যজ্ঞ আহুতি - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

11 November, 2020

যজ্ঞ আহুতি

‘যজ’ ধাতু, ‘ঞ’ প্রত্যয় করে যজ্ঞ শব্দ নিষ্পন্ন হয় এর অর্থ হল কর্ম। মানুষ যা কিছু কর্ম করে তাকে আমরা যজ্ঞ বলতে পারি।  অগ্নির এরূপ সামর্থ্য আছে যে উহাতে আহুতি দিলে বায়ু এবং দুর্গন্ধযুক্ত পদার্থ সকলকে ছিন্ন ভিন্ন ও লঘু করিয়া উহাদিগকে বহির্গত করাইয়া, পবিত্র বায়ুর প্রবেশ করায়। প্রত্যেক মনুষ্যের ১৬ আহুতি ও অন্যুন ৬ মাসা পরিমাণে ঘৃত এক এক আহুতিতে থাকা উচিৎ, ইহাপেক্ষা অধিক ও দিলে উত্তম হয়।   আম কাষ্ঠ, গুড়, ঘি কালো তিল দ্বারা যজ্ঞ আহুতি দিলে বায়ুতে cfc মাত্রা যদি ১০০% থাকে তবে তার মাত্রা কমে ১৫% এর মধ্যে হয় যা প্রায় ১০০ মিটার পর্যন্ত ২৭ দিন পর্যন্ত বিদ্যমান থাকে, ১০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে o3 গ্যাস(Ozone is a natural gas composed of three atoms of oxygen. Its chemical symbol is O3) উৎপন্ন হয় এবং ethylene oxide gass তৈরী হয়। prof. Om Prakash pandey এর ভাষায় ওজোন হচ্ছে অক্সিজেনের একটি সক্রিয় রূপভেদ। এর সংকেত O3।


 ড. হাফকিন বলেছেন, “ঘি এবং চিনি মিশ্রণ করে যজ্ঞে পোড়ালে যে ধোঁয়া উৎপন্ন হয় তা বিভিন্ন রোগজীবাণু ধ্বংস করে।” প্রফেসর টিলওয়ার্ড বলেন, “চিনি মিশ্রিত হবিষ্যের পরিবেশ শোধনের শক্তি রয়েছে। এটি যক্ষ্মা, মিলস, বসন্ত প্রভৃতি জীবাণুনাশক।”

গায়ত্রী পরিবার আয়োজিত গোরখপুরে অশ্বমেধ যজ্ঞ চলাকালীন সময়ে “উত্তর প্রদেশ দূষণ রক্ষা বোর্ড” এর ডিরেক্টর ড. মনোজ গর্গ একদল বিজ্ঞানী নিয়ে বেশকিছু পরীক্ষা চালান। এই পরীক্ষার ফল “অখণ্ড জ্যোতি” সাময়ীকির সেপ্টেম্বর ’৯৭ সংখ্যাতে প্রকাশ পায়। যা যজ্ঞের ব্যাপক উপযোগিতা ফুটিয়ে তুলে। বিজ্ঞানীরা দেখতে পান যজ্ঞ সম্পাদনের পূর্বে সে স্থানে বিষাক্ত সালফার ডাই অক্সাইড ও নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৩.৩৬ ও ১.১৬ ইউনিট এবং যজ্ঞ সম্পাদনের শেষে বিষাক্ত গ্যাস দুটির পরিমাণ কমে দাড়ায় যথাক্রমে ০.৮০ ও ১.০২ ইউনিট। বিজ্ঞানীর দল যজ্ঞকুণ্ডের কিছু দূরে অবস্থিত জলাশয়ের পানি পরীক্ষা করেও অভূতপূর্ব ফল লাভ করেন। তাঁরা দেখতে পান সংগৃহীত নমুনায় যজ্ঞের পূর্বে ব্যাকটেরিয়া ছিল ৪৫০০ এবং যজ্ঞের শেষে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ কমে দাড়ায় ১২৫০। যজ্ঞাবশিষ্ট যে ছাই ছিল তাতে মিনারেল পদার্থের পরিমাণ পরীক্ষা করে উত্তর প্রদেশ কৃষির ডেপুটি ডিরেক্টর একে উত্তর মৃত্তিকা উর্বরকারক বলে মত দেন। ১৯৯৩-১৯৯৫ পর্যন্ত ২৭টি যজ্ঞভিত্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, যার প্রত্যেকটিই বর্তমানের পরিপ্রেক্ষিতে যজ্ঞের উপযোগিতা ব্যাপকহারে সমর্থন করে।

