👉(অমরকোষে ২/১০/৩৫)
প্রতিমানং প্রতিবিম্বং প্রতিমাপ্রতিয়াতনা প্রতিচ্ছায়া।।৩৫।।
প্রতিকৃতিরর্চা পুংসি প্রতিনিধি-
প্রতিমা অর্থাৎ ছবির নাম।।৮।।
১. প্রতিমান। ২. প্রতিবিম্ব। ৩. প্রতিমা। ৪. প্রতিছবি। ৫. প্রতিছায়া।।৩৫।।
৬. প্রতিকৃতি। ৭. অর্চা। ৮. প্রতিনিধি।
👉( বৈদিককোষ; পৃষ্টাঃ ৬৪১)
প্রতিমা প্রতিমীয়নোত পরিমীয়ন্তে সর্ব পদার্থা য়য়া সা
ভা০-পরিমাণসাধন পদার্থতোলনার্থম্ (বস্তু) ১৫ ৬৫
প্রতিমীয়তে য়য়া তৎপরিমাপক সদৃশ তোলনসাধন প্রতিকৃতিরাকৃতির্বা ৩২ ৩
প্রতিগোয়তে য়য়া ক্রিয়ায়া সা ১৪ ১৮
পরিমাণ, সাদৃস্য বা মূর্তি স০ প্র০ ৪৩২, ৩২ ৩
প্রতিনিধি প্রতিকৃতি, প্রতিমান তোলনসাধন, পরিমাণ, মূর্ত্যাদিকল্পনম্
ঋ০ ভূ০ ৩০০, ৩২ ৩, প্রতিমীয়তেহনয়া সা (য়য়া পরিমাণ ক্রিয়তো)
ঋ০ ভূ০ ১৪৭, ঋ০ ৮ ৭ ১৮০ ৩
ঈশ্বর এক বহু নামঃ
ইন্দ্রং মিত্রং বরুণমগ্নিমাহুরথো দিব্যঃ স সুপর্ণো গরুত্মান্।
একং সদ্বিপ্রা বহুধা বদন্ত্যগ্নিং য়মং মাতরিশ্বানমাহুঃ।।
(ঋ০ ১।১৬৪।৪৬; অথর্ব০ ৯।১০।২৮; নিরু০ ৭।১৮, ১৪।১; ঋগ্বেধা০ ১।২৫।৭; বৃহদেবতা ৪।৪২)
'একই সৎ স্বরূপ পরমাত্মাকে জ্ঞানীলোক অনেক প্রকারে ডেকে থাকেন। ইন্দ্র, মিত্র, বরুণ, অগ্নি, দিব্য, সুপর্ণ, উরুত্মান, সৎ, যম, মাতরিশ্বা আদি নামের দ্বারা একই পরমাত্মার বর্ণন করেন।'
অথর্ববেদে ঈশ্বরের একত্বার নিশ্চয়তা-
'সে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চাম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম আদি অনন্ত সংখ্যা দ্বারা বলা হয়নি। এই সম্পূর্ণ জগত তাহাতে নিঃশেষ হয়ে যায়। অর্থাৎ তাহার মধ্যে। সে সহন শক্তিদ্বারা যুক্ত অর্থাৎ অত্যন্ত বলবান। সে একই। কেবল একই। নিশ্চয়ই একই। সব তেজস্বী পদার্থ ইহাতে কেবল এক বানিয়ে রাখে।' (অথর্ব০ ১৩।৪।১৬-২১)
বৈ-মানরস্য প্রতিমোপরি দ্যোর্য়াবদ্রোদসী বিবাদে অগ্নিঃ।
(অথর্বঃ ৮।৯।৬)
' (বৈশ্বা-নরস্য) বিশ্বের নেতা ঈশ্বরের
(প্রতিমা) প্রতিমা এমনই হয়, যে (য়াবত্ দ্যোঃ) তেমন দ্যুলোকে উপরে থাকে, যেমন (রোদসী) উপরে নিয়ে আর নিম্নস্থ আকাশে (অগ্নিঃ) অগ্নিই (বি-ববাধে) অন্তর বানায়।' যথা-
য়স্মান্ন ঋতে বিজয়ন্তে জনাসো য়ং য়ুদ্ধয়মানা অবসে হবন্তে।।
য়ো বিশ্বস্য প্রতিমানং বভূব য়ো অচ্যুতচ্যুত্ স জনাস ইন্দ্রঃ।।
(ঋ০ ২।১২।৯; অথর্ব০ ২০।৩৪।৯)
'হে (জনাসঃ) মনুষ্য ! (য়স্মাত্ ঋতে) যাহাকে ছেড়ে (জনাসঃ) মনুষ্য (ন বিজয়ন্তে) বিজয়কে প্রাপ্ত হতে পারে না, আর (য়ুদ্ধমানাঃ) লড়াইকারী (অবসে)
