অথ বর্ণাশ্রমবিষয়ঃ সংক্ষেপতঃ
তত্র বর্ণবিষয়ো মন্ত্রো
‘ব্রাহ্মণোৎSস্য মুখমাসীৎ' ইত্যুক্তস্তদর্থশ্চ।
তস্যায়ং শেষঃ- বর্ণো বৃণোতেঃ।।১।। নিবা০অ০২। খন্ড০৩ ।।
ব্রহ্ম হি ব্রাহ্মণঃ ।
ক্ষত্রহীন্দ্রঃ ক্ষত্র রাজন্যঃ।।২।। শত কাং০৫ ডা০১ ব্রা০১। (কং০১১)।।
বাহু বৈ মিত্রাবরুণৌ পুরুষো গর্ভঃ ।।
বীর্য়াং বা এতদ্ৰাজন্যস্য যদ্বাহু, বীৰ্য্যং বা এতদপাংরসঃ।।
শত০ কাং ৫ অ০৪ ব্রা০১। (কং০ ১৫, ১৭) ।।
ইষবো বৈ দিদ্যবঃ।।৩।। শo কং০৫। ০৪ ০২।(কং০২)
ভাষ্যম্ ঃ- বর্ণো বৃণোতেরিতি নিরুক্তপ্রামাণ্যাদ্ বরণীয়া বরীতুমহা, গুণকৰ্ম্মাণি
চ দৃষ্ট্বা যথায়োগ্যং ব্রিয়ন্তে যে তে বর্ণাঃ।।১।। (ব্রহ্ম হি ব্রাহ্মণঃ) ব্রহ্মণা বেদেন পরমেশ্বরস্যোপাসনেন চ সহ বর্ত্তমানো বিদ্যাদ্যুত্তমগুণ যুক্তঃ পুরুষো ব্রাহ্মণো ভবিতুমহতি। তথৈব (ক্ষত্র হীন্দ্ৰঃ০) ক্ষত্র ক্ষত্রিয়কুলম্। য়ঃ পুরুষ ইন্দ্রঃ পরমৈশ্বর্য্যবান্ শত্রুণাং ক্ষয়করণাদ্ যুদ্ধোৎসুকতৃাচ্চ প্রজাপালনতৎপরঃ, (ক্ষত্রং রাজন্যঃ) ক্ষত্রিয়ো ভবিতুমহতি।।২।।
(মিত্রঃ) সর্বেভ্যঃ সুখদাতা, (বরুণঃ) উত্তমগুণকর্ম্মধারণেন শ্রেষ্ঠঃ ইমাবে ক্ষত্রিয়স্য ঘৌ বাহুবদ্ ভবেতাম্, (বা) অথবা (বীর্য়াং) পরাক্রমো বলং চৈতদুভয়ং (রাজন্যস্য) ক্ষত্রিয়স্য বাহু ভবতঃ, (অপাম্) প্রাণানাং য়য়া (রসঃ) আনন্দন্তং প্রজাভ্যঃ প্রয়চ্ছতঃ ক্ষত্রিয়স্য বীর্য্য্যৎ বর্ধতে, তস্য (ইষবঃ) বাণাঃ, শস্ত্ৰাস্ত্রাণামুপলক্ষণমেতৎ (সিদ্যৰঃ) প্রকাশকা সদা ভবেয়ুঃ ।।৩।।
।। ভাষার্থঃ।। এক্ষণে বর্ণাশ্রম বিষয় লিখিত হইতেছে। এ বিষয়ে বিশেষ জ্ঞাতব্য এই যে, প্রথমতঃ সকলেই এই মনুষ্য জাতির অন্তর্গত, যাহা বেদশাস্ত্র দ্বারা সিদ্ধ হইয়াছে। এ বিষয়ের প্রমাণ (ব্রাহ্মণোৎস্য মুখমাসীৎ) ইত্যাদি মন্ত্র দ্বারা ইতিপূর্বে সৃষ্টি বিষয় বর্ণন কালে লিখিত হইয়াছে। বর্ণ বিষয় প্রতিপাদনকারী বেদমন্ত্রের ব্যাখ্যা য়াহা ব্রাহ্মণ ও নিরুক্তাদি গ্রন্থে লিখিত আছে, তদ্বিষয়ে এই স্থানে আরও গুটী কতক মন্ত্র বর্ণন করা হইতেছে যথা :- মনুষ্য জাতির মধ্যে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র ইহাদিগকে অর্থাৎ এই চারিটীকে বর্ণ বলা হয়। বেদানুযায়ী এই বর্ণের দুই প্রকার ভেদ আছে, যথা প্রথম আর্যা ও দ্বিতীয় দস্যু। এ বিষয়ের প্রমাণ নিম্নে লিখিত হইতেছে যথা : (বিজ্ঞানীহ্যায়ন্যে চ দস্যবো) অর্থাৎ এই মগ্নে পরমেশ্বর উপদেশ দিতেছেন যে, হে জীব ! তুমি আৰ্যা অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ এবং দস্যু অর্থাৎ দুষ্ট স্বভাবযুক্ত চোর ও তঙ্করাদি রূপ প্রসিদ্ধ নামধারী মনুষ্যগণের মধ্যে যে দুই প্রকার ভেদ আছে, তাহা জ্ঞাত হও। পুনশ্চ (উত শূদ্রে উত আর্য়ো) আৰ্য অর্থাৎ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য এবং অনার্য্য বা আনাড়ী অর্থাৎ মুখ, যাহাকে শূদ্র বলা হয়, (এই বেদমন্ত্র দ্বারা মনুষ্য জাতির মধ্যে) এই দুই প্রকার ভেদ জানা যায়। এইরূপে (অসূর্য্যা নাম তে লোকা ইত্যাদি) মন্ত্র দ্বারা দেব ও ভাসুর ডার্থাৎ বিদ্বান ও মূর্খ লোকের মধ্যে যে ভেদ আছে, তাহা জ্ঞাত হওয়া যায়। এই বিদ্বান ও মুখগণের মধ্যে পরস্পর বিরোধকেই দেবাসুর সংগ্রাম বলে। মনুষ্য জাতির মধ্যে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র, এই চারি প্রকার ভেদ, গুণকর্ম্মানুযায়ী করা হইয়াছে। (বর্ণা বৃণোতেঃ) এই নিরুক্তের মন্ত্রের অর্থ এইরূপ যে বর্ণ এই শব্দ এই জন্য প্রয়োগ হয় যে যাহার যেরূপ গুণকৰ্ম্ম হইয়া থাকে, (অর্থাৎ যে জন যেরূপ গুণকৰ্ম্ম স্বাভাবযুক্ত হন—অনুবাদক), তাঁহাকে তদনুযায়ী অধিকার দেওয়া কৰ্ত্তব্য। (ব্রহ্ম হিব্রাহ্মণঃ) এই মন্ত্রের অর্থ এইরূপ যে, (ব্রহ্ম শব্দে বৃহৎ বা উত্তম বুঝায়) ব্রহ্ম অর্থাৎ উত্তম কৰ্ম্ম (সদানুষ্ঠান) করিলে, সেই উত্তমকর্ম্মকারী বিদ্বান ব্যক্তি ব্রাহ্মণ বর্ণ প্রাপ্ত হন। এই ক্ষত্রিয় বর্ণের গুণ কর্ম্ম বিষয়ে রাজধর্ম্ম বর্ণনকালে বিস্তারিত লিখিয়া আসিয়াছি।।১-৩৷৷
আশ্রমা অপি চত্বারঃ সন্তি—ব্রহ্মচর্য্যগৃহস্থবানপ্রস্থসন্ন্যাসভেদাৎ। ব্রহ্মচর্য্যেণ সবিদ্যা শিক্ষা চ গ্রাহ্যা। গৃহাশ্রমেণোত্তমাচরণানাং শ্রেষ্ঠানাং পদার্থানাং চোন্নতিঃ কাৰ্য্যা। বানপ্রস্থেনৈকান্তসেবনং ব্রহ্মোপাসনং বিদ্যাফলবিচারণাদি চ কার্য্যম্। সন্ন্যাসেন, পরব্রহ্মমোক্ষপরমানন্দপ্রাপণং ক্রিয়তে, সদুপদেশেন সর্বস্থা আনন্দদানং চেত্যাদি, চতুর্ভিরাশ্রমৈর্ধর্ম্মার্থকামমোক্ষাণাং সম্যক্ সিদ্ধিঃ সম্পাদনীয়া। এতেষাং মুখ্যতয়া ব্রহ্মচর্য্যেণ সম্বিদ্যাসুশিক্ষাদয়ঃ শুভগুণাঃ সম্যগ্ গ্রাহ্যাঃ।
অত্র ব্রহ্মচর্য্যাশ্রমে প্রমাণম্
আচার্য্য উপনয়মানো ব্রহ্মচারিণং কৃণুতে গর্ভমন্তঃ ।
