পাতঞ্জল মহাভাষ্য - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

17 November, 2020

পাতঞ্জল মহাভাষ্য

 সূত্রকার পাণিণী, বার্তিককার কাত্যায়ণ ও মহাভাষ্যকার পতঞ্জলী, এদের তিনজনের ব্যকরনগ্রন্থ কে ত্রিমুনি ব্যাকরণ বলা হয়। মহাভাষ্যের বিষয়বস্তুর কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় যে এই গ্রন্থে পাণিনীর সূত্র ক্রমে অষ্টাধ্যায়ীস্থ সূত্রগুলিকেই প্রধানত ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তবে সব সূত্রের ব্যাখ্যা পতঞ্জলি করেননি।সূত্র ছাড়া কাত্যায়ন ও সুনাগদির বার্তিকগুলি মহাভাষ্যে স্থান পেয়েছে এবং ব্যাখ্যাত হয়েছে। 

মনে রাখতে হবে যে, বার্তিকগুলির উৎসস্থল এই পাতঞ্জল মহাভাষ্যই। সমগ্র মহাভাষ্যে মোট ৮৫ টি আহ্নিক আছে। আহ্নিক নামটি থেকে কেউ কেউ মনে করেন যে এক একটি দিনে যতটা পড়ানো হতো বা যতটা রচনা হত, ততটা অংশই এক একটি আহ্নিকে স্থান পেয়েছে। মহাভাষ্যের প্রথম আহ্নিকটির নাম পস্পশা। পস্পশা শব্দের অর্থ প্রস্তাবনা বা উপোদঘাত। মহাভাষ্যের প্রথম ৯টি আহ্নিক নবাহ্নিক নামে পরিচিত।

মহাভাষ্য রচনাশৈলী:

মহাভাষ্যের রচনাশৈলী এবং গদ্যও পণ্ডিতগণের প্রশংসা কুড়িয়েছে। কঠিন বিষয় আলোচনার গুনে অনেক ক্ষেত্রেই সরস ও চিত্তগ্রাহী হয়ে উঠেছে। কাশিকাবৃত্তির টীকাকার হরদত্তের মতানুসরণ করে বলা যায় যে আক্ষেপ সমাধানের রীতিতে রচিত এই গ্রন্থটি যথার্থ ভাষ্য হয়ে উঠেছে। এই প্রসঙ্গে পদমঞ্জুরী, টীকায় হরদত্তের দেওয়া ভাষ্য লক্ষণটিও স্মরণীয় আক্ষেপ সমাধানপরো গ্রন্থো ভাষ্যম্। বস্তুতঃ পাতঞ্জলি মহাভাষ্য গ্রন্থখানি পাণিনীয় সম্প্রদায়ে এতই গুরুত্বপূর্ণ যে কোন কোন পন্ডিত অষ্টাধ্যায়ী এবং মহাভাষ্যকেই যথার্থ পাণিনীয় গ্রন্থ বলে মনে করেছেন। মহাভাষ্যে মহর্ষি পতঞ্জলি শব্দার্থ সম্বন্ধের স্বরূপ আলােচনায় মূলতঃ বার্তিকার কাত্যায়নকৃত “সিদ্ধে শব্দার্থসম্বন্ধে লােকতেহর্তপ্রযুক্তে শব্দপ্রয়ােগেশাস্ত্রেণ ধর্মনিয়মঃ যথা লৌকিকবৈদিকেষু” এই উক্তিটিরই ব্যাখ্যা করেছেন। বার্তিককারের উক্ত উক্তিটিকে মহাভাষ্যকার পতঞ্জলি নানাভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে বিষয়ে স্বমত ব্যক্ত করেছেন। শব্দার্থসম্বন্ধের স্বরূপ বিষয়ে মহাভাষ্যকারের মত পর্যালােচনা করাই হল এই প্রবন্ধের মূল আলােচ্য বিষয়। মহর্ষি পতঞ্জলির মহাভাষ্য মূলতঃ কাত্যায়নকৃত (কাত্যায়নের সময়কাল-আনুমানিক ৩০০-২০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ) বার্তিকেরই ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ। পতঞ্জলি পাণিনিয়সূত্র (পাণীনির সময়কাল – আনুমানিক ৪৫০-৩৫০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ বা তারো পূর্বে ) ও কাত্যায়নকৃত বার্তিকের উপর মাহাভাষ্য রচনা করেন।

বার্তিককার কাত্যায়ন প্রথম বার্তিকেই শব্দার্থ সম্বন্ধকে নিত্য-রূপে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি প্রথম বার্তিকেই বলেছেন, “সিদ্ধে শব্দার্থসম্বন্ধে লােকতেহর্তযুক্তে শব্দপ্রয়ােগে শাস্ত্রেণ ধর্মনিয়মঃ যথা লৌকিকবৈদেকেষু”। এই বার্তিক-বাক্যটিকে মহাভাষ্যকার পতঞ্জলি চারটি বাক্যাংশে ভাগ করে সেগুলিকে ব্যাখ্যা করেছেন। এই চারটি বাক্যাংশ হল :

