও ধর্মপ্রাণ বৈষ্ণবরা এটি মানেন।চৈতন্যভাগবত অনুুুুসারে যারা হরেকৃৃৃৃষ্ণ মহামন্ত্র পাঠ করে তারা মূূূূর্খ।
বেদব্যাস শ্রীমদ্ভাগবতের রচয়িতা নন, শুক দেবও পরীক্ষিতকে ভাগবত নামক বৈষ্ণব গ্রন্থ শোনান নি ! ভাগবতের টীকাকরা শ্রীধর স্বামী খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর লোক। ইনি আচার্য্য শঙ্করের পরে এসেছিলেন।
খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে শঙ্কর আবির্ভূত হয়ে অদ্বৈতবাদের প্রতিষ্ঠা করে যান। তিনি প্রধান প্রধার উপনিষদ, ব্রহ্মসূত্র এবং গীতার টীকা ভাষ্যাদি রচনা করে গেছেন। তাঁর প্রচারের মধ্যে ভাগবতের নামগন্ধও নেই। তাতেই মনে হয়, এই বৈষ্ণবমান্য ভাগবতটি আচার্য্য শঙ্করের পরে এবং শ্রীধর স্বামীর পূর্ব্বে লিখিত হয়েছে। বিশেষ করে ঐ ভাগবতেরই দ্বিতীয় ঋদ্ধের সপ্তম অধ্যায়ে এবং চতুর্থ ঋন্ধের উনবিংশ অধ্যায়ে জৈন বৌদ্ধ তান্ত্রিক কাপালিক ধৰ্ম্মাদিকে ‘পাষণ্ড মত' বলে নিন্দা করা হয়েছে। কাজেই জৈন এবং বৌদ্ধ ধর্ম ভারতবর্ষে প্রচারিত হওয়ার পরে যে ভাগবত রচিত এ সম্বন্ধে কোন সন্দেহই করা যেতে পারে না। কাজেই বেদব্যাসের লেখা কি করে হতে পারে ? আর্য্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা দিগ্বিজয়ী পণ্ডিত মহর্ষি দয়ানন্দের মতে শ্রীমদ্ভাগবত ‘হিমাদ্রি' গ্রন্থ রচয়িতা বোপদেবের লেখা [ সত্যার্থ প্রকাশঃ, ৩৭২পৃঃ ]। 'হিমাদ্রি' গ্রন্থে লিখা আছে,
‘গ্রীমদ্ভাগবতং নাম পুরাণঞ্চ ময়েরিতম্,
বিদুষ বোপদেবেন শ্রীকৃষ্ণস্য যশোন্বিতম্।
ভাগবত যে বোপদেবের লেখা, সে কথা নগেন সরকার প্রণীত বাংলা ‘বিশ্বকোষ" এবং সুবলমিত্রের বাংলা অভিধান (৬ষ্ঠ সংস্করণ) গ্রন্থেও উল্লেখ আছে।
শ্রীল প্রভুপাদ হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্রটিকে জনপ্রিয় করে তুলেন।তিনি নিজেই বৈষ্ণব মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন।প্রভুপাদ সমাজের উন্নতি না করে ক্ষতি করেছেন।
सामवेद - मन्त्र संख्या : 651
उ꣡पा꣢स्मै गायता नरः꣣ प꣡व꣢माना꣣ये꣡न्द꣢वे । अ꣣भि꣢ दे꣣वा꣡ꣳ इय꣢꣯क्षते ॥
পদার্থ- হে ( নর) মনুষ্য! তোমরা ( দেবান্) অহিংসা,সত্য, ন্যায় আদি দিব্যগুণের (ইয়ক্ষতে) প্রদান করতে ইচ্ছুক ( অস্মৈ) এই ( পবমানায়) পবিত্রতা দানে ( ইন্দ্রবে) আনন্দরসে প্রশংসনীয় পরমাত্মার ( উপগায়ত) নিকটে থেকে স্তুতি গীত গায়ন করিবেন। [সামবেদ ৬৫১]
ভাবার্থ-সকল স্ত্রী-পুরুষের উচিত জগদীশ্বরের স্তুতিগীতের কীর্ত্তন করা আর তাঁহার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এবং আপনার উন্নতি করিবেন।।
"নাম সংকীর্ত্তনাদের বির্নির্যান্তি পাতকাঃ"- এই সংকীর্ত্তন খোল করতালসহ তান্ডব নর্ত্তন বা কর্ণপটহবিদারী কোন কলরোল নয়, এ হ'ল 'অন্তবি সংকীর্ত্তন', সেই 'Internal Melody', সেই 'Song Celestial'- ব্রহ্ম-Region থেকে আসছে যে ধ্বনি, ক্লীং এর ঝঙ্কার।
যে ব্রহ্মসংহিতার উপর ভিত্তি করে বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের লম্ফঝম্প, তাতে বৃন্দবন এবং গোকুল সম্বন্ধে কি বলা আছো দেখঃ
" সহস্র পত্র কমলং গোকুলাথ্যাং মহৎপদং
তৎকর্ণিকারং তদ্ধাম তদনন্তাংশ সম্ভবং"
অর্থাৎ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের যে মহ( ধাম তার নাম গোকুল,এটি সহস্র পদ্মবিশিষ্ট। এই পদ্মের কর্ণিকা সকল,তনন্তদেবের অংশভূত যে স্থান,তার নাম গোকুল।
।পরব্রহ্ম-Region এ যে অপ্রাকৃত বৃন্দবন সেই চিন্ময় ভুমির presiding deity কে 'কৃষ্ণ' বলা হয়। ওখান থেকে যে sound-current আসে তার সঙ্গে জীব যুক্ত হলেই তা আকর্ষণ করে
'কৃষ্ণভূমি সেই সহস্রার কর্ণিকোপরি গোকুলাখ্য মহাপূরী'তে নিয়ে যাবে। এটি আকর্ষণ করে বলে এর নাম , এই attribute অনুযায়ী'কৃষ্ণনাম' দেওয়া হয়েছে। কাজেই কৃষ্ণনাম বলতে 'কৃ' 'ষ্ণ' এই