তং রাত্রীস্তিস্র উদরে বিভর্তি তং জাতং দ্রষ্টুমভিসংয়ন্তি দেবাঃ।।১।।
ইয়ং সমিৎ পৃথিবী দ্যৌদ্বিতীয়োতান্তরিক্ষং সমিধা পূণাতি ।
ব্রহ্মচারী সমিধা মেখলয়া শ্রমেণ লোকাংস্তুপসা পিপত্তি।।২।।
পূর্বো জাতো ব্রহ্মণো ব্রহ্মচারী ঘর্ম্মং বসানন্তপসোদতিষ্ঠৎ ।
তন্মাজ্জাতং ব্রাহ্মণং ব্রহ্ম জ্যেষ্ঠং দেবাশ্চ সৰ্বে অমূৰ্তেন সাকম্।।৩।।
অথর্ব কাং০ ১১ অনুঃ ৩ ব০৫ মং০৩.৪.৫ ।।
ভাষ্যম্ ঃ- (আচার্য্য উ০) আচার্য্যো বিদ্যাধ্যাপকো ব্রহ্মচারিণমুপনয়মানো বিদ্যাপঠনার্থমুপবীতং দৃঢ়ব্রতমুপদিশন্নন্তর্গর্ভমিব কৃণুতে করোতি। তং তিষো রাত্রীস্ত্রিদিনপর্য্যন্তমুদরে বিভক্তি, অর্থাৎ সর্বাং শিক্ষাং করোতি, পঠনস্য চ রীতিমুপদিশতি। য়দা বিদ্যা মুক্তো বিদ্বান্ জায়তে, তদা তং বিদ্যাসু জাতং প্রাদুর্ভূতং দেবা বিদ্বাংসো দ্রষ্টুম ভিসংয়ন্তি প্রসন্নতয়া তস্য মান্যং কুৰ্বন্তি। অস্মাকং মধ্যে মহাভাগ্যোদয়েনেশ্বরানুগ্রহেণ, চ সর্বমনুষ্যোপকারার্থং ত্বং বিদ্বান্ জাত ইতি প্রশংসন্তি।।১।।
(ইয়ং সমিংঃ) ইয়ং পৃথিবী দৌঃ প্রকাশোৎন্তরিক্ষং চানয়া সমিধা স ব্রহ্মচারী পূণাতি, তত্রস্থান সর্বান্ প্রাণিনো বিদ্যয়া হোমেন চ প্রসন্নান্ করোতি। (সমিধা) অগ্নিহোত্রাদিনা, মেখলয়া ব্রহ্মচর্য্যচিহ্নধারণেন চ (শ্রমেণ) পরিশ্রমেণ, (তপসা) ধৰ্ম্মানুষ্ঠানেনাধ্যাপনেনোপদেশেন চ (লোকাং০) সৰ্ব্বান্ প্রাণিনঃ পিপৰ্ত্তি পুষ্টান্ প্রসন্নান্ করোতি।।২।।
(পুর্বো জাতো ব্রহ্ম০) ব্রহ্মণি বেদে চরিতুং শীলং য়স্য স ব্রহ্মচারী, (ধর্ম্মং বসান) অত্যন্তং তপশ্চরন, ব্রাহ্মণোৎর্থাত্রেদং পরমেশ্বরং চবিদন, পুর্বঃ সর্ব্বেষামাশ্রমাণামাদিমঃ সৰ্ব্বাশ্রমভূষকঃ, (তপসা) ধৰ্ম্মানুষ্ঠানেন (উদতিষ্ঠৎ) উৰ্দ্ধৈ উৎকৃষ্টবোধে ব্যবহারে চ তিষ্ঠতি। তস্মাৎ কারণাৎ (ব্রহ্মজ্যৈষ্ঠং) ব্রহ্মৈব পরমেশ্বরো বিদ্যা বা জ্যৈষ্ঠা সর্বোৎকৃষ্টা য়স্য তং ব্রহ্মজ্যেষ্ঠম্ম, (অমৃতেন) পরমেশ্বরমোক্ষবোধেন পরমানন্দেন সাকং সহ বর্ত্তমানং (ব্রাহ্মণং) ব্রহ্মবিদং (জাতম) প্রসিদ্ধং (দেবাঃ) সর্বে বিশ্বাংসঃ প্রশংসন্তি।।৩।।
।। ভাষার্থ।।
এখন চারি প্রকার আশ্রয় বিষয় বর্ণন করিতেছি
যথাঃ- ব্রহ্মচর্য্য, গার্হস্থ্য, রানপ্রস্থ এবং সন্ন্যাস, এই চারি প্রকার আশ্রম কথিত হয়, তন্মধ্যে পাঁচ বৎসর বয়ঃক্রম হইতে ৪৮ বর্ষ বয়ঃক্রম পর্য্যন্ত প্রথম ব্রহ্মচর্য্যাশ্রমের সময় জ্ঞাত হইবে। এই ব্রহ্মচর্য্য আশ্রমের (বিশেষ) বিভাগ পিতৃযজ্ঞ বর্ণন কালে লিখিত হইবে। ব্রহ্মচর্য্যাশ্রমে সুশিক্ষা ও সত্যাবিদ্যাদি গুণ গ্রহণ করিবার জন্য অনুষ্ঠান করিতে হয়। দ্বিতীয় গৃহাশ্রম। এই দ্বিতীয় আশ্রমের কৰ্ত্তব্য এইরূপ যে, (গৃহী) সকল প্রকার উত্তম গুণ প্রচার করিবেন এবং শ্রেয়ঃ পদার্থের উন্নতি সাধন করতঃ, সন্তানোৎপত্তি করিয়া তাহাকে সুশিক্ষা প্রদান করিবেন। উপরোক্ত প্রকার কর্ম্ম করিবার জন্যই গৃহাশ্রম ধারণ করিতে হয়। তৃতীয় বানপ্রস্থাশ্রম, যাহাতে ব্রহ্মবিদ্যাদি সাধন করিবার জন্য, একান্ত স্থানে পরমেশ্বরের উপাসনা অর্থাৎ ধ্যান ধারণাদিতে রত থাকা কৰ্ত্তব্য। চতুর্থ সন্ন্যাস, যাহা পরমেশ্বরের অর্থাৎ মোক্ষানন্দ প্রাপ্তি ও সত্যোপদেশ দ্বারা সমগ্র সংসারের কল্যাণার্থে গ্রহণ করা হয়। ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ এই চতুবর্গ ফলরূপী পদার্থের প্রাপ্তির জন্য উপরোক্ত চারিপ্রকার আশ্রমের পালন ও ধারণ করা মনুষ্যমাত্রেরই কর্তব্য।
উক্ত চারি প্রকার আশ্রমের মধ্যে, প্রথম ব্রহ্মচর্যাশ্রম যাহা অন্যান্য আশ্রমের মূলস্বরূপ, কারণ উক্ত ব্রহ্মচর্যাশ্রম সাধনে বিঘ্ন বা বিনষ্ট হটাল, (অর্থাৎ যথাবিহিত রূপে অনুষ্ঠিত না হইলে), অন্যান্য আশ্রম গুলি বিনষ্ট হইয়া যায়। এই ব্রহ্মচর্য্যাশ্রম বিষয়ে বেদশাস্ত্রে অনেক প্রমাণ (লিখিত) আছে, তন্মধ্যে আমি এ স্থানে গুটীকতক মাত্র বর্ণনা করিযাছি।
(আচার্য্য উপনয়নমানো ইত্যাদি) ইঁহার তাৎপর্য্য এই যে মাতা পিতার সম্বন্ধ ও সংযোগ হেতু গর্ভে বাস করিয়া, পরে মনুষ্যের যে প্রথম জন্ম হয়, তাহাকে প্রথম জন্ম বলা হয় । পণ্ডিতেরা ইহাকে পশু জন্ম বলিয়া থাকেন—অনুবাদক)। যাহাতে আচাৰ্য্য রূপী পিতা ও বিদ্যা রূপিণী মাতার সংযোগ হেতু জন্ম হয়, তাহাকে দ্বিজন্ম বা দ্বিতীয় জন্ম বলা হয়। মনুষ্যের যাবৎ এই দ্বিতীয় জন্ম না হয়, তাবৎ তাঁহার মনুষ্যত্ব প্রাপ্তি হয় না, এজন্য এই দ্বিতীয় জন্ম প্রাপ্তি করা মানবমাত্রেরই অবশ্য কর্তব্য। যখন অষ্টম বর্ষের বালক বা বালিকা (গুরুকুলে) পাঠশালায় গমন করিয়া, আচার্য্য অর্থাৎ বিদ্যাদাতার সমীপে অবস্থান করে, তখন হইতে তাহাকে ব্রহ্মচারী বা ব্রহ্মচারিণী বলা হয়, কারণ ব্রহ্ম শব্দে বেদ ও পরমেশ্বর বুঝায়, এজন্য যে বেদ ও পরমেশ্বরের বিষয়ে জানিতে প্রবৃত্ত হয় তাহাকেই ব্রহ্মচারী বলা হয়। এইরূপ আগত বালক বা বালিকাকে গুরু তিন রাত্রিকাল পর্যন্ত নিজ গর্ভে রাখিয়া থাকেন অর্থাৎ ঈশ্বরের উপাসনা ও ধৰ্ম্মবিষয়ক উপদেশ ও পঠন পাঠন বিষয়ের মুখ্য মুখ্য উপদেশ উক্ত ব্রহ্মচারী বা ব্রহ্মচারিণীকে তিন দিবস পর্য্যন্ত দিবারাত্রি নিজের সমীপে রাখিয়া, শিক্ষা দিয়া থাকেন। তৃতীয় দিবস ব্যতীত হইলে, ঐ সমাগত ব্রহ্মচারী বা ব্রহ্মচারিণীকে দেখিবার জন্য অন্যান্য অধ্যাপকগণ ও বিদ্বান পুরুষেরা সেই আশ্রমে উপস্থিত হন।।১।।
