মহর্ষি কণাদ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

15 March, 2019

মহর্ষি কণাদ

২৬০০ বছর আগে একটি ভারতীয় ঋষি এবং একটি দার্শনিক পারমাণবিক তত্ত্ব প্রণয়ন করেছিলেন, কিন্তু এই সত্যটি বিশ্ব জুড়ে কম পরিচিতি পেয়েছিল । তার নাম আচার্য কানাদ। তাঁর জন্মের নাম ছিল কাশ্যপ । তিনি 600 খ্রিস্টপূর্বাব্দে 800 খ্রিস্ট পূর্ব, ভারতের দ্বারকা (বর্তমান গুজরাট) কাছাকাছি অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম উল্কা, ছিলেন একজন দর্শনশাস্ত্র।

মহর্ষি কণাদ
বৈশেষিক দর্শনকার কণাদ ঋষি খ্ৰীঃ পূঃ ১২শ শতাব্দীতে বৰ্ত্তমান ছিলেন। তিনি তণ্ডুলকণা ভক্ষণ করিতেন বলিয়া তাঁহার নাম কণাদ হইয়াছিল বলিয়া মনে হয়। তাঁহার প্রকৃত নাম উলুক বলিয়। তাঁহার প্রণীত দর্শন ‘ঔলুক্যদর্শন’ নামে খ্যাত। তিনি প্রভাসক্ষেত্রে বাস করিতেন এবং তাঁহার গুরুর নাম সোমশৰ্ম্মা ছিল। কনাদের মতে ভাব-পদার্থ—দ্রব্য, গুণ, কৰ্ম্ম, সামান্য, বিশেষ ও সমবায়—এই ছয়টী। তাঁহার মতে এই ষট্‌-পদার্থ সম্বন্ধে তত্ত্বজ্ঞান লাভ করিতে পরিলেই মুক্তি লাভ হয়। কণাদ পরমাণু-বাদী ছিলেন। তাঁহার মতে—অদৃষ্ট কারণ বিশেষ দ্বারা পরমাণুর সংযোগ বিয়োগের দ্বারাই জগতের উৎপত্তি। তেজঃ ও আলো একই মূল পদার্থের বিভিন্ন অবস্থা মাত্র। ইহা তিনিই প্রথম আবিস্কার করেন। বর্ত্তমান সময়ে ইউরোপে পরমাণুবাদ সৰ্ব্বত্র গৃহীত। এই পরমাণুবাদ আমাদের দেশেই সৰ্ব্ব প্রথমে আবিষ্কৃত হইয়াছে। মহর্ষি কণাদই ইহার আবিষ্কৰ্ত্তা। মহর্ষি কণাদের জড়পদার্থের জ্ঞান সম্বন্ধে সমধিক দৃষ্টি ছিল। সেই জন্যই তিনি পরমাণুবাদ স্থাপন করেন। মেঘ, বিদ্যুৎ, বজ্রাঘাত, ভূমিকম্প, করকা, হিমশীলা, বৃক্ষের রস সঞ্চার, চুম্বক ও চুম্বকার্ষণ, গতি, জড়ের সংযোগ ও বিয়োগাদি গুণ ইত্যাদি বিবিধ বিষয়ে তাঁহার চিন্তা ধারা ধাবিত হইয়াছিল। বড়ইদুঃখের বিষয় যে পরবর্ত্তীকালে আর কোনও পণ্ডিতের দৃষ্টি এইদিকে আকৃষ্ট হয় নাই। সুতরাং জড়বিজ্ঞানের উন্নতি ভারতবর্ষে আর হইল না। গ্ৰীসদেশীয় পণ্ডিত ডেমক্রিটাস ইউরোপে প্রথম পরমাণুবাদ আবিষ্কার করেন। তিনি কণাদের পরবর্তী। 