অক্ষরগুলির সলযোগে বর্ণাত্মক নাম নয়; ঐ Current জীবের মন প্রাণকে অন্তরপথে হরণ করে নিয়ে যায় বলেই তা 'হরিনাম'; হরি এই বর্নাত্মক কথাটা নয়।
যেমন আজকাল ঠাকুর-দেবতার নাম অনুযায়ী ইন্দ্র, চন্দ্র, রাম, নারায়ণ, কৃষ্ণ, অর্জ্জুন, বাসুদেব ইত্যাদি রাখা হয় তাই বলে ইন্দ্র সান্যাল, হরি বসু, রাম চ্যাটার্জ্জী, বাসুদেব মিত্র- কেউ ঐ সব ঠাকুর দেবতা বা ঐতি হাসিক পুরুষ ন'ন, তেমনি ব্রহ্ম-পরব্রহ্মভূমির অধিষ্ঠাতা দেবতার নামানুযায়ী বাসুদেবের পুত্রের নাম কৃষ্ণ বা দশরথ পুত্রের নাম রাম রাখা হয়েছিল, তাই বলে তাঁরা কেউ-ই সাক্ষাৎ ব্রহ্ম পরব্রহ্মবা ঈশ্বর নন।
যেমন এর পূর্বে বলেছি, Electric current ই অন্ধকার দূর করে আলো, বিজলী কিংবা Electricity প্রভৃতি কথাগুলো নয়, ই সব শব্দের দ্বারা current টাকে, light টাকেই mean করা হয়, তেমনি সহস্রার চক্র থেকে যে current আসছে, মনুষ্যভাষায় প্রকাশ করলে যা ক্লীং ক্লীং বলে মনে হয়, যার সঙ্গে যুক্ত হলে জীবাত্মাকে সহস্রারে আকর্ষণ করে নিয়ে যাবে ঐ আকর্ষণী শব্দধারাই হরিনাম কৃষ্ণনাম বা কৃষ্ণের বাঁশী।
এই কৃষ্ণনাম একবার করলে অর্থাৎ বারেক ঐ ধারার সঙ্গে যুক্ত হলে সব পাপ তাপ দূরে যাবে; কারণ চেতন রাজ্যের অনুভূতি পেলে জীবের কামনা বাসনা রিপুর তাড়না কিছুই থাকবে না। এই কৃষ্ণের বাঁশী একমাত্র রাধা বা চৈতন্য প্রভৃতি সাধককে ডেকেই খতম হয়ে যায়নি, যে ঐ ধারার সঙ্গে আজও যুক্ত হতে পাবে, সেই হয়ে যাবে আনন্দ বিভোর।
"একবার কৃষ্ণনামে যত পাপ হরে পাতকীর শক্তি নাই অত পাপ কর"- বৈষ্ণবরা এই কথা ও নিজেদের ব্যবসা চালিয়ে রাখার জন্য স্বকপোল কল্পিত, বেদশ্রুতি বিরুদ্ধ, নানা রকম অর্ব্বাচীন গ্রন্থ রচনা করেন, নিত্যনূতন এক একটা পুরাণ উপনিষদ যেমন প্রভাস পুরাণ, বিষ্ণু পুরাণ, গোপালতাপনী উপনিষদ্,নৃসিংসতাপনী উপনিষদ্, রাধাউপনিষদ্, ললিতাসখী উপনিষদ, নিত্যানন্দোপনিষদ বা চৈতন্যোপনিষদ্ নাম দিয়ে এইগুলি কেই শ্রেষ্ঠ বলে কৃষ্ণনামের ঢক্কানিনাদ করলেও, বেদ-উপনিষদাদি -যে সমস্ত প্রামাণিক গ্রন্থে কৃষ্ণ-প্রশস্তি নেই সেগুলিকে বালকোলাহল করলেও, মিথ্যা কোনদিন সত্য হবে না। সত্যও কোনদিন ম্লান হবে না।
চৈতন্যদেব বলেছেন "হরের্ণামৈব কেবলম্" হরের্ণাম অর্থাৎ হরির নাম বা হরিনাম, ওর অর্থ ভিন্ন হরির নাম (সহস্রাধার চক্রের ক্লীং সাউন্ড) জীবাত্মাকে বাহ্যজগৎ থেকে অন্তর্জগতে, তমঃ থেকে জ্যোতির পথে হরণ করে নিয়ে যায় বলে সহস্রাধার চক্রের ক্লীং সাউন্ডকে হরের্নাম বলেছেন। বাস্তবে দেখা গেছে প্রত্যেক সম্প্রদায়ই প্রত্যেকের ইষ্টনামের অভিস্তুতি করে গেছেন। বর্ণাত্বক কৃষ্ণনাম লক্ষ কোটিবার জপ নিষ্ফল।
বর্ণাত্বক কোন নামই সঠিক নয়, নাম হত্ছে ধ্বন্যাত্বক চেতন ধারা.. যা নির্মল চৈতন্য দেশ থেকে আসছে, তারই সঙ্গে যুক্ত হলে তবেই জীবের হয় মুক্তি, দয়ালদর্শন। বর্ণাত্বক কোন নামেই importance নেই। জীবাত্মা যদি পরমাত্মাকে না ডাকে তাঁর ক্ষতি বৃদ্ধি নেই, দয়াল তিনি, তাঁর দয়ার ধারা হ'তে কাউকে তিনি বঞ্চিত করেন না, কিন্তু ত্রিতাপ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য শাশ্বত আনন্দলাভের জন্য, পূর্ণপ্রজ্ঞায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য, জীবেরই পরমপ্রয়োজন তাঁকে ডাকা-জানা আর বোঝা। তুমি যে তাঁকে (ঈশ্বেরকে) ডাকছো বা তাঁর কতা ভাবছো, এটা তাঁর বোঝা [understanding by Him] এক জিনিষ, আর তাঁকে তোমার বোঝা [To understand Hin] আর এক জিনিষ। তুমি যে তাঁকে বাবার বদলে "হাবা বা "গাধা", "হরেকৃষ্ণ" এর বদলে "টরেকৃষ্ণ" বলে ডেকে ধন্য করছো বেচারার যখন সর্বান্তর্য্যামিত্ব আর সর্ব্বব্যাপকত্ব আছে, তখন সেটা তাঁকে বুঝতেই হচ্ছে, তিনি তা নিশ্চয় বুঝছেন, কিন্তু এই বোঝাটা তাঁর প্রয়োজন, না তাঁকে বোঝা এবং জানাটাই জীবের পরম প্রয়োজন..?