আপনারা অনেকেই ভূপাল ট্র্যাজেডির কথা শুনেছেন, যেখানে বিষাক্ত এমআইসি গ্যাস নির্গমনের ফলে শতশত মানুষ মারা যায় এবং সহস্র মানুষ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। এই গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছিল মাইলের পর মাইল। ৪মে ১৯৮৫ এর দৈনিক “দ্যা হিন্দি” এর একটি প্রতিবেদন সকলকে বিস্ময়ে হতবাক করে দেয়। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল “দূষণ প্রতিরোধে বৈদিক উপায়।” যেখানে বলা হয় ওই গ্যাস প্ল্যান্টের খুব নিকটবর্তী সোহান লাল খুশওয়া এর পরিবারের কোনো সদস্যই ওই ঘটনার ফলে মৃত্যু তো দূরে থাক অসুস্থই হয় নি। কারণ কি? অগ্নিহোত্র। হ্যাঁ একমাত্র এই পরিবারটিই সেখানে নিয়মিত বৈদিক অগ্নিহোত্র যজ্ঞ করত। যার ফল স্বরূপ এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবল থেকে রক্ষা পায় পরিবারটি। আর এই ঘটনা পরিবেশ দূষণ রোধে অগ্নিহোত্র যজ্ঞের কার্যকারিতা পুনরায় প্রতিপাদন করল।

তাই তো বৈদিক ধর্ম ঘোষণা দিয়েছে “য়জ্ঞো বৈ শ্রেষ্ঠতম কর্মম্”। ভগবানও বলেছেন যজ্ঞের মাধ্যমে মনীষিরা কেবল নিজের চিত্ত শুদ্ধিই ঘটায় না, সেই সাথে ভূত অর্থাৎ পরিবেশের শুদ্ধতাও বজায় রাখে। আর কলির এ দুঃসময়ে আমরা যজ্ঞবিমুখী হয়ে কেবল অন্ধকারেই ঘুরে বেড়াচ্ছি। তাই আমাদের উচিত পুনরায় অগ্নিহোত্র আদি যজ্ঞ আয়োজনের মাধ্যমে সনাতনের স্বর্ণযুগে ফিরে যাওয়া। যেদিন ঘরে ঘরে সুবাসিত অগ্নিহোত্রের গন্ধ ছেয়ে যাবে এবং মুখে মুখে গায়ত্রীর পবিত্র ধ্বনি উচ্চারিত হবে সেদিনই কলি হবে পরাহত এবং ফিরে আসবে সনাতনের স্বর্ণযুগ।

যজ্ঞের মহত্বতার গুনগান করে বেদ বলছে যে,  সত্যনিষ্ঠ বিদ্বান লোক যজ্ঞ দ্বারাই পূজনীয় পরমেশ্বরের পূজা করে।  "যজ্ঞ বৈ শ্রেষ্ঠতম কর্ম " আদি বচন অনুসারে যজ্ঞ কর্মেই সব শ্রেষ্ঠ ধর্মের সমাবেশ হয়ে থাকে। যাহাতে হিংসার কোন স্খান নেই,  এজন্যই যজ্ঞে "অধ্বর" শব্দটি এসেছে।  নিরুক্ত ১।৮ এ অধ্বর শব্দের অর্থ হিংসরহিত করা হয়েছে। এ জন্য ঋগবেদে বলা হয়েছে যে, এই হিংসারহিত যজ্ঞেই বিদ্বানরা সুখ প্রাপ্ত করে থাকে (ঋগ্বেদ ১।১।৪)। 


অতএব বৈদিক  যজ্ঞে পশুবলির বিধান শুধু একটি ভ্রান্ত ধারনা মাত্র।  যজ্ঞে পশুবলির প্রথা মধ্য কালে এসেছে।  প্রাচীন কালে  যজ্ঞে পশুবলির প্রথা ছিলো না।  ধর্ম পথ হতে বিচ্যুত লোক নিজ মাংসলোলুপতার বশীভূত হয়ে যজ্ঞে পশুবলির প্রথা প্রচলন করেছে। যার প্রমাণ আমরা মহাভারতে পাই  - 


সুরা মৎসা মধু মাংসমাসবং কৃসরোদনম্। 

ধুর্তেঃ প্রবর্তিতং হোতন্নৈবদ্ বেদেষু কল্পিতম।। 

(মহাঃ শান্তি পর্বঃ ২৬৫,শ্লোক ৯) 

---সুরা, মৎস, মাংস, তালরস, এইসব বস্তুকে ধুর্তেরাই যজ্ঞে প্রচলিত করেছে।  বেদে এসব উপযোগের বিধান নেই। 


অব্যবস্থিতমর্যদৈবিমূঢর্নাস্তিকৈর্তবৈ। 

সংশয়াত্মাভিরব্যক্তৈহিংসা সমনুবর্তিত।। 

(মহাঃ শান্তি পর্বঃ অঃ ২৬৫, শ্লোক ৪) 

--- যে ধর্মের মর্যাদা থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে মূর্খ, নাস্তিক তথা যার আত্মা সংশয়যুক্ত এবং যার কোন প্রসিদ্ধি নেই এইরূপ লোকই হিংসাকে সমর্থন করে। 

মানান্মোহাচ্চ লোভাচ্চ লৌল্যমেত্যপ্রকল্পিতম্।। 

(মহাঃ শান্তি পর্ব,  অঃ ২৬৫, শ্লোক ১০) 