জৈনদর্শনাচার্য্য। তিনি জৈনমতে বৈশেষিকদর্শন প্রণয়ন করেন। তাঁহার গুরুর নাম রোহ গুপ্ত। তিনি খ্ৰীঃ পূঃ ৭১ অব্দে বৰ্ত্তমান ছিলেন। কণাদ নামে এক জন জ্যোতিষ সংহিতার রচয়িত ও ছিলেন। তিনি নবদ্বীপের প্রসিদ্ধ পণ্ডিত বাসুদেব সাৰ্ব্বভৌমের অন্যতম ছাত্র। তিনি ‘অনুমান মণি ব্যাখ্যা’ গ্রন্থের রচয়িতা। খ্ৰীঃ চতুর্দ্দশ শতাব্দীর শেষভাগে তিনি বর্ত্তমান ছিলেন।

কৈশ্যপ তার শৈশব থেকেও ক্ষুদ্রতম কণাটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। একদিন তিনি প্রয়াগায় তীর্থযাত্রায় তাঁর বাবার সঙ্গে ছিলেন। রাস্তায় হাজার হাজার তীর্থযাত্রী ও ফুল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু রাস্তায় রাস্তায় যে শস্যক্ষেত্র ছিল, তার চোখের উপর তার চোখ পড়েছিল। গঙ্গা নদীর তীরে মন্দিরগুলিতে এই শস্য দেওয়া হয়েছিল। কৈয়াপ তাঁর সমস্ত মনোযোগকে শস্যের উপর রাখলেন এবং এক এক করে একত্রিত করতে লাগলেন। খুব শীঘ্রই অন্যান্য তীর্থযাত্রী এই লক্ষ্য করে দেখেছেন এবং কারন আশ্চর্যের ব্যাপার যে কাশ্যপ একজন স্বজাতীয় পরিবার থেকে ছেলেটির মতো দেখেছেন। অদ্ভুত হয়ে ভিড়ে একজন তাকে জিজ্ঞেস করলো কেন সে এই সব করছে? তারা বলেছে যে ভিক্ষুকরাও এই শস্যগুলিকে স্পর্শ করবে না। কাশ্যপের উত্তর ছিল আশ্চর্যজনক।

ব্যক্তিকে বলেছিল, “নিজের মধ্যে একটি শস্য অকার্যকর মনে হতে পারে কিন্তু শত শত শস্য সংগ্রহের ফলে একজন ব্যক্তির খাবার তৈরি হয়। অনেক খাবার সংগ্রহের ফলে পুরো পরিবারকে খাওয়াবে এবং শেষ পর্যন্ত সমগ্র মানবজাতি অনেক পরিবারে পরিণত হবে। এবং এই কারণেই, চালের একটি শস্য পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল “।

তিনি আবিষ্কার করেন যে মহাবিশ্ব “কনা” এর উপর ভিত্তি করে গঠিত হয় পরমাণু

তিনি পারমাণবিক তত্ত্ব অধ্যয়ন করেন এবং একে অপরের সাথে প্রতিক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া দেখান। সময়ের সাথে সাথে, লোকেরা তাকে “আচার্য-শিক্ষক” বলে ডাকে, সেইজন্য আচার্য কনাদ নামটি। কনাদ আবিষ্কার করেন যে “অনু” (পরমাণু) ব্যাপারটির একটি অবিনশ্বর বস্তু ছিল। তিনি যখন তার হাতে তার খাবার দিয়ে হাঁটছিলেন, তখন তিনি ক্ষুদ্র কণাগুলিতে খাবার ভাঙতে শুরু করেন, যতক্ষণ না তিনি আরও বিরতি নিতে পারেন। তাই তিনি বলেন, ব্যাপার আরও বিভক্ত করা যাবে না।

“চরক সংহিতা”য় প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞান চর্চার এমনই অসংখ্য কিছু তথ্য পাওয়া যায় যাকে বর্তমান যুগের বিজ্ঞানীরা কুর্নিশ জানায়।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

জাতিবাদ ও ভগবান মনু

  সম্পাদকীয় বর্তমান সময়ে দেশ অনেক গম্ভীর সমস্যায় গ্রস্ত আছে, তারমধ্যে একটা হল - জাতিবাদ। এই জাতিবাদের কারণে আমাদের দেশের অনেক বড় হানি হ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