তিনি যখন সর্ব্বব্যাপক, তোমার অন্তর্সত্তা বহির্সত্তা ব্যেপে যখন তিনিই বিরাজ করছেন, তবে ত আমরা তাঁর কোলেই আছি তবুও তাঁকে আমরা দেখতে পাচ্ছিনা কেন..? করাণ, আমাদের বাসনা কর্ম্ম অহং এর আবরণে, পঞ্চকোষের আচ্ছাদনে ঢাকা আছে বলে। পঞ্চকোষের আবরণ, অহংএর পর্দা, বাসনার জাল ছিন্ন ভিন্ন হলেই বুঝবো সর্ব্বব্যাপক দাতা দয়াল আমাদের এক পলক এক পল হতেও দূরে নেই। যে সমস্ত মহাপুরুষ তাঁকে উপলব্ধি করে তাঁর সম্বন্ধে বলে গেছেন, আমরা তাঁদেরই কথা কপ্চাচ্ছ (ইহা শব্দপ্রমান বলা হয়)।
পরব্রহ্ম (region)এ যে অপ্রাকৃত বৃন্দন সেই চিন্ময় ভুমিকে "কৃষ্ণ" বলা হয়। ওখান থেকে যে sound-current আসে তার সঙ্গে জীব যুক্ত হলেই তা আকর্ষণ করে বলে এর নাম attribute অনুযায়ী "কৃষ্ণনাম" দেওয়া হয়েছে। কাজেই কৃষ্ণনাম বলতে "কৃ" "ষ্ণ" এই অক্ষরগুলির সংযোগের বর্ণাত্বক নাম নয়; ঐ current (ক্লীং ধ্বনি) জীবের মন প্রাণকে অন্তপথে হরণ করে নিয়ে যায় বলেই তা "হরিনাম"; "হরি" এই বর্ণাত্বক কতাটা নয়।
যেমন আজকাল ঠাকুর-দেবতার নাম অনুযায়ী ইন্দ্র,চন্দ্র,রাম নারায়ণ,কৃষ্ণ,অর্জ্জুন, বাসুদেব ইত্যাদি রাখা হয় তাই বলে ইন্দ্র সান্যাল, হরি বসু বা রাম চ্যাটার্জ্জী কেউ ঐ সব দেবতা বা পরমেশ্বর হবেন না। তেমনই ব্রহ্ম-পরব্রহ্মভূমির অধিষ্ঠাতা দেবতার নামানুযায়ী বাসুদেবের পুত্রের নাম কৃষ্ণ রাখা হয়েছিল, তাই বলে তিনি সাক্ষাৎ ব্রহ্ম পরব্রহ্ম নন। সঠিক যোগসাধনা দ্বারা inward music, ক্লীং-তান, mainfested হয়। এই হলো যথার্থ 'শ্রীকৃষ্ণসংকীর্ত্তন" এটা কৃষ্ণ কৃষ্ণ রাম রাম বলে চিৎকার করা নয়। মহাপুরুষদের রূপক, সামধির ভাষা, মর্ম্মকথা না জেনেই ভন্ড আর অজ্ঞরা যত সব অনর্থ সৃষ্টি করেছ। মহাপ্রভু এবং অন্যান্য সাধুরা নাম বলতে প্রকৃতপক্ষে তাঁরা কিসের ইঙ্গিত করতেন তা বোঝা দরকার।
"হরে কৃষ্ণ" নামের এই মহামন্ত্র(বৈষ্ণব মতে) ১৬ নাম ও ৩২ অক্ষরের কিনা বিশ্লেষণঃ
এখানে ১৬টি নাম নয়, আছে ১৬টি শব্দ এবং ১৬টি শব্দে মাত্র ৩টি নামই বারবার ব্যবহার হয়েছে, সেই তিনটি নাম হলো- হরে, কৃষ্ণ ও রাম। আর এই ১৬টি শব্দে মোটেই ৩২ অক্ষর নেই, আছে আরো বেশি, সেগুলোর হিসাব নিচে দিচ্ছি।
এই প্রসঙ্গে বর্ণ ও অক্ষর সম্বন্ধে কিছু বলা দরকার। যারা কবিতার নাড়ী নক্ষত্র ভালো বোঝেন, তারা জানে ন যে, অক্ষর ও বর্ণ এক জিনিস নয়। বর্ণ কী, সেটা তো সবাই জানেন, কিন্তু বর্ণের সমর্থক শব্দ হিসেবে অক্ষরকে অনেকে মনে করলেও, আসলে অক্ষর হলো কোনো শব্দের যতটুকু অংশকে একবারে উচ্চারণ করা যায়, সেটা। কিন্তু এই ১৬ নাম ৩২ অক্ষর থিয়োরির প্রবক্তাদের এত গভীরে যাওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই, তারা অক্ষর বলতে বর্ণকেই বুঝে থাকে, সেই হিসেবেই দেখুন এই ১৬ শব্দে মোট কতটি বর্ণ আছে-
হরে= হ+র+এ= ৩ গুনন ৮= ২৪টি বর্ণ ( হরেকৃষ্ণতে হরে আছে ৮ বার)
কৃষ্ণ= ক+র+ষ+ণ= ৪ গুনন ৪= ১৬ টি বর্ণ (কৃষ্ণ আছে ৪ বার)
রাম= র+আ+ম = ৩ গুনন ৪= ১২ টি বর্ণ (রাম আছে ৪ বার)
এভাবে ১৬টি শব্দে মোট বর্ণ আছে ৫২ টি।