(ইয়ং সমিৎ ইত্যাদি) তৎপরে সেই দিবস হোম বা যজ্ঞ করিয়া, উক্ত ব্রহ্মচারীকে এইরূপ প্রতিজ্ঞা করাইতে হয় যে, সেই ব্রহ্মচারী বা ব্রহ্মচারিণী, পৃথিবী, সূর্য্য ও অন্তরীক্ষ এই তিন প্রকারের সমগ্র বিদ্যার পালন ও পুর্ণ করিবার ইচ্ছা করে, তৎপরে সেই ব্রহ্মচারী সমিধাগণ দ্বারা পুরুষার্থ (পুরুষকার) করিয়া সমস্ত লোককে ধৰ্ম্মানুষ্ঠান দ্বারা পূর্ণ আনন্দিত করিয়া দেয়।।২।।
(পুর্বো জাতো ব্র ইত্যাদি) অর্থাৎ যে ব্রহ্মচারী পূর্ব্বে (পূর্ব্ব আশ্রমে) পাঠ করিয়া (অর্থাৎ সর্বপ্রকার আশ্রমের প্রথম বা আদি ব্রহ্মচর্য্যরূপ আশ্রমোক্ত আশ্রম বিহিত যথাবিধি পঠন পাঠন রূপ ধর্ম্মানুষ্ঠান করিয়া–অনুবাদক) ব্রাহ্মণ হন, (অর্থাৎ ব্রাহ্মণত্ব প্রাপ্ত হন—অনুবাদক) তিনি ধর্ম্মানুষ্ঠান দ্বারা অত্যন্ত পুরুষার্থী (পুরুষকার যুক্ত) হইয়া, মনুষ্যমাত্রেরই কল্যাণকারী হইয়া থাকেন। (ব্রহ্ম জ্যৈষ্ঠং ইত্যাদির) অর্থ এই যে, তৎপরে ঐ পূর্ণ বিদ্বান ব্রাহ্মণ যখন অমৃত অর্থাৎ পরমেশ্বরের পরাভক্তিতে পূর্ণরূপে ভক্তিমান ও ধর্ম্মানুষ্ঠানে রত হন, তখন তাহাকে দেখিবার জন্য অন্যান্য বিধানগণ তথায় আগমন করিয়া থাকেন।
ব্রহ্মচার্য্যেSতি সমিধা সমিদ্ধঃ কাষ্ণং বসানো দীক্ষিতো দীর্ঘশ্মশ্ৰুঃ ।
স সদ্য এতি পূর্বস্বাদুত্তরং সমুদ্রং লোকান্ৎসংগৃভ্য মুহুরাচরিক্রৎ।।৪।।
ব্রহ্মচারী জনয়ন ব্রহ্মাপো লোকং প্রজাপতিং পরমেষ্ঠিনং বিরাজম্।
গর্ভো য়োনাবিদ্রোহ ভৃত্বাৎসুরাংস্ততর্হ।।৫।।
ব্রহ্মচর্য্যেণ তপসা রাজা রাষ্ট্রং বি রক্ষতি ।
আচার্য্যোৎ ব্রহ্মচর্য্যেণ ব্রহ্মচারিণমিচ্ছতে।।৬।।
ব্রহ্মচর্য্যোণ কন্যাওয়ুবানং বিন্দতে পতিম্।
অনড বান্ ব্ৰহ্মচর্য্যেণার্শ্বো ঘাসং জিগীষতি।।৭।।
ব্রহ্মচর্য্যেণ তপসা দেবা মৃত্যুমুপান্নত।
ইন্দ্ৰো হ ব্রহ্মচর্য্যেণ দেবেভ্যঃ স্বরাভরৎ।।৮।।
অথর্ব কাং ১১ অনু০ ৩ (ব০৫) মং০ ৬/৭।১৭।১৮।১৯৷৷
ভাষ্যম্ ঃ- (ব্রহ্মচার্য্যোতি০) স ব্রহ্মচারী পুর্বোক্তয়া (সমিধা) বিদ্যয়া (সমিদ্ধঃ) প্রকাশিতঃ, (কাষ্ণ?) মৃগচর্মাদিকং (বসানঃ) আচ্ছাদয়ন, (দীর্ঘশ্মশ্রুঃ) দীর্ঘকালপর্যান্ত কেশশ্মশ্রুণি ধারিতানি য়েন সঃ, (দীক্ষিতঃ) প্রাপ্তদীক্ষঃ (এতি) পরমানন্দং প্রাপ্নোতি। তথা (পূর্বস্মাৎ) ব্রহ্মচর্য্যানুষ্ঠানভূতাৎ সমুদ্ৰাৎ (উত্তরং) গৃহাশ্রমং সমুদ্রমং (সদ্য এতি) শীঘ্র প্রাপ্নোতি। এবং নির্বাসয়োগ্যান সর্বান্ (লোকানসং০) সংগৃহ্য মুহুর্বারংবারং (আচরিক্রৎ) ধর্ম্মোপদেশমেব করোতি।।৪।।
(ব্রহ্মচারী০) স ব্রহ্মচারী (ব্রহ্ম) রেদবিদ্যাং পঠন (অপঃ) প্রাণান্, (লোক ) দর্শনং, (পরমেষ্ঠিনং) প্রজাপতিং (বিরাজঃ) বিবিধপ্রকাশকং পরমেশ্বরং (জনয়ন্) প্রকটয়ন্, (তামৃতস্য) মোক্ষস্য (য়োনৌ) বিদ্যায়াং (গর্ভো ভুত্বা) গর্ভবন্নিয়মেন স্থিতা যথাবদ বিদ্যাং গৃহীত্বা, (ইন্দ্রো হভূতা) সূর্য্যবৎ প্রকাশকঃসন (অসুরান্) দুষ্টকর্ম্মকারিনো মূৰ্খান্ পাখণ্ডিনো জনান্ দৈত্যরক্ষঃস্বভাবান (ততই) তিরস্করোতি, সর্বাগ্নিবারয়তি। য়থেন্দ্রঃ সুর্যোাৎসুরাম্মেঘান্ রাত্রিং চ নিবারয়তি, তথৈব ব্রহ্মচারী সর্বগুডগুণ প্রকাশকোৎশুভ-গুণনাশকশ্চভবতীতি।।৫।।
(ব্রহ্মচর্য্যোণ০) তপসা ব্রহ্মচর্য্যোণ কৃতেন রাজা রাষ্ট্রং বিরক্ষতি, বিশিষ্টতয়া প্ৰজা রক্ষিতুং য়োগ্যো ভবতি। আচার্য়োৎপি কতেন ব্রহ্মচর্য়োণৈব বিদ্যাৎ প্রাপ্য ব্রহ্মচারিণমিচ্ছতে স্বীকুৰ্যান্নানাথেতি।।৬।।
অত্র প্রমাণম্ ঃ— 'আচার্য্যাঃ কস্সাদাচারং গ্রাহয়ত্যাচিনোত্যৰ্থানাচিনোতি বুদ্ধিনিতিবা'।।
নিরুক্ত ডা০১ বং০৪।৬।।
(ব্রহ্মচয়েৎণ০) এবমের কৃতেন ব্রহ্মচয়েfণৈব কন্যা মুবতিঃ সতী মুবানং সসদৃশহ পতিং বিন্দতে, নান্যথা, ন চাতঃ পূর্বমসদৃশং বা। তানড্ বানিত্যুপলক্ষণং বেগবতার পশুনাং তে পশবোऽশ্বশ্চ ঘাসং য়থা, তথা কৃতেন ব্রহ্মচর্যোণ স্ববিরোধিনঃ পশূন্ জিগীমন্তি যুদ্ধেন জেতুমিচ্ছন্তি। অতো মনুষ্যেস্তূবশ্যং ব্রহ্মচর্য়াং কৰ্ত্তবামিত্যভিপ্রায়।।৭।।
