আল্লাহ্ সবচেয়ে বড় চক্রান্তকারী ও প্রতারণাকারী - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

16 July, 2021

আল্লাহ্ সবচেয়ে বড় চক্রান্তকারী ও প্রতারণাকারী

আল্লাহ কে

 নবী মুহাম্মদ বলেছেন:

‘নিশ্চয়ই কিয়ামত দিবসে আল্লাহর বিচারে কঠোর শাস্তি প্রাপ্তরা হবে ছবি নির্মাতাগণ’। [1]

নবী মুহাম্মদ আল্লার পক্ষ থেকে বলেছেন:
‘যারা আমার সৃষ্টির ন্যায় সৃষ্টি করতে তৎপর হয় তাদের থেকে বড় জালেম আর কে আছে? এতই যদি পারে তো তারা একটা শস্য দানা সৃষ্টি করুক কিংবা অণু সৃষ্টি করুক’। [2]

নবী মুহাম্মদ আরও বলেছেন:
‘প্রত্যেক ছবি নির্মাতা জাহান্নামে যাবে। সে যত ছবি অঙ্কন করেছে তার প্রত্যেকটির বিনিময়ে তার জন্য একটি করে প্রাণী তৈরী করা হবে। সে জাহান্নামে (তাকে) শাস্তি দেবে।’ [3]

নবী মুহাম্মদ আরও স্মরণ করিয়েছেন:
‘যে বাড়ীতে কুকুর ও ছবি থাকে সেই বাড়ীতে ফেরেশতা প্রবেশ করে না’। [4]

ইসলাম অনুসারে, মানুষ, পশুসহ যে কোনো প্রাণীর ছবি আঁকা হারাম। তা ছাপাচিত্র, খোদাইকৃত, অঙ্কিত, ভাস্কর্য কিংবা ছাঁচে ঢালাই করা - যা-ই হোক না কেন! 

তথ্যসূত্র:
[1]. বুখারী হাদীস, মুসলিম হাদীস; মিশকাত হাদীস/৪৪২৯
[2]. বুখারী হাদীস, মুসলিম হাদীস; মিশকাত হাদীস/৪৪৯৬
[3]. বুখারী হাদীস, মুসলিম হাদীস; মিশকাত হাদীস/৪৪৯৮
[4]. বুখারী হাদীস, মুসলিম হাদীস; মিশকাত হাদীস/৪৪৮৯
আমর ইবন আলী (র)......জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত: 
রাসুলুল্লাহ (সা) এক মহিলাকে দেখলেন ও উত্তেজিত হয়ে পড়লেন। তখন তিনি দৌড়ে তার স্ত্রী যায়নাব (রাঃ)-এর নিকট আসলেন। তিনি তখন একটি চামড়া পাকা করায় ব্যস্ত ছিলেন এবং রাসুলুল্লাহ (সা) তার সাথে যৌনকাজ করে ঠান্ডা হলেন। তারপর বের হয়ে সাহাবীদের নিকট এসে তিনি বললেনঃ স্ত্রীলোক সামনে আসে শয়তানের বেশে এবং ফিরে যায় শয়তানের বেশে। অতএব তোমাদের কেউ কোনো স্ত্রীলোক দেখতে পেলে সে যেন তার স্ত্রীর নিকট আসে। কারণ, তা তার মনের ভেতর যা রয়েছে তা দূর করে দেয়। [1]

প্রিয় মুমিন ভাই-বোনেরা; আপনারা বলেন ও বিশ্বাস করেন, নবী মুহাম্মদ ছিলেন সংযমী পুরুষ, তার মত সংযমী দুনিয়াতে কেউ ছিলো না; আর ভবিষ্যতে কেউ হবে না। কিন্তু হাদিস বলে, তিনি ছিলেন নারীলিপ্সু, পরস্ত্রীকাতর, যৌনতাড়িত অসংযমী মানুষ! এতটাই দুর্বল যৌনকাতর মানুষ ছিলেন তিনি, রাস্তায় অপরিচিত মেয়েমানুষ দেখেও উত্তেজনা ধরে রাখতে পারতেন না!

আপনার মতামত এ বিষয়ে কী বলে?