হরে= হ+ রে= ২ গুনন ৮= ১৬ টি
কৃষ্ণ= কৃষ+ ণো= ২ গুনন ৪= ৮ টি
রাম= ১ গুনন ৪= ৪ টি
এভাবে'হরে কৃষ্ণ' মহামন্ত্রে অক্ষর সংখ্যা ২৮ টি।
কৌশল-বিচার-উপায়-যুক্তিই হ'ল মন্ত্র
সর্বকালে, সর্বশ্রাস্ত্রে, সর্বসম্প্রদায়,জ্ঞানি,গুণী ও আর্য ঋষিগণ এই গায়ত্রী মহামন্ত্রের শ্রেষ্ঠত্ব একব্যাক্যে স্বীকার করিয়াছেন।
অথর্ব বেদের ১৯-১৭-১ মন্ত্র বলা হইয়াছে,
ইহার সাহায্য আমরা,
আয়ু, বল, ধন, যশ, কীর্তি, সুখ, শ্রদ্ধা,
ব্রহ্ম তেজ এমনকি সর্বশ্রেষ্ঠ ব্রক্ষ্মলোক পর্যন্ত প্রাপ্ত করিতে পারি।
পরমাত্মা সর্ব রক্ষক, তিনি প্রাণস্বরূপ,
দুঃখনাশক আনন্দ স্বরূপ।
আমরা জগৎস্রষ্টা, জ্যোতির্ময় পরমেশ্বরের প্রত্যক্ষ বরণীয় শুদ্ধ, স্বরূপকে ধ্যান করি।
যিনি আমাদের নির্মল বুদ্ধির প্রেরণা দান করেন।
( ঋগ্বেদঃ- ৩মন্ডল- সুক্ত৬২ মন্ত্র১০।
যজুর্বেদঃ- অধ্যায় ৬ মন্ত্র ৩৫।
সামবেদঃ- উত্তরার্চিক প্রপাঠক - ৩ মন্ত্র ১০।
অনেকে এটাও বলে যে, কলিযুগে নাম কির্তনই উদ্ধারের পথ । এই কথাটাও হাস্যকর । কারণ এই কথাটা বৈদিক শাস্ত্রে কোথাও নেই । এটা মানুষ ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে বলে থাকে ৷ আর যদি সেটা যুগধর্ম বলা হয়, তাহলে আসুন, যুগধর্ম নিয়ে শাস্ত্র কি বলে দেখে নিই -
“সত্যযুগে তপস্যাই মানুষের শ্রেষ্ঠ ধর্ম,
ত্রেতাযুগে জ্ঞানই (আত্মজ্ঞানই) শ্রেষ্ঠ,
দ্বাপরে যজ্ঞ এবং কলিতে একমাত্র দানই শ্রেষ্ঠ।”-মনুসংহিতা - ১/৮৬
এখানে দেখুন মনুসংহিতায় কলিযুগে দানকে শ্রেষ্ঠ বলেছে । সুতরাং যারা নাম কির্তনকে কলিযুগের যুগধর্ম হিসেবে প্রচার করছে, তারা মিথ্যা বলছে । তাদের কাছে যথাযথ প্রমাণ নেই । আপনি এখন কি করবেন ? মানুষের কথা ধর্ম পালন করবেন নাকি শাস্ত্র অনুযায়ী ? এটা নির্ভর করছে আপনার উপর ।
মিমীহি শ্লোকমাস্যে পর্জন্য ইব ততনঃ
গায় গায়ত্রমুক্থ্যম্।।
( ঋগ্বেদ ১/৩৮/১৪)
मि॒मी॒हि श्लोक॑मा॒स्ये॑ प॒र्जन्य॑इव ततनः । गाय॑ गाय॒त्रमु॒क्थ्य॑म् ॥
पदार्थान्वयभाषाः -हे विद्वान् मनुष्य ! तू (आस्ये) अपने मुख में (श्लोकम्) वेद की शिक्षा से युक्त वाणी को (मिमीहि) निर्माण कर और उस वाणी को (पर्जन्य इव) जैसे मेघ वृष्टि करता है वैसे (ततनः) फैला और (उक्थ्यम्) कहने योग्य (गायत्रम्) गायत्री छन्दवाले स्तोत्ररूप वैदिक सूक्तों को (गाय) पढ़ तथा पढ़ा ॥
भावार्थभाषाः -इस मंत्र में उपमालङ्कार है। हे विद्वानों से विद्या पढ़े हुए मनुष्यों ! तुम लोगों को उचित है कि सब प्रकार प्रयत्न के साथ वेद विद्या से शिक्षा की हुई वेदवाणी से वाणी के वेत्ता के समान वक्ता होकर वायु आदि पदार्थों के गुणों की स्तुति तथा उपदेश किया करो ॥
[মনুষ্যদিগের উচিত সমস্ত রকম প্রচেষ্টার মাধ্যমে বেদ বিদ্যা অর্জন করা ও তার যথাযথ প্রচার করা.. ]
যজুর্বেদ ৪০/১৫ তে বলা আছে ও৩ম্ জপ করো, গীতা ৮/১৩ তে কৃষ্ণজাী সেই একই ও৩ম্ জপ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়। বেদে সর্বত্র এই পরম সত্যটি পুনঃপুনঃ কথিত হয়েছে। “একং সন্তং বহুধা কল্পয়ন্তি” ঋগ্বেদ ১০।১১৪।৫ =এক ঈশ্বরকেই বিভিন্ন নামে সম্বোধন করা হয়, “য় এক ইত্তমু ষ্টুহি কৃষ্টীনাং বিচর্ষণিঃ। পতির্জজ্ঞে বৃষক্রতুঃ॥” ঋগ্বেদ ৬।৪৫।১৬ = তোমাদের ঈশ্বরের স্তুতি ও প্রার্থনা করা উচিত, যিনি একাই সর্বজ্ঞ এবং সুষ্ঠুভাবে জানেন সকল জীবের কার্যক্রম। তিনিই এই মহাবিশ্বের কর্তা এবং তিনিই সর্বশক্তিমান এবং তিনিই আমাদের নানা ধরনের ধনসম্পদ দান করেন। সামবেদীয় ছান্দোগ্য উপনিষদে [৬।২।১-২] দৃঢ়ভাবে বলা হয়েছে যে, ঈশ্বর একজনই এবং দ্বিতীয় কোন ঈশ্বর নেই “একমেবাদ্বিতীয়ম্” = [ঈশ্বর] কেবল এক এবং অদ্বিতীয় ।
🥀 পরমাত্মার অসংখ্য নাম রয়েছে । মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী 'সত্যার্থ প্রকাশ' ১ম সমুল্লাসে পরমাত্মার ১০০ নাম ব্যাখ্যা করার পর বলেছেন "... পরমেশ্বরের অসংখ্য নাম রয়েছে । কারণ পরমেশ্বরের গুণ - কর্ম - স্বভাব যেমন অনন্ত তেমনই তাঁর নামও অনন্ত.. আমার এই নামগুলো সমুদ্রে বিন্দুর ন্যায় "। অর্থাৎ বেদে পরমাত্মার আরো অসংখ্য গুণবাচক নাম রয়েছে । বিশেষ্য বা বিশেষণ রূপেও আমরা সেসকল শব্দ পেয়ে থাকি৷ । মহর্ষি মঙ্গলাচরণে 'অথ' ও 'ওম্' প্রয়োগ করতে বলেছেন 'হরি ওম্' ব্যতীত তা দেখে অনেকে ভাবেন বেদে সম্ভবতঃ হরি পরমেশ্বরবাচক হিসেবে নেই। কিন্তু তা ঠিক নয় কেননা মহর্ষি এখানে আর্ষ পরম্পরার মঙ্গলাচারণ নিয়েই কথা বলছেন, পরমাত্মার নাম কিনা সেটি তা নিয়ে নয় ।
🌼 বেদে বহুস্থলে পরমাত্মার জন্য 'হরি' শব্দের প্রয়োগ দৃষ্ট হয় । আমরা আজ সরলার্থসহ সেই সুধা আস্বাদন করবো -
✅
অয়া রুচা হরিণ্যা পুনানো বিশ্বা দ্বেষাংসি তরতি সয়ুগ্বভিঃ সূরো ন সয়ুগ্বভিঃ।
ধারা পৃষ্ঠস্য রোচতে পুনানো অরুষো হরিঃ।
বিশ্বা য়দ্রূপা পরিয়াস্যৃক্বভিঃ সপ্তাস্যেভিরৃক্বভিঃ ॥
সামবেদ ৪৬৩
▪️সরলার্থঃ এই সোম অর্থাৎ ইন্দ্রিয়কে কর্মে প্রেরণকারী আত্মা এই হৃদয়হারিণী তেজস্বিতা দ্বারা পবিত্রতা দিয়ে সঙ্গী প্রাণের সাথে মিলে সমস্ত দ্বেষকারী বিঘ্ন অথবা কাম, ক্রোধ আদি ছয়টি রিপু অতিক্রম করে নেয়, যেভাবে সূর্য সহযোগী কিরণ দ্বারা সমস্ত শত্রুভূত অন্ধকারকে অতিক্রম করে। প্রকাশসেচক আত্মারূপ সোমের প্রকাশ-ধারা ভাসমান হয়। তেজ দ্বারা আরোচমান ❝ পাপপ্রবৃত্তিবিনষ্টকারী তুমি ❞ এই আত্মারূপ সোম আমাদের মন, বুদ্ধি আদিকে পবিত্র কর; যখন তুমি প্রভূত স্তুতিযুক্ত কর্মের সাথে এবং প্রশংসনীয় পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয়, মন ও বুদ্ধি এই সপ্তমুখ প্রাণের সাথে সব রূপধারী মানবকে প্রাপ্ত হও ।
✅
অচিক্রদদ্বৃষা হরির্মহান্মিত্রো ন দর্শতঃ।
সং সূর্য়েণ দিদ্য়ুতে ॥
সামবেদ ৪৯৭
🔸সরলার্থঃ পরমেশ্বর জীবাত্মাকে আহ্বান করে- হে মেধাবী উপাসক ! আমাকে একবার আপন করেই তো দেখো। দেখো আমি কিভাবে- ১.তোমার জন্য সুখের বর্ষক হই, কিভাবে তোমাকে শক্তিশালী করি। ২.❝ আমি তোমার দুঃখসমূহের হরণকারী, সকল মলিনতা -তামসিকতাকে দূরকারী❞। তোমার শরীরকে যেমন শক্তিশালী করি সেভাবেই মনকে করি নির্মল। ৩.আমি তোমার হৃদয়কে উপাসনার ইচ্ছা দ্বারা পরিপূর্ণ করি কিংবা উদার করি। ৪.আমার দ্বারা তুমি সূর্যের ন্যায় দর্শনীয় হও-তেজস্বী হও। পরমেশ্বরের কৃপা দ্বারা মেধাবী উপাসক নিজের চোখ-দৃষ্টিকোণ দ্বারা সম্যকরূপে উজ্জ্বল হয়। অর্থাৎ এহেন ভক্তের দৃষ্টিকোণ অত্যন্ত সুন্দর হয়। সে সংসারে বুদ্ধি দ্বারা ও বুঝেশুনে জীবন নির্বাহ করে ।