  • ১) ‘সিদ্ধে শব্দার্থসম্বন্ধে।
  • ২) ‘লােকতঃ।
  • ৩) “লােকতােহৰ্থপ্রযুক্তে শব্দপ্রয়ােগে শাস্ত্রেণ ধর্মনিয়মঃ। এবং
  • ৪) “লৌকিকবৈদিকেষু’।

প্রথম বাক্যাংশটি হল ‘সিদ্ধে শব্দার্থসম্বন্ধে’ অর্থাৎ, শব্দ ও অর্থের সম্বন্ধ সিদ্ধ। বার্তিককার কাত্যায়ণ এখানে ‘সিদ্ধ’ শব্দটির মাধ্যমে শব্দার্থসম্বন্ধের নিত্যতাকেই বুঝিয়েছেন। মহাভাষ্যকার পতঞ্জলিও ‘সিদ্ধ’ শব্দটিকে নিত্য শব্দের সমার্থক রূপে গ্রহণ করার পক্ষপাতী।

দ্বিতীয় বাক্যাংশটি হল ‘লােকতঃ। মহাভাষ্যকার পতঞ্জলি মনে করেন ‘লােকতঃ, এই বাক্যাংশের দ্বারা বার্তিককার বুঝিয়েছেন, শব্দ ও অর্থের সম্বন্ধ যে নিত্য তা লােক-ব্যবহারের দ্বারা জানা যায়। অর্থ প্রযুক্তে শব্দ প্রয়ােগে শাস্ত্রেণ ধর্মনিয়মঃ অর্থাৎ, লােকে অর্থজ্ঞানের অভিপ্রায়ে শব্দ প্রয়ােগ করে, এই শব্দ প্রয়ােগ লােক-ব্যবহারসিদ্ধ, শাস্ত্র কেবল শব্দপ্রয়ােগের নিয়ম করে দেয়, শব্দের সৃষ্টি করেনা, বা শাস্ত্র কখনােই শব্দের উংপাদক নয়, একথাই বার্তিককারের অভিপ্রায় বলে মহাভাষ্যকার মনে করেন। মাহাভাষ্যকার পতঞ্জলির মতে এই নিয়ম লৌকিক ও বৈদিক উভয় প্রকার বাক্যের ক্ষেত্রেই সমভাবে প্রযােজ্য হােক এই অভিপ্রায়েই বার্তিককার ‘লৌকিক বৈদিকেষু’ এই বাক্যাংশের অবতারণা করেছেন।

মহাভাষ্যকার পতঞ্জলি “সিদ্ধে শব্দার্থসম্বন্ধে” – এই বাক্যাংশটি ব্যবহারের মাধ্যমে শব্দ, অর্থ এবং শব্দ ও অর্থের সম্বন্ধ এই তিনটিকে সিদ্ধ অর্থাৎ নিত্য বলেছেন। এই বাক্যাংশে ব্যবহৃত ‘সিদ্ধ’ শব্দটি নিয়ে বৈয়াকরণদের মধ্যে বিস্তর চর্চা লক্ষ করা যায়। বলাই বাহুল্য যে, তাঁরা ‘সিদ্ধ’ শব্দটি যে নিত্য শব্দেরই পর্যায় শব্দ তা প্রতিপাদন করতে অতি সচেষ্ট হয়েছেন। এই অতি সচেষ্টতার কারণ হল ‘সিদ্ধ’ শব্দটি যে নিত্য অর্থের পর্যায় শব্দ সে বিষয়ে তাঁদের (বৈয়াকরণদের) মধ্যে ঐক্যমত্য নেই। ‘সিদ্ধ’ শব্দটি যেমন নিত্য অর্থে প্রযােজ্য হয় তেমনি অনিত্য অর্থেও প্রযােজ্য হয়। এমনকি মহাভাষ্যকার নিত্য পদার্থের যেসব দৃষ্টান্ত দিয়েছেন (যেমন পৃথিবী প্রভৃতি) সেগুলিও আদৌ নিত্য কিনা তা নিয়েও মতপার্থক্য আছে। বার্তিককার ও মহাভাষ্যকার যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সে ব্যাখ্যাতেও অস্পষ্টতা দূর হয়নি। তাঁরা নিজেও ‘সিদ্ধ’ শব্দটিকে ব্যবহারিক ভাবে নিত্য বলেছেন। ব্যবহারিক নিত্য কি যথার্থ নিত্য, না পারমার্থিক নিত্যতার দ্বারা তা খন্ডিত হয় সেবিষয়ও স্পষ্ট নয়।