তথ্যসূত্র:
[1] সহিহ মুসলিম হাদিস: খণ্ড: ৮, হাদিস: ৩২৪০

নবী মুহাম্মদ বলেছেন:
'জেনে-শুনে যে নিজ পিতা ব্যতীত অন্যকে পিতা বলে পরিচয় দেয়,
তার উপর জান্নাত হারাম' [1]

কিন্তু পরের খবরে না চমকে উপায় নেই; ইরাকে এ ধরনের এক নির্দেশনা অনুযায়ী নিজের মেয়েকেও বিবাহ করা বৈধ! এবং শিয়া সূত্রানুসারে নবী মুহাম্মদ নিজেই নাকি নিজের কন্যা ফাতিমার প্রতি যৌনকাতর ছিলেন! 

সত্যি বলছি, গত ৫/৭ বছরের মধ্যে এত বড় ধাক্কা আর কোনো বিষয়েই পাইনি আমি! সকল সুন্নি হাদিস ও সিরাত সংকলন আমার সংগ্রহে আছে; আছে শিয়া হাদিস সংকলনসহ কয়েক হাজার বইপত্র! কিন্তু এমনটা চোখে পড়েনি আমার! এবার একটু নতুন করে গবেষণায় নামতেই হয়; এতো আমার নিজের বিশ্বাসের দরজাতেই নতুন করাঘাত! দেখতে শুরু করলাম নতুন করে। যতটুকু পেলাম, আপনাদের কাছে হুবুহু তুলে দিচ্ছি:

It was narrated by (imam) jafan Ibn. Muhamad:
The phophet Muhammad used to put his face between the breasts of Fatimah. [2]
(নবী মুহাম্মদ ফাতিমার দুই স্তনের মাঝখানে মুখ দিতেন!)

Whenever I long for paradise, I kiss the throat of Fatemah. [3]
(যখনই নবী মুহাম্মদ বেহেস্তের আকাঙ্ক্ষা করেন, তিনি ফাতিমার গলায় চুমু দেন)

Fatima is human huri whenever I long for paradise I smell her. [4]
(ফাতিমা মনুষ্য-হুরী, যখনই নবী মুহাম্মদ বেহেস্তের আকাঙ্ক্ষা করেন, তিনি তার ঘ্রাণ নেন)

সত্যিই তো; এসব কী? এটা কি পিতাসুলভ আচার, নাকি যৌনকাতর এক উন্মাদের প্রলাপ! এ সকল শিয়া তথ্য-উপাত্ত যদি সত্য হয়, তবে ইরানের পার্লামেন্টে বিল পাশ অথবা নিজ মেয়েকে বিয়ের বৈধতায় ইরাকী নির্দেশনাকে কতটা দোষ দেওয়া যায়! বীজ ভালো না হলে গাছ আর কতটা ভালো হতে পারে!

আপনাদেরকে নবী মুহাম্মদের জীবনকালীন তিনজন ফাতিমার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া দরকার:

(ক) ফাতিমা বিনতে আসাদ (Fatimah bint Asad): মুহাম্মদের চাচা আবু তালেবের স্ত্রী, খলিফা আলীর জননী, ইনি ৬২৬ ইং সালে মদিনায় মারা যান; মুহাম্মদ মদিনায় মাঝে মাঝে তার ঘরে যেতেন এবং দুপুরে ঘুমাতেন! [5]

(খ) ফাতিমা আল-আলিয়া বিনতে যাবায়ান আল-দাহাক্ (Fatimah al-Aliya bint Zabyan al-Dahhak): ছোট একটি গোত্র-প্রধানের কন্যা ছিলেন, মুহাম্মদ তাকে ৬৩০ ইং সালের ফেব্রুয়ারি/মার্চের দিকে বিয়ে করেন এবং মসজিদের বাইরে পরপুরুষকে উঁকি দিয়ে দেখার অপরাধে দু-তিন সপ্তাহ পরই তালাক দিয়ে দেন! [6]

(গ) ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ (Fatimah bint Muhammad): মুহাম্মদের সবচেয়ে ছোট কন্যা, খলিফা আলীর প্রথম স্ত্রী, মুহাম্মদের মৃত্যুর কয়েক মাস পর আগষ্ট, ৬৩২ ইং সালে মাত্র ২৭/২৮ বছর বয়সে মারা যান! [7]

পাঠকদের কাছে প্রশ্ন, এই ফাতিমা যদি (খ) নং ফাতিমা আল-আলিয়া বিনতে যাবায়ান আল-দাহাক্ হয়ে থাকেন, তবে মুহাম্মদকে যৌনকাতর উন্মাদ বলার জন্য ক্ষমা চাইতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু যদি (ক) নং চাচী ফাতিমা অথবা (গ) নং কন্যা ফাতিমার মধ্যে কেউ হন, তবে মুমিন পাঠক কী বলবেন, জানার ইচ্ছা হয়!