क꣡नि꣢क्रन्ति꣣ ह꣢रि꣣रा꣢ सृ꣣ज्य꣡मा꣢नः꣣ सी꣢द꣣न्व꣡न꣢स्य ज꣣ठ꣡रे꣢ पुना꣣नः꣢ । नृ꣡भि꣢र्य꣣तः꣡ कृ꣢णुते नि꣣र्णि꣢जं꣣ गा꣡मतो꣢꣯ म꣣तिं꣡ ज꣢नयत स्व꣣धा꣡भिः꣢ ॥५३०॥
কনিক্রন্তি হরিরা সৃজ্যমানঃ সীদন্বনস্য জঠরে পুনানঃ।
নৃভির্য়তঃ কৃণুতে নির্ণিজং গামতো মতিং জনয়ত স্বধাভিঃ ॥ সামবেদ ৫৩০
पदार्थ
प्रथम—सोम ओषधि के पक्ष में। (हरिः) हरे रंग का सोम (आ सृज्यमानः) द्रोणकलश में छोड़ा जाता हुआ (कनिक्रन्ति) शब्द करता है। (वनस्य) जंगल के (जठरे) मध्य में (सीदन्) स्थित वह (पुनानः) वायुमण्डल को पवित्र करता है। (नृभिः) यज्ञ के नेता ऋत्विजों से (यतः) पकड़ा हुआ वह सोम (गाम्) गोदुग्ध को (निर्णिजम्) अपने संयोग से पुष्ट (कृणुते) करता है। (अतः) इस कारण, हे यजमानो ! तुम (स्वधाभिः) हविरूप अन्नों के साथ, सोमयाग के प्रति (मतिम्) बुद्धि (जनयत) उत्पन्न करो, अर्थात् सोमयाग के निष्पादन में रुचि लो ॥ द्वितीय—परमात्मा के पक्ष में। (हरिः) पापहारी परमेश्वर (आसृज्यमानः) मनुष्य के जीवात्मा के साथ संयुक्त होता हुआ (कनिक्रन्ति) कर्तव्याकर्तव्य का उपदेश करता है। (वनस्य) चाहनेयोग्य अपने मित्र उपासक मनुष्य के (जठरे) हृदय के अन्दर (सीदन्) बैठा हुआ वह (पुनानः) पवित्रता देता रहता है। (नृभिः) उपासक जनों से (यतः) हृदय में नियत किया हुआ वह (गाम्) इन्द्रिय-समूह को (निर्णिजम्) शुद्ध (कृणुते) करता है। (अतः) इस कारण, हे मनुष्यो ! तुम (स्वधाभिः) आत्मसमर्पणों के साथ, उस परमेश्वर के प्रति (मतिम्) स्तुति (जनयत) प्रकट करो ॥८॥ इस मन्त्र में श्लेषालङ्कार है। उपमानोपमेयभाव गम्य है ॥
भावार्थ
जैसे द्रोणकलश में पड़ता हुआ सोम टप-टप शब्द करता है, वैसे ही मनुष्यों के आत्मा में उपस्थित परमेश्वर कर्तव्य का उपदेश करता है। जैसे गोदूध से मिलकर सोम उस दूध को पुष्ट करता है, वैसे हृदय में निगृहीत किया परमेश्वर इन्द्रियों को पुष्ट और निर्मल करता है। अतः परमेश्वर के प्रति सबको स्तुतिगीत गाने चाहिएँ ॥-सामवेद भाष्य (आचार्य रामनाथ वेदालंकार
▪️ সরলার্থঃ ❝ পাপপ্রবৃত্তির হরণকারী পরমেশ্বর ❞ মানবজাতিকে জীবাত্মার সাথে সংযুক্ত হয়ে কর্তব্যাকর্তব্যের উপদেশ প্রদান করেন। কামনাযোগ্য নিজ মিত্র উপাসক মানবের হৃদয় অভ্যন্তরে স্থিত তিনি পবিত্রতা দান করেন। মুমুক্ষু উপাসকগণের দ্বারা হৃদয়ে উদ্দেশ্যকৃত সেই পরমাত্মা ইন্দ্রিয়কে শুদ্ধি করেন। এই কারণে, হে মানব ! তুমি আত্মসমর্পণের সাথে, সেই পরমেশ্বরের প্রতি স্তুতি প্রকাশ করো।
प꣡व꣢ते हर्य꣣तो हरि꣢꣯रति ह्वराꣳसि रꣳह्या । अभ्यर्ष स्तोतृभ्यो वीरवद्यशः ॥७७३॥
পবতে হর্য়তো হরিরতি হ্বরাংসি রংহ্যা ।
অভ্যর্ষ স্তোতৃভ্যো বীরবদ্যশঃ ॥ সামবেদ ৭৭৩