বার্তিকে ‘সিদ্ধ’ শব্দের একাধিক অর্থ লক্ষ্য করা যায়। তবে শব্দার্থসম্বন্ধের স্বরূপ আলােচনা প্রসঙ্গে ‘সিদ্ধ’ শব্দটি ‘নিত্য’ শব্দটিরই দ্যোতক বলেই অনেকে মনে করেছেন। এপ্রসঙ্গে বলা যেতে পারে বার্তিককার কাত্যায়ন ‘সিদ্ধ’ শব্দটিকে ঠিক কি অর্থে ব্যবহার করেছেন তা নিয়ে মহাভাষ্যকার নিজেই দ্বিধাগ্রস্ত। আর সেকারণেই হয়তাে তিনি নিজেই তাঁর মহাভাষ্যে প্রশ্ন তুলেছেন এভাবে, “অথ সিদ্ধশব্দস্য কঃ পদার্থঃ?” এরপরে তিনি নিজেই এই প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তরে বলেছেন : “নিত্য পর্যায়বাচী সিদ্ধশব্দঃ”। – অর্থাৎ, ‘সিদ্ধ’ শব্দ নিত্য অর্থের বাচক। তাঁর মতে নিত্য অর্থের পর্যায়ক্রমে বাচক শব্দ হচ্ছে ‘সিদ্ধ’ শব্দটি।

মহাভাষ্যে পতঞ্জলি বলেন ‘সিদ্ধ’ শব্দ নিত্য অর্থের বাচক, নিত্য অর্থের পর্যায়ক্রমে বাচক শব্দ হচ্ছে ‘সিদ্ধ’ শব্দটি। কিন্তু প্রশ্ন হল কিভাবে জানা যায় যে ‘সিদ্ধ’ শব্দ নিত্য অর্থের বাচক? মাহাভাষ্যকার এই প্রশ্নের উত্তরে তাঁর মহাভাষ্যে বলেছেন, “যৎ কূটস্থেবিচালিসু ভাবেষু বৰ্ততে, তদ্যথা সিদ্ধ্যা দৌঃ সিদ্ধা পৃথিবী, সিদ্ধ্যামাকাশমিতি”। ‘কূটস্থ’ শব্দের অর্থ যা নির্বিকার, ‘অবিনাশী” এবং “অবিচালিন’ শব্দের অর্থ হল যা বিচলিত নয় বা যা স্পন্দন-বিচলনহীন বস্তুকে বােঝায় এবং এইরূপ বস্তুই যেহেতু নিত্য সেহেতু ‘সিদ্ধ’ শব্দটি ‘নিত্য’ শব্দের পর্যায়বাচী। ভাষ্যকার উদাহরণ দিয়ে বােঝানাের জন্য বলেছেন, “তদ যথাসিদ্ধা দ্যৌঃ সিদ্ধ্যা পৃথিবী, সিদ্ধ্যামাকাশিমিতি” – অর্থাৎ যেমন স্বর্গ সিদ্ধ, পৃথিবী সিদ্ধ, আকাশ সিদ্ধ, এই রূপ। মহাভাষ্যকারের মতে স্বর্গ, পৃথিবী ও আকাশ ব্যবহারিক দিক থেকে নিত্য। এই সকল নিত্য পদার্থকে বােঝানাের জন্য ‘সিদ্ধ’ শব্দের প্রয়ােগ করা। হয়, তাই সিদ্ধ শব্দের অর্থ নিত্য, এরূপ সিদ্ধান্তই প্রতিষ্ঠিত হয়।

মহাভাষ্যকার ‘সিদ্ধ’ শব্দটিকে নিত্য শব্দের পর্যায় শব্দরূপে মেনে নিয়ে আবার একটি আশংকা প্রকাশ করেছেন। আশংকাটি হল ‘সিদ্ধ’ শব্দটি যেমন নিত্য পদার্থকে বােঝায় তেমনি অনিত্য পদার্থকেও বােঝাতে পারে। তিনি বিষয়টিকে প্রকাশ করেছেন। এভাবে যে, যার উৎপত্তি আছে তাকে কার্য বলে, উৎপত্তি থাকলে ভাব পদার্থ অবশ্যই বিনাশী হয়। ‘সিদ্ধ’ শব্দটি যেমন নিত্য পদার্থকে বােঝানাের জন্য ব্যবহার করা হয়, সেইরূপ কার্য বা অনিত্য বস্তুকে বােঝানাের জন্যও প্রয়ােগ করা হয়। যেমন অন্ন সিদ্ধ, ডাল সিদ্ধ ইত্যাদি। তাহলে ‘সিদ্ধে শব্দার্থ সম্বন্ধে’-এই বার্তিকে নিত্য অর্থের বাচক রূপে ‘সিদ্ধ’ শব্দের প্রয়ােগ হয়েছে, না। কি কার্য বা অনিত্য অর্থের বাচক রূপে ‘সিদ্ধ’ শব্দটির প্রয়ােগ হয়েছে তা বােঝা যাবে কিভাবে?