আর তাই, আজকে একটাই প্রশ্ন আপনাদের কাছে; এ কোন ফাতিমা?!

তথ্যসূত্র:

** খবরের সত্যতা গুগল সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন; লিংক দিলাম না তাই!
[1]. বুখারী হাদিস, মুসলিম হাদিস; মিশকাত হাদিস/৩৩১৪।
[2]. Bihaar al-Anwar, Vol 43, Page 78.
[3]. Fadhael-Al-Khamsah, Vol 3, Page 127.
[4]. Lisan al Mizan, Vol 03, Page 346.
[5] ibn Sa'd, Muhammad (1995). Kitab at-Tabaqat al-Kabir (The Book of the Major Classes). VIII The Women of Madina. Translated by Bewley, Aisha. London: Ta-Ha Publishers. ISBN 978-1-897940-24-2.
[6] Bewley/Saad 8:100-101, 153. 
Al-Tabari, Vol. 9, p. 138; Al-Tabari, Vol. 39, pp. 186-188. Despite the confusion over the name, she is probably also the woman referred to in Al-Tabari, Vol. 9, pp. 136-137 and the “Fatima bint Shurayh” of Al-Tabari, Vol. 9, p. 139
[7] "Fatimah", Encyclopaedia of Islam. Brill Online.

সহিহ্ হাদিসে পরিষ্কার বলা আছে; নবী মুহাম্মদের আব্বা আবদুল্লা দোযখবাসী!
সূনান আবু দাউদ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
হাদিস নং:৪৬৪৩, হাদিসের মান: সহিহ্

আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা কোথায়? তিনি বলেনঃ তোমার পিতা জাহান্নামে। যখন সে চলে যাচ্ছিল, তখন তিনি বলেনঃ আমার ও তোমার পিতা জাহান্নামে।


প্রিয় মুমিন পাঠক, আপনাদের নবীর পিতা, যিনি জন্ম না নিলে মুহাম্মদের জন্মই হতো না, এবং যার নিজ সন্তানকে দেখার সুযোগ পর্যন্ত হয়নি, সে কিনা যাবে জাহান্নামে! এ কেমন পুত্র আবদুল্লার! এ কেমন দয়ার নবী আপনাদের, যিনি তার জন্মের আগেই মৃত পিতাকে বেহেস্তে নেবার ক্ষমতা রাখেন না! আপনারা কী করে আশা করেন, তিনি আপনাদের বেহেস্তে নেবার জন্য সুপারিশ করবেন?
কোরান অনুসারে মদপান হারাম না!
কোরানে হারাম জিনিষকে 'হারাম'-ই বলা হয়েছে। এবং 'হারাম' (حرم) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যে সকল জিনিসকে হারাম বলা হয়েছে, তার জন্য আল্লাহ কোনো কারণ বা ব্যাখ্যা দেবার প্রয়োজন বোধ করেননি। কোরানে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হারাম শব্দ উল্লেখ না করে কোনোকিছুকে নিষিদ্ধ করার জন্য দোজখের ভয়ও দেখানো হয়েছে।

কোরানে সূরা আল মায়িদাহ (৫:৩) আয়াতে মৃত জীব, রক্ত ও শূকরের মাংসকে হারাম করা হয়েছে হারাম শব্দ উল্লেখ করে:

حُرِّمَتْ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةُ وَالْدَّمُ وَلَحْمُ الْخِنْزِيرِ
৫:৩ তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে মৃত জীব, রক্ত, শুকরের মাংস.....।

কোরানে হারাম শব্দ উল্লেখ না করে বিশ্বাসী মুসলমানকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করাকে শাস্তির ভয় দেখিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে সূরা আন নিসা (৪:৯৩) আয়াতে:

৪:৯৩ যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত বিশ্বাসীকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্যে ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।

এখন আমরা দেখবো হারাম/নিষিদ্ধ করার কোরানের দুই নিয়মে মদপান কি হারাম/নিষিদ্ধ? কোরানে ৫টি আয়াতে মদ/নেশা নিয়ে কথা বলা হয়েছে।