🔸সরলার্থঃ কামনা যোগ্য, অজ্ঞান, ❝ পাপপ্রবৃত্তি আদির হর্তা জগদীশ্বর ❞ দ্রুততার সহিত অতি কুটিলতাকে পার করে উপাসককে পবিত্র করে থাকে । হে জগদীশ্বর ! তুমি স্তুতিকারী উপাসকের জন্য বীরভাবের দ্বারা যুক্ত কীর্তি প্রাপ্ত করাও ।
अ꣣या꣢ चि꣣त्तो꣢ वि꣣पा꣢꣫नया꣣ ह꣡रिः꣢ पवस्व꣣ धा꣡र꣢या । यु꣢जं꣣ वा꣡जे꣢षु चोदय ॥८०५॥
অয়া চিত্তো বিপানয়া হরিঃ পবস্ব ধারয়া । যুজং বাজেষু চোদয় ॥
সামবেদ ৮০৫
▪️সরলার্থঃ হে পবমান সোম ! হে পবিত্রকর্তা পরমাত্মা ! আমরা তোমাকে মেধা দ্বারা অবগত হই। ❝ হে দুঃখ ও পাপপ্রবৃত্তিসমূহের হরণকর্তা ! ❞ গতিশীল তুমি আনন্দ ধারার দ্বারা স্তুতিকারী আমাকে পবিত্র কর। হে পরমাত্মা, আমি তোমার মিত্র ! জীবন সংগ্রামে বিজয় প্রাপ্তির জন্য আমাকে প্রেরণ কর।
उ꣣भय꣢तः꣣ प꣡व꣢मानस्य र꣣श्म꣡यो꣢ ध्रु꣣व꣡स्य꣢ स꣣तः꣡ परि꣢꣯ यन्ति के꣣त꣡वः꣢ । य꣡दी꣢ प꣣वि꣢त्रे꣣ अ꣡धि꣢ मृ꣣ज्य꣢ते꣣ ह꣡रिः꣢ स꣢त्ता꣣ नि꣡ योनौ꣢꣯ क꣣ल꣡शे꣢षु सीदति ॥८८७॥
উভয়তঃ পবমানস্য রশ্ময়ো ধ্রুবস্য সতঃ পরি যন্তি কেতবঃ ।
যদী পবিত্রে অধি মৃজ্যতে হরিঃ সত্তা নি যোনৌ কলশেষু সীদতি ॥
সামবেদ ৮৮৭
🔸সরলার্থঃ স্থির, অজর, অমর, সনাতন পবিত্রকর্তা পরমাত্মার প্রজ্ঞাপক দিব্য প্রকাশ-কিরণ প্রাত-সন্ধ্যা উভয় সময়েই, সন্ধ্যা-বন্দনার সময় উপাসক প্রাপ্ত হয়। যখন ❝ দোষ হরণকারী পরমাত্মা ❞ পবিত্র হৃদয় গৃহে ভক্তিভাবরূপ অলঙ্কার দ্বারা অলঙ্কৃত হয়, তখন হৃদয়রূপ গৃহে স্থিত অন্নময়, প্রাণময়, মনোময় আদি কোষে স্থিতি-লাভ করে, এবং উহাতে স্থিত আত্মা, মন, বুদ্ধি আদি সবাইকে প্রভাবিত করে।
त्वा꣡ꣳ रि꣢꣯हन्ति धी꣣त꣢यो꣣ ह꣡रिं꣢ प꣣वि꣡त्रे꣢ अ꣣द्रु꣡हः꣢ । व꣣त्सं꣢ जा꣣तं꣢꣫ न मा꣣त꣢रः꣣ प꣡व꣢मा꣣न वि꣡ध꣢र्मणि ॥१०१७॥
ত্বাꣳ রিহন্তি ধীতয়ো হরি পবিত্রে অদ্রুহঃ ।
বৎসং জাতং ন মাতরঃ পবমান বিধর্মণি ॥ সামবেদ ১০১৭
🔸সরলার্থঃ ❝ হে পবিত্রতাদায়ক রস ভণ্ডার জগদীশ্বর পাপপ্রবৃত্তি হরণকারী ❞ তোমাকে বিশেষরূপে সদ্গুণের ধারক পবিত্র অন্তরাত্মাতে দ্রোহরহিত ধী-বৃত্তিসমূহ ধ্যান করে, নবজাত বাছুরকে যেভাবে গো মাতা চাটতে থাকে।
स꣢ प꣣वि꣡त्रे꣢ विचक्ष꣣णो꣡ हरि꣢꣯रर्षति धर्ण꣣सिः꣢ । अ꣣भि꣢꣫ योनिं꣣ क꣡नि꣢क्रदत् ॥१२९३॥
স পবিত্রে বিচক্ষণো হরিরর্ষতি ধর্ণসিঃ । অভি যোনিং কনিক্রদৎ ॥
সামবেদ ১২৯৩
▪️সরলার্থঃ সেই বিশেষ দ্রষ্টা, দিব্য গুণ-কর্ম-স্বভাবের ধারণকারী, ❝ পাপপ্রবৃত্তি হরণকারী পরমেশ্বর ❞ উপদেশ দিয়ে নিজের নিবাসগৃহভূত জীবাত্মাকে লক্ষ্য করে পবিত্র হৃদয় মধ্যে পৌঁছে ।
ए꣣ष꣢ शु꣣꣬ष्म्य꣢꣯सिष्यदद꣣न्त꣡रि꣢क्षे꣣ वृ꣢षा꣣ ह꣡रिः꣢ । पु꣣ना꣢꣫न इन्दु꣣रि꣢न्द्र꣣मा꣡ ॥१२९०॥
এষ শুষ্ম্যসিষ্যদদন্তরিক্ষে বৃষা হরিঃ । পুনান ইন্দুরিন্দ্রমা ॥
সামবেদ ১২৯০
पदार्थ
