সাঁই বাবার আড়ালে - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

01 March, 2021

সাঁই বাবার আড়ালে

সাই বাবার আড়ালে

 ''যিনি আল্লাহ্‌ ছাড়া কারও নাম নিতেন না, গঙ্গাকে মানতেন না, ছাগল কেটে মাংস পর্যন্ত খেতেন তাকে কীভাবে হিন্দুরা পুজো করতে পারে?'' -শঙ্করাচার্য স্বরূপানন্দ সরস্বতী

শুধু এ কথায় বলেননি তাঁর মতে সাইবাবার নামে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হচ্ছে, কিন্তু তার পেছনে আসলে হিন্দু একতাকে দুর্বল করার বিদেশি ষড়যন্ত্র আছে, এমন অভিযোগও করেছেন শঙ্করাচার্য। তিনি বলেছেন 

 ''ব্রিটেনের মতো দেশগুলোই এসব করাচ্ছে – যাতে ভারত হিন্দু প্রধান দেশ না-থাকে, হিন্দুরা যাতে নানা ভাগে ভাগ হয়ে যায়। সংঘবদ্ধভাবে হিন্দুরা যাতে কিছু করতে না-পারে, তার জন্যই এত কিছু করা হচ্ছে।''

কিন্তু পাথক পূজকরা তা মানতে চান না তাঁদের মতে এসব সম্পূর্ণ আজেবাজে কথা। সাই ভগবানের প্রতি আমার শ্রদ্ধা অটুট থাকবে। কেউ বলছেন, সাইবাবার কাছে সব ইচ্ছা পূর্ণ হয়, তিনি তার প্রমাণ পেয়েছেন। আবার কারও দাবি সাইবাবা যে ভগবান ছাড়া কিছু নন তিনি নিজে সেটা অনুভব করছেন ইত্যাদি বলে 

সাই সাই করে তার মূর্তির সামনেও গড়াগড়ি করে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার জন্য শঙ্করাচার্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াও হয়েছে অনেকবার। হিন্দুদের এমন পাগলামী যে সাই বাবার ভক্তরা শিরডি সাই বাবার পায়ের কাছে হিন্দু দেবদেবীদের ছবি ভগবান বিষ্ণু, ভগবান শিবের ছবিও রাখে।

কে এই সাই তা হিন্দুরা জানতেও নারাজ। সাই কে জানতে হলে আমাদের ইতিহাসের পুরানো কিছু অধ্যায় জানতে হবে যেমন ইসলাম ও সুফিবাদ। সূফিবাদের আড়ালে কিছু নামধারী সুন্নি পীরেরা ওহাবী মতবাদ প্রচার করেছে। সুলতানি আমলে কয়েকটি ধর্মীয় সংস্কারমূলক আন্দোলন ভারতবর্ষের মানুষের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। সেই সংস্কারমূলক আন্দোলনগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিলো সুফীবাদী আন্দোলন। সুফীবাদ মূলত ইসলামের দোগলাপন নীতি।