--- সেই ধূর্তেরা অভিমান, মোহ এবং লোভের বশীভূত হয়ে সেই সব বস্তুর প্রতি লোলুপতা প্রকট করে থাকে। 

অর্থাৎ মহাভারত থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে, যজ্ঞে পশুবলি ধূর্তদের কাজ। কিন্তু পাশ্চাত্য বিদ্বান মাক্সমুলার , গ্রিফিথ আদি বেদে মাংসাহারের প্রচার করে কেবল মাত্র পবিত্র বেদ কেই কলঙ্কিত করেছে।  মধ্য কালে বাম মার্গ নামে  একটি দলের প্রসার খুব হয়েছিলো।  যারা মাংস, মদিরা, মৎস, মৈথুন আদি কে মোক্ষের মার্গ বলে মানতো।  সায়ন,মহিধর  আদি বিদ্বান যারা ছিলো তারা বাম মার্গ দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার কারনেই বেদে বলিপ্রথা তথা মাংসাহারের কথা উল্লেখ করেন। বেদে মাংস ভক্ষন এবং বলি প্রথার মিথ্যা প্রচারের কারনে ধর্মের যে ক্ষতিসাধন হয়েছে তা অবর্ণনীয়।  আজ কাল তো আমাদের সামনে এই শঙ্কা উপস্থিত হয়ে যে,  বেদে গো আহুতি এবং গো মাংস ভক্ষনের নির্দেশ রয়েছে।  অথচ আমরা গাভী কে মাতৃতূল্য জ্ঞান করে এসেছি এবং গাভীকে হত্যার চিন্তাও করতে পারি না।   এবং বেদেও গাভীকে "অঘ্না"  "অদিতি" ইত্যাদি শব্দে ভূষিত করা হয়েছে যার অর্থ হচ্ছে গাভীগুলো হত্যার অযোগ্য। এবং বেদের অসংখ্য জায়গায় গো হত্যার নিষেধ এবং গো হত্যাকারীকে শাস্তির বিধান দেওয়া হয়েছে। যেমন- 


প্র নু বোচং চিকিতুষে জনায় মা গামনাগা মদিতিং বধিষ্ট।। 

(ঋগবেদ ৮।১০১।১৫) 

--- হে জ্ঞানবান পুরুষের নিকট আমি বলেতেছি  নিরপরাধ  অহিংস পৃথিবী সদৃশ গাভীকে হত্যা করিও না। 


যদি নো গাং হংসি যদ্যশ্বং যদি পুরুষম।তং ত্বা সীসেন বিধ্যামো যথা নোহসো অবীরহা।। 

(অথর্বেদ ১।১৬।৪) 

--- যদি আমাদের গাভীকে হিংসা কর যদি অশ্বকে  যদি মনুষ্যকে হিংসা কর তবে তোমাকে সীসক দ্বারা বিদ্ধ করিব  যাহাতে আমাদের মধ্যে বীরদের বিনাশক কেহ না থাকে। 


"অনাগো হত্যা বৈ ভীমা কৃত্যে মা নো গাম অশ্বম পুরুষং বধী" 

(অথর্ববেদ ১০।১।২৯) 

--- নির্দোষের হত্যা অবশ্যই ভয়ানক। আমাদের গাভী, অশ্ব, পুরুষকে মেরো না। 


"গোঘাতম্ ক্ষেধে যঃ গাম্ বিকৃন্তন্তম" 

(যজুর্বেদ ৩০।১৮) 

- গাভীর ঘাতক অর্থাৎ হত্যাকারী যে, ক্ষুধার জন্য গাভীকে হত্যা করে। তাকে ছেদন করি। 


" অদিতিম মা হিংসী"  

(যজুর্বেদ ১৩। ৪৯) 

- হত্যার অযোগ্য গাভীকে কখনো মেরো না। 


" মা গাম অনাগাম অদিতিম বধিষ্ট" 

(ঋগবেদ ৮।১০১।১৫) 

--- নিরপরাধ গাভী এবং ভূমিতূল্য গাভীকে কখনো বধ করো না।  


--- "অঘ্না ইব" গাভী সমূহ বধের অযোগ্য। সর্বদা ( পশুন ত্রায়েথাম, যজুঃ ৬।১১) পশুদের রক্ষা করো তাদের পালন করো (অঃ ৩।৩০।১)। 