রক্ষণের জন্য (য়ং হবন্তে) যাহার প্রার্থনা করতে হয়। আর যে (প্রতিমানম্) বিশ্বের প্রতিমা (বভূব) হয় আর যে (অচ্যুত-চ্যুত্) স্বয়ং না নড়াচড়া করে আর অন্যকে নাড়ায় (স ইন্দ্রঃ) সে ইন্দ্র অর্থাৎ সব জগতের এক রাজা।' ভাষ্যঃ পণ্ডিত দামোদর সাতবলেকর
এই দুই মন্ত্রে জগতের বরাবর ওই পরমাত্মার প্রতিমা, এরূপ বলেছে।
এই আকাশ অনন্ত। যে প্রকার আকাশের কোন সীমা নেই ওই প্রকার পরমেশ্বরেরও কোন অন্ত নেই। এই কথা উক্ত দুই মন্ত্রে বলা হয়েছে।
এখন আসি যজুর্বেদের নিম্ন মন্ত্র-
ও৩ম্ খং ব্রহ্ম।। (যজু০ ৪০। ১৭)
' (ও৩ম্ ব্রহ্ম) সবার রক্ষাকারী ব্রহ্ম (খং) আকাশের সমান ব্যাপ্ত।'
এই মন্ত্রের ভাব উক্ত অর্থের দুই মন্ত্রের সমান।
তাই আরো দেখুন-
ত্বং ভুবঃ প্রতিমানং পৃথিব্যাঃ।। (ঋ০ ১।৫২।১৩)
'তুমি পৃথিবী থেকে উল্টো প্রমাণ রাখেন।' অর্থাৎ পৃথিবী ছোট আর তুমি মহান। যথা-
সূ ভূমিং বিশ্বতো বৃত্বাহত্যতিষ্ঠদ্দশাংগুলম্।
( ঋ০ ১০।৯০।১; আরণ্য স০ ৪।২; অথর্ব০ ১৯।৬।১; যজু০ ৩১।১; তৈ০ আরণ্য০ ৩।১২।১)
'সে পরমাত্মা পৃথিবীকে (বিশ্বতঃ) চারিদিক থেকে (বৃত্বা) ঘিরে
(দশাংগুলং) দশ আঙ্গুলের সমান ছোট বিশ্বকে (অতি অতিষ্ঠত্) বিশ্বের বাহিরেও আছে অথবা বিশ্বের উপর শাসন করেন।'
এই মন্ত্রে উক্ত আশায় অনেক স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তথা আরো মন্ত্র দেখুন-
ন হীন্বমস্য প্রতিমানস্যত্যন্তর্জাতেষূত য়ে জনিত্বাঃ। (ঋ০ ৪।১৮।৪)
' (অস্য ন) নিশ্চয়ই ইহার (জাতেষু অন্তঃ) বানানো পদার্থের অন্তর (উত) আর (য়ে জনিত্বাঃ) যে বানানোকারী হয় তাহার মধ্যে কোন (প্রতিমানম্) তুলনা, প্রতিমা
(ন অস্তি) হয় না।, যথা-
এই প্রকার প্রতিমা আর প্রতিমান শব্দের প্রয়োগ বেদ মন্ত্রে এসেছে, ইহার নিম্ন লিখিত অর্থ-'প্রতি-মা' র অর্থ-বানানোকারী প্রতিমা, সাদৃশ্য, উপমা, প্রতিবিম্ব, মাপ, তোলা, বিস্তার, বরাবর, 'প্রতি-মান' এর অর্থ-নমুনা সাদৃশ্য, তোলা, ওজন, মাপ, প্রতিবিম্ব, বিপরীত, শত্রু এই বিবিধ অর্থ দেখে তথা মন্ত্রের সংবন্ধ দেখে, উক্ত মন্ত্রের অর্থ বিচার করা উচিত।
কিং সময় ঋধক্ কৃণবদ্ য়ংসহপ্রে মাসো জভার শরদশ্চ পূর্বীঃ।
নহী ধ্বস্ত প্রতিমানমত্ত্য ন্তর্জাতেষূতে য়ে জনিত্বা।।৪।।
প্র তুবিদ্যুম্নস্য স্থবিরস্য ঘৃষ্বের্দিবো ররপ্শে মহিমা পৃথিব্যাঃ।
নাস্য শত্রুর্ন প্রতিমাননস্তি ন প্রতিষ্ঠিঃ পুরুমায়স্য সহ্যোঃ।।১২।।
(ঋ০ ৪/১৮/৪; ৬।১৮।১২)
পদার্থঃ (য়) যাহার (সহস্রং মাসঃ পূর্বী শরদঃ চ) হাজার মাসের আর অনেক বর্ষ পর্যন্ত (জভার) ভরণপোষণ করেন, (সঃ) সে
(ঋধক্ কিং কৃণবত্) বিরুদ্ধ কর্ম কে করবে?
