মহাবিশ্বের প্রাথমিক অবস্থা ও সৃষ্টিতত্ত্ব - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

12 July, 2021

মহাবিশ্বের প্রাথমিক অবস্থা ও সৃষ্টিতত্ত্ব

CREATION OF UNIVERSE
সৃষ্টি রচনা ও প্রলয়ের প্রবাহ অনাদি কাল থেকে চলছে এবং 
ভবিষ্যতেও এই প্রকার চলতে থাকবে।-[ঋগ্বেদ০ ১।১৬৪।৩৮, অথর্ব০ ১০।৮।২৫, ১৩।১।৬]

মহাবিশ্বের প্রাথমিক অবস্থায় ছিল শূন্য তাপমাত্রা। জিরো ডেনসিটি নো ফোর্স জিরো নয়েস বা ফ্রিকোয়েন্সিসুপ্ত অবস্থায় একটি মহাবিশ্ব। পদার্থের সমস্ত বৈশিষ্ট্য ভর সহ নিষ্ক্রিয় ছিল কারণ পদার্থের বৈশিষ্ট্যগুলি নিজেই নিষ্ক্রিয় ছিল সুতরাং মহাবিশ্বের সেই অবস্থাটি সনাক্ত করা অসম্ভব, পদার্থের সমস্ত বৈশিষ্ট্য স্লিপিং মোডে ছিল। মহাবিশ্বের শুরুতে পদার্থের প্রাথমিক অবস্থাঃ

  1. It had zero temperature.
  2. Zero density
  3. Zero Force
  4. Zero Noise or frequencies
  5. The matter had zero motion.
  6. Time was not there.
  7. There was no space.
  8. There were no dimensions.
  9. it was in latent state.
  10. All properties of matter were inactive  including mass.

মহাবিশ্বের মূল বিষয় [মূল প্রকৃতি] বা বস্তুগত কারণের ৩ টি বৈশিষ্ট্য রয়েছে সত্ত্ব ( Force ) রজঃ ( Matter / mass ) তমঃ (Motion), এই তিনটি বৈশিষ্ট্য যা মহাবিশ্বের শুরু হওয়ার সময় নিষ্ক্রিয় থাকে। সত্ত্বঃ,রজঃ,তমঃ এই তিন গুণের সাম্য অবস্থার নাম ই প্রকৃতি ( সাংখ্য ১/২৬)।। পরমাত্মা ঐ প্রকৃতিতে বাক্ রশ্মি যোগ করে দেয়। পরা ওম্ রশ্মির নাম বাক্ রশ্মি। বাক্ বৈ ভর্গঃ।। বাক্ রশ্মি যোগ হবার সাথে সাথে প্রকৃতির সাম্য অবস্থা ভঙ্গ হয়ে সূক্ষ গতির সঞ্চার হয়ে প্রকৃতিকে ডিষ্টার্ব করে বিভিন্ন রশ্মির নির্মান হতে থাকে সর্বশেষ মলিকুলার স্টেটে গিয়ে কারবান গ্রহ নক্ষত্র ইত্যাদি নির্মান হতে থাকে।। ( অথর্ব ৮/৯/৩) এবং শতপথ (১০/৩/৪/১০)।।

আমরা সকলেই জানি নিউটনের গতির প্রথম আইনটি বলে যে: কোনো নিট বল প্রযুক্ত না হলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে এবং গতিশীল বস্তু চিরকাল সমবেগে সরলরেখায় বা সরল পথে চলতে থাকে। গাণিতিকভাবে বলা যায় যে কোনও বস্তুর উপর প্রযুক্ত নিট বল যদি শূন্য হয় তবে বস্তুর গতিবেগ ধ্রুব থাকে। কোনও বাহ্যিক শক্তি প্রয়োগ না করা অবধি একটি বস্তু বিশ্রামেই থাকবে। প্রাথমিকভাবে, এ জাতীয় শক্তি কখনই প্রাকৃতিকভাবে ঘটতে পারে না। এই ধরনের শক্তি কেবল একটি সচেতন সত্ত্বা দ্বারা প্রয়োগ করা যেতে পারে, সচেতন সত্ত্বা ব্যতীত মহাবিশ্ব নিজেকে তৈরি করতে পারে না। সুতরাং এটি পদার্থবিদ্যার মাধ্যমেই ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ। আমরা বলতে পারি ঈশ্বর ওম্ রশ্মির মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থার সূত্রপাত করেছে। 'য়ানি, ত্রীণি বুহন্তি য়েষাং চতুর্থ বিনিযুক্ত বাচম।"-অথ০৮।৯।৩