মহাভাষ্যকার এরূপ আশংকার উত্তর খুঁজে পেয়েছেন অপর একজন বৈয়াকরণ দার্শনিক ব্যাডিকৃত সংগ্রহ গ্রন্থে। উক্ত আশংকার উত্তরে ব্যাডিকৃত সংগ্রহ গ্রন্থ উদ্ধৃত করে তিনি বলেছেন, “সংগ্রহে তাবৎ কার্যপ্রতিদ্বন্দ্বিভাবান মন্যামহে নিত্যপর্যায়বিচিনাে গ্রহণমিতি। ইহাপি তদেব।” অর্থাৎ (ব্যাডিকৃত) সংগ্রহ গ্রন্থে ‘সিদ্ধ’ শব্দটিকে নিত্য অর্থের বাচক রূপে গ্রহণ করা হয়েছে এবং কার্যের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে অকার্য বা ‘নিত্য’ শব্দটিকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। তাই কার্যপ্রতিদ্বন্দ্বীভাব হেতুক নিত্য পর্যায়বাচক ‘সিদ্ধ’ শব্দের গ্রহণ করা হয়েছে বলে মহাভাষ্যকার মনে করেন।

মহাভাষ্যকার উক্ত উপায়ে ‘সিদ্ধ’ শব্দটি যে নিত্য অর্থের বাচক সেকথা প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন ব্যাডিকৃত সংগ্রহ গ্রন্থেও ‘সিদ্ধ’ শব্দটি নিত্য অর্থের বাচক রূপে গৃহীত হয়েছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আবার একটি প্রশ্ন ওঠে শব্দার্থসম্বন্ধের স্বরূপ প্রকাশ কালে ‘সিদ্ধ’ শব্দটির পরিবর্তে ‘নিত্য’ শব্দটির প্রয়ােগ করে, ‘সিদ্ধে শব্দার্থসম্বন্ধে’-এরূপ না বলে ‘নিত্য শব্দার্থসম্বন্ধে বললে কি কোন অসুবিধা হত?

এই প্রশ্নের উত্তরে মহাভাষ্যকার বলেছেন, “অবর্ভক্ষো, বায়ুভক্ষো ইতি। অপ এব ভয়ক্ষতি, বায়ুমেব ভয়ক্ষতি ইতি গম্যতে। এবমিহাপি সিদ্ধ এব, ন সাধ্য ইতি”। মহাভাষ্যকারের মতে, “অবভক্ষ’, ‘বায়ুভক্ষ’ – এরূপ শব্দের সরল অর্থ হচ্ছে জলভক্ষণকারী, বায়ুভক্ষণকারী। এরূপ অর্থ গ্রহণ করলে – অবভক্ষ, বায়ুভক্ষ শব্দের ব্যবহারের কোন সার্থকতা থাকে না। কেননা সকলেই জল পান করে, সকলেই বায়ু গ্রহণ করে, জল পান না করে, বায়ুগ্রহণ না করে কেউ বেঁচে থাকতে পারে না। এখন যদি কোন বিশষ একটি প্রাণী বা কোন ঋষিকে বােঝাবার জন্য ঐরূপ ‘অবভক্ষ’ বা ‘বায়ুভক্ষ’ শব্দের প্রয়ােগ করা হয়, তখন সেই শব্দ দুটির অর্থ এরূপ বােঝা যায় – জলই ভক্ষণ করে জল ভিন্ন অন্য কিছু ভক্ষণ করে না, বায়ুই ভক্ষণ করে বায়ু ভিন্ন অন্য কিছু ভক্ষণ করে না, এভাবে শব্দ দুটির সার্থকতা রক্ষিত হয়। এখানে ‘অ’ শব্দটি একটি থাকলেও অবধারণ অর্থে বােঝাচ্ছে বলে একপদ অবধারণ হয়েছে। একই ভাবে ‘সিদ্ধে শব্দার্থ সম্বন্ধে’ এরূপ বাক্যের ক্ষেত্রে ‘সিদ্ধ’ পদটি সিদ্ধ ছাড়া আর কিছুই নয় নিত্য ছাড়া আর কিছুই নয় এরূপ অবধারণ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সাধ্য অর্থাৎ কার্য অর্থে ‘সিদ্ধ’ শব্দটি প্রযুক্ত হয়নি। ‘সিদ্ধ’ শব্দটি কার্য অর্থের ব্যবর্তক। তাই বলা যেতে পারে ‘সিদ্ধ’ শব্দটি নিত্য অর্থে প্রযুক্ত হয়েছে কার্য অর্থে নয়।