(য়ে জনিত্বাঃ) যে উৎপন্নকারী তাহার আর (গাতেষু) উৎপন্ন হওয়ার (অন্তঃ) মাধ্যমে (অস্য প্রতিমানম্ নহি) এই ইন্দ্রের কোন উপমা নেই।।৪।।
ভাবার্থঃ যাহার অনেক মাসের আর বর্ষ পর্যন্ত ভরণপোষণ করেন, সে নিজের পোষণকরীর কোন কার্য কে করবে? অর্থাৎ কেউ করবে না। উৎপন্নকারী আর উৎপন্ন হওয়ার মধ্যে এই ইন্দ্রের সমান কেউ নেই।।৪।।
পদার্থঃ (তুবি-দ্যু-ম্নস্য) অত্যন্ত তেজস্বী (স্থবিরস্যা) স্থির আর (ঘৃষ্বেঃ) দুষ্টতাকে চূর্ণকারী ঈশ্বরের (মহিমা)
মহত্তা দ্যুলোক আর পৃথিবীর মর্যাদার থেকেও বাহিরে (ররশ্পে) বিস্তার। (ন অস্য শত্রুঃ) এই ঈশ্বরের কোন শত্রু নেই (ন অস্য প্রতিমানম্) না ইহার কোন প্রতিমা আছে। (পুরু-মায়স্য) অনন্ত জ্ঞানবান
(সহ্যোঃ) আর সহন শক্তিবান বলবান ঈশ্বরকে ছেড়ে আর (প্রতিষ্ঠিঃ) আশ্রয় হয় না। অর্থাৎ সেই এক সবার আশ্রয়।।১২।।
ভাবার্থঃ তেজস্বী শ্রেষ্ঠ শত্রুনাশক বীরের মহিমা পৃথিবী থেকে আর দ্যুলোক থেকেও মহান। অনেক প্রজ্ঞাবান আর শত্রুনাশক বীরের কোন শত্রু হয় না। অধিক কুশল আর শান্তি, সুখ, দানকারী বীরের জন্য তুলনা হয় না।।১২।।
ভাষ্যঃ পণ্ডিত দামোদর সাতবলেকর
এখন আসি প্রতিমানম্ শব্দের কি অর্থ করেছেন বৈদিককোষ
বৈদিককোষ প্রতিমানম্; পৃষ্টা ৬৪১।
পরিমাণসাধনানম্ ৪ ১৮ ৪ সাদৃশ্য পরিগান বা ১ ৩২ ৩ রামন্তাত্ প্রতিমীয়তে
পরিণীয়তে প্রতিক্রিয়তে গেন তত্ (স্ব-সুখমন্তরিক্ষ বা) ১ ৫২ ১২
প্রতিমীয়তে য়ত্ (জগত্) ১ ১০২ ৮ অতিসমর্থানামুপমা ১ ১০২ ৬
পরিমাণসাধক (ইন্দ্র=পরমেশ্বরী বিদ্যুদ্বা) ২ ১২.৯
পরিমাণসাধকম্ (জ্ঞানম্) ৩ ৩১ ৮ প্রতিমান অর্থাৎ পরিমাণের কর্তা (ঈশ্বর) আর্যাভি০ ১ ১৩,
ঋ০ ১ ৪.১৪ ১২, [প্রতি+মাঙ্মানে (জু০) ধাতো করণে ল্যুট্]
তাই সামবেদও ঘোষণা করছেন-
মা চিদন্যদ্ বি শংসত সখায়ো মা রিষণ্যত।
ইন্দ্রমিত্স্তোতা বৃষণং সাচ সুতে মুহুরুক্থা চ শংসত।।১০।।
সামবেদ ২৪২
পদার্থঃ হে (সখায়ঃ) মিত্র! তুমি (অন্যত্) দ্বিতীয় কোন বস্তু পাথরের মূর্তি, নদী, পর্বত ইদিকে (মা চিত্) না কখনো (বি শংসত) উপাস্য রূপে পূজা করো, (মা রিষণ্যত) যে উপাসনীয় নয় তাহার উপাসনা করে হানি প্রাপ্ত করো না। (সুতে) জ্ঞান, কর্ম আর ভক্তির রস নিষ্পাদিত হয়ে (সচা) সাথে মিলে (বৃষণম্) সুখবর্ধক (ইন্দ্রম্ ইত্) পরমেশ্বরেরই (স্তোত) স্তুতি-উপাসনা করো আর (শংসত) গান করো।।১০।।
ভাবার্থঃ পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র আর জগতে যে সম্মানের যোগ্য তাহাকে সম্মান তো করাই উচিত, কিন্তু তাহাদের মধ্য থেকে কাউকে পরমেশ্বরের রূপে পূজা করা উচিত নয়, না নদী, বৃক্ষ, পর্বত আদি জড় পদার্থকে পূজা করা উচিত নয়। ইন্দ্র আদি নামের দ্বারা বেদের মধ্যে প্রসিদ্ধ সুখবর্ষী এক জগদীশ্বরই পুনঃ-পুনঃ স্তুতি, প্রার্থনা, অর্চনা আর উপাসনা করার যোগ্য।।১০।।
ভাষ্যঃ আচার্য ড. রামনাথ বেদালঙ্কার বিদ্যামার্তণ্ড
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