(ব্রহ্মচর্য্যোণ তপসা দেবা) দেবা বিদ্বাংসো ব্রহ্মচর্য্যেণ বেদাধ্যয়নেন ব্রহ্মবিজ্ঞানেন তপসা ধৰ্ম্মানুষ্ঠানেন চ মৃত্যুং জন্মমৃত্যু প্রভবদুঃখমুপাঘ্নত নিত্যং মুন্তি, নান্যথা। ব্রহ্মচরোগ সুনিয়মেন, হেতি কিলার্থে যথা ইন্দ্ৰঃ সুর্য্যো দেবেভ্য ইন্দ্রিয়েভাঃ স্বঃ সুখং প্রকাশং, চাভরদ্ ধারয়তি, তথা বিনা ব্রহ্মচর্য্যোণ কস্যাপি নৈব বিদ্যাসুখং চ য়থাবদ্ ভবতি। তাতো ব্রহ্মচর্য্যানুষ্ঠানপূর্বকা এর গৃহাশ্রমাদয়স্ত্রয় আশ্রমাঃ সুখমেধন্তে। ডান্যথা মূলাভাবে কুতঃ শাখাঃ। কিন্তু মূলে দৃঢ়ে শাখাপুষ্পফলচ্ছায়াদয়ঃ সিদ্ধা ভবন্তোবেতি।।৮।। ।। ভাষাৰ্থ।।
(ব্রহ্মচার্য্যেতি০) যিনি ব্রহ্মচারী হন, তিনি পূর্বোক্ত বিদ্যা (জ্ঞান) দ্বারা প্রকাশিত, ও মৃগ চর্মাদি দ্বারা আচ্ছাদিত হইয়া, দীর্ঘ কেশ ও শ্বাশ্রুধারণ পূৰ্ব্বক, দীক্ষা প্রাপ্ত হইয়া সত্যবিদ্যা ও জ্ঞান লাভ করতঃ, পরমানন্দ প্রাপ্ত হন। তৎপরে সদ্বিদ্যা গ্রহণ পূর্বক, ব্রহ্মচর্য্যানুষ্ঠানরূপী পূর্ব সমুদ্রের পারে উত্তীর্ণ হইয়া, উত্তর সমুদ্র স্বরূপ গৃহাশ্রম প্রাপ্ত হইয়া থাকেন। এবং উত্তমরূপ বিদ্যা সংগ্রহ করিয়া অর্থাৎ প্রাপ্ত হইয়া, বারংবার ধর্মোপদেশ করেন।।৪।।
(ব্রহ্মচারী) ব্রহ্মচারী ব্রহ্মবিদ্যায় পারদর্শী হইয়া উক্ত বিদ্যায় যথার্থ জ্ঞান লাভ করতঃ, প্রাণ বিদ্যা, লোক বিদ্যা তথা পরমেশ্বর, যিনি সকলের শ্রেষ্ঠ ও প্রকাশক, তাহাকে জ্ঞাত হইয়া অর্থাৎ মোক্ষরূপী বিদ্যার গর্ভে থাকিয়া, যথাবৎ সত্যবিদ্যা গ্রহণ করিয়া, সূর্য্যবৎ প্রকাশমান্ অর্থাৎ ঐশ্বর্যাযুক্ত হইয়া, অসুর অর্থাৎ মুখ ও দুষ্টকর্ম্মকারী লোকের তিরস্কারকারী হইয়া থাকেন, অর্থাৎ মূর্খের অবিদ্যা ছেদনকারী ও দুষ্টের দমনকারী হইয়া থাকেন, (রুদ্র সংজ্ঞা প্রাপ্ত হইয়া থাকেন—অনুবাদক)।৫।
(ব্রহ্মচর্য্যেণ তং) পূর্ণ ব্রহ্মচর্য্য পালন দ্বারা বিদ্যোপার্জ্জন করিয়া, সত্যধর্মের অনুষ্ঠান দ্বারা, রাজা রাজ্য করণে সমর্থ হন। এইরূপ আচার্য্য (পূর্ব বয়সে) ব্রহ্মচর্য্য পালন করিয়া বিদ্যোপার্জন দ্বারা শিষ্যকে উপদেশ দিতে সমর্থ হন। (আচার্য্য শব্দের প্রমাণ অত্র প্রদত্ত হইতেছে যথা :- আচার্য্যঃ কস্সাদাচারাং গ্রাহয়ত্যা চিনোত্যৰ্থানচিনোতি বুদ্ধিমিতি বা নিরুক্ত অ০১ খং০৪ অর্থাৎ আচার্য্য তাঁহাকেই বলা হয়, যিনি অসত্যাচার ও অনর্থকে পরিত্যাগ পূর্ব্বক, সত্যাচার ও সত্যার্থের গ্রহণ করিয়া শিষ্যের জ্ঞান বৃদ্ধি করাইয়া দেন।।৬।।
(ব্রহ্মচয়োণ ক০ ইত্যাদি) অর্থাৎ কন্যা ব্রহ্মচর্যাশ্রম (পূর্ণতয়া) পালন পূর্বক, পূর্ণ বিদ্যা লাভ করিয়া, পরে সেই যুবতী আপনার সদৃশ পুর্ণ বিদ্বান যুবা পুরুষকে আপন পতি বলিয়া বরণ ও স্বীকার করিতে সমর্থ হন। এইরূপে পুরুষও পূর্ণ ব্রহ্মচর্য পালন করিয়া, সমাবর্তন পূর্বক প্রসন্নতার সহিত সুশীলা ও ধার্মিকা স্ত্রীর সহিত বিবাহসূত্রে বদ্ধ হইয়া, পরস্পর সুখ দুঃখের সহায়কারী হইয়া থাকেন। ব্রহ্মচর্য্য রক্ষা করার এইরূপ প্রভাব যে, অনড্বান অর্থাৎ পশুগণকেও পূর্ণ যুবাবস্থা পর্যন্ত যদি ব্রহ্মচর্য্য ব্রত ধারণ করান যায়, তবে সেই পশুও অত্যন্ত বলশালী হইয়া, অপর দুর্বল জীবকে (পশুকে) পরাজয় করিতে সমর্থ হইয়া থাকে।৭।
(ব্রহ্মচর্য্যোণ তপঃ) অর্থাৎ ব্রহ্মচর্য ও ধর্ম্মানুষ্ঠান দ্বারা বিদ্বানলোক জন্ম মরণকে জয় করিয়া, মোক্ষ সুখ প্রাপ্ত হইয়া থাকেন। যেরূপ ইন্দ্র অর্থাৎ সূর্য, পরমেশ্বরের নিয়মে স্থিত থাকিয়া সর্বলোকের প্রকাশক হইয়া থাকে, তদ্রূপ মনুষ্যের আত্মা ব্রহ্মচর্য্য দ্বারা প্রকাশিত হইয়া সকল পদার্থকে প্রকাশিত করিয়া থাকে। এজন্য ব্রহ্মচর্য্যাশ্রমই সকল আশ্রম হইতে সর্বোত্তম শ্রেষ্ঠাশ্রম হইয়া থাকে। ইতিব্রহ্মচর্য্যাশ্রম বিষয় সংক্ষেপত লিখিত হইল।
অথ গৃহাশ্রম বিষয়ঃ
য়দ্ গ্রামে য়দরণ্যে য়ৎ সভায়াং য়দিন্দ্ৰিয়ে।
য়দেনশ্চকুমা বয়মিদং তদৰ্বয়জামহে স্বাহা।।৯ ।।
দেহি মে দদামি তে নি মে ধেহি নি তে দধে ।
নিহারং চ হরাসি মে নিহারং নিহরাণি তে স্বাহা।।১০।।
গৃহা মা বিভীত মা বেপধ্বমূৰ্জং বিভ্ৰতSএমসি।
উর্জং বিভ্ৰদ্বঃ সুমনাঃ সুমেধা গৃহানৈমি মনসা মোদমানঃ।।১১।।
য়েষুমধ্যেতি প্ৰবসন্যেষ্ সৌমনসো বহুঃ ।
গৃহানুপ হুয়ামহে তে নৌ জানন্ত জানতঃ।।১২।।
উপহুতাইহ গাব উপহূতাৎঅজাবয়ঃ।
অথোৎঅন্নস্য কীলাল উপহূতো গৃহেষু নঃ ।
ক্ষেমায় বঃ শান্ত্যৈ প্রপদ্যে শিব শশ্মাশংয়োঃ শংয়োঃ।।১৩।।
[য০অ০৩মং০৪৫,৫০,৪১,৪২,৪৩]
ভাষ্যম্ :- (এষামডি০) এতেষু গৃহাশ্রমবিধানং ক্ৰিয়ত ইতি । (মদগ্রামে) য়দগ্রামে গৃহাশ্রমে বসন্তো বয়ং পুণ্যং বিদ্যাপ্রচারং সন্তানোৎপত্তি মৃত্যুৎত্তমসামাজিকনিয়মং সর্বোপকারকং, তথৈবারণ্যে বানপ্রস্থাশ্রমে ব্রহ্মবিচারং বিদ্যাধ্যয়নং তপশ্চরণং, সভাসম্বন্ধে য়চ্ছুের্ভং, ইন্দ্রিয়ে মানসব্যবহারে চ য়দুত্তমং কৰ্ম্ম চ কুর্ম্মস্তৎ সর্বমীশ্বরমোক্ষপ্ৰাণ্ড্যর্থমন্ত। য়চ্চ ভ্রমেণৈনঃ পাপং চ কৃতং তৎসৰ্বমিদং পাপমবয়জামহ আশ্ৰমানুষ্ঠানেন নাশায়ামঃ।।৯৷৷