বার্তিককার শব্দার্থসম্বন্ধের স্বরূপ প্রকাশ কালে ‘সিদ্ধ’ শব্দটির পরিবর্তে ‘নিত্য’ শব্দটির প্রয়ােগ করে, ‘সিদ্ধে শব্দার্থসম্বন্ধে’ – এরূপ না বলে “নিত্য শব্দার্থসম্বন্ধে কেন বলেননি, তার পক্ষে মহাভাষ্যকার বলেছেন যে, ‘সিদ্ধ’ শব্দটি যেহেতু মঙ্গলসূচক সেকারণেই বাৰ্তিৰ্ককার ‘নিত্য’ শব্দের পরিবর্তে ‘সিদ্ধ’ পদটি ব্যবহার করেছেন। মহাভাষ্যকার মহাভাষ্যে বলেছেন “মঙ্গলার্থম্‌। মাঙ্গলিক আচাৰ্যো মহতঃ শাস্ত্রৌঘস্য মঙ্গলার্থং সিদ্ধশব্দমাদিতঃ প্রযুঙক্তে।” শাস্ত্রের আদিতে মঙ্গলাচরণ করা এক প্রাচীন রীতি। মহাভাষ্যকারের মতে যে শাস্ত্রের আদিতে মঙলাচরণ করা হয় সেই শাস্ত্র প্রচারিত হয়, সেই শাস্ত্র যিনি অধ্যায়ন করেন তিনি দীর্ঘায়ু হন। এসব কথা বার্তিককার জানতেন সেকারনেই তিনি গ্রন্থের আদিতে ‘নিত্য’ শব্দের প্রয়ােগ না করে ‘সিদ্ধ’ শব্দটি প্রয়ােগ করেছেন।

‘সিদ্ধ’ শব্দট একদিকে মঙ্গলসূচক আবার অন্যদিকে অনেকাৰ্থক, সেক্ষেত্রে শব্দার্থসম্বন্ধের স্বরূপ প্রকাশ কালে ‘সিদ্ধ’ শব্দটির পরিবর্তে ‘নিত্য’ শব্দটির ব্যবহারই যথােপযুক্ত হত। মহাভাষ্যকার এ প্রসঙ্গে বলেছেন যে, ‘সিদ্ধ’ শব্দের ন্যায় ‘নিত্য’ শব্দটিও অনেকার্থক। যেমন ‘নিত্য’ বলতে সৃষ্টি ও ধ্বংসরহিত নিত্য আত্মার কথা বলা হয়, তেমনি নিত্য শব্দটির – নিত্য প্রহসিতঃ (সদা হাস্যমান), নিত্য প্রজ্জ্বলিত ইত্যাদি ব্যবহারও পরিলক্ষিত হয়। সেক্ষেত্রে ‘সিদ্ধে শব্দার্থ সম্বন্ধে’ – এরূপ না বলে নিত্যে শব্দার্থ সম্বন্ধে বললে সমস্যা কিছু হ্রাস হত না বরং বৃদ্ধি পেত বলেই মহাভাষ্যকার মনে করেন। মহাভাষ্যকার তাই মনে করেন যে, “সিদ্ধে শব্দার্থ সম্বন্ধে” – এই বার্তিক-বাক্যটির মাধ্যমে যথাযথভাবেই শব্দার্থসম্বন্ধ যে নিত্য তা প্রতিপাদন করা হয়েছে।

মহাভাষ্যকারের মতে শুধু শব্দার্থসম্বন্ধ নয় শব্দ, অর্থ এবং শব্দার্থ সম্বন্ধ এই তিনটিই নিত্য। কিন্তু প্রশ্ন হতে পারে কিভাবে জানা গেল এই তিনটি নিত্য। প্রশ্নটি মহাভাষ্যকার নিজেই উত্থাপন করেছেন এভাবে “কথং পুনজ্ঞায়তে সিদ্ধঃ শব্দোহৰ্থ সম্বন্ধেশ্চেতি”। উত্তরে মহাভাষ্যকার “সিদ্ধে শব্দার্থসম্বন্ধে লােকতেহর্থপ্রযুক্তে শব্দপ্রয়ােগ শাস্ত্রেণ ধর্মনিয়মঃ যথা লৌকিকবৈদিকেষু” – এই বার্তিক বাক্যটির দ্বিতীয় অংশ ‘লােকত’ঃ – শব্দটি উল্লেখ করেছেন। লােকতঃ এই বাৰ্তিকাংশটির মাধ্যমে তিনি বলতে চেয়েছেন শব্দ অর্থ এবং শব্দার্থ সম্বন্ধ এই তিনটি যে নিত্য তা জানতে পারা যায় লােকব্যবহার থেকে। এখানে লােকব্যবহার বলতে অনাদি লােকব্যবহার পরম্পরাকে বােঝানাে হয়েছে। লােকব্যবহারের দ্বারা শব্দার্থ সম্বন্ধের নিত্যতা কিভাবে জানা যায় সেকথা বলতে গিয়ে মহাভাষ্যে মহাভাষ্যকার বলেছেন, “যল্লোকে অর্থম্ অর্থ উপাদায় …… তাবত্যেবার্থমুপাদায় শব্দান্ প্রযুজ্ঞতে”।১০ মহাভাষ্যকারের মতে লােকে কার্য বা অনিত্য বস্তুর ব্যবহারে যেমন যত্নবান হয়, সেরূপ শব্দার্থ সম্বন্ধের ব্যবহারে যত্নবান হয় না। যেমন ঘট নামক পাত্রে জল নিয়ে নিজের প্রয়ােজন সাধন করে। কিন্তু শব্দের ব্যবহারের জন্য লােকে বৈয়াকরণের গৃহে গিয়ে এরকম বলে না আমার সুবিধা মত শব্দ উৎপাদন কর, ঐ শব্দ আমি আমার সুবিধামতাে ব্যবহার করব। পূর্বে থেকেই শব্দ থাকে, অর্থ থাকে এবং একটি শব্দ নির্দিষ্ট অর্থকেই বােঝায় কারণ শব্দার্থ সম্বন্ধও পূর্বে থেকেই থাকে। বক্তা কেবলমাত্র উচ্চারণের দ্বারা শব্দের অভিব্যঞ্জন করে, শব্দ অভিব্যক্ত হয়েই সেই শব্দ সম্বন্ধ অর্থকে শব্দার্থ সম্বন্ধকে শব্দই বুঝিয়ে দেয়। তাই বলা যেতে পারে শব্দ, অর্থ ও তাদের সম্বন্ধ যে নিত্য তা লােক ব্যবহার থেকে জানা যায়।