যজ্ঞে কি পশু বলি শঙ্কা সমাধানঃ
যজ্ঞের মহত্বতার গুনগান করে বেদ বলছে যে, সত্যনিষ্ঠ বিদ্বান লোক যজ্ঞ দ্বারাই পূজনীয় পরমেশ্বরের পূজা করে। "যজ্ঞ বৈ শ্রেষ্ঠতম কর্ম " আদি বচন অনুসারে যজ্ঞ কর্মেই সব শ্রেষ্ঠ ধর্মের সমাবেশ হয়ে থাকে। যাহাতে হিংসার কোন স্খান নেই, এজন্যই যজ্ঞে "অধ্বর" শব্দটি এসেছে। নিরুক্ত ১।৮ এ অধ্বর শব্দের অর্থ হিংসরহিত করা হয়েছে। এ জন্য ঋগবেদে বলা হয়েছে যে, এই হিংসারহিত যজ্ঞেই বিদ্বানরা সুখ প্রাপ্ত করে থাকে (ঋগবেদ ১।১।৪)।
অতএব বৈদিক যজ্ঞে পশুবলির বিধান শুধু একটি ভ্রান্ত ধারনা মাত্র। যজ্ঞে পশুবলির প্রথা মধ্য কালে এসেছে। প্রাচীন কালে যজ্ঞে পশুবলির প্রথা ছিলো না। ধর্ম পথ হতে বিচ্যুত লোক নিজ মাংসলোলুপতার বশীভূত হয়ে যজ্ঞে পশুবলির প্রথা প্রচলন করেছে। যার প্রমাণ আমরা মহাভারতে পাই -
.
সুরা মৎসা মধু মাংসমাসবং কৃসরোদনম্।
ধুর্তেঃ প্রবর্তিতং হোতন্নৈবদ্ বেদেষু কল্পিতম।।
(মহাঃ শান্তি পর্বঃ ২৬৫,শ্লোক ৯)
---সুরা, মৎস, মাংস, তালরস, এইসব বস্তুকে ধুর্তেরাই যজ্ঞে প্রচলিত করেছে। বেদে এসব উপযোগের বিধান নেই।
.
অব্যবস্থিতমর্যদৈবিমূঢর্নাস্তিকৈর্তবৈ।
সংশয়াত্মাভিরব্যক্তৈহিংসা সমনুবর্তিত।।
(মহাঃ শান্তি পর্বঃ অঃ ২৬৫, শ্লোক ৪)
--- যে ধর্মের মর্যাদা থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে মূর্খ, নাস্তিক তথা যার আত্মা সংশয়যুক্ত এবং যার কোন প্রসিদ্ধি নেই এইরূপ লোকই হিংসাকে সমর্থন করে।
.
মানান্মোহাচ্চ লোভাচ্চ লৌল্যমেত্যপ্রকল্পিতম্।।
(মহাঃ শান্তি পর্ব, অঃ ২৬৫, শ্লোক ১০)
--- সেই ধূর্তেরা অভিমান, মোহ এবং লোভের বশীভূত হয়ে সেই সব বস্তুর প্রতি লোলুপতা প্রকট করে থাকে।
.
অর্থাৎ মহাভারত থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে, যজ্ঞে পশুবলি ধূর্তদের কাজ। কিন্তু পাশ্চাত্য বিদ্বান মাক্সমুলার , গ্রিফিথ আদি বেদে মাংসাহারের প্রচার করে কেবল মাত্র পবিত্র বেদ কেই কলঙ্কিত করেছে। মধ্য কালে বাম মার্গ নামে একটি দলের প্রসার খুব হয়েছিলো। যারা মাংস, মদিরা, মৎস, মৈথুন আদি কে মোক্ষের মার্গ বলে মানতো। সায়ন,মহিধর আদি বিদ্বান যারা ছিলো তারা বাম মার্গ দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার কারনেই বেদে বলিপ্রথা তথা মাংসাহারের কথা উল্লেখ করেন। বেদে মাংস ভক্ষন এবং বলি প্রথার মিথ্যা প্রচারের কারনে ধর্মের যে ক্ষতিসাধন হয়েছে তা অবর্ণনীয়। আজ কাল তো আমাদের সামনে এই শঙ্কা উপস্থিত হয়ে যে, বেদে গো আহুতি এবং গো মাংস ভক্ষনের নির্দেশ রয়েছে। অথচ আমরা গাভী কে মাতৃতূল্য জ্ঞান করে এসেছি এবং গাভীকে হত্যার চিন্তাও করতে পারি না। এবং বেদেও গাভীকে "অঘ্না" "অদিতি" ইত্যাদি শব্দে ভূষিত করা হয়েছে যার অর্থ হচ্ছে গাভীগুলো হত্যার অযোগ্য। এবং বেদের অসংখ্য জায়গায় গো হত্যার নিষেধ এবং গো হত্যাকারীকে শাস্তির বিধান দেওয়া হয়েছে। যেমন-
.
প্র নু বোচং চিকিতুষে জনায় মা গামনাগা মদিতিং বধিষ্ট।।
(ঋগবেদ ৮।১০১।১৫)
--- হে জ্ঞানবান পুরুষের নিকট আমি বলেতেছি নিরপরাধ অহিংস পৃথিবী সদৃশ গাভীকে হত্যা করিও না।
.
যদি নো গাং হংসি যদ্যশ্বং যদি পুরুষম।তং ত্বা সীসেন বিধ্যামো যথা নোহসো অবীরহা।।
(অথর্বেদ ১।১৬।৪)
--- যদি আমাদের গাভীকে হিংসা কর যদি অশ্বকে যদি মনুষ্যকে হিংসা কর তবে তোমাকে সীসক দ্বারা বিদ্ধ করিব যাহাতে আমাদের মধ্যে বীরদের বিনাশক কেহ না থাকে।