(एषः) = यह नृमेध १. (शुष्मी) = शत्रुओं का शोषण कर देनेवाले बलवाला होता है २. (वृषा) = यह अद्भुत शक्तिवाला बनता है ३. (हरिः) = शक्ति का प्रयोग आर्तों की आर्ति के हरण में करता है, अतः हरि कहलाता है ४. (पुनान:) = अपने जीवन को पवित्र बनाये रखता है। अभिमानवश बल का प्रयोग औरों को पीड़ित करने में करने से मानवजीवन अपवित्र हो जाता है । ५. (इन्द्रः) = यह नृमेध शक्ति व पवित्रता आदि परमैश्वर्यों को प्राप्त करता है । ६. और ऐसा बनकर (अन्तरिक्षे) = अपने हृदयाकाश में (इन्द्रम्) = उस सर्वशत्रुविनाशक परमैश्वर्य के स्वामी प्रभु को (आ) = सर्वथा (असिष्यदत्) = प्रस्तुत करता है। इस नृमेध के हृदय में प्रभु-स्तोत्र प्रवाहित होते हैं । वास्तव में हृदय में बहनेवाला यह प्रभुस्तुति का प्रवाह ही नृमेध की 'शक्ति, ज्ञान व पवित्रता' का रहस्य है । इसका शरीर शक्तिशाली है, इसका मस्तिष्क ज्ञानाग्नि से दीप्त है और इसका हृदय पवित्रता से पूर्ण है, क्योंकि यह हृदय में निरन्तर प्रभु का ध्यान कर रहा है ।
🔸সরলার্থঃ এই বলবান, আনন্দবর্ষক, ❝ পাপপ্রবৃত্তিকে হরণকারী পরমেশ্বর ❞ জীবাত্মাকে চারি দিক থেকে পবিত্র করে মনোময় কোষে প্রবাহিত হচ্ছে ।
ए꣣तं꣢ त्रि꣣त꣢स्य꣣ यो꣡ष꣢णो꣣ ह꣡रि꣢ꣳ हिन्व꣣न्त्य꣡द्रि꣢भिः । इ꣢न्दु꣣मि꣡न्द्रा꣢य पी꣣त꣡ये꣢ ॥१२७५॥
এতং ত্রিতস্য যোষণো হরিꣳ হিন্বন্ত্যদ্রিভিঃ । ইন্দুমিন্দ্রায় পীতয়ে ॥
সামবেদ ১২৭৫
पदार्थ
(एतं हरिम्) = इस सब आधि-व्याधि व उपाधियों के हरनेवाले प्रभु को (त्रितस्य) = इस तीर्णतमअत्यन्त प्रबल‘काम, क्रोध, लोभ' रूप त्रिक [Traid] के (योषण:) = नष्ट करनेवाले [यूष हिंसायाम्], (अद्रिभिः) = न नष्ट करने योग्य [अविदारणीय], दृढ़-सङ्कल्पों से (हिन्वन्ति) = प्राप्त होते हैं। प्रभुप्राप्ति के लिए दो बातें आवश्यक हैं – १. काम, क्रोध, लोभ का नाश करना । २. प्रभु-प्राप्ति का दृढ़-सङ्कल्प। दृढ़-सङ्कल्प के बिना कामादि का नष्ट करना भी कठिन है।
ये (इन्दुम्) = परमैश्वर्यशाली, सर्वशक्तिमान् प्रभु को प्राप्त करने का इसलिए दृढ़-सङ्कल्प करते हैं कि प्रभु-प्राप्ति से ही १. (इन्द्राय) = परमैश्वर्य व शक्ति को प्राप्त करके हमें इन्द्र बनना है [इन्द्राय=इन्द्रत्व की प्राप्ति के लिए] तथा २. (पीतये) = रक्षा के लिए । प्रभु से सुरक्षित होकर ही हम अपने को वासनाओं से सुरक्षित कर पाते हैं।
इस प्रकार प्रभु-प्राप्ति के लिए दो साधन हैं – १. काम, क्रोध, लोभ के त्रित से ऊपर उठना तथा २. दृढ़-सङ्कल्प । ही इसके फल हैं— १. परमैश्वर्य की प्राप्ति और २. वासनाओं के आक्रमण से रक्षा ।
▪️সরলার্থঃ ধারণাবতী বুদ্ধিতে অধিক বৃদ্ধি হয়ে উপাসকের ধ্যানবৃত্তিসমূহ এই ❝ দুঃখহর্তা পরমেশ্বরকে ❞ জীবাত্মা দ্বারা পান করার জন্য প্রণব-জপ আদি প্রেরিত করে ।
🔴 এছাড়াও অন্যত্র নানা স্থালে 'হরি'র কথা উল্লেখ পাওয়া যায় -
১। ঋগ্বেদ ১০।৪৯।১১ ' হরিবঃ' = দুঃখহরণকারী পরমাত্মা
২। ঋগ্বেদ ১০।৭৯।৬ 'হরিঃ' = সংহারক
৩। ঋগ্বেদ ১০।৯৬।১ 'হরিভিঃ' = মানব দ্বারা উপাসিত পরমাত্মা
৪। ঋগ্বেদ ১০।৯৬।৩ ' হরিতঃ' = দুঃখহরণকারী, 'হরিঃ' = অজ্ঞান হরণকারী
' হরিবঃ ইন্দ্র' = দুঃখহর্তা পরমাত্মা
৫। ঋগ্বেদ ৮।২৪।৩,৫ ঋগ্বেদ ৮।৬১।৩ 'হরিবঃ ' = হে সংসাররক্ষক দেব, হে জগতাধিপতি
... ইত্যাদি ইত্যাদি ।
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