(১) সূরা আন নিসা (নারী) ৪:৪৩
হে ঈমাণদারগণ! তোমরা যখন নেশাগ্রস্ত থাক, তখন নামাজের ধারে-কাছেও যেও না, যতক্ষণ না বুঝতে সক্ষম হও যা কিছু তোমরা বলছ......।

এই আয়াতে হারাম বা নিষিদ্ধ শব্দটি নেই বা দোজখের ভয়ও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবেও দেখানো হয়নি। শুধু নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাজের কাছে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে, কারণ নামাজে কী বলা হচ্ছে, সেটা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ, না বুঝলে সে নামাজ পড়ার কোনো মানে নেই। যেহেতু বেশি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মানুষের বোধবুদ্ধি এমন লোপ পায় এবং সে কী বলছে, তা বোঝে না, সে কারণেই নামাজের কাছে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। নেশাগ্রস্ত হতে কিন্তু নিষেধ করা হয়নি। এখন কেউ যদি অল্প নেশা/মদপান করে এবং তার বোধবুদ্ধি লোপ না পায়, তাহলে তাকে কোরানের এই আয়াত অনুযায়ী দোষ দেয়া যায় না। এই আয়াতে প্রমাণ হলো না - মদপান হারাম!

(২) সূরা আল মায়িদাহ (খাদ্য পরিবেশিত টেবিল) :৯০-৯১
"হে বিশ্বাসীগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণয়ক তীর ঘৃণ্যবস্তু, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা (কে) বর্জন কর তাহলে তোমরা সফলকাম হতে পারবে। শয়তান তো মদ, জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণে ও সালাতে বাধা দিতে চায়। তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না।"

এই আয়াতে ও হারাম বা নিষিদ্ধ শব্দটি নেই বা দোজখের ভয়ও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবেও দেখানো হয়নি। সুতরাং মদকে হারাম বলা যায় না। এছাড়া আয়াতটিতে فَاجْتَنِبُوهُ /ফাআজতানেবুহু অর্থাৎ তাকে (শয়তানকে) বর্জন করতে বলা হয়েছে। শব্দের শেষে যে 'হু' আছে, তা একবচন। যদি মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর সবগুলোকেই বর্জন করতে বলা হতো, তাহলে 'হুম' বহুবচন থাকতো। ভালো করে আয়াতটি পড়লে বোঝা যায়, এগুলোকে শয়তানের হাতিয়ার বলা হয়েছে, যা দিয়ে মানুষকে সে বিপথে নেয়। এ কারণেই শয়তানকে বর্জন করতে বলা হয়েছে, মদকে নয়।

(৩) সূরা আল মায়িদাহ (খাদ্য পরিবেশিত টেবিল) :৯৩
৫:৯৩ যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তারা যা ভক্ষণ করেছে, সে জন্য তাদের কোন পাপ (جُنَاحٌ) নেই....
Muhammad Asad 5:93 Those who have attained to faith and do righteous deeds incur no sin by partaking of whatever they may, so long as they are conscious of God and [truly] believe and do righteous deeds, and continue to be conscious of God and to believe, and grow ever more conscious of God, and persevere in doing good: for God loves the doers of good.

এই আয়াতটির ইংরেজি অনুবাদও দিলাম, কারণ বাংলা অনুবাদে এমন কিছু শব্দ ঢোকানো হয়েছে, যা আরবি কোরানে নেই। এই আয়াতটিতে দেখুন, হারাম ব্যতীত সকল খাবার খাওয়া যায়। আর খাবার নয়, সৎ কাজ ও ঈমানের ওপরেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সৎ ভাল কাজের কথা বারবার বলা হয়েছে। চলুন, এবার পুরো অনুবাদটি দেখি:

যারা ঈমান আনে আর সৎকর্ম করে তারা পূর্বে যা খেয়েছে তার জন্য তাদের উপর কোন পাপ নেই যদি তারা বিরত থাকে, আর ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, অতঃপর সাবধানতা অবলম্বন করে আর ঈমানের উপর থাকে, অতঃপর আল্লাহকে ভয় করে এবং সৎকাজ করে। আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন। (৫:৯৩- অনুবাদটি তাইসিরুল কুরআন থেকে) এই আয়াতে মদপান হারাম প্রমাণ হলো কি?
  