.
"অনাগো হত্যা বৈ ভীমা কৃত্যে মা নো গাম অশ্বম পুরুষং বধী"
(অথর্ববেদ ১০।১।২৯)
--- নির্দোষের হত্যা অবশ্যই ভয়ানক। আমাদের গাভী, অশ্ব, পুরুষকে মেরো না।
.
"গোঘাতম্ ক্ষেধে যঃ গাম্ বিকৃন্তন্তম"
(যজুর্বেদ ৩০।১৮)
- গাভীর ঘাতক অর্থাৎ হত্যাকারী যে, ক্ষুধার জন্য গাভীকে হত্যা করে। তাকে ছেদন করি।
.
" অদিতিম মা হিংসী"
(যজুর্বেদ ১৩। ৪৯)
- হত্যার অযোগ্য গাভীকে কখনো মেরো না।
.
" মা গাম অনাগাম অদিতিম বধিষ্ট"
(ঋগবেদ ৮।১০১।১৫)
--- নিরপরাধ গাভী এবং ভূমিতূল্য গাভীকে কখনো বধ করো না।
.
--- "অঘ্না ইব" গাভী সমূহ বধের অযোগ্য। সর্বদা ( পশুন ত্রায়েথাম, যজুঃ ৬।১১) পশুদের রক্ষা করো তাদের পালন করো (অঃ ৩।৩০।১)।
.
অথচ এসব পৌরাণিক সায়ন, মহিধর, রমেশ আদি বেদ ভাষ্যকার দের এ নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই। তাদের ভাষ্যে এতটাই সুস্পষ্টভাবে গো আহুতি এবং মাংস ভক্ষনের নির্দেশনা পাওয়া যায় যে সেটা অস্ত্রস্বরূপ বেদ বিদ্বেষীরা ব্যবহার করে বেদকে কলুষিত করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা করে। এ পর্যায়ে এরকমই কিছু মন্ত্র শঙ্কাস্বরূপ তুলে ধরবো এবং সেগুলোর বাস্তবিক অর্থ জানার প্রয়াস করবো -
.
=>> শঙ্কা - ০১
হে ভারত অগ্নি! তুমি আমাদিগের! তুমি বন্ধ্যাগাভী ও বৃষ ও গর্ভিনী গাভী সকলের দ্বারা আহুত হইয়াছো।
(ঋঃ ২।৭।৫)
.
সমাধানঃ
মন্ত্রটিতে যথাক্রমে তিনটি শব্দ এসেছে যথা - বশা, উক্ষ এবং অষ্টাপদী।
★ বশাঃ এ শব্দের অর্থ রমেশ বন্ধ্যাগাভী করেছে। কিন্তু বশা শব্দের আরো অনেক অর্থ হয়। শতপথ ব্রাহ্মণ ২।৮।৩।১৫ অনুসারে বশা অর্থ পৃথিবী -(ইয়ং [পৃথিবী] বৈ বশা পৃশ্নি)। অথর্ববেদ ১।১০।১ অনুসারে ঈশ্বরীয় নিয়ম বা নিয়ামক শক্তি। এবং অথর্ববেদ ১০।১০।৪ এ বশা অর্থে সংসারকে বশকারী পরমাত্মা শক্তি। বেদের বহুস্থলে বশা শব্দটি এসেছে যেগুলোতে এর অর্থ বশকারী, ঈশ্বরীয় শক্তি, পৃথিবী ইত্যাদি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
★ উক্ষঃ এই শব্দটি সেচনার্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। "উক্ষেথাং মিত্রা বরুনা ঘৃতেন ; ঋঃ ৭।৬৪।৪"। নিরুক্ত ১৩।৯ অনুসারে "উক্ষঃ বৃদ্ধিকারক অথবা জল সেচন অর্থে। কিন্তু রমেশ এখানে বৃষ অর্থ করায় এমন অনর্থ ঘটেছে।
★ অষ্টাপদীঃ সরল অর্থে আমরা বুঝি আট পা। এ অর্থেই বোধ হয় রমেশ "অষ্টাপদী" = গর্ভবতী গাভী করেছে। অর্থাৎ গাভীর চার পা এবং গর্ভস্থ গাভীর চার পা এই আট পা। কিন্তু বেদের অর্থ আধ্যাত্মিক এবং গূঢ তাৎপর্য সম্পন্ন। এখানে অষ্টাপদী অর্থে যোগাঙ্গের আট চরন অর্থাৎ যম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম, প্রত্যাহার,ধারনা, ধ্যান, সমাধি। সম্পূর্ণ মন্ত্রের ভাবার্থ এই যে প্রভূকে লাভের জন্য আমাদের তিন কার্য আবশ্যক। (ক) ইন্দ্রীয় কে বশ রাখা (খ) উৎপন্ন সোম শক্তি শরীরের মধ্যে সিঞ্চন করা এবং (গ) অষ্টাঙ্গ যোগ।
মন্ত্রটি নিম্নরূপ -
.
ত্বং নো অসি ভারতাগ্নে বশাভিরুক্ষভিঃ। অষ্টাপদীভিরাহুত।।
(ঋগবেদ ২।৭।৫)
.
সরলার্থঃ হে অগ্রনি প্রভূ! আপনি [ইন্দ্রীয়] বশীকরন দ্বারা নিজ ভিতর প্রাপ্ত করে আমাদের হও, এই প্রকার শরীরের মধ্যে শক্তি সেচন দ্বারা আপনি আট যোগাঙ্গরূপ চরন দ্বারা আহুত হয়ে [আমাদের হও]