"সত্ত্বরজস্তমসাংসাম্যাবস্থা প্রকৃতিঃ"- সত্বঃ,রজঃ, ও তমঃ স্বরূপ তিন প্রকারের অনাদি নিত্য কারণ সমান সংখ্যক ও সমান শক্তি বিশিষ্ট থাকায় পরস্পর মুক্ত হইতে না পারিয়া পৃথক্ পৃথক্ থাকা অবস্থায় নাম প্রকৃতি যাহা এই সমস্ত সৃষ্ট পদার্থের মূল কারণ। উহা জড় ও ত্রিগুণাত্মক বলিয়া সংযোগ বিয়োগের উপযোগী। যদি কোন জ্ঞাতা নিজ শক্তি দ্বারা সৃষ্টি ও প্রলয় না করিতেন, তবে এই সমস্ত প্রকৃতি বা মূল কারণ নিজ নিজ কারণ বা স্বরূপ অবস্থায় চিরকাল পড়িয়া থাকিত।
সত্বঃ, রজঃ, তমঃ তত্ত্বে পরমাত্মা বাক্ নিযুক্ত করিয়া দেন। বাকের আপর নাম একাক্ষর 'ওম্' রশ্মি। পরমাত্মা 'ওম্' রশ্মি দ্বারা সর্বপ্রথম প্রকৃতির সাম্য অবস্থা ভঙ্গ করে সৃষ্টির নির্মাণ করেন । ওম রশ্মি হ'ল সূক্ষ্মতম স্পন্দিত সত্ত্বা, এটি স্ট্রিংয়ের মতো। স্ট্রিং তত্ত্বটি বলে যে পদার্থের সূক্ষ্ম রূপটি স্ট্রিং আকারে বিদ্যমান। আধুনিক বিজ্ঞানী এই স্ট্রিং তত্ত্বটিকে সন্দেহজনক উপায়ে দেখেন তবে বেদ বিজ্ঞান এই বিষয়টিকে স্বীকার করে যে বিষয়টি স্পন্দিত সত্তার আকারে বিদ্যমান, যদিও বেদে স্বীকৃতি দেয় না সম্পূর্ণ স্ট্রিং তত্ত্বটিকে। এই বিভিন্ন ধরণের স্পন্দিত সত্ত্বা কম্পিউটার প্রোগ্রামের কোডগুলির মতো, যেখানে প্রতিটি কোডের নিজস্ব ভূমিকা থাকে। প্রলয়কাল শেষ হবার সাথে সাথে পরা ওম্ রশ্মির সৃষ্টি হয়। পরা ওম্ রশ্মির অপর নাম কাল রশ্মি। পরা 'ওম্' রশ্মির প্রভাবে প্রকৃতিতে সমায়িত অক্ষরশ্মি সক্রিয় হইবার সাথে-সাথে প্রকৃতি বিভাজিত হইয়া মহত্তত্বে পরিণত হইয়া থাকে। ব্যাঞ্জন অক্ষর রশ্মি এবং স্বর অক্ষর রশ্মির প্রভাবে মহঃ তথ্যের মাঝে বহু লক্ষণ সৃষ্টি হয়। এই সজল লক্ষণ অক্ষর রশ্মি জাত বলিয়া প্রসিদ্ধ হয়। এই সকল রশ্মি একত্র হইয়া বেদ মন্ত্রের সৃষ্টি হইতে থাকে। অক্ষর রশ্মির প্রভাবে মন্ত্র, মন্ত্রোক্ত ঋষি, দেবতা, স্বরঃ এবং ছন্দের সৃষ্টি হইতে থাকে। মন্ত্র, ঋষি,স্বরঃ ছন্দের প্রভাবে সকল পদার্থের সৃষ্টি হয়। মহতত্বে অক্ষরের প্রভাবে প্রকৃতির গুণ জাগ্রত হইয়া থাকে, সর্বপ্রথম মহত্তত্ত্ব হইতে মনস্তত্ব,মনস্তত্ব হইতে সূক্ষ্ম প্রাণরশ্মি এবং মরুত রশ্মি, পরে ইহা হইতে ছন্দরশ্মি এবং কোয়ার্ক> প্রোটন> নিউক্লিয়াস> অ্যাটম> মলিকুল আদির সৃষ্টি হয়। অবকাশ রূপ আকাশে মনস্তত্ত্ব ভরা থাকে, পরাওম্ রশ্মি উৎপন্নের পর পশ্বন্তি ওম্ রশ্মির উৎপন্ন হয়। পশ্বন্তি ওম্ রশ্মির উৎপন্নের ফলে মন সক্রিয় হয়। পশ্বন্তি ওম্ রশ্মির তিব্রতা বাড়ার ফলে অন্য অনেক রশ্মির উৎপন্ন হয়(ঐতঃ ব্রাঃ ১৯।৪।২৩)। প্রাণ মনস্তত্ত্বে উৎপন্ন হওয়া সূক্ষ্ম কম্পন (প্রান কম্পনাতঃ -ব্রহ্মসূত্র ১।৩।৪৯, ২।৪।৭)। মনস্তত্ত্ব অহংকার দ্বারা প্রেরিত, মহত্তত্ত্ব কাল দ্বারা প্রেরিত।