(দেহি মে০) পরমেশ্বর আজ্ঞাপয়তি-হে জীব ! ত্বমেবং বদ-মে মহাং দেহি, মৎসুখাৰ্থং বিদ্যাং দ্রব্যাদিকং চতুং দেহি, অহমপি তে তুভ্যং দদামি। মে মহাং মদৰ্থং তৃমুত্তমস্বভাবদানমুদারতাং সুশীলতাং চখেহি ধারয়, তে তুভ্যং ত্বদর্থমহমপ্যেবং চ দধে। তথৈব ধর্ম্মব্যবহারং ক্রযদানাদানাখ্যং চ হরাসি প্রয়চ্ছ, তথৈবাহমপি তে তুভ্যং ত্বদৰ্থই নিহরামি নিত্যং প্রয়চ্ছানি দদানি। স্বাহেতি সত্যভাষণং সত্যমানং সত্যাচরণং সত্যবচনশ্রবণং চ সর্ব্বে বয়ং মিলিতা কুৰ্যামেতি সত্যেনৈব সর্বং ব্যবহার কুর্য্যঃ।।১০।।
(গৃহা০) হে গৃহাশ্রমমিচ্ছন্তো মনুষ্যাঃ । স্বয়ম্বরং বিবাহং কৃত্বা মুয়ং গৃহাণি প্ৰাপ্লুত। গৃহাশ্ৰমানুষ্ঠানে (মা বিভীত) ভয়ং মা প্রাপ্লুত। তথা (মা বেপধ্বং) মা কম্পধ্বং। (উজং বিভ্রত এমসি) উর্জং বলং পরাক্রমং চ বিভ্রতঃ পদার্থানেমসি বয়ং প্রাপুম ইতীচ্ছত। (উজং বিভ্রদ্বঃ) বোয়ুষ্মাকং মধ্যেৎহমুর্জং বিভ্রৎ সন্, (সুমনাঃ) শুদ্ধমনাঃ, সুমেধা উত্তমবুদ্ধিযুক্তঃ (মনসা মোদমানঃ) প্রাপ্তানন্দঃ, (গৃহানৈমি) গৃহাণি প্রাপ্নোমি।।১১।।
(য়েষামধ্যেতি প্ৰ০) য়েষু গৃহেষু প্ৰবসতো মনুষ্যস্য (বহুঃ) অধিকঃ (সৌমনসঃ) আনন্দো ভবতি, তত্র প্রবসন্ য়েষাং য়ান্ পদার্থান্ সুখকারকান্ স (অধ্যেতি) স্মরতি, (গৃহানুপহবয়ামহে) বয়ং গৃহেষু বিবাহাদিষু সৎকারার্থং তান্ গৃহসম্বন্ধিনঃ সখিবন্ধাচার্য্যাদীন্ নিমন্ত্রয়ামহে। (তে নঃ) বিবাহনিয়মেষু কৃতপ্রতিজ্ঞান্ অস্মান্ (জানতঃ) প্রৌঢ়জ্ঞানান, য়ুবাবস্থাস্থান স্বেচ্ছয়া কৃতবিবাহান, তে (জানস্ত) অস্মাকং সাক্ষিণঃ সম্বিতি।। ১২।।
(উপহূতা ইহ০) হে পরমেশ্বর। ভবৎকৃপয়া ইহাস্মিন্ গৃহাশ্রমে গাবঃ পশুপৃথিবীন্দ্ৰিয়বিদ্যাপ্রকাশাহলাদাদয় উপহূতা অর্থাৎ সম্যক্ প্রাপ্তা ভবন্তু। তথা (অজাবয়ঃ) উপহুতা অম্মদনুকুলা ভবন্তু। (অথো অন্নস্য কীo) অথো ইতি পূর্বোক্তপদার্থপ্রাপ্তনন্তরং নোৎস্মাকং গৃহেম্বন্নস্য ভোক্তব্যপদার্থসমূহস্য কীলালো বিশেষেণোত্তমরস উপহূতঃ সম্যক্ প্রাপ্তো ভবতু। (ক্ষেমায় বঃ শান্তৈ০) বো যুম্মান, অত্র পুরুষব্যত্যয়োৎন্তি, তান্ পূর্বোক্তান্ প্রত্যক্ষান্ পদার্থান্ ক্ষেমায় রক্ষণায় শান্তৈ সুখায় প্রপদ্যে প্রাপ্নোমি। তৎপ্রাপ্তা (শিবং) নিশ্রেয়সং কল্যাণং পারমার্থিকং সুখং (শম্মং) সাংসারিকমাভ্যুদয়িকং সুখং চ প্রাপুয়াম্। শংয়োঃ শমিতি নিঘণ্টো পদনামাস্তি। পরোপকারায় গৃহাশ্রমে স্থিত্বা পূর্বোক্তস্য দ্বিবিধস্য সুখস্যোন্নতিং কুৰ্ম্মঃ।।১৩।।
।। ভাষাৰ্থ।।
গৃহাশ্রমীর কর্তব্য যে, তিনি ব্রহ্মচর্য্য ব্রত পালন করিয়া পূর্ণ বিদ্যাপঠন সমাপন করার পর (সমাবর্তন পূর্বক-অনুবাদক) নিজের যোগ্য স্ত্রীর সহিত স্বয়ম্বর দ্বারা পরস্পর বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হইয়া, যথাবৎ উক্ত বিবাহের নিয়ম পালন করিবেন। যাহার বিবরণ আমরা ইতিপূর্বে বিবাহ ও নিয়োগ বিষয়ে বর্ণনা করিয়াছি। এজন্য আমরা এস্থলে (তদ্বিষয় বিস্তারিতরূপে বর্ণন না করিয়া-অনুবাদক) কেবলমাত্র যাহা যাহা বিশেষ বক্তব্য, অর্থাৎ গৃহস্থ স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েই ধর্ম্মোন্নতি ও গ্রামবাসী ইত্যাদি লোকের হিতার্থে, কীরূপ কর্ম্ম করিবেন, তাহাই বর্ণন করিতেছিঃ- (গ্রামে) গৃহাশ্রমী গৃহীর কৰ্ত্তব্য যে, গ্রামবাসী তথা (য়দরণ্য) অরণ্য বা বনবাসীদিগের হিতার্থে (য়ৎ সভায়াং) সভা মধ্যে সত্যবিচার ও নিজ নিজ দ্বারা সকলের সুখ ও জ্ঞান বৃদ্ধি করাইবেন। এইরূপে গৃহী সমস্ত সৎকর্ম্ম নিজ পূর্ণ পুরুষার্থ দ্বারা যথাবৎ সম্পন্ন করিবেন, এবং (য়দেনশ্চ কৃo) পাপকারী বুদ্ধিকে, শরীর বচন ও মন দ্বারা পরিত্যাগ করিয়া, যেন সর্বদা তিনি সকলের হিতকারী হইতে সমর্থ হন।।৯।।
পরমেশ্বর উপদেশ দিতেছেন যে, (দেহি মে০) সমাজিক নিয়মের ব্যবস্থানুসারে যথাবৎ আচরণ করাই, গৃহস্থের পরম উন্নতির কারণ। সকল বস্তুরই গ্রহণ বা দানকালে সত্য ব্যবস্থানুযায়ী গ্রহণ ও প্রতিগ্রহণ কার্য্য করা আবশ্যক। (নিমে ধেহি, নি তে দধে) অর্থাৎ আমি তোমার সহিত এইরূপ আচরণ করিব, এবং তুমি আমার সহিত এরূপ ব্যবহার করিও, উপরোক্ত ব্যবহার গুলিকেও, অর্থাৎ সকল প্রকার ব্যবহারিক কার্য্যে— অনুবাদক), সত্যতার সহিত সম্পন্ন করা কর্ত্তব্য। (নিহারং চ হরাসি মে নি০) এই বস্তু আমার জন্য দাও (অর্থাৎ আমাকে প্রদান কর— অনুবাদক), অথবা তোমার জন্য আমি প্রদান করিব, এইরূপ কার্য্যের যথাবৎ, সত্যতার সহিত আচরণ করা কর্তব্য অর্থাৎ কাহারও সহিত কস্মিন্ কালে কোন প্রকারের মিথ্যা ব্যবহার কর্তব্য নহে, এবং এইরূপে কার্য্য করিলে গৃহীগণের সকলপ্রকার ব্যবহার সিদ্ধ হইয়া থাকে, কারণ যে গৃহস্থ বিচার বক সকলের হিতকারী কার্য্যে রত থাকেন, তাহার সদা উন্নতি প্রাপ্তি হয়।।১০।।
