মনুস্মৃতি ৮/৩৩৭ - ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম্মতত্ত্ব

ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান, ধর্ম গ্রন্থ কি , হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়, ইসলাম খ্রীষ্ট মত বিষয়ে তত্ত্ব ও সনাতন ধর্ম নিয়ে আলোচনা

धर्म मानव मात्र का एक है, मानवों के धर्म अलग अलग नहीं होते-Theology

সাম্প্রতিক প্রবন্ধ

Post Top Ad

স্বাগতম

03 August, 2021

মনুস্মৃতি ৮/৩৩৭

 আর্যসমাজের বিদ্বান ডক্টর সুরেন্দ্রকুমার মনুস্মৃতি নিয়ে গবেষণা করার পর তিনি মনুস্মৃতি থেকে বেদানুকূল শ্লোক ১২১৪ টি পেয়েছে এবং বেদ বিরোধী প্রক্ষিপ্ত শ্লোক ১৪৭১ টি পেয়েছে, মনুস্মৃতি মোট শ্লোক ২৬৮৫ টি অর্থাৎ বেশির ভাগ শ্লোকই প্রক্ষিপ্ত। আপনারা কেউ যদি মনুস্মৃতি সম্পূৰ্ণ ভাবে পড়েন কিনা তাহলে স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারবেন যে মনুস্মৃতিতে ১২১৪ শ্লোকের সাথে ১৪৭১ শ্লোক পুরোই স্ববিরোধী, এর দ্বারা স্পষ্ট বোঝা যায় যে মনুস্মৃতির মধ্যে এই বেদ বিরোধী শ্লোক গুলো ঢুকানো হয়েছে আর এই শ্লোক গুলোতে আছে মাংস খাওয়া, পশুবলি, শুদ্রদের ঘৃণা করা, নারীদের ঘৃণা করা এবং কিছু অশ্লীলতা আর অপর বেদানুকূল শ্লোক গুলোতে নারীদের এবং পুরুষ কে সম সম্মান, শুদ্রদের কোনো প্রকারের ঘৃণা করে হয়নি, জীব হত্যাকারীকে মহাপাপি বলেছে, গুণ ও কর্ম অনুযায়ী ৪ বর্ণ হয় জন্ম অনুযায়ী নয় আদি নানান বেদানুকূল বিষয়। স্বার্থবাদী নামধারী ব্রাহ্মণরা নিজেদের ভালোর জন্য এই শ্লোক গুলো ঢুকিয়েছিল। মহর্ষি দয়ানন্দের অনুসারে মহর্ষি মনু মহারাজ ছিল জগতের প্রথম রাজা এবং তিনি মনুস্মৃতি রচনা করেছিলেন মানব জাতির জন্য, এই মনুস্মৃতির আইন রামায়ণের সময়েও, মহাভারতের সময়েও ছিল, কোটি কোটি বছর ধরে এই মনুস্মৃতিই ছিল আমাদের সংবিধান, এখন হিন্দু সমাজ মনুস্মৃতিকে গুরুত্ব না দিলেও আমাদের(আর্য) সংবিধান কিন্তু এই মনুস্মৃতিই। আসুন এইবার আসল বিষয়টি দেখি যে মনু মহারাজ ৪ বর্ণের কোনো পাপের জন্য কিরূপ শাস্তির বিধান করেছে মনুস্মৃতিতে, আসুন দেখি_______

মনুস্মৃতি ৮ অধ্যায়, ৩৩৭-৩৩৮ শ্লোক
এখানে বলা হয়েছে যে- কোনো শুদ্র যদি নিজের কিঞ্চিৎ বিবেক দ্বারা চুরি করে তাহলে তাকে আট গুণ শাস্তি দেওয়া হবে, এই একই চুরি যদি কোনো বৈশ্য করে তাহলে তাকে ষোলো গুণ শাস্তি বেশি দেওয়া হবে, এই একই চুরি যদি কোনো ক্ষত্রিয় করে তাহলে তাকে বত্রিশ গুণ শাস্তি বেশি দেওয়া হবে, আবার এই একই চুরি যদি কোনো ব্রাহ্মণ করে তাহলে তাকে চৌষট্টি গুণ অথবা একশ গুণ অথবা একশ আঠাশ গুণ শাস্তি বেশি দেওয়া হবে। অর্থাৎ এর তাৎপর্য এই যে শুদ্ররা (যারা শাস্ত্রীয় কোনো জ্ঞান রাখেনা, এবং সকল বর্ণের সেবা করে) মূর্খ হয় কাজেই তাদের জ্ঞান কম হয় সে ভুল কাজ করে ফেলে অজ্ঞানতায় যার তাই শুদ্র যদি চুরি করে তাহলে তাকে শাস্তি ৪ গুণ দেওয়া হবে। শুদ্রদের থেকে একটু বেশি জ্ঞানী হয় বৈশ্য (যারা ব্যাবসা-বাণিজ্য, কৃষিকাজ আদি করে) তাই বৈশ্য কে ৮ গুণ বেশি শাস্তি দেওয়া হবে, আর বৈশ্যের চেয়ে ক্ষত্রিয় বেশি জ্ঞানী হয়, কারণ ক্ষত্রিয়ের কাজ হলো দেশ কে শাসন করা, দেশ কে রক্ষা করে তো এই ক্ষত্রিয়ই যদি চুরি করে তাহলে তো দেশের পতন ঘটবে কাজেই ক্ষত্রিয় কে ৩২ গুণ শাস্তি দেওয়া হবে। আর ব্রাহ্মণ হলো সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী যিনি বেদজ্ঞ হয়, তো যিনি সকল বৰ্ণকে শিক্ষা দেয় যিনি ধর্মকে সম্পূর্ণ রূপে জানে সেই ব্রাহ্মণই যদি চুরি করে তাহলে ৬৪ গুণ বা ১০০ গুণ বা ১২৮ গুণ শাস্তি দেওয়া হবে।
যে মনুস্মৃতিতে এমন বিধান আছে সেই মনুস্মৃতিকে আজ ভারতের বহু সম্প্রদায় শুদ্র বা দলিত বিরোধী বলেই চেনে! যারা মনু বিরোধী তাদের চোখে এই সমস্ত শ্লোক গুলো পড়েনা, কারণ তাদের কাজই হলো অপপ্রচার করা। আজ যদি এই মনুস্মৃতিই আমাদের সংবিধান হতো তাহলে এতো জাতিভেদ হিন্দু সমাজে কখনোই থাকতো না।

No comments:

Post a Comment

ধন্যবাদ

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

যজুর্বেদ অধ্যায় ১২

  ॥ ও৩ম্ ॥ অথ দ্বাদশাऽধ্যায়ারম্ভঃ ও৩ম্ বিশ্বা॑নি দেব সবিতর্দুরি॒তানি॒ পরা॑ সুব । য়দ্ভ॒দ্রং তন্ন॒ऽআ সু॑ব ॥ য়জুঃ৩০.৩ ॥ তত্রাদৌ বিদ্বদ্গুণানাহ ...

Post Top Ad

ধন্যবাদ