(অনুবাদঃ হরিশরন সিদ্ধান্তলংকার)
.
=>> শঙ্কা - ০২
হে অগ্নি! আমরা তোমাকে হৃদয় দ্বারা সংস্কৃত ঋকরূপ হব্য প্রদান করছি। বলশালী বৃষভ ও ধেনুসকল তোমার নিকট পূর্বক্তরূপ হব্য হউক
(ঋগবেদ ৬।১৬।৪৭)
.
সমাধানঃ
এ মন্ত্রটিতেও তিনটি শব্দ এসেছে - বশা, উক্ষন এবং ঋষভ। যার অর্থ রমেশ বলশালী বৃষ এবং ধেনুসকল করে সেগুলোকে অগ্নির হব্য দ্রব্য তৈরী করেছে। বশা এবং উক্ষণ শব্দের অর্থ পূর্বেই ব্যাখ্যা করা হয়েছে - উক্ষ (সেচনার্থে) + কনন্= উক্ষন। বাকী রয়েছে " বৃষভ" শব্দটি যার অর্থ শুধু বৃষ নয়। শতপথ ব্রাহ্মণ ৫।৩।১।৩ এ ইন্দ্র কে বৃষভ বলা হয়েছে "ইন্দ্র যদৃষভ"। ইন্দ্র শব্দে ঐশ্বর্যবান পুরুষ তথা একজন শ্রেষ্ঠ রাজা বুঝায়। অতএব মন্ত্রটির যথার্থ অর্থ নিম্নরূপ দাড়ায় -
.
আ তে অগ্নে হবির্হৃদা তষ্টং ভরামসি।
তে তে ভবন্তুক্ষণ ঋষভাসো বশা উত।।
(ঋগবেদ ৬।১৭।৪৭)
.
সরলার্থঃ হে তেজস্বিন! তোমার জন্য আমরা উত্তম মন্ত্র দ্বার হৃদয় দ্বারা সুসংস্কৃত গ্রাহ্য, অন্ন প্রস্তত করি তোমার কার্যের জন্য ঐ সব কার্যভার উঠানকারী তথা বীর্যসেচনে সামর্থ সত্য ন্যায় দ্বারা কান্তিমান, নরশ্রেষ্ঠ পুরুষ এবং রাষ্ট্রকে বশকারী অধিকারী তোমার অধিনে হোক।
(অনুবাদঃ জয়দেব শর্মা)
=>> শঙ্কা -০৩
হে ইন্দ্র! তোমার নিমিত্তে পুরোহিতদিগের সহিত একত্রে বৃষকে পাক করি এবং পঞ্চদশ তিথীর প্রত্যেক তিথীতে সোমরস প্রস্তুত করিয়া থাকি।
( ঋঃ ১০।২৭।২)
.
সমাধানঃ
মন্ত্রটিতে "বৃষভং পচানি" শব্দগুলো এসেছে। যার অর্থ রমেশ এখানে বৃষভ (ষাড়) কে পচানি (রান্না) করার কথা উল্লেখ করেছে। বৃষভ = বৃষ (সেচনার্থক) +অভচ (ঋষি বৃষিভ্যাং কিত) = বৃষভ। অথবা বৃহ (উদ যমন অর্থে) + অভচ = বৃষভ (বাহুলক নিয়ম দ্বারা "হ" কে "ষ") যাস্ক "বৃহ" ধাতুকে বর্ষণ অর্থ মেনেছেন। তাছাড়া নিরুক্তে বৃষভ এর অনেক প্রকার অর্থ রয়েছে। নিরুক্ত ৭।২৩ এ বৃষভ অর্থ বর্ষা বর্ষনকারী রয়েছে, "প্র নু মহিত্বং বৃষভস্য বোচম"। আবার নিরুক্ত ৬।২৩ এ "বৃষভ" অর্থ " বেদজ্ঞ বিদ্বান" রয়েছে - "অনর্বাণং বৃষভং মন্ত্রজিহ্লম" অর্থাৎ সুন্দর বাণীসম্পন্ন বেদজ্ঞ বিদ্বান কে অন্ন দ্বারা পোষন করো। ঋগবেদ ১০।১০।১০ এবং নিরুক্ত ৪।২০ এ "বৃষভ" অর্থ বীর্য সেচনে সামর্থ পুরুষ বলা হয়েছে। বাকী থাকলো "পচানি শব্দটি। বৈদিক কোষে "পচন" শব্দের অর্থ হচ্ছে বিদ্যা অথবা বল কে পরিপক্ক করা। ঋগবেদ ২।১২।১৪ এবং অঃ ২০।৩৪।১৫ এ একই কথা বলা হয়েছে, "যঃ সুনন্তম অবতি যঃ পচন্তম"। অর্থাৎ মন্ত্রটিতে মেঘের তূল্য পুরুষকে পরিপক্ক করার কথা বলা হয়েছে। কোন ষাড় কে রান্নার করার কথা বলা হয় নি। মন্ত্রটি নিম্নরূপ -
.
যদীদহং যুধয়ে সংয়ান্যদেবয়ুন্তন্বা শুশুজানান।
তে তুম্রেং বৃষভং পচানি তীব্রং সুতং পঞ্চদশং নিষিঞ্চম।।
(ঋগবেদ ১০।২৭।২)
.
সরলার্থঃযখনই আমি যুদ্ধ করবার নিমিত্তে দেহ বা বিস্তৃত সেনা দ্বারা বর্ধিত হয়ে, দেব বা বিদ্বান কে না দানকারী দুষ্ট জনকে লক্ষ্য করে নিজ সৈন্য বল কে একত্রিত করবো। হে প্রভু! আমার সাথে তোমার অতি বলশালী বৃষ্টিকারক মেঘের তূল্য শর বর্ষনকারীকে পরিপক্ক করবো এবং অতি তীক্ষ্ণ অভিষেক যোগ্য পূর্ণচন্দ্রবত বিরাজমান পুরুষকে মুখ্য পদের উপর অভিষিক্ত করবো।
(অনুবাদঃ জয়দেব শর্মা)
.
=>> শঙ্কা - ০৪