ওম রশ্মি সহ এই রশ্মিগুলি বুঝতে আমরা সমুদ্রের তরঙ্গের উদাহরণ ও নিতে পারি। একটি মহাসাগর তরঙ্গে হাজার হাজার তরঙ্গ বিদ্যমান, কিছু বড় তরঙ্গ এবং কিছু ক্ষুদ্রতম বা সূক্ষ্ম তরঙ্গ রয়েছে। সমুদ্রের তরঙ্গগুলির ধরণটি সাবধানতার সাথে বিশ্লেষণ করা দরকার যে আমরা বৃহত্তম তরঙ্গগুলির মধ্যে কিছু ক্ষুদ্রতম তরঙ্গ দেখতে পাই। এই পদ্ধতিতে একটি ম্যাক্রো তরঙ্গের ভিতরে প্রচুর তরঙ্গ বিদ্যমান। একটি মহাসাগর তরঙ্গে ম্যাক্রো তরঙ্গকে সূক্ষ্ম করার একটি প্যাটার্ন বিদ্যমান। একইভাবে, ওম রশ্মি প্রতিটি ম্যাক্রো রশ্মিতে থাকে এবং এটি প্রতিটি রশ্মিকে নিয়ন্ত্রণ করে। এটি সমস্ত রশ্মির নিয়ন্ত্রকের মতো। এই প্রকার, প্রকৃতি রূপী সমুদ্রে 'ওম' রশ্মি নামক তরঙ্গ, অন্য তরঙ্গকে জন্ম দেয় এবং এইভাবে বিভিন্ন প্রকার তরঙ্গ সৃষ্টি হয়। প্রকৃতির এই তরঙ্গকে রশ্মি বলা হয়।
একটি প্রশ্ন উঠতে পারে যে যদি সবকিছু সুপ্ত অবস্থায় থাকত তবে এই ওম্ রশ্মি কোথায় ছিল? এই রশ্মি কোনও পৃথক সত্ত্বা নয় বরং প্রাথমিক অবস্থারই একটি অংশ।
উদাহরণস্বরূপ এটি বুঝতে আপনি একটি শান্ত পুকুরে পাথর ফেলে দেওয়ার কল্পনা করতে পারেন, পাথরটি পুকুরের বেশ কয়েকটি জলকে আঘাত করে। এটি যেখানে আঘাত করে সেখানে কিছু তরঙ্গ তৈরি করে। শীঘ্রই পুকুরে জলের পুরো তরঙ্গে ভরে যাবে। সুতরাং, এখানে যা ঘটে তা হ'ল পাথরটি জল-পৃষ্ঠের এক বিন্দুতে আঘাত করে এবং এটি সেই সময়ে তরঙ্গ তৈরি করে তবে এই প্রথম তরঙ্গ জলের পরবর্তী চলমান তরঙ্গের কারণ হয়ে ওঠে। কারণ প্রথম তরঙ্গ অন্যান্য সমস্ত তরঙ্গকে সক্রিয় করে। সুতরাং আমরা বলতে পারি যে অন্যান্য সমস্ত তরঙ্গগুলি এই প্রথম তরঙ্গগুলির দ্বারা উৎপন্ন হয়। একইভাবে, সর্বব্যাপী ঈশ্বর মহাবিশ্বের শুরুতে পদার্থের বৈশিষ্ট্যগুলি সক্রিয় করে বিষয়টি কে কিছুটা ঝাপটান (slight flutter) দেন। এই সামান্য ঝাপটান একই মুহূর্তে অসীম মহাবিশ্বের প্রতিটি জায়গায় তৈরি হয়েছিল। সুতরাং Subtlest কম্পনের মতো প্রথম তরঙ্গ পুরো অসীম মহাবিশ্বে তৈরি হয়েছিল।