(৪) সূরা আন নাহল (মৌমাছি) ১৬:৬৭ আয়াত
এবং খেজুর বৃক্ষ ও আঙ্গুর ফল থেকে তোমরা নেশা/মাদক (سَكَرًا) ও উত্তম খাদ্য তৈরী করে থাক, এতে অবশ্যই বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে।

এখানেও নেশা বা মদকে হারাম বলা হয়নি। বরং নেশা ও উত্তম খাদ্য একই কাতারে ফেলা হয়েছে।

(৫) সূরা আল বাকারা (বকনা-বাছুর) :২১৯
তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ (إِثْمٌ كَبِيرٌ) আর মানুষের জন্যে উপকারিতাও রয়েছে, তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়।

মদের ভাল মন্দ দুটো দিকই আছে, যা আগের আয়াতগুলো থেকে স্পষ্ট। এ আয়াতেও মদের উপকরিতা ও অপকারিতা নিয়ে বলা হয়েছে। উপকারিতার বিপরীত অপকারিতা বা অপব্যবহার হয়, পাপ হয় না। কিন্তু আমাদের আলেমরা إِثْمٌ كَبِيرٌ এর মানে মহাপাপ বলছেন, যা সঠিক নয়। আরবিতে পাপ হলো যুনাহুন/جُنَاحٌ। তাহলে আপনারাই চিন্তা করুন إِثْمٌ كَبِيرٌ এর সঠিক মানে মহাপাপ নাকি মহা অপকারিতা বা অপব্যাবহার?

আল্লাহ কোরানে কোনোকিছুকে হারাম/নিষিদ্ধ বলতে শাস্তির ভয় দেখিয়ে নিষেধ করেছেন অথবা সরাসরি হারাম শব্দটি বলেছেন। কোরানের কোথাও মদ/নেশাকে হারাম বলা হয়নি। কোরানে মদের ভাল ও মন্দের উল্লেখ করা হয়েছে মাত্র।

ইতিহাস বলে, তুর্কি খলিফারাই তাদের সৈন্যদের মদ খাওয়া থেকে নিবৃত্ত করার জন্য হাদীসের মাধ্যমে মদকে হারাম করে। এর আগে উমাইয়া ও আব্বাসী খলিফারা যে মদপান করতেন, তার ভুরিভুরি প্রমাণ এখনও বিদ্যমান।

তো মুমিন মুসলমান বন্ধুরা, (তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে বল না যে, এটা হালাল এবং ওটা হারাম। নিশ্চয় যারা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা আরোপ করে, তাদের মঙ্গল হবে না। ১৬: ১১৬) তাই বেহেস্তী পানীয়কে হারাম বলবেন না; ভেবে দেখুন, কীভাবে আল্লাহ এমন কিছুকে (কাজ, খাদ্য, বস্তু) হারাম করতে পারেন, যা বেহেস্তে হালাল হবে? তাই নিশ্চিন্তে মদপান করুন, তবে মাতাল না হয়ে!