হযরত মুহাম্মদ (স.) এর মৃত্যুর পর বিভিন্ন রাজ্য জয়ের ফলে সেই রাজ্যের সিংহাসনে আরোহীদের অনেকেই ধর্মের আত্মত্যাগের জায়গাটি পরিত্যাগ করে বিলাসিতায় ডুব মারেন। সম্পদ আর ক্ষমতার মোহে তারা অন্ধ হয়ে যান। এটি ইসলাম ধর্মের তৎকালীন উদারনীতিকদের বেশ আঘাত করে। তারা ধর্মের মানবিক দিকটি রক্ষার তাগিদ অনুভব করলেন। দেশ দেশান্তরে তারা এই মানবিক দিকটি প্রচারের সাধনায় ব্রতী হলেন। এভাবে সুফীদের একটি ধারা ভারতবর্ষে আসে। তবে ভারতবর্ষেও তাদের কাজ চালাতে করতে হয় কঠোর সংগ্রাম করে। এখানকারও বেশির ভাগ সুলতানরা ছিলেন বিলাসিতায় মগ্ন। সুলতানদের সাথে তখন কট্টোর ওলামা সম্প্রদায়ের গলায় গলায় ভাব। ওলামারা তখন অসংখ্য রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুলতানদের প্রভাবিত করতেন। ওলামারা শুধু কট্টোরই ছিলো না, এই কট্টোর মনোভাবের আড়ালে লুকায়িত ছিলো ব্যক্তি স্বার্থ, ক্ষমতা লিপ্সা, অর্থনৈতিক হিসেব নিকেশ। ওলামাদের নাকের ডগায় ঝুলে সুলতানরা ইচ্ছে মত জীবন যাপন করতেন। ধর্ম মানতেন ততটুকুই যতটুকু মানতে ভালো লাগে কিংবা মানা যায়। কিন্তু ওলামারা এই রাজপ্রাসাদে বসেই আইন রচনা করতেন সাধারণ মানুষের জন্য, রচনা করতেন সাধারণ মানুষের ধর্ম পালনের সংবিধান।

এরকম অবস্থায়ই ভারতবর্ষে সুফীদের আগমন। সুফীদের মূল ধারাটি এসেছিলো বুখারা, সমরখন্দ, পারস্য, আরব, সিরিয়া এসব জায়গা থেকে। ভারতবর্ষে ইসলামের মূল প্রচারক এরাই।

শায়খ ইসমাইল, সৈয়দ নাথর শাহ, শাহ সুলতান রুমি, আব্দুল্লাহ, জালালউদ্দিন রুমি এরা সবাই-ই সুফীবাদী আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। সুফিবাদ হচ্ছে ইসলামের আধ্যাত্মিক-তাপসদের মরমীবাদ। এটি কোন সম্প্রদায় নয়, বরঞ্চ এটিকে ইসলামিক শিক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হয় যা মানুষের স্বীয় অভ্যন্তরীণ পরিশুদ্ধতার সাথে সম্পর্কযুক্ত। আত্মা সম্পর্কিত আলোচনা এর মুখ্য বিষয়। সুফিবাদের মূল বিষয় হল, আপন নফসের সঙ্গে, নিজ প্রাণের সাথে, নিজের জীবাত্মার সাথে, শয়তানের সাথে জিহাদ করে তার থেকে মুক্ত হয়ে এ জড় জগত থেকে মুক্তি পাওয়া। আত্মার পরিশুদ্ধির মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন হল এই মতবাদের মর্মকথা। সুফিবাদে স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে আধ্যাত্মিক ধ্যান ও জ্ঞানের মাধ্যামে জানার প্রচেষ্টা করা হয়।  হযরত ইমাম গাজ্জালি এর মতে, আল্লাহর ব্যতীত অপর মন্দ সবকিছু থেকে আত্মাকে পবিত্র করে সর্বদা আল্লাহর আরাধনায় নিমজ্জিত থাকা এবং সম্পূর্ণ রূপে আল্লাহুতে নিমগ্ন হওয়ার নামই সুফিবাদ বলে।‘সুফ অর্থ পশম আর তাসাওউফের অর্থ পশমী বস্ত্রে পরিধানের অভ্যাস (লাব্‌সু’স-সুফ) - অতঃপর মরমীতত্ত্বের সাধনায় কারও জীবনকে নিয়োজিত করার কাজকে বলা হয় তাসাওউফ। যিনি নিজেকে এইরূপ সাধনায় সমর্পিত করেন ইসলামের পরিভাষায় তিনি সুফি নামে অভিহিত হন(সংক্ষিপ্ত ইসলামি বিশ্বকোষ, প্রথম খণ্ড, পৃ.৪৫২)"। তাসাওউফ দর্শন বা সুফিবাদ অনুযায়ী আল্লাহ-প্রাপ্তির সাধনাকে 'তরিকত' বলা হয়। বলা হয়, তরিকত সাধনায় মুর্শিদ বা পথপ্রদর্শকের প্রয়োজন। 