"সংহতপরার্থত্বাৎ পুরুষস্য"-সাংখ্য দর্শন ১।৬৬ প্রকৃতি জড় বলিয়া সৃষ্টিকর্ত্তা কিলবা ভোক্তা হইতে পারে না এবং তাহার নিজেরও কোন ভোগের প্রয়োজন থাকিতে পারে না। ভোগ্য ও ভোক্তা এক পদার্থ হইতে পারে না। এই বিচিত্র পদার্থ পরার্থে রচিত হইয়াছে, তাহাতেই ভোক্তাপুরুষের অর্থাৎ জীবাত্মার অনুমান হইতেছে এবং ভোক্তা পুরুষের ভোগের উপযোগী বুদ্ধি ও ইন্দ্রয়াদি করণ, এবং ভোগ্য পদার্থ সমূহের রচনা ও কর্ম্মফলের বিধান দেখিয়া সর্বজ্ঞ সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্ত্তা পরম পুরুষের অনুমান হইয়া থাকে। "মূলেমূলাভাবাদমূলং মূলম্"-মূল কারণের কোন কারণ থাকিতে পারে না। কারণ রহিত না হইলে তাহাকে মূল কারণ বলা যায় না মূল কারণ অকারণ অর্থাৎ কারণ রহিত হইয়া থাকে এবং তাহা অনাদি। প্রকৃতি অর্থে যে উপাদান হইতে সমস্ত সৃষ্টি উৎপন্ন হইয়াছে যাহা নিত্য সত্য তাহাই প্রকৃতি।
গোপথ ব্রাহ্মণ পূর্বভাগ কান্ডিকা ১৮
( তস্য) সেই ও৩ম এর ( দ্বিতীয়া স্বরমাত্রায়া) দ্বিতীয় স্বর মাত্রা ( উ) কার হতে ( অন্তরিক্ষম্ বায়ূম্) অন্তরিক্ষ, বায়ূ ( যজুর্বেদম্) যজুর্বেদ তথা সত্য বিদ্যা ( ভুবঃ ইতি) ভুবঃ [ সর্ব ব্যাপক ব্যাহৃত ব্রহ্ম ভুবঃ রশ্মি সৃষ্টি হয়, (ত্রৈষ্টুভম্) তীন সত্বঃ, রজঃ এবং তমের বন্ধকারী ও ত্রিষ্টুভ (ছন্দঃ) আনন্দদায়ক বা পূজনীয় কর্ম এবং ছন্দরশ্মি আদির সৃষ্টি হয়, ( পঞ্চ দশম্) পাচ প্রাণ ও তাহার উপ প্রাণের নির্মাণ হয়। সেই সাথে পঞ্চ তন্মাত্রার সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ ১৫ পদার্থের নির্মাণ হয়, (স্তোমম্) স্তুতি যোগ্য ব্যবহার তথা প্রকাশক বলের নির্মাণ হয়, ( প্রতীচীং দিশম্) প্রাচী,প্রতিচী,উদিচী, ধ্রুবাদি আদি দশ দিশা রশ্মির উৎপত্তি হয়, ( গ্রীষ্মম্ ঋতুম্) গ্রীষ্ম ঋতু রশ্মি সৃষ্টি হয়, (আধ্যাত্মম্) আত্মাকে জানিবার যন্ত্র অর্থাৎ ( প্রাণম্) প্রাণরশ্মি সৃষ্টি হয়, ( নাসিকে) প্রাণ ও অপান বলের নির্মাণ হয় ও জীবের জন্য গন্ধতন্মাত্রার সৃষ্টি হয়, (গন্ধ ঘ্রাণম্) জীবের গন্ধ শুকিবার গন্ধ তন্মাত্রার প্রকট হয়, (ইন্দ্রিয়াণি) সকল প্রাণ ও উপপ্রাণের নির্মাণ ও সৃষ্টি নির্মাণ সকল সহায়ক বলের নির্মাণ হয় এবং জীবের জ্ঞান চেতনা এবং সাধনা বলের নির্মাণ হয়। এই সব কিছু ( অন্বভবত্) সেই ( ব্রহ্মা) [বলম বৈ ব্রহ্মা] বলদাতা পরমেশ্বর সৃষ্টি করেছে।
ভাবার্থঃ পরমাত্মা ও৩ম এর উ মাত্রা দ্বারা দিশারশ্মি, দশ প্রাণ, গ্রীষ্ম ঋতু, অন্তরিক্ষ, ভুবঃ নামক ব্যাহৃত রশ্মি ও পঞ্চতন্মাত্রা ও পঞ্চজ্ঞান ইন্দ্রিয়ের নির্মাণ করেছেন।
পরা ও৩ম রশ্মি প্রভাবে ও৩ম এর উ মাত্রার সৃষ্টি হয়। উ মাত্রার প্রভাবে ভুবঃ নামক ব্যাহৃত রশ্মির সৃষ্টি হয়। উক্ত ব্যাহৃত রশ্মি হতে কান্ডিকায় বর্নিত সকল পদার্থের নির্মান হয়। এখানে স্মরণ রাখতে হবে যে, পরমাত্মা পরা ওম্ দ্বারা উ অক্ষরকে জাগ্রত করিয়া যথাক্রমে ভুবঃ নাম অক্ষর রশ্মির সৃষ্টি করিয়া ত্রিষ্টুভ ছন্দরশ্মির নির্মাণ করেন। উক্ত ছন্দের প্রভাবে অন্তরিক্ষ,আকাশ, দিশা ইত্যাদির নির্মাণ হয়। অন্তরিক্ষ তথা আকাশে ত্রিষ্টুভ ছন্দের মাত্রা সব থেকে বেশী থাকে।
পরমাত্মা পরা ওম্ কে প্রকৃতি হতে জাগ্রত করিয়া সকল স্বর ও ব্যাঞ্জন অক্ষর রশ্মিকে জাগ্রত করিয়া কান্ডিকায় বর্ণিত তত্বের নির্মাণ করে। প্রকৃতিকে সহস্রা অক্ষরা বলা হয়। প্রকৃতি উক্ত অক্ষরের জন্মদাতা। পরমাত্মা প্রকৃতিতে ইক্ষণকারী নিমিত্ত কারণ হয়ে জ্ঞানের সিঞ্চন করে প্রকৃতির মাধ্যমে সৃষ্টির সঞ্চালন করে। এখানে উ কার ভুবঃ রশ্মিকে প্রকৃতি হতে জাগ্রত করে অন্তরিক্ষ, বায়ূ তথা আকাশের নির্মাণ করেন।
'তদেজতি তন্নৈজতি তদ্ দূরে তদ্বন্তিকে।
তদন্তরস্য সর্ব্বস্য তদু সর্ব্বস্যাস্য বাহ্যতঃ।।'-যজুর্বেদ ৪০। ৫
-অর্থাৎ ঈশ্বর গতিশূন্য প্রকৃতিতে গতি উৎপন্ন করে কিন্তু স্বয়ং গতিতে আসে না, সেই গতিদাতা পরমেশ্বর অজ্ঞানীর নিকট দূরে বিভিন্ন মঠ মন্দিরে কিন্তু জ্ঞানীর নিকট্ থেকে নিকটে, তিনি ব্রহ্মান্ডের সমস্ত জীব ও জগতের ভিতর ও বাইরে বিদ্যমান। আমাদের সেই সর্বব্যাপক পরমাত্মার উপাসনা করা উচিত।