হে গৃহাশ্রম পালনেচ্ছুক মনুষ্যগণ । তোমরা স্বয়ম্বর অর্থাৎ আপন ইচ্ছানুকূল বিবাহ করিয়া গৃহাশ্রমকে প্রাপ্ত হও। (অর্থাৎ গৃহাশ্রমে প্রবৃত্ত হও–অনুবাদক), এবং গার্হস্থ ধৰ্ম্মপালনে কদাপি ভয় প্রাপ্ত বা কুণ্ঠিত হইও না, পরন্তু, উক্ত আশ্রমোচিত ধৰ্ম্ম যথাবৎ পালন করিয়া, বল ও পরাক্রমযুক্ত পদার্থ প্রাপ্তির ইচ্ছা কর। তোমরা গৃহাশ্রমী পুরুষদিগকে বলিবে যে, পরমেশ্বরের কৃপায় আপনাদিগের মধ্যে থাকিয়া, পরাক্রম, শুদ্ধমন, উত্তমবুদ্ধি এবং আনন্দ প্রাপ্ত হইয়া যেন গৃহাশ্ৰমধৰ্ম্ম প্রতিপালন করিতে সমর্থ হই।।১১।।
(য়েসামধ্যেতি০) যে ঘরে বাস করে মনুষ্য তাধিক আনন্দ পায়, সেই ঘরে মনুষ্য নিজের আত্মীয় বন্ধু বান্ধব এবং আচার্যাদের আহ্বান করে থাকে। এবং তাঁদের বিবাহাদি শুভ কার্যে সৎকার পূর্ব্বক নিমন্ত্রণ করিয়া এই ইচ্ছা করে যে, তাঁহারা যেন আমাদের বিবাহাদির প্রতিজ্ঞার সাক্ষী স্বরূপ থাকেন।।১২।।
(উপস্থ) হে পরমেশ্বর ! আপনার কৃপাবলে আমরা যেন গৃহাশ্রমে থাকিয়া পশু, পৃথিবী, বিদ্যা, প্রকাশ, আনন্দ, ছাগী, মেষ আদি পদার্থ সকল উত্তমরূপে প্রাপ্ত হই. এবং আমার গৃহে যেন উত্তমোত্তম রসযুক্ত খাদ্য দ্রব্য এবং পানীয় পদার্থসকল সদা প্রস্তুত থাকে। "বঃ' এই পদ পুরুষ অব্যয় দ্বারা সিদ্ধ হইয়া থাকে, আমরা যেন উক্ত পদার্থ সকলের রক্ষার্থে ও আমাদিগের সুখার্থে প্রাপ্ত হই, এবং উহা প্রাপ্ত হইয়া আমরা যেন ঐহ্যিক পরমার্থিক উভয় প্রকারের সুখ লাভ করিতে সমর্থ হই। “শংয়োঃ" এই পদ নিঘন্টুতে প্রতিষ্ঠা অর্থাৎ সাংসারিক সুখার্থে ব্যবহৃত হইয়াছে।।১৩।।
ইতি গৃহাশ্রম বিষয়ঃ সংক্ষেপতঃ।
অথ বানপ্রস্থবিষয়ঃ সংক্ষেপত :
ত্রয়ো ধৰ্ম্মস্কন্ধা যজ্ঞোऽধ্যয়নং দানমিতি প্রথমস্তপ এর দ্বিতীয়ো ব্রহ্মচর্য্যাচার্য্যকুলবাসী তৃতীয়োऽত্যন্তমাত্মানমাচার্য্যকুলেऽবসাদয়ন্ সর্ব এতে পুণ্যলোকা ভবন্তি । -ছান্দোগ্য০ ২।২৩।।
ভাষ্যম্ :- (ত্রয়ো ধৰ্ম্মও) অত্র সর্বেস্বাশ্রমেষু ধৰ্ম্মস্য স্কন্ধা অবয়বাস্তুয়ঃ সন্তি। অধ্যয়নং, যজ্ঞঃ ক্রিয়াকাগুং, দানং চ। তত্র প্রথমো ব্রহ্মচারী তপঃসুশিক্ষাধর্ম্মা নুষ্ঠানেনাচাৰ্য্যকুলে বসতি। দ্বিতীয়ো গৃহাশ্রমী। তৃতীয়োऽত্যন্ত্মাত্মানমবসাদয় হৃদয়ে বিচারয়ন্নেকান্তদেশং প্রাপ্য সত্যাসত্যে নিশ্চিনুয়াৎ, স বানপ্রস্থাশ্রমী। এতে সর্বে ব্রহ্মচর্য্যাদয়স্রয় আশ্রমাঃ পুণ্যলোকাঃ সুখনিবাসাঃ সুখযুক্তা ভবন্তি, পুণ্যানুষ্ঠানাদেবাশ্রমসংখ্যা জায়তে নান্যথেতি।
।। ভাষার্থ।। |
(ত্রয়োধর্ম্মং) অর্থাৎ ধর্ম্মের তিনটি স্কন্ধ বা অবয়ব আছে, যথা :- ১ম বিদ্যাধ্যয়নরূপী স্কন্ধ, দ্বিতীয় যজ্ঞ বা উত্তম কার্যের অনুষ্ঠান, এবং তৃতীয় দান (অর্থাৎ বিদ্যাদি শুভগুণযুক্ত পাত্রকে তাহাদিগের আবশ্যকীয় পদার্থ প্রদান করা-অনুবাদক)। প্রথমতঃ, “তপঃ” অর্থাৎ যখন ব্রহ্মচারী সুশিক্ষা প্রাপ্ত হইয়া ও বেদোক্ত ধর্মানুষ্ঠানে রত থাকিয়া, আচার্য্যকুলে বাস করতঃ বিদ্যানুশীলনে অর্থাৎ পঠন পাঠনে রত থাকেন, তখন তাহাকেই বিদ্যাধ্যায়নরূপী স্কন্ধ বলা হয়—অনুবাদক) তৃতীয়, পরমেশ্বরের বিষয়ে যথার্থ ও সুক্ষ্ম জ্ঞান দ্বারা বিচার করিয়া, একান্ত দেশে আসীন হইয়া, সত্যাসত্যের নিশ্চয় করা মনুষ্যের বানপ্রস্থাশ্রম ধর্ম্ম। ব্রহ্মচর্যাশ্রম যথাবৎ পালন করিলে অপরাপর আশ্রম সকল পুণ্যলোক বা সুখনিবাস স্বরূপ হইয়া থাকে, (অর্থাৎ লোকে অন্যান্য আশ্রমে পরম সুখে অতিবাহিত করিতে সমর্থ হন - অনুবাদক)। ব্রহ্মচর্য্যাশ্রম যথাবিহিত রূপে পালন করিয়া বিদ্যালাভ করতঃ, ধর্ম্ম ও ঈশ্বর বিষয় সম্যক নিশ্চিত হইয়া, (অর্থাৎ নিশ্চয় জ্ঞান লাভ করিয়া বা জ্ঞাত হইয়া–অনুবাদক) গৃহাশ্রম পরিত্যাগ করিয়া, একান্ত স্থানরূপ বনে গমন পূর্বক, সম্যকপ্রকারে সত্যাসত্য বস্তুর ব্যবহার বিষয় নিশ্চিত জ্ঞাত হইয়া, বানপ্রস্থাশ্রম সমাপন করতঃ, সন্ন্যাস গ্রহণ করা যায়, এবং এইরূপ কার্যইি মনুষ্যের পরম ধর্ম্ম ও কর্তব্য। ইতি বানপ্রস্থবিষয়ঃ সক্ষেপতঃ। (অথ সন্ন্যাসাশ্রম বিষয়ঃ সংক্ষেপত :-)
ব্রহ্মচর্য্যাশ্রমেণ গৃহীতবিদ্যো ধর্ম্মেশ্বরাদি সম্যঙ নিশ্চিত্য, গৃহাশ্রমেণ তদনুষ্ঠানং
তত্ত্বিজ্ঞানবৃদ্ধিং চ কৃত্বা, ততো বনমেকান্তং গত্বা, সম্যক্ সত্যাসত্যবস্তুব্যবহারামিশ্চিত্য
বানপ্রস্থাশ্রমং সমাপ্য সন্নাসী ভবেৎ। অর্থাৎ ব্রহ্মচর্য্যাশ্রমং সমাপ্য গৃহী ভবেৎ, গৃহী
ভুত্বা বনী ভবেধনী ভূত্বা প্রব্রজেদ্ ইত্যেকঃ পক্ষঃ। য়দহরের বিরজেৎ তদহরের প্রবজেদ্বনাদ্বা গৃহাদ্বা, অস্মিন্ পক্ষে বানপ্রস্থাশ্রমমকৃত্বা গৃহাশ্রমানন্তরং সন্ন্যাসং গৃহ্নীয়াদিতি দ্বিতীয়ঃ পক্ষঃ। ব্রহ্মচর্য্যাদের প্রবজেৎ, সম্যগ্ ব্রহ্মচর্য্যাশ্রমং কৃত্বা গৃহস্থবানপ্রস্থাশ্রমবিকৃত্বা