হে বৃষাকপি নিতে! তুমি ধনশালিনী ও উৎকৃষ্ট পুত্রযুক্তা আমার সুন্দরী পুত্রবধু! তোমার বৃষদিগকে (ষাড় কে) ইন্দ্র ভক্ষন করুন। তোমার অতি চমৎকার অতি সুখকর হোমদ্রব্য তিনি ভক্ষন করুন। ইন্দ্র সকলের শ্রেষ্ঠ।
(ঋঃ ১০।৮৬।১৩)
.
সমাধানঃ
মন্ত্রটিতে "উক্ষণ" শব্দে বৃষ করায় এমন অনর্থ ঘটেছে। উক্ষন শব্দের অর্থ আমরা পূর্বেই ব্যাখ্যা করেছি। তবুও এস্থলে পুনরায় কিঞ্চিত তুলে ধরছি। উক্ষ (সেচন অর্থে) + কনিন্ = উক্ষন। এবং বৃদ্ধিকরন অর্থেও উক্ষ ধাতু এসেছে। নিরুক্ত সংহিতা ১৩।৯ এ উক্ষণ শব্দের অর্থটি পরিষ্কার হযেছে। "উক্ষণ উ- ক্ষেতের্বৃদ্ধিকর্মণ উক্ষনত্যুদকেনোতিবা ; নিরুঃ ১৩।৯ " অর্থাৎ বৃদ্ধি অর্থে উক্ষ অথবা জল সেচন কারী অর্থে। অতএব মন্ত্রটির সত্যার্থ এরূপ দাড়ায় - ইন্দ্র (পরমঐশ্বর্যবান প্রভূ) "উক্ষণ"সেচনকারী মেঘ দ্বারা উৎপন্ন "তে হবি" অন্নের তূল্য (জগত) কে "ঘসত" ভক্ষন করেন। অর্থাৎ প্রলয় কালে সমস্ত জগৎ কে লীন করে নেয়।
মন্ত্রটির সরলার্থ নিম্নরূপ -
.
বৃষকপায়ি রেবতি সুপুত্র আহু সুস্নুষে।
ঘসত্ত ইন্দ্র উক্ষণঃ প্রিয়ং কাচিৎকরং হবির্বিশ্বস্মাদিন্দ্র উত্তর।।
(ঋগবেদ ১০।৮৬।১৩)
.
সরলার্থঃ সমস্ত সুখ কে মেঘের তূল্য বর্ষনকারী প্রভূর অপার শক্তি! হে অনেক ঐশ্বর্যের স্বামিনি! হে উত্তম পুত্র, জীবধারী! হে উত্তম সুখপূর্বক বিরাজমান, সুখদায়িনি! পরমঐশ্বর্যবান প্রভূ সেচনকারী মেঘ দ্বারা উৎপন্ন প্রীতিকারক অনেক সুখ দান কারী তোমার উত্তম অন্ন সদৃশ [জগত কে] ভক্ষন করেন [প্রলয়কালে লীন করে নেয় ] পরমঐশ্বর্যবান প্রভূ সবার থেকে উপরে।
(অনুবাদঃ জয়দেব শর্মা)
.
=>> শঙ্কা - ০৫
আমার জন্য পঞ্চদশ এমন কি বিংশ বৃষকে (ষাড়) পাক করিয়া দেয়। আমি খাইয়া শরীরের স্থুলতা সম্পাদন করি। আমার উদরের দুইপার্শ পূর্ন হয়। ইন্দ্র সকলের শ্রেষ্ঠ।
(ঋঃ ১০।৮৬।১৪)
.
সমাধানঃ
একই "উক্ষণ" শব্দের ব্যবহার এ মন্ত্রেও হয়েছে তাই এখানে এর ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন। মন্ত্রটিতে পনেরো ষাড় নয় বরং সেচন সামর্থ পনেরো - দশ ইন্দ্রীয় এবং পঞ্চ প্রাণকে এবং শরীরস্থ বিশ অঙ্গকে পরিপক্ক করার বলা হয়েছে। বেদের আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যাই সর্বাপেক্ষা গ্রহনযোগ্য কারন আক্ষরিক অর্থে সর্বদাই অনর্থ ঘটিয়া থাকে।
.
উক্ষ্ণো হি মে পঞ্চদশ সাকং পচন্তি বিংশতিম্।
উতাহমদ্মি পীব ইদুভা কুক্ষো পৃণন্তি মে বিশ্বস্মাদিন্দ্র উত্তর।।
(ঋগবেদ ১০।৮৬।১৪)
.
সরলার্থঃ আমার সেচনকারী পনেরো - দশ ইন্দ্রীয় এবং পঞ্চ প্রাণ হাত এবং পায়ের বিশ আঙ্গুলির সমান শরীরের ভিতর বিশ অঙ্গকে এক সাথে পরিপাক করে এবং পরিপুষ্ট হয়ে পুষ্টিদায়ক ভোগ্য দেহ এবং নানা প্রকার ভোগ কে বা সেই প্রাণকে ভোগ করি, ঐ সমস্ত প্রাণ নিশ্চয়রূপে আমার দুই পার্শ পূর্ণ করে, শক্তিশালী প্রভূ সবার থেকে উপরে।
(অনুবাদঃ জয়দেব শর্মা)
.
অতএব ইহা স্পষ্ট যে বেদ যজ্ঞে গো আহুতি দেবার মিথা প্রচার নিতান্তই ভ্রান্ত।অধ্বর রূপ যজ্ঞকে বেদ কখনো নির্দোষ প্রাণীর রক্ত দিয়ে অপবিত্র করতে বলে নি। বরং পবিত্র বেদের নির্দেশ এই যে আমরা সর্বদা যেন জগতের সমস্ত প্রাণীর জন্য সুখকর হই -
"স্বস্তি মাত্রে উত পিত্রে নো অস্তু স্বস্তি গোভ্যো জগতে পুরুষেভ্যঃ।(অথর্ববেদ ১।৩১।৪)"
--- আমাদের মাতার জন্য এবং পিতার জন্য সুখদায়ক হও এবং গাভীর জন্য পুরুষের জন্য জগতের জন্য সুখদায়ক হও।