এখন প্রশ্ন হলাে যদি লােক ব্যবহারই শব্দার্থ সম্বন্ধের নিত্যতার প্রমাণ হয় তাহলে শাস্ত্রের ভূমিকা কি? এই প্রশ্নের উত্তরে মহাভাষ্যকার “লােকতােহৰ্থপ্রযুক্তে শব্দপ্রয়ােগে শাস্ত্রেণ ধর্মনিয়মঃ” -এই বার্তিকাংশটির উল্লেখ করেছেন। মহাভাষ্যকার এই ধর্মনিয়ম শব্দটির তিনটি প্রকারের উল্লেখ করেছেন,

  • (১) ধর্মায় নিয়মমা ধর্মনিয়মঃ।
  • (২) ধর্মাথাে বা নিয়মাে ধর্মনিয়মঃ।
  • (৩) ধর্মপ্রয়ােজনাে বা নিয়মাে ধর্মনিয়মঃ।১১

আদিকাল থেকে প্রচলিত লােকব্যবহার থেকে জেনে অপরকে অর্থ বােঝাবার জন্য মানুষ শব্দ প্রয়ােগ করে, ব্যাকরণশাস্ত্র সেই শব্দের প্রয়ােগ নিয়ম ঠিক করে দেয় কোন শব্দের প্রয়ােগ সাধু কোনটি অসাধু।।

এখন প্রশ্ন হলাে যে নিয়ম ব্যাকরণশাস্ত্র করে দেয় সেই নিয়মের ব্যবহার হয় কোথায়? উত্তরে বলা যায় বার্তিককার কাত্যায়ন এই নিয়মের ব্যাখ্যায় দৃষ্টান্ত প্রদর্শন করতে গিয়ে বলেছেন ‘যথা লৌকিক বৈদিকেষু’—অর্থাৎ লৌকিক ব্যবহার ও বৈদিক উভয় ব্যবহারেই এটাই নিয়ম পরিলক্ষিত হয়। লৌকিক ব্যবহারের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে মহাভাষ্যকার তাঁর ভাষ্যে বলেছেন ‘লােকে তাবৎ অভক্ষ্যো গ্রাম্যকুকুটঃ —- ইয়মগম্যতি৷”১২ এই ব্যাখ্যায় মহাভাষ্যকার বলতে চেয়েছেন ভক্ষ পদার্থ বিষয়ে শাস্ত্র নিয়ম করে দেয় কোনটি ভক্ষ, কোনটি অভক্ষ — যেমন নলে দেওয়া হয় গ্রাম্য কুকুর বা গ্রাম্য শূকর প্রভৃতির ভক্ষণ নিষেধ। শাস্ত্র এই নিষেধের দ্বারা তদভিন্নভক্ষ্য বস্তুর ভক্ষণের নিয়ম করে দেয়। এখানে শাস্ত্রীয় নিয়ম হল একটির নিষেধের মাধ্যমে অপরটির অনুমােদন। একই রকম ব্যাকরণশাস্ত্র নিয়ম করে দেয় এই বলে যে সাধু শব্দ প্রয়ােগে ধর্ম হয় এবং অসাধু শব্দ প্রয়ােগে অধর্ম হয়, অতএব অসাধু শব্দের প্রয়ােগের নিষেধ রূপ নিয়মের দ্বারা সাধু শব্দের প্রয়ােগের নিয়ম করা হয়। যেমন, সাধু ও অসাধু শব্দের প্রয়ােগে অর্থজ্ঞান হলেও ধর্মের নিয়ম করা হয়েছে যে সর্বদা সাধু শব্দের প্রয়ােগ করে অপরের অর্থবােধন করবে ও অসাধু শব্দের প্রয়োগ থেকে বিরত থাকবে। ও অসাধু শব্দের প্রয়োগ থেকে নিবৃত্তিই হল ধর্ম নিয়ম।