আর তারা চক্রান্ত/প্রতারণা করেছিল, আর আল্লাহও চক্রান্ত/প্রতারণা করেছিলেন।
আর আল্লাহ চক্রান্ত/প্রতারণা-কারীদের মধ্যে সর্বোত্তম। (সুরা ইমরান-৩:৫৪).
আব্বা আমার দুই ভাইকে পড়ার রুম থেকে বাংলা অনুবাদসহ কোরআন আনতে বললেন; তাহারা মুহিউদ্দীন খান এবং জহুরুল হক-এর অনুবাদ করা কোরআনের দুইটি কপি এনে হাজির! আর আমার পশ্চাৎদেশের আমিনারে-আবদুল্লাহ্! কই, এখানে তো তেমনটা লেখা নেই!
এবং কাফেরেরা চক্রান্ত করেছে আর আল্লাহও কৌশল অবলম্বন করেছেন।
বস্তুতঃ আল্লাহ হচ্ছেন সর্বোত্তম কুশলী। [মুহিউদ্দীন খান]
আর তারা চক্রান্ত করেছিল, আর আল্লাহ্‌ও পরিকল্পনা করেছিলেন।
আর আল্লাহ্ পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে সর্বোত্তম। [জহুরুল হক]
আমি বলিলাম, এ দুটো অনুবাদে ভুল আছে; আসল অনুবাদ কী হবে, দেখাতে পারবো। আমাকে ১০ মিনিট সময় দেন! প্রিয় পাঠক: বাসার আরবী-বাংলা-ইংরেজী ডিকশনারীই আমার শেষ ভরসা এখন!
গল্প এবার সংক্ষিপ্ত করি!
আপনারা যারা আরবি পড়তে জানেন না, তাদের জন্য আরবি উচ্চারণটা দিলাম পড়ুন আগে:
(وَمَكَرُواْ وَمَكَرَ اللّهُ وَاللّهُ خَيْرُ الْمَاكِرِينَ ﴿٥٤
3:54 ‘Wamakaroo wamakaraAllahu waAllahu hayrual-makireena’
৩:৫৪ “ওয়া মাকারূ ওয়ামাকারাল্লাহু ওয়াল্লাহু হাইরুল-মাকারিইন”
এই আয়াতে
‘ওয়া মাকারূ’ অর্থ: আর তারা ‘মাকার’ করে’।
‘ওয়ামাকারাল্লাহু’ অর্থ: আল্লাহও ‘মাকার’ করেন’।
‘ওয়াল্লাহু হাইরুল-মাকারিইন’ অর্থ: আল্লাহ সবচেয়ে ভালো ‘মাকারিইন’
আয়াতে মূল শব্দ مكر – মাকার যেটি আরবি শব্দ, যার বাংলা আভিধানিক অর্থ: (সম্পূর্ণ নেতিবাচক অর্থে) চক্রান্ত, প্রতারণা, শঠতা, ধূর্ততা, ধোঁকা, কৌশল। ইংরেজিতে Cunning, Wiliness, Deceit, Cheating, Deceive, Guile ইত্যাদি। এই মাকার مكر শব্দের সাথে ‘ঊ’ এবং ‘আ’ ধ্বনি দ্বারা ক্রিয়াপদ গঠিত হয় যেমন শঠতা/ধূর্ততা/কৌশল করে বা করেন। আর ‘মাকারিইন’-এর অধিকতর শঠ বা কৌশলী ওঝাতে ‘হাইরুল মাকারিইন’ ব্যবহৃত হয়। প্রচলিত আরবিতে مكر শব্দটি নেতিবাচক ‘ধোঁকাবাজি/প্রতারণা’ বা Deceit অর্থে ব্যবহৃত হয়। ইসলাম-বিশ্বাসী অনুবাদকগন আল্লাহর ক্ষেত্রে আসল অর্থ প্রকাশ করতে সংকোচ বোধে কৌশল/কুশলী/পরিকল্পনা/পরিকল্পনাকারী ব্যবহার করেন। ইহাকে সহজ ভাষায় বলতে পারেন “কৃষ্ণ/আল্লাহ করলে কৌশল/পরিকল্পনা, আর আমরা করলে চক্রান্ত/প্রতারণা”, দারুণ বিচার মুমিনদের! ঠিক এরকম বক্তব্য কোরানে পাওয়া যাবে ৭:৯৯৮:৩০১০:২১১৩:৪২২৭:৫০ আয়াতেও। বাংলা অনুবাদের ক্ষেত্রে মুমিনরা কৌশল করে একই বাক্যে অবিশ্বাসীদের ক্ষেত্রে ‘মাকার’ শব্দের অর্থ করেন চক্রান্ত/প্রতারণা কিন্তু বিপরীতে আল্লাহর ক্ষেত্রে সেই একই শব্দ ‘মাকার’ এর অর্থ করেন কৌশল/পরিকল্পনা। কিন্তু এসবের আসল অনুবাদ হবে নিম্নরূপ:

৩:৫৪. আর তারা চক্রান্ত/প্রতারণা করেছিল, আর আল্লাহ্‌ও চক্রান্ত/প্রতারণা করেছিলেন। আর আল্লাহ্ চক্রান্ত/প্রতারণা-কারীদের মধ্যে সর্বোত্তম।
৭:৯৯. তারা কি আল্লাহর চক্রান্ত/প্রতারণা থেকে নিরাপদ হয়ে গিয়েছে? বস্তুত ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায় ছাড়া আল্লাহর চক্রান্ত/প্রতারণা থেকে আর কেউ (নিজদেরকে) নিরাপদ মনে করে না।
৮:৩০. স্মরণ কর, সেই সময়ের কথা যখন কাফিরগণ তোমাকে বন্দী করার কিংবা হত্যা করার কিংবা দেশ থেকে বের করে দেয়ার জন্য চক্রান্ত করে। তারা ষড়যন্ত্র করে আর আল্লাহও চক্রান্ত করেন। আল্লাহই হচ্ছেন সর্বশ্রেষ্ঠ চক্রান্ত/প্রতারণা-কারী।
১০:২১. আর যখন আমি আস্বাদন করাই স্বীয় রহমত সে কষ্টের পর, যা তাদের ভোগ করতে হয়েছিল, তখনই তারা আমার শক্তিমত্তার মাঝে নানা রকম চক্রান্ত/প্রতারণা তৈরী করতে আরম্ভ করবে। আপনি বলে দিন, আল্লাহ সবচেয়ে দ্রুত চক্রান্ত/প্রতারণা তৈরী করতে পারেন। নিশ্চয়ই আমাদের ফেরেশতারা লিখে রাখে তোমাদের চক্রান্ত/প্রতারণা
১৩:৪২. ওদের আগে যারা ছিল তারাও চক্রান্ত/প্রতারণা করেছিল, যাবতীয় চক্রান্ত/প্রতারণা আল্লাহর আয়ত্তাধীন। তিনি জানেন প্রত্যেক ব্যক্তি কী কামাই করছে। আর কাফিরগণ অচিরেই জানতে পারবে ভাল পরিণাম কাদের জন্য।
২৭:৫০. তারা এক চক্রান্ত/প্রতারণা করেছিল এবং আমিও এক চক্রান্ত/প্রতারণা করেছিলাম। কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি।
কোরআনে এ সকল আয়াতেই পরিষ্কার বলা হয়েছে আল্লাহ সবচাইতে বড় চক্রান্ত/প্রতারণা-কারী, এই হিসাবে ইসলাম ধর্ম চক্রান্ত/প্রতারণা-র ধর্ম!
তো মুমিন বন্ধুগন: দো-জাহানের সবচেয়ে বড় চক্রান্তকারী-প্রতারণাকারী হচ্ছেন আল্লাহ্ এবং আপনি হচ্ছেন তার অনুগত ছোটখাট চক্রান্তকারী-প্রতারণাকারী! চোখ খুলুন, নিজের মস্তিস্ককে প্রশ্ন করুন: আপনি কী হতে চান, মানুষ? না অন্ধ দাস?