ওম্ শম্

রেফারেন্স সমূহ:
১. ‘The Integrated Science Of Yagya’ by Dr. Rajani R. Joshi, Yug Nirman Yojana, Gayatri Tapobhumi, Mathura
২. ‘Agnihotra Vyakhya’, Arya Pratinidhi Sabha, Ajmer
৩. ‘Fumigating Substances used in Yagna’- Procedings of Ashwamedha Yagna held in Montreal, Canada
৪. ‘Does Yagna Add to the Prevalent Pollution’- Procedings of Ashwamedha Yagna held in Montreal, Canada
৫. Selected Articles from Akhand Jyoti. Publisher Akhand Jyoti Sansthan, Mathura
৬. ‘Agnihotra: The Message of Time’ by Dr. Madhukar P. Giak-wad, National Symposium on Unification of Modern and Ancient Sciences held in Andheri, Mumbai on April 30, 1995
৭. ‘The New Age Force of Gayatri’ by Ashok N. Raval, Bhartiya Vidya Bhavan, Mumbai

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অথর্ববেদ ২/১৩/৪

  ह्यश्मा॑न॒मा ति॒ष्ठाश्मा॑ भवतु ते त॒नूः। कृ॒ण्वन्तु॒ विश्वे॑ दे॒वा आयु॑ष्टे श॒रदः॑ श॒तम् ॥ ত্রহ্যশ্মানমা তিষ্ঠাশ্মা ভবতুতে তনূঃ। কৃণ্বন্তু...

Post Top Ad

ধন্যবাদ