ব্যাকরণ-দর্শনে শব্দতত্ত অনাদি ও অক্ষর সেখানে শব্দ অর্থ শব্দার্থ সম্বন্ধ এই ত্রিতত্ত্বের কোন স্থান নেই। বাৰ্তত্ত্ব এক অদ্বিতীয় ও অখন্ড। ভর্তৃহরির বাক্যপদীয়ের প্রথম শ্লোকেই একথা ব্যক্ত হয়েছে এভাবে “অনাদি নিধং ব্রহ্ম শব্দতত্ত্বং যদক্ষরম্ ………।”১৩ বস্তুতঃ বৈয়াকরণ সম্প্রদায়ের শব্দব্রহ্মবাদ অনুধাবন না করলে শব্দ ও অর্থের সম্বন্ধ যে নিত্য তা বােঝা যায় না। বার্তিককার ও মহাভাষ্যকার শব্দ ব্রহ্মবাদকে ধরে নিয়েই ‘সিদ্ধে শব্দার্থ সম্বন্ধ’- এই বাক্যের দ্বারা শব্দার্থ সম্বন্ধকে নিত্য বলেছেন।

ভর্তৃহরি প্রথমে শব্দ ব্রহ্মবাদকে স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেছেন। শব্দব্রহ্মবাদের আলােকে বার্তিককারও মহাভাষ্যকারের বক্তব্য আমাদের কাছে বােধগম্য হয়।

মহাভাষ্যকার দাবি করেছেন যে, তিনি বার্তিক বাক্যের একটি স্পষ্ট ও সরল অর্থ নির্দেশ করতে প্রয়াসী। কিন্তু উপরিউক্ত আলােচনা থেকে একথা মনে হয় যে, নিত্য অর্থে ‘সিদ্ধ’ শব্দের প্রয়ােগ সেই স্পষ্টতা প্রতিপাদন করে না, নিত্যতার ব্যাখ্যায় ব্যবহারিক নিত্যতা ও পারমার্থিক নিত্যতায় প্রভেদ বিষয়বস্তুকে আরাে দুর্বোদ্ধ করে তুলেছে। সিদ্ধে শব্দার্থ সম্বন্ধে; — এই বাক্যাংশে ‘সিদ্ধ’ এই শব্দটি নিত্য শব্দের পর্যায় শব্দ বলে মহাভাষ্যকার মত প্রকাশ করেছেন। এখন ‘সিদ্ধ’ শব্দটি যদি নিত্য শব্দের পর্যায় শব্দ হয় তাহলে কেনই বা বার্তিকে বার্তিকার ‘সিদ্ধ’ শব্দটির ব্যবহার করেছেন? অথবা কেনই বা মহাভাষ্যকার। ‘সিদ্ধ’ শব্দটির প্রয়ােগ করার ব্যাপারে এত সচেষ্ট৷ ‘সিদ্ধ’ শব্দটি নিত্য ও কার্য উভয় অর্থবােধক হওয়ায় ‘সিদ্ধ’ শব্দটি অত্যন্ত সিদ্ধ’ – অর্থে ব্যবহার করে তার কার্য অর্থ নিবর্তন করা হয়েছে, আবার ‘সিদ্ধ’ শব্দটি প্রকৃতই নিত্য অর্থের বাচক কিনা? এরূপ সন্দেহ হলে স্পষ্ট ব্যাখ্যার দ্বারা বিশেষ অর্থ বুঝিয়ে মহাভাষ্যে ‘সিদ্ধ’ শব্দকে নিত্য অর্থের বাচক রূপে প্রতিষ্ঠা করার পক্ষে জোরালাে চেষ্টা করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র:

১। উক্ত সময়কাল M.K. Desh Pandey র লেখা The meaning of nouns Semantic theory in Classical and Medieval India (ডি.কে. প্রিন্টওয়ার্লড, নিউ দিল্লী ২০০৭) এবং বি.কে. মতিলালের লেখা Epistemology, Logic & Grammar in Indian Philosophical Analysis (মােটন দ্যা হগ, প্যারিস্ ১৯৭১) এই বইদুটি থেকে সংগৃহীত।

২। বার্তিকগ্রন্থ, ১, মহাভাষ্য- পশপশাহ্নিক, দন্ডিস্বামী দামােদর আশ্রম কর্তৃক অনুদিত, (চতুর্থ প্রকাশ – ১৪১৭), পৃষ্টা – ১৪০।

৩। ব্যাকরণ – মহাভাষ্য, মহর্ষি পতঞ্জলি, পস্পশাহ্নিক, দন্ডিস্বামী দামােদর আশ্রম কর্তৃক অনুদিত, (চতুর্থ প্রকাশ – ১৪১৭), পৃষ্টা – ১৪০।

