মক্কা মূলত পবিত্র কাবার শরিফের কারণেই পরিচিত। কাবা শব্দের অর্থ ‘ঘনক’, ‘কিউব’। কালো ঘরটার ঘনক আকৃতির কারণেই এই নাম। চার হাজার বছর আগে এই মক্কার আশপাশের অঞ্চল ছিল জনবিরল মরুভূমি। কাবা শরীফের কালো পাথর যেটি ‘হাজরে আসওয়াদ’নামে পরিচিত তা কারমাতিয়ান নেতা আবু তাহির আল-কারমতি পাথরটি চুরি করে সেখান থেকে হাজারবেসে (বর্তমানে, বাহরাইন) নিয়ে গেছিল। ৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে কারমাতিয়ানরা এটি চুরি করেছিলেন।
পাথরটি চুরি করার পর "মসজিদ আল দিরারে" টুকরো করে সেটি তে দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে মল মূত্রাদি করতে থাকেন আল্লার সাথে চ্যালেঞ্জ করে, যেন তাকে আল্লাহ্ তালা শাস্তি দেন মাথায় পাথর ফেলে দেন কিন্তু তা আল্লা কেন আল্লার রসূল রাও তার কাছ থেকে ছিনিয়ে আনতে পারে না।
৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে কারমাতিয়ান নেতা আবু তাহির একটি ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা করেছিল। সে পবিত্র মক্কা নগরী আক্রমণ করার পরিকল্পনা করেছিল। সে যখন প্রথম মক্কা নগরীতে পৌঁছাল, তখন তাকে সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল না। এ কারণে সে মক্কা নগরীতে কোনো অশান্তি সৃষ্টি করবে না এই শর্তে মক্কায় প্রবেশ করেছিল।
তবে মক্কা প্রবেশের পর সে তার শপথ রক্ষা করেনি। সে মক্কায় প্রবেশের পর যা করেছিল তা মোটেও কোনো শান্তির বার্তা ছিল না। হজ্জ্বের প্রথম দিনেই তার পরিকল্পনা মত কারমাতিয়ানরা পবিত্র মক্কা নগরীকে আক্রমণ করে বসে। কারমতিয়ানদের সেনাবাহিনী তাদের ঘোড়া নিয়ে এসে মসজিদ আল হারামে প্রবেশ করে।
এরপর তারা হজ্জ্বপালকারীদের নির্মমভাবে গণহত্যা শুরু করে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কাবাকে ঘিরে নামাজ পড়তে গিয়ে প্রায় ৩০,০০০ হজ্জ্বপালনকারী সে সময় নিহত হয়েছিল।
কারমতিয়ানরা পবিত্র কুরআনের আয়াত নিয়ে কটাক্ষ করছিল আর হজ্জ্বপালনকারীদের হত্যা করেছিল। তারা পবিত্র কাবা ঘর লুট করেছিল, অনেকগুলি ভবন ধ্বংস করেছিল, কাবার আশেপাশের বাড়িঘর পর্যন্ত তারা লুট করেছিল, দাসদের ধরে নিয়ে গিয়েছিল এবং হজ্জ্বপালনকারীদের মৃত দেহগুলি জমজমের কূপের পানির মধ্যে এবং কাবার রাস্তার মধ্যে ফেলে গিয়েছিল।
ইসলামি বর্ণনা অনুযায়ী, রাসুল মুহাম্মদ ৬০৫ সালে এটি কাবার দেয়ালে স্থাপন করেছিলেন। ৬০৫ সালে হযরত মুহাম্মাদ (সা) এই কালো পাথর নিয়ে একটি কোন্দল সমাধান করে দেন, যখন আগুনে কাবা পুড়ে গিয়ে অনেক ক্ষতি সাধিত হয়েছিল। নিজের হাতে তিনি পাথরটি পুনঃস্থাপন করেন কাবাতে। এখন সেই কালো পাথর রুপালি ফ্রেমে আবদ্ধ করে কাবার কোনে লাগানো আছে। এখান থেকে একটি দীর্ঘ লাইন মেঝেতে দাগ কাটা আছে অনেক দূর পর্যন্ত। এ লাইন থেকে শুরু করে একবার ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘুরে আবার ঐ লাইনে আসা হলো একবার তাওয়াফ। এভাবে সাতবার তাওয়াফ করতে হয়। এটি হজ্বের একটি অংশ এবং হজ্ব মৌসুম বাদে ওমরাতেও এভাবে তাওয়াফ করতে হয়। ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী এই পাথরে চুমু খেলে পাপমোচন হয়। তাই এই পাথরের সামনে সবসময়ই জটলা থাকে, কিংবা থাকে লম্বা লাইন, সবাই চুমু খাওয়ার জন্য উদগ্রীব।কাবাকে অনেক নামেই কুরআন-হাদিসে ডাকা হয়েছে; বাইতুল হারাম (Sacred House), বাইতুল্লাহ (House of Allah), বাইতাল আতিক (Ancient House) এবং আওয়াল উল বাইত (First House)। এর দিকে ফিরেই মুসলিমরা নামাজ আদায় করেন (‘কিবলা’), তবে এর আগে জেরুজালেমের পবিত্র ঘরের দিকে ফিরে নামাজ আদায় করা হত। কাবা সম্পর্কে অনেককাল ধরেই কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত ছিল যে, কাবার উপর দিয়ে কোন পাখি বা কিছুই উড়ে যেতে পারে না। আসলে অনেক পাখিই কাবার ওপর দিয়ে উড়ে যায় এবং উপরে বসেও।
ইতিহাসের পাতায় অনেকগুলি গোপন রহস্য রয়েছে, যা প্রায়শই লোকেরা ধর্মের নামে ব্যবসা করে বলে না।আমি বিশ্বাস করি যে এই ভিডিওটি ভণ্ডামি ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে বড় কাজ করবে।
ধন্যবাদ
No comments:
Post a Comment
ধন্যবাদ