সুফিগণের মতে, মুহাম্মাদ স্বয়ং সুফিদর্শনের প্রবর্তক। এর সপক্ষে সুফিগণ মুহাম্মাদ এর একটি হাদিস উল্লেখ করেন যা হল, "সাবধান! প্রত্যেক রাজা -বাদশাহর একটি সংরক্ষিত এলাকা আছে। আর আল্লাহর সংরক্ষিত এলাকা হচ্ছে তাঁর হারামকৃত বিষয়াদি। সাবধান! নিশ্চয়ই শরীরের মধ্যে একটি মাংসপিণ্ড আছে; যখন তা ঠিক থাকে তখন সমস্ত শরীর ঠিক থাকে, আর যখন তা নষ্ট হয়ে যায় তখন গোটা দেহ নষ্ট হয়ে যায় -এটা হচ্ছে কলব (হৃদপিণ্ড)।"[বুখারী ৫২, মুসলিম ১৫৯৯] সার্বক্ষণিক আল্লাহর স্মরণের মাধ্যমে কল্‌বকে কলুষমুক্ত করে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন এবং যারা তার ভালোবাসা লাভ করেছেন, তাদের তরিকা বা পথ অনুসরণ করে "ফানাফিল্লাহর মাধ্যমে বাকাবিল্লাহ অর্জন করা" সুফিবাদের উদ্দেশ্য।

সুফিগণ বিশ্বাস করে যে, কোন বৈধ সুফি শাইখের (পীর) নিকট বাইয়াত বা শপথ নেওয়ার মাধ্যমে কোন ব্যক্তি মুহাম্মদ (সা.)-এর নিকট আনুগত্যের শপথ করে; ফলে, প্রার্থী ও মুহাম্মদ (সা.)-এর মধ্যে সংযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়। মুহাম্মাদ এর মাধ্যমে সুফিগণ আল্লাহ সম্পর্কে জানে, আল্লাহকে বোঝে এবং আল্লাহর সাথে সংযোগ স্থাপন করে। আলী হলেন সাহাবাদের মধ্যে প্রধান ব্যক্তি যিনি সরাসরি মুহাম্মাদ-এর নিকট আনুগত্যের শপথ (বায়াত) পাঠ করেন, এবং সুফিগণ আলীর মাধ্যমেই এই শপথকে বজায় রাখেন, যেন মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন ও তার সাথে সংযোগ স্থাপন সম্ভব হয়।

হিন্দু মারাঠারা খুব সাহসী ছিল। তাদের শক্তি ছিল কঠোর হিন্দু ধর্ম এবং সানাতান ধর্মের প্রতি মৃত্যুর লড়াইয়ের অবধি অগাধ ভালবাসা। এক সময় হিন্দু মারাঠা সাম্রাজ্য পুরো ভারত শাসন করত।যশবন্ত রাও হোলকার এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ বিশ্বাসীরা মারাঠা সাম্রাজ্যকে পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে ছিলেন, এই সময়েই ব্রিটিশদের সাথে একত্রে মুসলিম আলেমরা ফকিরদের (সুফিবাদ) প্রচার করতে শুরু করেছিলেন যারা নির্দোষ হিন্দুদের বোকা বানানোর জন্য কয়েকটি মন্ত্র (শ্লোক) পাঠ করতেন এবং বিভিন্ন মিথ্যা ভাষণ ধূর্ততার মাধ্যমে চিরন্তন সনাতন ধর্ম্ম থেকে মনুষ্যনির্মিত মারাত্মক ইসলামের মত প্রচার করতেন। এই প্রচারের পরিবর্তে, মুসলিম সাই বাবাকে ইসলামী আলেম এবং ব্রিটিশ এজেন্টদের দ্বারা হিন্দু ধর্মকে (রিলিজিওন) আরও ক্ষয় করার জন্য এবং সনাতন ধর্ম ও গুরুদের প্রতি তাদের ঝোঁক উন্নীত করার জন্য তৈরী করেছিলেন।