৪। ব্যাকরণ – মহাভাষ্য, মহর্ষি পতঞ্জলি, পস্পশাহ্নিক, দন্ডিস্বামী দামােদর আশ্রম কর্তৃক অনুদিত, (চতুর্থ প্রকাশ – ১৪১৭), পৃষ্টা – ১৪০।

৫। ব্যাকরণ – মহাভাষ্য, মহর্ষি পতঞ্জলি, পস্পশাহ্নিক, দন্ডিস্বামী দামােদর আশ্রম কর্তৃক অনুদিত, (চতুর্থ প্রকাশ – ১৪১৭), পৃষ্টা – ১৪০।

৬। ব্যাকরণ – মহাভাষ্য, মহর্ষি পতঞ্জলি, পস্পশাহ্নিক, দন্ডিস্বামী দামােদর আশ্রম কর্তৃক অনুদিত, (চতুর্থ প্রকাশ – ১৪১৭), পৃষ্টা – ১৪১।

৭। ব্যাকরণ – মহাভাষ্য, মহর্ষি পতঞ্জলি, পস্পশাহ্নিক, দন্ডিস্বামী দামােদর আশ্রম কর্তৃক অনুদিত, (চতুর্থ প্রকাশ – ১৪১৭), পৃষ্ঠা – ১৪১।

৮। ব্যাকরণ – মহাভাষ্য, মহর্ষি পতঞ্জলি, পস্পশাহ্নিক, দন্ডিস্বামী দামােদর আশ্রম কর্তৃক অনুদিত, (চতুর্থ প্রকাশ – ১৪১৭), পৃষ্টা – ১৪৯।

৯। ব্যাকরণ – মহাভাষ্য, মহর্ষি পতঞ্জলি, পস্পশাহ্নিক, দন্ডিস্বামী দামােদর আশ্রম কর্তৃক অনুদিত, (চতুর্থ প্রকাশ – ১৪১৭), পৃষ্টা – ১৬৪।

১০। ব্যাকরণ – মহাভাষ্য, মহর্ষি পতঞ্জলি, পস্পশাহ্নিক, দন্ডিস্বামী দামােদর আশ্রম কর্তৃক অনুদিত, (চতুর্থ প্রকাশ – ১৪১৭), পৃষ্টা – ১৬৭।

১১। ব্যাকরণ – মহাভাষ্য, মহর্ষি পতঞ্জলি, পস্পশাহ্নিক, দন্ডিস্বামী দামােদর আশ্রম কর্তৃক অনুদিত, (চতুর্থ প্রকাশ – ১৪১৭), পৃষ্টা – ১৬৮।

১২। ব্যাকরণ – মহাভাষ্য, মহর্ষি পতঞ্জলি, পস্পশাহ্নিক, দন্ডিস্বামী দামােদর আশ্রম কর্তৃক অনুদিত, (চতুর্থ প্রকাশ – ১৪১৭), পৃষ্টা – ১৭১।

১৩। বাক্যপদীয়, (ব্ৰহ্মকান্ড) ভর্তৃহরি, বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য কর্তৃক সম্পাদিত, পৃষ্ঠা – ১।

গ্রন্থপঞ্জি :

১। কর, গঙ্গাধর, শব্দার্থসম্বন্ধসমীক্ষা, সংস্কৃত বুক ডিপাে, কলকাতা, ২০০৩।

২। ঘােষ, রঘুনাথ ও ভট্টাচার্য চক্রবর্তী, ভাস্বতী, শব্দার্থ বিচার (সম্পাদনা), এলাইড পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, ২০০৫।

৩। দাস, করুণাসিন্ধু, প্রাচীন ভারতের ভাষা দর্শন, প্রগ্রেসিভ পাবলিশার্স, ফেব্রুয়ারি, ২০০২। ৪। বাক্যপদীয়, (ব্রহ্মকান্ড) ভর্তৃহরি, বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য কর্তৃক বঙ্গানুবাদ সহ, ১ম ও ২য় খন্ড, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষদ, ২য় সংস্করণ ২০০৭।

৫। ভট্টাচার্য, রবীন্দ্র কুমার, শব্দার্থতত্ত্ব, সদেশ, ২০০৯।

৬। মহাভাষ্য (পস্পশাহ্নিক), দন্ডীস্বামী দামােদর আশ্রম, কলকাতা, চতুর্থ সংস্করণ ১৪১৭ বঙ্গাব্দ।

৭। Das, Karunasindhu, A Paninian Approach to Philosophy of Language, Sanskrit Pustak Bhandar, 1990.

৮। Matilal, B.K. Epistemology, Logic & Grammar in Indian Philosophical Analysis, The Hague, Paris, 1971.

৯। Sastri, G. : A study in dialectics of Sphota, Motilal Banarsi Dass, Delhi, 1980. : The Philosophy of Word and meaning, Sanskrit College, Kolkata, 1959.

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