ঈশ্বর কোন হাত-পা বিশিষ্ট ব্যক্তি বিশেষ নন। সমস্তকিছু কে control করে, যেমন বিদূৎ, আকাশ সর্বত্র ব্যাপক, space একটা পদার্থ সামান্য ফোর্স থাকে। এই সমস্ত কিছুর পেছনে যে বল কাজ করে তা ঈশ্বরীয় বল, অর্থাৎ চেতন সত্ত্বার বল। সেই চেতন সত্ত্বা সর্বশক্তিমান সর্বব্যাপক পরমেশ্বর। স্টিভেন উইলিয়াম হকিং এর ভাষায় “দুনিয়া বিজ্ঞানের নিয়ম মেনেই চলে। এমন হতে পারে নিয়মগুলো ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন কিন্তু তিনি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটানোর জন্য কখনো হস্তক্ষেপ করেন না”।[ "Pope sees physicist Hawking at evolution gathering | Science" (ইংরেজি ভাষায়)। রয়টার্স। ২০০৮-১০-৩১]

रू॒पंरू॑पं॒ प्रति॑रूपो बभूव॒ तद॑स्य रू॒पं प्र॑ति॒चक्ष॑णाय। इन्द्रो॑ मा॒याभिः॑ पुरु॒रूप॑ ईयते यु॒क्ता ह्य॑स्य॒ हर॑यः श॒ता दश॑ ॥
ঋগ্বেদ-৬/৪৭/১৮
বিষয়- তাহলে এই জীবাত্মা কেমন, এই বিষয়ে বলেন।
পদার্থ-হে মনুষ্য!যে ( ইন্দ্রঃ) জীব ( মায়াভিঃ) বুদ্ধিতে ( প্রতিক্ষণায়) প্রত্যক্ষ বিবৃতির জন্য ( রূপরূপম্) রূপ-রূপকে ( প্রতিরূপঃ) প্রতিরূপ অর্থাৎ তার স্বরূপে বর্তমান ( বভূব) এবং ( পুরুরূপঃ) বহু শরীর ধারণ করে অনেক প্রকারে ( ঈয়তে) পাওয়া যায় ( তত্) সে ( অস্য) এই শরীরের ( রূপম্) রূপ এবং যা ( অস্য) এই জীবাত্মাকে ( হি) সংকল্প করে ( দশ) দশ সংখ্যাতে বিশিষ্ট এবং ( শতা) শত সংখ্যার জন্য বিশিষ্ট (হরযঃ) অশ্বের ন্যায় ইন্দ্রিয়,অন্ত-করণ এবং প্রাণ ( যুক্তাঃ) যুক্ত হয়ে শরীরে ধারণ করে,এই তার সামর্থ্য।
ভাবার্থ-এই মন্ত্রে বাচকলুপ্তোপমালঙ্কার আছে। হে মনুষ্য! বজ্র পদার্থের অনুরূপ, একইভাবে জীব দেহের সাথে তত্ত্বভাব এবং যখন সে বাহ্যিক বস্তুকে দেখতে চায়, তখন তা দেখে এই জীব তথ্যরূপ জ্ঞান লাভ করে এবং জীবের দেহে যা অগণিত। বজ্রপাত সহ. নাড়ী আছে, সেই নাড়ীগুলি.এসব থেকে বিস্তারিত জানে।।
( ভাষ্যম্-মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী)