আল্লাহর ৯৯ টি নাম

 আল্লাহ  আর রহিম পরম দয়ালু  আর রহমান পরম দয়াময়  আলজাব্বার পরাক্রমশালী  আল-আজিজ প্রবল  আল-মুহায়মিন রক্ষণ ব্যবস্থাকারী  আল-মুমিন নিরাপত্তা বিধায়ক  আস-সালাম শান্তি বিধায়ক  আল-কুদ্দুস নিষ্কলুষ ১০ আল-মালিক সর্বাধিকারী ১১ আল-ওয়াহহাব মহা বদান্য ১২ আল-কাহার মহাপরাক্রান্ত ১৩ আল-গাফফার মহাক্ষমাশীল ১৪ আল মুসাওবির রূপদানকারী ১৫ আল-বারী উন্মেষকারী ১৬ আলখালিক সৃষ্টিকারী ১৭ আল মুতাকাব্বির অহংকারের ন্যায্য অধিকারী ১৮ আল রাফি -উন্নয়নকারী ১৯ আল খাফিদ অবনমনকারী ২০ আল বাসিত সম্প্রসারণকারী ২১ আলকাবিদ সংকোচনকারী ২২ আল আলীম মহাজ্ঞানী ২৩ আল ফাত্তাহ মহাবিজয়ী ২৪ আররাজ্জাক জীবিকাদাতা ২৫ আল লাতিফ সূক্ষ্ম দক্ষতাসম্পন্ন ২৬ আল আদল - ন্যায়নিষ্ঠ ২৭আল হাকাম মিমাংসাকারী ২৮ আল বাসির সর্বদ্রষ্টা ২৯ আস সামী সর্বশ্রোতা ৩০ আলমুযিল্ল হতমানকারী ৩১ আল-মুইয্য সম্মানদাতা ৩২ আল কাবীর বিরাট মহৎ ৩৩ আলআলী অত্যুচ্চ ৩৪ আশ শাকুর গুণগ্রাহী ৩৫ আল গফুর ক্ষমাশীল ৩৬ আলআজীম মহিমাময় ৩৭ আল হালীম সহিষ্ণু ৩৮ আল খাবীর সর্বজ্ঞ ৩৯ আল মুজীব প্রার্থনাগ্রহণকারী ৪০ আর রাকীব নিরীক্ষণকারী ৪১ আল কারীম মহামান্য ৪২ আল জালীল -প্রতাপশালী ৪৩ আল হাসীব মহাপরীক্ষক ৪৪ আল মুকিত আহার্যদাতা ৪৫ আল হাফীজ -মহারক্ষক ৪৬ আল হাক্ক সত্য ৪৭ আশ-শাহীদ প্রত্যক্ষকারী ৪৮ আল বাইছ পুনরুত্থানকারী৪৯ আল মাজীদ গৌরবময় ৫০ আল ওয়াদুদ প্রেমময় ৫১ আল হাকীম – বিচক্ষণ ৫২ আলওয়াসি সর্বব্যাপী ৫৩ আল মুবদী আদি স্রষ্টা ৫৪ আল মুহসী হিসাব গ্রহণকারী ৫৫ আলহামিদ প্রশংসিত ৫৬ আল ওয়ালী অভিভাবক ৫৭ আল মাতীন দৃড়তাসম্পন্ন ৫৮ আলকাবী শক্তিশালী ৫৯ আল ওয়াকীল তত্বাবধায়ক ৬০ আল মাজিদ মহান ৬১ আলওয়াজিদ অবধারক ৬২ আল কায়্যুম স্বয়ং স্থিতিশীল ৬৩ আল হায়্যু জীবিত ৬৪ আলমুমীত মরণদাতা ৬৫ আল মুহয়ী জীবনদাতা ৬৬ আল মুঈদ পুনঃ সৃষ্টিকারী ৬৭ আলআওয়াল অনাদী ৬৮ আল মুয়াখখীর পশ্চাদবর্তীকারী ৬৯ আল মুকাদ্দিম অগ্রবর্তীকারী ৭০আল মুকতাদীর প্রবল পরাক্রম ৭১ আল কাদীর শক্তিশালী ৭২ আস সামাদ অভাবমুক্ত ৭৩আল ওয়াহিদ একক ৭৪ আত তাওয়াব তওবা গ্রহণকারী ৭৫ আল বার্র ন্যায়বান ৭৬ আলমুতাআলী সুউচ্চ ৭৭ আল ওয়ালী কার্যনির্বাহক ৭৮ আল বাতিন গুপ্ত ৭৯ আল জাহির -প্রকাশ্য ৮০ আল আখির অনন্ত ৮১ আল মুকসিত ন্যায়পরায়ণ ৮২ যুল জালাল ওয়ালইকরাম মহিমান্বিত  মাহাত্ম্যপূর্ণ ৮৩ মালিকুল মুলক রাজ্যের মালিক ৮৪ আর রাউফ -কোমল হৃদয় ৮৫ আল আওউফ ক্ষমাকারী ৮৬ আল মুনতাকীম প্রতিশোধ গ্রহণকারী ৮৭আল হাদী পথ প্রদর্শক ৮৮ আন নাফী কল্যাণকর্তা ৮৯ আদ দারর – অকল্যাণকর্তা ৯০আল মানি প্রতিরোধকারী ৯১ আল মুগনী অভাব মোচনকারী ৯২ আল গানী সম্পদশালী ৯৩আল জামি একত্রীকরণকারী ৯৪ আস সাবুর ধৈর্যশীল ৯৫ আল রশীদ সত্যদর্শী ৯৬ আলওয়ারিছ উত্তরাধিকারী ৯৭ আল বাকী চিরস্থায়ী ৯৮ আল বাদী অভিনব সৃষ্টিকারী ৯৯ আননূর জ্যোতি

নিশ্চয় যারা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা আরোপ করে, তাদের মঙ্গল হবে না। (সূরা আন নাহল ১৬: ১১৬ আয়াত)

লিখেছেন নরসুন্দর মানুষ

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

জাতিবাদ ও ভগবান মনু

  সম্পাদকীয় বর্তমান সময়ে দেশ অনেক গম্ভীর সমস্যায় গ্রস্ত আছে, তারমধ্যে একটা হল - জাতিবাদ। এই জাতিবাদের কারণে আমাদের দেশের অনেক বড় হানি হ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