সাঁই (চাঁদ নিয়া) বাবার জন্মতারিখ নিয়ে দোলাচল থাকলেও, অনেকের মতে তিনি জন্মেছিলেন ১৮৩৫ সালের সেপ্টেম্বরে। তার বিখ্যাত উক্তি "সবকা মালিক এক" ("একই ঈশ্বর সকলকে শাসন করেন")। কথাটি ইসলাম ও সুফিবাদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তিনি সর্বদা "আল্লাহ্‌ মালিক" কথাটি উচ্চারণ করতেন। হিন্দু ভক্তেরা তাকে দত্তাত্রেয়ের অবতার মনে করতেন। অনেক ভক্তের মতে, তিনি ছিলেন সদ্গুরু, সুফি পির বা কুতুব। 

সাঁই সৎচরিত অধ্যায় ২৩, পৃষ্ঠা ১৬১
"মসজিদে কোরবানীর জন্য একটি ছাগল আনা হয়েছিল। ছাগলটি অত্যন্ত দূর্বল ও মারা যাওয়ার অবস্থায় ছিল। বাবা লোকটিকে ছুরি এনে ছাগলটিকে কাটতে বললেন। "



সাই হ'ল একটি পার্সিয়ান খেতাব যা সুফিদের দেওয়া হয় যারা ইসলামিক আচার অনুসরণ করে। বাবা এমন একটি শব্দ যা কোন সাধুর বেশধারী লোকের নামের পরে জুড়ে দিলে হিন্দুরা তাঁর পায়ে লুটোপুটি খায় তাই ইসলামিক নাম "সাঁই"ও পরে বাবা হয়ে গেল সাঁই বাবা।

সাঁই বাবার ভন্ডামি
স্বামী শ্রী স্বরূপানন্দ সরস্বতীর মতে সাঁই (মুসলমান ফকির) বাবাকে দেবতা হিসাবে উপাসনা করা উচিত নয়।

সাই সর্বদা আল্লাহ নাম জপ করতেন [সাই সৎচরিত অধ্যায় ৪,৫,১৩,১৪] 
সাই মসজিদে থাকতেন [সাই সৎচরিত অধ্যায় ১,২,৫,৯,১১,১৪,২৩,২৬]
সাই বলতেন আল্লাহ্ সকলের ইচ্ছা পুরন করবে [সাই সৎচরিত অধ্যায় ১৪]
সাই সর্বদা আল্লাহ্ মালিক বলতেন [সাই সৎচরিত অধ্যায় ২৩]
সাই ছাগল জবাই করতেন [সাই সৎচরিত অধ্যায় ১১]
সাই ভোজনের পূর্বে ফাতিহা পড়তেন [সাই সৎচরিত অধ্যায় ৩৮]
সাই জোর করে মানুষকে মাংস খাওয়াতেন [সাই সৎচরিত অধ্যায় ১১, ৩৮]
সাই ধূমপান(চীলম) করতেন [সাই সৎচরিত অধ্যায় ৫]





চলছে...>>

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

অথর্ববেদ ২/১৩/৪

  ह्यश्मा॑न॒मा ति॒ष्ठाश्मा॑ भवतु ते त॒नूः। कृ॒ण्वन्तु॒ विश्वे॑ दे॒वा आयु॑ष्टे श॒रदः॑ श॒तम् ॥ ত্রহ্যশ্মানমা তিষ্ঠাশ্মা ভবতুতে তনূঃ। কৃণ্বন্তু...

Post Top Ad

ধন্যবাদ