সৃষ্টির সময় উপস্থিত হলে পরমাত্মা পরমসূক্ষ্ম পদার্থ সমূহকে সন্মিলিত করেন। ঐ সকলের প্রথম অবস্থায় পরমসূক্ষ্ম প্রকৃতিরূপ কারণ অপেক্ষা যাহা কিঞ্চিত স্থূল হয় তার নাম মহত্তত্ত্ব। যাহা মহত্তত্ত্ব অপেক্ষা কিঞ্চিত স্থূল হয়, তহার নাম অহঙ্কার। অহঙ্কার হতে ভিন্ন ভিন্ন পাঁচ সূক্ষ্মভূত শ্রোত্র, ত্বক, নেত্র, জিহ্বা এবং ঘ্রাণ-এই জ্ঞানেন্দ্রিয় এবং বাক, হস্ত,পদা,উপস্থ ও মলদ্বার-এই পঞ্চ কর্মেন্দ্রিয় এবং একাদশ মন, অপেক্ষাকৃত স্তূলরূপে উৎপন্ন হয়। উক্ত পঞ্চতন্মাত্রা হইতে অনেক স্থূলবস্থা প্রাপ্ত হয়ে ক্রমে ক্রমে যে পঞ্চভূত উ(পন্ন হয়, আমরা ঐ সকল প্রত্যক্ষ করি। স্থূলভূত হতে নানাবিধ ওষধি এবং বৃক্ষাদি উৎপন্ন হয়। ওষধি এবং বৃক্ষাদি হইতে অন্ন, অন্ন হতে বীর্ষ্য এবং বীর্য্য হতে শরীর উৎপন্ন হয়। সর্ব্বপেক্ষা সূক্ষ্ম খন্ড অর্থাৎ যাহা বিভক্ত করা য়ায় না, তার নাম পরমাণু। ষাইট পরমাণু মিলে এক অনু হয়। দুই অণু মিলে এক দ্ব্যণুক হয়। তিন দ্ব্যণুক হতে অগ্নি, চার দ্ব্যণুক হতে জল এবং পাঁচ দ্ব্যণুক হতে পৃথিবী আদি দৃশ্য পদার্থ উৎপন্ন হয়। পরমাত্মা এইরূপ ক্রমানুসারে পরমাণু মিলিত করে পৃথিবী ইত্যাদি নির্মান করেছেন।
ওম্ শম্

তথ্যঃ ঋগ্বেদ ১০।১২৯।১ সাংখ্য দর্শন ১।৬১,১।৬৬

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

বৈদিক বিবাহে সিঁদুর দান

'বিবাহ' শব্দটি 'বি' উপসর্গপূর্বক 'বহ প্রাপণে' ধাতুতে 'ঘঅ্' প্রত্যয় যোগ করে গঠিত এবং 'উদ' উপসর্গ হতে...

Post Top Ad

ধন্যবাদ