সন্ন্যাসাশ্ৰমং গৃহীয়াদিতি তৃতীয়ঃ পক্ষঃ।
সর্ব্বত্রান্যাশ্রমবিকল্প উক্তঃ, পরন্তু ব্রহ্মচর্য্যাশ্রমানুষ্ঠানং নিত্যমের
কৰ্ত্তব্যমিত্যাপয়াতি। কুতঃ ? ব্রহ্মচর্যাশ্রমেণ বিনাऽন্যাশ্রমানুৎ পত্তেঃ।
।। ভাষাৰ্থ।।
এই সন্ন্যাস আশ্রম ধারণের তিন প্রকার পক্ষ আছে যথা :- ব্রহ্মচর্য্য ইত্যাদি, অর্থাৎ ব্রহ্মচর্যাশ্রম সমাপ্ত করিয়া গৃহী হন, গৃহী হইয়া বানপ্রস্থী হন, তৎপরে বানপ্রস্থাশ্রম পরিত্যাগ করিয়া পরিব্রাজক হইয়া থাকেন, ইহাই উক্ত সন্ন্যাসধর্মের প্রথম পক্ষ। দ্বিতীয় (য়দহরের প্রo) অর্থাৎ যে সময় বৈরাগ্য অর্থাৎ মন্দকৰ্ম্ম হইতে চিত্ত পৃথক হইয়া সত্যমার্গে নিশ্চিত হইয়া যায়, সে সময় গৃহাশ্রম হইতেও একেবারেই সন্ন্যাস গ্রহণ করা যাইতে পারে, এবং এইরূপে সন্ন্যাস গ্রহণ করাকেই সন্ন্যাসাশ্রমরূপ ধর্মের দ্বিতীয় পক্ষ বলা হয়। আর যদি ব্রহ্মচর্য্যাশ্রমেই ব্রহ্মচারী পূর্ণ বিদ্বান হইয়া, জীবমাত্রেরই উপকার করিবার ইচ্ছা করতঃ, ঐ বালব্রহ্মচারী উক্ত ব্রহ্মচর্য্যাশ্রম হইতেই (তীক্ষ্ণ বৈরাগ্য হেতু-অনুবাদক) একেবারেই সন্ন্যাসাশ্রম গ্রহণ করেন, তবে এইরূপ কাৰ্য্যকেই সন্ন্যাস ধর্ম্মের তৃতীয় পক্ষ স্বরূপ বলা হয়।
ব্রহ্মস্থোSমৃতত্বমেতি।।১।। ছন্দো প্রপা০২ সং০ ২৩। (প্রবাক ১)।।
তমেতং বেদানুবচনেন বিবিদিষপ্তি। ব্রহ্মচর্য্যেণ তপসা শ্রদ্ধয়া যজ্ঞেনানাশকেন চৈতমেব বিদিতা মুনিৰ্ভৰত্যেতমেৰ প্ৰব্ৰাজিনো লোকমী সন্তঃ প্রবজস্তি। এতদ্ধ স্ম বৈ তৎপূর্বে ব্রাহ্মণা। অনূচানা বিশ্বাসঃ প্ৰজাং ন কাময়ন্তে কিং প্রজয়া করিষ্যামো শেষাং নোয়মাত্মায়ং লোক ইতি। তে হ স্ম পুত্রৈষণায়াশ্চ বিত্তৈষণায়াশ্চ লোকৈষণায়াশ্চ ব্যুত্থায়াথ ভিক্ষাচর্য্যং চরন্তি। য় হোব পুত্রৈষণা সা বিত্তৈষনা য়া বিত্তৈষণা সা লোকৈষণোভে হোতে এষণে এব ভবতঃ।।২।। শতকাং ১৪ অ০ ৭। ০২। (কং০ ২৫, ২৬)।।
ভাষ্যম্ :- (ব্রহ্মস স্থ০) চতুর্থে ব্রহ্মসংস্থঃ সন্ন্যাসী (অমৃতত্বং) (এতি) প্রাপ্নোতি।। (তমেতং বেদা০) সর্ব আশ্রমিণো বিশেষতঃ সন্ন্যাসিমতমেতং পরমেশ্বরং সৰ্বভূতাধিপতিং বেদানুবচনেন তদধ্যয়নেন তচ্ছুবণেন তদুক্তানুষ্ঠানেন চ বেতুমিচ্ছন্তি। (ব্রহ্মচয়েণ০) ব্রহ্মচর্য্যেণ, তপসা ধৰ্ম্মানুষ্ঠানেন, শ্রদ্ধয়াৎত্যন্তপ্রেম্না, যজ্ঞেন নাশরহিতেন বিজ্ঞানেন ধর্মক্রিয়াকাণ্ডেন চৈতং পরমেশ্বরং বিদিত্বেত্ব মুনির্ভবতি। প্রব্রাজিনঃ সন্ন্যাসিন এতং যথোক্তং লোকং দ্রষ্টব্যং পরমেশ্বরমেবেপ্লন্তঃ প্রব্রজস্তি সন্ন্যাসাশ্রমং গৃহস্তি । (এতদ ব্রহ্ম০) য় এতদিচ্ছন্তঃ সন্তঃ পূর্বে অত্যুত্তমা ব্রাহ্মণা ব্রহ্মবিদোৎনুচানা নিঃশঙ্কা পুর্ণজ্ঞানিনোऽন্যেষাং শঙ্কানিবারকা বিদ্বাংসঃ প্রজাং গৃহাশ্রমং ন কাময়ন্তে নেচ্ছন্তি, (তে হ স্ম) হেতি স্ফুটে, স্মেতি স্ময়ে, তে প্রোৎফুল্লাঃ প্রকাশমানা বদন্তি বয়ং প্ৰজয়া কিং করিষ্যামঃ, কিমপি নেত্যৰ্থঃ। য়েষাং নোৎস্মাকময়মাত্মা পরমেশ্বরঃ প্রাপ্যো লোকো দর্শনীয়শ্চাস্তি । এবং তে (পুত্রৈয়ণায়াশ্চ) পুত্রোৎপাদনেচ্ছায়াঃ (বীঔৈষণায়াশ্চ) জড়ধনপ্রাপ্ত্যনুষ্ঠানেচ্ছায়াঃ (লোকৈষণায়াশ্চ) লোকে স্বস্য প্রতিষ্ঠাস্তুতিনিন্দেচ্ছায়াশ্চ (ব্যুত্থায়) বিরজ্য (ভিক্ষাচর্য্যং চ০) সন্ন্যাসাশ্ৰমনুষ্ঠানং কুবন্তি। য়স্য পুত্রৈষণা পুত্রপ্রাপ্তোষণেচ্ছা ভবতি তস্যাবশ্যং বিত্তৈষণাপি ভবতি য়স্য বিত্তৈষণা তস্য নিশ্চয়েন লোকৈষণা ভবতীতি বিজ্ঞায়তে। তথা য়স্যৈকা লোকৈষণা ভবতি তস্যোভে পুর্বে পুত্রৈষণালোকৈষণে ভবতঃ। য়স্য চ পরমেশ্বরমোক্ষপ্রাণ্ডেষণেচ্ছাস্তি, তস্যৈতাস্তিস্রো নিবৰ্ত্তন্তে। নৈব ব্ৰহ্মানন্দবিত্তেন তুল্যং লোকবিত্তং কদাচিদ্ ভবিতুমর্হতি। স্য পরমেশ্বরে প্রতিষ্ঠান্তি তস্যান্যাঃ সর্বাঃ প্রতিষ্ঠা নৈব রূচিতা ভবন্তি। সর্বান্ মনুষ্যাননুগ্ন সর্বদা সত্যোপদেশেন সুখয়তি, তস্য কেবলং পরোপকারমাত্রং সত্যপ্রবৰ্ত্তনং প্রয়োজনঃ ভবতীতি।।২।।
।। ভাষাৰ্থ।।
(ব্রহ্মাস স্থ০) চতুর্থ ব্রহ্মসংস্থ সন্ন্যাসী যিনি অমৃতত্ব প্রাপ্ত হন। (তমেতং) অর্থাৎ যে কেহ বিশেষতঃ এইরূপ সন্ন্যাসীগণ বেদশাস্ত্রে পঠন, শ্রবণ ও তদনুযায়ী আচরণ দ্বারা সর্ব ভূতাধিপতি পরমেশ্বরকে জানিতে ইচ্ছা করেন, তাঁহারাই অমৃতত্ব অর্থাৎ মোক্ষ মার্গ প্রাপ্ত হন। (ব্রহ্মচ) যে সৎ বা সাধু পুরুষ, ব্রহ্মচর্য্য, ধর্ম্মানুষ্ঠান, শ্রদ্ধাযজ্ঞ ও জ্ঞানবলে পরমাত্মাকে জ্ঞাত হইয়া মুনি অর্থাৎ বিচারশীল হন, তিনি ব্রহ্মলোক অর্থাৎ সন্ন্যাসীগণের প্রাপ্তি বা গন্তব্য স্থান প্রাপ্ত হইবার জন্য সন্ন্যাসী হন (সন্ন্যাস গ্রহণ করিয়া থাকেন-অনুবাদক)। উহাদিগের মধ্যে যাঁহারা পূর্ণ বিধান হন, তাঁহাদিগের গৃহস্থাশ্রমে প্রবিষ্ট হইয়া পুত্রোৎ পাদনাদির ইচ্ছা না থাকায়, তাঁহারা তদ্বিষয় বিতৃষ্ণামুক্ত হইয়া থাকেন, বিশেষতঃ, তাঁহারা পরমেশ্বরের দর্শনাভিলাষী হইয়া, সর্বপ্রকার (সাংসারিক সুখের জন্য) প্রজা, ধন, প্রতিষ্ঠা ও বস্তুত্যাদির আদৌ ইচ্ছা করেন না। অর্থাৎ পুত্রৈষনা, বিভেষনা ও লোকৈণা বর্জন করেন। এইরূপ ব্রহ্মচারীরা (তাঁহাদিগের মনে তীক্ষ্ণ বৈরাগ্য উদিত হওয়ায় অনুবাদক) তাঁহারা গৃহস্থাশ্রম বা বানপ্রস্থাশ্রম গ্রহণ ও পালন না করিয়াই একেবারেই সন্ন্যাসাশ্রম গ্রহণ পূর্বক সন্ন্যাসী হইয়া ভিক্ষাচরণরূপ সন্ন্যাসাশ্রমের অনুষ্ঠান করিয়া থাকেন। এইরূপ সন্ন্যাসীরা সকলের গুরু অর্থাৎ সত্য ও হিতোপদেষ্টা হইয়া থাকেন, তথা সকলের গৃহে অতিথি হইয়া, গৃহে বিচরণ পুর্বক, লোক সকলকে সংসারের অজ্ঞানরূপী অন্ধকার হইতে পৃথক করাইয়া, সত্যবিদ্যার উপদেশরূপ প্রকাশ দ্বারা সকলের আত্মাকে প্রকাশিত করাইযা দেন।
প্রাজাপত্যামিষ্টিং নিরূপ্য তস্যাং সর্ববেদসং হুতা ব্রাহ্মণঃ প্ৰব্ৰজেৎ ইতি শতপথেশ্রুত্যক্ষরাণি।।৩।।
য়ং য়ং লোকং মনসা সংবিভাতি বিশুদ্ধসত্বঃ কাময়তে য়াংশ্চ কামান্ ।
তং তং লোকং জায়তে তাংশ্চ কামাংস্তস্মাদাত্মজ্ঞং হ্যৰ্চয়েদ ভূতিকামঃ।।৪।।
মুণ্ডকোপনিত মুণ্ডকে ৩ খ০১ নং০১০ ।।
ভাষ্যম্ :- (প্রাজাপত্যা০) স চ সন্ন্যাসী প্রাজাপত্যাং পরমেশ্বরদেবতাকামিষ্টিং কৃত্বা, হৃদয়ে সর্বমেতস্নিশ্চিত্য, তস্যাং (সর্ববেদসং) শিখাসূত্রাদিকং হুতা, মুনিৰ্ম্মননশীলঃ সন্ প্ৰৱজতি সন্ন্যাসং গৃহ্নাতি ।পরস্ত্বয়ং পূর্ণবিদ্যাবতাং রাগদ্বেষরহিতানাং সর্বমনুষ্যোপকারবুদ্ধীনাং সন্ন্যাসগ্রহণাধিকারো ভবতি, নাল্পবিদ্যানামিতি। তেষাং সন্ন্যাসিনাং প্রাণাপানহোমো, দোষেভ্য ইন্দ্রিয়াণাং মনসশ্চ সদা নিবৰ্ত্তনং, সত্যধৰ্ম্মানুষ্ঠানং চৈবাগ্নিহোত্রম্ । কিন্তু পূর্বেষাং ত্রয়াণামেবাশ্রমিনামনুষ্ঠাতুং যোগ্যং য়দ বাহ্যক্রিয়াময়মন্তি সন্ন্যাসিনাং তন্ন। সত্যোপদেশ এর সন্ন্যাসিনাং ব্রহ্ময়জ্ঞঃ, দেবয়জ্ঞো ব্রহ্মোপাসন, বিজ্ঞানিনাং প্রতিষ্ঠাকরণং পিতৃয়জ্ঞোঃ হ্যজ্ঞেভ্যো জ্ঞানদানং সর্বেষাং ভূতানামুপৰ্য্যনুগ্রহোৎপীড়নং চভূতয়জ্ঞঃ, সর্ব্বমনুষ্যোপকারাণং ভ্রমণমভিমানশূন্যতা সত্যোপদেশকরণেন সর্বমনুষ্যাণাং সৎকারানুষ্ঠানং চাতিথিয়জ্ঞঃ। এবং লক্ষণাঃ পঞ্চমহাজ্ঞা বিজ্ঞানধৰ্ম্মানুষ্ঠানময়া ভবন্তীতি বিজ্ঞেয়ম্। পরকৈস্যান্বিতীয়স্য সর্বশক্তি মদাদিবিশেষণযুক্তস্য পরব্রহ্মা উপাসনা সভ্যধর্মনুষ্ঠানং চ সর্বেযানাশ্রমিণাসেকনের ভবর্তীতায় বিশেষঃ।।৬।।
(বিশুদ্ধস0) শুদ্ধান্তঃকরণো মনুষ্যঃ (য়ং য়ং লোকং মনসা) ধ্যানেন সংবিভাতি ইচ্ছতি, (কাময়তে য়াংশ্চ কামান) য়াংশ্চ মনোরথানিচ্ছতি, (তং তং লোকং তাংশ্চ কামান) জায়তে প্রাপ্নোতি তস্মাৎ কারণাদ (ভূতিকামঃ) ঐশ্বর্য্যকামো মনুষ্যঃ, (আত্মজ্ঞং) আত্মানং পরমেশ্বরং জানাতি তং সন্ন্যাসিনমের সর্বদাৰ্চ্চয়েৎ সৎকুৰ্য্যাৎ । তস্যৈব সঙ্গেন সৎকারেণ চ মনুষ্যাণাং সুখপ্রদা লোকাঃ কামাশ্চ সিদ্ধা ভবন্তীতি । তদভিন্নান মিথ্যোপদেশকান্ স্বার্থসাধনতত্ পরান্ পাখণ্ডিনঃ কোৎপি নৈবাৰ্চয়েৎ। কুতঃ ? তেষাং সৎকারস্য নিষ্ফলতাদদুঃখফলত্বাচ্চেতি।।৪।।
।। ভাষার্থ।।
(প্রাজাপত্যা০) অর্থাৎ সন্ন্যাসী প্রজাপত্যরূপ ইষ্টিতে (যজ্ঞে) শিখা সূত্রাদির হোম করিয়া, গার্হস্থ আশ্রম পরিত্যাগ পূর্ব্বক মননশীল ও বিরাগী হইয়া, সন্ন্যাসাশ্রম গ্রহণ করেন। (য়ং য়ং লোকং) এইরূপ সন্ন্যাসী শুদ্ধান্তঃকরণে যে যে লোক ও যাহা কিছু কামনা করেন তৎ সমুদায় সিদ্ধ হইয়া থাকে। এজন্য যদি কাহার ঐশ্বর্য্য প্রাপ্তির ইচ্ছা হয়, তবে তাহার আত্মাজ্ঞ অর্থাৎ ব্রহ্মবেত্তা সন্ন্যাসীর সেবা করা কর্তব্য। এ বিষযে বেদানুযায়ী ও যুক্তি অনুসারে চারিপ্রকার আশ্রম সিদ্ধ আছে, যেহেতু মনুষ্যমাত্রেরই নিজ আয়ুর প্রথমাংশ বিদ্যাপাঠে ব্যতীত করা (অর্থাৎ অতিবাহিত করা) কর্ত্তব্য, এবং পূর্ণ বিদ্যা পাঠ করিয়া, সংসারের উন্নতি সাধন জন্য, অবশ্য গৃহাশ্রম স্বীকার করিবেন, তৎপরে গার্হস্থ আশ্রমস্থ ধর্মাচরণ পূর্বক পুত্রোৎ পাদনাদি করিয়া পঞ্চাশ বর্ষ বয়ঃক্রম অতীত হইলে, বিদ্যা উপার্জ্জন ও সংসারের হিতার্থে একান্ত দেশে অবস্থান করিয়া, জগতের অধিষ্ঠাতা পরমেশ্বরের সত্যজ্ঞান সম্যক প্রকারে উপলব্ধি করিবেন, এবং তৎপর মনুষ্যকে সর্বপ্রকার ব্যবহারিক ও পারমার্থিক বিষয়ে উপদেশ প্রদান করিবার জন্য ও সকলের সংশয় ছেদনার্থ, তথা সত্য বিষয়ের নিশ্চয়ার্থ সন্ন্যাস গ্রহণ করা অবশ্য কৰ্ত্তব্য। যেহেতু এইরূপ (ক্রমান্বয়ে) না করিলে, সম্পূর্ণ রূপে পক্ষপাত পরিত্যাগ করা বড়ই দুরূহ ব্যাপার হইয়া উঠে।
ইতি বর্ণাশ্রম বিষয়ঃ সংক্ষেপতঃ
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